#তুই_শুধু_আমার
পাগলা রাইটার
#শেখ_লাদেন_ইসলাম_তানজিম
#পর্ব_8
👇👇
আঁখি আমার আম্মুর কাছে এসে বলল, আপনাকে আমি আম্মু নাকি আন্টি ডাকব!
আম্মু:- বেশ আজব প্রশ্ন তো?
আমি:- তোমরা একটু এখান থেকে যাও তো. আমার আঁখির সাথে কিছু পার্সোনাল কথা আছে।
বাবা:- তুই যাই বলিস না কেন ওকে আমার ঘরের বউমা করব?
বলতে বলতে বাবা ভিতরে চলে গেল।
আঁখি:- হু গো বল কি বলবে!
আমি:- আমি ভাবতেও পারি নাই তুমি আমার বাড়ি পর্যন্ত চলে আসবে?
আঁখি:- খেলা তো মাত্র শুরু আরো পরে বুঝতে পারবা।
আমি:- বুঝলাম না! আর তোমার এত এত ছেলে থাকতে আমাকেই কেন পছন্দ। অহংকার কি এক সাথে শেষ হয়ে গেছে।
আঁখি:- আমার বাবার টাকা পয়সার অভাব আছে হু। আমি অহংকার না করলে কি তুমি করবে! অহংকার কমে নাই তবে তোমার প্রতি ভালবাসা বেড়ে গেছে।
আমি:- আমি তখন তোমাকে বলছি কি মনে আছে!
আঁখি:- কি বলছিলে!
আমি:- আমি তোমার সাথে তখন অভিনয় করছিলাম। প্রেমের অভিনয়! আমি তো জানতাম তুমি আমার মতো ছেলে জন্য সময় নষ্ট করবে না?
আঁখি:- তুমি এই কথার উওর চাও তো!
আমি:- হু যদি বলি বল, ভাল হত। তুমি হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মেয়ে তোমাকে যদি আমি না করি মনে হয় আমার এই পৃথিবীতে বাঁচার সম্ভাবনা থাকবে না।
আঁখি:- গুড তুমি তাহলে বুঝে গেছ। এখন চল বাহিরে একটু ঘুরতে যাব।
আমি:- কিন্তু আমার মন তো চাচ্ছে না!
আঁখি:- তোমার মন দিয়ে কি আমি পানি খাব, যেতে বলছি না!
আমি:- হু চল। ( কি আর করব বিপদে যেহেতু পড়েছি উদ্ধার তো হতেই হবে)
আঁখিকে নিয়ে বের হতেই দেখি রিয়া আমাদের সামনে এসে দাঁড়াল, সাথে সুমনও আছে!
সুমন;- লাদেন এক কাজ কর রিয়াকেও তোমাদের সাথে একটু ঘুরিয়ে নিয়ে আস। আমার একটু কাজ থাকার কারনে আমি যেতে পারব না!
আমি:- ওকে ভাইয়া।
সুমন চলে যাওয়ার পর রিয়া আমার দিকে ভাল করে তাকিয়ে দেখল। তিনজন মিলে একটা পার্কে গেলাম তবে আঁখিকে রিয়া আমার কাছে তেমন আসতে দেয় না। ও মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
সব শেষে আঁখি বলল ভাবি আমরা একটু আমাদের বাসায় যাব তুমি যাবে।
রিয়া;- না যাব না, তবে ওকে তাড়াতাড়ি বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে কেমন!
আঁখি:- ওকে আপু।
রিয়া:- লাদেন একটু এই দিকে আই তো। (ছোট বোন নাম ধরে ডাকে,, আবার ও নাকি আমাকে ভালবাসে)
আমি একটু আড়ালে গিয়ে বললাম,,হু বল!
রিয়া ঠাসস ঠাস করে আমার গালে দুইটা চর দিয়ে বলল,,কয়টা মেয়ে লাগে তর হু।
আমি:- আরে এখানে আমার কি দোষ আমি কি করেছি ও আমার পিছনে পড়ে আছে?
রিয়া:- পিছনে পড়ে আছে না তাই তো, আজকে তুই আগে বাসায় যা দেখ তর কি অবস্থা করি।
আঁখি:- লাদেন তাড়াতাড়ি কর!
রিয়া:- তাড়াতাড়ি কর না,,তরে যদি ঝাড়ু দিয়ে পিঠাতে না পরি আমার নাম রিয়া না।
আমি রিয়ার থেকে সরে গিয়ে বললাম, বিপদে খালি আমার মাথায় উপরে এসে পড়ে কেন বুঝি না?
আঁখিকে নিয়ে ওদের বাসায় গেলাম, অনেকে গুলো সিকিউরিটি গার্ড আমাকে আঁটকে ধরল,, আঁখি বলল ওর আমার বন্ধু হয় এজন্য ভিতরে যেতে পারছি। ভিতরে গিয়া দেখি ওরে বাবা এত তো কোন বাসা মনে হচ্ছে না। মনে হয় যে কোন রাজমহল। এত এত সুন্দর বলার বাহিরে!
আঁখি:- কি দেখ এদিক সেদিক তাকিয়ে।
আমি:- তোমাদের বাসাটা তো অনেক সুন্দর বলতে হবে!
আঁখি:- এখানে টাকার খেলা হয়েছে বুঝলে, তোমার সাত জন্মের ভাগ্য যে এখানে আসতে পেরেছ?
আমি:- অপমান করলে বুঝি?
আঁখি:- তোমার যদি তাই মনে হয়, তবে তাই করছি আমি। এখন এত কথা বল না তো দেখ তোমার জন্য সব খাবার অপেক্ষা করছে। আমি জানি তুমি সকাল থেকে কিছুই খাও নাই।
আমি একটু খুশি হয়ে বললাম,,তাই বলে এত খাবার এগুলো আমি একা একা কিভাবে খাব।
আঁখি:- খাব বললে হবে না খেতে হবে। আগে যাও তো।
আমি:- কিন্তু একা একা তো খাব না, তুমিও বস!
আঁখি:- না আমি খেয়েছি তুমি বস।
আমি একটা চেয়ার টেনে খেতে বসলাম।
যারা আমাকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে ওরা আমাকে ইশরাতে কিছু বুঝাতে চেয়েছে কিন্তু আমি কিছুই বুঝলাম না। তবে এগুলো সাধারণ খাবারের থেকে আলাদা। বড়লোকদের ব্যাপার আলাদা তো হতেই পারে।
কিছু খাবার খেতেই আর খেতে পারছি না,,আঁখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর মুসকি মুসকি হাসছে।
হঠাৎ দেখি সুমন ভাইয়া নিচে আসল তবে ওনার হাতে একটা বিদেশী কুকুর।
কুকুরটাকে হাত থেকে ছাড়তেই দৌড়ে এসে কুকুরটা আমার পাশের টেবিলে বসে ইচ্ছা মতো খেতে লাগল। আমি এবার খাবার রেখে অভাব হয়ে গেছি। মনে হচ্ছে যেন আঁখি আর সুমন ভাইয়া আমার সাথে কোন গেইম খেলছে।
হা হা করে হাসতে লাগল ওরা দুই ভাই বোন আর আমি তাকিয়ে আছি। বোকার মতো!
আঁখি:- কিরে লাদেন কেমন ভালবাসার অভিনয় তর সাথে করলাম।
আমি:- মানে কি সব কথা বলছ আঁখি?
আঁখি:- তর মতো ছেলেকে আমি এই বাসায় নিয়ে আসব তুই ভাবলি কি করে তরে তো এখানে আনছি অপমান করার জন্য!
সুমন:- তর তো সাহস কম না আমার বোনকে অপমান করিস। আবার আমার বোনের সাথে নাকি ভালবাসার অভিনয় করিস। আজকে তরে কুকুরের খাবার খাওয়ালাম। কি কেমন লাগছে?
এখন মনে যেন আমার চারপাশে পুরো পৃথিবী আপনা আপনি বদলে যাচ্ছে। সত্যি আজকে আমার মতো অসহায় ব্যাক্তি মনে হয় এই পৃথিবীতে একটাও নেই।
কি আর আমি করতাম আমি" এখানে না আসলে ওরা জোর করে আমাকে তুলে নিয়ে হইলেও আসত। ওই বলছি না আজকে এসবের জন্য আমি নিজেই দোষী?
আমি:- সুমন ভাইয়া আপনাকে আমি এত ভালো মনে করতাম আর আপনি?
সুমন;- তর মতো ছেলেকে তো আমি গুলি করে মারতাম। আমার বোনকে অহংকারী বলিস তর তো সাহস কম না। আমার বোন অহংকারী হবে না তো তুই হবি, আমার বোনের টাকা পয়সা কম আছে রে শালার বাচ্চা শালা।
আঁখি:- ভাইয়া ওকে ঘাড় ডাক্কা দিয়ে বের করে দাও। ওকে এখন আমার একটুও সহ্য হচ্ছে না।
সুমন:- আরে যাবেই তো যাবার আগে আমার বোনের পা ধরে মাফ চেয়ে নে। নয়নে জান নিয়ে ফিরতে পারবি না?
আঁখি:- ভাইয়া বুদ্ধি টা তো খুব সুন্দর। এটার একটা পিক তুলে রাখব, কেমন?কিরে দাঁড়িয়ে আছত কেন তাড়াতাড়ি কর না!
বাঁচার মতো আমার কোন রাস্তা নাই ভালো করে বুঝতে পারছি,,
আমি:- please ভাইয়া আমার ভুল হয়েছে আমাকে মাফ করে দেন। (আমিই নিচু হয়ে বললাম, কি আর করব বাঁচতে তো হবেই)
সুমন:- তকে যেটা বলা হয়েছে সেটা করবি নাকি সিকিউরিটি গার্ড ডাক দিব?
এখন আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,, আস্তে আস্তে আঁখির পায়ের কাছে গেলাম।
আঁখি:- ভাইয়া ওকে দেখে আমার একটু মায়া হয়েছে মাফ করে দেই। আর জীবনেও মনে হয় আমাদের সাথে লাগতে আসবে না?
সুমন:- ওর কান্না দেখে আমারোও মায়া হচ্ছে যা তরে মাফ করে দিলাম। এখন তাড়াতাড়ি আমাদের সামন থেকে বিদায় হ যা। নয়লে লাথি মারতে পারি আমি যেকোনো সময়।
আমি:- ভাইয়া একটা কথা বলব,,
সুমন:- তরে যেতে বলছি না আবার বলে একটা কথা বলব।
যেতে যেতে বললাম,, ভাইয়া সময় একদিন সবার আসবে শুরু একটু অপেক্ষা করতে হবে মনে রাখিয়েন।
চোখের পানি মুছে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে লাগলাম,,এখন আমার এমন মনে হচ্ছে, কোন গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা যাই। আজকে কুকুরের সাথে আমাকে তুলনা করা হয়েছে ছিঃ ছিঃ! আমি কতটা জগন্ন হয়ে গেছি। লড়াই তো শুধু করছে ওরা এটা শেষ করব আমি। মরে গেলেই কি সব কিছুর সমাধান যাবে!
বাসায় ডুকে দেখি পরিবেশ একদম নিরব,, আম্মু কোথায় গেছে কি জানি।
রুমে গিয়ে দেখি আম্মু,চাচি আর রিয়া তিনজন হাতে তিনটা ঝাড়ু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি এগুলো না দেখে মন খারাপ করে বিছানায় গিয়ে বসলাম,, আম্মু হয়তো বুঝে গেছে আমার মন খারাপ। আম্মু আমার কাছে এসে বলল কি হয়েছে রে বাবা?
আমি আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলাম।
রিয়া তাড়াতাড়ি আমার পাশে এসে বসে বলল,, লাদেন তর কি হয়েছে কেউ কি তরে কিছু বলছে।
চাচি:- হু বাবা বল তর কি হয়েছে? ওরা তো আবার তর সাথে খারাপ কিছু করে নাই
আমি:- জান আম্মু আমি একটা পুরুষ নামে কলংক? ওরা আমাকে কুকুরের সাথে তুলনা করেছে?
রিয়া: - কি? তর সাথে কি হয়েছে আমাকে একটু বুঝিয়ে বল?
আমি আস্তে আস্তে সব বললাম,,
সব শুনে রিয়া বসা থেকে উঠে গেল,,
চাচি:- কি করিস মা,,এখন আবার কোথায় যাবি?
রিয়া কান্না করতে করতে বলল,,যাকে এত ভালবাসি যার জন্য সবকিছু করছি বিনা দ্বিধায়। আজ সে অপমানিত। ছাড়ব না আমি ওদের কাউকে ক্ষমতা হয়েছে বলে ওরা মানুষকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে অপমান করবে।
চাচি গিয়ে রিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলল,, মারে তুই এসবে গিয়ে জড়িয়ে পড়িস না,,তুই তো জানিস ওদের ক্ষমতা সম্পর্কে।
রিয়া:- তো কি হয়েছে আমার বাবাও একজন এমপি। এটা মনে রাখিও।
চাচি:- তর বাবা তর পক্ষে কথা বলবে তর মনে হয়?
আমি:- please চাচি তোমরা কথা বলা বন্ধ কর,, আমার জন্য কাউকে কিছু করতে হবে না। যাও এখান থেকে। ভুল তো আমি করেছি!
আম্মু:- বাবা দেখ!
আমি:- একটু একা থাকতে দাও আমাকে।
আম্মু আর চাচি আমার কথা শুনে চলে গেল,,রিয়া এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে।
আমি:- বিয়া আমার জন্য চিন্তা করিস না। ওরা আমাকে কুকুর বানিয়ে দিছে, তো আমি কি মরে গেছি,
আজকে আমার কাছে কিছুই নাই। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই ব্যবহার করছে। তবে এই বিপদের সময় একটা কথা বলব রে আমি, তুই খুব ভালো। তর মতো ভাল মেয়ে আমি কমেই দেখছি। মাফ করে দিস রে আমাকে। আমি তর ভালবাসা বুঝতে পারি নাই। জীবনাটা এভাবে চলবে না, আমি বেকার মানুষ এদিক সেদিক ঘুরে জীবন পার করে দিব। আমার সাথে আমি তরে জড়িত করতে চাই না। খুব সুখে থাক দোয়া করি যা!
রিয়া:- অনেক ভালবাসি রে তরে,,একটু জড়িয়ে ধরতে পারি তরে! জোর করব না!
আমি:- বাদ হয়ে গেছি রে আমি. আমাকে জড়িয়ে ধরে কি করবি।
রিয়া আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে ইচ্ছে মতো কান্না করতে লাগল।
রিয়া:- অনেক ভালবাসি রে তরে তুই বুঝলি না। সারাজীবন আমাকে বোন বলেই পরিচয় দিলি। খুব কষ্ট হয় আমার যখন বোন বলিস। আজকে তর এই খারাপ দিনে আমি তরে সাহায্য করতে পারলাম না রে, মাফ করে দিস।
আমার কথা বলার মতো শক্তি নাই সব হারিয়ে ফেলছি আমি চুপটি করে বসে আছি?
রিয়া:- আমি চলে যাচ্ছি তবে তরে আমি কষ্টের মাঝে দেখতে চাই না। তুই তো এটাই চাস আমার বিয়ে হক আমি সুখি থাকি। যা তর কথা মানলাম। ভালবাসার কারনে সবকিছু ত্যাগ করলাম,,ভাল থাকিস।
রিয়া কান্না করতে করতে দৌড়ে চলে গেল,,এই কষ্ট তো আমার। থাক নিজের কষ্ট নিজেই সহ্য করি কাউকে এর মাঝে আমি জড়িত করতে চাই না। দুঃখের পর সুখ আসে এই কথাটা আমার সবসময়েই মনে থাকে। আমারো একদিন সুখ আসবে সেইদিন হয়তো ওরা কষ্টে থাকবে।
এভাবে দুই দিন চলে গেল সব কিছু স্বাভাবিক। এখন কেন জানি নিজেকে ঘর বন্দী করে ফেলেছি।
হঠাৎ একদিন সকালে মিতু কল করল,,এটা দেখে আমার কেমন জানি ভয় হতে লাগল।
কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা ধরলাম,,
মিতু:- লাদেন কি খবর?
আমি:- হু ভাল এই সময়ে যে কল করলি।
মিতু:- তাড়াতাড়ি...........
waiting for next
,,, নামাজ বাদ দিয় না বন্ধু এপারের চেয়ে ওপারের জীবন অনেক সুন্দর,,
0 Comments:
Post a Comment