গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১৫

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১৫

#লিখনিতে_Rodela_Islam


- হঠাৎ হাতের রিংটার  দিকে চোখ পরে তুলির। তুলি ভালোভাবে রিংটা দেখে একবার তারপর। তমালের দিকে তাকিয়ে দেখে তমাল মিটি মিটি হাসছে তুলি তমালকে প্রশ্ন করে 


- --তুলি:: আমার রিংটা কোথায় তমাল ভাই......??

- [ ] --তমাল:: তমাল তুলির হাতের দিকে তাকিয়ে বলে ) তুই কি চোখে দেছিস না তোর রিংটা তো তোর হাতেয় আছে। 

- [ ] --তুলি:: এটা আমার রিং না আর এটা আমার হাতে কি করে এলো.....?? 


- [ ] --তমাল:: সেটা আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেনো....?? 

- [ ] --তুলি:: কারণ আমি ভালো করেয় জানি তুমি আমার রিংটা নিয়েছো। 

- [ ] --তমাল:: তোর রিং দিয়ে আমি কি করবো 

- [ ] --তুলি:: রিংটা আমার খুব পছন্দের দিয়ে দাও না তমাল ভাই। ( কাদো কাদো মুখ করে )


--তমাল:: তোর হাতে তো রিং আছে একটা সেটা নিয়ে থাক না যেটা হারিয়ে  গিয়েছে সেটা নিয়ে না ভেবে। 

--তুলি:: দিয়ে দাও না ওটা আমায় আমি আর তোকামে জালাবো না সত্যি বলছি। 

--তমাল:: কি এমন আছে ওই রিংটায় যার জন্য কেদে এমন গঙ্গা যমুনা বানাছিস.....??


--তুলি:: (মনে মনে বলে আমি জানি এখন আমার আঙুল যে রিংটা আছে সেটা তুমি দিয়েছো কাল রাতে কিন্তু তুমি যেটা খুলে নিয়েছো সেটা যে তুমি আমাকে প্রথম গিফ্ট দিয়েছিলে সেটার সাথে আমার অনেক সৃতি জড়িয়ে আছে আমার কতো না বলা মনের কথা সবটার সাক্ষী ওই রিংটা ) 


--তমাল:: কি হলো বল.......?? 

--তুলি:: চোখ মুছে বলে ) আসলে এটা রাহাত আমাকে ভালোবেসে দিয়েছিলো ওটা তাই দিয়ে দাও না। 

--তমাল:: তোকে বলেছি না আমার সামনে ওর নাম নিবি না। 

--তুলি:: কেনো নিবো না ও আমার বর তাই আমার মুখে ওর নামটাই বেশি শুনতে হবে। 

তমাল খুব জোরে ব্রেক করে গাড়িটা। তুলি আর একটু হলে মাথায় ব্যাথা পেতো। 


--তমাল:: বেরিয়ে যা আমার গাড়ি থেকে। 

--তুলি:: কি.....

--তমাল:: বললাম গাড়ি থেকে নাম 

-তুলি গাড়ির বাইরে তাকিয়ে দেখে ভার্সিটির সামনে চলে এসেছে। তুলি গাড়ি থেকে নেমে তমালের দিকে আর না তাকিয়ে চলে যায়। 


------ক্লাস রুমে ------


তমাল পড়া বোঝাচ্ছে আর তুলি শিমু আর রুপার সাথে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছিলো। তখন তমাল তুলির দিকে তাকিয়ে রাগিয়ে কন্ঠে বলে ওঠে 


--তমাল:: এই যে মিস তুলি আপনি কি এখানে গল্প করতে এসেছেন। 

--তুলি::~ সরি স্যার আসলে..... 

--তমাল:: আমি কোনো কথা শুনতে চাই না। এর পর কথা বলতে দেখলে বাইরে রোদের মধ্যে দাড় করিয়ে রাখবো। বলে তমাল আবার পড়ানো শুরু করে। 


রুপা :: তুলি স্যার কি এখনো তোর সাথে খারাপ ব্যাহার করে....??

--তুলি:: পরে সব বলবো তোদের এখন চুপ কর নাহলে বের করে দিবে ক্লাস থেকে। তুলির কথা সম্পূর্ণ করার আগেই তমাল এসে তুলির সামনে দাড়িয়ে বলে 


--তমাল:: তুলি রুপা আর শিমু তিন জনেই বাহিরে দিয়ে দাড়িয়ে থাকো। 

--তুলি:: কিন্তু স্যার 

--তমাল:: আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না তারাতাড়ি যাও ( রাগি স্বরে )


-তুলি আর কিছু বললো না মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে তিন জনে 

--রুপা::~ ধুর বাবা কি হলো এটা..? 

--তুলি:: বেশ হয়েছে তোর জন্য এখন আমাকেও শাস্তি পেতে হচ্ছে। 

-শিমু::এখন শাস্তি যখন পেতেই হচ্ছে তখন বলতো কাল দেখা করতে আসবি বলেও আসলি কেনো। 


--তুলি:: আর বলিস না আমি তো আসার জন্য রেডি হয়েছিলাম কিন্তু হঠাৎ ঘুমিয়ে গিছে আর অবাক করার বিষয় হলো টানা ৫ ঘন্টা ঘুমিয়েছি। 

-রুপা:: কিইইইই....... চেচিয়ে বলে 

--তুলি:: আরে ষারের মতো চেচাচ্ছিস কেনো 

--রুপা:: তুই ভাবতে পারছিস তুই অসময়ে ৫ ঘন্টা ঘুমিয়েছিস বেপারটা সাভাবিক না। 


--তুলি:: আমিও ভেবেছি কিন্তু বুঝতে পারছি না। 

--শিমু::~ তুলি তুই কি কিছু খেয়েছিলি.....??

--তুলি:: হ্যা শুধু কফি খেয়ে......বাকি কথা বলার আগেই তুলি কিছু একটা ভেবে বলে ) তমাল ভাই 

-শিমু::স্যার এলো কোথা থেকে 

--তুলি:: আমার কাছে এখন সব পানওর মতো পরিষ্কার। এর মধ্যে ক্লাস শেষ করে বাইরে বেরি এসে তুলির পাশে দাড়িয়ে আস্তে আস্তে বলে ওঠে 


--তমাল:: এই শাস্তিটা তোর কথা বললার জন্য না এটা আমার সামনে বর বর করার জন্য এরপর আর এমন করবি না ভুলেও তাহলে তোকে অনেক বড় শাস্তি পেতে হবে আর তোর ওই বরের কি অবস্থা করবো তা তুই ভাবতেও পারবি না।  বলে নিচের চেম্বারের দিকে চলে যায়। 


--তুলি:: এতো কথা বলতে পারে কিন্তু ভালোবাসি কথা বলতে পারবে না। যেখানে একটা কথা বললেই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যায় যেখানে এতো গুলো কথা বলবে কাজের কথা না বলে। উফফ বাদর একটা। 


তুলিরা সবাই ক্লাস শেষ করে মাঠে এক কোণায় বসে গল্প করছিলো তখন তমাল এসে তুলিকে বলে


--তমাল:: তুলি উঠ বাড়ি যেতে হবে। 

--তুলি:: তুমি চলে যায় আমি পরে যাবো। 

--তমাল:: তুই এখন যাবি আমার সাথে। বলে তুলির হাত ধরে উঠিয়ে নিয়ে যায়। 


------বাড়িতে------ 


তমাল বাড়ি এসে ফ্রেশ হয়ে বসতেই হঠাৎ সামনে থাকা টেবিলের উপর কাল তুলির রিংটা খুলে এনে রেখেছি হঠাৎ সেটা হাতে নেয় তমাল সেটা ভালোভাবে দেখতেই মনে পরে এটা তমাল তুলিকে দিয়েছিলো  


--তমাল:: এটা তো আমি দিয়েছিলা আরো তিন বছর আগে। তাহলে তুলি আমায় মিথ্যে বললো কেনো আর এই জন্যই এতো কষ্ট পাচ্ছিলো। কিন্তু তুলি আর বাড়ির লোক যে অন্যকিছু বললো। তমাল কিছু একটা ভাবে মনে মনে। তারপর রিংটাকে সযত্নে নিজের কাছে রেখে দেয়। 


দুদিন কেটে যায় তুলি তমালকে দেখিয়ে দেখিয়ে রাহাতের সাথে কথা বলে হাসে তমালকে ইগনোর করে চলে তা দেখে তমালের রাগ হয় প্রচুর কিন্তু কিছু বলতে পারে না। একদিন বিকেলে তমাল তুলির রুমে গিয়ে বলে


--তমাল:: তুলি নিচে চল তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। 

--তুলি:: আমার জন্য সারপ্রাইজ....?? 

--তমাল:: হুম অনেক বড় সারপ্রাইজ তারাতাড়ি চল। তমাল তুলিকে নিয়ে নিচে যায়। 

তুলি নিচে গিয়ে দেখে সবাই উপস্থিত যেখানে। 


( কি মনে হয় আপনাদের তমাল তুলিকে কি সারপ্রাইজ দিতে পারে ) গল্পটা ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবে। ধন্যবাদ। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১৪

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১৪

#লিখনিতে_Rodela_Islam


তমাল তুলিকে কোলে করে ওয়াসরুমে নিয়ে গিয়ে শাওয়ারের নিচে একটা টুলে তুলিকে বসিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দেয়। অল্প সময়েই তুলি ভিজে চুপচুবে হয়ে গেছে। 


-তুলি:: এটা কি হলো তুমি আমাকে ভিজালে কেনো। 

-তমাল:: আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই চুপচাপ বসে থাক উঠবি না। 

-তমাল তুলির থেকে একটু দূরে দাড়িয়ে ছিলো। তুলি একটা মগে পানি নিয়ে তমালের গায়ে ছুড়ে দেয়। তমাল বুঝে উঠতে পারে নি তুলি এমন কিছু করবে। 


-তমাল:: কি করলি এটা। 

-তুলি:: যা করেছি বেশ করেছি তুমি আমাকে ভিজিয়েছো তাই আমিও ছিয়েছে দিয়েছি। 

-তমাল:: তুই ঘুমে ঢুলছিলি তাই তোকে ভিজিয়েছি যাতে তোর ঘুম কেটে যায়। এই জন্য বলে কারো ভালো করতে নেই। তুই দাড়া আমি তোর ড্রেস নিয়ে আসছি। তমাল তুলির আরমারী থেকে একটা ড্রেস এনে তুলিকে দিয়ে বলে। 


-তমাল:: চেন্জ করে ঘরেই বসে থাকবি বাইরে বের হবি না আমি আসছি। 

তমাল নিজের ঘরে গিয়ে চেন্জ করে নিচে আসে। 

সবাই খেতে বসেছে লতা বেগম তমালকে দেখে বলে ওঠে 


-লতা বেগম :: রাহাত তুলি মনে হয় এখনো ওঠে নি তুমি কি ওকে একটু ডেকে আনবে.....?? 

-রাহাত::হ্যা আন্টি আমি যাচ্ছি। 


--তমাল খাবার টেবিলে এসে একটা প্লেটে খাবার নিতে নিতক বলে 

-তমাল::কাওকে কোথাও যেতে হবে না আমি তুলির খাবার নিয়ে যাচ্ছি ও ঘরেই খাবে। 

-রাহিলা বেগম : কেনো তুলি ঘরে খাবে কেনো। 


-তমাল:: আমি ওকে ডাকতে গিয়েছিলা ও বললো ওর নিচে এসে খেতে ইচ্ছে করছে না তাই আমি বললাম আমি খাবার নিয়ে আসছি। 


-আলিফ আহমেদ :: তমাল তুমি খেতে বসো তুলি আম্মুর খাবারটা না হয় রাহাত নিয়ে যাক দুদিন পর তো তুলির সব দায়িত্ব রাহাতকে নিতে হবে। 


-তমাল:: যেতে যেতে বলে ) যখন দায়িত্ব নিবে তখন দেখা যাবে এখন আমারটা আমাকে বুঝতে দাও বলে তুলির রুমে চলে যায়। 


সবাই তমালের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। 

আলিফ আহমেদ :: এখনো কিছু বললো না এই ছেলেকে নিয়ে যে কি করবো। ছেলের বুক ফাটবে তবু মুখ ফুটে বলবে না যে তুলিকে ভালোবাসে। 

আসিফ আহমেদ :: আমার কেনো যানি ননে হচ্ছে আমরা ভুল করছি ছেলেটাকে এতো প্রেসার না দিয়ে সময় দিলিও পারতাম আমরা। 

আলিফ আহমেদ :: চিন্তা করিস না যা হবে ভালোই হবে। 

আর কেও কোন কথা না বলে খাওয়ায় মন দেয়। 


------তুলির রুমে------


তুলি চেন্জ করে এসে খাটে বসে ঘরির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়। 

-তুলি:: আমি এতোক্ষণ ঘুমালাম কি করে। আমি তো অসময়ে কখনো ঘুমাই না তাহলে কেনো তখন এতো ঘুম পাচ্ছিলো তাও এক টানা ৫ ঘন্টা ঘুমালাম কি করে সম্ভব এটা। 


তমাল এসে তুলির সামনে খাবারের  প্লেট  রেখে তুলির পাশে বসে বলে 

-তমাল:: নে খাবারটা খেয়ে নে। 

-তুলি:: তমালের দিকে তাকিয়ে বলে ) আমি নিচে গিয়ে খাবো তোমাকে আমি বলেছি খাবার আনতে।


-তমাল:: তোকে এতো বেশি কথা বলতে বলি নি খেতে বলেছি। 

-তুলি:: আমি এখানে খাবো না নিচে গিয়ে রাহাতের পাশে খাবো। ( কথা বলে উঠে যেতে নিলে তমাল তুলির হাত ধরে আবার খাবে বসিয়ে বলে ) 


-তমাল:: কোথাও যাবি না তুই এখানে বসেই খাবি। 

-তুলি:: না আমি যাবো আমি আমার হবু বরের পাশে বসে খাবো। 

-তমাল:: ( এবার কিছুটা রেগে গিয়ে বলে) তোকে শেষ বারের মতো বলছি তুই আমার সামনে বেশি বর বর করবি না তাহলে তোর যে কি অবস্থা করবো তুই ভাবতেও পারছিস না। 


--তুলি:: তুমি আমার যা খুশি করো তাতে আমার কিছু আসে যায় না কিন্তু আমি তো আমার বরের কথা বলবোই। 

( তমাল কিছু না হঠাৎ তুলির দিকে এগিয়ে তুলির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। দুজনের তপ্ত নিশ্বাস দুজনের মুখে আছরে পরছে সাথে বুকের মধ্যে ঢোল পেটানোর আওয়াজ হচ্ছে। তমালের হঠাৎ কান্ডে তুমি হতবিহ্বল হয়ে যায়। তুলির মস্তিষ্কে তমালের হঠাৎ কান্ড করা ছাড়া আর কিছু নেই। তমাল দু মিনিট পর তুলিকে ছেড়ে দিয়ে বলে)


-তমাল::  এর পর বেশি বর বর করলে এর থেকেও বেশি কিছু হবে। এখন বর বর না করে চুপ চাপ খেয়ে নে। 

-তুলি তো তমালের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে কি হলো এটা এখনো বুঝতে উঠতে পারছে না। তমাল যে এমন একটা কান্ড করবে তা তুলির ধারণাই ছিলো না। 


-তমাল:: কি হলো তমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেনো খেতে বললাম তো ( একটু ধমকের স্বরে)

-তমালের ধমক খেয়ে নরে ওঠে তুলি। 

-তমাল:: আমি এখন আসছি জানপাখি তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে পরো। গুড নাইট জানপাখি। 

তমাল তুলির রুম থেকে বেরিয়ে যায়। 


--তুলি  আঙুল দিয়ে নিজের ঠোঁটে স্পর্শ করে। তুলি উঠে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ায় আয়নায় চোখ পরতেয় লজ্জায় দু হাতে নিজের মুখ ঢাকে। 


------পরদিন সকালে ------


তুলি রেডি হয়ে নিচে নামে ভার্সিটি যাবে বলে তখন রাহাত তুলির সামনে এসে বলে


রাহাত :তুলি চলো আজ আমি তোমায় ভার্সিটিতে দিয়ে আসি। 

তুলি কিছু বলার আগেয় তমাল পেছন থেকে বলে ওঠে 


-তমাল :: রাতহ তুলি আমার সাথে যাবে। তোমার কষ্ট করতে হবে না। 

-রাহাত :: ভাইয়া কোন অসুবিধা নেই আমার বরং আমার ভালাই লাগবে। 

-তুলি:: হ্যাঁ আজ না হয় রাহাতের সাথেই যাই আমি চলুন রাহাত আমরা এগোই। 


-তমাল:: তুলির হাত ধরে নিয়ে যেতে যেতে বলে) রাহাত তুমি তুলির  আশে পাশে আসবে না বলে দিলাম তাহলে কিন্তু ভালো হবে না। 

-তুলি:: তুমি আমার বরকে হুমকি দিচ্ছো। 

-তমাল:: এখন তো শুধু হুমকি দিচ্ছি পরে কি করবো নিজেও জানি না জানপাখি। 

-তুলি:: এই কি বললে তুমি আমায়।

-তমাল:: যা শুনলি তাই বললাম। 


তমাল গিয়ে তুলির জন্য গাড়ির দড়জা খুলে দিয়ে বলে 

-তমাল:: গাড়িতে উঠে বসো জানপাখি। 

তুলি বেশি কথা না বলে গাড়িতে উঠে বসে। তমাল ড্রাইভিং ছিটে বসে গাড়ি স্টাট দেয় । হঠাৎ তুলির নিজের হাতের দিকে নজর পরে। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১৩

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১৩

#লিখনিতে_Rodela_Islam


রাহাত তমালের দিকে তাকিয়ে আছে হা হয়ে। তুলি রাহাতকে তার পরিকল্পনা জানিয়ে রাজি করিয়েছে রাহাত রাজিও হয়েছে কিন্তু রাহাত তুলিকে দিয়ে তার গালফ্রেন্ডকে বুঝিয়ে বলেছে । তমাল তুলিকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে তুলির পাশে বসে তুলির গালে হাত বুলিয়ে বলে 


-তমাল:: সরি জানপাখি আমি তোর সাথে এমন করতে চাই নি কিন্তু কি করবো তুই তো আমার কথা না ভেবে কোথাকার কোন ছেলের সাথে ঘুরতে যেতে চাইলি তাই তো তোকে ঘুম পারিয়ে রাখলাম তুই চার-পাঁচ ঘণ্টা ঘুমেয়ে থাক এবার। 


( তমাল তুলির জন্য কফি আনার সময় কফিতে  Chlorine 5 এর একটা ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দেয় )


আমি কথা দিচ্ছি কাল ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে তোকে ঘুমতে নিয়ে যাবো কথা দিচ্ছি কিন্তু তোকেও কথা দিতে হবে তুই রাহাতের সাথে কোথাও যাবি না কথা দে। ওহ্ তুই তো ঘুমিয়ে আছিস আচ্ছা তোকে কথা দিতে হবে না আমি সামলে নিবো সব। তমাল ঝুঁকে তুলির কপালে আলতো করে ঠোঁটের ছোয়া দিয়ে সোজা হয়ে বসে তুলির বাম হাত নিজের হাতে নিয়ে রিংটা খুলে ফেলে তমালের কিনে  আনা রিংটা তুলির হাতে পরিয়ে দিয়ে হাতে চুমু খেয়ে বলে তোর সব ইচ্ছে আমি পূরণ করবো। তাও তুই কারো থেকে কিছু নিতে পারবি না বলে দিলাম তাহলে কিন্তু খাবাপ হয়ে যাবে। আচ্ছা জানপাখি তুমি ঘুমাও আমি আসছি এখন পরে আসবো আবার। তলাম তুলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে যায়। 


-------ডইং রুমে -------


 রাহাত তুলির রুমে যেতে নিয়েও যেতে পারেনি কারন তমাল সেখানে ছিলো বলে সাহস করে উঠতে পারে নি রাহাত তমালকে আগে থেকে ভয় পায়। তাই রাহাত সোফায় বসে ফোন দেখছিলো। লতা বেগম আর রাহেলা বেগম রান্না ঘরে যাচ্ছিল তখন রাহতকে দেখে বলে 


-রাহেলা বেগম : : রাহাত বাবা তুমি আর তুলি না বললে বাইরে যাবে যাও নি.....??

-রাহাত :: না আন্টি তুলির না কি শরীর খারাপ তাই ঘুমিয়ে গেছে। 

-রাহেলা বেগম :: তুলির শরীর খারাপ আমাকে তো কিছু বলে নি। 


-লতা বেগম :: তুলি বলেছে তোমায় আর তুলি কি ওর ঘরে। 

-রাহাত:: তমাল ভাইয়া তুলিকে নিয়ে গিয়েছে রুমে। 

-লতা বেগম :: তমাল নিয়ে গেছে......?? 

-রাহাত:: হ্যাঁ। 

-রাহেলা বেগম:: আপা চলো তো গিয়ে দেখি কি হলো মেয়েটার। 


-লতা বেগম :: হ্যা চলো তমাল আবার কিছু করলো না তো ওর ভাব গতি আমার ভালো ঠেকছে না কাল থেকে। 


রাহেলা বেগম আর লতা বেগম গিয়ে দেখে তুলি ঘুমিয়ে আছে রাহেলা বেগম মেয়ের মাথার কাছে গিয়ে বসে কপালে হাত রেখে দেখে জ্বর এসেছে কি না। কিন্তু না শরীর ঠান্ডা। লতা বেগম তুলিকে কয়েক বর ডাকে কিন্তু কোন সারা পায় না। রাহেলা বেগমের একটু ভয় হয় কি হলো মেয়ের তা ভেবে। তমাল এদিক দিয়ে যাচ্ছিলো তখনি মামনী আর আম্মুর গলা পেয়ে তুলির রুমে এসে বলে 


-তমাল::  ওকে ডেকো না মামনী ও ঘুমোচ্ছে দেখতে পাচ্ছ না। 


-রাহিলা বেগম আর লতা বেগম পিছনে ঘুরে তাকায় তমালে দিকে লতা বেগম তমালকে প্রশ্ন করে 


-লতা বেগম :: তুলির কি হয়েছে রাহাত বললো ও নাকি অসুস্থ কি হয়েছে ওর......?? 


--তমাল:: তেমন কিছু না মাথা ব্যাথা করছিলো তাই ঔষধ দিয়েছি সেটা খেয়ে ঘুমিয়ে ঘুমের থেকে উঠলে ঠিক হয়ে যাবে তোমরা চিন্তা করো না। তুলিকে একবার দেখে  নিজের গন্তব্যে চলে যায়। 


-রাহেলা বেগম:: ছেলেটা মনে মনে কষ্ট পাচ্ছে খুব। 

-লতা বেগম :: তাতো পাবেয় নিজের মনের কথা বলতে না পরলে। পাক কষ্ট ওর কষ্ট পাওয়াই উচিৎ মেয়েটাকে তো আর কম কষ্ট দেয় নি। 

-রাহেলা বেগম:: আচ্ছা চলো ও ঘুমাক একটু। 

-লতা বেগম :: হ্যাঁ  চলো। 


-------রাত ৮:৩০------

তমাল তুলির রুমে এসেছে তুলি উঠেছে কিনা তা দেখতে । তার ধরনা অনুযায়ী তুলির এতোক্ষণে উঠে পরার কথা।কারন বিকেল ৪:০০ এখন রাত ৮:৩০।  কিন্তু তুলি এখনো বেঘোরে ঘুমোছে। তমাল তুলির পাশে বসে তুলেকে ডাকে কিন্তু তুলির কোনো সারা শব্দ পায় না। কিছুক্ষন ডাকার পরেও যখন তুলি উঠলো না তখন তমালের ভয় হতে থাকে। 


তমাল বিরবির করে বলে কি হলো এটা ওর তো এতোক্ষণে উঠে পরার কথা তাহলে উঠছে না কেনো আমি কি কোন ভুল করে ভেললাম কিন্তু আমি তো একদম কম পাওয়ারের ঔষধ দিয়েছিলাম তাহলে আমার কি ডক্টর আঙ্কেলকে কল করা দরকার কি করবো আমি এখন তমাল গিয়ে আবার তুলির পাশে বসে তুলেকে ডাকে হঠাৎ কি মনে করে পানি এনে তুলির মুখে ছিটিয়ে দেয় পানি ছিটায় ঘুম কিছুটা হালকা হয় চোখ বন্ধ রেখেয় বলে 


--তুলি:: আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমাকে একটু ঘুমোতে দাও বিরক্ত করো না। মাথাটা ভার হয়ে আছে। 


-তুলির কথা শুনে তমাল শান্তির নিশ্বাস নেয়। তুলি নরে চরে আবার ঘুমিয়ে পরে। তমাল নিচে গিয়ে দুটো লেবু এবং তেতুল দিয়ে এক গ্লাস শরবত বানায় তুলির জন্য নিজের হাতে । তমালকে লেবু তেতুলের শরবত বানাতে দেখে তমালের আম্মু  জিজ্ঞেস করে রাতের বেলায় শরবত দিয়ে কি করবে আর কার জন্য। তমাল কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যায়। লতা বেগম কিছুটা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। 


-------তুলির রুমে ------- 


-তমাল::  তুলি শুনতে পারছিস আমার কথা তুলি। 

-তুলিতো নিজের মতো ঘুমোচ্ছে। তমাল পানি এনে তুলির মুখে ছিটিয়ে দেয় তুলি পিট পিট করে তাকিয়ে   দেখে তমাল বসে আছে। 


--তুলি:: একটু ঘুমোতে দাও না তমাল ভাই। 

-তমাল:: আগে উঠে বস আবার পরে ঘুমোবি। 

-তুলি:: না আমার এখন ঘুম পাচ্ছে। 

তমাল তুলিকে ধরে উঠিয়ে বসিয়ে বলে 


-তমাল:: চুপ কোন কথা বলবি না আমি যা বলবো তাই করবি। তুলি ঘুমে ঢুলে পরছে। তমাল এক হাত দিয়ে তুলিকে ধরে আর এক হাতে শরবতের গ্লাসটা তুলির সামনে বলে 


-তমাল:: কোনো কথা না বলে চোখ মুখ বন্ধ করে খেয়ে নে এটা। 

-তুলি:: না আমি খাবো না ঘুমাবো। 

-তমাল:: আগে এটা খেয়ে নে তারপর ঘুমাস তোকে আর ডিস্টার্ব করবো না। 

-তুলি:: সত্যি 

-তমাল:: হুম সত্যি। 


তুলি একটু মুখে দিতেই চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নেই। 

-তুলি:: আমি এটা খাবো না খুব বাজে খেতে। বলে আবার শুয়ে পরতে  নিলে তমাল তুলিকে জোড় করে খাইয়ে দেয়। একেই তো ঘুমের জন্য তাকাতে  পারছে না তার উপর তমাল জোর করছে। তুলি হঠাৎ কেঁদে দেয়। তমাল তুলিকে কোলে করে নিয়ে ওয়াসরুমে নিয়ে গিয়ে তুলিকে একটা টুলের উপর বসিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দেয়। 


#চলবে 

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১২

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১২

#লিখনিতে_Rodela_Islam


-আশিক:: তুলি তুমি একটু ভেবে দেখো। 

-তুলি:: আমি ভেবে নিয়েছি কি করবো আর কিছু ভাবার নেই। ভাইয়া নিচে চলুন আপনাকে আমার হবু হাসবেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। আর হ্যা আজ দুপুরে কিন্তু খাওয়া দাওয়া করে যাবেন আপনি আসুন আমি যাই বলেই তুলি নিচে চলে যায়। 


-আশিক::( তমালের কাধে হাত রেখে বলে ) আমি ওকে বুঝিয়েছি ও বলেছে তুই যদি নিজের মুখে বলিস ওকে বিয়ে না করতে তাহলে ও নিজে বিয়েটা ভেঙে দিবে ভেবে দেখ কি করবি। 


-------দুপুরে-------


সবাই খাবার টেবিলে উপস্থিত  তুলির পাশে রাহাত বসেছে এটা ভালোলাগছে না। তমালের তাও কিছু বলতে পারছে না চুপ চাপ বসে আছে আশিকের পাশে আর একটু পর পর তুলিকে দেখছে তুলি রাহাতের সাথে হাসতে হাসতে কথা বলছে আর খাচ্ছে  রাহাত তুলিকে এটা ওটা খাবে কিনা জিজ্ঞেস করছে তা দেখে তমালের আর স্যহ হচ্ছে না সে খাবার রেখেই ঘরে চলে যায়। তমাল কেনো এমন করলো তা কারো অজানা নয়। তুলি খাওয়া শেষ করে তমালের ঘরে যায় গিয়ে দেখে দুহাটু ভাজ করে মাথা নিচু করে বসে আছে 


-তুলি:: কি মি: তমাল খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না......??


তমাল মাথা উঠিয়ে দেখে তুলি ওর সামনে বসে আছে ওর দিকে তাকিয়ে  


-তমাল:: আমার কেনো কষ্ট হবে 


-তুলি:: আমি তো এতোদিন তোমাকে ভালোবেসেছি তাই একটু হলেও বুঝি তোমার কষ্টটা কিন্তু কিছু করার নেই আমার। 


-তমাল::  আমার কোন কষ্ট হচ্ছে না তুই তোর কাজে যা। 


-তুলি:: হুম সেটাতো তোমার চোখে মুখেই ফুটে উঠেছে। যাগ্গে আমি তোমাকে একটা জিনিস দেখাতে এসেছি ( বলে তুলি নিজের হাতটা তমালের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে ) এটা রাহাত আমাকে নিজের হাতে পরিয়ে দিয়েছে সুন্দর না। আর বলেছে বিকেলে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যাবে। আমার তো খুব আনন্দ হচ্ছে । আমি আর রাহাত একা ঘুরতে যাবো খুব মজা হবে। উফফ লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে। 


তুলির কথা গুলো কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো কাজ করেছে। 


-তমাল:: তুই কি এসব বলতে এখানে এসেছি তুই আর কখনো আমার রুমে আসবি না চলে যা আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যা। (রাগে চিৎকার করে বলে ) 


-তুলি:: আরে আরে রাগ করছো কেনো আমার হবু বর আমাকে কি দিলো সেটা তোমাকে দেখাবো না তুমি তো আমার বড় ভাই হও বলো।


-তমাল আর নিজের রাগ কন্টল করতে না পেরে গাল চেপে ধরে বলে 

-তমাল:: তোকে আমি বারন করেছিলা আমার সামনে অন্য কোন ছেলের নাম নিবি না তুই তাই করছিস বারবার। 


-তুলি:: আহ: ব্যাথা পাচ্ছি ছেড়ে দাও। 


-তমাল:: তুলির গাল থেকে হাত সরিয়ে বলে ( বেরিয়ে যা আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যা তোকে আমার চোখের সামনে দেখতে চাই না )


-তুলি:: চলেই তো যাবো আর কদিন পরে তোমার জীবন থেকে একে বারের জন্য আর কোন দিন ফিরে আসবো না তখন আমাকে হাজার ডেকেও পাবে না। এখন আর কি কষ্ট পাচ্ছ তখন তার থেকেও হাজার গুন কষ্ট বেশি পাবে। ( তুলি আর না দাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে যায় )


তমাল রাগে নিজের ঘরের জিনিস পত্র ছুড়ে ফেলছে। 

-তমাল:: আমি বেঁচে থাকতে তোকে কোথাও যেতে দিবো না আমি তোকে ভালোবাসি আর না বাসি তাও তুই আমার সাথে আমার বাড়িতে থাকবি যেতে দিবো না তোকে আমি কোথাও যেতে দিবো না। 


কিছুক্ষন একা একা বিরবির করে শান্ত হয়ে যায়। মেঝেতে বসে খাটে মাথা এলিয়ে দিয়ে বসে থাকে এক সময় ঘুমিয়ে পরে। কেও একজন এসে তমালের পাশে বসে তমালের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে বলতে শুরু করে 


-তুলি:: খুব বেশি কষ্ট পাচ্ছ কি তুমি আমাকে যতটা কষ্ট দিয়েছো নিশ্চয়ই তার থেকে বেশি না। আমি তো ভেবেছিলাম তার থেকেও বেশি কষ্ট দিবো কিন্তু তা পারবো না আমি তোমার ব্যাথায় যে আমি ব্যাথিতো হই। তোমাকে বেশি কষ্ট দিবো না তোমাকে তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমি নিজেও যে ভালো নেই। তবে তুমি আমাকে যেই কষ্ট দিয়েছো তার কিছুটা তোমাকেও পেতে হবে। এই দুটো বছর আমি শান্তিতে দুচোখের পাতা এক করতে পারি নি। চোখ বুজলেই মনে হতো তুমি চলে যাবে আমায় রেখে কত রাত কেঁদেছি তোমার জন্য তোমার ভালোবাসার জন্য। এবার একটু তুমিও কাঁদো। আমার ভালোবাসা। তবে এই তুলি তোমাকে ছুয়ে কথা দিচ্ছে তোমাকে ছাড়া আর কাওকে নিজের জীবনে জায়গা দিবে না। তোমার তুলি তোমারি থাকবে। আরো কিছুক্ষন থেকে চলে যায় ঘরে। 


-----বিকেলে-----


-তুলি নিজের রুমে বসে রেডি হচ্ছিল ঘুরতে যাওয়ার জন্য তখন তমাল আসে তুলির ঘরে হাতে এক কাপ কফি। তমাল তুলির সামনে কফির কাপটা রাখে। তুলি চোখ তুলি তাকায় অবাক হয়ে বলে 


-তুলি:: তমাল ভাই তুমি কফি নিয়ে এলে যে। 


-তমাল:: তুই তো মামনীকে বললি আর মামনী আমাকে দিয়ে পাঠালো। 


-তুলি:: ওহ আচ্ছা আর কিছু বলবে নাহলে তুমি একটু বাইরে যাও আমি রেডি হবো। 


-তমাল:: হ্যাঁ অবশ্যই। মনে মনে যতো ইচ্ছে রেডি হ কিন্তু তুই কোথাও যেতে পারবি না জানপাখি।  আমার সাথে গেলে কিছুই করতাম না কিন্তু তুই অন্যএকটা ছেলের সাথে যাবি আর আমি বসে বসে দেখবো তা হতে পারে না। ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি রেখে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। 


-তমালের আচরণে একটু সন্দেহ হয় তুলির কিন্তু কিছু বুঝতে পারে না কফিটা খেয়ে তৈরী হয়ে নিচে নামে কালো রঙের একটা গ্রাউন পরেছে চুলগুলো ছাড়া হালকা মেকাপ করা গোলাপি লিবিস্টিক দেওয়া ঠোঁটে। দেখতে অপূরুপ সুন্দর লাগছে তমালের জানপাখিকে। তমাল সোফায় বসে ছিলো তুলিকে দেখে চোখ আটকে যায় তুলির দিকে। 


কোথা থেকে রাহাত এসে বলে


-রাহাত:: তোমাকে তো খুব সুন্দর লাগছে। 


-তুলি:: ( আর চোখে তমালের দিকে তাকিয়ে বলে ) Thank you ( লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে )


রাহাত:: কিন্তু তোমার চোখ মুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো......??


-তুলি:: বুঝতে পারছি না মাথাটা কেমন ভার ভার লাগছে আর ঘুম পাচ্ছে। 


রাহাতের একটা ফোন আসায় রাহাত কথা বলতে একটু দূরে যায় । তুলি গিয়ে তমালের পাশে সোফায় বসে মাথা এলিয়ে দেয় তমালের কাধে  তমাল কিছু বলে চুপ করে বসে আছে। তমাল তুলির দিকে তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে। ১৫ মিনিট পর রাহাত এসে দেখে তুলি তমালের কাধে ঘুমিয়ে আছে রাহাত ডাকতে গেলে তমাল বাধা দিয়ে বলে


-তমাল::  দেখছো না ও ঘুমোচ্ছ আর ওর শরীর খারাপ তাই যাবে না বলেছে। তুলিকে কুলে তুলে নিয়ে হাটা ধরে তুলির রুমের দিকে। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১১

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১১

#লিখনিতে_Rodela_Islam


-আশিক:: কি কথা বল.....?? 

-তমাল:: আমার কেন এতো অস্থির লাগছে বল তো....??

-আশিক চোখ ছোটো করে তমালের দিকে তাকিয়ে বলে 

-আশিক:: তোর শরীর খারাপ করেছে তুই ডক্টরের কাছে না গিয়ে এখানে কি করছিস....?? 

-তমাল:: আমার শরীর খারাপ করছে না। তবে কেন জানি মনে হচ্ছে আমার কাছের কেও আমার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। কাল সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারি নি। বুকের মধ্যে চিন চিন ব্যাথা অনুভব হচ্ছে। কেনো হচ্ছে এমন বল না আশিক.......?? 


-আশিক:: কি সব বলে যাচ্ছিস তোর কাছের কেও হারিয়ে যাচ্ছে মানে কার কি হয়েছে তুলির কি কিছু হয়েছে......?? 

-তমাল:: তুলি বিয়ে করছে। 

-আশিক:: ও ভালো তো তাহলে তুলিকে তোর ভালোবাসার কথা বলেছিস। 

-তমাল:: না তুলি রাহাতকে বিয়ে করবে। 

-তমালের কথায় আশিক যেন আকাশ থেকে পরলো হঠাৎ উচ্চস্বরে হাসতে শুরু করে


-তমাল:: কি হলো পাগলের মতো হাসছিস কেনো...?? 

-আশিক:: ( হাসতে হাসতে বলে) তুই হাসার মতো কথা বললে হাসবো না কি করবো তুলি করবে বিয়ে তাও অন্য কাওকে। 

-তমাল:: হ্যা বিশ্বাস কর তুলি নিজের মুখে বলেছে। 

-আশিক:: ওহ এতোক্ষণে বুঝলাম তোর অস্থিরতার কারণ। 


-তমাল:: বলনা কেনো হচ্ছে এমন 

-আশিক :: কারণ তুই তুলিকে ভালোবাসিস অন্য কারো সাথে তুলির বিয়ে হোক এটা তুই মানতে পারছিস না। 

-তমাল :: আমি ওকে ভালোবাসি না বিশ্বাস কর ওর জন্য আমার মনে কোনো অনুভুতি নেই। 


-আশিক:: তমাল তুই ভাঙ্গবি তবু মচকাবি না। ঠিক আছে বিশ্বাস করলাম তাহলে তুই বল তোর কষ্ট হচ্ছে কেনো....??

-তমাল:: জানি না আমি কেনো হচ্ছে এমন। 


-আশিক:: আমি কিছু বলবো না তুই নিজেই খুজে বের কর এমন হচ্ছে। আচ্ছা চল তোদের বাড়ি যাবো। 

-তমাল:: কেনো...??

-আশিক:: বারে তুলিকে অভিনন্দন জানাতে হবে না চল যাই। 


-তমাল:: আশিক একটা কথা রাখবি আমার...?

-আশিক:: কি কথা..?? 

-তমাল:: তুই তুলি কি বলনা এই ওযেনো এই বিয়েটা না করে। 

-আশিক::  আমি কেনো বলবো আর ও বিয়ে করবে না কেনো তুই তো ওকে ভালোবাসিস না তাহলে। 


-তমাল:: আমি এতো কিছু জানি না আমি এই বিয়ে হতে দিবো না। 

-আশিক:: নিজের ভালোবাসার কথা বলতে পারে না আবার এসেছে বিয়ে হতে দেবে না। চল তোর বাড়ি। 

-তমাল:: তুই যা আমি যাবনা। 

-আশিক:: আরে চল তো 


-----বাড়িতে------


তমালের খালামুনিরা এসেছে অনেকক্ষণ তুলি সবার সাথে কথা বলে মাত্র নিজের রুমে গিয়েছে। 

তমাল এসে সবার সাথে  বলে নিজের ঘরে যাওয়ার সময় আশিক বলে 

-আশিক:: তমাল তুই ঘরে যা আমি তুলিকে অভিনন্দন জানিয়ে আসি। 

-তমাল:: তোর যা খুশি কর। 


-আশিক :: আরে ভাই রাগ করছিস কেনো আচ্ছা আমি বলবো ওকে বিয়ে না করতে হয়েছে। 

-তমাল:: আমি তোকে বলেছি কিছু। 

-আশিক:: তোর বলতে হনে না আমি যাই। 

আশিক তুলির দড়জার সামনে গিয়ে দড়জায় টোকা দিয়ে বলে 


-আশিক:: আসতে পারি.....?? 

তুলি দড়জার দিকে তাকিয়ে বলে 

-তুলি:: আশিক ভাইয়া আপনি......?? আসুন ভেতরে আসুন। 

আশিক তুলির রুমে গিয়ে বলে 

-আশিক:: তুলি তুমি নাকি বিয়ে করছো......?? 

-তুলি:: হ্যা আপনাকে কে বললো.....?? 


-আশিক :: তমাল বলেছে। তুমি কি সত্যি এই বিয়েটা করবে....?? 

-তুলি:: হ্যা আমি তো চাই বিয়ে করতে কিন্তু আপনার বন্ধুই তো রাজি হচ্ছে না। 

-আশিক:: তুমি নাকি রাহাত নামের ছেলেটাকে বিয়ে করবে...??


--তুলি:: আমি ইশরাত জাহান তুলি মি: তমাল আহমেদকে ছাড়া যেখানে আর কারো কথাই ভাবতে পারি না সেখানে কোথাকার কোন রাহাত তাকে নাকি আমি বিয়ে করবো। 

--আশিক:: তাহলে তমাল যে বললো। 

-তুলি:: হ্যা আমরা একটা প্লান করেছিলাম যাতে তমাল ভাই কিছু বলে কিন্তু না সে কিছু বললো না তবে সবে তো খেলা শুরু দেখা যাক কি হয়। আপনি কিন্তু কিছু বলবেন না। 


-আশিক:: আচ্ছা। তবে ও কিন্তু কষ্ট পাচ্ছে। 

-তুলি::একটু কষ্ট পেতে দিন আমাকে তো আর কম কষ্ট দেয় নি। এবার একটু কষ্টর ভাগ  সেও নিক। 


এর মধ্যে তমাল সেখানে আসে। তুলি তমালকে দেখে শুনিয়ে শুনিয়ে বলে 


-তুলি:: ভাইয়া জানেন আমি এতোদিন মিথ্যে ভালোবাসার পিছনে ছুটেছি। তবে আজ আমি সত্যিকারে ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছি। সে বলেছে আমাকে নাকি অনেক ভালোবাসে বিয়ের পর আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে আর অনেক ভালোবাসবে ( আর চোখে তমালকে দেখছে আর মিটি মিটি হেসে বলছে কথা গুলো। তবে তুলির কথা গুলো তমালের বুকে তীরের মতো বিধছে )


ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবে। ধন্যবাদ। 


#চলবে 

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১০

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১০

#লিখনিতে_Rodela_Islam


-তমাল আম্মুর মুখের দিকে তাকিয়ে বলে 


-তমাল::তুলি কি রাজি এই বিয়েতে.....?? 


-লতা বেগম :: তুই জানিস কি না তা আমি জানি না ও তোকে ভালোবাসে তাই এই বিয়েতে প্রথমে মত দেয়নি তবে অনেক বুঝানোর পর রাজি হলো এই বিয়েতে। তুই কি বলিস...?? 


-তমাল::  তোমরা যা ভালো মনে করো তাই হবে। 


-লতা বেগম :: তুই এখনো কিছু বলবি না....??


-তমাল:: কি বলবো আমি....?? 


-লতা বেগম :: ছেলের কাধে হাত রেখে বলে ) তমাল তোর কিছু দিনের আচরণে আমি বুঝেছি তুই তুলিকে পছন্দ করিস তাহলে কেনো বলছিস না বাবা....??


-তমাল:: আমি নিজেও জানি আম্মু আমি ওকে ভালোবাসি কি না......??


-লতা বেগম :: ( দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে ) এখনো সময় আছে নিজের মনকে জিজ্ঞেস কর কি চায়.....?? আমি তোর মা তোকে জন্ম দিয়েছি তাই চাইনা তুই নিজের করা একটা ভুলের জন্য সারাজীবন কষ্ট পাস। সময় থাকতে সিদ্ধান্ত নে পরে অপছোস করেও লাভ হবে না। আসছি আমি তুই নিজেকে সময় দে আর ভাব কি করবি। 


তমালের আম্মু চলে গেলে তমাল কিছুক্ষন নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকে। বিরবির করে বলে এই জন্যকি তুলি বিকেলে বললো ও চলে যাবে না না এটা হতে পারে না ওতো আমাকে ভালোবাসে তাহলে ও কি করে অন্য কাওকে বিয়ে করতে পারে আমি জানি ও এমন কিছুই করবে না। তমাল তুলির ঘরে যায় কিন্তু ঘরে গিয়ে তুলিকে পায় না। তুলির ঘর থেকে বেরোতেই গিটারের টুংটাং শব্দ শুনতে পায়। তমাল ছাদের দিকে পা বাড়ায় তুলি গিটারে সুর তুলে গাইছে....


            কেনো রোদের মতো হাসলে না 

আমায় ভালোবাসলে না 

                  আমার কাছে দিন ফুরালেও আসলে না 

এই মন কেমনের জন্মদিন 

              চুপ করে থাকা কঠিন তোমার কাছে খ্ররোস্রতো গতি হিন 

              নতুন সকালগুলো কপাল ছুলো তোমারে 

দূরে গেলেও মেটায় সত্যি তুলি আমারি 

                    শুধু আমারি 

রোদের মতো হাসলে না 

                        আমায় ভালোবাসলে না 

আমার দিন ফুরালেও আসলে না 


( বাকিটুকু নিজ দায়িত্বে শুনে নিন )


-তমাল তুলির পিছনে দাড়িয়ে গান শুনছিলো 


-তমাল:: এতো কষ্টের গান কে গাইছিস তুলি। 


-তুলি:: পিছনে ঘুরে তমালকে দেখে বলে ) তুমি এখানে। 


-তমাল:: হ্যাঁ তোকে খুজছিলাম। 


-তুলি::কেনো কিছু বলবে......?? 


--তমাল:: তুলি তুই কি সত্যি রাহাতকে বিয়ে করতে রাজি। 


-তুলি:: তুমি বলো কি করা উচিৎ আমার...?? 


-তমাল:: তোর যদি ইচ্ছে হয় তাহলে বিয়ে করবি আমার কি তাতে। 


-তুলি:: তমাল ভাই তুমি একবার বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো তাহলে আমি অন্য কাওকে বিয়ে করবো না। 


-তমাল:: আমি আগেও বলেছি তোকে ভালোবাসি না। 


-তুলি:: আচ্ছা মেনে নিলাম ভালোবাসো নি আর বাসতেও হবে না আমি আর কোন দিন বলবো না তোমায় ভালোবাসি আর বিরক্ত করবো না। তুলি চলে যায় নিজের ঘরে। তমাল কি করবে ওতো নিজেও যানেনা ও তুলিকে কতটা ভালোবাসে। রাতে এক সেকেন্ডের জন্যও দু চোখের পাতা এক করতে পারে নি তমাল।  


------পরদিন সকালে -------


তুলি আজ আর ভার্সিটি যায়নি। মনটা খুব খারপ তুলি ভেবেছিলো বিয়ের কথা শুনলে হয়তো বলেবে না তাও হলো না। তুলি ইচ্ছে করে বাড়ির সবাইকে দিয়ে শুনিয়ে শুনিয়ে বলিয়েছে তুলি কিন্তু কিছুই হলো না। তাই মন খারাপ করে বসে আছে সোফায়। 


-রাহেলা বেগম::( মেয়ের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে ) কি হয়েছে মা মন খারাপ কেনো....??


-তুলি:: কিছু হয়নি আম্মু। 


-রাহেলা বেগম:: মন খারাপ করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে আর তুই তো ভালোকরেই বুঝতে পারছিস তমাল তোকে পছন্দ করে। 


-তুলি:: আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বলে ) তাহলে কেনো বলছেনা আম্মু......??


-রাহেলা বেগম:: ওকে একটু সময় দে মা ওকে বুঝতে দে সময় হলে নিজেই বলেবে তোকে ভালোবাসার কাথা। 


-তুলি:: হ্যা ভালোবাসা বুঝতে বুঝতে আমিই না মরে যাই। 


-রাহেলা বেগম:: এসব কি কথা এমন কথা আর বলবি না  মা। 


-তুলি:: আচ্ছা বলবো না। 


তমাল ভার্সিটিতে গিয়েও শান্তি পাচ্ছে না কেনো জানি মনে হচ্ছে ওর কাছের কিছু হারিয়ে যাচ্ছে কেমন অস্থির অস্থির লাগছে। সে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আশিকের বাড়িতে যায়। কলিং বেল দিলে আশিকের আম্মু এসে দড়জা খুলে দেয় 


-তমাল:: আসসালামু আলাইকুম আন্টি কেমন আছেন....?? 


আশিকের আম্মু :: ওয়াআলাইকুম সালাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো বাবা....??


-তমাল:: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আন্টি। 


-আশিকের আম্মু :: ভেতরে আসো বাবা। 


-তমাল:: আন্টি আশিক আছে বাড়িতে। 


-আশিকের আম্মু :: হ্যাঁ ও ঘরে আছে যাও। 


তমাল আশিকের রুমে চলে যায়। আশিক তমালকে দেখে বলে 


আশিক:: তমাল তুই এখানে। 


-তমাল:: তোর সাথে আমার কথা আছে। 


ভালোলাগলে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবে। ধন্যবাদ। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ৯

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_০৯

#লিখনিতে_Rodela_Islam


-তুলি তমালকে আটকিয়ে বলে 


-তুলি:: কি করছো কি ও মরে যাবে তো। 


-তমাল:: ওকে আমি মেরেই ফেলবো ওর সাহস হয় কি করে তোকে ধরার তোকে ভালোবাসার কথা বলার। 


তমাল আবার মারার জন্য এগোতে যায় তুলি অনেক কষ্টে তমালকে নিয়ে সরে আসে সেখান থেকে। তমালের হাতে মার খেয়ে ছেলেটা অবস্থা নাজেহাল নাক মুখ দিয়ে রক্ত পরছে সাকিবের বন্ধুরা ওকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। 


-তুলি:: তমাল ভাই শান্ত হও প্লিজ। তুলি নিজের ব্যাগ থেকে পানির বোতল নিয়ে তমালের হাতে দেয়। তমাল কিছুটা পানি খেয়ে শান্ত হয়ে তুলিকে নিয়ে বাড়ির উদ্যেশে রওনা দেয়। তুলি এতো টুকো বুঝতে পেরেছি মুখে যাই বলুক তমালও তুলিকে পছন্দ করে । তা ভেবে মনে আনন্দ হয়। 


-----বাড়িতে------


তমাল ঘরে বসে কাজ করছিলো তখন তুলি আসে তমালের রুমে 


-তুলি::আসবো। 


-তমাল:: হুম আয়। 


-তুলি:: ঘরে গিয়ে ঘাটের উপর বসে  চকলেট খাচ্ছে আর পা দোলাতে দোলাতে বলে ) তুমি কি বেশি ব্যাস্ত। 


-তমাল:: না কিছু বলবি....??


-তুলি:: হুমমম। 


-তমাল:: কি বলবি বল। 


-তুলি:: আগে তুমি কাজ শেষ করো তারপর বলবো। 


-তমাল কাজ রেখে তুলির পাশে বসে বলে 


-তমাল:: আমার কাজ শেষ বল কি বলবি....?? 


-তুলি:: আমি না ভেবে দেখলাম তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না শুধু আমিই ভালোবেসেছি তাই ভাবলাম.....


-তমাল ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে 


-তমাল::কি বলতে চাচ্ছিস স্পষ্ট করে বল। 


-তুলি:: তুলি আমাকে ভালোবাসোনা আর মনে হয় না কখনো ভালোবাসবে বলে তাই ভাবলাম আমি এই সাকিব নামের ছেলেটার প্রোপজাল এক্সেপ্ট করে নিবো। 


-তমাল তুলির দুই বাহু শক্ত করে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দাতে দাত পিষে বলতে শুরু করে 


-তমাল:: একটা কথা মাথায় ঢুকিয়ে নে তুই আমাকে ভালোবাসিস মানে আমাকেই বাসবি আমি ভালো না বাসলেও তুই বাসবি আমাকে ছাড়া আর কাওকে তুই ভালোবাসতে পারবি না। 


-তুলি::ব্যাথা পাচ্ছি তমাল ভাই। 


-তমাম তুলিকে ছেড়ে দিয়ে বলে তুই যদি আর একবার এই ছেলের কথা বলেছিস তাহলে এই ছেলেকে তো মারবোই সাথে তোকেও মেরে ফেলবো। 


-তুলি:: নিজেও ভালোবাসবে না আর কাওকে বাসতেও দিবে না। 


-তমাল:: না দিবে না ঘরে যা। 


-তুলি::হুম যাচ্ছি। 


তুলি চলে গেলে তমাল সেখানে বসেই রাগে ফুসতে থাকে। 


এভাবেই আরো মাস খানিক কেটে যায়। তমালও তুলিকে ভালোবাসতে শুরু করে আস্তে আস্তে। এখন আর আগের মতো কথায় কথায় বকা দেয়না মারে না রেগে যায় না। তুলিও বেশ বুঝতে পারে তমালও তুলিকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। তমাল তুলির সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না। হুটহাট তুলির রুমে গিয়ে তুলিয়ে দেখে আসবে। তুলি ঘুমলে রাতে ওর পাশে বসে একা একাই কথা বলবে তুলিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে থাকবে। তুলির কাছে মাঝে মধ্যে ধরা পড়ে যায় তখন নানা বাহানা দিয়ে চলে যায়। আর তুলি মনে মনে হাসে। তমাল ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় তুলিকে নিয়ে যাবে সাথে করে। তুলির সাথে নরম সুরে কথা বলবে। তমালের এমন ব্যবহারে বাড়ির সাই অবাকের চরম পর্যায়ে চলে গেলে কেও বিশ্বাস করতে পারছে না তমালের এই আচরণ তুলির প্রতি। 


---একদিন বিকেলে---


তমাল ছাদে বসে কারো সাথে কথা বলছিলো। তুলি এসে ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাড়িয়ে তমালকে দেখতে থাকো । 


-তমাল::কি হয়েছে তাকিয়ে আছিস কেনো।


-তুলি:: আমি তোমাকে একটা কথা বলতে এসেছি কথা শুনলে তুমি অনেক খুশি হবে। 


-তমাল:: কি কথা বল....?? 


-তুলি:: তোমার জন্য আনন্দের কথাটা হলো আমি আর বেশি দিন থাকবো না এবাড়িতে। 


-তমাল কপালে কয়েক স্তর ভাজ ফেলে বলে


-তমাল:: মানে কোথায় যাবি......??


-তুলি::এটা না হয় সারপ্রাইজ হয়েই থাকলো তোমার জন্য তবে আমাকে অনেক মিস করবে তুমি। 


-তমাল:: এতো ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা না বলে কি হয়েছে সেটা বলবি...??


-তুলি:: কিছু না তুমি কাজ করো আমি আসছি। তুলি নিজের ঘরে চলে যায়। তমাল বসে বসে ভাবতে থাকে তুলি কেনো এমন কথা বলে গেলো কিছু কি হয়েছে ওর নাকি। রাতে তমাল নিজের ঘরে বসে ছিলো তখন তমালের আম্মু ওর ঘরে আসে। 


-লতা বেগম:: তমাল তুই কি ব্যাস্ত। 


-তমাল:: না কেনো আম্মু......??


-লতা বেগম:: কাল তোর খালামুনিরা আসবে। 


-তমাল:: সবাই আসবে.....??


-লতা বেগেম :: হ্যা । 


-তমাল:: রাহাতও কি আসবে...??


-লতা বেগম :: হ্যা ওরা সবাই আসবে কিছুদিন থাকবে ওরা। তাই বলছিলাম কাল ভার্সিটি থেকে তাড়াতাড়ি আসিস। আচ্ছা রাহাতকে কেমন মনে হয় তোর....??


-তমাল::মানে বলতে চাচ্ছি তোর মামনি বলছিলো তুলির সাথে রাহাতকে মানাবে। 


-তমাল এই কথা শুনে রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে যায় কিন্তু কিছু বলতে পারে না। 


-তমাল:: কি বলছো এসব। 


-লতা বেগম :: দেখ আমরা ভেবেছিলাম তোর সাথে তুলির বিয়ে দিবো কিন্তু তুই তো ওকে পছন্দই করিস না তাই রাহাতের সাথেই তুলির বিয়ে দিয়ে দিবো। 


ভালোলাগলে আইডিতে গিয়ে লাইক কমেন্ট সেয়ার করে আসবেন। ধন্যবাদ। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম