জোড় করে বিয়ে
পর্ব:৪
#আবির হাসান নিলয়
রাতে খাবার টেবিলে বসে আছি এমন সময় আব্বু বলল...
আব্বুঃনিলয় তোমার আম্মু যা বলছে।সেগুলো কি সত্যি
আমিঃকি বলছে আম্মু তোমাকে
আব্বুঃতোমার বিয়ের কথা
আমিঃজ্বি আব্বু।কিন্তু তোমার কাছে একটা অনুরোধ
আছে।প্লিজ বলো রাখবে।
আব্বুঃহুম বলো।
আমিঃআমিই যে জান্নাতকে বিয়ে করছি এটা
ওকে বলবেনা।সেটার জন্য তুমি যা ইচ্ছা করো।
আব্বুঃকিন্তু নিলয়....
আমিঃআব্বু আমি কোনো কিন্তু শুনতে চাই না।
আর আম্মু তুমিতো কিছু বলো।
আম্মুঃঠিক আছে আমি আর তোর আব্বু মিলে
জান্নাতের বাবা মায়ের সাথে কথা বলবো।এখন
তুই জান্নাতের বাসার ঠিকানা বল।
তারপর জান্নাতের বাসার ঠিকানা দিয়ে এসে পড়াশোনা
করে ঘুমিয়ে গেলাম।পরেরদিন পরিক্ষার জন্য
যেতে একটু দেরি হয়ে যায়।হলে গিয়ে দেখলাম
জান্নাত সিটে বসে আছে।
আমিঃকি করো....
জান্নাতঃআপনার চোখ নেই।আমি করি
আমিঃআরে রাগ করছো কেন....জান্নাত একটা
কথা জিজ্ঞাস করি।
জান্নাতঃকিহহ??
আমিঃআমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি। আর
আমি তোমাকে বিয়া করতে চাই।
জান্নাতঃআপনার কি কোনো কথা কানে যায় না।
আমি আপনাকে কতবার বলবো।আমি আপনাকে
ভালোবাসি না।আর আমার প্রাণ থাকতে আমি
কোনোদিন আপনাকে বিয়া করবোনা।
আমিঃকেন করবে না...(ওর মুখটা আমার দিকে ঘুরিয়ে)
জান্নাতঃঠাসস। তোর সাহস কি করে হয়।আমাকে
স্পর্শ করার।ছোটলোক জানোয়ার।
আমি বুঝতেই পারিনি জান্নাত এরকম কোনো
কাজ করবে।আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম
সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
রাফির কিছু বন্ধু যারা আমাকে চেনে তারা আমার
দিকে আসতে চাইলেও হাত দিয়ে বারণ করি
যেনো তারা না আসে।জান্নাতের চোখের দিকে তাকাতেই
বুকের ভিতরে ব্যথা অনুভব করলাম।মনে হচ্ছে
কেউ আমার হৃত্পিণ্ডতে আঘাত করছে।কারণ
জান্নাতের চোখ থেকে যখন তখন বৃষ্টি নামতে
পারে।
জান্নাতের এমন অবস্থা দেখে ওকে রাগান্বিত করার
জন্য প্রস্তুত হলাম।যদিও থাপ্পড়টার ব্যথা এখনো
করছে তারপরেও ভালোবাসার মানুষকে খুশী
করতে লাগলাম।
আমিঃআমি জানি তুমি এখন কান্না করবে...
জান্নাতঃ..😡😡(তাকিয়েও কিছু বলল না)
আমিঃজানি তো তুমি ছিছ কাঁদুনে...
জান্নাতঃকে বলছে তোকে?
আমিঃতোমার চোখ।
জান্নাতঃচোখ কি কথা বলতে পারি।মজা নিস
আমার সাথে।আর একবার যদি আমায় রাগাতে
আসিস তাহলে তোর খবর আছে।
আমিঃযেভাবে থাপ্পড় মারছো এরপরেও কিছু করবে।
জান্নাতঃসরি...
আমিঃকেনো গো বউ
জান্নাতঃতোকে আমি.....
কিছু করার আগেই স্যার এসে হাজির।যার জন্য
বেচে গেলাম।না হলে হয়তো আবার একটা থাপ্পড়
খেতে হতো।বউটাকে শান্তশিষ্ট লাগলেও ঠিক
সেরকম না।যেভাবে থাপ্পড় দিছে আমার বাপের
জন্মেও মনে হয় এতো জোড়ে থাপ্পড় খাইনি।
সেদিনের মতো পরিক্ষা শেষ করে বাসায় চলে
আসলাম।ফ্রেস হয়ে আম্মকে ডাকলাম...
আম্মুঃকিরে মন খারাপ নাকি..
আমিঃনা আম্মু
আম্মুঃতাহলে কি কিছু বলবি
আমিঃহুম কিছু বলার ছিলো।
আম্মুঃতাহলে বল
আমিঃআম্মু তুমি তো জানো আমি।জান্নাতকে
কতোটুকু ভালোবাসি
আম্মুঃহ্যা জানি তো।আমার পাগল ছেলেটা আমার
ছেলের বউকে অনেক অনেক ভালোবাসে।
আমিঃকিন্তু আম্মু জান্নাত আমাকে বুঝতেই চাই না
আম্মুঃকেনো বুঝতে চাই না সেটার কারণ জিজ্ঞাস
করেছিস কখনো জান্নাতকে।
আমিঃকি জিজ্ঞাস করবো।শুধু থাপ্পড় দেয়।
আম্মুঃ😀😀
আমিঃআম্মু তুমি হাসছো কেন?
আম্মুঃতো নয়তো কি করবো।তোর মতো ফাজিল
ছেলেকে থাপ্পড় মারা কি কম কথা।
আমিঃআম্মুউউউউ😡😡
আম্মুঃঠিক আছে।এখন বল আমাকে কি করতে হবে।
আমিঃকিছু টিপস দাও।
তারপর আম্মুর থেকে কিছু টিপস নিয়ে ঘুমিয়ে
গেলাম।পরেরদিন অর্থাৎ শেষ পরিক্ষা দিতে
কলেজে চলে আসলাম।পরিক্ষার হলে ডুকতেই দেখতে পেলাম জান্নাত আজ অনেক হাসিখুশী।
মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে হাজার বার ধন্যবাদ দিলাম।
কেননা আম্মুর থেকে কিছু টিপস কাজে লাগাতে
হবে।জান্নাতের কাছে যেতেই আমাকে অবাক
করে দিয়ে জান্নাত বলল.....
জান্নাতঃআপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে
আমিঃহুম বলো।
জান্নাতঃনা এখন না।পরিক্ষা শেষ হলে বলবো।
জান্নাতকে এতো হাসিখুশী দেখে আমারো কেনো
জানিনা অনেক ভালো লাগছিলো।তাই জান্নাতকে
বললাম ঠিক আছে।
পরিক্ষা শেষ করে বাইরে দাঁড়িয়ে আছি এমন সময়
জান্নাত এসে আমার সামনে দাঁড়ালো।
আমিঃহুম বলো কি বলবে....(অনেকটা আগ্রহ
প্রকাশ করে কথাটি জিজ্ঞাস করলাম।)
জান্নাতঃআমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
আমিঃকিহহ।তুমি আমাকে মিথ্যা বলছো তাই না
জান্নাতঃআপনাকে মিথ্যা বলে আমার কি লাভ।
বরং আমার তো আরো ভালো লাগছে।আপনি
আমার পিছু নেয়া বাদ দিবেন।আমাকে আর
জ্বালাতে পারবেন না।আমার সাথে আর কথা বলবেন
না।এককথায় আমি এখন অনেক খুশী।
জান্নাতের কথা গুলো কেমন যেনো বুকের বা পাশে
এসে খুব জোড়ে জোড়ে আঘাত করছিলো।তাই
ওকে কথা থামাতে বলে আমি বাসায় চলে আসলাম।।।
চলবে.........
0 Comments:
Post a Comment