গল্প তুই_শুধু_আমার পর্ব ১১ সমাপ্ত
#তুই_শুধু_আমার
পাগলা রাইটার
#শেখ_লাদেন_ইসলাম_তানজিম
#পর্ব_শেষ
👇👇
হঠাৎ দেখি আম্মু আমার রুমে এল।
আম্মু:- কি করিস লাদেন।
আমি:- এই তো শুধু আছি আম্মু। কেন দরকার আছে নাকি!
আম্মু:- একটা কথা বলতাম বাবা।
আমি:- হু বল।
আম্মু:- সেই যে তর খালার বাসা থেকে এলি তখন থেকেই দেখছি তর মনটা ভাল না মনে হয়। খাবার খেতে গেলেও খাবার রেখে চলে আছিস কেন বুঝলাম না।
আমি:- আরে না আম্মু এমনেই।
আম্মু:- সত্যি করে বল কি হয়েছে আমি তো তর মা সব বুঝি।
আমি:- আসলেই আম্মু আমি রিয়াকে ভুল করে বিয়ে করে ফেলেছি। এখন কিভাবে যে কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না।
আম্মু খুশি হয়ে বলল সত্যি তুই রিয়াকে বিয়ে করে নিছত।
আমি:- তোমার মেয়ের সম্পর্কে তো তোমার ধারনা আছেই। কি যে করতে পারে ও আমাকে। কায়দায় ফেলে বিয়ে করে নিছে।
আম্মু:- এখন যে করেই হোক রিয়ার আটকাতে হবে। আমি আমার বউয়াকে তো অন্য করো সাথে দেখতে চাই না।
আমি:- খুব টেনশনে আছি আম্মু আর টেনশন দিও না ভাল লাগছে না।
আম্মু:- কালকেই সব সমাধান হয়ে যাবে তুই দেখে নিস।
আমি:- হ চাচাকে তো তুমি চিন ওনি কেমন মানুষ।
আম্মু:- তর এসব চিন্তা করতে হবে না। এখন ঘুমা কেমন।
আমি:- হু।
আম্মু চলে যাওয়ার পরে শুয়ে পড়লাম। আগে রিয়া আমার বোন ছিল কিন্তু এখন তো ও আমার বিয়ে করা বউ। ওর উপর আমার পুরোপুরি অধিকার আছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি বাড়ির ভিতরে কেমন চেঁচামেচির শব্দ শুনা যাচ্ছে।
তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে দেখি খালামনি চাচার সাথে কথা বলছে। এখন আমি নিশ্চিত হলাম যে আম্মু হয়তো খালামনিকে আসতে বলছে।
তবে এটা শুনতে পারলাম খালামনি আজকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এখান আসতে বলছে। কি একটা মিটিং করে নাকি ওনি। সোফা ছেড়ে আমার কাছে এসে বলল,,তরে ওরা অপমান করছে আমাকে বলবি না আগে। তর খালামনির কি ক্ষমতা নাই নাকি যে ওদের শাস্তি দিতে পারবে না।
আমি:- আম্মু সব বলছে না। বাদ দাও খালামনি। ওদের সাথে অর্যতা ঝগড়া করে লাভ আছে।
আজকে তো আমি সব কয়টা কে উচিত শিক্ষা দিয়ে দিব দেখে নিস। আর রিয়ার জন্য তর চিন্তা করতে হবে না। ও এই বাড়ির বউ হয়ে আসবে আজকেই।
আমি:- অনেক অনেক ধন্যবাদ খালামনি আপনাকে।
দেখতে দেখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে গেছে। সাথে তার ছেলে মেয়েও। তবে ওরা বাকা চোখে আমাকে তাকিয়ে দেখল। চাচার বাসায় আজকে সবাই মিলে একত্রিত হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে বিশাল বড় মিটিং চলছে।
খালামনি:- তো ভাই সাহেব ভাল আছে।
আপনার সাথে এভাবে সাক্ষাৎ হবে আমি ভাবতেও পারি নাই। ভাইয়ের বড় বড় লোকদের সাথে উঠাবসা। আমরা গেলে তো কথা বলার সুযোগেই পাই না।
খালা:- এসব কথা বাদ দেন আগে আমি একটা বিষয় পরিস্কার করি।
চাচা:- কিসের কথা বলছ আপু!
খালা:- তুই এখানে কথা বলবি না। আসলেই দেখেন ভাই মেয়েটার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে আপনার ছেলের সাথে। কিন্তু ও যে একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে আমরা কেউ জানতাম না।
কিসের কথা বলছেন বুঝলাম না তো।
খালামনি রিয়ার দিকে হাত ইশারা করে বলল, ও পেকনেন্ট ।
সবাই অবাক হয়ে রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। সুমনের তো সক খাওয়ার মতো অবস্থা। তবে রিয়া একটু লজ্জা পেয়েছে বুঝতে পারছি। তবে আমি ভাবতেও পারি নাই খালামনি এই কথা বলবেন। চাচা তো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে রিয়ার দিকে।
দেখেন ভাবি বিয়ে ভাঙার জন্য অনেকেই মিথ্যা কথা বলে। তবে আজকালের ছেলে মেয়েরা এই কথা গুলো বেশি বলে। কিন্তু আপনি যেহেতু বললেন আমি একটু পরিক্ষা করে দেখি। আমার সাথে সবসময় একজন ডাক্তার থাকে সবসময়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাতে ইশারা করতেই ডাক্তার এসে রিয়াকে পরিক্ষা করতে লাগল। তবে খালার কপালে ভাঁজ পড়ে গেছে। যদি মিথ্যা হয়। ডাক্তার পরিক্ষা করে বলল,, সত্যি ও পেকনেন্ট। ওনি যা বলছে সব সত্যি ।
এটা শুনে আমি অবাক হয়ে গেছি তবে সত্যি কি আমার সন্তান রিয়ার পেটে। মনে মনে আমি একটু খুশিই হয়েছি। রিয়া লজ্জায় ভিতরে চলে গেল।
খালা:- আরেকটা কথা আমরা ওদের এই অবস্থা দেখে বিয়ে করিয়ে দিছি আপনারা কিছু মনে করবেন না।
চাচা তো কোন কথাই বলছে না চুপচাপ বসে আছেন তিনি।
তবে এখন তাহলে আমরা চলে যাই না।
সুমন:- আমার একটু ওর সাথে কথা ছিল।
আমি:- আমার বউয়ের সাথে তোমার কি কথা হু।
রাগে বললাম, সেই দিনের অপমানের কথা মনে হয়ে গেল।
খালা আমাকে ইশারা দিয়ে বলল চুপ থাকতে। তো এখানে সবাই আসছেন যেহেতু খাবার খেয়েই যাবেন।
খাবার দাবার শেষে খালা বলল, তো আপনি আবার রাগ করেন নাই তো।
আরে না কি যে বলেন আজকালের ছেলে মেয়েরা একটু এমন করেই।
আপনার ছেলেমেয়েদের আমি ইচ্ছে করলেই অপমান করতে পারি কিন্তু তা করব না। কারন আমরা মানুষ আপনার ছেলেমেয়েদের মতো কুত্তা বিলাই না।
হঠাৎ রেগে এই কথা বললেন যে ভাবি।
খালা:- তো কি বলব সেইদিন আপনার ছেলে আর মেয়ে আমার ছেলেকে ভুল বুঝিয়ে আপনার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কুকুরের সাথে খাবার খাওয়াইছে। আর বলছে না খেলে নাকি মেরে ফেলবে। ছিঃ ছিঃ কত নিচু আপনার ছেলে মেয়ে গুলো।
কিরে ওনি যা বলছে সব কি সত্যি।
আঁখি আর সুমন মাথা নিচু করে আছে কোন কথা বলছে না।
ভাবি সাহেব আপনার মনটা অনেক ভালো। যার কারনে ওদের কিছু বলেন নাই। এর বিচার আমি করব সমস্যা নেই পাবেন। আজকে আসি।
সবাই উঠে চলে গেল। এখন শুধু আমাদের পরিবারের সদস্যরা বসা আছে।
খালা মনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,,দেখ কি লক্ষী একটা ছেলে। যার কাছে আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিতেও পর্যন্ত দ্বিধা করি নাই। আর তুই কিভাবে পারলি ছেলেটাকে মারতে। তর তো কোন ছেলে নাই ওকে কি ছেলে মনে করে যাই না রে। কেন তর মেয়েকে ওরা কম ভালবাসে রে। আজোও যদি তর ওদের মেনে নিতে সমস্যা হয় তাহলে বলতে পারিস।
চাচা:- আর আমাকে ছেলে মেয়েদের সামনে লজ্জা দিয় না। আসলেই আমি টাকা নেশায় অন্ধ হয়ে গেছি। সরি লাদেন বাবা মাফ করে দিও।
আমি:- আরে চাচা মাফ করার কি আছে। আপনি তো আমার বাবার মতোই নিজের আপনার চাচা। আপনি কেন মাফ চাইবেন।
বাবা:- তাহলে আজকে থেকে আমাদের সম্পর্ক আরো গভীর হল। সবাই মিলে হাসতে লাগলাম।
আম্মু:- কী গো আমার বউমা কই?
চাচা:- ওকে এখানেই নিয়ে যাবি।
আম্মু:- হু আমার বউমা এখন থেকে আমাদের বাড়িতেই তো থাকবে।
সব সমস্যা সমাধান করে রিয়াকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হল।তবে আম্মু বলছে আমার সন্তান হওয়ার অনুষ্ঠান কয়েকদিন পর বড় করে করবেন। রাতে রুমে গিয়ে দেখি রিয়া এক কোনায় শুধু আছে।
আমি:- কি করিস রিয়া!
কোন কথা নাই ওর মুখে, আমি কাছে গিয়ে দেখি ও কান্না করছে।
আমি:- এই তরে কতবার আমি বলছি না এভাবে কান্না করবি না। কি হয়েছে আমাকে বল তো।
রিয়া:- আমি না তর সাথে অনেক অন্যায় করে ফেলেছি। তুই কি আমাদের সন্তানকে মেনে নিবি।
আমি:- শারীরিক সম্পর্ক কার সাথে করছিলি।
রিয়া:- কেন তর সাথে!
আমি:- তো বাচ্চাটা কার।
রিয়া:- আমাদের।
আমি:- তো বাচ্চাটাকে মেরে ফেলার কথা বলিস কেন। দিব এক চর।
রিয়া আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরল,,সরি রে আমি মনে করছিলাম তুই মেনে নিবি না।
আমি:- মেনে না নেওয়ায় কোন কারন আছে বল!
রিয়া:- আমি কি তর বউ হওয়ার যোগ্য আছি রে।
আমি:- আমার জানা মতো তুই ছাড়া আমার খেয়াল আর কেউ রাখতে পারবে না!
রিয়া:- তাহলে এখন বল আমাকে আর কতদিন তর জন্য আমি অপেক্ষা করব!
আমি:- অপেক্ষা করতে তরে আমি বলছি। তর জিনিস তুই আগের মতো জোর করে আদায় করে নিতে পারিস না!
রিয়া:- না রে আমি আগের মতো ভুল আর করতে চাই না।
আমি:- ভুল করলি দেখেই তো আমাকে পেলি নয়লে পাইতি। তবে এটা মানতে হবে, তুই আমাকে কাছে পাওয়ার জন্য যা করলি অন্য একটা মেয়ে এসব জীবনেও করত না।
রিয়া:- তাহলে এখন তুই বুঝ তরে আমি কতটা ভালবাসি।
আমি:- সত্যি তর মতো হয়তো আমি ভালবাসতে পারব না!
রিয়া:- শুধু পাশে থাকিস তাহলেই হবে। জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর অনুমতি তো পাব।
আমি:- সব অনুমতি তরে দিয়ে দিছি রে পাগলি যখন শুনছি তর পেটে আমার বাচ্চা!
রিয়া:- সত্যি তুই খুশি হলি রে?
আমি:- অনেক অনেক খুশি হয়েছি যা বলার বাহিরে রে।
রিয়া:- ওদেরকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে গল্প এখানেই শেষ করে দে রে । গল্পে নতুন কাহিনী করে আমাকে আর কষ্ট দিস না।
আমি:- কি পাঠকেরা রিয়া তো ঠিকেই বলছে কাহিনী করে আর কষ্ট আমিও দিতে চাই না।
নতুন বছরের শুভেচ্ছা। আসসালামুয়ালাইকুম! সবাই ভাল থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ
সমাপ্ত
,, নামাজ বাদ দিয় না বন্ধু এপারের চেয়ে ওপারের জীবন অনেক সুন্দর,,,
No comments