গল্প Crazy_for_you পর্ব ৮

 #Crazy_for_you🦋

#পর্বঃ৮

#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)


হুরিজিয়ান বেশি সময় দাড়ালো না, বসার ঘরের দিকে পা বাড়াতেই হায়াতের সাথে দেখা হলো। তারপর তার মিষ্টি বনুকে জড়িয়ে ধরে বলল,আমার আজকেই যেতে হবে৷ তানজিলার সাথে দেখা করতে হবে। বিকালে যাওয়ার কথা বলছিলাম তো,কিন্তু তাঞ্জু বেশ অনুরোধ করেছে, আপাই যেতেই হবে! তাড়াতাড়ি নাশতা বানা, খেয়েই আমি যাবো। 

হায়াত হুরিজিয়ানের গালে চুমু খেলো আর জবাব দিলো তোর দুলাভাই আর মাওইকে বলে যাস কিন্তু!

হুরিজিয়ান মাথা দুলালো, যার মানে সে বলে যাবে। কয়েক মিনিট বাদেই হুরিজিয়ান এসে তার ব্যাগ রেডি করলো যাওয়ার জন্য। অতঃপর খাবার টেবিলেই লেখা মিলল দুলাভাই ইমতিয়াজের সঙ্গে। সেখান থেকে খাওয়া সেরে হুরিজিয়ান তার মাওইমারের সাথে কথা বলে বিদায় নিলো। গন্তব্য তার এখন তানজিলাদের বাড়িতে যাওয়া। দোয়া দুরুত ফুকতে ফুকতেই হুরিজিয়ান বের হলো, তবে মোবাইলের পাওয়ার অফ করতে ভুলল না। সে মোবাইলটা বন্ধ করে রিকশায় চেপে বসল, অতঃপর তার মস্তিষ্কে হানা দিলো, মেহমেদ নামক দুশ্চিন্তা, তাহলে কি হতে চলেছে হুরিজিয়ানের সাথে?

________

মেহমেদ ৯ নাগাত উঠতেই ফোনটা কাছে টেনে দেখলো কয়টা বাজে!

অতঃপর মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখলো হুরিজিয়ান ২ ঘন্টা আগে একটিব ছিলো। বিছানা থেকে নেমে ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হলো মেহমেদ অতঃপর বিছানা ঘুছিয়েই ডাইনিং এ গিয়ে বসেই ভাবি বলেই হাক ছেড়ে ডাকলো হায়াতকে। মেহমেদের আওয়াজ পেয়েই ছুটে আসলো সে। মেহমেদকে টেবিলে বসে থাকতে দেখেই হায়াত তাকে শুধালো, খাবার নিয়ে আসছি! তুমি বসো। 

তারপর তাকে খাবার দিয়েই পাশে বসল হায়াত। মেহমেদ খেতে খেতে বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বলল, হায়াতের সাথে। তারপর সে কথার পিটেই হায়াতকে শুধালো, তোমার বোন কই। 

হায়াত মেহমেদের পাতে ডিমটা এগিয়ে দিয়েই বলল, ও বাসায় চলে গিয়েছে সকালে। 

কথাটা শুনে মেহমেদ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারলো না, সে খেতে খেতেই বুদ্ধি আটলো, হায়াতকে বলে উঠল,ভাবি আমি তো কাল বিকালেই চলে যাবো।তোমাদের বাসায় বেড়াতে নিয়ে যাবে না আমায়?

অবশ্যই নিবো না কেনো দেবরজান, আমরা তো দুপুরের পরেই যাবো, হুরিজিয়ানকে কিছুই বলি নি। তোমার মামি তো তার বোনের বাসায় যাবে কয়েকদিনের জন্য, তাই তোমার ভাই বলেছে আমায় বাড়িতে নিয়ে যাবে। তুমি খাও, আমি তোমার মামির ব্যাগ গুছিয়ে আসছি। 

হায়াত চলে গেলো। তারপর মেহমেদ মোবাইলটা বের করে হুরিজিয়ানকে কল দিতেই অপাশ থেকে শুনতে পেলো, আপনি যে নাম্বারে কল দিয়েছেন, সেটি এই মূহুর্তে বন্ধ আছে। 

ফোন থেকে হুরিজিয়ানের ছবি বের করেই বিরবির করে মেহমেদ বলে ওঠে, পালাবে কোথায়, আমি আসছি তোমার কাছে!

______


ভাই তোরে এমন করে কে কামড়ালো! 

তানজিলার কথায় হুরিজিয়ান নাক কুচকালো। শালির বেডি দরজাটা বন্ধ কইরা আয়, আন্টি শুনলে ঝাটা একটাও নিচে পড়বে না। তানজিলা তড়িৎ গিয়ে দরজা আটকে আসে। অতঃপর হুরিজিয়ান মেহমেদের কথা বলতেই, তানজিলা সশব্দে হেসে ফেলল, বাহ, প্রথম দেখায় কামড়। তাও তার ফোন না ধরনায়। মাই গড! হুরিজিয়ান তুই তো শেষ। মেহমেদের লগে তুই আবার আমার বিয়া দিতে চাইছিলি। সালা দেখি তোর প্রেমে পাগল। 

হুরিজিয়ান উদাস মনেই বলতে লাগলো, জানি না ভালোলাগছে না। দাগটা ঢাকার ব্যবস্থা কর। তোর তো অভিজ্ঞতা আছে। আমি বাসায় যেভাবে থাকি আম্মু একবার দেখলে প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেই আমি শেষ হয়ে যাবো। 

হুরের কথা শেষ হতেই তানজিলা এসে হুরিজিয়ানের ঘাড় থেকে ওড়না সরায় অতঃপর সেই জায়গায় আশপাশ ছড়িয়ে সে মেহেদী দিয়ে অসংখ্য  প্রজাপতি একে দেয়। মেহেদী শুকাতেই ড্রেসিং টেবিলের নিকটে গিয়ে বার কয়েক চেক করে দাগটা দেখা যাচ্ছে কিনা। 

না দেখা যাচ্ছে না। বলেই দীর্ঘশ্বাস টানে হুরিজিয়ান। তারপর তানজিলার আম্মাকে বিদায় জানিয়ে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয় হুরিজিয়ান। তারপর বাসায় এসে বেশ সময় নিয়েই হুরিজিয়ান শাওয়ার নেয়। শাওয়ারের মাঝেই কালকের মেহমেদের ওমন কাছে আসার কথা মাথায় আসতেই, টনক নড়ে, আয়শা বেগমের ডাকে। 

ওয়াশরুমের বাহিরে সে খুন্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাগত স্বরেই বলে ওঠে, তুই কি বের হবি। কয় ঘন্টা লাগে তোর গোসল করতে, বাসায় মেহমান এসেছে। এবার তো একটা মান-ইজ্জত টা রক্ষা কর। 

হুরিজিয়ান ওয়াশরুমের দরজা খুলে আয়শা বেগমকে টিটকারির সুরে বলে ওঠে, আর ৫ মিনিট খালাম্মা। 

আয়শা বেগম দীর্ঘ শ্বাস টানে। এই মেয়ে জীবনেও শুধরবে না। সে চলে গেলো। 

৫মিনিট পর হুরিজিয়ান লং টপ্স পড়েই বের হলো ওয়াশরুম থেকে। ব্যালকনিতে কাপড় শুকো দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুল মুছতে লাগলো অবিরাম। অতঃপর আয়নায় মেহমেদের অবয়ব দেখে চমকে ওঠে হুরিজিয়ান। এটা কি সত্যি নাকি হুরিজিয়ানের কল্পনা। সে পা টিপে টিপে মেহমেদের নিকট আগায়। মেহমেদের হাতে চিমটি কেটেই বোঝার চেষ্টা করে, এটা সত্যিই মেহমেদ কিনা। হুরিজিয়ানের কান্ড দেখে মেহমেদ হাসে। হুরিজিয়ান মেহমেদকে বলে ওঠে, এই এটা আপনি নাকি আমি কল্পনা দেখছি?

মেহমেদ জবাব দেয়, চোখকে বিশ্বাস না করতে পারলে আবার চিমটি কেটেই দেখো না! 

হুরিজিয়ান আবারো চিমটি কাটে। সত্যিই এটা মেহমেদ। কিভাবে সম্ভব, সে কিভাবে এখানে আসবে। ভাবনার মাঝেই টান অনুভব করলো হুরিজিয়ান। মেহমেদ তাকে হাত দ্বারা আবদ্ধ করেছে। মেহমেদকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরে আসে হুরিজিয়ান। বাক ফিরে চেয়ে বলে ওঠে, একদম কাছে আসার চেষ্টা করবেন না, জান নিয়ে নেবো! 

মেহমেদ সশব্দে হাসে এবং বলে ওঠে, শুধু জান কেনো নিবে, ”তুমি যদি চাও আমি তোমায় জান,প্রান,কলিজা,কিডনি,পিত্ত,হার্ট,ফুসফুস সব দিয়ে দিবো,সাথে আমার ভার্জিনিটিও হরণ করতে পারো আই ডোন্ট মাইন্ড!”

মেহমেদের কথায় হুরিজিয়ান হাসবে না কাদবে বুঝতে পারছে না। এই লোক তাকে জ্বালানোর জন্য এখানেও চলে এসেছে। ভার্জিনিটি হরণের কথাটা শুনতেই হুরিজিয়ানের কান যে ঝা ঝা করে উঠল। সে চেচিয়েই বলে উঠল, নির্লজ্জ ঠোঁটকাটা ছ্যাচড়া ব্যাটা। অতঃপর মেহমেদ হুরিজিয়ানের কর্নের নিকট এসে ফিসফিস করে বলে ওঠে, সো হট! এই যে ভেজা চুল, বাইটের চিহ্ন লুকানোর জন্য প্রজাপতি। উফ,আই লাইক ইট। 

এই লোক হুরকে লজ্জার উপর লজ্জা দিচ্ছে। হুর নিজেকে আর সামলাতে পারলো না, মেহমেদের ঝাকড়া ককড়ানো চুল গুলো খাবলে ধরলো অতঃপর..... 

~চলবে।


(আজকের পর্ব কেমন হয়েছে অবশ্যই জানাও। মেহমেদ আর হুরিজিয়ানের খুনসুটি কেমন লাগছে কমেন্ট কর। তোমরা কমেন্ট করলে আমি লিখতে আগ্রহী হই)

0 Comments:

Post a Comment