#টক_ঝাল_মিষ্টি
#তামান্না_আঁখি
#পর্ব-২৫
কপালের ক্ষতস্থানে স্যাভলন ভেজানো তুলা লাগতেই রাহাত দাঁত কামড়ে আর্তনাদ করে উঠলো। জ্বলুনি সহ্য করতে না পেরে সরিয়ে নিতে চাইলো কপাল। আনিশা চোখ গরম করে তাকালো রাহাতের দিকে। তারপর রাহাতের মাথার এক পাশে হাত দিয়ে চেপে ধরলো যাতে রাহাত কপাল সরাতে না পারে। আনিশা আবারো তুলা চেপে ধরলো রাহাতের কপালের ক্ষতস্থানে। রাহাত আর্তনাদ করে উঠে বললো -
"আ...আ.. জ্বলছে তো।"
"স্থির হয়ে বসো তো।পরিষ্কার করে না দিলে ইনফেকশন হয়ে যাবে।"
রাহাত যন্ত্রনায় মুখ কুচকে বসে রইলো।আজ তাদের একটা সমাবেশ ছিলো। নির্বাচনের আগে দলীয় সমাবেশ। প্রথম দফায় বেশ ভালো চললেও বিপত্তি বাঁধলো যখন দলের এক তরুন নেতা বক্তৃতা দিতে শুরু করলো। কোথা থেকে এক মেয়ে এসে দর্শক সারিতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলো ওই নেতা নাকি তাকে সে*ক্সুয়ালি হ্যারেস করেছে।সাথে সাথেই আগে থেকে তৈরি হয়ে থাকা একদল ছেলে উত্তেজিত হয়ে বিশৃঙ্খলা শুরু করে দিলো। চেয়ার তুলে ছুড়ে ফেলতে লাগলো,স্টেজের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে লাগলো। সমাবেশ ভেঙে গেলো। তৎক্ষনাৎ নাজীমউদ্দীনসহ আরো কিছু দলীয় নেতাকে স্টেজ থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। দলের ছেলেরা মা*রামা*রিতে লেগে গেলো। রাহাতের গায়ে এসে পাথরের কিছু ঢিল পড়লো। শেষে রাহাত থাকতে না পেরে হাতে লাঠি নিয়ে নামলো পরিস্থিতি সামলাতে। মেজাজ হারিয়ে কয়েকজনকে আঘাতও করলো। তখন এক ছেলে চেয়ার তুলে আঘাত করলো তাকে। কাঠের চেয়ার ভেঙে কপালসহ আরো অনেক জায়গায় কেটে গেলো। অন্যান্য তরুন নেতারা তাকে এসে সরিয়ে নিয়ে এলো। শেষে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলালো। তদন্ত শেষে জানা গেলো সমাবেশ বানচাল করতেই এরকম ঘটনা সাজানো হয়েছে। মেয়েটা সহ ছেলেগুলো পুলিশ ধরতে পারলেও তারা কারো নাম স্বীকার করে নি। কিন্তু এটা যে বিরোধী দলের চাল ছিলো তা সম্পর্কে রাহাত নিশ্চিত।
আনিশা রাহাতের গাল আর হাতের কাটাছেঁড়া গুলো পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দিলো। বিরবির করে বলল-
"কি দরকার ছিলো মা*রামারির মাঝখানে যাওয়ার? বাবার সাথে চলে আসলে না কেন?"
রাহাত ক্ষুব্ধ কন্ঠে বললো-
"না গিয়ে কি করব!! ওদের এত বড় সাহস সমাবেশে এসে ঝামেলা করে।"
"ভালো করেছো গিয়েছো,এখন তাহলে ভুগতে থাকো।"
আনিশা ফার্স্ট এইড বক্সটা নিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়লো।রাহাত আনিশার হাত হ্যাচকা টান দিয়ে তার কোলে বসালো। দুহাত দিয়ে আনিশাকে আবদ্ধ করে বললো-
"এমন সুন্দরী বউ থাকতে ভুগতে হবে কেন!! দু একটা চুমু দিয়ে যন্ত্রনা উধাও করে দাও তো দেখি।"
রাহাত চোখ বন্ধ করে গাল পেতে দিলো চুমু খাওয়ার জন্য। আনিশা রাহাতের গালের ব্যান্ডেজে আলতো চাপ দিলো।রাহাত "আহ" করে উঠলো।আনিশা বললো-
"তাহলে আগে বললেই পারতে তাহলে আর এত কষ্ট করে ব্যান্ডেজ করতাম না চুমু দিয়েই মামলা ডিশমিশ করতাম।"
"তাহলে এখন মামলা ডিশমিশ করো।"
"ছাড়ো তো,মা এসে দেখবে।"
রাহাত আরো জাপটে ধরে বললো-
"উমহু..মামলা ডিশমিশ না করা অবধি কোর্টরুম বন্ধ হবে না।"
আনিশা হেসে ফেললো। ফার্স্ট এইড বক্সটা রেখে রাহাতের গলা জড়িয়ে ধরলো। রাহাতকে আজ র*ক্তাক্ত দেখে তার আত্না পানিশূন্য হয়ে গিয়েছিলো।যদিও এটাই প্রথমবার না। এর আগেও রাহাতকে অনেকবার র*ক্তাক্ত অবস্থায় দেখেছে, অনেকবার পুলিশেও ধরে নিয়ে গিয়েছে। তখন আনিশা কেঁদেকেটে বুক ভাসাত। কিন্তু এখন আর কাঁদে না কিন্তু চিন্তা হয় তার রাহাতের জন্য।বড্ড চিন্তা হয়।
------------
হাসিব সদর দরজায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে বাগানের দিকে তাকিয়ে আছে। বাগানে হিশাম ছাতার নিচে বসে চা খাচ্ছে। হিশামের পাশে দাঁড়িয়ে আছে তার সেক্রেটারি। তার সাথে ঠোঁট নাড়িয়ে কথা বলছে হিশাম। হাসিব অনেক্ষন থেকেই এখানে দাঁড়িয়ে আছে। অপেক্ষা করছে হিশামের আশপাশ খালি হওয়ার জন্য।কিন্ত খালি আর হচ্ছে না একের পর এক লোক আসছেই হিশামের কাছে।
"দাঁড়িয়ে না থেকে তোমার ভাইয়ের কাছে যাও। "
নারীকন্ঠ শুনে হাসিব ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো তৃপ্তি দাঁড়িয়ে আছে। তৃপ্তি হেসে বলল-
"এভাবে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলে যাওয়ার চান্স পাবে না।একের পর এক আসতেই থাকবে।"
হাসিব কিছুটা আড়ষ্টতা নিয়ে জিজ্ঞেস করলো-
"ভাইয়া কি সবসময়ই এরকম ব্যস্ত থাকে?"
"তা তো থাকেই। দলের সব দায়িত্ব তোমার ভাইয়ের উপর। বাকি সবাই তো দলের নাম ভাঙিয়ে স্বার্থ উদ্ধারের তালে থাকে।"
হাসিব ঘাড় ঘুরিয়ে হিশামের দিকে তাকালো। মনটা খারাপ হয়ে গেলো ওর। রাজনীতির এত বড় ময়দানে হিশাম একা। আগে মাথার উপর বাবা নামক যে একটা বটগাছ ছিলো তাও নেই এখন। এখন সব ক্ষমতালোভীরা হিশামকে ঘিরে রেখেছে। তৃপ্তি হাসিবের কাঁধে হাত রেখে বলল-
"যদি তুমি সত্যিই রাজনীতিতে আসতে চাও তবে তোমার ভাইকে সাহায্য করো।প্রতিশোধের নেশায় ও যেই নোংরা খেলায় নেমেছে তা থেকে ফিরিয়ে আনো। শাহাদ খানের পিছনে ছুটতে গিয়ে ও নিজের জীবন,পরিবার সব ধূলোয় না মিশিয়ে দেয়।"
"এই বদ মেয়ে!! আমার বড় ছেলেটার মাথা খেয়ে সাধ মেটেনি? এখন আমার ছোট ছেলেটাকে ধরেছো?"
বাজখাই গলার আওয়াজে দুজনেই ফিরে তাকালো। দেখলো মঞ্জুরা বেগম এক প্রকার ছুটে আসছে এইদিকে।কছে এসে বললো-
"আবারো তুমি শাহাদ খানের পক্ষে কথা বলছো? ওই খু*নিটা তোমার কি হয়? কি সম্পর্ক বানিয়ে রেখেছো ওর সাথে, শুনি?"
তৃপ্তির মুখ থমথমে হয়ে গেলো। হাসিব মুখ ঘুরিয়ে নিলো। তার মা এখন বিভিন্ন ভাবে নোংরা ইংগিত দিয়ে কথা বলবে, সে এসব শুনতে চায় না।মহিলাদের এসব কূটনামি তার পছন্দ না।সে হাঁটা ধরালো হিশামের দিকে। লোকজন থাকলেও তার এখন হিশামের সাথে কথা বলা দরকার। হিশামের কাছে গিয়ে বললো-
"তোমার সাথে কথা আছে ভাইয়া।"
হিশাম কথার মাঝপথে হাসিবের দিকে তাকালো। সেক্রেটারিকে হাত ইশারা করে চলে যেতে বলে হাসিবের দিকে তাকিয়ে হেসে বললো-
"বস।আসার পর তো তোর সাথে কথাই হয় নি তেমন। কয়দিন থাকবি এবার?"
"আমি একবারে বাড়িতে চলে এসেছি ভাইয়া। আমি এবার থেকে বাড়িতে থাকব।তোমার সাথে রাজনীতি করব।"
হিশামের মুখভঙ্গি বদলে গেলো। শান্ত চোখে তাকালো হাসিবের দিকে। দৃড় কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো-
"এসব সিদ্ধান্ত কে নিতে বলেছে তোকে?"
"আমিই নিয়েছি। রাজনীতি আমার র*ক্তে আছে। এর জন্য আলাদা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন?"
হিশাম সামনের টেবিল থেকে চায়ের কাপটা হাতে নিয়ে চুমুক দিতে দিতে বললো-
"সিদ্ধান্ত নিলেই রাজনীতি করা যায় না।দলে জায়গা করে নিতে হয়,যেটা তুই পারবি না।আর দুদিন বাড়িতে থেকে হলে ফিরে যা। নির্বাচন শেষ না হওয়া অবধি বাড়ি আসবি না।"
"কেন আসব না? এটা আমার বাড়ি। আমার বাড়ি রেখে, পরিবার রেখে অন্য জায়গায় কেন থাকব আমি। আমি বাড়িতেই থাকব, আর দলেও জায়গা করে নিব।।"
ক্ষিপ্ত কন্ঠে কথাগুলো বলে হাসিব বাড়িতে ঢুকে গেলো। হিশাম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে অবাক হয়ে তাকালো হাসিবের যাওয়ার দিকে। হাসিবের মাথায় রাজনীতিতে ঢুকার ভূত কোথা থেকে আসলো তা সে বুঝতে পারছে না। এর আগেও কয়েকবার এই কথা তুলেছিলো কিন্তু তখন ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়া হয়েছে।হাসিবও মেনে নিয়েছিলো।সে মন থেকে এসব পছন্দ করে না।কিন্তু এইবার হাসিবের এত সিরিয়াস হওয়ার কারন হিশাম মিলাতে পারলো না।
------------
কুহু যখন নিজের ঘরে আসলো তখন রাত বাজে প্রায় এগারোটা। খাওয়া দাওয়ার পর নিচে বাড়ির মহিলারা সবাই মিলে আড্ডা বসে। সেখানে আড্ডা দিতে দিতে কখন যে এত রাত হয়ে গেলো টের পায় নি। শেষে রেজিয়া সুলতানা সবাইকে তাড়া দিয়ে ঘরে পাঠিয়েছে। তবুও রাফা রিদি এখনো ঘরে আসে নি। তারা দুজনেই কুলসুমা বেগমের ঘরে গিয়েছে ভূতের গল্প শুনতে।
কুহু ঘরে এসে বিছানার উপর একটা ডালা দেখতে পেলো।ডালাটা ফুল দিয়ে সাজানো। ডালাটার কাছে এসে দেখলো ডালার ভিতর শাড়ি চুড়ি গহনা রাখা। তার উপর একটা কাগজ তাতে লেখা
"Wear them"। কুহু বুঝতে পারলো এটা শাহাদের কাজ। ডালার ভেতর থেকে শাড়ি টা বের করলো। নীল রঙের পাতলা শাড়ি। লজ্জায় কুহুর গাল দুটো রাঙা হয়ে গেলো।এরকম একটা শাড়ি পড়ানোর পিছনে কি উদ্দেশ্য শাহাদের? পরক্ষনেই মুখে একটা হতাশ ভাব ফুটিয়ে ভাবলো উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন সেই উদ্দেশ্য যে শেষ পর্যন্ত বানচাল হবে তা তো নিশ্চিত।
এসব ভেবে ভেবে কুহু শাড়ি পড়ে খুব সুন্দর করে তৈরি হলো। শাহাদের কিনে আনা নীল চুড়ি নীল গহনা পড়লো। আয়নায় নিজেকে দেখলো ভাল করে। তখনি দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ হলো।কুহু উঠে গিয়ে দরজা খুললো। বাইরে কেউ নেই।দরজায় একটা কাগজ লাগানো। কুহু কাগজটা খুলে হাতে নিলো।সেখানে লেখা "come to the roof"। দরজার নবে একটা লাল সুতা প্যাচানো যেটা করিডোর দিয়ে ছাদে চলে গেছে।কুহু লাল সুতাটা হাতে নিলো। হাতে সুতাটা গুটিয়ে নিয়ে আগাতে লাগলো ছাদের দিকে। ছাদের দরজায় আসতেই নজরে পড়লো শাহাদকে। পকেটে হাত গুজে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবুক দৃষ্টি, যেন রাজ্যের ভাবনা এখনি ভেবে নিচ্ছে পরে আর সময় পাবে না।পড়নে সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট কালো শূ। শার্ট ইন করে নি,উপরের তিনটা বোতাম খোলা। চওড়া বুকের অনেকখানি দেখা যাচ্ছে। কয়েকটা চুল কপালের উপর পড়ে আছে অযত্নে।হালকা এলোমেলো চুলে শাহাদকে দেখতে যেন আরো হ্যান্ডসাম লাগছে।
ছাদটা এমনিতেও সবসময় লাইটিং করা থাকে। এখন কিছু ফেইরি লাইট এদিক ওদিক লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। ছাদে ফুল গাছ আছে,সেগুলোও হালকা লাইটিং করা হয়েছে।ছাদের ফ্লোর জুড়ে গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো। কুহু দাঁড়িয়ে থেকে সুতাটা আরেকটু গুটিয়ে হাতের মুঠে নিলো। চুড়ির রিনঝিন শব্দে শাহাদ মুখ তুলে তাকালো। শান্ত মুখশ্রী,স্থির দৃষ্টি। সেই দৃষ্টি একবার কুহুর সর্বাঙ্গে ঘুরিয়ে আনলো। কুহুর পেটের ভিতর পাক দিয়ে উঠলো এমন দৃষ্টি দেখে। সে সাবধানে একটা শ্বাস ফেললো। শাহাদ কুহুর দিকে দৃষ্টি রেখে ঘাড় বাকা করলো।একটা হাত পকেট থেকে বের করে আনলো। কুহু দেখতে পেলো শাহাদের হাতে সুতার অন্য অংশটা প্যাচানো। শাহাদ ধীরে সুস্থে এক হাত নাড়িয়ে সুতাটা প্যাচাতে লাগলো।কুহুর হাতের সুতায় টান পড়লো। সুতার টানে কুহু এগিয়ে যেতে থাকলো শাহাদের দিকে।
যতই এগুচ্ছে ততই তার বুকের ভেতরের ধুকপুকানি বাড়ছে। শাহাদের তেমন কোনো নড়চড় নেই। সে এক দৃষ্টিতে কুহুর দিকে তাকিয়ে ধীরে সুস্থে সুতা প্যাচাচ্ছে। যেন দুজনের একটু একটু করে কাছে আসাটাকে উপভোগ করছে। দুজন এক হাত দূরত্বে আসতেই শাহাদ থেমে গেলো। আচমকা হাতের সুতায় জোরে টান দিলো।এটার জন্য কুহু প্রস্তুত ছিলো না ফলে সে শাহাদের বুকের উপর গিয়ে পড়লো। শাহাদ এক হাত কুহুর চুলের পিছনে রেখে গভীর চুম্বন করলো কুহুর কপালে। কুহু চোখ বন্ধ করে ফেললো আবেশে।
ঠাস করে ছাদের দরজা লাগানোর শব্দ হলো। কুহু চমকে পিছনে তাকিয়ে ছাদের দরজা লাগানো দেখতে পেলো।শাহাদের দিকে তাকিয়ে বলল-
"দরজা লাগিয়ে দিলো কে?"
"রাফা।"
"এখন আমরা নিচে যাব কি করে?"
"যাব না।আমরা আজ এখানে থাকব।"
শাহাদ ডান পাশে ইশারা করে কুহুকে দেখালো।কুহু তাকিয়ে দেখলো ছাদের একদিকে একটা সাদা ধবধবে বেড। বেডের চারপাশের সাদা পর্দা বাতাসে উড়ছে। শাহাদ দুজনের হাত থেকে সুতা খুলে ফেললো।কুহুকে সম্পূর্ণ নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিলো। কোমড়ে শাহাদের হাতের স্পর্শে কুহুর শরীর শিরশির করে উঠলো। পাতলা শাড়ি ভেদ করে ঢুকা শীতল বাতাস সেই শিরশিরানি আরো বাড়িয়ে দিলো। হুট করে ছাদের সমস্ত লাইট অফ হয়ে গেলো। কুহু দুহাতে শাহাদের বুকের শার্ট খামছে ধরলো। জিজ্ঞেস করলো-
"লাইট চলে গেলো কেন?"
শাহাদ হাসির মতো শব্দ করে বললো-
" লাইট লাগবে না। চাঁদের আলো আছে।"
কুহু আকাশের দিকে তাকালো। আসলেই আকাশে চাঁদ উঠেছে।চাঁদের আলোতে সাদা বেডটা দেখতে যেন আরো মোহনীয় লাগছে। কুহু শাহাদের দিকে তাকালো। শাহাদ মৃদু হেসে কুহুর দিকে তাকিয়ে আছে।কুহু তাকাতেই প্রশ্ন করলো-
"প্রেম যেহেতু হচ্ছেই না,তবে পরিনয় হয়ে যাক।প্রেমের আগে পরিনয়ে তোমার আপত্তি আছে?"
কুহু দ্বিধা নিয়ে তাকালো শাহাদের দিকে। খামচি দিয়ে ধরে রাখা শাহাদের শার্টটা আরো শক্ত করে ধরলো৷ শাহাদ শব্দ করে হাসলো। কুহুর নাকের সাথে নিজের নাক ছুয়ে বললো-
"নীল শাড়িতে তোমায় অপরূপ লাগছে কুহু।"
কুহুর সমস্ত অনুভূতি এক বিন্দুতে এসে থেমে গেলো। নিজেকে শাহাদের কোলে অনুভব করলো। কিছুক্ষন পর নিজেকে বেডে আবিস্কার করলো।শাহাদ তাকে বেডে বসিয়ে দিয়ে স্ট্যান্ডের সাথে লাগানো বাকি পর্দাগুলো খুলে দিলো।হালকা বাতাসে উড়তে লাগলো পর্দাগুলো। বাইরের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ন আড়াল হয়ে গেলো দুজন।শাহাদ কুহুর গালে হাত রাখলো। একবার আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে কুহুর দিকে তাকালো। কুহু যেন এফোড় ওফোঁড় হয়ে গেলো সে দৃষ্টিতে। সহ্য করতে না পেরে শাহাদের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো। শাহাদ টাল সামলাতে না পেরে কুহুকে বুকে নিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লো। দুহাত দিয়ে কুহুকে সম্পূর্ণভাবে নিজের বুকে আবদ্ধ করে নিলো।
চলবে
0 Comments:
Post a Comment