#Crazy_for_you🦋
#পর্বঃ১৩
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)
মুরাদের নাচানাচি দেখে মেহমেদ ভ্রু কুচকালো, সে বলল, কি হইছে তোর? জলাতঙ্ক রোগির মতো নাচানাচি করতাছস কেন?
অতঃপর মুরাদের টনক নড়লো মেহমেদের কথায়। সোজা হয়েই মাথায় ব্রাশ করেই বলল,কই, নাহ কিচ্ছু হয় নি। কাল একটা জায়গায় ঘুরতে যাবো তো, তাই একটু আনন্দ করছি এই আর কি।
মুরাদ কথা শেষ করতেই বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো মোবাইল টিপতে টিপতে। এর মধ্যেই শোনা গেলো মেহমেদের পোষা টিয়ে পাখির কন্ঠে কিছু কথা। "দুষ্টু লোক, এসেছে, দুষ্টু লোক এসেছে। "
মেহমেদ পাখিটাকে শুধালো, এদিকে আয় রিও!
রিও কে ডাকতেই মেহমেদের কাধে এসে বসল রিও , মোবাইলের স্ক্রিনে হুরের ছবি দেখে আবারো রিও বলল, বস, পরীই পরীই।
মেহমেদ জবাব দিলো, হু, পরী। আয় এখন তোর খাচায় ঢোকার টাইম।
তারপর রিও কে নিয়ে খাচায় রেখে আসলো মেহমেদ আর নিজেও ঘুমিয়ে পড়লো।
_____
১২ টা বেজেছে প্রায়। হুরিজিয়ান মশারি টাঙ্গিয়ে সবে মাত্র ডুকেছে বিছানায়। হঠাৎ মেসেজ টোনে বিফবিফ করে উঠল মোবাইল। স্ক্রিনে নাম স্পষ্ট। সাইকা আফরিন। নিচে গুটিকয়েক লেখা দেখা যাচ্ছে। "এই মাইয়া কবে দেখা করবা। আমি তোমার ডিপার্টমেন্টে গিয়েও তোমায় খুজে পেলাম না।"
হুরিজিয়ান হাসল,মুরাদের এই গার্লফ্রেন্ড যে এত অধৈর্য্য কশ্মিনকালেও ভাবে নি। হুরিজিয়ানের থেকে জুনিয়র। সবে কয়েকদিন হল ভর্তি হয়েছে তাদেরই ভার্সিটিতে। যখন থেকে জেনেছে হুরিজিয়ান মুরাদের বেয়াইন, সেই থেকে মেয়েটা মাথা খাচ্ছে। হুরিজিয়ান মেসেজ টাইপ করলো,সরি, আজ একটা কাজে তাড়াতাড়ি বেরিয়েছি,তাই দেখা করতে পারি নি। তুমি এক কাজ করো, কাল বিকেলে আমরা সোসাইটি দেখা করি। সাইকা কয়েকটি লাভ ইমোজ দিয়ে জবাব দিলো আচ্ছা।অতঃপর তানজিলাকে ফোন করে সারাদিনের সব ঘটনা খুলে বলল, হুরিজিয়ান। কথাগুলো শুনে যেন তানজিলা অবাকের চরম সীমা অতিক্রম করলো, তারপর আরো কিছুক্ষন কথা বলে কল কাটলো হুরিজিয়ান।
.
.
সারাদিনের জার্নিতে বেশ কড়া ঘুম দিয়েছে মেহমেদ। এইতো কিছুক্ষন আগে তার ঘুম ভাঙলো। মোবাইলের পাওয়ার বাটনে চাপ দিয়েই দেখল,৬.৩০ বাজে । আশপাশ অবলোকন করে দেখতে পেলো মুরাদ নেই,তাই মেহমেদ ভাবলো হুরকে একটু জ্বালানো যাক!মেয়েটাকে বড্ড মিস করছে সে। কল রিনিং দেখেই মনের মধ্যে একটা পুলকিত ভাব আসলো মেহমেদের।
সেই নেশা, সেই অবয়ব, সেই কন্ঠস্বর, যা মেহমেদকে গ্রাস করেছে। সে নেশা কিভাবে সে ছাড়বে। অতঃপর অপর প্রান্ত থেকে কল রিসিভ হতেই, শুনতে পাওয়া গেলো হুরিজিয়ানের ঘুমু ঘুমু কন্ঠ।
অকর্থ্য গালিগালাজ বলা বাক্য।
মেহমেদ হাসলো, সে ভাবলো মেয়েটার এই অভ্যাসের একটা পরিবর্তন আনা দরকার।
মেহমেদ জবাব দিলো, "কাছে থাকলে গালি দেওয়ার অপরাধে লাভ টর্চার করে দিতাম। "
পুরুষালি কণ্ঠে হুরিজিয়ানের টনক নড়লো, মেহমেদের কন্ঠ বুঝতে পেরে চোখ মেলে তাকালো হুর। মেহেমেদের চেহারা দেখতে পেয়েই লজ্জায় মুখ ঢাকলো হুর। নিজেকে নিজে গালি দিয়ে হুর মনে মনেই বলল, ছিঃ হুর! তোর এতো অধঃপতন।
লজ্জায় দেখছি মানুষকে মুখ ও দেখাতে পারবি না।
হুরিজিয়ানকে মুখ ডাকতে দেখেই মেহমেদ বলল,"ওই ঠোঁট বেধ করে যেনো না শুনি আর গালি,নাহলে ওই ঠোঁটে পানিসমেন্ট হবে জারি। সেই শাস্তি তুমি সহ্য করতে পারবে না হুর।"
হুরিজিয়ান যেন পালাতে চাইলো, সে জবাব দিলো, আমি ওয়াশরুম ভ্রমণ করতে যাবো, এখন রাখছি।
অতঃপর কল কেটে গেলো। মেহমেদ মোবাইলটাকে বুকে রেখেই বলল, হায়!মেহমেদ তুই তো শেষ, একেবারেই শেষ। এই মেয়ে তোকে আর ভালো থাকতে দিবে না, তুই তো ভালো ছিলি, কিন্তু এখন আর ভালো থাকতে পারবি না।
মেহমেদ হেসেই উঠে বসে বিছানায়। তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হয় সকালের নাশতা খেতে।
অতঃপর.....
~চলবে কী?
(আজকের পর্ব নিয়ে মন্তব্য করো, কেমন লাগছে মেহমেদ হুরিজিয়ান জুটি।আর রিও নামের পাখি টা কিন্তু মেহমেদের মতোই ঠোটকাটা হবে 😃🤗)
0 Comments:
Post a Comment