বন্ধুরা সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি এমন।সময়
পকেটে থাকা ফোনটা বাজতে শুরু করে দিল।
এক বালতি রাগ নিয়া ফোনটা তুলেই সব রাগ
বদলিয়ে মিষ্টি ভালোবাসাতে পরিণত হলো।
কারণ ফোনটা আম্মু করেছে।
ফোনটা তুলতেই আম্মু বলল....
আম্মুঃনিলয় কোথায় তুই
আমিঃজ্বি আম্মু আমি তো বন্ধুদের সাথে বাইরে
আড্ডা দিচ্ছি।
আম্মুঃতারাতারি তুই তোর নানা বাড়ী আয়।
আমিঃকিন্তু কেনো আম্মু।
আম্মুঃযেটা বলছি সেটা কর।
বলে ফোন কেটে দিলেন।
কি বা আর করা। বন্ধুদের সাথে আড্ডা মাটি
করে নানু বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।কিন্তু
মাথায় একটা জিনিশ কিছুতেই ডুকছেনা।
কাল রাতে আম্মু আর আব্বু মিলে নানুর
বাসায় গেছে।জিজ্ঞাস করাতেও কিছু বলে
নাই।আর এখন হুট করেই জরুরী তলব।
এসব ভাবতে ভাবতে নানু বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় গিয়ে আম্মু বলে ডাকাতেই আম্মু রাফি-র
রুম থেকে বেড়িয়ে আসলেন।
আমিঃআম্মু কি হয়েছে।তোমাকে দেখে এতো
চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?
আম্মুঃসেটা পরে বলিস।এখন আমার সাথে চল
আমিঃকোথায় আম্মু
আম্মুঃরাফির রুমে।
আমিঃঠিক আছে চলো।
রাফি আমার মামাতো ভাই।অনেক ভালো আর
আমার থেকে ১বছরের ছোট।কিন্তু রাফি কি
করলো।ওর তো পরিক্ষা হচ্ছে।এক রাশ চিন্তা
নিয়ে রাফির রুমে যেতেই দেখালাম সবাই ঐ
রুমে বসে আছে সাথে ডক্টর।
আমিঃআম্মু রাফির কি হয়েছে।
আম্মুঃকাল রাত থেকেই ও কেমন জেনো করছে।
পরে যখন তোর মামা ডক্টরকে ফোন দিয়ে বাসায়
আনে।তখন ডক্টর বলে রাফি নাকি এখন মানসিক
ভাবে অসুস্থ। কিন্তু সকাল থেকে ওর শরিরে
এতোটাই জ্বর হয়েছে যে ও বিছানা থেকেও
উঠতে পারছে না।
আমিঃতাহলে ওকে হাসপিতালে নাও।
ডক্টরঃসেটার দরকার নাই।কিছু সময় হলেই
ঠিম হয়ে যাবে।
আমিঃতাহলে থাক। আমাকে ডাকার কি আছে।
মামিঃরাফি তো আমাদের কথা শোনে না।
তাই তোমাকে ডেকে আনা হয়েছে।
আমিঃকিন্তু মামি।ওকে কি বলতে হবে।
আম্মুঃঐ গাধা ওর পরিক্ষা চলছে তুই ভুলে গেছিস।
আমিঃএকদমি না।
আম্মুঃতাহলে....
আমিঃতাহলে কি ওর পরিক্ষা দেয়া লাগবেনা।
আম্মুঃসেটা রাফিকেই বল।ওকে অনেক বার
বলছি কিন্তু শুনছে না।
আমিঃঠিক আছে আমি বলছি।
রাফির কাছে গিয়ে....
আমিঃরাফি....
রাফিঃহুম ভাইয়া বল
আমিঃপরিক্ষা না দিলে হয় না...
রাফিঃভাইয়া তুমিও...একটা বছর আমার
নষ্ট হয়ে যাবে।
আমিঃকিন্তু তুই তো অসুস্থ পরিক্ষা দিবি কিভাবে
রাফিঃভাইয়া আমি পরিক্ষা দিতে পারবো
আমিঃচুপ।গাধা এ অবস্থায় ও পরিক্ষা দিবে😡😡
রাফিঃ😔😔😔
আমিঃঠিক আছে তোর এক বছর নষ্ট হবে না।
মামাঃকিভাবে
আমিঃআমি পরিক্ষা দিবো
কথাটা বলার সাথে সাথে সবাই মনে ভুত দেখছে
সবাই আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে।
মনে হচ্ছে আমি মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা এলিয়েন।
আম্মুঃঐ কি বলছিস ভেবে বলছিস তো।
আমিঃহ্যা তবে আব্বুর সাহায্য লাগবে।
আব্বুঃকি সাহায্য
আমিঃপরে সমস্যা হলে সেই দিক তুমি দেখবে
আব্বুঃঠিক আছে।কিন্তু
আমিঃকোনো কিন্তু না আব্বু। এখন তোমরা
সবাই বাইরে যাও।
আমার কথা শুনে সবাই বাইরে চলে গেলো।
আমিও আমার ড্রেস বদলিয়ে রাফির একটা
ড্রেস পরে নিলাম।এখন আপনাদের আমার
পরিচয় দেয়।আমি আবির হাসান নিলয়।
বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান।আর কিছু বলা
যাবে না। সময় নাই।ড্রেস বদলিয়ে রাফির থেকে
জেনে নিলাম আজ কি এক্সাম আর কিছু
গুরুত্বপূর্ণ টিপস। যেটা আমাকে সাহায্য করতে
পারে।রাফির টেবিল থেকে বই আর পরিক্ষার
সকল কাগজ পত্র নিয়ে বাইরে এলাম।
আম্মুঃনিলয় কিছু খেয়ে যা।
আমিঃনা আম্মু এসে খাবো।
আব্বুঃআমি ড্রাইভারকে বলে রেখেছি তোমাকে
নিয়ে যাওয়ার জন্য। সাবধানে।যাবে।
আমিঃঠিক আছে আব্বু।
গাড়িতে উঠে রাফির কলেজের উদ্দেশ্য রওনা
দিলাম।যেতে।যেতে রাফির থেকে শোনা
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলো পড়তে লাগলাম।প্রায় ৩০
মিনিট পর রাফির কলেজে আসলাম।রাফির
কলেজ বললে ভুল হবে। এখানে আমিও
পড়াশোনা করতাম।সে যাই হোক ক্লাসের দিকে
যাওয়া যাক।না হলে ছোট ভাইয়েরা দেখে ফেললে
সর্বনাশ। দ্রুত ক্লাসে চলে আসলাম।এসে প্রশ্ন
গুলো পড়তে লাগলাম।হঠাৎ কারো কথা কানে
আসাতে ঘুরে দেখতেই আমি অবাক।একটা
মেয়ে এতো সুন্দর হয় কিভাবে।দেখতে অনেক
বাচ্চা বাচ্চা লাগছে সাথে চোখে একটা চশমা।
সবকিছু জাস্ট ওয়াও। মনে মনে রাফিকে
হাজার হাজার বার ধন্যবাদ দিচ্ছি।
মেয়েঃএই যে এতোক্ষণ ধরে ডাকছি শুনতে
পাচ্ছেন না।হা করে কি দেখছেন।
আমিঃকিছু না।
মেয়েঃআপনি এই সিটে কি করেন।
আমিঃপরিক্ষা দেয়ার জন্য বসে।আছি।
মেয়েঃএখানে তো অন্য এক ছেলে পরিক্ষা
দিচ্ছে আপনি কেন।
আমিঃপরিক্ষা শেষ হওয়ার পরে বলি।
মেয়েঃনা আমায় এখন বলুন।
আমিঃপ্লিজ এখন।বিরক্তি করো না।
মেয়েঃআপনি না বললে একশত বার করবো।
আমিঃএই মেয়ে বলছি না পরিক্ষার পরে বলবো।
এখন চুপচাপ বসে থাকো।(অনেকটা ধমক দিয়ে)
কাঁদোকাঁদো মুখ নিয়ে হ্যা সূচক উত্তর দিলো।
আমিঃপ্লিজ মন খারাপ করো না।আমি আসলে
তোমাকে ধমক দিতে চাইনি।তোমার গনিত(আজকের
পরিক্ষার বিষয়)বিষয়ে সর্বোচ্চ পয়েন্ট কত?
মেয়েঃ৮৫(আস্তে আস্তে কথাটি বলল)
আমিঃআমি তোমাকে।৯৫ পাইয়ে দিবো।যদি
তুমি কাউকে কিছু না বলো।
আমার কথা শুনে মেয়েটি আমার দিকে অবাক
হয়ে তাকিয়ে রইলো।আমি।সেদিকে খেয়াল না
করে প্রশ্ন গুলো পরে স্যার এর টেবিলে বইটা
জমা দিয়ে দিলাম।
কিছুক্ষণ পর স্যার এসে খাতা দিতে লাগলো।
আমার কাছে আসতেই...
স্যারঃনিলয় তুই
আমিঃভাই প্লিজ। এখন কিছু বলো না।পরিক্ষা
শেষ হলে সব বলবো।🙏🙏
স্যারঃঠিক আছে।
খাতা নিয়ে লিখতে যাবো তখনি দেখি আমার
পাশে বসা মেয়েটা আমার দিকে অবেক হয়ে
তাকিয়ে আছে।হয়তো জানতে চাই কে আমি।
আর কেনোই বা স্যারকে ভাই বললাম।
আমিঃকিছু বলবে..?
মেয়েঃনা(মাথা নিচু করে)
আমিঃতাহলে লেখো।আর কিছু না পারলে
আমার থেকে শুনে নিবা ঠিক আছে।
মেয়েঃমাথা নেড়ে হ্যা সূচক উত্তর দিলো।
গল্পঃজোড় করে বিয়ে
পর্বঃ১
0 Comments:
Post a Comment