#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়
#পার্ট_১৭
#লিখনিতে_Rodela_Islam
তুলি অজ্ঞান হয়ে তমালের বুকে ঢলে পরে। তমাল তুলির গালে আলতো করে হাত রেখে ডাকে
--তমাল:: তুলি এই তুলি কি হলো তোর তুলি।
তুলির কোন সারা নেই। তমাল তুলিকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।
-রাহিলা বেগম :: মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে বলে ) কি হলো ওর তুলি এই তুলি চোখ খোল না মা।
--তমাল পানি এনে তুলির মুখে পানির ছিটা দেয় কিন্তু কোন লাভ হয় না।
--লতা বেগম :: কি হলো মেয়েটার....??
--তমাল:: তোমরা ওর কাছে বসো আমি আমি ডক্টর আঙ্কেলকে কল করে আসছি। তমাল ডক্টরকে কল করে এসে তুলির পাশে দাড়ায়। রাহেলা বেগম মেয়েকে ডাকছে আর কান্না করছে।
--তমাল:: মামনী তুমি কাদছো কেনো কিছু হবে না ওর আমি ডক্টর আঙ্কেলকে কল করেছি এক্ষুনি চলে আসবে।
-লতা বেগম :: তোর জন্য মেয়েটার আজ এই অবস্থা। কেনো কষ্ট দিচ্ছিস মেয়েটাকে এভাবে কি দোষ করেছে ও। তুই ও তো ওকে ভালোবাসিস তাহলে কেনো এতো কষ্ট দিচ্ছিস তোর জন্য মেয়েটা একদিন উল্টো পাল্টা কিছু করে বসে। আর কষ্ট দিস না ওকে তোর দেওয়া কষ্ট সহ্য করতে করতে একদিন মরেয় যাবে মেয়েটা।
--তমাল:: আম্মু কেনো এমন কথা বলছো....??
--লতা বেগম :: আমি ভুল কি বলেছি আজ ও নিচে যা বলে এসেছিলো আমি তো ভেবেছিলাম ও
--আলিফ আহমেদ :- আঃ লতা কি হচ্ছে থামো এবার একেই মেয়েটার এই অবস্তা আর তুমি কি সব বলে যাচ্ছো।
-লতা বেগম :: আমি বলেছি তাতে দোষ আর তোমার ছেলের দোষটা দেখতে পারছো না।
--আলিফ আহমেদ :- ওর সাথে আমি কথা বলবো এই বিষয় তুমি চুপ করো এবার।
এর মধ্যে তুলির জ্ঞান ফিরে আসে। চোখ পিট পিট করে তাকায়। তুলিকে চোখ খুলতে দেখে রাহিলা বেগম মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে
--রাহিলা বেগম :: এখন কেমন আছিস মা।
--তুলি কোন কথা না বলে চুপ করে থাকে। এর মধ্যে ডক্টর আসে। তমাল একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বলে
--তমাল:: দেখুন না আঙ্কেল কি হয়েছে ওর হঠাৎ সেন্স লেস হয়ে গিয়েছিলো।
--ডক্টর আঙ্কেল তুলির চেকআপ করে বলে
-ডক্টর :: প্রেসার কমে গেছে এবং অতিরিক্ত মানুষীক চাপে আছে মেয়েটা তাই এমন হয়েছে।
ডক্টর : : এই টুকো মেয়ে তার কিসের এতো চিন্তা কি নিয়ে চিন্তা করো তুমি ( তুলিকে উদেশ্য করে বলে)
তুলি কারো কথার কোন উত্তর দেয় না।
--আসিফ আহমেদ :: এছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই তো ওর....??
--ডক্টর :: এখন কোনো সমস্যা নেই কিন্তু এতো মানুষিক চাপ নিতে থাকলে সমস্যা হতে পারে পরে। আচ্ছা বলত তোরা এতো মানুষ থাকতে মেয়েটা কি নিয়ে এতো চিন্তা করে।
--আসিফ আহমেদ :: তোকে পরে সব বলবো।
--রাহেলা বেগম :: আমার মেয়েটার কিছু হবে না তো।
--ডক্টর :: না কিছু হবে না শুধু একটু রেষ্টে রাখবেন আর চিন্তা করতে বারন করবেন ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করলেয় হবে। আর এই ঔষধ গুলো খাওয়ালেয় হবে। ডক্টর চলে গেলে তমাল সবার উদ্দেশ্য বলে
--তমাল:: তোমারা নিচে যাও ওকে রেস্ট নিতে দাও। আর আম্মু ওর জন্য এক গ্লাস দুধ নিয়ে আসো।
-রাহেলা বেগম মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে যান। সবাই চলে যেতে তমাল তুলির পাশে এসে বসে তুলির হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলে
--তমাল:: তুই সব কিছু বুঝেও কেনো এমন করিস বলতো.....??
-তুলি কিছু না বলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
--তমাল:: তুই জানিস আমি কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
--তুলি:: কেনো ভয় পেয়েছো কেনো আমি মরে গেলে তো তোমারি ভালো হতো।
--তমাল:: ( তুলির মুখ চেপে ধরে বলে ) চুপ আর কোন দিন মরার কথা বলবি না।
--তুলি:: কেনো বলবো না......??
--তমাল:: তুই জানিস না তোর কিছু হলো আমি ভালো থাকতে পারি না।
--তুলি:: কোনো ভালো থাকতে পারো না তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না তাহলে কেনো আমার কিছু হলো তোমার কষ্ট হবে....??
--তমাল:: তুই বুঝিস না আমি তোকে ভালোবাসি কি না.....??
--তুলি:: না বুঝি না আমি.... তুমি তো সব সময় বলো আমাকে তুমি ভালোবাসো না আমার কিছু হলে তোমার কষ্ট হয় না তাহলে কি বুঝবো আমি।
--তমাল:: মুখের কথাই কি সব সময় সত্যি হয়। তুই বুঝিস না তোকে আমি কতোটা ভালোবাসি।
--তুলি:: কি করে বুঝবো বলেছো কখনো।
তমাল তুলিকে একটানে শোয়া থেকে উঠেছি নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে তুলির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে
--তমাল:: ভালোবাসি তোকে আমি আমার জীবনে চেয়েও বেশি ভালোবাসি। আমার জীবনের শেষ নিশ্বাস পযন্ত তোকে আমি ভালোবেসে যাবো। I love you Jan ❤️❤️
--তুলি:: (চুপ চাপ তমালের কথা শুনছিলো এতোক্ষণ। এবার তুলি তমালের কাছ থেকে ছুটে বলে ) কিন্তু দুঃখের বিষয় কি যানো আমি এখন আর তোমাকে ভালোবাসি না।
--তমাল কপাল কুচকে তাকিয়ে বলে ( কি বলতে চাচ্ছিস )
--তুলি:: তুমি আমাকে যতোদিন কষ্ট দিয়েছো যতটা কষ্ট আমি পেয়েছি ততোটা কষ্ট তুমি যতোদিন না ভোগ করবে ততোদিন আমি তোমাকে ভালোবাসি না আমি তুলি আজ থেকে ঠিক দুই বছর এক মাস পঁনেরো দিন পযন্ত তমাল আহমেদকে ভালোবাসি না।
--তমাল:: তুলি তুই কি পরিশোধ নিচ্ছিস...??
--তুলি:: হ্যাঁ পরিশোধ নিচ্ছি আমি তো বলেছি তুমি যতো দিন আমার ভালোবাসার জন্য কাদবে না ততদিন তোমাকে ভালোবাসবো না আমি। তুমি জানো কতো রাত তোমার জন্য আমার না ঘুমিয়ে কেটেছে। কতোরাত কেঁদেছি তোমার জন্য । এখন তার একটু তুমিও উপভোগ করো।
--তমাল কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাহিলা বেগম তুলির জন্য এক গ্লাস দুধ আর কিছু ফল নিয়ে আসে।
-রাহেলা বেগম:: তুলি আম্মু চুপ চাপ এগুলো খেয়ে নে তো।
--তুলি:: আম্মু আমি শুধু ফল গুলো খাবো দুধটা খাবো না।
--রাহেলা বেগম :: খাবো না বললে কি করে হবে আম্মু না ভালো খেয়ে নে।
--তুলি:: ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে বলে ( আচ্ছা খাবো তুমি রেখে যাও )
--রাহেলা বেগম :: আগে তুই খাবি তারপর যাবো আমি।
--তুলি:: আমি বললাম তো খাবো তুমি যাও।
--রাহেলা বেগম একবাল তমাল আর তুলির দিকে দাকায় তারপর বলে
তমাল তুই দেখিস তো ও যেনো ঠিক করে খায়।
--তমাল:: আচ্ছা মামণি।
রাহেলা বেগম চলে যেতেই তুলি তমালের দিকে তাকিয়ে দুষ্ট হাসি দেয়।
--তমাল:: কি হলো এভাবে হাসছিস কেনো....??
--তুলি:: তমাল ভাই তুমি আমাকে সত্যি ভালোবাসো..?
--তমাল:: কেনো আমি মিথ্যে বলছি নাকি
--তুলি:: তাহলে আমাকে এখন খাইয়ে দাও।
--তমাল:: তোর হাত নেই যে আমাকে খাইয়ে দিতে হবে
--তুলি:: ঠিক আছে দিও না আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে খাইয়ে দিলে আমি দুই বছরে শাস্তিটা কমিয়ে দিবো কিন্তু তা আর হলো কই।
--তমাল:: মানে
--তুলি:: মানে আমার কিছু শর্ত মেনে নিলে আমার ভালোবাসার জন্য দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে না।
--তমাল:: কি শর্ত.......??
--তুলি:: বলবো আগে খাইয়ে দাও।
গল্পটা ভালোলাগলে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবেন।পরের পর্ব সবার আগে পেতে ফলো দিয়ে পাশে থাকুন।
ধন্যবাদ
#চলবে
#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়
#রোদেলা_ইসলাম
0 Comments:
Post a Comment