#তুই_শুধু_আমার
রোমান্টিক লেখক
#শেখ_লাদেন_ইসলাম_তানজিম
#পর্ব_5
👇👇
রিয়াকে বলা হল ও হাত বের করতে কিন্তু রিয়া আমার দিকে একবার তাকিয়ে দেখল। আমি মাথা নিচু করে ফেললাম আমি কি করতে পারি আমি এমনেই ওর জন্য বিপদে পড়ে আছি।
হঠাৎ রিয়া মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেল।
এটা দেখে তো আমার শরীর কাঁপতে লাগল,,যদি কোন নেগেটিভ হয়ে যাই আমি আজকে শেষ বাঁচার মতো কোন উপায় থাকবে না।
আশে পাশে সবাই বলাবলি করছে মেয়ে তো আবার কোন ভাবে কারো সাথে কোন সম্পর্কে লিপ্ত না। হতেও পারে আজকাল ছেলে মেয়েদের বিশ্বাস করতে নাই।
আমি এখন আমার চোখের সামনে নিজের মৃত্যু দেখতে পারছি। চাচা আমার দিকে বড় বড় চোখে তাকিয়ে দেখল।
পরিবেশ স্বভাবিক করার জন্য চাচি উত্তর দিল,
চাচি:- দেখেন কেউ কিছু মনে করবেন না, আমার মেয়ে একটা অফিসে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে গেছিল, তার পরিক্ষার ফলাফল আজকে দিয়েছে বলা হয়েছে ওর চাকুরী হয় নাই! এজন্য ও সকাল থেকে কিছুই খাই নাই। এজন্য মাথা ঘুরে পড়ে গেছে।আর আপনাদের মনে একটা প্রশ্ন ঘুরছে আমার মেয়ের টাকা পয়সার অভাব নাই ও কেন চাকরি করবে তাই তো, আসলেই ওর ইচ্ছে নিজের পায়ে দাঁড়ানো ওর বাবার টাকা দিয়ে ও নিজকে পরিচিত করতে চাই না। আমার মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই আর আমাদের কাউকে না বলে ও চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে যাই। আমি এই কথা জানতাম পারতাম না! লাদেন আজকে আমাকে বলছে ওর বিষয়ে। কি লাদেন ঠিক তো?
আমি আতংকে নিয়ে বললাম,,হে চাচী যা বলছে সব সত্যি আসলেই আমার বোনের কোন তুলনা হয় না হয়তো ও আমার চাচাতো বোন কিন্তু রিয়া একজন সাধারণ মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই। এজন্য ও এমন সকাল থেকে কিছুই খাই নাই,,আমি বলছি হতাশ হওয়ার কিছু নেই!
এখন সবাই বলাবলি করছে ইশ্ এমন একটা মেয়ে যদি আমার ঘরের বউ হত। মেয়েটা খুব লক্ষী বাবার এত টাকা থাকার পরেও ওর কোন অহংকার নেই।
এর মাঝে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলল,, সবাই একটু কথা বলা বন্ধ করুন। আসলেই আমার বৌমার উপর আজকে আমি অনেক খুশি হয়েছি। এত ভাল একটা মেয়ে আমার ঘরের বউ হবে এটা তো আমার সৌভাগ্য,,থাক ও একটু অসুস্থ এখন আমারা বিয়ে কথা বলি। কি বলেন বেয়াই সাহেব।
চাচা:- হে হে।
রিয়ার বিয়ে ঠিক হয়ে গেল আর মাত্র দুই সপ্তাহ পর রিয়ার বিয়ে,,তবে ওর অসুস্থ থাকার কারণে এ্যাংগেজমেন্ট বাদ হয়ে গেছে । আর এদিকে আমার একটা অজানা ভয় হতে লাগল রিয়া পিল যেহেতু খাই নাই সেই হিসেবে যদি আমার অনুমান ঠিক হয় তাহলে ওর পেটে আমার বাচ্চা। না না হে উপর ওয়লা আমাকে তুমি রক্ষা কর। না জানি কি বিপদে আমি ফেসে গেছি। আমার কারনে রিয়ার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে আমি এটা চাই না!
মিতু আমার হাত ধরে বলল,,
মিতু:- চল বেবি সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
তুই ভাবিস না রিয়ার মতো তুইয়েও বেঁচে যাবি আমি থাকতে! কেউ আমার থেকে তকে চিনিয়ে নিতে পারবে না, এটা মনে রাখিস।
আমি:- আমার হাত ছাড় আমি হেঁটে যেতে পারব। সবাই তাকিয়ে দেখছে?
মিতু:- দেখার জন্যই তো তর হাত ধরলাম,, ইশ্ দেখ দেখ দেখ বেচারি রিয়ার মুখটা দেখার মতো হয়েছে না কি লাল হয়ে গেছে। আর আমার মনে হয় কি জানিস যদি রিয়ার পেটে তর বাচ্চা থাকে সেটা খুব তাড়াতাড়ি মেরে ফেলবে আমার মামা তকে এসব নিয়ে চিন্তা করতে হবে না?
আমি:- মিতু আমাকে please তুই মুক্তি দে আমি আর এসব নিতে পারছি না।
খালামনি:- কিরে কই তরা তাড়াতাড়ি আই।
মিতু:- আসছি আম্মু! মুক্তি চাস না যখন রিয়ার সাথে একেই বিছানায় শু'য়ে ছিলি তখন আমার কথা কি তর মনে পড়ে নাই যে ওর মতো আরেকটা মেয়ে আমাকে ভালবাসে।
আমি:- মানছি আমি ভুল করছি তাই বলে তুই এভাবে আমার উপর অত্যাচার করবি। আগের দিন গুলো মনে করে দেখ কতটা সুখি ছিলাম আমরা।
মিতু:- আমি সব ভুলে গেছি! আমার এখন কিছুই মনে নেই। এখন আমি শুধু তর উপর প্রতিশোধ নিতে চাই।
আমি:- প্রতিশোধের নেশায় তুই অন্ধ হয়ে গেছত আমি বুঝতে পারছি!
আমরা গিয়ে খালামনির পাশে দাঁড়ালাম,,আমি আঁখিকে খুঁজতে লাগলাম,,এই তো ওর বাবার সাথে একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। Please please আঁখি এই মূহুর্তে এসে বল আমি তোমাকে ভালবাসি, তুই ছাড়া আমাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না রে বইন! একটু দয়া কর। এত কষ্ট করে তরে পঠাইছি? মনে মনে এসব চিন্তা করছি,,হঠাৎ কে জানি এসে বলল দাঁড়াল হাতে আংক্টি পড়ানোর আগে আখির সাথে আমার কিছু কথা আছে।
এই তো কাজ হয়েছে সাবাস আঁখি, আমাকে বাচালি।
কিন্তু এমা সামনে দেখি একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ওমা এটা আবার কোথায় থেকে এল,,ভাই তুই যেই থেকে আসলি না কেন অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাকে বাচালি। আসলেই মিতুকে বিয়ে করার আমার কোন ইচ্ছে নেই,,আগে মিতু আর এখনের মিতুর অনেক পার্থক্য। তবে আমি বুঝতে পারছি মিতু আমার উপর রেগে এসব করছে।
খালা:- আরে রাসেল তুমি এখানে?
আমি:- খালামনি আপনি ওকে চিনেন!
খালা:- আরে চিনব না কেন? ও তো মিতুর বেস্ট ফ্রেন্ড। সরি বাবা তোমাকে দাওয়াত দেওয়া হয় নাই।
মিতুর দিকে তাকিয়ে দিয়ে মিতুর কপালে হালকা করে ঘাম জমতে লাগল,, আমি বুঝতে পারছি এখানে কোন খটকা আছে। এই তো সুযোগ, সু্যোগ বার বার আসে না লাদেন বাঁচতে চাইলে এই সময় কাজে লাগা।
লাফ দিয়ে ওর কাছে চলে গেলাম,,সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে,, হয়তোবা হঠাৎ লাফ দেওয়ার কারণে।
আমি:- তো মি. রাসেল ভাই এত দূর থেকে তো এবারে আপনি আসার কথা না যদি কিছু জানতে চান বলতে পারেন লুকাবেন না,,আমি কথা দিচ্ছি এখানে কেউ আপনার কিছু করবে না।
রাসেল:- আসলেই হয়েছে কি মিতু আর আমার সম্পর্ক সেই ছোট বেলা থেকেই ওকে আমি ভালবাসি কিন্তু বলতে পারি নাই। মিতু নাকি আপনাকে ভালবাসে কিন্তু ভাই দেখেন ওকে আমি না পেলে মারা যাব। মিতুকে অনেক ভাবে আমি বুঝিতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু ও আমার মনের কথা বুঝে কিন্তু মুখে স্বীকার করে নাই। ভাই আপনার পায়ে পড়ে বলি মিতুকে বিয়ে করবেন না ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না এই দেখেন সাথে বিষ নিয়ে আসছি।
অর্যতা কান্নার ভাব ধরে বললাম,, ছিঃ ছিঃ মিতু একটা ছেলে তরে এতটা ভালবাসে আর তুই কি না!
আসলেই আমি এই এ্যাংগেজমেন্ট ভাঙ্গতে চাই।
খালা;- বাস অনেক হয়েছে আর না ভাইজান আমি মিতুর সম্পর্কে আপনাকে কয়েকদিন পর জানাব আগে এর একটা সমাধান করি। সবাই বাড়িতে চল। আজকে আসি ভাই।
বাবা:- কিন্তু?
খালা:- please ভাইয়া কিছু মনে কর না?
খালা আমার কাছে এসে বলল,,তরে বুঝি খুব কষ্ট দিয়ে ফেললাম,,দেখ আমিও প্রেম করে বিয়ে করছি তাই আমি প্রেমর কষ্ট বুঝতে পারছি,, চিন্তা করিস না আসলেই ছেলেটা প্রতিদিন আমাদের বাড়িতে যেত কিন্তু আমি বুঝতাম না যে ও মিতুর পিছনে পড়ে থাকত,,তাই আমি আগে এই বিষয়টা পরিক্ষা করে দেখতে চাই।
আমি:- জি খালা আপনি যা বলেন তাই হবে।
প্রান ভরে একটা হাসি দিলাম এখন একটু ভালো লাগছে,, কিন্তু একটা বিষয় আমি বুঝলাম না মিতুর সাথে আমার এতদিনের সম্পর্ক কিন্তু ও আমাকে একবারেও বলল না এই কথা?
আমি রাসেলকে একটা ডাক দিলাম,,এই ছেলে এইদিকে আস।
রাসেল:- অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে?
আমি:- ধন্যবাদ পরে আগে বল এখন যা বলছেন সব কি সত্যি আমার তো একটু সন্দেহ হচ্ছে তোমার উপর?
রাসেল:- হু আপনার কথাই ঠিক এখানে বললে রিয়ার মানসম্মান থাকত না,,আর ও এখানে এসে কেমন জানি পরিবর্তন হয়ে গেছে?
আমি:- মেইন কাহিনী বল, ওর সাথে তোমার সম্পর্ক কিসের আর তুমি জান না ও যে আমার গার্লফ্রেন্ড ছিল!
রাসেল:- ও শুধু আপনার নামের গার্লফ্রেন্ড কাজের না বুঝলেন!
আমি:- মানে কি বলতে চাও তুমি?
রাসেল:- দেখেন রাগ করেন না ভাইয়া,,আমি রিয়ার সাথে অনেক বছর ধরে প্রেম করি,, আচ্ছা আপনি ওর সাথে কয়বার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন বলেন তো? আপনার কথাই আমি যদি পা দেই তাহলে বলেন রিয়ার সাথে আপনি কতবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন?
আমি:- কি সব বলছ তুমি প্রেম করে এসব করার মানুষ আমি নয়।
রাসেল:- হা হা,,আজ পর্যন্ত ওর গায়ে হাত পর্যন্ত দিতে পারেন নাই। আর আমি ওর সাথে কত বার যে শারীরিক সম্পর্ক করেছি আমি নিজেও জানি না। মাঝে মাঝে তো ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতাম দূরে কোথাও। আর আমরা একেই রুমে স্বামী স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে থাকতাম।
আমি রাসেলের কথা শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছি না। কি বলে এই ছেলে!
রাসেল:- তবে ভাই বিশ্বাস করেন আমি ওকে অনেক ভালবাসি। কিন্তু এখানে এসে ও আমার ফোনটাও ধরতে চাই না। শুনছি ও নাকি আপনাকে বিয়ে করবে, ও তো আমাকে কথা দিছি মরলে একসাথে মরব বাঁচলে এক সাথে। এখানে এসে ও এতটা আমাকে ইগনোর করল কেন এটাই বুঝতে পারি নাই। আর আজকে এসে শুনি আপনাদের আংক্টি বদল হয়ে যাবে?
আমি:- তবে মিতু কি এতদিন আমার সাথে অভিনয় করে গেছে।
রাসেল:- তবে সেই কথা আমাকে মিতু বলতে না করছে আপনি ওকে জিজ্ঞাস করতে পারেন।
আমি:- হু উত্তর তো আমার জানাই লাগবে। হঠাৎ করে মিতু বিয়েতে রাজি হয়ে গেল কেন? আচ্ছা তুমি যাও খালার সাথে মিতুর সাথে আমার কিছু কথা আছে পরে ও যাবে।
রাসেল:- ভাইয়া আপনি একটু আমার বিষয়টা দেখবেন?
আমি:- ওকে যাও চিন্তা করতে হবে না।
আমি খালাকে ডাক দিয়ে বললাম,, মিতু পরে যাবে তোমরা যাও ওর সাথে আমার কিছু কথা আছে।
হঠাৎ আঁখি আমার সামনে এসে বলল,,
আঁখি:- কি খবর লাদেন সাহেব!
আমি:- যান আপনার সাথে আমার কোন কথা নাই! আপনি আমাকে এভাবে নিরাস করবেন আমি বুঝতে পারি নাই।
আঁখি:- আপনি আমার উপর কেন নজর দিলেন আমি জানি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মেয়ে আমি যদি একটু সুযোগ পাই তাই তো! আমাকে কি আপনার বোকা মনে হয়, ওই সময় আপনার কথা শুনে আমার ভালোই লাগছিল জানেন সবাই আমাকে পটাতে চেষ্টা করে কিন্তু পারে না।
আমি:- নিজেকে কি নায়িকা মনে করেন নাকি?
আঁখি চুল গুলো সামনে এনে বলল,,তাই যদি মনে করি আমি তাই হতে পারব কিন্তু এগুলোর মাঝে আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই,, আপনি ছেলেটা ভালো তবে আপনার লেভেলের কাউকে খুঁজে নিন, তাহলে খুব ভাল হয়। নিচ থেকে উপরে উঠার চেষ্টা করবেন না তাহলে খুব ভালো হয়?
আমি:- অপমান করছেন মনে হয়,,তবে আপনার সাথে কথা বলে আমি যে কতটা ভুল করছি তা এখন বুঝতে পারছি,,তবে একটা সত্যি কথা বলি আপনার সাথে প্রেম করার আমার কোন রুচি বা ইচ্ছে ছিল না? একটা বিপদে পড়েছিলাম, ভাবছিলাম আপনাকে দ্বারা এই এ্যাংগেজমেন্টটা ভেঙ্গে ফেলব, কিন্তু এটা অটোমেটিকলি হয়ে গেছে। আপনাকে লাগে নাই! আর নিজেকে নিয়ে এত অহংকার করবেন না। আপনার পায়ের জুতোর ফিতাটা খুলে গেছে লাগিয়ে দিব।
আঁখি কিছু বলর না,,
আমি:- একটা বিষয় কি জানেন মেম বডলোক কিন্তু মাথা নিচু করতে হয়। পরে উপরে উঠে তাই তো,,ভাল থাকবেন মেম আর পারলে অহংকার কমিয়ে নিবেন। টাকা দিয়ে সব কিনা গেলেও ভালবাসা কিনা যাই না।
সুমন:- ভাইয়া ভালো আছেন।
আমি:- তোমাকে তো খুঁজেই পাওয়া যায় না,,হু আমি ভাল আছি তুমি?
সুমন:- হু ভাইয়া,, আঁখি চল বাবা দাঁড়িয়ে আছে?
আমি:- হু জান মেম ভাল থাকবেন,, আর জুতার ফিতটা একটু বেঁধে নিবেন।
আমি গিয়ে চাচিকে বললাম রিয়াকে আমার রুমে পাঠাতে,,বলছি বোন হিসেবে কয়েকটা কথা বলব সন্দেহ করবেন না। ওর ভালোর জন্যই বলব।
আমার রুমে এখন আমার তিনজন ছাড়া আর কেউ নাই আমি রিয়া আর মিতু,, আজকে যে করেই হোক সব সমস্যা সমাধান করতে হবে!
আমি ওদের দুইজনকে,,
waiting for next
,, নামাজ বাদ দিয় না বন্ধু এপারের চেয়ে ওপারের জীবন অনেক সুন্দর,,
0 Comments:
Post a Comment