গল্পঃ গরীব ছেলে যখন বিজনেসম্যান
পর্বঃ ২০ & ২১
লেখকঃ নামহীন লেখক
..
..
..
--- তার মানে মিতু আবারো আমাকে এভাবে ফাসিয়ে দিলো,,,!!
আসলে মিতুকে এভাবে বিশ্বাস করাটা আমার মোটেও ঠীক হয় নি।
--- এক ঘন্টা না যেতেই মিতুসহ আমার আপু আব্বু ও অনু আসলো।
মিতুঃ ভাইয়া আবির কে ছেড়ে দাও
--- কি বলিস বোন ও নাহ তোকে...??
ভাইয়া অনেক হয়েছে আর নাহ। আমি যা বলেছি সব মিথ্যা আবির আমার কিডন্যাপ করে নি। তাই তুমি ওকে ছেড়ে দাও প্লিজ।
---- মিতুর কোথায় ওর ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দিলো।
আমি জেল থেকে বের হয়ে মিতুকে বললাম,,, আশা করি বাকিটুকুও তোমার ভাইয়াকে বলে দিবা। আমরা সবাই তোমার ভাইয়ার আশায় পথ চেয়ে থাকবো।
---- আমরা সবাই বাসায় চলে আসলাম।
আপু মিসকাত কে পেয়ে অনেক খুশী৷
অনুকে সবাই যেনো পারছে নাহ মাথায় তুলে আদর করতে।
---- আমার সৎ মা তো বলেই বসলো এমন একটা লক্ষী মেয়ে আবিরের বউ হবে। অনেক মিষ্টি তুমি।
আমি চেয়ে চেয়ে শুধু অনেকে দেখছি। অনু জেনো লজ্জায় লাল করে ফেলেছে ওর মুখটি।
--- অনু এবার বললো আচ্ছা আমি আশি এবার।
আপু আমায় অনুকে এগিয়ে দিয়ে আসতে বললো।
আমি অনুকে এগিয়ে দিতে ওর সাথে সাথে যাচ্ছি। দুজনেই চুপচাপ হেঁটে চলেছি। আজ আমার অনেক ইচ্ছেই হচ্ছে অনুকে কিছু বলার।
--- কিন্তু কথাগুলো পেটে আসলেও যেনো মুখ দিয়ে আর বার হচ্ছে নাহ। অনুর বাসার কাছাকাছি চলে এসেছি আর মাত্র এক মিনিটের রাস্তা। এবার বুকে সাহস করে বলেই দিলাম অনুকে....
অনু একটা কথা বলার ছিলো তোমায়
---- হুমমম বলো কি কথা
অনু আসলে আমি আমার মন কে যতবারই প্রশ্ন করেছি সে উত্তর দিয়েছে তোমার মনটাকে সে গ্রহণ করতে চাই।
--- আমার কথা শুনে অনু দাঁড়িয়ে গেলো।
আমিও কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।
অনু কিছুটা রোমান্টিক ভাব নিয়ে বললো....দেখো আবির আমি ওসব শুনতে চাই না এক কথায় আমি সোজা ঔ তিনটা শব্দ শুনতে চাই বলবে কী??
---- হুমমম
আমি তোমাকে ভালোবাসি অনু।
আমিও তোমাকে ভালবাসি আবির।
দুই মিনিটের জন্য আমার আর অনুর চোখের ভাষায় কিছুটা কথা চললো।
যদি ভালোই বাসো তাহলে ঐদিন দুইটা চড় মারায় এভাবে হারিয়ে গিয়েছিলে কেনও অনু,,,,??
--- কই হারিয়ে যাবো কেনও,,, শুধু বুকভরা বিশ্বাস ও আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা নিয়ে তোমার পথ চেয়ে বসে ছিলাম। আমি শুধু একটা কথাই ভাবতাম আমি যদি সত্যিই তোমাকে ভালবেসে থাকি তাহলে একদিন না একদিন তোমাকে আমি পাবই। আমার সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে শুধু তুমি ছিলে আবির।
---- তাই অনু...?? সত্যিই আমায় এতটা ভালোবাসো...??
হুম সত্যিই আবির আমি তোমাকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি৷
-- অনুকে জরিয়ে ধরতে সাহস পাচ্ছি নাহ তবে অনেক ইচ্ছে করছে অনুকে বুকের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরি। তবে আমার সেই সাহস যেনো হচ্ছে নাহ।
---- আচ্ছা আবির এবার আমি আশি তাহলে।
হুমমম
অনু বাই বলে ওর বাসায় চলে গেলো। আমিও বাসায় চলে আসলাম। এসে আমার রুমে গিয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবছি অনুকে বউ করতে পারলে সত্যিই আমি অনেক ভাগ্যবান হবো। ওর ভালোবাসায় আমার জীবনটা সুখে ভরে যাবো।
---- নিজের সুখের কথা ভাবতে গিয়ে যেনো বুকের ভেতর কিছু একটা নাড়া দিয়ে উঠলো।
কল্পনার বেশে মনে হলো কেউ যেনো আমায় বলছে,, নিজের সুখের, সংসার ও বউয়ের কথা ভাবচিস তোর বোনের সংসারটা নিয়ে ভাব। তোর বোনের সুখ নিয়ে ভাব।
---- আমার সুখ যেনো হারিয়ে গেলো।
আমিই বা আর কী করবো,,। এতো চেষ্টার পরও মাসুদ ভাইয়া যদি আপুকে মেনে না নেই তাহলে আর কী করবো। আর কী করতে পারি.. আপু আমি কি করতে বাদ রেখেছি। কত পথই না অবলম্বন করলাম তবুও কাজ হলো নাহ। একটিবারের জন্যও উনি যেনো আপুর কথা ভাবেন নি। ভাবেন নি উনার এমন একটা নিষ্পাপ সন্তানের কথা।
--- তবে আমার মনে হয় মিতু এবার সব কথা মাসুদ ভািয়া কে খুলে বলবেন। উনি এবার আসবেন আমার আপুকে নিতে । আমার ভাগ্নে কে নিজের সন্তান পরিচয় দিয়ে উনি কোলে তুলে নিবেন।
---- একটুপর অনু ফোন দিলো...
এই বাবু কী করছো....??
বাবু মানে বাবু কে অনু...?? আরে তোমাকে আদর করে বাবু নাম বলে ডাকলাম আরকি।
---- আমি হাসবো না কাঁদবো বুজছি নাহ। বাবু বলে বিএফ কে কেউ ডাকে নাকি,,,?? বাবু বলে তো নিজের সন্তান কে বলে ডাকে। হায়রে যুগ হায়রে ভালোবাসা।
---- এই বাবু কী হলো তোমার কথা বলছো নাহ কেনো তুমি...??
অনু দেখো এসব ভাষায় আমায় ডাকবা নাহ তো। এটা শুনতে আমার ভালো লাগছে নাহ। আমাকে আর বাবু বলে ডাকবা নাহ তুমি।
---- আচ্ছা আচ্ছা ঠীক আছে। তুমি তাই বলে রাগ করো নাহ আমি আর পরবর্তীতে তোমায় বাবু বলে ডাকবো নাহ কেমন।
---- হুমমম ধন্যবাদ
অনুর সাথে আমার কিছুক্ষণ কথা চললো।
রাতে সবার সাথে খাবার খেতে বসলাম। খাওয়া শেষ হলে ভাগ্নের সাথে একটু মজা করলাম। একটুপর রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে হাল্কা নাস্তা করে অফিস গেলাম।
---- সারাদিনে অফিসে থাকা অবস্থায় অনু যে কতবার আমাকে ফোন করলো তার হিসাব নেই। বাসায় ফিরে অনুকে ফোন করতে ও আমাকে কিছু কথা শোনালো। একে সাড়াদিন অফিসে থাকা আবার বাসায় না আসতেই জিএফ এর বকা।
--- ফোন কেটে দিয়ে আমি ফোনটা বন্ধ করে রেখে দিলাম।
আপুর রুমে গিয়ে দেখি ভাগ্নে বসে থেকে খেলা করছে। ওকে কোলে তুলে নিলাম।
ভাই কখন ফিরলি,,?? এইতো আপু এখনি।
ওহ যা ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার বাড়ছি। আম্মু কোথায় রে আপু,,,??
--- এইমাত্র রান্না সেরে রুমে গিয়েছে মনে হয়।
আচ্ছা আপু তুই তাহলে খাবার বাড়তে থাক আমি একটু আম্মুর কাছ থেকে আসছি,, । আচ্ছা ভাই
--- আসলে এই কয়েকটা দিন আম্মুকে আমি সময়ই দিইনি। ঠীক মতো উনার সাথে কথা হয়নি। মনটা কেমন যেনো করছিলো তাই আজ উনার রুমে গেলাম। কিন্তু রুমে গিয়েই একটা বোকার পরিচয় দিলাম যাতে মনে হয় উনি কিছুটা কষ্ট পেলো।
--- আমিঃ- আসবো আম্মু??
উনি কিছু না বলে আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো বাবা তোর মায়ের ঘরে আসতে পারমিশন লাগবে তোর,,,??
নাহ মানে আসলে আম্মু
তোমার সাথে বেশি সময় কথাই হয় না। তাই আসলাম গল্প করতে ।
---- অফিস হতে কখন এসেছিস,,,?? খাওয়া-দাওয়া হয়েছে..??
এখনি আম্মু। আপু খাবার বাড়ছেন খাবো একটুপরেই।
চল আগে খাবি তারপর গল্প করবো। আম্মুর সাথে খাবার টেবিলে চলে গেলাম। সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া সাড়লাম।
--- খাওয়া শেষ হলে সবাই বসলাম গল্প করতে।
গল্প করা শেষ হলে আমি আমার রুমে আসলাম। ফোনটা অন করতে দেখি অনু ২৫ টি মেসেজ করেছে। শুধু সরি সরি।
----অনুকে ফোন দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ওয়াসরুমে গিয়ে আমি ফ্রেশ হচ্ছি।
আম্মু আমাকে ডাক দিয়ে বললো দেখতো আবির বাইরে কে এসেছে দরজা খুলে দে।
--- আমি গিয়ে দরজাটি খুলতেই আমার চোখ আকাশে উঠলো...
মাসুদ ভাইয়া ও তার বোন মিতু আজ প্রথমবারের মত এসেছে আমাদের বাসায়।
আমাকে কিছু না বলে মাসুদ ভাইয়া মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো।
--
--
গল্পঃ গরীব ছেলে যখন বিজনেসম্যান
পর্বঃ ২১
লেখকঃ নামহীন লেখক
..
..
..
--আরে ভাইয়া এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেনও,,,??ভিতরে আসুন ভাইয়া। মাসুদ ভাইয়া আমার হাতে একটা মিষ্টির প্যাকেট ধরিয়ে দিলো। ভাইয়া এগুলোর কি দরকার,, আসুন ভিতরে।
---- মাসুদ ভাইয়ার সাথে সাথে মিতু ও পিছন পিছন বাসার ভিতরে ঢুকলো। মাসুদ ভাইয়া বাসায় ঢুকেই এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে।
ভাইয়া এতিমদের বাসা কি দেখছেন,,,??
---উনি হয়তো আমার কথায় কিছুটা অপমানবোধ করলো। আপু কোথায় তুই এদিকে আয় তাড়াতাড়ি। দেখ কে এসেছে।
-----ভাই একটু ব্যাস্ত আসছিএকটুপর। আপু ওর রুম থেকে এই কোথা বললো। মিতুসহ মাসুদ ভাইকে ডাইনিং রুমে আমরা বসতে দিলাম।
---- আম্মু কোথায় তুমি এদিকে আসো। আম্মু এসেই জানতে চাইলো কে উনারা বাবা চিনছি নাতো।
আম্মুর না চিনবারই কথা কেননা আম্মু তো জানেনা মাসুদ ভাইয়া আপুর স্বামী কিনা।
----আরে আম্মু উনি তোমার মেয়ের জামাই। আমার দুলাভাই।
ওহ,,, তা বাবা কোমন আছো??
----হুমমম মা ভালো আছি। আপনারা কেমন আছেন,,,??
হ্যাঁ বাবা ভালো আছি। উনি তোমার বোন বুঝি,,,??
হুমম মা ও আমার ছোট বোন মিতু।
---- আচ্ছা তোমরা বসো। আম্মু মিষ্টির প্যাকেটটি ভিতরে নিয়ে গেলো।
ঐ আপু কি করিস বাইরে আই। এসে দেখে তো যা কে এসেছে।
---- আসছি রে ভাই। তোর ভাগ্নে কোলে টয়লেট করেছে। শাড়ীটা পাল্টিয়ে আসছি।
একটুপর আব্বু আসলেন। আব্বুকে দেখেই মাসুদ ভাইয়া দাঁড়িয়ে সালাম দিলেন। আব্বুকে সালাম দেওয়া দেখে আমি কিছুটা অবাক হলাম। কেননা আম্মু আসলে উনি সালাম দেয়নি। আর না দেবারই কথা উনিতো আম্মুকে চিনতেন না৷
--- তা কেমন আছো,,,?? (আব্বু)
ভালো আছি আব্বা। আপনি কেমন আছেন,,,??
এই আল্লাহ রেখেছে ভালোই। তা উনি বুঝি তোমার বোন, ,??
হুমম আব্বা ও আমার ছোটবোন মিতু।
ওহহ। লাবণ্যর মুখে একদিন শুনেছিলাম তোমার নাকী বিয়ে হয়েছে। তা তোমার বরকে নিয়ে আসলে না যে,,,??
---- আমি এবার জিহ্বাতে কামড় দিয়ে বলছি। গুড আব্বু একেবারে বাঁশ।
আব্বুর কথা শুনে মিতুর উঁচু মুখটা নিঁচু হয়ে গেলো।
---- আরে লজ্জা পাওয়ার কি আছে। এরপর আবার আসলে তেমার বরকে নিয়ে আসবা কেমন,,,??
আম্মু নাস্তা নিয়ে আসলেন৷ মাসুদ ভাইয়া ও মিতুকে নাস্তা এগিয়ে দিয়ে আমি একটু আপুর রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম৷
---- কিরে আপু কখন থেকে ডাকছি তোকে। চল বাহিরে তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে আজকে।
ভাই তুই কি সারপ্রাইজ দিবি আমি তা সব জানি। জানালা দিয়ে আমি সব দেখেছি।
--- কি বলিস আপু তুই দেখেও বাইরে আসতেচিস নাহ,,??
নাহ ভাই
---কেনও আপু তুই কি মাসুদ ভাইয়া আসাতে খুশি হোশ নাই,,,??
আপু কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো। তুই বাইরে যা ভাই আমি একটুপর আসছি৷
আসলে মাসুদ ভাইয়া আসলে আপু যতটা খুশি হবে বলে আমি মনে করেছিলাম তা নয়৷ আপুর চোখ-মুখ আজ অন্য কোন কথা বলছে।
---- আমি আপুর রুম থেকে চলে আসলাম৷ অনু ফোন করলে আমি একটু আমার রুমের দিকে গেলাম। অনুর সাথে একটু কথা বলে ডাইনিং রুমের দিকে আসতে দেখি... মাসুদ ভাইয়া আব্বুর হাত ধরে বসে আছে।
---- আরে বাবা এগুলো কি করছো,,,!! ছাড়ো ছাড়ো। আমরা তো রাজি তুমি লাবণ্য মাকে গিয়ে বলো। ও যেতে চাইলে আমরা না করবো না। আমরা সবাই রাজি।
----- আব্বু আমাকে ইশারা করে আপুকে ডাকতে বললো। আমি আবার আপুকে ডাক দিলাম। আপু আসলো নাহ।
---আপু কেনও আসছে নাহ আমার আর বুজতে বাকি রইলো নাহ। আমার মনে হচ্ছে আপু মাসুদ ভাইয়ার বাসায় যাবে না আর। এই জন্যই আপুকে বার বার ডাকার সত্ত্বেও আপু বাইরে আসছে নাহ।
---- আচ্ছা আব্বা আমি দেখছি বলে মাসুদ ভাইয়া আপুর রুমে গেলো।
আমরা সব ডাইনিং রুমে দাঁড়িয়ে থাকলাম।
----- একটুপর আপুর রুম থেকে পরপর ঠাশশ ঠাশশ করে শব্দ আসলো। মনে হলো আপু বা মাসুদ ভাই কে যেনো কাউকে চড় মেরেছে।
----- আমারই বাড়িতে এসে আমারই বোনকে আজকে যদি মাসুদ ভাইয়া গায়ে হাত দেই তাহলে একদম ঠীক হবে নাহ। আজকে উনার কিছুনা বলি.....
----আব্বু আমাকে আঁটকাতে চাইলেও আমি দৌঁড়ে আপুর রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি যা ভেবেছি তার উল্টো। মাসুদ ভাইয়া গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তার মানে চড়টা আপুই মেরেছে বুজলাম। তাি আমি আর কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
---- তুমি বেরিয়ে যাও এই বাড়ি থেকে। তোমার মুখ আমি দেখতে চাই না।
মাসুদ ভাইয়া আপুকে কিছু না বলে আমার দিকে চাইলো।
আপু এগুলো কি বলচিস,, আর তুই ভাইয়াকে চড়.....
----ভাই তুই এখানে আশা করি কথা বলবি নাহ। যার যা প্রাপ্য আমি সেটাই তাকে বুজিয়ে দিয়েছি। উনাকে বল এখনি যেনো চলে যাই।
---- আব্বু - আম্মু আপুকে বুঝাতে চাইলেও আপু কারো কথা শুনলো নাহ। আজকে আপুকে দেখে আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম। কেননা ওর এমন রাগ আমি কোনদিনও দেখি নাই।
----- সবার শেষে মিতু আসলো।
ভাবী ভাইয়ার কোন দোষ নেই। সব দোষ আমার ভাবী। তুমি ভাইয়াকে সাজা দিও না আমাকে দাও। আমার পাপের সাজা আমাকে দেও প্লিজ।
----- আবির আমি তোকে কি বলেছি....বললাম নাহ উনাদের চলে যেতে বল। নয়তো ঐদিনের মত আমিও আজ বলতে বাধ্য হবো যে না গেলে ঘাড়ে ধাক্কা মেরে বাহির করে দিবো।
----- এবার মাসুদ ভাইয়া ও মিতু আর অপেক্ষা না করে চোখে জল মুছতে মুছতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন৷
----- আব্বু ও আম্মু ওদের পিছু পিছু গেলো।
আপু এটা তুই কি করলি আপু...??
উনাদের এভাবে অপমান না করলেও পারতি আপু।
---- কেনও ভাই ঐদিনের কথা কি তুই ভুলে গিয়েচিস...?? ঐদিন তোকে আমাকে কত অপমান করেছিলেন উনি,,, মনে নেই তোর উনার পা অবদি ধরে ছিলাম। তার বিনিময়ে কি পেয়েছিলাম ভাই,,,!! কপালে লাথি জুটেছিলো। ভুলে গেচিস সব ভাই,,?? তুই ভুলে গেলেও আমি ভুলিনাই রে ভাই।
---- নাহ আপু আমি কিছুই ভুলিনাই। তবে উনারা তো সব পাপের সাঁজা পেয়েছেন। মিতুও তো কম কষ্ট পায়নি।
তোর উচিৎ ছিলো উনার বাসায় না গেলেও উনাকে ভালো ভাবে বলা। এর পর কি উনি আর আমাদের বাসায় আসবেন। আমার তো মনে হয় না আপু উনি আর আসবেন।
---- আসবে নাহ মানে। ও ঠীকই আসবে ভাই। ওর চোখের ভাষা এতদিন যা বলতো আজ তার উল্টো টা বলছে। ও ঠীকই আসবে আবার তুই দেখে নিস।
--- আচ্ছা আপু তাই যেনো হয়।
ভাগ্নে কে নিয়ে আপুর রুম থেকে আমি চলে আসলাম।
ভাগ্নে কে আমার বেডে বসে দিয়ে বলছি...
তোমার আব্বুকে আজকে দেখলে ভাগ্নে,,,??
তুমি বড়ো হতভাগা ভাগ্নে তোমার আব্বুকে এত কাছে পেয়েও আজকে উনার কোলে চড়তে পারলে নাহ।
---- মনে মনে বলছি। আপু যা করেছে বেশ করেছে। আজ মাসুদ ভাইয়া উচিৎ শিক্ষা পেয়েছে। এই অপমান সজ্জ করে উনি যদি আবার আপুকে নিতে আসেন তবেই বুজবো উনি আপুকে সত্যিই এখনো ভালবাসেন।
---- একটুপর আবার অনু আমাকে ফোন করলো।
ঐ কি করছো...??
অনু তোমার সাথে রাতে কথা হবে। এখন একটু খারাপ লাগছে।
খারাপ লাগছে কেনও আনির কি হয়েছে তোমার,,,??
----আরে কিছুনা রাখো তো তুমি।
ঐ বলো প্লিজ কি হয়েছে....??(অনু)
আরে মাসুদ ভাইয়া আপুকে নিতে এসেছিলেন কিন্তু আপু উনাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
----ওহ আচ্ছা বুজলাম।
হুমম এখন রাখো তুমি রাতে কথা হবে।
ফোন কেটে দিলাম। একটুপর দেখি আপুর রুম থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসছে৷
ভাগ্নে কে কোলে নিয়ে আপুর রুমে গিয়ে দেখি আপু কাঁদছে।
----- আপু কি হয়েছে তোর কাঁদচিস কেন তুই,,,,??
ভাই আজকে উনাকে আমি এই হাত দিয়ে মারলাম। আমি এ কি করলাম ভাই।
----আপু কাঁদিস নাতো তুই। উনি আবার আসবেন দেখিস । আপু কান্না থামালে ভাগ্নে কে আপুর কোলে দিয়ে আমি রুমে চলে আসলাম।
--- একটুপর ফোনটা বেজে উঠলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখি মাসুদ ভাইয়া ফোন করেছেন ।
আমি ফোন ধরে কিছুক্ষণ কথা বললাম৷
----উনি এবার জানতে চাইলো আপু কী করছেন,,,তোমার আপুকে ফোনটি দাও।
আচ্ছা ভাইয়া ঠীক আছে। আমি আপুর কাছে ফোন নিয়ে গিয়ে বললাম নে আপু ভাইয়া ফোন করেছেন৷
আপুকে ফোন দিয়ে আমি রুমে চলে আসলাম...
(এতদিন আমি হাসপাতালে ছিলাম তাই গল্প দিতে পারি নাই।)
..
..
..
চলবে,,,??
..
(গল্পটি ভালো লাগলে অবশ্যই অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন)
0 Comments:
Post a Comment