#suddenly_fall_in_love
#লেখনীতে_সামিয়া_স্নিগ্ধা
#পর্ব_০৩
ফুলে সাজানো খাটে বসে আছে সুমাইয়া।ওর পাশে নাবিলা, মাওয়া আর রাজুর কাজিনরা বসে আছে। নানান কথা বলে বারবার লজ্জায় ফেলছে সুমাইয়াকে।
কিছুক্ষণ বাদেই তন্ময় আর রাজু একসাথে রুমে আসলো। তন্ময় সবার উদ্দেশ্যে বলল,,,
-বের হও এবার সবাই রুম থেকে। অনেক আড্ডা দিয়েছো, অনেক রাত হয়েছে। এবার ভাইয়া আর ভাবীকে একা ছাড়ো।
মাওয়া বলল,,,,
-আর একটু থাকি না।
তন্ময় ভ্রু কুঁচকে তাকালো। এই মেয়েটাকে আজ সারাদিন প্রচুর বকবক করতে দেখেছে সে।একমূহর্ত চুপচাপ থাকতে পারে না। মাওয়ার উদ্দেশ্য বলল,,,,
-এখানে থেকে করবেটা কি?নিজের বোনের বিয়ের দিন বোন আর দুলাভাইয়ের রোমান্সে ব্যাঘাত ঘটাতে চাইছো কেন? কারো থেকে ছ্যাঁকা ট্যাকা খেয়েছো নাকি যে এখন অন্যর রোমান্স সহ্য হয় না?
শেষ কথা গুলো খানিকটা বাঁকা হেসে বলল তন্ময়।তন্ময় এর কথায় উপস্থিত সবাই হেসে ফেলল। মাওয়া খানিকটা রাগী গলায় বলল,,,
-কি বললেন আপনি?আমি ছ্যাঁকা খেয়ে এসেছি?
-তাইতো মনে হচ্ছে।
বলে ঠোঁট চেপে হাসলো তন্ময়। মাওয়া রাগ করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।ওর পিছন পিছন একে একে সবাই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।রাজু দরজাটা বন্ধ করে এসে দুজনে একসাথে নামাজ পড়ে নিল।রাজু জায়নামাজ গুলো কাবার্ডে রেখে এসে সুমাইয়ার সামনাসামনি বসলো। সুমাইয়া খানিকটা ইতস্তত বোধ করলেও বাহিরে সেটা প্রকাশ করলো না। রাজু সুমাইয়ার গলায় একটা গোল্ড চেন পড়িয়ে দিয়ে বলল,,,
-এটা তোমার জন্য। পছন্দ হয়েছে তো?
সুমাইয়া উপর -নিচ হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ালো। লজ্জায় কথা বলতে পারছে না সে।সব কেমন গলায় এসে আটকে যাচ্ছে। সুমাইয়ার এমন অবস্থা দেখে রাজু হেসে ফেলল।বলল,,,
-এতো লজ্জার কি আছে?আমিই তো।আমি জানি তুমি আমাকে বিয়ের আগে থেকেই পছন্দ করো রাইট?
সুমাইয়া আরো খানিকটা মাথা নিচু করে ফেলল। রাজু ফের বলল,,,
-কি ঠিক বললাম তো?
সুমাইয়া এবারেও চুপ। রাজু বলল,,,,
-জানো যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই মনে হয়েছিল আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেছি।সেদিন থেকেই আমার মনের সবটুকু জুড়ে শুধু তুমি। তোমাকে খুব খুব ভালোবাসি।
সুমাইয়া ধীরকন্ঠে বলল,,,,
-আমিও আপনাকে ভালোবাসি।
-----
উদাসীন মনে বারান্দায় বসে আছে আরুশি। মাওয়া কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে আরুশিদের বাড়িতে আসলো।আরুশিকে রুমে না পেয়ে বারান্দায় চলে এলো।ওর পাশে বসে বলল,,,
-কীরে কাল ও তুই গেলি না কেন বলতো?
আরুশি মনে মনে ভাবছে,,,,
"কিভাবে তোকে বলবো বল?আমি যে রাজুকে ভালোবাসি।ওর বিয়েতে যাবো কিভাবে বল? নিজের চোখে কি করে ওর বিয়ে দেখতাম আমি?"
আরুশি আস্তে করে জবাব দিল,,,,
-শরীর ভালো ছিল না।
এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। কলেজে যাবো।
-আমি যাব না।ভালোলাগছে না আমার। তুই যা।
-সামনে এক্সাম আরুশি। এখন না গেলে অনেক ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস মিস করবি তুই।
-তোর থেকে নোটস নিয়ে নিব।
আরুশির মা রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললেন,,,
-কোন কথা না আরু। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে মাওয়ার সাথে কলেজে যা।
আরুশি অসহায় ফেস করে বলল,,,,
-মা, শরীর ভালো লাগছে না আমার।
-আর কোনো কথা শুনতে চাই না তোর। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হো।
আরুশি কোনো উপায় না পেয়ে মন খারাপ করে রেডি হতে চলে গেল। রেডি হয়ে এসে দুজনে একসাথে বেরিয়ে পড়লো।
গ্রামের রাস্তা ধরে হেঁটে বাজারে এসে রিক্সায় করে কলেজ যেতে হয় ওদের। দুজনে বাজারে এসে দাঁড়াতেই দেখা হয় তন্ময় আর মাহমুদ এর সাথে। তন্ময়কে দেখেই ভেংচি কেটে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়ায় মাওয়া।মাহমুদ এগিয়ে এসে কথা বলে।
-আরে কেমন আছো?তোমরা দুজন একসাথে?
আরুশি হালকা হেসে বলল,,,,
-এইতো ভালো,আপনি?
-ভালোই। কিন্তু তুমি আর মাওয়া....
মাওয়া এবার মাহমুদকে বলল,,,
-আমি আর আরুশি বেস্টফ্রেন্ড। কলেজে যাচ্ছি।
মাহমুদ মাওয়াকে বলল,,,,
-ওহ, আচ্ছা।চল, তোদের দিয়ে আসি।
মাওয়া বলল,,,,
-লাগবে না ভাইয়া। তুমি চলে যাও। আমরা যেতে পারবো।
মাওয়া আর আরুশি চলে যায়। সেদিকেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মাহমুদ। তন্ময় ওর কাছে গিয়ে বলল ,,,,
-ঐ দিকে কি দেখছিস এভাবে?
-আরুশিকে।মেয়েটা ভীষণ সুইট।
তন্ময় এবার ওর কাধে ধাক্কা দিয়ে বলে,,,
-ব্যাপার কি বলতো?
-আই থিংক, আই ফল ইন হার লাভ।
-বাব্বা....তুইও প্রেমে পড়লি ভাই। বলে দে ওকে তোর মনের কথা।
-সময় হলে বলবো। মেয়েটা এখন অনেক ডিপ্রেশনের মধ্যে আছে।
-মানে?
-সেসব তুই বুঝবি না।
বলে মাহমুদ বাইকে উঠে বসতে বসতে বলল,,,
-চল।
-কোথায়?
-ওদের কলেজে।
তন্ময় কিছু না বলে বাইকে উঠে বসল।
চলবে~~
[একটু অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম, ঠান্ডা লেগে গিয়েছিল।তাই একটু দেরি হয়েছে।
আজকের পর্বটা কেমন হয়েছে? সবাই রেসপন্স করবেন।]
0 Comments:
Post a Comment