1t/Banner 728x90

গল্প-টক_ঝাল_মিষ্টি পর্ব ৫০

 #টক_ঝাল_মিষ্টি 

#তামান্না_আঁখি 

#পর্ব-৫০


তলপেটে ঘুষির তীব্র আঘাতে হাঁটু ভেঙে  পড়ে গেলো হাসিব। ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হচ্ছে তার। মুখের ভেতরেও নোনতা লাগছে।হয়তো মুখের ভেতরে গালের সাথে দাঁত লেগে কেটে গেছে। হাসিব হাঁটু ভেঙে পড়ে গেলেও নাইমুরের রাগ কমলো না। সে হাসিবের চুল ধরে মাথাটা উঁচু করলো। অশ্রাব্য একটা গালি দিয়ে বলল- 


"একাউন্ট গুলো থেকে টাকা গুলো আমার একাউন্টে ট্রান্সফার করে দে, চলে যাব। কেন শুধু শুধু সময় নষ্ট করছিস।"


হাসিব রক্তাক্ত মুখ নিয়ে নিভু নিভু চোখে মা আর ভাবির দিকে তাকালো। দুজনেই কান্না করছে। তার মা হিশামের একটা হাত আকড়ে ধরে ফ্লোরে বসে আহাজারি করছে। হাসিব ঢোক গিললো।গলাটা শুকনো ঠেকলো। এক গ্লাস পানি পেলে ভাল হতো। হাজার মা*র খেলেও সে কিছুতেই টাকা দিবে না। এই টাকা গুলো দিয়ে দেয়া মানে তার পরিবার ধ্বংস হয়ে যাওয়া। হিশামের চিকিৎসা থেকে শুরু করে সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। তাকে মে*রে ফেললেও এক টাকাও সে দিবে না।


নাইমুরের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলো। হাসিবের চুল মুঠো করে ধরে বলল- 

" ফাইন। তাহলে তোর পরিবারের সবাইকে একে একে মা*রব।প্রথমে মা*রব এই ছোট্ট ছেলেটাকে। এরপর দেখি তুই টাকা না দিয়ে কিভাবে থাকিস।"


নাইমুর হাসিবকে ছেড়ে দিয়ে ফ্লোর থেকে রিভ*লবার তুলে নিয়ে সেটা তাক করলো রিশামের দিকে। তৃপ্তি ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে পুরোপুরি রিশামকে ঢেকে ফেললো।সে কিছুতেই ছেলের গায়ে গু*লি লাগতে দিবে না। মঞ্জুরা বেগম নাতির নাম ধরে চিৎকার করে উঠলেন।তবে কি ছেলের শেষ চিহ্ন টুকুও হারিয়ে ফেলছেন তিনি। 


হঠাৎ করে নাইমুরের হাতের রিভ*লবার ছিটকে পড়ে গেলো হাত থেকে। সেই সাথে প্রচন্ড যন্ত্রণায় নাইমুর চিৎকার করে উঠলো। তাকিয়ে দেখলো রিভ*লবার হাতে শাহাদ ঢুকেছে, সে-ই গু*লি করেছে তার হাতে।শাহাদের সাথে এসে ঢুকলো কতগুলো গার্ড আর দলের কিছু ছেলে।গার্ডগুলো প্রথমেই নাইমুরের চ্যালাগুলোকে ধরলো।অভিজ্ঞ হাতে চ্যালাগুলোকে ধরাশায়ী করে রুমের বাইরে নিয়ে গেলো।চ্যালা গুলো এতক্ষন হাসিবের দুটো হাত ধরে রেখেছিলো।তাদের কাছ থেকে হাসিব ছাড়া পেতেই ঢলে পড়লো ফ্লোরে। নাইমুর মুহুর্তের মাঝে অন্য হাত দিয়ে পকেট থেকে আরেকটা রিভ*লবার বের করে তাক করলো শাহাদের দিকে। 


শাহাদ তার নিজের রিভ*লবার নামিয়ে ফেললো। শান্ত কন্ঠে বললো- 

" তুই যদি আর কিছু না ঘটিয়ে ভদ্র ছেলের মতো এখান থেকে বের হয়ে যাস, তবে আমি এইসব কিছু ভুলে যাব।"


নাইমুর রিভ*লবার টা নাড়িয়ে কিড়মিড়িয়ে বললো- 

" আমাকে বোকা পেয়েছিস নাকি।আমি তোর কথা মানি আর আমাকে পুলিশে ধরুক। যদি ভেবে থাকিস আমাকে কব্জা করবি তবে ভুল। আমি ধরা দেয়ার আগে এদের সবকয়টাকে পরপারে পাঠিয়ে তারপর ধরা দিব। তাই  যদি এদের বাঁচাতে চাস তবে আমাকে পালানোর সুযোগ করে দে।"


তমাল আরেকটা ছেলেকে সাথে নিয়ে হাসিবকে ফ্লোর থেকে তুলে তাড়াতাড়ি কেবিনের বাইরে নিয়ে যেতে চাইলো। হাসিবের এখন ট্রিটমেন্ট এর প্রয়োজন।কিন্তু হাসিবের গায়ে হাত দিতেই নাইমুর ফাঁকা গু*লি ছুড়লো।বললো-


"কেউ এখান থেকে কোথাও যাবে না। এরকম করলে আমি কিন্তু হিশামকে মে*রে ফেলব।"


নাইমুর এক লাফে হিশামের মাথার কাছে গিয়ে উপস্থিত হলো।রিভ*লবার টা হিশামের কপালে ঠেকিয়ে সবাইকে শাসালো।শাহাদ চমকালো না। এরকমটা নাইমুর করবে সে জানতো। তাই সে তৈরি হয়েই এসেছে। এখানে আসার আগে স্নাই*পার সেট করে এসেছে।এই ঘরের কাচের জানালাটা দিয়ে খুব সহজেই নাইমুরকে টার্গেট করতে পারবে তারা। তারা না পারলেও শাহাদ নিজে শু*ট করবে নাইমুরকে৷ তাও হিশাম বা তার পরিবারের কারো ক্ষতি হতে দিবে না।


নাইমুর বড় বড় চোখ করে এদিক ওদিক সবার দিকে তাকিয়ে বলল- 

" আমাকে আটকে লাভ নেই। মনসুর আলী এখনো আছে। সে অবশ্যই আমাকে উদ্ধার করতে আসবে।"


নাইমুরের কথাটা শেষ হতেই স্থানীয় থানার ওসি তার  পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঢুকলো। পুলিশের পিছু পিছু বীরদর্পে এসে ঢুকলো মনসুর আলী। তার মুখ হাসি হাসি। বুঝাই যাচ্ছে সে নাইমুরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।


 নাইমুর বিস্ফোরিত চোখে তাকালো মনসুর আলীর দিকে। এতক্ষন সে ভেবে পাচ্ছিলো না শাহাদ কি করে এইখানকার খবর পেলো। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে খবর পাওয়ার কোনো কারন নেই।কারন সে এখানে আসার আগে লোক পাঠিয়ে হিশামের কেবিন থেকে শুরু করে করিডোর সবখানের সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো করে দিয়েছে।এরপরও শাহাদ কি করে খবর পেয়েছে তা নিয়ে তার মনে দ্বন্দ্ব ছিলো।তবে এখন সব পরিষ্কার বুঝতে পারছে সে। মনসুর আলী খবর দিয়েছে শাহাদকে। এরপর নিজ দায়িত্বে পুলিশ ডেকে এনেছে নাইমুরকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য।


নাইমুর অবিশ্বাসী চোখে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।তার উচিত হয়নি এই বিশ্বাস ঘাতককে জানানো। টাকার ভাগ পাবে না বলে নাইমুরকেও তা পেতে দিবে না। হয়তো আরো অনেক বড় প্ল্যান করছে এই মনসুর আলী। আর সেই প্ল্যানের ছাগল হয়েছে নাইমুর। তবে নাইমুর এত সহজে হাল ছেড়ে দিবে না। কোনঠাসা যেহেতু হয়েছেই তবে সবাইকে নিয়ে মর*বে সে।


শাহাদের পাশে দাঁড়ানো তমাল মধুর একটা হাসি দিয়ে নাইমুরের দিকে তাকিয়ে বললো- 

"এই নে, আসছে তোরে উদ্ধার করতে তোর মনসুর আলী।"  


নাইমুর মনসুর আলীর দিকে তাকিয়ে বলল- 

" বিশ্বাসঘাতকতা করে ছাড় পাবি না।আমি তোকে খু*ন করবো।"


মনসুর আলী নরম সুরে অভিনয় করে বলল- 

"বাবা নাইমুর, এখনের সময়টা খুনোখু*নির না। এসো আমরা মিলেমিশে থাকি। হিশাম বাবার কাছ থেকে সরে এসো।শাহাদ বাবাজী তোমায় ক্ষমা করে দিবে।"


নাইমুর কিড়মিড় করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করলো মনসুর আলীকে। মনসুর আলী  আস্তাগফিরুল্লাহ বলে জিভ কামড় দিলো। 


শাহাদ সচেতন চোখে তাকিয়ে আছে নাইমুরের দিকে। নাইমুরের প্রতিটা পদক্ষেপ সে মেপে নিচ্ছে। সামান্য একটু সুযোগ পেলেই সে কাজে লাগাবে। নাইমুর এখনো রিভ*বারটা হিশামের মাথায় ঠেসে ধরে রেখেছে। সে হুংকার ছেড়ে বললো-


"শেষ বারের মতো বলছি আমাকে টাকাগুলো দিয়ে দে। এরপর এখান থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দে। নয়তো আমি একা ম*রব না।এক দুইজনকে মে*রে তারপর মর*ব।"


তারপর শাহাদের দিকে তাকিয়ে বললো-

"তুই ভেবেছিস আমাকে ফাসিয়ে তুই বাচতে পারবি? আন্ডারওয়ার্ল্ড এ আমার লোক আছে। তোর পরিবারকে ওরা বাঁচতে দিবে না। তোর বউকে তুলে এনে আমোদ ফূর্তি করবে ছেলেরা।"


পরিবারের কথা শুনে রাগে দাঁতে দাঁত লেগে গেলো শাহাদের। ধারালো চোয়াল আরো শক্ত হয়ে গেলো। গালের খোচা খোচা দাড়িগুলো আরো দৃশ্যমান হলো। তার হাতে ধরা রিভ*লবার টা দিয়ে নাইমুরের খুলি ফাটিয়ে দিতে ইচ্ছে হলো।কিন্তু সে নিজেকে দমন করলো। পুলিশের সামনে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার ভুল সে করবে না।সে নাইমুরকে অমনোযোগী করার জন্য বললো-


" আমি তোকে টাকা পয়সা সহ আন্ডারওয়ার্ল্ড এ ফিরে যেতে দেব। বল এই জন্য কি করতে হবে?"


"পুলিশ আর তোর লোকদেরকে হাসপাতাল এরিয়ার বাইরে পাঠাতে হবে।এরপর আমার সব লোককে আমার কাছে নিয়ে আয়।আর তোদের সবার অস্ত্র গুলো আমাকে দিয়ে দিতে হবে।"


মনসুর আলী ভয় পেয়ে গেলো। নাইমুর এখান থেকে ছাড়া পাওয়া মানেই তার আর বেঁচে থাকার আশা নেই। সে অস্থির হয়ে শাহাদ কে বললো-

"এত বড় ক্রিমিনাল কে ছেড়ে দিবে মানে? এই জন্য তোমাদেরকে ডেকে এনেছি আমি?"


নাইমুর গর্জন করে উঠলো। হিশামের মাথা থেকে রিভ*লবারটা সরিয়ে মনসুর আলীর দিকে তাক করে বলল- 

"তোকে আমি পরে মা*রতে চেয়েছিলাম।কিন্তু এখন দেখছি তোকে আগেই সরাতে হবে।"


শাহাদ এই সুযোগটার অপেক্ষায় ছিলো।নাইমুরের রিভল*বার হিশামের মাথায় ধরা নেই। তাই এখন তাকে আক্রমণ করলে হিশামের গু*লি লাগার চান্স নেই।শাহাদ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তমালকে ইশারা করলো।তমাল এক হাঁটু মাটিতে রেখে আরেক হাঁটু উঁচু করে বসে পড়লো। শাহাদ সেই হাঁটুতে পা রেখে লং জাম্প করলো। নাইমুর কিছু বুঝে উঠার আগেই শাহাদ লাফ দিয়ে নাইমুরের নাকে ঘুষি বসিয়ে দিলো। এত দূর থেকে উড়ে এসে শাহাদ এমন ঘুষি দিলো যে নাইমুর ছিটকে পড়ে গেলো ফ্লোরে।মুহুর্তের মাঝে তমালসহ অন্যান্য ছেলেগুলো এসে নাইমুরের উপর চড়াও হলো। কিন্তু নাইমুর এত সহজে বশ মানলো না। সে উঠে দাঁড়িয়ে ছেলেগুলোর সাথে লড়াই করলো। 


শাহাদ তখন হিশামের দিকে মনোযোগ দিতে ব্যস্ত।হিশামকে চোখ খোলা অবস্থায় দেখে শাহাদ হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। এই সময় নাইমুর এসে তার পিঠে লাথি দিলো।শাহাদ হিশামের উপর উপুড় হয়ে পড়লো। হিশামের মুখে থাকা নলে টান পড়ায় তার মাথার কাছের মেশিনগুলো বিপ বিপ শব্দ করতে লাগলো। নাইমুর মুহুর্তেই বুঝে ফেললো তার কি করা উচিত। সে মেশিনটার দিকে হাত বাড়ালো। কিন্তু শাহাদ ক্ষিপ্র গতিতে তাকে ধরে ফেললো। এইবার আর নাইমুরকে কোনো দয়া দেখালো না৷ নাইমুরের তলপেটে প্রচন্ড জোরে আঘাত করলো। তীব্র আঘাত পেয়ে নাইমুর পেট ধরে উবু হয়ে গেলো। ঘুষির তীব্রতায় মুখ ভর্তি বমি করে দিলো।শাহাদ তাও থামলো না। নিচু হয়ে থাকা নাইমুরের মুখে কান বরাবর ঘুষি দিলো। 


পেটে তীব্র যন্ত্রণা সেই সাথে গলা ছিড়ে বমি। তার পর কানের কাছে শাহাদের ঘুষি পড়েছে।এত কিছু একসাথে সামলাতে পারলো না নাইমুর। সে চিৎ হয়ে পড়ে গেলো ফ্লোরে।


 শাহাদের রাগ তখন আকাশ ছুয়েছে।এতক্ষন নিজেকে আটকে রাখলেও এখন আর পারলো না।সে নাইমুরের বুকের উপর বসে একের পর এক ঘুষি দিতে লাগলো তার মুখে। নাক মুখ ফেটে রক্ত বের হতে লাগলো নাইমুরের। তমালসহ অন্যান্য ছেলেরা এসে শাহাদকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলো কিন্তু শাহাদের শরীরে যেন অসুরের শক্তি। সে তার বিগত দিনের সমস্ত রাগ উগলে দিতে চাচ্ছে নাইমুরের উপর। শেষমেষ থানার ওসি এসে শাহাদকে ছাড়িয়ে নিলো।


 মৃতপ্রায় রক্তাক্ত নাইমুরকে গ্রেপ্তার করে দুজন কন্সটেবল ধরাধরি করে নিয়ে গেলো বাইরে। শাহাদ হিশামের বেডের কাছে এসে হাঁপাতে লাগলো।তার সাদা পাঞ্জাবি তে রক্তের ফোটা পড়েছে। হিশামের মেশিনটা এখনো বিপ বিপ করছে।সে তমালকে ডক্টর ডেকে আনতে বললো।আর দুটো ছেলেকে বললো হাসিবকে ইমার্জেন্সি তে নিয়ে যেতে। মঞ্জুরা বেগমের কাছে এসে তাকে ফ্লোর থেকে তুলে সোফায় বসালো।মঞ্জুরা বেগম এখনো ফুপিয়ে কাঁদছেন। তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে বলল- 


" কান্না থামান ভাবি। হিশাম ভাই তাকিয়েছে মানে তার জ্ঞান আছে, তিনি সব শুনছেন। জ্ঞান ফিরে পেয়ে তার অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। এইটা খারাপ প্রভাব ফেলবে তার উপর। আপনি ভাইয়ের কাছে গিয়ে বসুন।কিছু ভাল ভাল কথা বলুন।"


তৃপ্তি শাহাদের কথায় আশার আলো পেলো।সে ছেলেকে বুকে নিয়ে হিশামের কাছে গিয়ে বসলো। হিশামের হাত নিয়ে তার গালে ছুয়ালো।


শাহাদ সবাইকে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলো।বাইরে এসে মনসুর আলী হাসি হাসি মুখে তার কাছে এসে বললেন-


" ওকে এইভাবে শাস্তি দিয়ে খুব ভাল করেছো বাবা। এই বার আমরা সবাই বিপদমুক্ত। "


শাহাদ স্থির চোখে মনসুর আলীর দিকে তাকালো। মনসুর আলীর মুখে যেন হাসি ধরছে না। নাইমুরকে প্ল্যান অনুযায়ী সরিয়ে দিতে পেরে সে খুব খুশি।শাহাদ হালকা একটু হাসলো। এরপরেই সপাটে একটা চড় বসিয়ে দিলো মনসুর আলীর গালে। এই বয়সে এত শক্ত চড় খেয়ে মনসুর আলীর মাথা ঘুরে গেলো।পড়ে যেতে নিতেই দুটো ছেলে এসে তাকে পিছন থেকে ধরে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিলো। চড়ের তীব্রতা খানিকটা কমে এলে মনসুর আলী অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো।তার গালটা পুড়ে যাচ্ছে। শাহাদ আঙুল উঁচিয়ে বললো-


"তোকে জেলে না পাঠানো পর্যন্ত আমরা কেউ বিপদমুক্ত না।"


মনসুর আলী আকাশ থেকে পড়লেন এমন ভাব নিয়ে বললেন-

"এসব কি বলছো বাবা।তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে যে আমাকে আবার দলে নিবে।আমি সেজন্যই নাইমুরের প্ল্যানের কথা তোমাকে জানিয়েছি।"


শাহাদ চোখ মে*রে বললো-

"মিথ্যে বলেছিলাম আংকেল।আমি অনেক বড় মাপের মিথ্যুক। "


মনসুর আলী রেগে গেলো।চোয়াল শক্ত করে বলল- 

" আমাকে কোন অপরাধে তুমি জেলে দিবে?"


 " আপনার অপরাধ আপনি আমার বাবাকে ট্রাক চাপা দিয়ে খু*ন করতে চেয়েছিলেন। আপনি হিশাম চৌধুরীর অনেক টাকা বাজেয়াপ্ত করেছেন। নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি করার চেষ্টা করেছেন। একটা মাফিয়াকে সাথে নিয়ে মানুষকে মে*রে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।আরো শুনতে চান?"


মনসুর আলীর চোখ রক্তবর্ন হয়ে গেল।নিজেকে সামলে নিয়ে কঠিন স্বরে বলল- 

"এসবের কি প্রমান আছে তোমার কাছে?"


শাহাদ মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল- 

" সেই ট্রাক চালক ধরা পড়েছে। নাইমুর ট্রাক চালককে মে*রে ফেলতে চেষ্টা করেছিলো কিন্তু পারেনি।সেই সাথে হিশাম ভাইয়ের সেক্রেটারি আপনার আর নাইমুরের সেদিনের কথা গুলো শুনেছিলো। আর বাকি প্রমান আদালতে পেশ করব।"


মনসুর আলী বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে। শাহাদ এত কিছু জেনে গেছে সে ভাবে নি।সে নাইমুরকে ধরিয়ে দিয়ে শাহাদের দলে আবারো ফিরতে চেয়েছিলো। তারপর সুযোগ বুঝে শাহাদকে ছোবল মা*রবে ভেবেছিলো। 


শাহাদ দলের দুটো ছেলেকে ইশারা করে বললো-

"নিয়ে যা এনাকে। আন্ডারওয়ার্ল্ড এর ইঁদূর নাইমুরকে নিয়ে পুলিশ অফিসার এত ব্যস্ত যে এই চামচিকার কথা ভুলে গেছে।"


দুটো ছেলে দুদিক থেকে মনসুর আলীকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যেতে লাগলো। মনসুর আলী হঠাৎ কাঁদো কাঁদো কন্ঠে অনুনয় করে বলতে লাগলো-

" বাবা শাহাদ, এই সব কিছু আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সব নাইমুরের ষড়যন্ত্র। সে সমস্ত টাকা একা ভোগ করার আশায় আমাকে দোষী বানিয়েছে। "


শাহাদ এসব কথায় কান দিলো না।তার এখন হাসিবের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। ডক্টর খানিক আগেই হিশামের কেবিনে ঢুকেছে।এতক্ষনে নিশ্চয়ই হিশামের জ্ঞান ফেরার বিষয়ে তারা পরিক্ষা নিরিক্ষা চালাচ্ছে। শাহাদ দ্রুত পা চালালো ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের দিকে। হাসিবের সুস্থতা নিশ্চিত করে এরপর সে হিশামের কাছে আসবে।


চলবে

No comments

Powered by Blogger.