গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১২

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_১২

#লিখনিতে_Rodela_Islam


-আশিক:: তুলি তুমি একটু ভেবে দেখো। 

-তুলি:: আমি ভেবে নিয়েছি কি করবো আর কিছু ভাবার নেই। ভাইয়া নিচে চলুন আপনাকে আমার হবু হাসবেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। আর হ্যা আজ দুপুরে কিন্তু খাওয়া দাওয়া করে যাবেন আপনি আসুন আমি যাই বলেই তুলি নিচে চলে যায়। 


-আশিক::( তমালের কাধে হাত রেখে বলে ) আমি ওকে বুঝিয়েছি ও বলেছে তুই যদি নিজের মুখে বলিস ওকে বিয়ে না করতে তাহলে ও নিজে বিয়েটা ভেঙে দিবে ভেবে দেখ কি করবি। 


-------দুপুরে-------


সবাই খাবার টেবিলে উপস্থিত  তুলির পাশে রাহাত বসেছে এটা ভালোলাগছে না। তমালের তাও কিছু বলতে পারছে না চুপ চাপ বসে আছে আশিকের পাশে আর একটু পর পর তুলিকে দেখছে তুলি রাহাতের সাথে হাসতে হাসতে কথা বলছে আর খাচ্ছে  রাহাত তুলিকে এটা ওটা খাবে কিনা জিজ্ঞেস করছে তা দেখে তমালের আর স্যহ হচ্ছে না সে খাবার রেখেই ঘরে চলে যায়। তমাল কেনো এমন করলো তা কারো অজানা নয়। তুলি খাওয়া শেষ করে তমালের ঘরে যায় গিয়ে দেখে দুহাটু ভাজ করে মাথা নিচু করে বসে আছে 


-তুলি:: কি মি: তমাল খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না......??


তমাল মাথা উঠিয়ে দেখে তুলি ওর সামনে বসে আছে ওর দিকে তাকিয়ে  


-তমাল:: আমার কেনো কষ্ট হবে 


-তুলি:: আমি তো এতোদিন তোমাকে ভালোবেসেছি তাই একটু হলেও বুঝি তোমার কষ্টটা কিন্তু কিছু করার নেই আমার। 


-তমাল::  আমার কোন কষ্ট হচ্ছে না তুই তোর কাজে যা। 


-তুলি:: হুম সেটাতো তোমার চোখে মুখেই ফুটে উঠেছে। যাগ্গে আমি তোমাকে একটা জিনিস দেখাতে এসেছি ( বলে তুলি নিজের হাতটা তমালের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে ) এটা রাহাত আমাকে নিজের হাতে পরিয়ে দিয়েছে সুন্দর না। আর বলেছে বিকেলে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যাবে। আমার তো খুব আনন্দ হচ্ছে । আমি আর রাহাত একা ঘুরতে যাবো খুব মজা হবে। উফফ লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে। 


তুলির কথা গুলো কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো কাজ করেছে। 


-তমাল:: তুই কি এসব বলতে এখানে এসেছি তুই আর কখনো আমার রুমে আসবি না চলে যা আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যা। (রাগে চিৎকার করে বলে ) 


-তুলি:: আরে আরে রাগ করছো কেনো আমার হবু বর আমাকে কি দিলো সেটা তোমাকে দেখাবো না তুমি তো আমার বড় ভাই হও বলো।


-তমাল আর নিজের রাগ কন্টল করতে না পেরে গাল চেপে ধরে বলে 

-তমাল:: তোকে আমি বারন করেছিলা আমার সামনে অন্য কোন ছেলের নাম নিবি না তুই তাই করছিস বারবার। 


-তুলি:: আহ: ব্যাথা পাচ্ছি ছেড়ে দাও। 


-তমাল:: তুলির গাল থেকে হাত সরিয়ে বলে ( বেরিয়ে যা আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যা তোকে আমার চোখের সামনে দেখতে চাই না )


-তুলি:: চলেই তো যাবো আর কদিন পরে তোমার জীবন থেকে একে বারের জন্য আর কোন দিন ফিরে আসবো না তখন আমাকে হাজার ডেকেও পাবে না। এখন আর কি কষ্ট পাচ্ছ তখন তার থেকেও হাজার গুন কষ্ট বেশি পাবে। ( তুলি আর না দাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে যায় )


তমাল রাগে নিজের ঘরের জিনিস পত্র ছুড়ে ফেলছে। 

-তমাল:: আমি বেঁচে থাকতে তোকে কোথাও যেতে দিবো না আমি তোকে ভালোবাসি আর না বাসি তাও তুই আমার সাথে আমার বাড়িতে থাকবি যেতে দিবো না তোকে আমি কোথাও যেতে দিবো না। 


কিছুক্ষন একা একা বিরবির করে শান্ত হয়ে যায়। মেঝেতে বসে খাটে মাথা এলিয়ে দিয়ে বসে থাকে এক সময় ঘুমিয়ে পরে। কেও একজন এসে তমালের পাশে বসে তমালের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে বলতে শুরু করে 


-তুলি:: খুব বেশি কষ্ট পাচ্ছ কি তুমি আমাকে যতটা কষ্ট দিয়েছো নিশ্চয়ই তার থেকে বেশি না। আমি তো ভেবেছিলাম তার থেকেও বেশি কষ্ট দিবো কিন্তু তা পারবো না আমি তোমার ব্যাথায় যে আমি ব্যাথিতো হই। তোমাকে বেশি কষ্ট দিবো না তোমাকে তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমি নিজেও যে ভালো নেই। তবে তুমি আমাকে যেই কষ্ট দিয়েছো তার কিছুটা তোমাকেও পেতে হবে। এই দুটো বছর আমি শান্তিতে দুচোখের পাতা এক করতে পারি নি। চোখ বুজলেই মনে হতো তুমি চলে যাবে আমায় রেখে কত রাত কেঁদেছি তোমার জন্য তোমার ভালোবাসার জন্য। এবার একটু তুমিও কাঁদো। আমার ভালোবাসা। তবে এই তুলি তোমাকে ছুয়ে কথা দিচ্ছে তোমাকে ছাড়া আর কাওকে নিজের জীবনে জায়গা দিবে না। তোমার তুলি তোমারি থাকবে। আরো কিছুক্ষন থেকে চলে যায় ঘরে। 


-----বিকেলে-----


-তুলি নিজের রুমে বসে রেডি হচ্ছিল ঘুরতে যাওয়ার জন্য তখন তমাল আসে তুলির ঘরে হাতে এক কাপ কফি। তমাল তুলির সামনে কফির কাপটা রাখে। তুলি চোখ তুলি তাকায় অবাক হয়ে বলে 


-তুলি:: তমাল ভাই তুমি কফি নিয়ে এলে যে। 


-তমাল:: তুই তো মামনীকে বললি আর মামনী আমাকে দিয়ে পাঠালো। 


-তুলি:: ওহ আচ্ছা আর কিছু বলবে নাহলে তুমি একটু বাইরে যাও আমি রেডি হবো। 


-তমাল:: হ্যাঁ অবশ্যই। মনে মনে যতো ইচ্ছে রেডি হ কিন্তু তুই কোথাও যেতে পারবি না জানপাখি।  আমার সাথে গেলে কিছুই করতাম না কিন্তু তুই অন্যএকটা ছেলের সাথে যাবি আর আমি বসে বসে দেখবো তা হতে পারে না। ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি রেখে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। 


-তমালের আচরণে একটু সন্দেহ হয় তুলির কিন্তু কিছু বুঝতে পারে না কফিটা খেয়ে তৈরী হয়ে নিচে নামে কালো রঙের একটা গ্রাউন পরেছে চুলগুলো ছাড়া হালকা মেকাপ করা গোলাপি লিবিস্টিক দেওয়া ঠোঁটে। দেখতে অপূরুপ সুন্দর লাগছে তমালের জানপাখিকে। তমাল সোফায় বসে ছিলো তুলিকে দেখে চোখ আটকে যায় তুলির দিকে। 


কোথা থেকে রাহাত এসে বলে


-রাহাত:: তোমাকে তো খুব সুন্দর লাগছে। 


-তুলি:: ( আর চোখে তমালের দিকে তাকিয়ে বলে ) Thank you ( লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে )


রাহাত:: কিন্তু তোমার চোখ মুখ এমন দেখাচ্ছে কেনো......??


-তুলি:: বুঝতে পারছি না মাথাটা কেমন ভার ভার লাগছে আর ঘুম পাচ্ছে। 


রাহাতের একটা ফোন আসায় রাহাত কথা বলতে একটু দূরে যায় । তুলি গিয়ে তমালের পাশে সোফায় বসে মাথা এলিয়ে দেয় তমালের কাধে  তমাল কিছু বলে চুপ করে বসে আছে। তমাল তুলির দিকে তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে। ১৫ মিনিট পর রাহাত এসে দেখে তুলি তমালের কাধে ঘুমিয়ে আছে রাহাত ডাকতে গেলে তমাল বাধা দিয়ে বলে


-তমাল::  দেখছো না ও ঘুমোচ্ছ আর ওর শরীর খারাপ তাই যাবে না বলেছে। তুলিকে কুলে তুলে নিয়ে হাটা ধরে তুলির রুমের দিকে। 


#চলবে

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

0 Comments:

Post a Comment