#Crazy_for_you🦋
#পর্বঃ১৪
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)
মেহমেদ হেসেই উঠে বসে বিছানায়। তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হয় সকালের নাশতা খেতে,
ততক্ষণে মুরাদ খওয়া শেষ করে বেরিয়েছে। ওয়াসীম
চৌধুরী তখনও আছে। মেহমদকে টেবিলে এসে বসতেই
মুনিবা বেগম নাশতা এগিয়ে দিলো মেহমেদের নিকট। এর মাঝেই ওয়াসিম চৌধুরি বলে উঠল মেহমেদকে,
বাসার কাজ কতদূর এগিয়েছে আব্বু?
মেহমেদ নাশতা মুখে দিতে দিতেই জবাব দিলো, চইলেই আমরা সামনের মাসেও উঠতে পারবো, ছাদের কাজ চলছে।তাহমীদ আঙ্কেল দেখাশোন। করছে। তন্ময়ও মাঝে মাঝে গিয়ে চেক করছে। তোমার ট্রান্সফরের কতদূর?
ওয়াসীম চৌধুরী জাবাব দিলেন, এখনও ৩ মাসের মতো
লাগবে।
~ওই আচ্ছা।
~নানু বাড়ির সবাই ভালো আছে?
~হুম ভালো আছে।
ওয়াসিম চৌধুরী খাবার শেষ করে বের হলেন এক জনের সাথে দেখা করবেন বলে, তাই মেহমেদের সঙ্গে আর কথা এগলো না। মেহমেদ ও সকালের নাশতা সেরে বের হলো বাসা থেকে।
_____
শুক্রবার থাকায় হরিজিয়ানের সকল কিছু থেকে একটু
অবসর পেয়েছে। সকাল থেকে অনেক কাজ করেছে মেয়েটা। আজ ঘরের সাহায্যকারী আন্টি না আসায় মাত্রই দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করেছে হুরিজিয়ান। ঘড়িতে চোখ বোলালো সে। ৪টা ছুই ছুই। মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ বোলালো, মেহমেদ নেই। বিকালে না ফোন করে বসে। এই লোক দিন নেই রাত নেই মেসেজ ফোন করতে থাকে। এর জন্যই বোধহয় মানুষ বলে পিরিতের কাঠালের আঠা লাগলে পড়ে ছাড়ে না। মেসেজ এ রিপ্লাই লিখলো হুরিজিয়ান, "হুট হাট ফোন করবেন না, আম্মু বার বার জিজ্ঞাসা করে কে ফোন দিয়েছে। আপনার জন্য এখন আমার মতো একটা নিষ্পাপ মেয়েকে অহঃরহ মিথ্যা কথা বলতে হয়! "
সেন্ড হলো মেসেজ তবে সিন হলো না, যার মানে মেহমেদ অনলাইনে নেই। অতঃপর হুরিজিয়ান রেডি হয়ে বের হলো সোসাইাট বালুমাঠে যাওয়ার জন্য। সাইকার সাথে দেখা করতে। মেয়েটা মেহমেদ ও মুরাদের একমাত্র ফুফাতো বোন। মুরাদের সাথে তার৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক। মুরাদ সাইকাকে হরিজিয়ানের সাথে, অ্যাড করে দেওয়ার পর থেকেই সাইকার সাথে বেশ জমেছে।
মেয়েটা খুব শিশুক, তাদের সাথে দেখা না হওয়ায় আফসোস করেছে মেয়েটা । আজ হুরিজয়ান সাইকার সাথে অনেক ঘুরবে অনেক কথা বলবে। কথাগুলো ভাবতেই হুরিজিয়ানের বালুর মাঠের ইটের পিলারে গিয়ে
বসল। ফোন থেকে কল করল সাইকাকে। এর মাঝেই
সাইকা হাজির হলো, সাইকাকে দেখে কলটা কাটল, হুরিজিয়ান। দুজন দুজনকে দেখে এক প্রফুল্লময় হাসি হাসলো।তারপর, ঝালমুড়ি , ফুচকা, চটপটি খেতে খেতেই
তাদের মাঝে হলো অনেক কথা। কথায় এক পর্যায়ে
সাইকা হুরিজিয়ানকে বলল, জানো মেহমেদ ভাইয়ের
একটা কথা বলা টিয়া পাখি আছে। সেই একটা
জিনিস।হুরিজিয়ান অবক হলো, আশ্চর্য তাকে তো মেহমেদ বলল না, তার একটা কথা বলা পাখি আছে,
ফের সাইকার কথায় টনক নড়লো হরিজিয়ানের।
অতঃপর হুরিজিয়ান সাইকাকে বলল,হু, বলো বলো, তারপর তোমার কাছে সেই টিয়ে পাখিটার
ছবি আছে,ওর নাম কি?
সাইকা বের করে ছবি দেখালো।এবং বলল, ওর নাম রিও। কথাটা বলে একটা ভিডিও দেখালো সাইকা, সেখানে
মুরাদকে পাখিটা দুষ্টু লোক বলে ডাকছে। সেই ভিডিও দেখে হুর আর সাইকা হেসে ফেলল। পাখিটার ভিডিওটা বন্ধ করে সাইকা বলে উঠল, পাখিটা এতোটাই পোষ মানানো, যে ওকে ছেড়ে দিলেও উড়ে যায় না। বাসার ওড়াউড়ি করে। হুরিজিয়ান কৌতূহল হয়েই জিজ্ঞাসা
করল। এই পাখিটা কাকে কিভাবে ডাকে?
সাইকা হেসে বলে উঠল
: আচ্ছা বলছি শোনো!
মামীকে ডাকে আম্মু বলে, মামাকে আব্বু, মুরাদকে
দুষ্টু লোক । মেহমেদ ভাইকে বস বলে ডাকে, আমায়
সাকু বেবি বলে ডাকে।
এরপর টিয়া পাখির সমাচার নিয়ে হলো তাদের মাঝে
বহু কথা। তবে সব কথা শেষে আড্ডার ইতি টেনে
বাড়ির পথের হাটা শুরু করলো হুরিজিয়ান।
_____
সন্ধ্যার আধার নেমেছে, বাহিরে ছেয়ে গেলে কালছে আভা। বারান্দার পানে চেয়ে আছে সে। কিছুক্ষন বাদেই হয়তো আজান শোনা যাবে মাগরিবের। ঘোটা বিকেল মুনিবা বেগম বেশ চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো ঢাকায় গিয়ে হুরিজিহ্বানকে দেখে আসবে।
কিছুদিন পরেই সায়েমার মেয়ের বিয়ের দাওয়াত
আছে। বিয়ের দাওয়াত রক্ষা করার সাথে সাথে বিয়ের হালকা কথাও বলে আসবে হুরিজিয়ানের বাবা মায়ের সাথে। এইতো আজ সকালেই ওয়াসীম চৌধুরীর সঙ্গে
মেহমেদের বিয়ের কথা বলছিল। তখন ওয়াসীম চৌধুরী একটা কথাই জবাব ছিলেন, তোমার পছন্দ নিয়ে আমার কোনো দ্বিধা নেই। ভালো মনে করলে কথা আগাও
আমি সঙ্গ দিবো। অতঃপর ঘরে পুত্রবধূ আসার আনন্দে মুনিবা বেগমের চোখ চকচক করে উঠল। এরই মাঝে ক্যালেন্ডারে সায়েমার মেয়ের বিয়ের তারিখটা লালকালি
দিয়ে হাইলাইট করে রাখল মুনিরা বেগম, রমজানের ঈদের পরের দিনেই বিয়ে হবে। তাহলে এবছর বাপের বাড়িই ঈদ করবে মুনিবা বেগম। বাপ নাই মা নাই,
তবুও বাপের বাড়ির টান খুঁজে পায় ইমতিয়াজের আম্মাকে দেখলেই। ইমজিয়াজের বাবা মারা যাওয়ার পরেও স্বামীর
ভিটা পরিচর্যা করছে ইমতিয়াজের আম্মা। তার কাছে গেলেও যেন ভাই, বাবা, মায়ের যে সমাদর পায় মুনিরা বেগম। তা আর পায় না কোনো জায়গা গেলে,কথাগুলো
ভাবতে ভাবতেই মুরাদের ডাকে টনক নড়ে মুনিবা বেগমের। মুরাদ ব্যাগটা কাধ থেকে ফেলেই শুয়ে পড়ল মুনিবা বেগমের উড়ুতে। মুরাদ তাঁর মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে শুধায় কি ভাবছ মা ? মুনিবা অস্ফুটস্বরে বলে ওঠে,হুরিজিয়ানের কথা। মেয়েটা কি আমাদের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে মুরাদ?
তুই যখন গর্বে ছিলি, চাইতাম তুই
মেয়ে হোস। কিন্তু তুই আল্লাহর ইচ্ছাই ছেলে হালি । আমার বহু আশা ছিল একটা পুতুলের মতো মেয়ে হবে। হুরিজিয়ানকে আমি মেয়ের মতো আগলে রাখতে চাই।
অতঃপর মুরাদ বলে উঠল.....
~চলবে।
(আআন্দোলনের কারনে লেখালিখি অনেক বন্ধ ছিলো, তাই প্লট এলোমেলো হয়ে গেয়েছিল তাই এই কয়টা দিন বসে ঠিক করেছি। আশাকরি এর পর থেকে তাড়াতাড়িই গল্প আসবে। সবাইর সাপোর্ট খুব প্রয়োজন। সুন্দর মন্তব্য কর সবাই। হ্যাপি রিডিং)
0 Comments:
Post a Comment