গল্প Crazy_for_you পর্ব ১৫
#Crazy_for_you🦋
#পর্বঃ১৫
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)
অতঃপর মুরাদ বলে উঠল, তার মানে আমার বউকে তুমি ভালোবাসবে না।
মুনিবা বেগম হাসলেন, মাথায় হাত ভুলিয়ে জবাব দিলো কেনো ভালোবাসবো না। আমি সবাইকেই সমান ভালো বাসবো। যা ফ্রেশ হো। রুমে মেহমেদ আছে, চেচাবি না। তাহলে মাইরের হাত থেকে বাচাতে পারবো না।
মায়ের কথা শুনে আর বসে থাকলো না মুরাদ। চলে গেলো কক্ষে।
যেতেই দেখতে পেলো মেহমেদ কারো সাথে কথা বলছে, তাই আর কিছু খেয়াল করলো না, সোজা চলে গেলো ওয়াশরুমে।
____
মেহমেদ নিজ কক্ষে অবস্থান করছে। মেহমেদের কাধে বসে আছে রিও। তারা দুজনেই বসে আছে হুরের কল রিসিভ হওয়ার জন্য। রিও বারবার একই কথা বলে যাচ্ছে, বস! বস! পরী কই? পরী কই?
মেহমেদ রিওকে কিছু বলার আগেই দেখা গেল, অপর প্রান্তে হুরকে তখনই রিও আবার বলে উঠল, পরীই পরীই!
মেহমেদের কাধে রিওকে দেখেই হুরিজিয়ান না জানার ভান করে বলল, এই পাখিটা কার?
মেহমেদ জবাব দিলো, আমার।
অতঃপর রিওকে নিয়ে কথা আগালো তাদের মাঝে। কিন্তু হুরিজিয়ান বার বার ফোন কাটতে চাইলেও মেহমেদের জন্য পারছে না। ইতোমধ্যে আয়শা বেগম এসে হুরিজিয়ানকে শুধালো কার সাথে কথা বলছে সেটা জিজ্ঞাসা করতেই, মিথ্যা বলে চাড় পেলো হুর । তবুও যেনো হুরিজিয়ানকে সন্ধেহের চোখে দেখা শুরু করেছে। তবুও মেহমেদ নাছড় বান্দা, কল কাটার কথা বলতেই হুরিজিয়ানকে যেন, শাসালো। কি করবে হুরিজিয়ান। অতঃপর হুরিজিয়ান মেহমেদকে বুঝালো যে তারা রাতে কথা বলবে। কথাটা শুনতেই মেহমেদ কল কাটল।
অতঃপর হুরিজিয়ান হাফ ছেড়ে বাচল।
এভাবেই মেহমেদের পাগলামোকে সামল দিয়ে কেটে গেলো প্রায় ১ মাসের মতো এবং এগিয়ে এলো সায়েমার মেয়ের বিবাহের আসন্ন তারিখ। বিয়ের তারিখ আসতেই তাড়াহুড়ো শুরু হল মুনিবা বেগমের বাপের বাড়ি যাওয়ার। দেখতে দেখতে রোজার মাসের প্রায় শুরু হয়ে শেষ ভাগে এসে পৌঁছাতেই পারি জমালো ঢাকায় চৌধুরী ফ্যামিলি।
_____
চট্টগ্রাম থেকে মেহমেদের ফামিলির সবাই এসে মাত্রই পৌঁছলো। রিওকে খাচা বন্দি করে আনা হয়েছে।সে মোটেও খাচায় বন্দী হতে চায়। আসার পথে,
তার বকবকানিতে কান ঝা ঝা হয়েছে সবার, রিও
সিনেমাটিক কান্ডে আবার হেসেছেও সবাই, কি একটা
অবস্থা!
মনে হচ্ছিল যেন রিওকে অপহরণ করা হয়েছে।এইতো কিছুক্ষন আগেই সকলে এসে পৌঁছেছে ইমতিয়াজদের বাসায়। হায়াত রিও দেখেই অনেক খুশি হলো। অতঃপর, হায়াতকে দেখেই রিও বলে উঠল, ভাবাই, ভাবীই। হায়াতকে মেহমেদের কাছ থেকে খাচা নিয়ে রাখলো বারান্দায়।
রিও ঠোঁট খামচে দিয়ে খাচায় কামড়িয়ে বলল, ছেড়ে দাও ছেড়ে দাও।
মেহমেদও পেছন থেকে এসে বলল, ভাবী ছেড়ে দাও
সমস্যা নেই। তারপর হায়াত রিওকে ছেড়ে দিলো।
রিওকে ছেড়ে দিতেই রিও সারা বাসা উড়াউড়ি করতে করতে বলতে লাগলো, মুক্ত মুক্ত।
হায়াত আর দাড়ালো না। ইফতারি বানাতে হবে। তাই সে ছুটলো রান্না ঘরে। এমনিতেই কাল বাসায় ইফতারি পার্টি হবে, বহু কাজ বাকি আছে। মুনিবা বেগম হালকা জিরিয়ে ইমতিয়াজের আম্মার সাথে সাথে টেবিল গুছাতে লাগলো। ওদিকে মেহমেদও মুরাদ বসার ঘরে বসে আছে। তাদের
আড্ডায় আজ সামিল হয়েছে সুজন।
বেচারা আছে সেই ঝামেলায়, তার গার্লফেন্ড খুব চাপ দিচ্ছে বিয়ের জন্য। সেই সমাচার চলছে। এর মাঝেই ওয়াসিম চৌধুরী এসে হাক ছাড়লেন, ইফতারি করতে। অতঃপর সবাই এসে হাজির হলো ডাইনিং এ। তারপর অপেক্ষা সবার আযানের জন্য।
____
ইফতারির পার্টির আয়োজন চলছে সেই
সকাল থেকেই। পুরুষেরা বাজারে গিয়েছে বাজার করতে। ইতোমধ্যে আয়শা বেগমকে বার কয়েক ফোন করেছে হায়াত। তার মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে!
হায়াতের বাবা মা কেউই আসবে না, অতঃপর সিদ্ধান্ত হলো
হুরকে দুপুরের মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়ার। তারপরই
ফোন কাটলো হায়াত। এর মাঝেই হায়াতের নিকট এসে দাড়ালো মুনিবা বেগম অন্য কথার উপর জিজ্ঞাসা করল, বাপের বাড়ির কেউ আসবে না?
হায়াত মিষ্টি হেসে জবাব দিলো মা-বাবা আসবে না, হুরকে
পাঠিয়ে দিবে বলেছে।
হুরের কথাশুনে মুনিরা বেগম খুশি হলেন। অতঃপর
হায়াতকে মুনিবা বেগম বলল,
পরে করবে; আমায় একটা বেনুনি পাকিয়ে দাও, চল চল বউমা।
তারপর হায়াত পা বাড়ালো মুনিবা বেগমের সঙ্গে।
..
.
দুপুর বারোটা নাগাদ এসে হাজির হলো হুরিজিয়ান
হিজাব খুলতেই ড্রেসিং টেবিলে মেহমেদের অবয়ব দেখতে
পেলো স্পষ্ট। হঠাৎ মেহমেদকে দেখে ফিরে চাইলো
হুর। হু সত্যিই তো মেহমেদ দাড়িয়ে আছে।হুরিজিয়ান আবার আয়নার দিকে ফিরে হিজাবের পিনগুলো রাখতে রাখতেই বলে উঠল, রোজা রমজান মাসেও আপনি
ভয়ংকর মিথ্যাবাদী হলেন। কই একবারও তো বললেন না আজকে এসেছেন। আপুর কথায়ও তো বুঝলাম না। আপুতো শুধু বলেছে মেহমান এসেছে। মেহমেদ দরজায়
ঠেসা দিয়ে দাড়িয়েই জবাব দিলো, ভাবলাম তোমায় একটু সারপ্রাইস দিবো। তাই জানালাম না। হুরিজিয়ান মেহমেদের নিকট এগিয়ে দরজার হাতল ধরল এবং দরজা
আটকাতে গিয়ে মেহমেদের খুব নিকটে ফিসফিস করেই বলল, খুব সারপ্রারাইজ হয়েছে। এবার আসুন আমি চেঞ্জ করব।
মেহমেদ বাকা হাসল। মাথায় হাত ভুলিয়ে বলল, রোজা রমজানের মাস। তাই আর কিছু বললাম না। নাহলে নিজেকে খুব কন্ট্রোল করছি। বুঝেছ?
অতঃপর মেহমেদ চলে গেলো কক্ষের সামনে থেকে। কিছুক্ষন বাদেই হরিজিয়ান ফ্রেশ হয়ে বের হতেই হায়াত এবং মুনিবা বেগম হরিজিয়ানের কক্ষে প্রবেশ করল। তার পিছু পিছু মুরাদ আর মেহমেদ ও ঢুকলো। হঠাৎ সবার
এমন এন্ট্রিতে হরিজিয়ান কিছুটা সংকোচ বোধ করল বোধ হয়। হায়াত হুরিজিয়ান কে ইশারা করেই শুধালো মুনিবা বেগম কে,ফুফু আম্মু, এই হচ্ছে আমার ছোটবোন।
মুরাদ ও বলল, হো হো এইডা আমার বেয়াইন। মেহমেদ ফিসফিস করেই বলল,কেমন আম্মু?
মুনিবা ও বলল, সরল গলার কন্ঠস্বর
বজায় রেখেই মেহমেদকে বলল, তোকে কেন বলল,
বদের হাড্ডি। আর তোরাই বা এখানে কেন ? বের হো ছোট কে নিয়ে। মুরাদ বিছানায় গড়াগড়ি দিলো কোলবালিশ
নিয়ে, বলল আমিও একটু থাকিনা আম্মু। কই যাবো ভালো লাগতাছেনা
~চলবে।
(আজকের পর্ব নিয়ে সুন্দর মন্তব্য করুন। আপনাদের মন্তব্য আমার লেখার সাহস যোগায়। হ্যাপি রিডিং।)
No comments