গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ২২

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_২২

#লিখনিতে_Rodela_Islam


--------পরের দিন সকালে--------

তুলি ঘুম থেকে উঠে বসতেই তুলির চক্ষু চড়কগাছ।তুলি চোখ কোচলে পুরো ঘরটাকে ভালোকরে দেখে অবাকের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায়। পুরো ঘরে রং বেরং এর বেলুন দিয়ে সাজানো। তুলি এদিক ওদিক তাকিয়ে কাওকে খুঁজছে। সে জানে এসব কার কাজ। 

তমাল তুলির কাছে এসে তুলির সামনে বসে এক সাথে অনেক গুলো বেলুন বেধে তুলির ওর হাতে দেয়। 


--তমাল:: Good Morning Janpakhi 

--তুলি:: Good Morning. 

--তমাল:: কেমন হয়েছে সাজানো....??

--তুলি:: ভালো কিন্তু। কেনো সাজিয়েছো এমন করে...??

--তমাল:: কাল তুই এই বেলুনের জন্য আমাকে রেখে চলে গিয়েছিলি তাই তোর জন্য নিয়ে এসেছি। জানপাখি তোর কোন কিছু লাগলে আমাকে বলিস আমি সব এনে দিবো কিন্তু আমার থেকে দূরে যাস না কোথাও। 


--তুলি:: তাই জন্য এগুলো করবে। 

--তমাল:: হুম করবো আগে তো তোর কোন পছন্দের কথা ভাবি নাই তাই কিছু করি নি কিন্তু এখন থেকে তোর পছন্দের সব জিনিস আমি এনে দেবো।

--তুলি:: সব দিবে...?? 

--তমাল:: হুম কি চাস সেটায় দিবো কি চাই  বল। 

--তুলি:: তাহলে আমার রিংটা দাও। যেটা তুমি সেদিন খুলে নিয়েছিলে। 

--তমাল:: ওইটা তো আমি ফেলে দিয়েছি। 

--তুলি:: কি.......ফেলে দিয়েছো কোথায়.....??

--তমাল:: হ্যাঁ ফেলে দিয়েছি আমি চাই না তুই আমার দেওয়া জিনিস ছাড়া অন্য কারো কিছু তুই নিতে পারবি না। 


--তুলির চোখ ছলছল করছে শুধু পানি গড়িয়ে পরার অপেক্ষা 

--তমাল:: তুলি তুই ওই রিংটার জন্য আবার কাদছিস কেনো কি আছে ওটাতে।আচ্ছা চল আজকেই তোকে নতুন রিং কিনে দিবো।

--তুলি:: না আমার নতুন রিং চাই না। ওটাই চাই আমার। 

--তমাল:: আগে বল ওই রিংটার জন্য কাদছিস কেনো। 

--তুলি:: (কাদতে কাদতে বলে ) ওই রিংটা তুমি আমায় দিয়েছিলে ওটা আমার খুব পছন্দের রিং ছিলো। তোমার দেওয়া প্রথম গিফ্ট ছিলো আমার জীবনের সব সৃতির সাক্ষী ওটা আমার না বলা অনুভুতির সঙ্গী। 


--তমাল:: সেদিন কেনো বলিস নি ওটা আমি দিয়েছি আমি তো রাহাত দিয়েছে ভেবে ফেলে দিয়েছিলাম।

--তুলি:: দিয়ে দাওনা রিংটা প্লিজ। 

--তমাল:: ওকে দিবো আগে কান্না বন্ধ কর। 

--তুলি:: এটা তোমার কাছেয় আছে তাই না...??

--তমাল:: হ্যাঁ আমি সেদিন রিংটা খুলে নিয়ে গিয়েছিলাম ফেলে দিবো বলে কিন্তু পরে ভালো করে দেখতেই বুঝতে পারি এটা আমি দিয়েছিলাম তাই আমার কাছেয় রেখে দিয়েছিলাম। 

--তুলি:: তাহলে কেনো বললে ফেলে দিয়েছো..??

--তমাল:: দেখলাম তোর রিয়াকশন কেমন হয়। 

--তুলি তমালের বুক বরাবর কয়েকটা ঘুসি দিয়ে বলে 


--তুলি:: তুমি খুব খারাপ তোমার সাথে আমার কোনো কথা নেই যাও। 

--তমাল তুলিকে নিজের কাছে এনে বলে 

--তমাল:: তুই বলে দিলেয় হতো ওটা আমি দিয়েছি তাহলে এতো কিছু হতো না। 

--তুলি:: ছাড়ো আমায় তুমি আগেও আমায় কষ্ট দিতে এখনো দাও তাই তোমার সাথে আমার আরি আর কথা বলবো না তোমার সাথে । 

--তমাল:: আচ্ছা সরি জানপাখি আর যাই কর কথা বলা বন্ধ করিস না। 

--তুলি:: তহলে কানে ধরে ১০ বার উঠ বস করো। 

--তমাল:: কি......?

--তুলি:: কানে না ধরলে আমি কিন্তু সত্যি সত্যি কথা বলবো না বলে দিলাম। 

--তমাল:: আচ্ছা আচ্ছা ধরছি। 

--তুলি:: হুম তাড়াতাড়ি। 


--তমাল মনে মনে বলে ছি: তমাল ছি: তুই কিনা ভার্সিটির টিচার হয়ে এই বাচ্চা একটা মেয়ের কথায় কানে ধরে উঠ   বস করছিস কেও জানতে পারলে তোর মান সম্মানের বারোটা বেজে যাবে। যাকে ভার্সিটির সবাই ভয় পায় আর তাকেই  নাকি পিচ্চি একটা মেয়ে ভয় দেখাচ্ছে। 


--তুলি:: কি হলো দাড়িয়ে আছো কেনো শুরু করো। 

--তমাল কি আর করবে উঠ বস করতে শুরু করে তুলি তো তমালের মুখ দেখে হেসে গড়া গড়ি খাচ্ছে। 

--তমাল:: দাতে দাত চেপে বলে ) বেশি হাসিস না তোকে যদি ভার্সিটির সবার সামনে কানে না ধরিয়েছি তাহলে আমার নাম তমাল আহমেদ না।

--তুলি::( হাসতে হাসতে বলে ) তাহলে ছয় মাস দুই বছর কেনো তোমাকে আমি কোন দিনও বিয়ে করবো না তখন বুঝবে মজা। এখন যা করছো তাই করো। 

--তমাল:: শুধু একবার বিয়েটা হতে দে তারপর তোর মজা দেখাবো আমি। বিরবির করে বলে। 

--তুলি:: কিছু বলছো...?? 

--তমাল:: না কিছু না। 


-এক মাস কেটে গেছে এই একমাসে তুলি যখন যা বলেছে তাই করেছে। তুলি চেয়েও তমালকে কষ্ট দিতে পারে না কারণ তমালকে কষ্ট দিলে তমালের থেকে বেশি কষ্ট তুলির হয়। এই এক মাসে তমাল তুলির প্রতি আরো বেশি দূর্বল হয়ে পরেছে। তুলির ছোট ছোট আবদার গুলো তমালের পূরণ করতে ভালোই লাগে। 


------একদিন রাতে ------

রাত ২:০০ টা বাজে তুলির ঘুম ভেঙে গেছে তুলি তমালের রুমে গিয়ে দেখে তমাল শান্তিতে ঘুমোচ্ছে। তমালকে শান্তিতে ঘুমোতে দেখে তুলির একটুও ভালো লাগে না। তুলি তমালের পাশে বসে খাটের পাশে রাখা টেবিলের উপর থাকা পানির জগ নিয়ে তমালের গায়ে ঢেলে দেয় । তমালের শরীর ভিজে গেছে পানিতে।  তমাল ধরফর করে উঠে বসে  তুলিকে দেখে বলে 


--তমাল:: এতো রাতে তুই এখানে...?? আর এটা কি করলি...?? 

--তুলি:: ঘুম ভেঙে গেছে তাই এসেছি আর কি করেছি আমি...?? 

--তমাল:: কি করেছিস আমাকে ভিজিয়েছিস কেনো....?? 

--তুলি:: ওহ্ আসলে আমার ঘুম আসছিলো না তোমার ঘরে এসে দেখি তুমি আরাম করে ঘুমচ্ছ তোমার এই আরামের ঘুম আমার সহ্য হচ্ছিল না তাই। 

--তমাল:: তা ডাকলেও তো পারতি আমায়। 


(আইডিতে ১০০ টা লাইক ২৫ টা কমেন্ট না হলে  পরের পার্ট দিবো না।)


 ( গল্পটা ভালোলাগলে মেন আইডিতে গিয়ে লাইক কমেন্ট সেয়ার করে আসার অনুরোধ রইলো। আর পরের পর্ব সবার আগে পেতে আইডিটা ফলো করে রাখুন। ধন্যবাদ। )


#চলবে

#ভুল_ত্রুটি_মার্জনীয় 

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ২১

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_২১

#লিখনিতে_Rodela_Islam


তমাল তুলিকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে যায়। খাওয়া দাওয়া শেষ করে তমাল তুলিকে বলে


--তমাল:: তুলি তুই গিয়ে গাড়িতে বস আমি বিল দিয়ে আসছি। 


--তুলি:: আচ্ছা বলে গাড়ির দিকে যায়। কিছুক্ষণ পরে তমাল বিল দিয়ে গাড়ির কাছে এসে দেখে গাড়ি পুরো ফাঁকা তুলি নেই গাড়িতে। তুলিকে গাড়ি না পেয়ে আশে পাশে দেখে কারণ তুলি এর আগেও এমন করেছে। তমাল তুলিকে খুজতে খুজতে অনেকটা এগিয়ে গেছে কিন্তু তুলিকে কোথাও পাওয়া যায় না। এবার তমালের টেনশন হতে থাকে। তমাল আবার গাড়ির কাছে এসে তুলিকে ফোন করে কিন্তু তুলির ফোন গাড়িতে। তমাল কি করবে কিছু ভেবে পাচ্ছে না। 


-তমাল পাগলের মতো এদিক ওদিক খুজতে থাকে তুলিকে বেশ কিছুক্ষণ খোঁজার পরে হঠাৎ একটু দূরে কিছু মানুষকে জরো হয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তমাল ঔদিকে এগোতে গিয়ে একটা লোককে জিজ্ঞেস করে ওখানে কি হয়েছে। লোকটা বলে এই খানে একটা অল্প বয়সি মেয়ের এক্সিডেন্ট হয়েছে। লোকটার কথা শুনে তমালের গলা শুকিয়ে যায়। সারা শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা। তমালের পা কাপছে ভয় হচ্ছে খুব মনে মনে বলছে 


--তমাল:: আল্লাহ ওই মেয়েটা যেনো তুলি না হয়। তুলির যেনো কিছু না হয়। এই দোয়া করতে করতে যেদিকে এগিয়ে যায়। এগিয়ে গিয়ে দাড়াতেই কেও একজন তমালের কাধে হাত রাখতেই তমাল পিছনে ঘুরে তাকায় ওর সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষটিকে দেখে এক সেকেন্ড দেড়ি না করে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে 


--তমাল:: কোথায় গিয়েছিলি তুই কেনো আমাকে না বলে গিয়েছিলি একটাবার ভাবলিনা আমার চিন্তা হতে পারে। কেনো এমন করিস জানপাখি আর একটু হলে আমার জানটাই বেরিয়ে যেতো ( কান্না ভেজা কন্ঠে ) 


--তুলি কিছুক্ষন নিশ্চুপ থেকে তমালকে নিজের থেকে ছাড়িরে তমালের গাল বেয়ে পরা চোখের পানি দু হাতে মুছে দিয়ে দু হাত তমালের গালে রেখে বলে 


--তুলি:: এমন বাচ্চাদের মতো কাদছো কেনো। আমার তো কিছু হয় নি। দেখো আমি তোমার সামনে দাড়িয়ে আছি। 


তমাল তুলির দুহাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলে 


--তমাল:: তোর কিছু হয় নি তো ঠিক আছিস তো তুই। কোথাও ব্যাথা পারনি তো...??


--তুলি:: আমি ঠিক আছি তুমি শান্ত হও আগে প্লিজ। 


--তমাল:: তুই কোথায় গিয়েছিলি তোকে খুজতে খুজতে এখানে এসেছি এসেই শুনতে পায় একটা মেয়ে এক্সিডেন্ট করেছে। তোর কিছু হলে আমি মরেয় যেতাম। 


--তুলি:: আমি তো একটা বেলুন বিক্রেতা পেছন পেছনা এখানে চলে এসেছি লোকটাকে কত ডাকলাম শুনতেই পায় নি আর এতো দূর এসে দেখি এই অবস্থা আমি আবার ফিরে যাচ্ছিলাম তখন তোমাকে দেখি। 


--তমাল:: তুই কেনো আমাকে এতো চিন্তায় ফেলিস বলতো......??


--তুলি:: আমি কি করে জানবো এতটুকুতেই তোমার এই অবস্থা হবে। তা মি: তমাল তুমি না বলেছে আমি মরে গেলোও তোমার চোখ দিয়ে এক ফোটা পানিও পরবে না। তাহলে আজ এই অবস্থা কেনো তোমার। 


--তমাল:: সেদিন আমি ভুল বলেছিলাম কারণ তখনো আমি তোকে ভালোবাতাম না। ভালোবাসা যে একটা মানুষকে এতোটা পরিবর্তন করতে পারে আমি ভাবতেও পারি নাই। 


--তুলি:: কিন্তু মি: তমাল আমি কিন্তু আজ যিতে গিয়েছি আমি বলেছিলাম আমায় ভালোবেসে তোমাকে কাদতে হবে। দেখেছো তুমি আমার জন্য ঠিকই কাদলে। কিন্তু এতো কোনো লাভ হবে না আমি তোমাকে এতো তাড়াতাড়ি আমার ভালোবাসা দিবো না। 


--তমাল:: তোর যা ইচ্ছে তাই কর কিন্তু আমায় ছেড়ে যাস না কোথাও তাহলে আমি বাঁচতে পারতো না আমি। 


--তুলি:: না আমি তোমায় ছেড়ে কোথাও যাবো আর না তোমাকে যেতে দিবো কিন্তু তোমাকে একটু কষ্ট ভোগ করাবো এই আর কি। 


--তমাল:: আচ্ছা চল বাড়ি ফেরা যাক অনেক রাত হয়ে গেছে। 


--তুলি:: তমাল ভাই আমার না পায়ে ব্যাথা করছে এতো দূর হেটে এসে আমি আর হাটতে পারবো না। 

(তমালের গলা জড়িয়ে ধরে নরম স্বরে বলে ) আমাকে কোলে তুলে নিয়ে যায়। 


--তমাল:: কেনো একা একাই তো হেটে এসেছিস তখন। আর আমাকে কষ্ট দেওয়ার সময় মনে ছিলো না এখন হেটেই যাবি। 


--তুলি:: ঠিক আছে তুমি আমায় কোলে করে না নিয়ে গেলে আমি যাবো না এখানেই বসে থাকবো। 


--তমাল আর কিছু বলে না করণ তুলি একবার বলেছে মানে ওকে কোলে করে না নিয়ে গেলে ও এখান থেকে এক পাও নরবে না। তমাল তুলিকে কোলে নিয়ে গাড়ির কাছে আসে। 


তমাল তুলিকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে ড্রাইভিং ছিটে গিয়ে বসে গাড়ি স্টাট দেয়। তুলি কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে ওঠে 


--তুলি:: আচ্ছা তমাল ভাই আজ যদি ওই মেয়েটার জায়গায় আমি থাকতাম তাহলে কেমন হতো।  


তুলির কথাটা তমালের কানে প্রেবেশ মাত্র তমাল গাড়ি ব্রেক করে তুলির দিকে তাকায় 


--তমাল:: চুপ এসব কথা বলবি না একদম। 

--তুলি:: বলো না কি হতো.....?? 

--তমাল:: বিশ্বাস কর জানপাখি তোর কিছু হলে আমি মরেয় যেতাম। তমালের দু চোখ লাল হয়ে গেছে পানি টলমল করছে। 

--তুলি:: ইশশশ কি ভালোবাসা। এই ভালোবাসা কোথায় ছিলো এতো দিন যখন প্রতি রাতে একা একা যন্ত্রণায় ছটফট করতাম। মাঝে মধ্যে ইচ্ছে হতো মরে যাই। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়েছি। তখন কোথায় ছিলো এই ভালোবাসা..? 


--তমাল তুলির হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে

--তমাল:: মাফ করে দে জানপাখি আমি বুঝতে পারিনি তোর ভালোবাসা। আমার সবসময় হিংসা হতো তোর  উপর কারণ আমি ওই বাড়ির বড় ছেলে হওয়ার পরও আমার থেকে তোকে সবাই ভালোবাসতো তাই তোর উপর খুব রাগ হতো তোকে কষ্ট দিতে ভালোলাগতো। কিন্তু এই কষ্ট দিতে দিতেই যে তোকে ভালোবেসে ফেলবো আমি ভাবতে পারি নি। প্লিজ মাফ করে দে আমায়। 


--তুলি:: মনে আছে তোমার আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কি কি করেছিলে তুমি। জানো সেদিন যখন আশা আপু তোমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো তখন আমার মনে হচ্ছিল আমার কলিজাটা কেও ধারালো ছুরি দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করছে। এক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিল আমি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম আমি কেনো মরবো তোমার জন্য আমি মরে গেলোও তখন তোমার কিছু হতো না তাই মরেতে গিয়েও মরি নাই। একবার ভেবে দেখেছো এগুলো। 


--তমাল:: হ্যাঁ এটা সত্যি সেদিন তোকে কষ্ট দিতেই আমি ওকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম কিন্তু ওকে আমি বন্ধু ছাড়া অন্য কিছু ভাবতাম না । 


--তুলি:: যা হওয়ার হয়েগেছে।  এখন এতো কিছু বলে কি হবে আমার সিদ্ধান্ত চেজ্ঞ করতে পারবো না আমি। 


--তমাল:: তোকে সিদ্ধান্ত চেজ্ঞ করতে হবে না তুই আমার কাছে থাকলেই হবে। এই কদিনে আমি বুঝেছি তোকে না দেখে কথা না বলে থাকা অসম্ভব আমার কাছে। তাই তুই যতো কষ্ট দেওয়ার দিস কিন্তু দূরে যান না আমার থেকে। 


--তুলি:: সে দেখা যাবে এখন বাড়ি চলো। তমাল আবার গাড়ি চালানোতে মন দেয়। 


--তুলি:: মনে মনে বিরবির করে বলে তোমার কষ্ট যে আমি  সহ্য করতে পারি না তমাল। কিন্তু কি করবো বলো তুমি তো ইচ্ছে করে আমাকে কষ্ট দিয়েছো আমি তোমাকে ভালোবাসি বলে যেভাবে খুশী আঘাত করেছে এবং আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তুমি যা যা করেছো তা কি করে ভুলবো তাই একটু কষ্ট তোমাকেও দিবো আমি। 


আরো কত কি ভাবতে ভাবতে গাড়িতে ঘুমিয়ে গেছে তুলি।  তমাল তুলির দিকে তাকিয়ে দেখে তুলি ঘুমিয়ে গেছে। তমাল তুলিকে নিজের কাছে এনে এক হাতে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আর এক হাতে গাড়ি চালাচ্ছে। তমাল বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে নেমে তুলিকে কোলে তুলে নিয়ে বাড়িতে যায়। তুলিকে তুলির রুমে শুইয়ে দিয়ে দু গালে আলতো আদর দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। 


( যাদের আমার গল্প পরতে ভালোলাগে তারা আমার মেন আইডিতে গিয়ে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবে। আর পরের পার্বটি সবার আগে পেতে ফলো করে রাখুন। ধন্যবাদ। )


#চলবে

#ভুল_ত্রুটি_মার্জনীয়

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ২০

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_২০

#লিখনিতে_Rodela_Islam


--তুলি:: কি হলো দেড়ি হয়ে যাচ্ছে তো চলো। 

--তমাল এখনো তুলির দিকে তাকিয়ে আছে 

--তুলি:: এইযে মি: তমাল আমাকে দেখা শেষ হলে এবার চলুন। ( তমালের চোখের সামনে হাত নেরে বলে ) 

--তমাল:: হুম চল। 

-তুলি আর তমাল নিচে নামতেই তুলির আম্মু প্রশ্ন করে 

--রাহেলা বেগম :: এতো রাতে সেজে গুজে কোথায় যাচ্ছিস তোরা। 

--তুলি:: ঘুরতে যাচ্ছি আম্মু আর ডিনার বাহিরেই করবো আমরা। বলে তুলি আর তমাল চলে যায়।


তুলি গাড়িতে উঠে বসে তমালের পাশের সিটে। তমাল গাড়ি স্টাট দিতে দিতে একবার তুলিকে দেখে নেয়। তমাল গাড়ি চালাচ্ছে আর তুলিকে দেখছে। 


--তুলি:: আমার দিকে তাকিয়ে গাড়ি না চালিয়ে সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাও। আমার অকালে মরার ইচ্ছে নেই। 


--তমাল সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে বলে 

--তমাল:: তুলি তোর মনে কি চলচ্ছে বলতো...?? 


--তুলি:: মানে......?? 

--তমাল:: তুই সেদিন কোন শর্তের কথা বলবি বলেছিলি কিন্তু তারপর থেকে তুই আমার সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছিস। আবার আজ কি বলবি বলছিলি। 


--তুলি:: সেদিনের টা সেদিন চলে গেছে। আজকেরটা বলি শুনো। আমি আব্বুকে বলেছি ছয় মাস পরে তোমাকে বিয়ে করবো এটা ঠিক কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্ত চেজ্ঞ করতেও পারি। 


--তমাল:: ( কপাল কুচকে তুলির দিকে তাকিয়ে বলে )  মানে কি বলছিস তুই। 


--তুলি:: আরে আগে আমার পুরো কথাটা তো শুনো। এই ছয় মাস আমি যা বলবো তোমাকে তা সব কথা শুনতে হবে। আমি তোমাকে যখন যা বলবো তাই করতে হবে তুমি যদি আমার সব কথা শুনো তাহলে ছয় মাস পরেই বিয়েটা হবে আর না শুনলে  দুই বছর পরে। এবার সব তোমার ইচ্ছে কি করবে ভেবে দেখো.....??


--তমাল:: আমি কেনো তোর সব কথা শুনতে যাবো। 

--তুলি:: আমি তো আমার শর্তের কথা গুলো বললাম তুমি মানবে কি না এটা তোমার ব্যাপার বলে জানালার বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে। 


--তমাল আর কোনো উপায় না পেয়ে তুলির শর্তে রাজি হয়ে যায়। কারণ তুলির কাছ থেকে বেশি দিন দূরে থাকা তারপক্ষে সম্ভব না। 


কিছু দূর যেতেই তুলি হঠাৎ চেচিয়ে বলে ওঠে 

--তুলি:: গাড়ি থামাও তমাল ভাই। 

-তুলির চিৎকার শুনে সাথে সাথে গাড়ি থামায় তুলির চিৎকারে কিছুটা ভয় পেয়ে যায় তমাল। গাড়ি থামিয়ে তুলির দিকে তাকিয়ে বলে 


--তমাল:: কি হয়েছে এভাবে চিৎকার করছিস কেনো...?? 

--তুলি:: আমি আইসক্রিম খাবো। 

--তমাল:: সেটার জন্য এভাবে চিৎকার করতে হয় আমি কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। 


--তুলি:: এখনে ভয় পাওয়ার মতো কি হলো.....?? 

--তমাল:: কিছু না তুই বস আমি আইসক্রিম নিয়ে আসছি। 

--তুলি:: আচ্ছা যাও আমার জন্য কিন্তু দুইটা নিয়ে আসবে। 

--তমাল:: কি দুইটা... 


--তুলি:: হ্যাঁ কেন....?? 

--তমাল:: তুই কি ভুলে গেছিস তোর ঠান্ডার সমস্যা আছে.....??

--তুলি:: আমি এতো কি যানি না আমার দুইটা আইসক্রিম চাই। তুমি কিন্তু বলেছো আমার সব কথা শুনবে। 


--তমাল:: কিন্তু তোর তো ঠান্ডা লেগে যাবে। 

--তুলি:: না কিছু হবে না প্লিজ প্লিজ প্লিজ। 

--তমাল:: আচ্ছা তুই গাড়িতেয় বস আমি আসছি। 

তমাল গিয়ে তুলির জন্য দুটো স্টোবেরি ভ্লেবারের দুটো আইসক্রিম নিয়ে গাড়ির কাছে আসতেই দেখে তুলি গাড়ির সাথে গা এলিয়ে দিয়ে দাড়িয়ে আছে। 

তলাম তুলির হাতে আইসক্রিম দিয়ে বলে


--তমাল:: তোকে না বলেছি গাড়ি থেকে নামবি না। 

--তুলি:: আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই নেমেছি। 

--তমাল:: যা গাড়িতে গিয়ে বস। 

--তুলি গাড়িতে গিয়ে বসে আইসক্রিম খেতে শুরু করে বাচ্চাদের মতো করে । তমাল তুলির খাওয়া দেখছে মন দিয়ে। তুলি তমালের দিকে তাকিয়ে বলে 


--তুলি:: তুমি খাবে....?? 

--তমাল:: না তুই খা। 

--তুলি:: তাহলে এমন করে তাকিয়ে আছো কেনো পেট ব্যাথা করবে তো আমার। 

--তমাল:: আর কিছু বলে না।  তুলির আইসক্রিম খাওয়া শেষ হলে তমাল তুলির দিকে তাকিয়ে দেখে ঠোঁটে আইসক্রিম লেগে আছে। তমাল তুলি হাত ধরে টান দিয়ে একদম নিজের কাছে নিয়ে আসে। 


হঠাৎ টান দেওয়ায় তুলি একটু ভেবাচেকা খেয়ে যায়। তমাল তুলিকে জড়িয়ে ধরে তুলির ঠোঁটে লেগে থাকা আইসক্রিম খেয়ে নেই। তমালের এমন কান্ডে তুলির নিশ্বাস আটকে আসে। হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি বেরে যায়। তুলি তমালকে এক নজর দেখে লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়। 


--তমাল:: আইসক্রিম এর টেস্টটা কিন্তু দারুণ ছিলো  নাকি তোর ঠোঁটে লেগে থাকার করণে টেস্ট বেশি লেগেছে । ( মুচকি হেসে )

--তুলি লজ্জায় কিছু বলতে পারছে না। 


( আপনাদের সবাই কাছে আমার একটা অনুরোধ দোয়া করে আমার মেন আইডিতে গিয়ে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবেন। গ্রুপে গল্প পোস্ট করলে লাইক কমেন্ট হয় কিন্তু আইডিতে হয় না তাই সকলের কাছে অনুরোধ রইলো আমার আইডি গিয়ে লাইক কমেন্ট করে আসার। ধন্যবাদ। )


#চলবে

#ভুল_ত্রুটি_মার্জনীয় 

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১৯

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১৯ 

#লিখনিতে_Rodela_Islam 


 --তমাল:: তোর ভালোবাসার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে একদিন মরেই যাবো আমি। 


--তুলি:: চিন্তা করো না তোমাকে এতো তাড়াতাড়ি মরতে দিবো না আগে আমার ভালোবাসার জন্য পাগল হবে তারপর তোমার সেই ভালোবাসায় নিজে পাগল হবো তারপর দুজন একসাথে মরবো বুঝতে পেরেছো মি: তমাল। 


--তমাল:: খুব বুঝতে পেরেছি। আমাকে কষ্ট দিয়ে খুব মজা পাচ্ছিস তাই না 


 -তুলি:: হ্যাঁ খুব ভালো লাগছে তোমাকে কষ্ট পেতে দেখতে। তুমি যেমন আনন্দ পেতে আমাকে কষ্ট দিয়ে ঠিক তেমনি আনন্দ হচ্ছে আমার। 


--তমাল:: জানিস তোকে কষ্ট দিয়ে একটা সময় পযন্ত খুব আনন্দ পেতাম। কিন্তু একটা সময় পর তোকে কষ্ট দিলে আমারও কষ্ট অনুভব হতো। কখন যে নিজের অজান্তেই তোকে ভালোবেসে ফেলেছি। 


--রুহি তমাল আর তুলিকে ডাকতে আসে। 

--রুহি:: আপু আম্মুরা তোমাদের নিচে ডাকছে। 


--তমাল:: কেনো.....?? 


--রুহি:: আমি কি জানি বললো তোমাদের দুজনকে ডেকে দিতে তাই আমি ডাকতে এলাম। 


--তুলি:: তুই যা আমরা আসছি। 


-রুহি চলে যেতেই তমাল তুলির দিকে তাকিয়ে বলে 

--তমাল:: আমাদের ডাকলো কেনো বল তো....?? 


--তুলি:: তুমি যেখানে আমিও সেখানে তাহলে আমি কি করে বলবো...?? 


--তমাল:: আচ্ছা চল গিয়ে দেখি। 


--তুলি:: হ্যাঁ চলো। 


তলাম আর তুলি নিচে যেতেই আলিফ আহমেদ তুলিকে বলে 


--আলিফ আহমেদ :: তুলি আম্মু আমার কাছে এসে বসো তো। 


--তুলি মিষ্টি হাসি দিয়ে চাচ্চুর পাশে গিয়ে বসে। 


আলিফ আহমেদ :: আমরা সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন তুলি আর তমাল যদি রাজি থাকো তাহলে এক মাস পরে তুলি আম্মু আর তমালের বিয়ের দিন ঠিক করতাম। তমাল তোমার কি কোনো অসুবিধা আছে। 


--তমাল:: না আমার কোনো অসুবিধা নেই তোমরা যা ভালো মনে করো তাই করো। 


--আলিফ আহমেদ :: তুলি আম্মু তোমার কিছু বলার আছে...?? 


--তুলি:: হ্যাঁ চাচ্চু আমি এতো তাড়াতাড়ি বিয়েটা করতে চাচ্ছি না। 


-তুলির কথা শুনে সবাই তুলির দিকে তাকায় রাহেলা বেগম বলে ওঠে 


-রাহেলা বেগম:: কেনো বিয়ে করবি না শুনি...?? 


--তুলি:: আমি বিয়ে করবো না এটা তো বলে নি আমি বলেছি এত তাড়াতাড়ি করবো না। 


--আলিফ আহমেদ :: তা কি চাচ্ছো তুমি....??


--তুলি:: আমি বলতে চাচ্ছি ছয় মাস পরে বিয়ে দিন ঠিক করো এর আগে নয়। 


-লতা বেগম :: ছয় মাস পর কেনো তুলি...??


--তুলি:: সটা তোমার ছেলের সাথে আমি বোঝা পরা করে নিবো এই নিয়ে আমি আর কোনো কথা শুনতে চাই না। 


--আলিফ আহমেদ :: ঠিক আছে তুলি যা বলছে তাই হবে। তাহলে আজ থেকে ছয় মাস পরেই তুলি আর তমালের বিয়ে হবে। আশা করি এতে তমালের কিছু বলার নেই কারণ তুমি ভালো করেই যানো তুলি যা বলেছে তাই করবে ও। 


--তমাল তুলিকে এক পলক দেখে বলে তুলি যা চায় তাই হবে আমার কোন অসুবিধা নেই। 


তমাল মনে মনে একটু খুশি হয় কারণ তুলি তাকে বলেছিলো দুই বছরের আগে বিয়ে করবে না। সেখানে ছয় মাস বলায় তমালের আনন্দ হতে থাকে। তুলি তমালের পাশে এসে বিরবির করে বলে 


--তুলি:: এতো খুশি হওয়ার কিছু নেই আমি বলেছি ছয় মাস পরে বিয়ে করবো কিন্তু ভালোবাসবো এটা বলি নি তাই এতো খুশি হয়ে লাভ নেই। আমি রুমে যাচ্ছি তুমিও এসো তোমার সাথে আমার কথা আছে। 


তুলির কথা শুনে তমালের মুখটা বেলুনের মতো চুপসে যায়। তমাল মনে মনে ভাবে ( কি কথা বলতে চায় ও কি চলছে ওর মনে । সেদিন বললো কি শর্তের কথা কিন্তু তারপর থেকে আর কোনো কথাই তো হলো না ওর সাথে উফফ পাগল হয়ে যাবো এই কদিনে।) তমাল তুলির রুমে যায় কিছুক্ষন পরে। 


-তমাল তুলির রুমে গিয়ে দেখে তুলি ফোন দেখছিলো। তমাল ঘরে ঢুকে বলে 


--তমাল:: জানপাখি আমি চলে এসেছি। 


--তুলি:: ফোন রেখে তমালকে উদ্দেশ্য করে বলে ) বসো এখানে 


তমাল তুলির পাশে বসে বলে 

--তমাল:: কি বলবি জান পাখি....? 


--তুলি:: বলবো তার আগে তোমাকে আমায় নিয়ে এখন বাইরে যেতে হবে। 


--তমাল:: ( কপাল কুচকে বলে ) এখন এতো রাতে....??


--তুলি:: এতো রাত কোথায় মাত্র ৯:০০ টা বাজে। এখন তুমি নিয়ে যাবে কি না বলো। 


--তমাল:: কাল নিয়ে যাবো নে তোকে। 


--তুলি:: ঠিক আছে নিতে হবে না আমি আব্বু চাচ্চুকে বলে দুই বছর পরেই না হয় বিয়ে করবো। এখন তুমি ভেবে দেখো কি করবে। 


--তমাল:: ( কিছু ক্ষন চুপ করে থেকে বলে ) আচ্ছা তুই রেডি হয়ে নে আমি ঘরে যাচ্ছি রেডি হয়ে ডাক দিস। 


--তুলি:: আচ্ছা তুমি রেডি হয়ও গিয়ে। 


তমাল নিচের রুমে চলে যায়। তুলি রেডি হয়ে তমালকে ডাকতে ওর ঘরে যায়। 


--তুলি:: তমাল ভাই আর কতক্ষণ লাগবে....? 


--তমাল:: আমি রেডি চল ( হাতে ঘড়ি পরতে পরতে বলে ) চোখ তুলে তাকাতেই তুলির দিকে চোখ আটকে যায়।  লাল একটা থ্রি পিস পরেছে। চোখে হালকা কাজল ঠোঁটে হালকা লাল লিবিস্টিক দিয়েছে। মুখে কোনো মেকাপ নেই। তমাল পলক হীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার জানপাখির দিকে। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১৮

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১৮

#লিখনিতে_Rodela_Islam


-তমাল তুলিকে খাইয়ে দিচ্ছে আর তুলি চুপ চাপ খেয়ে নিচ্ছে। খাওয়া শেষে তমাল বললো 


--তমাল:: এবার বল কি শর্ত আছে তোর। 


--তুলি:: তমাল ভাই আমার না মাথা ব্যাথা করছে আমি একটু রেষ্ট নেই পরে না হয় বলবো শর্তের কথা। 


-তুলির মাথা ব্যাথা করছে শুনে তমাল আর কিছু বললো না। 


--তমাল:: তুই শুয়ে থাক আমি মাথা টিপে দিচ্ছি। তুলি শুয়ে আছে তমাল তুলির মাথা টিপে দিচ্ছে এক সময় তুলি ঘুমিয়ে যায়। তুলি ঘুমিয়ে গেলে তমাল তুলির কপালে ভালোবাসার পরস একে দিয়ে বিরবির করে বলে


--তমাল:: সরি জান পাখি আমাকে মাফ করে দিস। আমি ভাবিনি তুই আমার কথাতে এতোটা কষ্ট পাবি আমি তোকে আর কষ্ট দবো না জান পাখি তোকে ভালোবেসে আমার বুকের মধ্যে আগলে রাখবো তোর সব ইচ্ছে পুরোন করবো আমি। শুধু আমাকে ছেড়ে কোথাও যাস না। তুই হয়তো যানিস না তোকে কষ্ট দিতে দিতে কবে যে তোকে ভালোবেসে ছেলেছি তা আমার নিজেরও অজানা। তমাল আরো কিছুক্ষন থেকে নিজের রুমে চলে যায়। 


------পরের দিন সকালে------


তুলি ঘুম থেকে উঠে দেখে ওর পাশে বড় লাল গোলাপের একটা তোরা কয়েকটা চকলেটের বক্স। 

তুলি গোলাপের তোরাটা হাতে নিতেই দেখে একটা চিরকুট  

             Good Morning Janpakhi 🕊️🕊️

তোমার জন্য আমার অল্প কিছু উপহার আমার তরফ থেকে। আমি এই জীবনে তোকে কোন গিফ্ট দেই নি ভালোবেসে তাই আমার জানপাখির জন্য ছোট্ট উপহার। I Love you Jan ❤️❤️


তুলি গোলাপগুলোর উপর আলতো হাত বুলিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে 

আমার কাছে সব চেয়ে দামি উপহার তো তুমি মি: তমাল তুমি যে আমাকে ভালোবেসেছো এতেই আমার সব পাওয়া হয়ে গেছে। I love you too 💞 💞 My love 


তুলি সব কিছু গুছিয়ে রেখে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। আসিফ  আহমেদ সোফায় বসে খবরের কাগজ পরছিলো মেয়েকে নিচে নামতে দেখে বলে 


--আসিফ আহমেদ :: তুলি আম্মু এখানে এসে বসো। 


-তুলি হাসি মুখে আব্বুর পাশে গিয়ে বসে বলে 


--তুলি:: Good Morning Abbu 


--আসিফ আহমেদ :: Good Morning  তোমার শরীর কেমন এখন। 


--তুলি:: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আব্বু। 


--আলিফ আহমেদ :: আজ আর ভার্সিটিতে যেতে হবে না আম্মু তুমি বাড়িতেই রেস্ট নাও কয়েক দিন। 


--তুলি:: আচ্ছা আব্বু। 


আসিফ আহমেদ উঠে রুমে যায়। তুলি একা বসে ছিলো তখন তমাল এসে তুলির সামনে দাড়িয়ে বলে 

--তমাল:: Good Morning JanPakhi কেমন আছো এখন। 


--তুলি:: Good Morning . ভালো আছি। 


--তমাল::  এই নে এটা খেয়ে নে।( তুলির সামনে দুধের গ্লাস দিয়ে বলে ) 


--তুলি:: ঢোক গিলে তমালের দিকে তাকিয়ে বলে ) তমাল ভাই এটা আমায় দিচ্ছো কেনো তুমি এনেছো তুমি খাও না। 


--তমাল:: এটা তোর জন্য এনেছি ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করবে না দুদিন পর পর প্রেসার কমে সেন্স লেস হয়ে যাবে। 


--তুলি:: আমি ঠিক মতো খাই তো।


--তমাল:: হুম সেটা আমি খুব ভালো করেয় জানি। এবার তাড়াতাড়ি এটা শেষ কর। 


--তুলি:: আমি খাবো না এটা ভালোলাগে না খেতে। 


তমাল তুলির কোনো কথা শোনে না জোর করে খাইয়ে দেয়। 


--তুলি:: তুমি খুব খারাপ তোমার সাথে আমি আর কোনো কথা বলবো না বলে সেখান থেকে উঠে চলে যায়। 


তারপর আর সারাদিন তুলি তমালের সাথে কথা বলেনি দেখা হলেও তমালকে এরিয়ে গেছে। আজ সাত দিন তুলি তমালের সাথে ঠিক করে কথা বলে না তমাল কথা বলতে আসলেও তুলি এড়িয়ে যায়। ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় তমালের সাথে যায় না অন্য গাড়িতে যায়।


-------একদিন রাতে --------


তুলি নিজের রুমে বসে পরছিলো। তখন তমাল তুলির রুমে তুলির পাশে দাড়ায়। তুলি মাথা উঠিয়ে দেখে তমাল দাড়িয়ে আছে। 


--তুলি:: কিছু বলবে তমাল ভাই......?? 


--তমাল:: হ্যাঁ তুই আমাকে এরিয়ে চলছিস কেনো....??


--তুলি:: কেনো কষ্ট হচ্ছে আমি তোমাকে এড়িয়ে চলছি দেখে....?? 


--তমাল:: তুই কেনো বুঝতে পারছিস না তোর সাথে একটু কথা বলার জন্য কতটা ছটফট করি আমি। 


--তুলি:: ( ত্যাচ্ছিলের হাসি দায়ি বলে ) আহারে কত ভালোবাসা। 


--তমাল:: তুই কিনো এমন করছিস জানপাখি....?? 


-তুলি উঠে দাড়ান্দার দিকে চলে যায়। তমালও যায় তুলির পিছনে। দোলনায় বসে দোল খেতে খেতে বলে 


--তুলি::  তা মি: তমাল এতটুকুতেই যদি হাল ছেড়ে দেও তাহলে বাকি দিন গুলো কি করবে....?? 


--তমাল:: বিশ্বাস কর জানপাখি আমার খুব কষ্ট হয় তোর সাথে কথা বলতে না পারলে।


--তুলি:: সাতদিনেই তোমার এই অবস্থা তাহলে একবার ভেবে দেখো আমি যেদিন তোমার কাছে আমার ভালোবাসা প্রকাশ করেছিলাম যেদি থেকে ঠিক দু মাস আমার সাথে কথা বলাতো দূরে থাক আমাকে দেখলেই তুমি যেখান থেকে চলে যেতে। 

তুমি একবারের জন্য ভাবেছিলো তোমার এই ইগনোর করা আমাকে ঠিক কতটা কষ্ট দিয়েছে। প্রতিটা দিন রাত আমি কতোটা যন্ত্রণা সহ্য করেছি। 


--তমাল:: ( অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে বলে ) সরি তুলি আমি বুঝতে পারি নি ভালোবাসার মানুষের থেকে অবহেলা কতটা কষ্টদায়ক। এই কদিনে আমি তা হারে হারে বুঝতে পারছি। 


--তুলি:: তুমি  যখন আমাকে মারতে তার পর যখন নিজেই আমার যত্ন করতে। তোমার এই এতটুকু ভালোবাসা যত্ন পাওয়ার জন্য আমি ইচ্ছে করে তোকামে রাগাতাম। 


--তমাল:: আমি ভুল করেছি আমাকে মাফ করে দে প্লিজ। 


--তুলি:: আমি তোমাকে মাফ করে দিয়েছি সেই কবেই কিন্তু এত তাড়াতাড়ি তোমাকে আমার ভালোবাসা দিচ্ছি না। তুমি সেদিন জিজ্ঞেস করেছিলে না কেন তোমাকে রাগিয়ে দেই কেন তুমি আমায় মারলেও আমি বাড়ির কাওকে কিছু বলি না। তার কারণ হলো আমি বাড়িতে বললে সবাই তোমাকে বকা দিবে আর তার জন্য তুমি আমাকে আর মারবেও না আর যত্ন ও করবে কিন্তু আমার ত তোমার ঔ টুকু ভালোবাসার খুব লোভ হতো আমার তা কি করে হাত ছাড়া হতে দেই। 


--তমাল:: আমি বুঝতে পারি নি তোর ভালোবাসা আমি ব্যার্থ ছিলাম। কিন্তু একবার আমার ভুলটা সুধরে নিতে দে। দেখবি আমার ভালোবাসা দিয়ে সব কষ্ট দূর করে দিবো। 


--তুলি:: এত তাড়া কিসের আর কিছু দিন আমার ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা কর। 


--তমাল:: #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় থাকতে থাকতে একদিন আমি মরেই যাবো। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১৭

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১৭

#লিখনিতে_Rodela_Islam


তুলি অজ্ঞান হয়ে তমালের বুকে ঢলে পরে। তমাল তুলির গালে আলতো করে  হাত রেখে ডাকে 


--তমাল:: তুলি এই তুলি কি হলো তোর তুলি। 


তুলির কোন সারা নেই। তমাল তুলিকে বিছানায় শুইয়ে দেয়। 


-রাহিলা বেগম :: মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে বলে ) কি হলো ওর তুলি এই তুলি চোখ খোল না মা। 


--তমাল পানি এনে তুলির মুখে পানির ছিটা দেয় কিন্তু কোন লাভ হয় না।  


--লতা বেগম :: কি হলো মেয়েটার....?? 


--তমাল:: তোমরা ওর কাছে বসো আমি আমি ডক্টর আঙ্কেলকে কল করে আসছি। তমাল ডক্টরকে কল করে এসে তুলির পাশে দাড়ায়। রাহেলা বেগম মেয়েকে ডাকছে আর কান্না করছে। 


--তমাল:: মামনী তুমি কাদছো কেনো কিছু হবে না ওর আমি ডক্টর আঙ্কেলকে কল করেছি এক্ষুনি চলে আসবে। 


-লতা বেগম :: তোর জন্য মেয়েটার আজ এই অবস্থা। কেনো কষ্ট দিচ্ছিস মেয়েটাকে  এভাবে কি দোষ করেছে ও। তুই ও তো ওকে ভালোবাসিস তাহলে কেনো এতো কষ্ট দিচ্ছিস তোর জন্য মেয়েটা একদিন উল্টো পাল্টা কিছু করে বসে। আর কষ্ট দিস না ওকে তোর দেওয়া কষ্ট সহ্য করতে করতে একদিন মরেয় যাবে মেয়েটা। 


--তমাল:: আম্মু কেনো এমন কথা বলছো....??

--লতা বেগম :: আমি ভুল কি বলেছি আজ ও নিচে যা বলে এসেছিলো আমি তো ভেবেছিলাম ও 


--আলিফ আহমেদ :- আঃ লতা কি হচ্ছে থামো এবার একেই মেয়েটার এই অবস্তা আর তুমি কি সব বলে যাচ্ছো। 


-লতা বেগম :: আমি বলেছি তাতে দোষ আর তোমার ছেলের দোষটা দেখতে পারছো না। 


--আলিফ আহমেদ :- ওর সাথে আমি কথা বলবো এই বিষয় তুমি চুপ করো এবার। 


এর মধ্যে তুলির জ্ঞান ফিরে আসে। চোখ পিট পিট করে তাকায়। তুলিকে চোখ খুলতে দেখে রাহিলা বেগম মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে 


--রাহিলা বেগম :: এখন কেমন আছিস মা। 


--তুলি কোন কথা না বলে চুপ করে থাকে। এর মধ্যে ডক্টর আসে। তমাল একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বলে


--তমাল:: দেখুন না আঙ্কেল কি হয়েছে ওর হঠাৎ সেন্স লেস হয়ে গিয়েছিলো। 


--ডক্টর আঙ্কেল তুলির চেকআপ করে বলে 

-ডক্টর :: প্রেসার কমে গেছে এবং অতিরিক্ত মানুষীক চাপে আছে মেয়েটা তাই এমন হয়েছে। 


ডক্টর : : এই টুকো মেয়ে তার কিসের এতো চিন্তা কি নিয়ে চিন্তা করো তুমি ( তুলিকে উদেশ্য করে বলে)

তুলি কারো কথার কোন উত্তর দেয় না। 


--আসিফ আহমেদ :: এছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই তো ওর....?? 


--ডক্টর :: এখন কোনো সমস্যা নেই কিন্তু এতো মানুষিক চাপ নিতে থাকলে সমস্যা হতে পারে পরে। আচ্ছা বলত তোরা এতো মানুষ থাকতে মেয়েটা কি নিয়ে এতো চিন্তা করে। 


--আসিফ আহমেদ :: তোকে পরে সব বলবো। 

--রাহেলা বেগম :: আমার মেয়েটার কিছু হবে না তো। 


--ডক্টর :: না কিছু হবে না শুধু একটু রেষ্টে রাখবেন আর চিন্তা করতে বারন করবেন ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করলেয় হবে। আর এই ঔষধ গুলো খাওয়ালেয় হবে। ডক্টর চলে গেলে তমাল সবার উদ্দেশ্য বলে


--তমাল:: তোমারা নিচে যাও  ওকে রেস্ট নিতে দাও। আর আম্মু ওর জন্য এক গ্লাস দুধ নিয়ে আসো। 


-রাহেলা বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে যান। সবাই চলে যেতে তমাল তুলির পাশে এসে বসে তুলির হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলে


--তমাল:: তুই সব কিছু বুঝেও কেনো এমন করিস বলতো.....??

-তুলি কিছু না বলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। 


--তমাল:: তুই জানিস আমি কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। 

--তুলি:: কেনো ভয় পেয়েছো কেনো আমি মরে গেলে তো তোমারি ভালো হতো। 


--তমাল:: ( তুলির মুখ চেপে ধরে বলে ) চুপ আর কোন দিন মরার কথা বলবি না। 

--তুলি:: কেনো বলবো না......??


--তমাল:: তুই জানিস না তোর কিছু হলো আমি ভালো থাকতে পারি না। 


--তুলি:: কোনো ভালো থাকতে পারো না তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না তাহলে কেনো আমার কিছু হলো তোমার কষ্ট হবে....?? 


--তমাল:: তুই বুঝিস না আমি তোকে ভালোবাসি কি না.....?? 


--তুলি:: না বুঝি না আমি.... তুমি তো সব সময় বলো আমাকে তুমি ভালোবাসো না আমার কিছু হলে তোমার কষ্ট হয় না তাহলে কি বুঝবো আমি। 


--তমাল:: মুখের কথাই কি সব সময় সত্যি হয়। তুই বুঝিস না তোকে আমি কতোটা ভালোবাসি। 


--তুলি:: কি করে বুঝবো বলেছো কখনো। 


তমাল তুলিকে একটানে শোয়া থেকে উঠেছি নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে তুলির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে 


--তমাল:: ভালোবাসি তোকে আমি আমার জীবনে চেয়েও বেশি ভালোবাসি। আমার জীবনের শেষ নিশ্বাস পযন্ত তোকে আমি ভালোবেসে যাবো। I love you Jan ❤️❤️


--তুলি:: (চুপ চাপ তমালের কথা শুনছিলো এতোক্ষণ। এবার তুলি তমালের কাছ থেকে ছুটে বলে ) কিন্তু দুঃখের বিষয় কি যানো আমি এখন আর তোমাকে ভালোবাসি না। 


--তমাল কপাল কুচকে তাকিয়ে বলে ( কি বলতে চাচ্ছিস )


--তুলি:: তুমি আমাকে যতোদিন কষ্ট দিয়েছো যতটা কষ্ট আমি পেয়েছি ততোটা কষ্ট তুমি যতোদিন না ভোগ করবে ততোদিন আমি তোমাকে ভালোবাসি না আমি তুলি আজ থেকে ঠিক দুই বছর এক মাস পঁনেরো দিন পযন্ত তমাল আহমেদকে ভালোবাসি না। 


--তমাল:: তুলি তুই কি পরিশোধ নিচ্ছিস...??


--তুলি:: হ্যাঁ পরিশোধ নিচ্ছি আমি তো বলেছি তুমি যতো দিন আমার ভালোবাসার জন্য কাদবে না ততদিন তোমাকে ভালোবাসবো না আমি। তুমি জানো কতো রাত তোমার জন্য আমার না ঘুমিয়ে কেটেছে। কতোরাত কেঁদেছি তোমার জন্য । এখন তার একটু তুমিও উপভোগ করো। 


--তমাল কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাহিলা বেগম তুলির জন্য এক গ্লাস দুধ আর কিছু ফল নিয়ে আসে। 


-রাহেলা বেগম:: তুলি আম্মু চুপ চাপ এগুলো খেয়ে নে তো। 


--তুলি:: আম্মু আমি শুধু ফল গুলো খাবো দুধটা খাবো না। 


--রাহেলা বেগম :: খাবো না বললে কি করে হবে আম্মু না ভালো খেয়ে নে। 


--তুলি:: ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে বলে ( আচ্ছা খাবো তুমি রেখে যাও ) 


--রাহেলা বেগম :: আগে তুই খাবি তারপর যাবো আমি। 


--তুলি:: আমি বললাম তো খাবো তুমি যাও। 


--রাহেলা বেগম একবাল তমাল আর তুলির দিকে দাকায় তারপর বলে 

তমাল তুই দেখিস তো ও যেনো ঠিক করে খায়। 


--তমাল:: আচ্ছা মামণি। 


রাহেলা বেগম চলে যেতেই তুলি তমালের দিকে তাকিয়ে দুষ্ট হাসি দেয়। 


--তমাল:: কি হলো এভাবে হাসছিস কেনো....?? 


--তুলি:: তমাল ভাই তুমি আমাকে  সত্যি ভালোবাসো..?


--তমাল:: কেনো আমি মিথ্যে বলছি নাকি 


--তুলি:: তাহলে আমাকে এখন খাইয়ে দাও। 


--তমাল:: তোর হাত নেই যে আমাকে খাইয়ে দিতে হবে 


--তুলি:: ঠিক আছে দিও না আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে খাইয়ে দিলে আমি দুই বছরে শাস্তিটা কমিয়ে দিবো কিন্তু তা আর হলো কই। 


--তমাল:: মানে 


--তুলি:: মানে আমার কিছু শর্ত মেনে নিলে আমার ভালোবাসার জন্য দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে না। 


--তমাল:: কি শর্ত.......??

--তুলি:: বলবো আগে খাইয়ে দাও। 


গল্পটা ভালোলাগলে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবেন।পরের পর্ব সবার আগে পেতে ফলো দিয়ে পাশে থাকুন। 

ধন্যবাদ 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১৬

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১৬

#লিখনিতে_Rodela_Islam 


-লতা বেগম :: তমাল কি এমন কথা বলবি যার জন্য আমাদের এক সাথে বসিয়ে রেখেছিস.....??


--তমাল:: বলছি আম্মু একটু অপেক্ষা করো আগে রাহাতকে আসতে দাও তাকে নিয়েই তো কথাটা। 


--তুলি মনে মনে ভাবছে কি করছে চাচ্ছে তমাল ভাই আর সবাইকেই বা এখানে কেনো এনেছে। 


--তমাল:: ওই তো রাহাত চলে এসেছে। রাহাত তুমি দাড়িয়ে আছো কেনো বসো না। 


--রাহাত:: এখানেই ঠিক আছি কি বলবে বলো ভাইয়া....??


-আসিফ আহমেদ :: কি বলতে চাচ্ছ তাড়াতাড়ি বলো। 


--তমাল:: বলছি চাচ্চু। চাচ্চু তোমরা যে তুলির সাথে রাতাহের বিয়ে ঠিক করেছো তোমার কি রাতাহের বিষয় খোঁজ খবর নিয়েছো কিছু....?? 


--আলিফ আহমেদ :- কেনো রাহাত তো ভালো ছেলে। 


--তমাল:: হ্যা যেটা ঠিক কিন্তু তোমরা কি এটা যানো ওর গালফ্রেন্ড আছে যেটা কি তোমরা জানো...??


-তুলি তমালের কথা শুনে হা হয়ে যায় তুলি তমালের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বিরবির করে 


--তুলি:: তমাল ভাই কি করে যানলো এটা ধুর ভালো লাগেনা তীরে এসে তরী না ডুবলে হতো না কিন্তু কি যানলো এই কথা। 


-লতা বেগম :: কি বলছিস এসব.....?? 


--তমাল:: আমি জানি তোমাদের বিশ্বাস হয় নি দাড়াও প্রমাণ দেখাছি। তমাল পকেট থেকে ফোন বের করে কয়েকটা ছবি এবং একটা ভিডিও দেখায়। 


ছবি আর ভিডিও দেখে রাহাতের হেচকি উঠে যায়। আর তুলি মাথায় হাত দিয়ে সেখানেই বসে পরে। সবাই হতাশ হয়ে তুলির দিকে তাকিয়ে থাকে। 


--তমাল:: এর পরে আশা কর আর কোনো কথা থাকার কথা না। রাহাত তুমি বরং তোমার গালফ্রেন্ডকে নিয়ে থাকো আর তুলিকে আমরা সামলে নিবো। আর খালামুনি তুমি রাহাতের বিয়েটা না হয় ওর পছন্দের মানুষের সাথেয় দিও। 


--রাহিলা বেগম :: তুই কি করে জানলি এতো কিছু.....?? 


--তমাল:: কাল বিকেলে আমার একটা বন্ধুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলম। সেখান থেকে ফেরার সময় দেখি রাহাত একটা মেয়ের সাথে রিক্সায় বসে আছে। প্রথমে ভেবেছিলাম আমি হয় তো ভুল দেখছি কিন্তু যখন ওদের দুজনকে রেস্টুরেন্টে দেখলাম এবং কথা শুনাম পরে বুঝতে পারলাম ওরা রিলেশনে আছে। 


তুলি রাহাতের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকায়। আর মনে মনে বলে 

আর দুটো দিন পরো দেখা করলে কি হতো। এই ছেলেটার জন্য আমার সব শেষ হয়ে গেলো। 


--তমাল:: এবার তোমরাই ভেবে দেখো কি করবে 


--তমাল:: তবে তোমাদের নাটকটা কিন্তু ভালোই ছিলো। 


-লতা বেগম :: কি.... কিসের নাটক....?? 


--তমাল:: তোমরা কি মনে করেছিলে আমি কিছু বুঝি নি  তোমরা কি মনে করেছো এসব করলে আমি বলবো তুলিকে ভালোবাসি না এটা সম্ভব হয় কেনো বুঝতে পারছো না তোমরা তুলি শুধু আমার বোন আর কিছু না। আর এমনটা করবে না কোনো দিন বলে নিজের রুমে চলে যায়।  তমাল চলে যেতেই তুলি রাহাতের সামনে দাড়িয়ে বলে


--তুলি:: এটা কেনো করলেন আমার সাথে.....?? 


--রাহাত:: ( অসহায় মুখ করে বলে) বিশ্বাস করো তুলি আমি বুঝতে পারি নি তমাল ভাইয়া আমাদের দেখে ফেলবে। 


--তুলি:: আর দুটো দিন পরে দেখা করলে কি হতো আমার সাথে এমনটা না করলেও পারতেন। 


--রাহাত:: আগে আমার কথাটা তো শুনো 


--তুলি:: আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না ( বলেই কান্না করে দেই )


-লতা বেগম :: এভাবে কাদে না আম্মু সব ঠিক হয়ে যাবে। 


--তুলি:: আমি না মরা পযন্ত কিছু ঠিক হবে আমি থাকবো না এখানে চলে যাবো সবাইকে রেখেয় চলে যাবো। বলে দৌড়ে ঘরে গিয়ে দড়জা লাগিয়ে দেয়। 


-লাহেলা বেগম :: মেয়েটা আবার কিছু করে না বসে। চলো তো গিয়ে দেখি। 


রাহেলা বেগম আর লতা বেগম রুহি তুলির ঘরের সামনে গিয়ে বলে 


-রাহেলা বেগম:: তুলি মা দড়াজাটা খোল না মা। লক্ষীটি। ( ভেতর থেকে কোন কথা শুনা যায় না )


--লতা বেগম :: তুলি আম্মু আমার দড়জাটা খোল আমি কথা বলবো তমালের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। তুলি দড়জাটা খোল সোনা। 


--তুলি:: তোমরা চলে যাও এখান থেকে চলে যাও আমার কাওকে চাই না কাওকে না ( ভাঙ ভাঙা কন্ঠে ) 


--রাহেলা বেগম :: দরজাটা খোল না মা। 


--তুলি:: আমাকে একটু একা থাকতে দাও তোমরা চেলে যাও এখন থেকে। 


সবাই জরো হয় তুলির দড়জার সামনে 


----তমালের রুমে ------


তমাল :: সরি জান পাখি  তোকে আজকের  রাতটাই কষ্ট দিবো কাল তুমি যা শুনতে চাও তাই বলবো। আর একটু কষ্ট দিবো তারপর তোকে আমি আমার ভালোবাসার দিয়ে নিজোর করে নিবো। আর কষ্ট পেতে দিবো না তোকে। 


--রুহি:: ভাইয়া তুই এখনো বসে আছিস আর তুলি আপু রুমের দড়জা লাগিয়ে বসে আছে বলছে ও নাকি মরে যাবে। 


রুহির মুখে এমন কথা শুনে। তমাল আতকে উঠে বলে 

( কি বলছিস এসব )


--রুহি:: তুলি আপুই তো বললো। 


তমাল আর কথা না বলে দৌড়ে তুলির রুমের দড়জার সামনে দাড়িয়ে বলে 


--তমাল:: তুলি এই তুলি দড়জা খোল। 


তুলি কোন কথা বলে না। তমাল আবার বলে 


--তমাল:: তুলি ভালোয় ভালোয় দড়জাটা খোল তা না হলে কিন্তু আমি দড়জা ভেঙে ঘরে ঢুকবো। 

 

--তুলি:: কেনো এসেছো তুমি এখানে চলে যায় এখান থেকে ( কিছুটা চেচিয়ে বলে ) 


--তমাল:: আগে দড়জাটা খোল তারপর যাবো আমি। 


--তুলি:: চলে যাও তোমরা আমাকে একা থাকতে দাও  একটু। 


--তমাল:: বললাম তো তুই দড়জা খুললেই চলে যাবো আমরা। 


তমালরা সবাই অনেক ডাকা ডাকি করার পর তুলি দড়জা খুলে দেয় তমাল তুলির মুখের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে এতোক্ষণ অনেক কেঁদেছে চোখ ফুলে গেছে নাক মুখ লাল হয়ে আছে। 


--তুলি:: কি হয়েছি কি কেনো ডাকছো বললাম না আমার ভালো লাগছে না একটু একা থাকতে চাই। 


রাহিলা বেগম :: ঘরে ঢুকে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বলে 

( কেনো এমন পাগলামি করছিস মা আমরা কতো ভয় পেয়ে ছিয়ে মিলাম )


--তুলি::  কি ভেবেছিলে তোমরা আমি সুই*সাইড করবো। চিন্তা করো না এমন কিছু আমি এখনো করবো না যতো দিন আমি নিজের দেয়া কথা রাখতে পারছি ততদিন কোথাও যাবো না আমি। 


-লতা বেগম :: ( তুলির মাথায় হাত দিয়ে বলে ) লক্ষী মা আমার আর কখনো এমন করিস না। 


--তুলি:: চিন্তা করো না চাচিআম্মু যত দিন না তোমার ছেলেকে আমার ভালোবাসার জন্য কাদাতে পারছি ততো দিন কিছু করবো না। ( চোখের পানি মুছে ) এবার তোমরা সবাই তোমাদের কাজে যাও আমি একটু রেষ্ট নিবো। 


--তমাল:: আম্মু তোমরা নিচে যাও আমার কথা আছে তুলির সাথে। 


--তুলি:: আমার কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না সবাই চলে যাও রুম থেকে ( চেচিয়ে বলে ) 


--তমাল:: কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই দেখে তুলি মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাথা ঘুরছে তুলির তুলি পরে যেতে নিলে তমাল তুলিকে ধরে নেয় তুলি জ্ঞান হারিয়ে তমালে বুকে ঢোলে পরে 

তমাল আর্তনাত করে ওঠে। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম