গল্প suddenly_fall_in_love পর্ব ৬

 #suddenly_fall_in_love 

#লেখনীতে_সামিয়া_স্নিগ্ধা 

#পর্ব_০৬


বাড়ির সদর দরজার কড়াঘাতে ড্রয়িংরুমের লাইট জ্বালিয়ে দরজার কাছে আসেন মাহমুদ এর মা।এতো রাতে কে এল আবার,ভেবে জিজ্ঞাসা করল,,,


-কে?


মাহমুদ বলল,,,


-মা,আমি।


মাহমুদের গলার স্বরে উনি বেশ অবাক হন। দরজা খুলে চোখের সামনে সত্যি সত্যি মাহমুদকে দেখে বলেন,,,


-তুই এসেছিস?এতো তাড়াতাড়ি?


-আমাকে কি এখানেই দাড় করিয়ে রাখবে?


উনি দরজা থেকে সরে দাঁড়িয়ে বললেন,,,


-না,ভিতরে আয়।


মাহমুদ বলল,,,


-অবাক হয়েছো?


-হবোই তো। এমনিতে তো হাজার বার বললেও বছরের আগে আসিস না।কোনো কাজে এসেছিস নাকি?


-নিজের বাড়িতে আসতেও কি কারণ লাগে?


-কোনো দরকার ছাড়া তো আসিস না।


-এখন থেকে মনে হচ্ছে, বাড়িতে আসতে হলেও কৈফিয়ত দিতে হবে।


-হাত-মুখ ধুয়ে জামাকাপড় পাল্টে আয়। খাবার বাড়ছি।


-খেয়ে এসেছি আমি। ভীষণ টায়ার্ড হয়ে আছি,রুমে গেলাম।


বলে কাঁধের ব্যাগ নিয়ে নিজের রুমে চলে যায় মাহমুদ।উনিও ড্রয়িংরুমের লাইট নিভিয়ে নিজের রুমে চলে গেলেন।

--

সকালবেলা মাহমুদ তন্ময়দের বাড়িতে যায়। দুজনে ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে আড্ডা দিতে ব্যস্ত। নিজের রুম থেকে বেরিয়ে কিচেনে যাওয়ার সময় ড্রয়িংরুমে মাহমুদ আর তন্ময়কে বসে থাকতে দেখে নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস করতে পারে না সুমাইয়া। ওদের কাছে এসে বলে,,,


-তোরা কখন এলি?


তন্ময় বলল,,,


-কাল রাতেই এসেছি আমরা, তুমি তোমার রুমে ছিলে বলে আমাকে দেখোনি ভাবি।


সুমাইয়া মাহমুদের পাশে বসে বলল,,,


-তা কি মনে করে এতো তাড়াতাড়ি গ্রামে ফেরা দুজনের?


তন্ময় বলল,,,


-সেটা তোমার ভাইকেই জিজ্ঞেস করো ভাবী।


সুমাইয়া মাহমুদকে বলল,,,


-কি ব্যপার বলতো? গ্রামে কারো প্রেমে টেমে পড়লি নাকি?


তন্ময় বলল,,,


-হোয়াট অ্যা গেস ভাবী!একদম ঠিক ধরেছো। তোমার ভাই তার প্রিয়তমার থেকে আর দূরে থাকতে পারছে না।তাই তো কাল উড়ে উড়ে চলে এসেছে তাকে দেখতে।


মাহমুদ রাগী দৃষ্টিতে তাকায় তন্ময়ের দিকে। তন্ময় বলল,,,,


-এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?যা সত্যি তাই বললাম।


সুমাইয়া মাহমুদকে বলল,,,,


-তা কে সে?


তন্ময় এতো কিছু বলে দেয়াতে তন্ময়ের পিঠে কয়েকটা কিল-ঘুষি বসিয়ে দেয় মাহমুদ। তন্ময় রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল,,,


-বলে দে ভাবীকে।কে সে? কে‌ সে? হু ইজ শী?


বলে হাসতে হাসতে বেরিয়ে যায় তন্ময়। সুমাইয়া বলল,,,


-তো বল,হু ইজ শী?


মাহমুদ বলল,,,


-উফফ,আপু তুই ও না।


-আহা,বল না নামটা।কি আছে এতে?


-আরুশিকে ভালোবাসি আমি।


-কবে থেকে চলছে হুম?


-ওকে এখনো বলিনি।


-কি?বলিসনি এখনো?


-না,তবে আজকেই ওকে বলবো।


-আচ্ছা, ডাইনিং এ আয়। ব্রেকফাস্ট করে নিবি।

--

ব্রেকফাস্ট শেষে তন্ময়, মাহমুদ দুজনেই নিজেদের বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। গন্তব্যে আরুশিদের কলেজ। কলেজে ঢুকে মাঠের একপাশে বাইক নিয়ে দাঁড়ায় দুজনে। ক্লাস শেষে আরুশি আর মাওয়া একসাথেই বের হলো। তন্ময় আর মাহমুদ হঠাৎ করেই ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো। দুজনেই বেশ অবাক হলো। মাওয়া অবাক হওয়া কন্ঠে বলল,,,


-তোমরা?


মাহমুদ বলল,,,


-দেখতেই তো পাচ্ছিস আমরা, আবার জিজ্ঞেস করছিস কেন?


-না,মানে তোমরা তো এতো তাড়াতাড়ি কখনো আসো না?


তন্ময় বলল,,,


-এবার এলাম। কোন সমস্যা আছে?


-না, আমাদের সমস্যা থাকবে কেন? তোমাদের বাড়ি, তোমরা যখন খুশি আসতেই পারো।


মাহমুদ বলল,,,,


-কথা পড়ে বলিস তোরা।আগে চল।


মাওয়া বলল,,,


-কোথায়?


-চল,গেলেই দেখতে পাবি।


তন্ময় আর মাহমুদ এর পিছন পিছন মাওয়া আর আরুশিও গেল।ওরা দুজনে বাইকে উঠে বসল। মাওয়া আর আরুশি দ্বিধায় পড়ে গেল।কে কার বাইকে বসবে?

মাহমুদ বলল,,,


-তোমাদেরকে কি বাইকে উঠে বসার জন্য আলাদা করে ইনভাইটেশন কার্ড দিতে হবে?উঠে বসো দুজনে।


মাওয়া বলল,,,


-কোথায় বসবো?


-তুই তন্ময় এর সাথে যা।


-ওর সাথে?


-কেন কোনো প্রবলেম?


-না, যাচ্ছি।


বলে মাওয়া গিয়ে তন্ময়ের সাথে বাইকে উঠে বসল।


মাহমুদ এবার আরুশিকে বলল,,,


-কি হলো উঠো?


আরুশি গিয়ে বাইকে বসতেই মাহমুদ আর তন্ময় বাইক স্টার্ট দিল।


মাওয়া তন্ময়কে বলল,,,


-কোথায় যাচ্ছি আমরা?


-জানি না।আপাতত মাহমুদ যেখানে যাচ্ছে সেখানেই ওদের সাথে যাচ্ছি।


মাওয়া আর কথা বাড়ালো না।

--

ঘন্টাদেড়েক পর ওরা প্রায় শহরের কাছাকাছি একটা ক্যাফেতে এসে পৌঁছালো। ক্যাফেতে ঢুকেই আরুশি আর মাওয়া দুজনেই বেশ অবাক হয়ে গেল। কারণ ক্যাফেতে ওরা ছাড়া আর কেউ নেই।


পুরো ক্যাফেটা বেশ সুন্দর করে সাজানো। মাহমুদ তন্ময়কে আলাদা ডেকে নিয়ে বলল,,,,


-আজকেই মাওয়াকে প্রপোজ করে দিস। আমাদের সুন্দর একটা মোমেন্টস ক্রিয়েট করার জন্যই এতো সব এরেঞ্জ করেছি।


-ও যদি রিয়েক্ট করে?


-করবে না।


-বলছিস?


-হুম।


মাহমুদ আর তন্ময় দুজনেই হাতে গোলাপ নিয়ে এগিয়ে এসে আরুশি আর মাওয়ার সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো।আরুশি আর মাওয়া দুজনেই বেশ অবাক হয়ে একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো।কি হতে যাচ্ছে কিছুটা হলেও দুজনে আন্দাজ করতে পারছে।


মাহমুদ আর তন্ময় দুজনেই আরুশি আর মাওয়ার দিকে ফুল এগিয়ে দিয়ে বলল,,,


-উইল ইউ ম্যারি মি?


ওদের থেকে একসাথে এভাবে প্রপোজাল পেয়ে আরুশি আর মাওয়া আরো এক ধাপ অবাক হলো। মাহমুদ আর তন্ময় দুজনেই ওদের উত্তরের অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে।


চলবে,,,,,

রেসপন্স প্লিজ এন্ড হ্যাপি রিডিং এভরিওয়ান 🥰

0 Comments:

Post a Comment