গল্পঃ গরীব ছেলে যখন বিজনেসম্যান পর্ব ১২

 গল্পঃ গরীব ছেলে যখন বিজনেসম্যান 


পর্বঃ ১২


লেখকঃ  নামহীন লেখক 

~

~

~

--- ছিঃ ভাই ছিঃ

তুই এমন কথা বলবি আমি তা কখনোও ভাবি নাই । আমার সন্তান কী অবৈধ... ! যে আমি সম্তান নষ্ট করবো। আমার সন্তানের বাবা রয়েছে তার পিতৃ পরিচয় আছে। আমি কেনও সন্তান নষ্ট করবো,,,!! 

আর তোদের সাথে আমাকে রাখতে যদি 

তোদের কোন সমস্যা হয় তাহলে বলে দে , আমি একাই থাকবো । আমার সন্তানকে আমি একাই বাবা-মায়ের আদর দিয়ে বড় করবো মানুষ করবো। 

---- বুজলাম আমার কথায় আপু অনেক কষ্ট পেয়েছে আমার এ কথাটি আপুকে বলা মোটেও ঠীক হয়নি তাই..

সরি আপু আমায় মাফ করে দে প্লিজ। আমি আর এমন কথা বলবো না কখনো। 

---- আব্বুও বললো হুমম মা ওরে মাফ করে দে। ও না বুজেই কথাটি বলে ফেলেছে। 

---- ডাক্তার সাহেব এসে কিছু ঔষুধের স্লিপ দিয়ে আমাদের বললেন এই ঔষুধ গুলো খাওয়াবেন আর উনাকে একটু দেখে রাখবেন। আপনারা চাইলে আজকেই উনাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। 

---- আমি ঔষুধের স্লিপ নিয়ে বাইরে আসতে দেখি অনু হাসপাতালে প্রবেশ করছে,, 

অনু কেমন আছো,,?? আর মিতুকে কি এই হাসপাতালেই নিয়ে এসেছে নাকি,,,??

---- হুমম তাই তো শুনলাম। মিতুকে এই হাসপাতালেই নিয়ে এসেছে । সম্ভবত তিনশো দুই নম্বর রুমে হবে মনে হয়। আর আবির তুমি কোথায় যাচ্ছ চলো যাই মিতুকে দেখে আসি ?? 

---- তুমি যাও অনু । আমি আপুর ঔষুধ গুলো নিয়ে আসি। 

---- আচ্ছা । আগে বলো আপু কত নম্বর রুমে আছেন উনাকেও দেখে যাই। 

---- আপু তিনশো সাতে। আমি আসি তুমি যাও বলে চলে আসছি আর ভাবছি... মিতুকে দেখতে না গেলে হয় নাকি,,,!! মিতুকে তো আমি অবশ্যই দেখতে যাবো। 

----- আজ আমার যেমন কষ্টের দিন ঠীক তেমন খুশীরও দিন। যা চেয়েছিলাম কিছুটা হলেও তা হয়েছে। মিতুকে দেখবো আর মনের ভাষায় বলবো যে দেখ আজ কেমন লাগে। 

---- ঔষুধ নিয়ে চলে আসলাম। আমি রুমে ঢুকতেই খেয়াল করে দেখলাম, আপু চোখের ভাষায় অনুকে কেন্দ্র করে আব্বুকে কি যেনো বুজাচ্ছে। 

---- আব্বুও যেনো অনুর দিকে চেয়ে আছে। 

কি ব্যাপার অনু মিতুকে দেখতে যাও নাই?? 

--- নাহ আবির এখনে যাইনি । তোমার সাথে যাব বলে বসে আছি। 

--- মিতুকে দেখতে যাওয়ার কথা শুনে আপু জানতে চাইলো,, 

মিতুকে দেখতে যাবে মানে কি?? 

---- আমি কিছু বলার আগেই অনু সব বলে দিলো... 

কাল রাতে মিতুকে অপু নাকি নাকি অনেক মারধর করেছে। মিতুকে ওর ভাইয়া এই হাসপাতালেই ভর্তি করেছেন। 

তাই মিতুকে দেখতে যাবো আপু। 

---- বলো কি মিতুকে অপু এত মারধর করেছে যে হাসপাতালে ভর্তি করেছে,,, ?? সবার আগে আমার  গল্প পড়তে চাইলে  "নীল ক্যাফের ভালোবাসা" পেজে পাবেন।

----- তাতে কি হয়েছে বেশ করেছে । অপু ভাই গুড জব । (মনে মনে বললাম আরকি) 

---- হুমম আপু অনেক মারধর করেছে। (অনু)

---- ওহ। চলো তাহলে তেমাদের সাথে 

আমি ও মিতুকে যাবো । 

---- যার জন্য মাসুদ ভাইয়া আপুকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য ডিভোর্স পেপারে সই করেছেন অথচ আপু তাকেই দেখতে যাবে শুনে আমার কিছুটা অবাকই হয়ে গেলাম। আপু আসলে এতটা ক্ষমাশীল। আপুর মনটা যেনো খুবই সহনীয়৷ 

--- আপু তুই পরে দেখতে যাবি এখন রেস্ট নে তোর শরীরটা অসুস্থ। আমি আর অনু যাচ্ছি। 

আব্বু আপুকে দেখে রেখ বলে চলপ আসলাম মিতুকে দেখতে। 

----আপু অনু ও আমাকে যেতে দেখে আবারো আব্বুকে যেনো ইশারায় কিছু একটা বললো। আব্বু ও আপু দুজনেই মুচকি হাসলো। 

যাক চলে আসলাম মিতুকে দেখতে। 

---- বেডে মিতু ও মিতুর পাশে একজন নার্স দাঁড়িয়ে আছে 

আমি এদিক - সেদিক তাকিয়ে দেখলাম। কোথাও আমার এক্স দুলাভাই আছে কিনা। 

নাহ কোথাও নেই দেখছি। যাক তাহলে এবার যা দেখতে এসেছি তা ভালো করে দেখা যাক বলে.. 

---- মিতুকে কতটা এবং কিভাবে মেরেছে দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। 

মিতুর একহাতে ব্যান্ডিজ গাল দুটো লাল আর গলার নিচে হালকা মনে হচ্ছে পুড়ানো দাগ। 

---- যাক ভালোই মেরেছে তাহলে কিন্তু আরও একটু বেশি মারলে মন্দ হতো নাহ। বলে এবার চুপ করে বসে শুনার চেষ্টা করলাম কেনও অপু মেরেছে মিতুকে। 

---- মিতু কি হয়েছিলো,, অপু তোকে এভাবে মারলো কেনও?? (অনু)

---- মিতু একটু কান্না করে বললো সবই আমার ভাগ্যর-লিখন রে বান্ধবী সব আমার পাপ কাজের ফল। 

----- যাক তাহলে মিতু কিছুটা মানুষ হয়েছে । তবে এক দিনের মাইর এ মিতু এতটা বুজবে বাহ ভালই। 

---- একটুপর আমি বসা থেকে উঠে অপারেশন এর কিছু জিনিস দেখে নার্সকে বললে লাগলাম...

--- এটা কি ওটা কি,,, নার্স কিছুটা বিরক্ত হয়েই গেলো। 

অনু আমায় বলে বসলো আবির তুমি এমন করছো কেনও?? 

---- নাহ সব কিছু জানার কৌতূহল জেগেছে গো তাই আরকি। 

---- একটুপর আপু আসলো। এসেই মিতুর পাশে বসে মিতুর মাথায় বুলিয়ে দিয়ে সব জানতে চাইলো। 

---- মিতু আপুর হাত চেপে ধরে কিছু বলতে যাবে কি মাসুদ ভাই চলে আসলেন। মাসুদ ভাই এসেই অনুকে বললেন অনু তুমি থাকে বাকিদের চলে যেতে বলো। 

---- মাসুদ ভাইয়ার কথা শুনে আমি আর আপু বের হয়ে আসলাম। আপুকে যেতে বলে আমি জানালায় কান পেতে রইলাম। কেননা মাসুদ সাহেবের হাতে আমি একটা কাগজ দেখেছি। কাগজটা আমি যা সন্দেহ করেছি তাই কিনা বুজার জন্য আমি কান পেতে রইলাম। 

---- মিতু এই নে ডিভোর্স পেপার অপু সাইন করে দিয়েছে এবার তুই কর,,,, (মাসুদ সাহেব)

----- এবার আমি জানালার পর্দা সরিয়ে দেখলাম সত্যিই তো আমি যা ভেবেছি তাই ই। 

আহা আমার যেনো আজ বরই নাঁচতে ইচ্ছে করছে। তাইরে নাইরে উরে।

---- মিতু আজ কেমন লাগছে তোমার,,,?? এবার বুজো ইট মারলে পাটকেল টা অবশ্যই খেতে হয়। আর মাসুদ সাহেব এবার বুজেন ভাই হয়ে নিজের বোনের হাতে ডিভোর্স লেটার দিয়ে তাতে সাইন করতে বলাটা কতটা কষ্টের। 

---- আমি আপুর কাছে চলে আসছি আর ভাবছি,, মাসুদ সাহেব মিতুকে অপুর মত ছেলের সাথে কেন বিয়ে দিতে রাজি হলো আবার বিয়ে দিলো ও,, আজকে আবার ডিভোর্স এসবের কারণটা কী,,?? 

----- নাহ জানি এই কথাগুলো কোনদিনও জানা হবে কিনা তবে জানার জন্য বেশ আগ্রহ জাগছে যেনো। 

---- আপুর কাছে এসে দেখি আব্বু ও আপু বাসায় চলে আসবে বলে প্রস্তুত। বাসায় চলে আসবো বলে গাড়িতে উঠলাম। আব্বু গাড়ি চালাচ্ছেন আর আপু আমার ঘাড়ে মাথা রেখে অনবরত কেঁদেই যাচ্ছে। 

---- আমি কী বলে আপুকে শান্তনা দিবো বুজছি নাহ। একবার ভাবছি আপু কেঁদে লাভ কী সবই তো ভাগ্যর লিখন। কপালে যা আছে তা তো হবেই। 

আর যে তোর আমার এতবড় ক্ষতিটা করেছে সে ও তো আজ সুখে নেই। তোর সাথে যেটা হয়েছে তার সাথে ও ওটাও হয়েছে। ঠীক পাপের সাজাটা পেয়েছে যেনো। 

---আপু চোখটা একটুখানি মুছে বলে বসলো ভাই আমার মত মিতুর জীবনটাও নষ্ট হয়ে যাবে রে। 

---- আপুর কথা শুনে আমি মনে মনে বললাম..

মিতুর জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে মানে কী আপু,, অলরেডি 

নষ্ট হয়ে গিয়েছে তো। 

---- ভাই দেখেচিস উনার আজও আমাদের ওপর কতটা রাগ রয়েছে। আমাদের দেখে আমাদের সাথে কথা বলবেন না বলে অনুকে দিয়ে আমাদের বেরিয়ে যেতে বললো। 

---- হুমমম আপু। আপু আমার মনটা না একটা কথা বলছে,,, বলবো আপু?? 

---- হুমমম ভাই বল। 

আপু তুই দেখিস 

আমার যখন মিষ্টি একটা ভাগ্নী বা ভাগ্নে হবে তখন মাসুদ ভাই নিশ্চিত নিজ সন্তানের দিকে তাকিয়ে আবার তোকে মেনে নিবে। একসময় উনি সব ভুলে যাবে। 

---- তাই যেনো হয় ভাই। তবে আমার মনে হয় কি ও আমায় আর মেনে নিবে নারে ভাই। 

---- নিবে আপু নিবে। উনার সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখিস... 

একসময় উনি অবশ্যই সব মেনে নিবেন ।

---- আমরা বাসায় পৌঁছে গেলাম। একটু ফ্রেস হয়ে বসতেই অনু আমায় ফোক করলো। 

হুমম বলো অনু,,, 

---- আবির একটা কথা বলবে,,,?? তোমাদের সাথে মাসুদ ভাইয়া ও মিতুর কি হয়েছে?? 

---- কিছু নাতো। 

--- কিছু নাহ মানে,,?? নিজের বউ কে ও সালাবাবুকে উনি বার হয়ে যেতে বললেন

কেনও তাহলে?? আর আমি যখন বললাম লাবণ্য আপু মা হতে চলেছেন তাহলে উনি এ কথা শুনে মন মরা হয়ে গেলেন কেনও?? 

---- তোমাকে সময় করে একদিন আমি সব বলবো,, এখন তুমি আমায় একটা কথা বলো তো অনু,,, 

----হুমম কি কথা বলো,,(অনু)

আসলে মাসুদ সাহেব মিতুকে কেনও অপুর সাথে বিয়ে দিলো আর অপুই বা কেনও মিতুকে ডিভোর্স দিলো,, জানো কী তুমি.....?? 

---- নাহ তো আবির আমি কিছুই জানি নাহ। 

---- ওহ আচ্ছা । অনু পরে কথা বলবো বলে ফোনটা রেখে দিলাম। 

রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়লাম। 

----- সকালে উঠে আজ আব্বু ও আমি ওয়ার্কশপে যাওয়ার জন্য বাহির হতে আপু এসে বললো আমিও যাবো। আমি বললাম... নাহ আপু তুই আজ থেকে বাসায় থাকবি। 

কেননা আমাদের মাঝে নতুন একটা অতিথি আসছেন। 

আপু একটু লজ্জা পেয়ে বললো আচ্ছা ভাই ঠীক আছে । 

---- আব্বু আর আমি ছুটলাম ওয়ার্কশপে। 

এভাবেই কেটে গেলো বেশ কিছুদিন 

হঠাৎই একদিন.....


..

..

..

To be continue

0 Comments:

Post a Comment