গল্প-টক_ঝাল_মিষ্টি পর্ব ৫১

 #টক_ঝাল_মিষ্টি 

#তামান্না_আঁখি 

#পর্ব-৫১


বারান্দার চেয়ারে গালে হাত দিয়ে কুহু বসে আছে।তার দৃষ্টি বাড়ির গেটের দিকে। শাহাদের অপেক্ষায় সে অনেক্ষন যাবত বসে আছে। বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেছে কিন্তু শাহাদ আসছে না। আনুমানিক দুপুর এগারটার দিকে শাহাদ তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে গেছে।এরপর আর কোনো খবর নেই। রেজিয়া সুলতানার কাছে শুনেছে শাহাদ সন্ত্রাসীর হাত থেকে হিশামের পরিবারকে বাঁচাতে গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানতে পেরেছে হিশামের পরিবার ঠিকঠাক আছে। শাহাদ তাদের উদ্ধার করেছে। সে জানিয়েছে হিশামের পরিবারকে সাথে নিয়ে শাহাদ বাড়ি ফিরছে। সেই অপেক্ষাতেই কুহু বসে আছে বারান্দায়। শাহাদের জন্য চিন্তায় তার নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে । দুপুরে রেজিয়া সুলতানা টেনেটুনে কুহুকে খাইয়েছে।


গাড়ির হর্ন শুনে কুহু মাথা উঁচু করে তাকালো।প্রথমে একটা মাইক্রোবাস ঢুকলো।এরপর ঢুকলো কালো রঙের প্রাইভেট কার। গাড়িটা দেখে কুহু চিনতে পারলো। এটা শাহাদের গাড়ি।পিছনে আরো দুটো গাড়ি এসে ঢুকলো। উত্তেজনায় কুহু দাঁড়িয়ে গেল। বুকের ভেতর থেকে ভারী একটা পাথর নেমে গেলো। শাহাদকে নিয়ে বিভিন্ন আজেবাজে চিন্তা এসেছিলো মনে। এসব চিন্তা আরো তাকে অস্থির করে তুলেছিলো। শাহাদের গাড়ি দেখে কুহু নিচে নেমে আসলো। নিচে এসে দেখলো রেজিয়া সুলতানা আর জয়া বেগম সদর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। কুহুও গিয়ে তাদের পিছনে দাঁড়ালো।


শাহাদ হিশামের পুরো পরিবারকে নিয়ে সদর দরজার দিকে এগিয়ে আসছে। তার কোলে রিশাম। দেখে বুঝা যাচ্ছে দুজনেরই খুব মিল হয়ে গেছে। শাহাদ অনেক খুশি রিশামকে কোলে নিয়ে। তার পিছনে তৃপ্তি মঞ্জুরা বেগমকে ধরে ধরে নিয়ে আসছেন। পিছনে একটা হুইল চেয়ারে হাসিবকে নিয়ে আসা হচ্ছে। তার মাথায় ব্যান্ডেজ। ঠোঁটের কোনে দগদগে ঘা হয়ে আছে। গালে আর চোখের চারপাশে রক্ত জমাট বেঁধে কালো হয়ে আছে। তাকে হাসপাতালে রেখে আসতে মন চায় নি শাহাদের। পরিবার ছাড়া একা থাকতে পারবে না ছেলেটা।এম্নিতেই তার উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে। 


রেজিয়া সুলতানা সাদরে গ্রহন করলেন সবাইকে। মঞ্জুরা বেগম একটু লজ্জিত ভঙ্গিতে খান বাড়িতে ঢুকলেন। এই বাড়ির ছেলের মৃ*ত্যু কামনা করে গেছেন সবসময়। আজ সেই ছেলেই তার পরিবারকে বাঁচিয়েছে। শাহাদ ঘরে ঢুকে কুহুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। মৃদু হেসে রিশামকে দেখিয়ে বলল- 


" দেখো কাকে নিয়ে এসেছি। হিশাম ভাইয়ের ছেলে। একদম বাবার মতো দেখতে হয়েছে।"


কুহু শাহাদের দিকে অভিমানী চোখে তাকিয়ে রইলো। তার চোখ দুটো ছল ছল করছে। শাহাদ কুহুর চোখের ভাষা বুঝলো।কুহুর গালে আলতো টোকা দিয়ে বলল-


" এই বাচ্চা ছেলেটার সামনে বাচ্চা মেয়েদের মতো কাঁদবে না।একদম না।"


শাহাদের কথা শেষ হতেই কুহুর গাল বেয়ে মুক্তোর মতো পানি গড়িয়ে পড়লো। অভিমানে ঠোঁট ফুলিয়ে বললো- 

" এত বিপদজনক একটা কাজে যাওয়ার আগে একবারও কি আমাকে বলে যাওয়া যেত না? একটা বার কি নিজের একটা খবর দেয়া যেত না?"


শাহাদ অভিমানী কুহুর কথায় ছোট করে একটা শ্বাস ফেললো। রিশামের গালে চুমু খেয়ে বলল-


" মায়ের কাছে যাও। এরপর চাচ্চু তোমাকে নিয়ে খেলব।"


রিশাম আধো আধো কন্ঠে বললো- 

" প্রমিস?"


শাহাদ রিশামের গাল টিপে দিয়ে বলল- 

"প্রমিস।"


শাহাদ রিশামকে কোল থেকে নামিয়ে দিলো।তারপর কুহুর হাত ধরে তাকে টেনে নিয়ে একটু আড়ালে আসলো। কুহুর গালে হাত রেখে বুড়ো আঙুল দিয়ে চোখের পানি মুছিয়ে দিলো।নরম কন্ঠে বললো- 


"এত কিসের চিন্তা তোমার!! এই সময়ে চিন্তা করে নিজের অযত্ন করছো কেন? তুমি অযথা দুশ্চিন্তা করবে বলেই তোমাকে জানাই নি।"


কুহু যেন আইসক্রিমের মতো গলে গেলো। সে শাহাদের প্রশস্ত বুকে মাথা রাখলো।পাঞ্জাবিতে নাক ঘষে বললো- 

" আপনি দূরে থাকলে আমার খারাপ লাগে। খুব মিস করি। আপনি কাছে থাকলে....."


কুহু পুরোটা কথা শেষ কর‍তে পারলো না।তার আগেই বমি করে দিলো। শাহাদ জলদি কুহুকে ওয়াশরুমে নিয়ে আসলো। কুহু বমি করা শেষ করে বড় বড় শ্বাস ফেললো। কুহুকে বারান্দায় মুক্ত বাতাসে নিয়ে আসলো শাহাদ। একটা চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে সে কুহুর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো। বললো-


"এটা তোমার কেমন বিচার? দূরে গেলে মিস করো।আবার কাছে আসলে বমি করে আমাকে সহ ভাসিয়ে দাও।"


কুহু শাড়ির আচল দিয়ে মুখ মুছে বললো-

"এতে আমার কি দোষ? আপনার ঘামের গন্ধে আমার বমি চলে আসে। সহ্য করতে পারি না।আবার মাঝে মাঝে এই ঘামের গন্ধ পাওয়ার জন্য মাথা খারাপ হয়ে যায়।"


শাহাদ কুহুর পেটে হাত রাখলো।জ্ঞানীর মতো মাথা নাড়িয়ে বললো-

"হুম্মম্ম।।তার মানে এখানে যিনি আছেন তিনি মাঝে মাঝে তার বাবাকে দেখতে চায়,আবার মাঝে মাঝে বাবার উপর রাগে অভিমানে পেট থেকে বমি পাঠায়। তাই তো?"


শাহাদের বলার ভঙ্গিমায় কুহু হেসে ফেললো। হাসি হাসি মুখে বললো-


"ধ্যেত!!যত্তসব আজেবাজে কথা।"


কুহুর মুখে হাসি দেখে শাহাদের সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে গেলো। কুহুকে নিয়ে কিছুক্ষন বারান্দায় বসে থাকলো। এরপর কুহু কিছুটা সুস্থ হয়ে এলে তাকে অন্যদের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে চলে গেলো বমি লেগে নষ্ট হয়ে যাওয়া পাঞ্জাবিটা চেঞ্জ করতে।


---------


কুলসুমা বেগমের ঘরে খাটে বসে মঞ্জুরা বেগম নীরবে চোখের পানি ফেলছেন।কুলসুমা বেগম দুহাতে মঞ্জুরা বেগমের হাত ধরে রেখেছেন। তিনি যথাসম্ভব মঞ্জুরা বেগমকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন। সন্তানের উপর আঘাত আসলে মায়েদের কেমন লাগে এই অভিজ্ঞতা তার নিজেরও আছে। তিনি নরম কন্ঠে বললেন- 


" মন খারাপ করো না। তুমি আমার বউমা দের চেয়ে বয়সে বড় হলেও আমি তোমাকে ওদের মতোই দেখি।  হিশামের বাবার সাথে এই বাড়ির বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক ই ছিলো। বয়সকালে আশফাকের সাথে অনেকবারই হিশামের বাবা আমাদের বাড়িতে এসেছে।বড় ভাই হিসেবে আশফাক খুব মান্য করতো তাকে। এরপর কিভাবে যে বিষ ঢুকে গেলো ওদের মাঝে। তা জানতেও পারলাম না। শত্রুতা দিনে দিনে চরম রূপ ধারন করলো।গন্ডগোলের সময় তৃতীয় পক্ষের কারো গু*লি লেগেছিলো  তোমার স্বামীর।অথচ বাইরের শত্রুরা আমার নাতিকে তোমার স্বামীর খু*নি বানালো।"


এই পর্যন্ত বলে কুলসুমা বেগম থামলেন। মঞ্জুরা বেগমের মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে পরখ করলেন। রেজিয়া সুলতানা আর জয়া বেগম শ্বাশুড়ির মুখ থেকে এমন কথা শুনে মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন।কুহু  এক কোনায় বসে ছিলো এই কথা শুনে সোজা হয়ে বসলো। শাহাদের ব্যাপারে এই কথা সে আরো অনেকবার শুনেছে। কিন্তু সে কখনো শাহাদ কিংবা অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করার সাহস পায় নি।সে শাহাদ কে মনেপ্রাণে ভালোবাসে। শাহাদ যদি এই কাজ করেও থাকে তবুও সে শাহাদকে ভালোবাসবে। শাহাদকে জিজ্ঞেস করলে শাহাদ তাকে সত্য কথাটাই বলবে।শাহাদের মুখ থেকে সে এমন কোনো কথা শুনতে চায় না যা সে  সহ্য করতে পারবে না।তাই সে শাহাদকে জিজ্ঞেস করে নি কখনো। 


তৃপ্তি খাটের এক কোনে বসে ছিলো এই কথা শুনে সে ভয়ে ভয়ে শ্বাশুড়ির মুখের দিকে তাকালো। সে ভয় পেলো মঞ্জুরা বেগম এইখানে কোনো কান্ড না ঘটিয়ে বসে। সবার সামনে শাহাদকে নিয়ে যদি এটা সেটা বলে ফেলে তবে তো অকৃতজ্ঞতা হবে। শ্বাশুড়ির মুখের দিকে সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। 


মঞ্জুরা বেগম মুখ তুলে কুলসুমা বেগমের দিকে তাকালেন।দৃঢ় স্বরে বললেন-

"আমি এতদিন শাহাদকে আমার স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ি করেছি। আমার ছেলের মনে প্রতিনিয়তই শাহাদের নামে বিষ ঢেলেছি।মনে মনে খান পরিবারের ধ্বংস কামনা করেছি।কিন্তু আজকে আমার চরম দুসময়ে শাহাদই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে।আমার স্বামীকে কে বা কারা খু*ন করেছে জানি না।তবে আমি এটা নিশ্চিত শাহাদ এই কাজ করে নি।"


মঞ্জুরা বেগমের মুখে এই কথা শুনে তৃপ্তি খুব সাবধানে  ভেতরে আটকে থাকা শ্বাসটা বের করলো। কুলসুমা বেগম সন্তুষ্ট চোখে তাকালেন মঞ্জুরা বেগমের দিকে। রেজিয়া সুলতানা ছেলের উপর থাকা এতদিনের অপবাদ দূর হয়েছে দেখে খুশি হলেন। তার চোখের কোনে অশ্রু জমলো। দুই পরিবারের মিল হোক এটাই তিনি এতদিন চেয়ে এসেছিলেন। 


হাসিবকে যে ঘরে রাখা হয়েছে সেই ঘরের দরজার সামনে রাফা দাঁড়িয়ে আছে।দরজা খোলাই আছে তবে পর্দা টেনে রাখার কারনে ভেতরটা দেখা যাচ্ছে না। হাসিব আহত হয়েছে এইটা দেখার পর তার খুব খারাপ লেগেছে। রিশাম এতক্ষন তার কাছেই ছিলো। রিশামের সাথে খেলার সময় সে হাসিবের ব্যাপারে অনেক কথা জেনেছে।রিশাম বলেছে তার চাচ্চুর সব থেকে প্রিয় জিনিস হচ্ছে তার বাইক। তার চাচ্চু মিষ্টি জিনিস খেতে খুব ভালোবাসে৷ 


রাফার মুখ হাসি হাসি। তার হাতের ট্রে তে রসমালাই এর বাটি। রান্নাঘরের ফ্রিজ থেকে রসমালাই নামিয়ে নিজে হাতে বাটিতে করে নিয়ে এসেছে। রোগী দেখতে খালি হাতে আসা যায় না। আর এই বাড়ির মেয়ে হিসেবে রোগী দেখতে আসাটা তার কর্তব্য। সে নেহাত কর্তব্য পালন করতে এসেছে তার বেশি কিছু নয়। 


 রাফা হাত দিয়ে পর্দাটা একটু ফাঁক করলো। দেখলো হাসিব খাটের সাথে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। রাফা হাসল। হাসিবের যে মিষ্টি পছন্দ এতে আর কোনো সন্দেহ নেই। মিষ্টি পছন্দ না হলে কি একটা মানুষ দেখতে এত সুইট হয়? হাসিব হালকা মাথা নাড়াতেই রাফা দ্রুত পর্দা থেকে হাত সরিয়ে নিলো।ফলস্বরূপ হাতের ট্রে দেয়ালের সাথে লেগে খট করে শব্দ হলো। ভিতর থেকে ভেসে আসলো হাসিবের গলা-


"কে? কে ওখানে?"


রাফা নাক মুখ কুচকে জিভ কামড় দিলো। হাতে করে রসমালাই তো এনেছে কিন্তু এটা নিয়ে ভেতরে যেতেই ত তার কেমন অস্বস্তি হচ্ছে। হাসিব আবারো দ্বিতীয় বার গলা চড়িয়ে ডাকলো-

"কে ওখানে? দরকার থাকলে ভেতরে আসুন।"


রাফা ট্রে হাতে ভেতরে প্রবেশ করলো। হাসিবের চোখে চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নিলো রাফা। তাড়াতাড়ি হেঁটে হাসিবের বিছানার কাছে গিয়ে দাড়ালো। বেডসাইড টেবিলে ট্রে টা রেখে সেখান থেকে রসমালাই এর বাটিটা হাতে নিয়ে হাসিবের দিকে বাড়িয়ে বললো- 

"নিন।"


হাসিব এতক্ষন বিস্ময় নিয়ে সব দেখছিল।এইবার প্রশ্ন করলো- 

"কি নিব?"


"বাটিটা নিবেন।"


হাসিব বোকার মতো রাফার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো- 

"নিয়ে কি করব?"


রাফার ভ্রু কুচকে গেলো।বিরক্ত হয়ে বললো-

"কি করবেন মানে! খাবেন।"


এটা বলেই সে হাসিবের হাতে জোর করে বাটি ধরিয়ে দিলো। হাতে আঘাত থাকায় হাসিব যন্ত্রণায় শব্দ করে উঠলো।রাফা চমকে গেলো। ভয় ভয় নিয়ে বললো-


"সরি সরি। আমি বুঝতে পারি নি। "


"ইটস ওকে।"


বাটি হাতে নিয়ে দেখলো বাটিতে রসমালাই। এই মেয়ে রসমালাই নিয়ে এসেছে সেটা এতক্ষন বললেই পারতো। হাসিবের আসলেই খুব মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছিলো। সে রসমালাই দেখে খুশিই হয়েছে।রাফার দিকে তাকিয়ে বলল- 

"থ্যাংক্স।"


রাফা গেলো না হাসিব রসমালাই খাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে রইলো। চামচ হাতে নিয়ে রসমালাইটা মুখে তুলতে বেশ কষ্ট হলো হাসিবের। দুটো হাত ই মুচড়ে ভেঙে দিতে চেয়েছিলো নাইমুরের লোকেরা। সেই ব্যথা এখনো রয়েছে।চামচটা ধরে মুখের কাছে নিতে যেন তার সারা শরীর ব্যথায় মুষড়ে পরছে। রাফা হাসিবের কম্পমান হাত খেয়াল করলো।হাসিবের হাতে কালো হয়ে থাকা দাগগুলোই বলে দিচ্ছে ও কতটা গুরুতর আহত।এমন অবস্থায় হাসিবের মা হয়তো তাকে মুখে তুলে খাইয়ে দিত। হাসিবের কষ্ট হচ্ছে ভেবে মনে মনে খুব ব্যথিত হলো সে।


হাসিব রসমালাই মুখে নিয়ে রাফার দিকে তাকিয়ে হাসলো। আবারো বললো- 

"থ্যাংক্স।কষ্ট করে আমার জন্য রসমালাই আনার জন্য।আমার মিষ্টির খুব ক্রেভিং হচ্ছিল।আমার মিষ্টি খুব....."


"জানি আপনার মিষ্টি পছন্দ। রিশাম আমাকে সব বলেছে।কিছু মনে না করলে আমি আপনাকে খাইয়ে দিই? আপনার বোধ হয় কষ্ট হচ্ছে। "


হাসিব এই কথা শুনে অবাক হওয়ার সুযোগ পেলো না।তার আগেই রাফা বিছানায় বসে বাটিটা নিজের হাতে নিয়ে হাসিবের মুখে রসমালাই পুরে দিলো। হাসিব থতমত খেয়ে রসমালাই মুখে নিয়ে রাফার দিকে তাকিয়ে রইলো।রাফা নিজেও নিজের কর্মকান্ডে চমকে গেছে।হঠাৎ করে এই কাজ সে কিভাবে করে ফেললো তা নিজেও বুঝতে পারছে না।হুশ ফিরতেই সে বাটিটা হাসিবের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো।আমতা আমতা করে বললো-


"আপনার কষ্ট হচ্ছিলো তাই খাইয়ে দিলাম।মানুষের কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি না।"


এটা বলেই রাফা এক দৌড়ে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।হাসিব পুরো ঘটনায় তাজ্জব বনে গেলো।মুখের রসমালাই এখনো মুখে নিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে ঠায় বসে রইলো।


চলবে


[ পরবর্তী পর্ব রাত ১১ টায় পাবেন ]

0 Comments:

Post a Comment