গল্প-টক_ঝাল_মিষ্টি পর্ব ২৭

 #টক_ঝাল_মিষ্টি 

#তামান্না_আঁখি 

#পর্ব-২৭


হাসিবের সাথে হিশামের ঝামেলা আরো বাড়লো। খাবার টেবিলেও তাদের মধ্যে হালকা তর্ক হয়ে গেলো। হিশাম যতই হাসিবকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চাচ্ছে হাসিব যেন ততই বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে। মঞ্জুরা বেগম হিশামকে একা পেয়ে আফসোস করে বললেন-


"ছেলেটা বাড়ির বাইরে থাকতে থাকতে এমন বেপরোয়া হয়েছে।ওরই বা কি দোষ, নিজের বাড়িতে পরিবার পরিজনের সাথে থাকতে কার না ইচ্ছা করে।"


"আমি তো ওকে থাকতে নিষেধ করি নি মা। বলেছি নির্বাচনের পরে আসুক। নয়তো বাড়িতে থাকলে এসব থেকে দূরে থাকুক।কিন্তু ও তো জেদ ধরে বসে আছে।"


হিশামের কথায় মঞ্জুরা বেগম দীর্ঘশ্বাস টেনে বললেন-

"বাড়িতে থাকলে এসব থেকে দূরে থাকার কি সুযোগ আছে রে বাবা? ছেলেটা যে কেন বুঝে না।"


হিশাম আর কোনো কথা বললো না। সেক্রেটারি কে সাথে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।তার এখন অনেক কাজ। সামনে নির্বাচন। বাবার রেখে যাওয়া দলটাকে নিয়ে খান পরিবারের বিরুদ্ধে লড়তে হবে তাকে৷ প্রতিশোধ নিতে হবে পিতৃহত্যার।


কুহু আজ ভার্সিটিতে এসেছে। তনয়ার সাথে লাস্ট বেঞ্চে বসে গল্পের ঝুড়ি খুলেছে। হানিমুনে কোথায় গিয়েছিলো কিভাবে গিয়েছিলো তা সব বলছে। তনয়া হা করে শুনছে সব৷ শাহাদ যে ছাদে কুহুকে সারপ্রাইজ দিয়েছে তা বলতে বলতে কুহু লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। তনয়া কুহুর কাঁধে ধাক্কা দিয়ে বলল- 

"খুব তো রাজনীতিবিদ বিয়ে কর‍তে চাসনি। এখন তো তার প্রেমেই আইস্ক্রিমের মতো গলে গলে পড়ছিস।"


কুহু মুখে হাত দিয়ে কিটকিট করে হাসলো। এই হাসির শব্দ ক্লাস নিতে থাকা লেকচারার শুনে ফেললো। কুহু আর তনয়া দুজনকেই দাঁড় করিয়ে কড়া করে শাসালো। বলে দিলো ডিপার্টমেন্টে গিয়ে দেখা করে আসতে। ক্লাস শেষে কুহু আর তনয়া দুজনেই ডিপার্টমেন্টে গিয়ে দেখা করলো। লেকচারার কুহুকে কড়া গলায় বললো-


"খান পরিবারের বউ হয়েছো বলে যা খুশি করবে তা তো হয় না। ক্লাসে অবশ্যই পরিবেশ বজায় রাখবে।"


কুহু সমস্ত কথা হজম করে মাথা নিচু করে চলে আসলো। তনয়া রাগে গজগজ করে বলল- 

"শাহাদ খানের বউকে শাসায় কত বড় সাহস। তুই ভাইয়াকে বলে এর একটা বিহিত কর তো।"


কুহু নাক কুচকে বললো-

"যাহ! এমন করলে হয় নাকি। নিজেরাই তো ক্লাসে কথা বলেছি।আমাদেরই দোষ।"


কুহুর সততা দেখে তনয়া মুখ ভেঙালো। ক্লাসের কাছাকাছি আসতেই কুহুর চোখ পড়লো অল্প দূরে বাইকের উপর বসে থাকা কয়েকটা ছেলের দিকে। সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে।কুহু আলগোছে নিজেকে একটু দেখে নিলো। কোথাও কোনো সমস্যা আছে কিনা দেখলো। সবকিছুই ঠিকঠাক আছে তারপরও ছেলেগুলো ওর দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেন বুঝলো না। একজন তো বাইকে বসে রীতিমতো ঘাড় বাকিয়ে তাকিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে ঘাড়টা যেন ভেঙেই যাবে। কুহু তনয়াকে কনুই দিয়ে গুতো দিয়ে বলল- 

"দেখ ছেলেগুলো কিভাবে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।"


তনয়া কুহুর কথায় তাকালো ওইদিকে। এইবার ছেলেগুলো চোখ সরিয়ে নিলো।শুধু যে সরিয়ে নিলো তা না একবারে বাইক নিয়ে চলে গেলো।তনয়া বললো-


"এরা তো ফার্স্ট ইয়ার। নতুন এডমিশন নিয়ে এসেছে। বোধ হয় কোনোদিন ভার্সিটিতে পড়ুয়া মেয়ে দেখে নি তাই দেখছে।"


এখানেই ঘটনা শেষ হয় নি। কুহু পরপর আরো কয়েকদিন সেম ঘটনাই লক্ষ্য করলো।যেইদিনই সে ভার্সিটিতে আসতো তখনই ছেলেগুলোকে দেখতে পেত। ছেলেগুলো এদিক ওদিক তাকানোর ভান করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। কখনো নিজেদের মাঝে ফিসফিস করে কিসব বলাবলি করে। একদিন কুহু আর সহ্য করতে পারলো না। তনয়াকে নিয়ে গিয়ে ছেলেগুলোকে পাকড়াও করলো।সরাসরি জিজ্ঞেস করলো- 

"তোমাদের সমস্যা কি? এভাবে তাকিয়ে কি দেখো?জানোনা আমি তোমাদের সিনিয়র। "


ছেলেগুলো অতর্কিতভাবে কুহুর চলে আসাতে ভড়কে গেলো। তারা সবাই মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকলো। তনয়া আঙুল  উচিয়ে বললো-


"এভাবে যে ওর দিকে তাকিয়ে থাকো তোমরা জানো ও কে? জানো ও কার বউ?"


একটা ছেলে উত্তর দিলো- 

"জানি, শাহাদ খানের বউ। "


তনয়া অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো- 

"জেনেশুনে আরেকজনের বউ এর দিকে তাকিয়ে থাকো কেন?"


পাশের একটা ছেলে তড়িঘড়ি করে বলল- 

"ও তো আপনার দিকে তাকিয়ে থাকে। ও আসলে আপনাকে পছন্দ করে।"


হাসিব চমকে গেলো রাফির কথায়। চোখ বড় বড় করে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো রাফির দিকে। সাথে থাকা দুই বন্ধুও অবাক হলো। সবচেয়ে বেশি অবাক হলো কুহু আর তনয়া। তাদের মুখ হা হয়ে গেলো।তনয়া কোমড়ে হাত রেখে রাগ নিয়ে বললো-

"সবে ভার্সিটিতে এসেছো।আর এখনি লাফাংগাগিরি করছো? তাও আবার সিনিয়র আপুর সাথে।এই ছেলে তুমি কান ধরো।"


হাসিব শক্ত কন্ঠে বললো- 

"আমি কান ধরব না।আর আমি আপনার দিকে তাকাই......"


রাফি হাসিবকে কথা শেষ করতে দিলো না। হাসিবের কথার মাঝখানে পিছন থেকে নিজের হাতে হাসিবের দুহাত উচু করে হাসিবের কান ধরিয়ে বললো-

"এই যে আপু ও কান ধরেছে, এবার আপনারা যান।"


হাসিব ঝাড়া মেরে রাফির হাত সরিয়ে দিলো। আগুন গরম চোখে তাকালো রাফির দিকে। কুহু আশ্চর্য হয়ে সবকিছু দেখছিলো। এমন কান্ড আগে দেখে নি সে। তনয়া যে ঝামেলা করবে বেশ বুঝতে পারছে।তনয়া শাসানোর মতো করে আঙুল উঁচু করতেই কুহু টেনে তনয়াকে নিয়ে আসলো। দূরে নিয়ে এসে বললো-


" আল্লাহর দোহাই লাগে ঝামেলা করিস না।আমার সাথে করে গার্ড দিয়ে দিয়েছে। এসব কথা শ্বশুর বাড়িতে গেলে আমার মান সম্মান থাকবে না।"


তনয়া মুখ ভেঙিয়ে বললো-

"তোর আবার মান সম্মান। শ্বশুর বাড়িতে তোর মান সম্মানের পাল্লা আমার জানা আছে।আমি এই বেয়াদবদের উচিত শাস্তি দিব। "


কুহু আর কিছু বললো না। তাড়াতাড়ি তনয়াকে নিয়ে জায়গা ত্যাগ করলো। ক্লাস শেষ করে আসার পথে ড্রাইভার কে বললো অন্য রোড দিয়ে নিয়ে যেতে। ওই রোডেই পার্টি অফিস। ওখান দিয়ে গেলে যদি শাহাদের দেখা পাওয়া যায়।  সামনে বসে থাকা গার্ডটা বললো-


"ম্যাডাম শাহাদ স্যার আজ নির্বাচনী এলাকা দেখতে বেরিয়েছেন। উনি অফিসে থাকবেন না এখন।"


কুহু লজ্জা পেলো গার্ডটার কথায়। গার্ডটা যে তার অভিপ্রায় বুঝে যাবে তা কে জানতো। তারপরও কুহু দমলো না।নিজের স্বামীকে দেখতে চাওয়ার মাঝে অপরাধের কিছু নেই। সে গার্ডকে নির্বাচনী এলাকাতে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার অর্ডার করলো। গার্ডটা প্রথমে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও কুহুর জেদের কাছে হার মানলো। দলের একজনকে ফোন করে জেনে নিলো শাহাদ কোন এলাকায় আছে।তারপর ড্রাইভারকে বলে দিলো সেখানে যাওয়ার জন্য। এলাকায় এসেও শাহাদকে সহজে পাওয়া গেলো না। এলাকার এদিক ওদিক চক্কর দেয়ার পর শাহাদকে একটা কলোনীর বাইরের মাঠে লোকবল নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেলো । শাহাদের আশেপাশে ছোট বড় অনেকেই ভীড় করে আছে। ভীড়ের মাঝখানে প্লাস্টিকের চেয়ার ফেলে শাহাদ সহ এলাকার মুরুব্বিরা বসে আছে। বুঝাই যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে। এলাকার মুরুব্বিরা শাহাদের দুপাশে বসে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলছে। শাহাদ স্থির হয়ে বসে মাটির দিকে তাকিয়ে মনোযোগ দিয়ে শুনছে।মাঝে মাঝে মাথা নাড়ছে। আশফাক খান এখনো এই এলাকার এমপি। সেই সুবাদেই সবাই এলাকার সমস্যাগুলো শাহাদকে জানাচ্ছে। আশফাক খানের তুলনায় শাহাদের সাথেই তাদের সখ্যতা বেশি।


কুহু গাড়িতে বসেই শাহাদকে দেখতে পেলো। অল্প ছায়াঘেরা জায়গায় বসে আছে শাহাদ। তবুও রোদের আঁচে ঘেমে গেছে। মুখ চোখ কালো কালো হয়ে গেছে। পাঞ্জাবি ঘেমে বুকের কাছে কিছু অংশ ভিজে লেপ্টে আছে।কুহুকে গাড়িতে রেখে গার্ড আর ড্রাইভার নেমে গেলো।গার্ড ভীড় ঠেলে শাহাদের পিছনে দাঁড়িয়ে শাহাদের কানে কানে কুহুর আসার খবর জানালো। শাহাদ বিস্মিত হলো।অনুসন্ধানী চোখে এদিক ওদিক চোখ ঘুরিয়ে গাড়িটা দেখতে পেলো। মেরুদণ্ড সোজা করে বসলো। একবার ভীড়ের সবার দিকে তাকালো। আবারো মনোযোগ দিলো তাদের কথায়। অল্প কিছুক্ষন পর পাশে বসা মুরুব্বিদের সাথে হাতে হাত ধরে বিনয়ের সাথে কিছু বলে উঠে দাঁড়ালো।সাথে আসা বাকিদেরকে আলোচনা চালিয়ে যেতে বলে ভীড় থেকে বেরিয়ে এলো।


গাড়ির দিকে এগিয়ে আসতে গিয়ে একবার থেমে দাঁড়ালো শাহাদ।কলোনীর সামনে ঝালমুড়ি ওয়ালা ঝালমুড়ি বিক্রি করছে। বাচ্চারা একের পর এক এসে ঝালমুড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।শাহাদও গিয়ে ঝালমুড়ি কিনে নিয়ে আসলো কুহুর জন্য।কাগজের ঠোঙায় ঝালমুড়ি দিয়েছে,সেখানে প্লাস্টিকের ছোট চামচ দেয়া।এই চামচ দিয়েই ঝালমুড়ি খেতে হবে।

কুহু গাড়িতে বসেই শাহাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড মনোযোগ দিয়ে দেখছে। শাহাদ গাড়ির কাছাকাছি চলে এলে দ্রুত ব্যাগ থেকে আয়না বের করে নিজেকে একটু দেখে নিলো। আয়না ব্যাগে রেখে চুল টুল সব ঠিক করে বসলো।শাহাদ গাড়ির দরজা খুলে কুহুর দিকে তাকিয়ে চমৎকার করে হাসলো। তারপর নিজে উঠে বসে গাড়ির দরজা লাগিয়ে দিলো। ঝালমুড়ির ঠোঙাটা কুহুর দিকে বাড়িয়ে বললো-


"মেয়েরা এসব পছন্দ করে দেখতাম, তাই নিয়ে আসলাম।"


কুহু ঝালমুড়ির ঠোঙাটা নিতে নিতে বললো-

" আপনি মেয়েদেরকে দেখতেন? কতক্ষন দেখতেন?"


 শাহাদ ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকালো। সদ্য দুজনের প্রেম প্রেম ভাব হয়েছে এখন মুখ ফসকে বলে ফেলা কথা নিয়ে ঝামেলা করবে নাকি কুহু? সে কুহুর দিকে অপরাধী চোখে এক ধ্যানে তাকিয়ে রইলো। কুহু এক চামচ ঝালমুড়ি মুখে দিয়ে মুখ চেপে হাসলো। শাহাদের মুখভঙ্গি দেখে তার হাসি পাচ্ছে। কুহুর হাসি দেখে শাহাদও হাসলো। জিজ্ঞেস করলো- 

"কি কি করলে ভার্সিটিতে? "


কুহু খেতে খেতে ভার্সিটির সম্পর্কে বললো। শাহাদের দিকে তাকিয়ে দেখলো চুল ছুয়ে গাল এবং কানের পাশ দিয়ে ঘাম বেয়ে পড়ছে। ওর খুব ইচ্ছে হলো নিজের ওড়না দিয়ে শাহাদের ঘাম মুছে দিতে।কিন্তু ওড়নার দিকে তাকিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। জরজেট ওড়নার পুরোটা জুড়ে ছোট ছোট পাথর বসানো।এটা দিয়ে শাহাদের ঘাম মুছে দিলে ওর মুখের ছাল চামড়া বোধ হয় উঠে যাবে। শাহাদ কুহুর কথা শুনতে শুনতে নিজেই পকেট থেকে রুমাল বের করে নিজের ঘাম মুছলো, গাড়ির সামনে থেকে পানি এনে পান করলো। 


কুহু কথা বলার পুরোটা সময়ই শাহাদের দিকে তাকিয়ে রইলো। কি সুন্দর শান্ত হয়ে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে মনোযোগ দিয়ে শুনছে।মাঝে মাঝে অল্প হাসছে।কুহুর মনে হলো এই-ই বুঝি মেয়েদের স্বপ্নের পুরুষ। যে শুধু মন দিয়ে সমস্ত অর্থহীন কথাবার্তা শুনবে আর মাথা নাড়াবে।কুহু খুশি হয়ে এক চামচ ঝালমুড়ি শাহাদের দিকে বাড়িয়ে বললো- 


"নিন খান।"


শাহাদ হাত তুলে বললো- 

"আমি এসব খাই না।তুমি খাও।"


শাহাদের বারন কুহু শুনলো না জোর করে শাহাদের মুখে ঝালমুড়ি দিউএ দিলো।এক চামচ দিয়ে তার শান্তি হলো না আরো পর পর কয়েক চামচ দিলো। শাহাদ বউকে খুশি করতে ঝালমুড়ি মুখে নিলো।কুহু খাওয়ানোর সময় পাঞ্জাবির উপর ঝালমুড়ি ফেলেছে সেগুলো ঝেড়ে নিচে ফেললো। কুহু ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলো- 

"মজা না?"


শাহাদ এদিক ওদিক তাকিয়ে গাড়ির কাচ তুলে দিলো। কুহুর দিকে একটু এগিয়ে বসলো।বললো-


" হুম্মম্ম মজা।ঝাল তো খাওয়ালে এখন তবে মিষ্টি খাওয়াও।"


কুহু চোখ পিটপিট করে বলল-

" এখন মিষ্টি কোথায় পাব আমি?"


"চোখ বন্ধ করো দেখাচ্ছি।"


"আশ্চর্য! চোখ বন্ধ করলে দেখব কি করে?"


শাহাদ হতাশ শ্বাস ফেললো।এই মেয়ে কি বুঝে না কোন মিষ্টির কথা বলছে শাহাদ?এত অবুঝ হলে চলবে?শাহাদের হাতে কি এত সময় আছে?ভাগ্যগুণে অপ্রত্যাশিতভাবে বউকে এই সময় কাছে পেয়েছে এই সুযোগ কি সে মিস করবে?কখনোই না,নেভার। শাহাদ অধৈর্য হয়ে নিজেই এসে এক হাতে কুহুর চোখ দুটো আলতো ছুয়ে বন্ধ করে দিলো।


কুহু বাধ্য মেয়ের মতো চোখ বন্ধ করে নিলো। সে বেশ বুঝতে পেরেছে কোন মিষ্টি চাচ্ছে শাহাদ।গত কয়েকদিন এই মিষ্টির অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে তার।তারপরও বুঝেও না বোঝার ভং ধরেছে সে। কথায় আছে এক ইন্দ্রিয় বন্ধ করলে অন্য ইন্দ্রিয়গুলো অনেক বেশি সচল হয়ে যায়। কুহুরও তাই হলো। সে তার নাসারন্ধ্র দিয়ে শাহাদের ঘাম আর পারফিউম মিশ্রিত গন্ধ তীব্রভাবে টের পেলো।অনুভব করলো তার গাল আর গলার কিছু অংশে শাহাদের পুরুষালি হাতের ছোয়া।বাইরে সে ভোলাভালা ভাব ধরে থাকলেও তার বুকের ভেতর যেন হাতুড়ি পিটাচ্ছে।সে ভিতরে ভিতরে নিজেকে প্রস্তুত করলো সেই মিষ্টি মুহূর্তটার জন্য।


চলবে

0 Comments:

Post a Comment