গল্প আমার_রুদ্রাণী পর্ব ৩

 #আমার_রুদ্রাণী

#লেখিকা:শুভ্রতা আনজুম শিখা

#part: 3


🍂🍂🍂


আজ ভার্সিটির গেট দিয়ে ভেতরে যাওয়ার আগেই মেহের খেয়াল করে যে আজকেও সেই বখাটে ছেলেগুলো বসে আছে। মেহের কোনো ঝামেলা করতে চায় না। তাই সেদিকে ধ্যান না দিয়ে চুপচাপ যেতে নিতেই বখাটে ছেলেদের মধ্যে একজন মেহেরের হাত টেনে ধরে। যা দেখে মেহের রেগে গিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ছেলেগুলো প্রিন্সিপালকে এদিকে আসতে দেখে চলে যায়। মেহের এই ব্যাপারে স্নেহা আর দিয়াকে জানালেও আহিল আর কাব্যকে কিছুই বলে না। কাব্য আর আহিল জানতে পারলে ওদের সাথে অনেক ঝামেলা হবে তাই সে চুপ থাকে।


🍂🍂🍂


পিচঢালা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে মেহের। প্রকৃতির থেকে শীতের রেশ সম্পূর্ণভাবে যায়নি বলে সকালের রোদটা বেশ লাগছে মেহেরের কাছে। আজ তার হটাৎ ইচ্ছে করলো হেঁটে হেঁটেই ভার্সিটিতে যাওয়ার তাই সে আর মনের বিরুদ্ধে গেলো না। হাঁটতে হাঁটতেই হটাৎ মেহেরের মনে হলো যেনো তার ওপর কেউ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আবদ্ধ করে রেখেছে। সকাল দিকে এই রাস্তায় মানুষের খুব একটা আনাগোনা দেখা যায় না আর আজও তার ব্যতিক্রম নয়। মেহেরের মনে কিছুটা ভয় অনুভব হতেই সে দ্রুত পা চালিয়ে মেইন রোড থেকে রিকশা নিয়ে ভার্সিটিতে পৌঁছায়। ভার্সিটিতে গিয়েই সোজা ক্লাসে চলে যায় মেহের। সেখানে দেখে দিয়া, আহিল, স্নেহা আর কাব্য মিলে কোনো একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। মেহের তাদের কাছে আলোচনার বিষয় জানতে চায় কিন্তু এমন খবর জানতে পারবে তা মোটেও কল্পনা করেনি মেহের। দিয়া জানায়,

কলেজ গেটে প্রায়ই যেই বখাটে ছেলেগুলো বসে থাকতো তাদেরকে কালরাতে কেউ হ/ত্যা করেছে। সব থেকে বেশি নৃশং/সভাবে মেরেছে রোহানকে (যে গতকাল মেহেরের হাত ধরে ছিল)

~কি বলছিস এইসব! কেউ কেনো ওদের মারতে যাবে?(অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে মেহের)

তখনই দিয়ার মাথায় একটা গাট্টা মেরে আহিল বলে,

মাইয়া মানুষ মানেই তিল থেকে তাল বানানো।

মেহের ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই কাব্য জানায়,

ড্রিংক করে ড্রাইভ করার ফলে ওদের অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল। গাড়িটা খাদে পড়ে যাওয়ায় ওরা প্রাণ হারায়। কিন্তু বিশেষ করে কষ্ট পেয়ে মরেছে ওই জয় নামের ছেলেটা। ছেলেটার এক হাত কেটে চামড়ার সাথে ঝুলে ছিল, চোখ গেলে গেছে আবার জিহ্বাটাও নাকি কাটা অবস্থায় ছিল। এছাড়াও...

কাব্যের দেওয়া বর্ণনা আর শুনতে না পেরে মেহের এক ধমক দেয়। তাতে কাব্য আবার বলে,

একজনের বর্ণনা শুনেই এই অবস্থা তোর। যাই হোক বখাটে গুলো মরছে অ্যাকসিডেন্ট করে আর এই দিয়াইন্না! স্টার জলসার সিরিয়ালের মত লবণ মরিচ লাগাইয়া কাহিনী কয়।

কাব্যের কথা শুনে দিয়া চোখ মুখ কুচকে বলে,

দিয়াইন্না কি! বজ্জাত পোলা! দিয়া বলতে পারস না!

কাব্য ফের কিছু বলতে যাবে তার আগেই স্নেহা বলে,

ক্লাসে স্যার এসেছে তাই এখন চুপ যা। তোদের ঝগড়া পরে করলেও চলবে।

স্নেহার কথা শুনে দিয়া আর কাব্য একে ওপরের দিকে চেয়ে মুখ ভেংচি দেয়। যা দেখে সবাই মুখ টিপে হাসে।


🍂🍂🍂


দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়িয়ে আছে অচেনা ব্যক্তিটি। হাতে থাকা ফোনের দিকে চেয়ে রহস্যময়ীভাবে হেসে চলেছে সে। কল আসতেই ফোনের মধ্যে গুটি গুটি অক্ষরে লেখা নামটার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে রিসিভ করে সে। ওপর পাশের ব্যক্তিটি বলে উঠে,

~আপনার কথা মতো কাজ হয়ে গেছে স্যার।

ওপর পাশের ব্যক্তিটির কথা শুনে বাঁকা হাসে ছেলেটি। গুড বলেই কল কেটে আস্তে করে বিছানায় ফোনটি ঢিল মারে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেয়ালে টাঙানো বড় ছবির ফ্রেমটির দিকে দৃষ্টি স্থির করে সে। আবারো রহস্যময়ী হাসি দিয়ে বলে,

তোমার ঐ বান্ধবী ঠিকই বলেছে। ওই বাস্টার্ড গুলোকে কেউ হত্যা করেছে। তোমার দিকে কেউ হাত বাড়ালে কিংবা তোমার দিকে বাজে নজরে তাকালে আমি তা কখনোই সহ্য করবো না রুদ্রাণী।তুমি শুধু মাত্র #আমার_রুদ্রাণী। খুব শীঘ্রই তোমাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো একান্ত আমার রুদ্রাণী করে।

~~~

চলবে~

0 Comments:

Post a Comment