#রাজনীতি
#পর্ব_৩
#রাসমিক_আরিফিন_আসিফ
-------------------------------------------------------------------------------------
- "অজুহাত দেবার জন্য'ই তো তোদের রেখেছি , তাই না ? ভুলেও আমার চোখের সামনে আসিস না , জান নিয়ে নিবো । মাথায় রাখিস ।"
কল কেটে ফোনটা বিছানায় রাখলো । রাগ সামলাতে না পেরে , নিজের চুল নিজেই টানছে । যেন গোড়া থেকে আলাদা করে ফেলবে ।
-------------------------------------------------------------------------------------
আসাদ এখন মোটামুটি সুস্থ । গুলি লাগার পর থেকে এখন পর্যন্ত , গত নয় দিনে প্রাপ্তি আসাদকে একটা কল অব্দি দেয়নি । আসাদও আর বিরক্ত করেনি , ভাবলো হয়তো রেগে আছে । সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে । আসাদের ভাবনা , "যে মেয়েটা একদিন কথা না বলে থাকতে পারতো না , সেই মেয়েটা আজ নয় দিন যাবৎ আমার সাথে কথা বলেনা । অভিমানের পাহাড় জন্মেছে হয়তো ।"
ভাবনার অবসান ঘটিয়ে , নিজের ফোন হাতে নিয়ে ডায়াল করলো প্রাপ্তির নাম্বার । প্রথমবার রিং হলো কিন্তু ফোন ধরার নাম ঘন্ধ নেই । আসাদ ভাবছে , "প্রাপ্তি ফোনটা ধরবে তো ? নাকি রাগের পাহাড় নিয়েই বসে থাকবে । আচ্ছা এতদিনে একটি বারও কি ওর ইচ্ছে হয়নি আমার খোঁজ নেবার ? রাফি তো ও'কে বলেছিলো আমার গুলি লেগেছে । মানলাম বাসায় এসে দেখে যেতে পারবে না , তবে বাহিরে তো দেখা করতেই পারতো ।"
ভাবনার অবসান ঘটে ফোনের রিংটনে । স্ক্রিনে প্রাপ্তির নাম্বার ভাসছে । কল রিসিভ করলে , অপরপ্রান্ত থেকে প্রাপ্তি বলে ,
- "কল করেছিলে ?"
- "হুম !"
- "বলো , কি বলবে ।"
- "ব্যস্ত খুব ?"
- "জ্বী , একটু । কাজ করছিলাম । বাসায় আজ ফুপিমণি আসবেন ।"
- "হঠাৎ ?"
- "আজব , আসতে পারেন না , নাকি ?"
- "সেটা কখন বললাম ? এমনি জানতে চাইলাম ।"
- "ভালো !"
- "তুমি কি আমার উপরে রেগে আছো ?"
- "নাহ ।"
- "এতদিনে একবার খোঁজ নেবারও প্রয়োজন বোধ করনি ?"
- "হয়তো না ।"
- "বিরক্ত হচ্ছো ?"
- "নাহ , বলো শুনছি !"
- "দেখা করতে পারবে আজকে ?"
- "বললাম না , ফুপিমণি আসবেন বাসায় । কাজ আছে অনেক । ঘর গুছাতে হবে , রান্না করতে হবে । আরো অনেক কাজ ।"
- "ওহ , আচ্ছা । সময় পেলে ফোন দিও ।"
- "হুম , টাটা !"
- "বাই !"
কল কেটে ফোনের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ হেসে নিলো আসাদ । পাগলিটা বড্ড বেশি অভিমান করে ফেলেছে । দেখা করুক একবার , সব অভিমান ভাঙিয়ে দিবো নিমিষেই ।
-------------------------------------------------------------------------------------
সিফাত রান্না করতে ব্যস্ত । বলতে হবে , ছেলেটা ভালোই রান্না করতে পারে । চাচিকে রান্নার কাজে সাহায্য করতে করতে নিজেও রান্নাবান্নার বিষয়গুলো বেশ আয়ত্ত করে নিয়েছে । সিফাত ছেলেটা এতিম । যখন ওর বাবা-মা মারা যায় , তখন ও কিছু বুঝতেই শেখেনি । সবেমাত্র বয়স তিনের দোরগোড়ায় । চাচা চাচি মানুষ করেছে বেশ যত্নে । অভাবের সংসার হলেও সিফাতের পড়ালেখাতে কখনো কোনো প্রভাব পড়তে দেয়নি । বাবা-মা হারা ছেলেটা যে এতটা পথ অতিক্রম করতে পারবে , সেটা হয়তো কেউ ভাবতেও পারেনি ।
আসাদ , রাফি এবং সিফাতের সম্পর্ক এখন তুমি থেকে তুইতে পরিনত হয়েছে । সিফাতও বেশ খুশি , আসাদের সঙ্গী হতে পেরে । এতদিনে ছেলেটার ছোট মাথায় এতটুকু খেলেছে যে , ও যাদের সাথে আছে তারা লোকমুখে প্রচলিত ভদ্র সমাজের মানুষদের মতো স্বার্থপর না ।
-------------------------------------------------------------------------------------
রান্না শেষ হলে সিফাত গিয়ে আসাদ এবং রাফিকে ডেকে আনে ।
খাবার খাওয়ার এক পর্যায়ে আসাদ বলে , "রাফি , আজ রাতে একটা কীটপতঙ্গ সাফ করতে হবে । তৈরি থাকিস !"
আসাদের কথার প্রসঙ্গে সিফাত বলে , "কিসের কীটপতঙ্গ ? বাসায় তো কিছু নেই । দু'দিন আগেই তো সবকিছু এতো সুন্দর করে পরিষ্কার করলাম ।"
সিফাতের কথা শুনে আসাদ এবং রাফি কেউ'ই হাসি আটকে রাখতে পারলো না । ওদের কার্যক্রম দেখে সিফাত আহাম্মকের মতো প্রশ্ন করে , "কি ব্যাপার , তোরা এভাবে হাসছিস কেনো ?"
হাসির পরিমান কিছুটা কমিয়ে দিয়ে আসাদ বললো , "হাসছি তোর কথা শুনে !"
- "কি এমন বললাম যে এভাবে হাসতে হবে ?"
- "আমি সমাজের কীটপতঙ্গের কথা বলেছি , বাসার না ।"
- "সেটা সরাসরি বললেই হতো । এতো প্যাঁচানোর কি আছে ?"
- "বুঝেছি , এখন খা ।"
সিফাত কিছু বলতে যাবে , তখন'ই বাসার কলিংবেলটা বেজে উঠলো । রাফি উঠতে গেলে , আসাদ বলে , "তোরা থাক , আমি দেখছি !"
বসা থেকে উঠে , গিয়ে দরজা খুলে সামনে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই । তবে নিচে...!!
চলবে...!!
0 Comments:
Post a Comment