গল্প তোমার_জন্য_সিন্ধুর_নীল পর্ব ৩

 তোমার_জন্য_সিন্ধুর_নীল

তৃতীয়াংশ

সারিকা_হোসাইন

দেখুন মেজর মুহিত আপনার মায়ের হার্টে পেসমেকার মেশিন বসাতে হবে,আপনার মা অনেক দিন ধরেই এখানে ভর্তি রয়েছে আমি দীর্ঘদিন উনার চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি উনার সমস্ত কন্ডিশন আমার নখদর্পণে।উনার হার্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম বলুন বা স্পন্দন তৈরি করাই বলুন উনার হার্টের যেই কন্ডিশন এখন আপনি অনুমতি দিলেই আমি মেশিন বসানোর জন্য অপারেশন করার ব্যাবস্থা নিবো।


-মেশিন বসালে কি আমার মা পুরোপুরি সুস্থ হবে ডক্টর?


মুহিতের কথা শুনে চুপ করে দৃষ্টি নত করে ফুঁস করে নিঃশাস নিলেন প্রফেসর সারোয়ার জাহান।


―দেখুন মেজর , হায়াৎ মউত উপরে যিনি আছেন তার হাতে,আমি আপনাকে একশ পার্সেন্ট গ্যারান্টি দিতে পারবো না তবে আমার বিশ্বাস আপনার মা সুস্থ হবে ।

কথাটি বলে মুহিতের হাতের উপর হাত রাখলেন প্রফেসর।


―আর দেরি করবেন না মেজর,দেরি করলে অবস্থা শুধু খারাপ ই হতে থাকবে।যতো দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবেন ততো উনার জন্য ভালো।


 চোখ বন্ধ করে কিছু একটা ভাবলো মুহিত,পরক্ষণেই গমগমে কন্ঠে বলে উঠলো―

–আপনি অপারেশন এর সবকিছু রেডি করুন


―কিন্তু মেজর একটা প্রবলেম আছে, এই বলে একটা পেপার এগিয়ে দিলেন প্রফেসর মুহিতের দিকে।


―কী এটা?


―মেজর মুহিত এখানে আপনাকে বন্ড সই দিতে হবে।


কথাটি  শোনা মাত্র মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো মুহিতের।জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মুহিত প্রফেসর এর দিকে তাকালো।


―আসলে অপারেশনের একটু জটিলতা রয়েছে।ভাগ্য খারাপ হলে ওটি টেবিলেই উনি মারা যেতে পারেন।কিন্তু আমরা আমাদের  চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখবো না মেজর।


প্রফেসর এর কথা শুনে চোখের মধ্যে জ্বালা শুরু হলো মুহিতের,এখন কি ভারী বর্ষণ হবে চোখের দুকূল ছাপিয়ে?এমনটা কি হবার কথা ছিলো?


―আজ থেকে ছয় বছর আগের ভাবনায় ডুব দিলো মুহিত।

শীত বিদায় নিবে নিবে ভাব কিন্তু রাতে হালকা শীতের আমেজ রয়েছে এবং দিনে চকচকে সোনালী রোদ।আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসছে।মুহিত তখন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট।তার পোস্টিং ছিলো কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এ।মুহিত সকালের জগিং শেষ করে শাওয়ার নিয়ে ডাইনিং হলের উদ্দেশ্যে পা বাড়িয়েছে মাত্র।হঠাৎই মুহিতের হাতে থাকা মুঠোফোনে ভাইব্রেশন শুরু হয় ।স্ক্রিনে দৃষ্টি ফেলে "পাপা" নামটি দেখে হাসি ফোটে মুহিতের ঠোঁটে।


~হ্যালো!

–কেমন আছো মুহিত?

―ভালো আছি পাপা'তোমরা সবাই কেমন আছো?


―আমরা অনেক ভালো আছি,একটা খুশির খবর আছে তোমার জন্য মুহিত।


-জী পাপা বলো


―নামিরার বিয়ে ঠিক করেছি,জানি সবকিছুই অনেক দ্রুত হয়েছে তোমাকে জানানোর সময় হয়নি।

পাত্র নামিরার বেশ পছন্দ হয়েছে ।বাকী কথা বাসায় এলে বলবো।আজই তুমি ঢাকায় ব্যাক করবে, রাতে এনগেজমেন্ট।


―বোনের বিয়ের কথা শুনে মুহিত প্রথমে অনেক খুশি হয় কিন্তু পরে ভাবতে থাকে সবকিছু এতো দ্রুত হয়ে যাচ্ছে?


মুহিত জানে তার বাবা একজন বিচক্ষণ মানুষ সে ভুল সিদ্ধান্ত নিবেনা অবশ্যই।কারন একজন বিচক্ষণ ম্যাজিস্ট্রেট  আর যাই করুক যার তার হাতে কখনো মেয়ে তুলে দিবে না।

মুহিত আরো কিছু কথা বলে ফোন কেটে দেয়।


নিজ কক্ষে ব্যাগ গুছাচ্ছে মুহিত,একমাত্র বোনের বিয়ে বলে কথা

পনেরো দিনের ছুটি নিয়ে মুহিত ঢাকার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করে।


―এখন বিকেল পাঁচটা,মুহিত দাঁড়িয়ে আছে তার বাড়ির মেইন ডোর এর সামনে,কলিং বেল টিপে অপেক্ষা করছে।খুট করে খোলে গেলো দরজা ,দীর্ঘ ছয়মাস পর মুহিত বাসায় এসেছে।মুহিত কে দেখে ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো দশ বছরের এক বালক।

চিৎকার করে বলে উঠলো―

―আ,,,,,,, ভাইয়া!


আদরের ছোট ভাইকে জড়িয়ে কোলে তুলে ফেললো মুহিত।নামিরা আর মুহিতের চাইতে বয়সে অনেক ছোট এই পুঁচকো মুকিত।যেমন বাড়ির ছোট সদস্য তেমনি কিউট একটা বাচ্চা।এজন্যই তো সকলের চোখের মধ্যমণি।

হুট করে এলে জানালে না কেনো?

তোকে সারপ্রাইজ দিলাম,পাপা জানতো মাও জানতো তোকে কেউ জানায়নি আমি নিষেধ করেছি তাই।

- এই বলে কোল থেকে মুকিত কে নামিয়ে সোফায় ফেলে দিলো মুহিত।ফেলেই সুড়সুড়ি দেয়া শুরু করলো,মুকিত হেসে কুটিকুটি।


-তাদের দুই ভাইয়ের খুনসুটি হাসাহাসি করার শব্দে রান্না ঘর থেকে দৌঁড়ে এলেন মিসেস তারিন রহমান আর নামিরা।

নামিরা এসেই মুহিতের কান টেনে ধরলো,এই ছয় মাসে একবারো আসতে মন চায়নি তোর?


―আহ আপু লাগছে,মা লাগছে ছাড়তে বলো!


―না ছাড়বো না, লাগার জন্যই দিয়েছি।

―আচ্ছা সরি, মাফ করে দে আপু নেক্সট বার থেকে প্রতি মাসে মাসে আসবো।


মুকিত নামিরা কে অনুনয়ের সুরে বললো ছেড়ে দাও না আপুনি ভাইয়ার কানে ব্যাথা লাগছে।


―ভাইয়ের উকিল হয়েছিস?


-মুকিত মাথা উপর নিচ করে হ্যা বুঝালো!


- আচ্ছা, যাহ ছেড়ে দিলাম।

ছেলেমেয়েদের এমন কীর্তি দেখে হেসে ফেললেন মিসেস তারিন,

 ~তোদের নিয়ে আর পারি না।যা মুহিত ফ্রেস হয়ে খেয়ে নে, কাজ আছে অনেক।


এই পুটু এই ব্যাগে যা  যা আছে সব তোর যাহ নিয়ে নে সব।

মুকিত যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেলো,এজন্যই তো ভাইকে তার এতো ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।


এবার নামিরার পিছু নিলো মুহিত,তুই প্রেম করেছিস নাহ?


নামিরা হাত উঁচিয়ে বলে -মারবো এক ঠাটিয়ে!


আচ্ছা বুঝেছি লজ্জা পেতে হবে না শুধু বল বর কে ?পটাপট নাম বলে ফেল!


তুই চিনিস!


আমি চিনি?


নামিরা লজ্জায় মাথা নিচু করে মুখ টিপে হেসে ফেলে


-সোহাগ ভাই?


নামিরার দিকে দৃষ্টি ফেলে নামিরার রক্তিম গাল আর ওড়নার কোণা আঙুলে প্যাচানো  দেখে মুহিত বুঝে ফেলে হি ইজ রাইট।


সিউর সোহাগ ভাই?


নামিরা মাথা দুলিয়ে হ্যা সূচক উত্তর দেয়।


কিভাবে পটালি ওই হাবলু টাকে?


নামিরা চোখ রাঙিয়ে বলে উঠে মার খাবি মুহিত


-মুহিত খুব ভালো করে সোহাগ নামের ছেলেটিকে চিনে।মুহিতের বাবার বাল্যকালের এক বন্ধুর ছেলে এই সোহাগ।ছেলেটি গ্রামে থাকতো।একদিন মুহিতের বাবা আদনান ওয়াসিফ  অনেক রাত্রে একটি ছেলেকে এনে কঠিন গলায় সবাইকে ডেকে বলেছিলো আজ থেকে এই ছেলে আমার ছেলেদের মতো।সেও এবাড়ির সদস্য এখন থেকে।


―ও আমার বন্ধু হামিদের  ছেলে।ওর বাবা দুদিন আগে এই দুনিয়া ত্যাগ করেছে।ইহজগতে ওর কেউ নেই।তোমরা কেউ কখনো ওর সাথে কোনো প্রকার খারাপ আচরণ বা অশোভনীয় কিছু করবে না।তাহলে আমি অনেক কষ্ট পাবো।আজকে আমি এই এতিমের গার্ডিয়ান হলাম,ভবিষ্যতে আমার অবর্তমানে এই ছেলের দোয়ায় আল্লাহ চাইলে অন্যকেউ তোমাদের ও গার্ডিয়ান হবে।


সোহাগ তখন ইন্টারমিডিয়েট এক্সাম দিয়েছে কেবল।এই অবস্থায় কোথায় যাবে কার কাছে যাবে কিছুই ঠাহর করতে পারছিলো না।এমন সময় ফেরেস্তার মতো সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলো আদনান ওয়াসিফ।


-মিসেস তারিন সোহাগ কে কাছে টেনে বলেছিলো আমাকে আম্মা ডাকতে পারবি?


-সোহাগ সেদিন মিসেস তারিন কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিয়েছিলো।


সোহাগ পড়াশোনায় অনেক ব্রিলিয়ান্ট ছিলো, নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি নামিরা আর মুহিত কেও অংক ইংরেজি পড়াতো অবসর সময়ে। নামিরার এসএসসি পরীক্ষার সকল নোটস নিজ হাতে তৈরি করে দিয়েছিলো সোহাগ । যেদিন ইন্টারমিডিয়েট এক্সাম এ সোহাগ জিপিএ ফাইভ পেলো,সেদিন মিসেস তারিন আর আদনান ওয়াসিফ এর খুশি দেখে কে।


নিজের সন্তানের মতো সকল সুযোগ সুবিধা দিয়েছিলেন সোহাগ কে।পড়িয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।নিজের যোগ্যতা বলে সোহাগ নামকরা এক কলেজের ইংরেজী বিষয়ের  প্রফেসর হিসেবে নিয়োগ পায়।

মুহিত আগেই বুঝেছিলো সোহাগের জন্য নামিরার মনে কোথাও কিছু আছে,কিন্তু এটা যে প্রেম ভালোবাসা পর্যন্ত গড়াবে তা ভাবতে পারেনি মুহিত ।

―কারন সোহাগ ছিলো খুবই সাধাসিধে, ঘরকোনো টাইপ ছেলে।তিন তলার চিলেকোঠার ঘরটাতে সারাক্ষন পড়াশোনা করে কাটাতো খাওয়াদাওয়ার সময় ছাড়া।


মায়ের ডাকে ধ্যান ফিরলো মুহিতের,


―খেতে আয় আর কিছু কাজ আছে হাতে হাতে করে দে।

কাজ গুলো  বুঝিয়ে দিয়ে চলে গেলেন মিসেস তারিন।


চারপাশে আলো ঝলমল করছে।কিছু কাছের আত্মীয় এসেছে।বাচ্চাদের হাসা হাসিতে মুখরিত চারিপাশ।বাড়িতে যেনো চাঁদের হাট বসেছে।নামিরার  আকদ হবে আজ।


মুহিত কর্ম ব্যাস্তায় তার বাবার খবর নেয়ার সময় ই পায়নি,তবুও তার মায়ের কাছে জানতে চেয়েছে,


-মা পাপা কে দেখছি না কোথাও


-আছে কোথাও কাজে ব্যাস্ত হয়তো,আকদের সময় দেখতে পাবি বলেই অন্যদিকে চলে গেলেন পার্লারের মেয়েরা এলো নাকি সেটা দেখতে


ঘরের এক কোণে বসে জীবনের হিসেব কষছেন আদনান ওয়াসিফ

উনার জীবদ্দশায় কোনো দিন এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হন নি তিনি।নিজের এতো বছরের অর্জন করা সততা, সম্মান খুইয়ে দিবেন ,নাকি পালিয়ে যাবেন,নাকি জীবন দিয়ে হলেও সব আগলে রাখবেন কোনো সিদ্ধান্তেই উপনীত হতে পারছেন না তিনি।দিনে রাতে এতো পরিমান হুমকিজনক ফোন কল আর নেয়া যাচ্ছে না।কি করতে পারি এখন আমি?


পরিত্যক্ত একটি বিল্ডিংয়ের আধ ভাঙা একটি কক্ষে গোপন বৈঠক বসিয়েছেন কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যাক্তি।তারা সবাই সমাজের উজ্জ্বল ব্যাক্তিবর্গ।তাদের ভালমানুষির আড়ালের মুখোস জনগন জানেনা।জানানোর দরকার ই বা কি?তারা কি দেশের মানুষের মুখের ভাত কেড়ে নিয়েছে?


নিজের স্বার্থ নিয়ে ভাবা কি ভুল কিছু নাকি?


টাকার প্রতি লোভ কার না আছে?


―সামান্য একজন নির্বাহী অফিসার এর কাছে এভাবে জিম্মি না হয়ে এতো ভয় না পেয়ে ভয় কে জয় করলে কেমন হয় লেফটেন্যান্ট?


 ―ভনিতা না করে খুলে বলুন  কি করতে চাচ্ছেন আহমেদ খান?


আহমেদ খান এর উত্তর শোনার আশায় বাকি  সদস্যরা গভীর আগ্রহ নিয়ে তার মুখপানে দৃষ্টি দিলেন।


―যদি ঐ নির্বাহী অফিসার ই আর না থাকে তাহলে কেমন হবে ?


কথাটি সকলের মনে ধরে গেলো।


-এইজন্যই বলি আহমেদ ,তুমি আসলেই একটা পাক্কা খিলাড়ি বলেই হাত তালি দিলেন নব্য হওয়া মন্ত্রী মোশতাক চৌধুরী।


আহমেদ খান  হুইস্কির গ্লাস তিন আঙ্গুল দিয়ে ধরে তাতে বরফ ঢেলে নাড়তে নাড়তে ঢেউ খেলানো হুইস্কির দিকে তাকিয়েই আবারো বলে উঠলো-


-আমি তো জানি সেনাবাহিনীর লোকেরা হয় সৎ,ন্যায়নিষ্ঠবান।

তো তুমি কিভাবে এমন জোচ্চোর হলে লেফটেন্যান্ট?


গ্লাসে হুইস্কি ঢালতে ঢালতে বিদঘুটে শব্দে হো হো করে হেসে উঠলেন লেফটেন্যান্ট।


একজন লেফটেন্যান্ট কে সরকার বেতন কতো দেয় জানো?


পাশে থাকা মোশতাক জানতে চাইলেন কতো?


―মাত্র ঊনত্রিশ হাজার টাকা


কিন্তু আমার পেট টা দেখেছো?


পেটের দিকে আঙ্গুল তাক করে লেফটেন্যান্ট সকলের উদ্দেশ্যে বললেন আমার পেট চায় কোটি কোটি টাকা।এখন এই কোটি টাকার খিদে এই সামান্য খড়কুটো দিয়ে কিভাবে চলবে আহমেদ?


পাশে থাকা খলিল বলে উঠলো আমার বেতনের কথা আর নাই বা বললাম সাহেব।সামান্য একজন দ্বার প্রহরী তো সেই হিসেবে কিছুই পাইনা।আপনাদের পায়ের ধুলো লাগিয়ে যদি একটু খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারি এটাই আমার জন্য অনেক কিছু।


তাহলে ঐ কথাই রইলো,

উড়িয়ে দাও লেফটেন্যান্ট নির্বাহী অফিসার কে।

পথের সামনের কাঁটা যতো দ্রুত সরাবে ততো পথ ভালো ভাবে হাটতে পারবে বুঝতে পেরেছো?


আর মন্ত্রী  শুনো,

―হারামি যেহেতু হয়েছো তাহলে সরকার কে কিভাবে কি বুঝাতে হবে আশা করি সব আয়ত্ত করবে।লেফটেন্যান্ট যেনো না ফাঁসে।ফাঁসলে  নরম গদিতে কিন্তু বসতে পারবে না কথাটা মাথায় ঢুকিয়ে নিও ভালো ভাবে,বলেই হুইস্কি গ্লাসে  ঠোঁট লাগিয়ে এক সিপ টান দিলো।


রাত নয়টা বেজে পঁচিশ মিনিট

নামিরা আর সোহাগ কে পাশাপাশি বসানো হয়েছে,আংটি বদল করানোর জন্য।অনুষ্ঠানটা ঘরোয়াভাবে হচ্ছে।নামিরাকে পুতুলের মতো লাগছে আজকে মুহিতের কাছে।

যেহেতু সামনে বিয়ের অনুষ্ঠান ধুমধাম করে হবে তাই আজকে এতো বেশি আয়োজন করা হয়নি।

আংটি বদল করার জন্য দুটো আংটি মিসেস তারিন একটি ফুলের ডালিতে করে নিয়ে এলেন এনে সামনের পাতানো টেবিলে রাখলেন।

এতোদিন পর মুহিত ভালোভাবে সোহাগের দিকে খেয়াল করে দেখলো নামিরার জন্য সোহাগের চোখে গভীর ভালোবাসা ভালোলাগার হাতছানি।সোহাগকে কেমন যেনো পরিপূর্ণ আর উচ্ছসিত লাগছে।আংটি বদল করার জন্য সোহাগ আংটি তুলে নিয়ে নামিরার হাত টেনে নিলো।


খুবই সন্তর্পনে আংটি পরিয়ে দিলো যেনো নামিরার আঙ্গুল ও টের না পায়।


বিষয়টা খুবই ভালো লাগলো মুহিতের।যাক তার বোন পারফেক্ট কাউকে পেয়েছে ,আর যাই হোক মুহিত বুঝে গেছে এই ছেলের থেকে কখনো নামিরা কষ্ট কি জিনিস তা উপলব্ধি করতে পারবে না।


আংটি বদল করার খুশিতে সকলে হাত তালি দিয়ে হবু কপোত কপোতি কে কংগ্রাচুলেশন্স জানালো।

এতো এতো খুশির মধ্যে মুহিতের নজর গেলো তার বাবার দিকে

ভদ্রলোকের বিধ্বস্ত চেহারা মুহিতের মনে ভয়ের স্তুপ জমালো।


কী এমন ভাবছে উনি?উনি কি অসুস্থ?নামিরার বিয়েতে কি উনি খুশি নন?আপুর জেদের কাছে হার মেনে কি বিয়ে হচ্ছে উনার অমতে নাকি অন্য কোনো ঘটনা লুকিয়ে আছে?


সকল ভাবনাকে দূরে ঠেলে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে বাবার কাছে দ্রুত এসে দাড়ালো মুহিত


―পাপা কিছু না লুকিয়ে সত্যি করে বলো কি হয়েছে?

চলবে।

0 Comments:

Post a Comment