গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ২০

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ২০


"পিচ্চি পাকনামি করতে হবে না। চুপচাপ থাকবে। আমি ব্রেকফাস্ট করে দিয়ে গেলাম। খেয়ে নিবে। আর একটু পর আমেনা আন্টি আসবে যা খাবে বলে দিবে উনি তোমায় রান্না করবে দিবে। অসুবিধা হলে জানাবে আমায়। সাবধানে থেকো আসছি।"


রাজ কথা গুলি শেষ করে রানির দিকে ঝুঁকে পড়ে। ফলে রানির মাথা একটু হেলিয়ে দেয়। 


রাজ মুচকি হেসে রানির ঘাড়ের পেছনে হাত দিয়ে নিজের দিকে টেনে নেয়। কপালে চুমু দিয়ে রাজ সোজা রানির ঠোঁটে চুম্বন করে বসে। 

রানি বেচারা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে। 


রাজ উঠে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসে। তারপর চলে যায়। 


"ডেভিল রাক্ষস এমন কেন? উনি আস্তো পঁচা। না হলে আমায় এমন ভাবে ঠকাতে পারল? কি করে করল এমন টা? আরেক টা বিয়ে করে দিব্যি আমায় বিয়ে করে নিল। তাহলে ওই মেয়ে টার জীবন কেন নষ্ট করল? না বিষয়টা একটু দেখতে হবে।"


রানি নিচের দিকে যায়। বড় টেবিলের উপর খাবার দেখতে পায়। তাড়াতাড়ি করে সেখানে বসে গপগপ করে খাবার খেতে থাকে। 


রাজ রানির এমন খাওয়ার ভাব দেখে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে। 

তার বাসা পুরো টা সিসি ক্যামেরায় আবদ্ধ। রানি কে দেখছে আর মুচকি হাসছে রাজ। 


একটু পর আমেনা চলে এলো। রানি কে দেখে তো তিনি অবাক। 


"মা তুমি?"

"আ আপনি?"

"রাজ বাবা আমার কথা কিছু বলেনি তোমায়?"


রানি মনে মনে ভাবে এটাই হয়তো আমেনা আন্টি।


"আপনি আন্টি না?"

"হ্যাঁ মা রাজ বাবা আমায় আমেনা আন্টি বলেই ডাকে।"

"ও।"

"হুম। নাস্তা করেছো?"

"জ্বি।"

"আরো কিছু খাবে?"

"না আন্টি আমার লাগলে আমি বলে দিব।"

"ঠিক আছে।"


আমেনা আন্টি ভেতরে গেলে। রানি বসে বসে টিভি তে কার্টুন দেখছে। 

হঠাৎ তার মনে হলে আমেনা আন্টি কে জিজ্ঞাস করলে অনেক কিছু পাওয়া যাবে। তাই তাড়াতাড়ি সে রান্নাঘরে যায়। 


"আন্টি আন্টি।"

"হ্যাঁ মা কিছু লাগবে?"

"না। আচ্ছা আন্টি আপনি এখানে আছেন কত দিন?"

"অনেক বছর সেই রাজ বাবা ছোটকাল থেকেই আছি।"

"তাহলে আপনি অনেক কিছুই জানবেন উনার সম্পর্কে।"

"....

"না মানে আচ্ছা বাদ দিন। আন্টি উনার কি আগে বিয়ে হয়েছিল?"

"কি বলো এই সব তুমি? রাজ বাবা তোমায় খুব ভালোবাসে। অন্য বড়লোক ছেলেদের মতো রাজ বাবা আজ পর্যন্ত তুমি ছাড়া কাউকেই বাসায় আনেনি।"

"....

"কি ভাবছো তুমি?"

"ন না আন্টি কিছু না।"


রানি তাড়াতাড়ি করে সেখান থেকে চলে আসল। 


মনে মনে বলতে থাকে,

"তাহলে? উনি কি সত্যিই বিয়ে করে নি? নাকি আন্টি জানে না? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। কি হচ্ছে এই সব? সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে আমার।"


রানি ভাবতে ভাবতে সকাল পার করে দুপুর গড়িয়ে দিল। 


কলিংবেল বাজচ্ছে আমেনা রান্নাঘরে। তাই রানি ভাবতে ভাবতে গিয়ে দরজা খুলে দিল। সামনে তাকিয়ে দেখে রাজ হাতে এত্তগুলি আইসক্রিম নিয়ে এসেছে। 


রাজ কে পাত্তা না দিয়ে রানি এক লাফ দিয়ে সেই গুলি নিয়ে সোফার দিকে দৌড়ে যায়। 


রাজ ঠোঁট উল্টিয়ে হেসে দরজা লক করে বাসার ভেতরে যায়। 


রানি কিছু না বলে বা না ভেবেই আইসক্রিম খাওয়া শুরু করে। পাশে বসে রাজ গালে হাত দিয়ে হা করে দেখছে। 

রানির সেই দিকে কোনো নজর নেই। সে বাচ্চাদের মতো আইসক্রিম খাওয়াতেই ব্যস্ত।


তার সামনে যে একজন সুদর্শনে পুরুষ যে কি না তার হাজবেন্ট। সে বসে আছে তাকে দেখছে সে দিকে তার নেই ভ্রুক্ষেপ। সব সময় সে যেভাবে আইসক্রিম খায় সেই ভাবে খাচ্ছে। 


রাজ হঠাৎ রানির ঘাড়ের পেছনে হাত দিয়ে মুখ এগিয়ে আনে। 

ঠোঁটের পাশে লেগে থাকা আইসক্রিম টা সে জিহ্ব দিয়েই চুষে নেয়। তারপর রানি কে ছেড়ে দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। 


রানি শুকনো ঢুক গিলে। লজ্জায় আইসক্রিম গুলি নিয়ে সেখান থেকে উঠতে গেলে রাজ তার হাত ধরে বসিয়ে দেয়। 


রানি রাজ কে পিছন করে বসে। রাজ রানির সামনে গিয়ে বসে তাকে দেখছে। 


রানি আবার উল্টো হলে রাজ তার সামনে যাচ্ছে। তিন চার বার এমন করার পর রাজ নিজের এক হাত দিয়ে রানি কে টেনে তার গায়ের সাথে মিশিয়ে বসায়। 

"চুপ করে খাও।"


রানি কিছু না বলেই খাওয়া নিয়ে পড়ে যায়। 


"তুমি কি ভরাসিয়াস। কি পেটুক। আমি সামনে আছি তবুও আমাকে বলছো না "


রাজ অন্য দিকে মুখ গুরায়। রানি তার দিকে তাকায়।

"আপনি খাবেন?"

"....


রাজ আড় চোখে তাকে দেখছে রানি অন্য একটা আইসক্রিম নিতে গেলে রাজ তার হাতে থাকে মুখ লাগানো আইসক্রিম নিয়ে নেয়। 

তারপর রানির ঠোঁট লাগানো সেই আইসক্রিম খাওয়ায় মেতে উঠে। 


দুজন এক সাথে বসে সব গুলি আইসক্রিম খেয়ে নেয়। 


রাজ রানির দিকে তাকালে দেখে রানি চোখ বন্ধ করে নিজের আঙ্গুল চুষছে। 


রাজ রানির দিকে এগিয়ে গিয়ে পুনর্বার রানির ঠোঁটে লেগে থাকা আইসক্রিম খেয়ে নেয়। মিটমিট করে হেসে রাজ উপরের দিকে চলে। 


রানি ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে বাহিরের আবহাওয়া দেখছিল। 

রাজ গিয়ে তাকে কোলে তুলে নেয়। 


রানি হাত পা ছুড়াছুড়ি করছে। আর ভাবছে না জানি রাজ কি করে বসে এখন। 


রাজ তাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে একটা চেয়ার টেনে নিজে বসে। ট্রে থেকে প্লেট টেনে রানির মুখের সামনে খাবার ধরে। 


"হা করে।"

"....

"কি হলো? হা করো।"


আগের কথা মনে করে রানি মুখ গোমরা করে অন্য দিকে মুখ ফিরায়। 

"না খাবো না আমি।"

"খাবে না?"

"না।"

"না তো?"

"নাআআ।"


রাজ সুযোগ বুঝে রানির মুখে খাবার তুলে দেয়। 

খাবার মুখে নিয়েই অস্পষ্ট সুরে রানি বলে,

"আমি বললাম না.."


"শুহহ একটাও কথা নয়। চুপ করে খেয়ে নাও।"


অজ্ঞাত রানি চুপ করে রাজের হাতে খেয়ে নেয়। পানি খায়িয়ে দিয়ে রাজ মুখ মুছে দেয় তার। 


ট্রে নিয়ে যাওয়ার আগে একটু ঝুঁকে রানির কপালে ভালেবাসার পরশ দিয়ে চলে যায়। রানি অবাক হয়ে রাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। 


নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে,

"আমি কোনো ভুল ধারণা নিচ্ছি না তো? মানুষ টা কে আমি কষ্ট দিচ্ছি না তো? সত্যিই কি এই ভালোবাসার মাঝে কোনো খাঁদ থাকতে পাড়ে? সত্যিই উনি আমার সাথে এমন করতে পাড়ে কি?"


চলবে....


(দুঃখিত দেরি করে দেওয়ার জন্যে ব্যস্ত ছিলাম। আশা করি গঠনমূলক কমেন্ট পাবো আমার পাঠকদের থেকে😊)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ১৯

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ১৯


রানি এখন কি করবে বা রাজ কে কি বলে সান্ত্বনা দিবে তা তার জানা নেই। 


সে শুধু স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু বুকের ভেতর খুব ব্যথা লাগছে। রাজ কে সে নিজের দুই হাতে আকঁড়েও ধরছে না। শান্ত ভাবে শুধু দাঁড়িয়ে আছে। 


রাজ রানি কে আরো শক্তে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে কান্না করে বলতে লাগল,

"প্লিজ ডোন্ট লিভ মি। আমি মরে যাবো। প্লিজ রানি প্লিজ ডোন্ট লিভ।" 


রাজের এমন কাতর সর রানির মন কে ব্যাকুল করে দিচ্ছিল। 


রানি নরম হাতে আস্তে করে রাজ কে নিজের হাতে আবদ্ধ করে নেয়। রাজ রানি কে খুব শক্তে জড়িয়ে ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিয়ে কান্না করছে তো করছেই। 


রানির নরম মন মুহূর্তে মুহূর্তে কেঁদে উঠছে। চোখের কোণায় পানি ঝিকঝিক করছে। 


"জানো ছোট বেলায় মা চলে গেছে আমায় ছেড়ে। বাবাও একা করে চলে গেল। আমার বলতে এখন শুধু তুমি আছো। আর কেউ নেই। দুনিয়াতে আমার আর কিচ্ছু নেই। প্লিজ রানি আমায় ছেড়ে যেও না। প্লিজ ডোন্ট লিভ মি। বিশ্বাস করো আমি মরে যাবো।"


রাজের প্রতিটা কথায় রানি কেঁপে কেঁপে উঠছে। 


রাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলতে লাগল,

"শান্ত হোন। যাবো না। কোথাও যাচ্ছি না আমি।"


রাজ রানি কে বুক থেকে তুলে গালের দুই পাশে হাত রাখে। 

"সত্যিই যাবে না তো? প্রোমিজ করো যাবে না আমায় ছেড়ে।"


রানি মাথা নেড়ে "হুম" জবাব দেয়। 


রাজ রানির নরম ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। নিজের আষ্টেপৃষ্ঠে ঠোঁটযোগল জড়িয়ে নিয়েছে। রানি চোখ বড় বড় করে আছে। রাজ চোখ বন্ধ করে নিজের কাজে ব্যস্ত।

রাজের এমন মায়াময় মুখ দেখে রানির ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। রাজ কে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। 


রাজ বেশ সময় পর রানি কে কোলে করে বিছানায় নিয়ে যায়। দুজন এই দুনিয়ার বাহিরের জগতে বিরাজ করছে। দুনিয়ার কোনো খেয়াল এখন আর কাজ করছে না তাদের মাঝে। তারা তো দুজন দুজনের ঘোরে সময় কাটিয়ে দিচ্ছে। রানি কে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে রাজ নিজের সাদা শার্ট গা থেকে সরিয়ে শরীর উন্মুক্ত করে নেয়। রানির দিকে অগ্রসর হয়। রানির দুই ঠোঁটের মধ্যখানে নিজের ঠোঁট জায়গা দেয়। রানির হাতের মাঝে নিজের হাত রাখে। আঙ্গুলের মাঝে মাঝে আঙ্গুল দিয়ে হাতে হাত জড়িয়ে নেয়। 


রানির গলায় নিজের মুখ ডুবায়। ক্রমশ রানির সারা অঙ্গে নিজেকে স্থাপন করে নেয় রাজ। রানি কে আজ পরিপূর্ণ এক অন্যরকম ভালোবাসার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে রাজ। 


রানি কে নিয়ে ভালোবাসার চূড়ান্ত পর্যায় উপনীত হতে লাগে রাজ। ভালোবাসার অতল সাগের রানি কে নিয়ে রাজ ডুবে যাচ্ছে। 

রানিও যেন পরম সুখে রাজের উন্মুক্ত পিঠ নখ দিয়ে আঁকড়ে ধরছে। সুখের এক ভিন্নরকম ঠিকানায় দুজন পারি দেয়। 


সকালের সোনালি রোদ যখন রানির চোখ স্পর্শ করে রানি তখন মিটমিটিয়ে উঠে। 


সামনেই তাকিয়ে দেখে ধবধবে সাদা শরীরের অধিকারী রাজ তাকে জড়িয়ে নিয়ে শুয়ে আছে। গায়ে নেই কোনো সুতা। উন্মুক্ত বুকের দিকে রানি তাকিয়ে ঘনঘন চোখের পাতা নাড়ছে। রাজের চুল গুলি কপালে এসে পড়ছে। চিকন জাম কালো ঠোঁটের মাঝে কি রাজ্যের শান্তির আভাস। 


রানি কে আকঁড়ে শুয়ে আছে। রাজ কে এমন অবস্থায় দেখে রানির বুকের ভেতর ধুকবুক শুয়ে হয়ে যায়। 


টুক করে রাজের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বুলিয়ে দেয়। রাজ একটু নড়েচড়ে উঠলে তাড়াতাড়ি করে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়ে রানি। রাজ আরো শক্তে নিজের বাহুডোরে তুলে নেয় রানি কে। 


রানি আস্তে আস্তে খেয়াল করল তার শরীর ঠিক নেই। মুহূর্তে সব মনে পরতে লাগল তার। 

নিজের মাথায় নিজেই একটা চর দিয়ে বিড়বিড় করতে লাগল,

"ইসস কি করলাম আমি? কি হয়ে গিয়ে ছিল আমায়? আল্লাহ। তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে নিতে হবে। না হলে ডেভিল রাক্ষস আবার না জানি কি করে বসে।"


রানি উঠতে গেলে রাজ তাকে টেনে আবার শুয়িয়ে দেয়। 


রানি শুকনো ডুক গিলে চোখ বন্ধ করে নেয়। রাজ মিটমিট করে তাকিয়ে রানি কে দেখে একটা মুচকি হাসি মারে। 


সামনের চুল গুলি কানের পাশে গুঁজে দিয়ে মুচকি হাসি হাসতে থাকে। রানির লাল ঠোঁটে আলতো করে একটা কিস দেয়। রানি সাথে সাথে চোখ খুলে তাকায় রাজের দিকে। 

রাজ এক গালে জগৎ জয়ের একটা হাসি দেয়। 


রানি রাজ কে ঠেলে দিয়ে চাদর জড়িয়ে নেয় শরীরে। তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়। 

"একদম আমার কাছে আসবেন না আপনি।"


রানির কথায় রাজ জবাব না দিয়ে অন্য দিকে ফিরে মুচকি হাসতে লাগে। 


রানি কিছু না বলে ওয়াশরুমের দিকে চলে যায়। 


"ওয়েট। ফ্রেশ হয়ে এসে পড়বে টা কি? নাকি আমার মাথা আরো বিগড়ে দেওয়ার চিন্তায় আছো?"

রাজ কথাটা শেষ করে জোরে হাসি দেয়। 


রানি ভ্রু ঠোঁট কুঁচকে রাজের দিকে তাকায়। কিছু বলতে গিয়েও বলে না। ভাবতে থাকে "আসলেই তো আমি বাসা থেকে কিছুই আনি নি পড়ব টা কি? এখন কি.. ছিঃ ছিঃ।"


রানির এমন মুখ দেখে রাজের খুব হাসি পায়। 

মুখে দুই আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট টিপে টিপে হাসতে থাকে। 


রানি মন খারাপ করে সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।  


"আলমারি তে দেখো এক সাইডে তোমার যা যা লাগার সব আছে। ওখান থেকে যেটা মন চায় সেটা নিয়ে ওয়াশরুমে যাও।"


রাজের কথায় রানির বেশ অবাক লাগে। লোক টা নজর কেমন। সব দিকে নজর রাখে গ্যাংস্টার টা। হয়তো কাল কেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল। এই সব তো রাজ চৌধুরীর কোনো ব্যপারই না। 


রানি আলমারি থেকে তাড়াতাড়ি হাতের সামনে যা পেয়েছে তা নিয়েই ওয়াশরুমে দৌড়।

রানির এমন দৌড় দেখে রাজের খুব হাসি পায়। খুব করে হাসেও। 


রানি কালো একটা শাড়ী পড়ে বের হয়েছে। সাথে লাল গোলাপির একটা ব্লাউজ। লম্বা চুল দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। সাদা মুখ টা বেশ শুভ্র লাগছে। 


রানি সামনে এগিয়ে গিয়ে পর্দা সরিয়ে দেয়। কাঁচের ও পাশ থেকে রাজের লাগানো সবুজ এত বড় বড় গাছ দেখা যাচ্ছে। শুধু সবুজ আর সবুজ। রোদের দেখা দিচ্ছে। রানি এমন দৃশ্যের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়। তারপর চুলের টুপটুপ করে পানি টাওয়াল দিয়ে মুচতে থাকে। 


রাজের চোখ যেন রানির দিকেই আটকে আছে। শাড়ী তে রানি কে বেশ লাগছে। 

মোহ ভরা চোখ নিয়ে রাজ বিছানা ছাড়ে।


রানির পেছনে হাত পেঁচিয়ে তাকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। ভেজা চুলে মুখ ডুবায়। রাজের ছুঁয়ায় রানি শিউরে উঠছে। শরীর কেঁপে জ্বর আসলে যেমন হয় তারো তেমনি হচ্ছে। উষ্ণ রক্ত যেন আরো গরম হতে থাকে। 


রাজ কে কোনো রকম ছাড়িয়ে রানি চলে যেতে নিলে রাজ সেখানেই দাঁড়িয়ে তার হাত ধরে আটকায়। হেঁচকা টানে নিজের বুকের উপর আনে।


রাজের উন্মুক্ত বুকের দিকে রানি ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে আছে। 

রাজ বুঝতে পেরে মুচকি হাসে। রাজ সামনের চুল গুলি রানির কানের পাশে গুঁজে দিয়ে রানির দিকে মুখ বাড়ালে রানির হুশ ফিরে। রাজের হাতের ফাঁক দিয়ে রানি নিচে বসে পড়ে। যার ফলে রাজের আশা বিফলে যায়। চোখ মেলে রানি কে না দেখতে পেয়ে সামনে তাকায়। 


রানি তার থেকে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে চুল মুচ্ছে। রাজ আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে এলে সে পেছনে যেতে থাকে। 


যেতে যেতে একদম ধপ করে রানি সিঙ্গেল সোফায় বসে পড়ে। রাজ সোফার হাতলে হাত দিয়ে তার দিকে ঝুঁকে যায়। রানি ভয়ে শুষ্ক ঢুক নেয়। চোখ মিট মিট করে। 

রাজ বেশ কিছু সময় এই ভাবেই রানি কে দেখে। 


"ভয় পেলে না তোমায় দারুণ লাগে। লাল লাল গাল লাল ঠোঁট আরো যেন রঙ্গিম হয়ে যায়। বিশেষ করে নাক টা যেন টুকটুকে গোলাপ ফুল হয়ে উঠে। আর চোখ মিটমিট করা ঘন চোখের পাতা ফেলা জাস্ট মনোমুগ্ধকর লাগে।"


রাজ রানির দিকে আরো ঝুঁকে ফিসফিস করে বলে,

"এই যে বুকের বা পাশ টা দেখছো এখানে রক্ত টগবগ টগবগ করে। তোলপাড় শুরু হয়ে যায় তোমার ওমন রূপ দেখলে। ইচ্ছে করে মনে গহীনে ডুকিয়ে রাখি তোমায়। ভিন্ন দেশে চলে যেতে ইচ্ছে হয় তখন।"


রাজ এটা বলেই মুচকি হাসি দেয়। 

তারপর রানির হাত থেকে টাওয়াল টা ছু মেরে নিয়ে ওয়াশরুমে যায়। 


ওয়াশরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে ঠোঁটের ইশারায় কিস দেয়। আবার মুচকি হেসে ভেতরে চলে যায়। 


রানি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে ঘনঘন চোখের পাঁপড়ি ফেলে। 


চলবে.....

(আশা করি আপনাদের কাছ থেকে গঠনমূলক কমেন্ট পাবো☺)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ১৮

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ১৮


রাজ গাড়ি থামিয়ে কোনো কথা ছাড়াই আবার রানি কে কোলে তুলে নেয়। 


কান্নায় চোখ লাল হওয়া রানি অবাক হয়ে রাজ কে দেখছে। 


রাজ সুন্দর করে রানি কে কোলে নিয়ে তার বেড রুমে চলে যায়। বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে,

"এখানে থাকো আমি আসছি।"


রাজ চলে যায়। একটু পর এক কাপ কফি হাতে নিয়ে রুমে আসে। 

"ধরো।"

"....

"আমার দিকে তাকিয়ে না থেকে এটা হাতে নাও।"


রাজ আবার বলল,

"কি হলে নাও।"


রানি কথা ছাড়া রাজের হাত থেকে কফির মগ টা নেয়। রাজ চুপ করে রানি কে কোলে তুলে নেয়। 

"কি হচ্ছে? একটু পর পর আমায় না বলে কোলে নিচ্ছেন কেন?"

"তোমায় জিজ্ঞেস করতে হবে বুঝি?"

"অবশ্যই করতে হবে।"

"কখনোই নয়। একটু আগে থেকেই তুমি আমার হয়ে গেছো। তুমি সব টাই এখন আমি বা আমার। আর আমার জিনিস কি করব না করব সেটা কাউ কে বলার প্রয়োজন মনে করি না আমি। মাইন্ড ইট।"

"আজব।"

"তাও ঠিক। কারণ তুমি এখন আমার অর্ধাঙ্গিনী। মানে আমার অর্ধেক অংশ।"

"....


পড়ন্ত গোধূলি লগ্ন চলছে তখন। রাজ রানি কে কোলে নিয়ে ব্যালকুনির দিকে চলে যায়। 


অপকল রানি কে দেখছে। যেন এটা কোনো হুর কে কোলে নিয়ে রেখেছে সে। রাজ নেশা ধরা চোখ নিয়ে রানি কে দেখছে। রানির এখন বেশ লজ্জা লাগছে। 


"কফি টা খাও। মাথা ব্যথা একটু কমবে।"

"....

কান্নার কারণে রানির আসলেই মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে। তাই কিছু না বলেই কফির কাপে চুমুক দেয়। এক হাতে তার কফি অন্য হাতে রাজের কাঁধ আগলে রেখেছে। আড়চোখে আবার দেখছেও।


"তুমি কি মানুষ না? নাকি দয়া মায়া নেই? আমি যে আছি তাও তোমাকে কোলে নিয়ে একটুও বলতে ইচ্ছে কারছে না আমায় আমি কফি খাবো কি না।"


রাজের এমন কথায় রানির লজ্জা পায়। ঠোঁট উল্টিয়ে বলে,

"এটা তো আপনি আমার জন্যে এনেছেন। আপনার জন্যে তো আপনি আনেন নি। আর এটার মাঝে আমি ঠোঁটও লাগিয়ে দিয়েছে.."


রাজ আকাশের দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে বলে,

"তো কে বলেছে এটা না খাওয়ার কথা। আমি এটার কথাই বলেছি।"

"....

"দিবে না নাকি?"

"এটা?"

রাজ একটু জোর নিয়েই বলে,

"তো আমি অন্যটার কথা বললাম কি?"

"....


রানি কি করবে বুঝে পায় না। 

"আপনি কি রাক্ষস?"

"হোয়াট?"

"না আসলে মানে আপনি আমার খাওয়া.."

"এটার হিসাব না হয় পরে নিলাম। আপাদত আমার মুখে কফি দাও। খুব মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করছে তোমার ওই ঠোঁ.."


কথাটা বলতে বলতে রাজ রানির দিকে তাকায়। রানি ভ্রু কুঁকচে রাজের দিকে তাকিয়ে থাকে। রাজ কথা পাল্টিয়ে বলে,

"না মানে আমার খুব কফি কফি পাচ্ছে। তাড়াতাড়ি কফি মুখে মানে আমার ঠোঁটে ধরো।"


রাজ কথাটা বলে মুচকি হাসি দেয়। 


রানি আর কথা না বাড়িয়ে রাজের মুখের সামনে কফির মগ ধরে। রাজ চুমুক দিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। তারপর মুখ টা আরো রানির দিকে এগিয়ে দিয়ে কানের কাছে ফিসফিসানি কন্ঠে বলে,

"এই কফি তে দুনিয়ার সেরা মিষ্টত্ব রয়েছে। যা প্রেয়সীর ঠোঁটের স্পর্শে সম্ভব হলো।"


রানি এই কথা শুনে একটা ঢুক গিল। খুব লজ্জায় মাথা নুয়িয়ে নেয়। 

রাজের ঠোঁটে এক বাঁকা হাসির আভাস পাওয়া যায়। 


রানি কে এই ভাবে কোলে নিয়ে রাজ প্রায় ৩/৪ ঘন্টা দাঁড়িয়ে আছে। রাজ একটুও নড়ছেও না। কখনো রাজের দৃষ্টি বহুদূরের ওই আকাশে স্থির তো কখনো রানির নেশা ধরানো ঝাঁঝালো রূপের দিকে।


আর বেচারা রানির কোমর ব্যথা করছে। মনে মনে বলছে,

"উনার কোলে থেকে আমার কোমর ব্যথা করছে উনার কি হাত পা বা কোমর কোনো টাই ব্যথা করছে না? কি স্টিল বডি মাবুদ। ডাইনোসরের শক্তি রয়েছে এই হাতির মতো জিম বডি তে।"


রাজের মতো লোকের রানি কে ৩/৪ ঘন্টা কেন সারা রাত কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও বোধ হয় হেলবে না। তার যে বডি। অপর দিকে তার কাছে রানি একটা পাটশলা। ওজন বোধ হয় ৪৬ কিংবা ৪৮ হবে। 


রাত যখন দশ টা বাজে রাজ তখন রানি কে নিয়ে ঘরে ঢুকে। 

"চুপ করে বসে থাকবে একটুও নড়বে না। আসছি আমি।"


রাজ চলে গেলে রানি বিছানায় নড়চড়ে কোমরে হাত দিয়ে বসে। একটু জোরে জোরেই বলে,

"এ্যা বললেই হলো। নড়বে না একটুও। কেন গো? আমি কি আপনার মতো রোবট ম্যান নাকি? কোমরের নাট বল্টু নড়ে যাচ্ছে আর উনি আসছে নড়বে না নিয়ে। আল্লাহ মাবুদ এই গ্যাংস্টারের সাথে থাকব কি করে আমি? একে তো ভয় তারউপর রাগ।"


রাজ ট্রে করে খাবার নিয়ে এলো। রানি বেশ অবাক হয়ে। ভাবে

"উনি কি সত্যিই এলিয়েন? জাদু টাদু জানে নাকি? খাবার নিয়ে এলে কি করে?"


রানি কৌতূহল নিয়ে বলেই বসল,

"আপনি কি এলিয়েন বা ম্যাজিশিয়ান?"

"হোয়াট?"

"না মানে এই ৫ মিনিটে যে খাবার নিয়ে এলেন।"

"তুমি কি ভাবো সবাই তোমার মতো বোকার ডিম? সবাই কি বোকার রাজ্যের বাস করে?"

"কি? কি বললেন আপনি? আমি বোকার ডিম? তাহলে তো আপনি হাতির ডি.."


কথা টা বলতে গিয়েও রানি থেমে যায়। পরে যদি রাজ তাকে এই একা ঘরে পেয়ে কিছু করে বসে।


"খাবার বাহির থেকে আনিয়েছি আরো আগেই। আমি রাজ চৌধুরী। নজর টা একটু আগে আগেই চলে আমার। খুব ফাস্ট।"


রানি মুখ ভেংচিয়ে মনে মনে বলে,

"হুমম তা তো দেখাই আছে। এই কারণেই তো আমার সাথে অভিনয় করলেন। অন্য একজন কে ঠকালেন। আবার আমায় বিয়েও করে নিলেন।"


রানি কে রাজ নিজের হাতে খায়িয়ে দিতে চালইলে রানি বলে,

"আমার হাত আছে আমি খেতে পাড়ি।"

"চুপ পিচ্চি। হা করো।"

"আ আমি পিচ্চি?"

"হা করো না হলে গালে একটা খাবে।"


রানি বড়সড় করে হা করে। রাজ মুচকি হেসে রানি কে খায়িয়ে দিতে থাকে। 


রাজ নিজে খেয়ে আবার উপরে রানির কাছে যায়। রানি তখন বসে ছিল। চেয়ারের উপর বসে পা দুলাচ্ছিল। যার কারণে তার সাদা পা গুলি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। রাজ ঘরে ঢুকেই এমন দৃশ্য দেখে কাশতে শুরু করে। শুকনো ঢুল গিলে রানির কাছে যায়। 


রানির সামনে গিয়ে হাটু গেড়ে বসে যায়। রানির হাত নিজের হাতের মাঝে নিয়ে রানির দিকে তাকিয়ে থাকে। 


রাজের এমন চাওনি দেখে রানি ঘনঘন চোখের কাজল কালো পাঁপড়ি ফেলে। রাজ এটা দেখে একটু অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে মুচকি হাসে। আবার রানির দিকে তাকায়। ঠোঁট চেঁপে হেসে রানি কে কোলে তুলে নেয়।


"আবার কে কো কোলে.."


রাজ রানি কে নিয়ে ব্যালকুনিতে চলে যায়।  সেখানে গিয়ে তাকে নামায়। 


রানির সামনে হঠাৎ করে হাটু গেড়ে বসে পড়ে। 

প্যাকেট থেকে রিং এর বক্স টা বের করে রানির সামনে দেয়। সেখান থেকে চকচক করা ডায়মন্ডের রিং টা রানির বা হাতের তর্জনি আঙ্গুলে পড়িয়ে দেয়। সেই হাতেই চুমু খায় রাজ। 

আর রানি অবাক দৃষ্টিতে রাজ কে দেখতে থাকে। 


"ভালোবাসি।"

"...

"প্রাণের টুকরো টা কে খুব ভালোবাসি। তুমি আমার বউ। আমার অর্ধাঙ্গিনী। আমার জীবনের সব টা তে তুমি আছো। তুমি ছাড়া আমি আমার জীবন টা চিন্তা করতে পারি না। তুমি বিহীন আমি সত্যিই বাঁচতে পারব না। জীবনে যাই করো আমাকে ছেড়ে কখনো যেও না। আমি মরে যাবো। তুমি চলে গেলে এই দুনিয়াতে একটা নিশ্বাসও হয়তো আমি নিতে পারব না। আমায় প্লিজ তোমার বুকে ঠাই দিও। খুব ভালোবাসি তোমায়। আমি আমার জীবনের অংশ তোমাকে ভালোবাসি। তোমায় খুব বেশিই ভালোবাসি প্রেয়সী।"


রানি শুধু ফ্যালফ্যাল করে রাজ কে দেখছে। তার মনের মাঝে অনেক কথা জাগলেও কিছু বলতে পারছে না এখন। যেন বোবা হয়ে গেছে। গলা দিয়ে আসছেও না কথা।


রাজ বসা থেকে উঠে রানির পিছনে পিঠের দিকে নিজের হাত নিয়ে রানিকে নিজের কাছে নিয়ে আসে। ঝাপটে জড়িয়ে নেয় নিজের বুকে। বাচ্চাদের মতো কান্না করতে থাকে। রানি কে নিজের বুকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে রাজ। 


রানির যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে। রাজের কান্না টাও তার সহ্য হচ্ছে না। মনের মণিকোঠায় বড্ড বারি খাচ্ছে।


চলবে....


(আশা করছি গঠনমূলক কমেন্ট পাবো।😊)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ১৭

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ১৭


রাজ কখন থেকে বসে আছে। সামনে সিঙ্গেল সোফায় বসে আছে তার শ্বশুর। মানে হবু শ্বশুর।


রাজের মনের মাঝে নতুন এক অনুভূতি কাজ করছে। নতুন বিয়ের অপেক্ষারত সবার মনের মাঝে যেই এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি হয়। রাজের এখন তাই হচ্ছে। 


অবশেষে রাজের অপেক্ষার তীব্র এক অজানা অনুভূতির অবসান ঘটিয়ে রানি এলো। 

সাদা এক বেনারসি গায়ে। সাদা স্টোন গুলি ঝিকঝিক করছে। গায়ে অনেক গয়না। মাথায় কি সুন্দর করে ঘোমটা দেওয়া। মুখের মাঝে হাল্কা মেকআপ। ঠোঁটে গাঢ়ো লাল লিপস্টিক। কাজল কালো চোখ গুলি কলো রঙে রঙ্গিম হয়ে আছে। রানি কে যেন হুর লাগছে। মনে হচ্ছে আকাশ বেদ করে বেহেশতের হুর মাটিতে স্থান নিয়েছে। 


চোখ এক মনে এক ধ্যানে রানির দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখের পাতা নড়ছে না। একদম স্থির মায়ামি রানির দিকে তাকিয়ে আছে।


আরমান গলা কাশি দিলে রাজের হুশ ফিরে একটু নড়েচড়ে বসে ঠিক হয়ে। 


রানি কে সামিয়া রাজের পাশে এনে বসায়। তবে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে। রানির গা রাগে জ্বলে যাচ্ছে। তো রাজের মন রোমাঞ্চে পুলকিত হচ্ছে। আড় চোখে চোখে রানি কে দেখছে। 


কাজি বিয়ে পড়িয়ে চলে যায়। সবাই মিষ্টিমুখ করে। 


রাজ তো মনের আনন্দে গপগপ করে কয়েক মিষ্টি পেটে দিয়ে দেয়। শান্তি তে মনে হয় মিষ্টি গুলি পেটে গেল। রানি এই সব দেখে মনে মনে বলতে থাকে,

"খাও বাছাধন বেশি করে খাও। জীবনে কি আর কখনো খাইছিলা? খাও নাই তো। এখন হাতের কব্জি ডুবিয়ে খাও। ভরাসিয়াস একটা।" 


সবাই এক সাথে মিলে খাবার খেতে বসে। সিনথিয়া পরিবেশন করছে। 


আরমান, রাজ রানি আর সামিয়া বসে নিজেদের মতো খাচ্ছে। রানির এত ভার গয়না নিয়ে খাবার খেতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে। যদিও পাশে বসে থাকা রাজের কারণে রাগে সে খাবার গলা দিয়ে নামাতে পারছে না। তবুও হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করছে। 


কম সময়ের মাঝে সিনথিয়া বেশ রান্নাবান্না করে নিয়েছে। 


রাজ আরাম আয়েশে খাবার খাচ্ছে। আরমান আর সামিয়াও মন ভরে খাবার খেতে ব্যস্ত। রানি শুধু রাগে ফেটে যাচ্ছে। 


"বুঝলে তো রাজ বাবা তোমার কারণে আজ এত কিছু খেতে পারলাম। সিনথিয়া তো আলসেমির কারণে তেমন কিছু রান্নাও করতে চায় না।"


সিনথিয়া রাগে বলে উঠল,

"তবে কি শুধু ময়দা খেয়ে জীবন কাটাও?"

"যাই বলো আজ বেশ রান্না করেছো।"

"....


রাজ চামচ দিয়ে পায়েস মুখে দিতে দিতে নিজের পা দিয়ে  রানির পায়ে স্লাইড করছিল। 

এমন কাহিনী তে রানি হকচকিয়ে যায়। হঠাৎ বিশম খায় খুব জোরে। রাজ তাড়াতাড়ি তার মুখের সামনে পানি ধরে। 


রানি কাশতে কাশতে পানি না নিয়ে চোখ গরম করে রাজের দিকে তাকিয়ে থাকে। মনে মনে হয়তো এটাই বলছে "ভাব দেখাচ্ছে এখন। নিজের এমন কান্ডে বিশম খেলাম এখন পানি ধরে আদিখ্যেতা দেখানো হচ্ছে। মরণ আমার।"


রানি কাশছে অথচ রাজের হাত থেকে পানি নিচ্ছে না। রাজ রানির থুতনিতে এক হাত ধরে অন্য হাতে পানির গ্লাস তার মুখে তুলে দেয়। 

যেন ৪/৫ বছরের কোনো বাচ্চা মেয়ে কে পানি খাওয়ানো হচ্ছে। 


তাদের এমন কান্ড দেখে সামিয়া মুচকি হাসে। 


রাজ রানির দিকে তাকিয়েই আছে। আরমানও সিনথিয়ার দিকে নজর দেয়। সিনথিয়া মুচকি হাসে। হয়তো দুজনে তাদের সদ্য বিয়ের পুরোনো দিনের মাঝে চলে গিয়েছে।  


আরমান আর সিনথিয়ার এমন আবেগপ্রবণ চাওনি দেখে সামিয়া খায় বিশম। খুব জোরে জোরে কাশি পায় তার। 

তার কাশির আওয়াজে সবার ধ্যান ভাঙ্গে। সামিয়া নিজেই পানির গ্লাস নিয়ে টগটগ করে পানি খেয়ে নিয়ে নিশ্বাস ছাড়ে। সামিয়া মনে মনে বলে "এ কোথাই আছি আমি?" 


খাওয়া দাওয়ার পর সবাই কিছুক্ষণ মিলে কথা বলে। একসময় রাজ রানির মা বাবা কে জানায়,

"আঙ্কেল আমি রানি কে আজ নিয়ে যেতে চাই বাসায়।"

"আজই.."

"হুম।"

"....


রানি আরো রেগে যায়। কটমট করে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। 

"কি? এখন আমাকে উনার সাথে যেতে হবে?"

"ছিঃ রানি এই সব কি কথা? ঠিক করে কথা বল। ও তোর স্বামী হয়।"

"আম্মু.."

"চুপ আর একটা কথাও নয়। রাজ বাবা এখন থেকে তোর সব। ও যা বলবে তাই করতে হবে। ওর কথা শুনে চলাই তোর কাজ এখন। ওর কথার অবাধ্য হবি না কখনো।"

"...


সিনথিয়ার কথায় সবাই যেন থ মেরে যায়। রানি একটু পর বলতে শুরু করে,

"ওকে ফাইন। যা বলবে তাই হবে। আমি খেলার পুতুল না! আমাকে তো সব মানতেই হবে। ঠিক আছে। আমাকে বিদায় করার জন্যে উঠে পড়ে লেগে গিয়েছো না? চলে যাচ্ছি। দেখবে আমি আর আসব না। আসব না তোমাদের এই খানে। আগুনের সামনে নিয়ে গেলে না আমায় খেয়ে ফেলার জন্যে। আমি নিজেই আগুনের কাছে গিয়ে বলছি আমায় শেষ করে দিতে। না হয় ওই নরক কুণ্ডেই ঝাঁপ দিচ্ছি। ভালো থাকো তোমরা। আর কখনো আসব না এখানে।"


রানি কথা গুলি একদমে বলে চলে যায় বাসা থেকে। আর একটুও দাঁড়ায় না সেখানে।


"আঙ্কেল আন্টি আপনারা কিছু মনে করবেন না। ও রাগে বলল কথা গুলি। রাগ কমলে ঠিক হয়ে যাবে। কাল পরশু আমি ওকে নিয়ে আসব।"

আরমান রাজের হাত ধরে কেঁদে দেয়। অস্পষ্ট কন্ঠে বলে,

"আমার মেয়ে টা কে দেখে রেখো বাবা। ও বড্ড ছেলে মানুষি করে।"

"চিন্তা করবেন না। আমি সব সময় ওর পাশে থাকব।"

".....


আরমান আর কথা বলতে পাড়ে না কান্নার কারণে। 

"একটা বাবা ঠিক কত টা কষ্ট করে তার বুকের ধন কে অন্যের হাতে দিয়ে দেয়। তা 'বাবা' রা ছাড়া পৃথিবী তে এই কষ্ট টা আর কেউ বুঝে না। হয়তো তাদের কলিজা ছিঁড়ে যায় এমন যন্ত্রণায়। নয়তো বা মনে হয় এই বুঝি দম টা বের হয়ে যাবে। প্রতিটা বাবার কাছে তার 'মেয়ে' রাজকন্যার চেয়ে কোনো অংশে কম হয় না। সব বাবা রা চায় আমার মেয়ে টা সব চেয়ে ভালো থাকুক। স্বামীর সাথে খুব সুখে থাকুক। বাবা রা তাদের মেয়েদের কলিজা ভাবে। মেয়ে একটু কষ্ট পেলে মনে হয় বাবাদের বুকে লাগে। বিয়ের পর ঠিক এমন মুহূর্তে বাবাদের কেমন লাগে তা হয়তো কেউ লিখে প্রকাশ করতে বা অন্য কে বলে বুঝাতে পারবে না।"

আরমান সাহেবেরও হয়তো এমন লাগছে এই মুহূর্তে। 


রানির মা রাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে কাঁধো কাঁধো কন্ঠে বলে,

"বাবা ও কিন্তু নিজের খেয়াল একদমি নিতে পাড়ে না। আমার খায়িয়ে দিতে হয়। চুল মুছে দিতে হয়। ওর সব দেখে শুনে দিতে হয়। তুমি একটু সামলে নিও। ওর একটু খেয়াল রেখো। সাবধানে যাও।"

"কোনো চিন্তা করবে না আপনারা ও আল্লাহর রহমতে ভালোই থাকবে। আসছি। দোয়া করবেন।"


রাজ বেড়িয়ে আসে বাসা থেকে। 


গিয়ে দেখে রানি পিছনের সিটে বসে রাগে সাপের মতো ফুসফুস করছে। 


রাজ পেছনের জানালার সামনে গিয়ে বলছে,

"এই যে ম্যাম আপনি আমার ওয়াইফ। আমি আপনার ড্রাইভার নই। সামনে আসুন।"

"পারব না। আপনার ইচ্ছে হলে সামনে বসে ড্রাইভ করুন। না হলে পিছনে ঠেলতে ঠেলতে আপনার বাসায় নিয়ে যান।"

"হোয়াট?"

".....


রাজ আর কিছু না বলে দরজা টা খুলে। নিঃশব্দে রানি কে কোলে তুলে নেয়। 

রানি অবাক হয়ে বলে,

"আরে আরে করছেন কি?"

"....


রাজ আশেপাশের লোকজন কে তোয়াক্কা না করে রানি কে কোলে নিয়ে সামনে তার পাশের সিটে বসিয়ে দেয়। রানি ফ্যালফ্যাল করে রাজ কে দেখছে। 


তখন রাগের মাথায় অনেক কিছু বললেও এখন রানি কান্না করছে নাক টেনে টেনে।


রাজ ড্রাইভ করতে করতে রানির দিকে তাকাচ্ছে। রানি বাহিরের দিকে তাকিয়ে নাক টানছে তো কান্না করছে। রাজ দেখলেও কিছু বলছে না। এখন একটু কান্নার দরকার তার। মন টা ভালো হবে। 


রাজও আড় চোখে রানি কে দেখছে। রানির মনের পরিস্থিতি টা সে বুঝতে পারছে। নিজের বাড়ি ছেড়ে চললে সব মেয়েদের এমন হয়। 


ড্রাইভ করতে করতে রাজ টিস্যু এগিয়ে দেয় রানির দিকে। 


চলবে....


(গঠনমূলক কমেন্ট করবেন😊)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ১৬

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ১৬


আসলে রাজ সকাল সকাল রানির বাসায় চলে এসেছিল। আরমান আর সিনথিয়া কে নিজের পরিচয় দেয় বাসায় এসেই। সবার মুখে এত নাম ডাক শুনে তাদেরও চিনতে অসুবিধা হয় না। তারা অবাক হয়ে যত্নে রাজ কে ঘরে নিয়ে আসে। সে রানি কে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রানি কে পছন্দ করে সেটাও জানায়। তাই তারা রাজি হয়ে যায়। 


পাত্র দেখতে শুনতে ভালো। এতো নাম ডাক রানি কেও পছন্দ করে আপত্তি করার মানেই হয় না। তাই রানির বাবা মাও রাজি হয়ে যায়। 


আজ শুক্রবার। তাই রাজ আজই বিয়ে করে নিতে চায় রানি কে। এটা শুনে তারা অবাক হয় এত তাড়াতাড়ি..


কিন্তু পরে আর না করেনি। কারণ তাদের জানানোর মতো তেমন কেউ নেই। আর রানি যে অবস্থায় আছে। মানে মানে বিয়ে টা হলে বাঁচে তারা। বিয়ের পরে না হয় মেয়ে এই বাড়িতেও থাকতে পাড়ে কোনো সমস্যা হবে না। বাবা মায়ের চিন্তা তো দূর হবে। এই ভেবেই অমত করে না। 


একটু পর কাজি আসবে তাদের বিয়ে পড়াতে। রাজ সব প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে। স্বাদে কি আর রাতের ঘুম আরাম করে চিন্তা করেছে সে?


সিমথিয়া রানির পাশে বিছানার উপর ব্যাগ গুলি রাখে। 

"মা এমন ভালো ছেলে কি আর সব সময় পাওয়া যায়? এত ভালো ছেলে তোকে পছন্দ করে বলেই তো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলো। তুই মা আর অমত করিস না। রাজি হয়ে যা। তোর বাবাও না হলে রাগ করবে। এই গুলি পড়ে রেডি হয়ে নে।"

"আম্মু তোমরা কেন বুঝতে চাইছো না আমার কথা? আমাকে কিছু বলার সুযোগ কেন দিচ্ছো না? উনাকে পছন্দ আমিও করতাম.."


"তা হলে আর অমত না করে চুপ করে রেডি হয়ে নে।"


রানি সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে তার বাবা ঘরে প্রবেশ করেছে। 

"আব্বু আমার কথাটা একটু তুমি শুনো।"

"কোনো কথা আমি শুনতে চাই না। এত দিন কষ্ট করে নিজের সব টা দিয়ে একমাত্র সন্তান কে মানুষ করেছি কি এই কারণে? অন্যের সামনের মেয়ের মুখের উপর কথা শুনতে? না এমন কখনোই হবে না। যদি আমাদের মা বাবা হিসেবে সম্মান করে থাকিস তা হলে ওই ছেলেটার সামনে বেইজ্জত করিস না আমাদের। যা বলছি তাই কর। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। একটু পর কাজি চলে আসবে।"


"আব্বু ওই লোকটা আ.."

"সিনথিয়া চলে এসো। বাকি টা ওর কাছে, আমাদের যা বলার আমরা বলে দিয়েছি।"


গম্ভীর কন্ঠে আরমান কথা টা বলে চলে গেল। স্বামীর বাধ্য স্ত্রী সিনথিয়া স্বামীর কথা মতো চলে যায়। যাওয়ার আগে দরজায় দাঁড়িয়ে বলে,

"জিদ না করে রেডি হয়ে নে। একা যদি রেডি হতে না পারিস তবে সামিয়া কে ডেকে নে।"


এই বলে সিনথিয়া চলে যায়। 


রানির মাথাতেও সামিয়া আসে। ভাবে সামিয়া হয়তো কিছু করতে পারবে। তাই তাড়াতাড়ি করে সামিয়া কে কল দেয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাসায় আসতে বলে।


সামিয়া বাসায় এসে রাজ কে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়। তারপর তাড়াতাড়ি করে রানির কাছে চলে যায়। 


"রানি রানি।"

"তুই এলি? এতক্ষণ লাগে? এত হাপাচ্ছিস কেন? কোন পাগলা কুত্তা দৌড়ানি দিল?"

"আরে থাম না। এখন তোর এই কথা গুলি একটু বন্ধ কর।"

"আমার সব শেষ।"

"স্যার মানে তোর রাজ চৌধুরী কে বাসায় দেখলাম আঙ্কেলের সাথে হাসছে কথা বলছে।"

"হুম রে। ডেভিল টা আমার আম্মু আব্বু কে খেয়ে ফেলেছে।"

"কি?"

"না মানে হাত করে নিয়েছে। নিজের বশে এনে ফেলেছে রে। আমি এখন কি করব?"

"কেন? কি হয়েছে বলবি তো। সব টা বল।"

"উনি আসছে আমায় বিয়ে করতে আজ।"

"হোয়াট?"

"হো বইন হো। আমার জীবন টা কয়লা। কি করব আমি?"

"মানে সিরিয়াসলি?"

"আরে এই বাইদানী তোর সাথে এখন মজা করতে আমার কোন পা টা গেছে রে?"

"উনি তোকে বিয়ে.."

"না না আমাকে না তো তোর নানি কে বিয়ে করতে আসছে। আজাইরা লাড্ডু কোথাকার।"

"না ইয়ে, তোকে বিয়ে করতে আসলে তো ভালোই। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।"

"কি করে রেডি হবো? উনি তো একটা ডেভিল।"


রানি সামিয়া কে সব টা বলে। সেদিনের পর থেকে তার মন খুব বেশি  খারাপ  হওয়ায় সামিয়া কে সব কিছু বললেও সেই ঘটনার কথা জানায়নি। তেমন মন মানসিকতা ছিল না তার। 


সব শুনে সামিয়া বেশ অবাক হয়। এটাও সম্ভব? কি করে? সে হা করে তাকিয়ে আছে রানির দিকে।


"তুই ঠিক বলছিস?"

"তা নয় তো কি? স্বাদে কি আমি উনাকে বিয়ে করতে চাইছি না? উনি তো একটা লুচ্চা। যাকে কি না এত দিন মনে প্রাণে চেয়ে এসেছে আজ তাকেই বিয়ে করতে আমার..."

"আরে আরে কাঁদিস না। চুপ কর।"

"কি করে চুপ করব বল তো? উনি কি ভাবে করতে পারল? তারপরেও আমার সাথে..."

"তুই বা কি করে শিওর হচ্ছিস মুখের কথা শুনে?"

"নিজের চোখ কেও কি অবিশ্বাস করব? এটাই বলছিস তুই আমায়?"

"না আসলে। যাই হোক এখন কি করার?"

"আমিও তো তাই ভাবছি এখন কি করার? কি করব আমি? তুই কিছু বুদ্ধি দে।"

"আ আমি?"

"এমন করে বলছিস কেন? গোবর মাথায় একটু কিছুও কি বুদ্ধি নাই? সব টাই কি ফাঁকা কলসি লুচ্চা মেয়ে?"


সামিয়া রানির কথার জবাব না দিয়ে একটু ভেবে বলে,

"এক কাজ কর এখন উনি যা বলছে তেমনি কর। পরে উনার কাছে গিয়ে না হয় সব টা জেনে নিস। যদি সত্যিই হয় তবে না হয় ডি..."

"তার মানে তুই বলতে চাইছিস আমি জেনে শুনে নিজের গলা দঁড়ির সামনে নিয়ে হাজির করব? নিজেই নিজের জীবন টা আগুনের কাছে বিলিয়ে দিব। আর বলব নে আগুন খা আমায়। খেয়ে শেষ করে ছাই করে দে।"

"দেখ এখন এই সব বলার সময় নয়। উনি যেমন মানুষ তাতে সব করতে পাড়ে। যদি রাজি না হস পরে উনি তোর ক্ষতি করলে? তার থেকে ভালো উনি যা বলছে তাই কর। রেডি হয়ে নে।"


"আরে ডাইনি তোকে এনেছিলাম আমায় বাঁচাতে। এখন তুই নিজেই মরণ কে উস্কিয়ে দিচ্ছিস। তুই একটা আস্তো শাকচু.."


রানির কথা শেষ হওয়ার আগেই দরজার ওপাড় থেকে সিনথিয়ার কথা শুনা যায়। 

"কি হলে রে? হলো তোদের? আর কতক্ষণ লাগবে? সামিয়া তাড়াতাড়ি করে রেডি কর ওকে। কাজি চলে আসবে একটু সময়ের মাঝে।"

"আ আন্টি হয়ে যাবে। তু তুমি যাও। আর একটু আছে।"

"তাড়াতাড়ি কর।"


বলেই সিনথিয়া চলে যায় দরজার ওপাড় থেকে। 


"দেখ বইন তোর পায়ে পড়ি এখন চিন্তা ভাবনা না করে বিয়ে টা করে নে। পরে না হয় সব জেনে শুনে একটা কিছু ভাবা যাবে। তাড়াতাড়ি উঠ। তৈরি হ।"

"পরে কেন? আগে জেনে শুনে নিলে কি হয়?"

"তোর যে লাভার। সেই সময় টা পেলে তো। দেখছিস না একদিনও সময় দিল না। আজ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলো। আজই বিয়ে করবে বলে সব ঠিকঠাকও করে নিল।"

"দেখ তুই উনাকে একদম কি কিছু বলবি না."

"ওরে কতো দরদ। তাহলে রেডি হয়ে নে উনার গলায় গিয়ে ঝুঁলে পড়।"

"মুলা তুই..."

"কিছু না তাড়াতাড়ি বিয়ে করে উনার সংসার কর গিয়ে। উঠ।"


রানি মুখ ভুতা করে আছে। সামিয়া তাকে শাড়ী পড়িয়ে দিয়ে সাজাতে ব্যস্ত।


"বইন মুখ ভুতা করে রাখিস না। পরে দেখবি তোর হবু জামাই এই মুখ ভুতার কারণে আমাকেই না মেরে ফেলে.."

"সামু তুই..."

"ভুল কিছু বলি নি।"

"আমিও তাই চিন্তা করছি। কি করে ওই গ্যাংস্টারের সংসার করব? থাকব কি করে উনার সাথে এক ছাদের তলায়?"


চলবে....

(গঠনমূলক কমেন্ট করবেন)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ১৫

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ১৫


রাজ ঠান্ডা মাথায় ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলেও এখন মাথায় আস্তেআস্তে রাগ উঠে যাচ্ছে। 


কল দিচ্ছে তো দিচ্ছেই। রানির কল ধরার কোনো নাম নেই। রাজের রাগ হচ্ছে অনেক। প্রায় ২০ বার কল দেওয়ার পর রানি কল ধরে।


রাজ মাথা ঠান্ডা রেখে বলল,

"কি হয়েছে তোমার?"

"আপনার কি হয়েছে সেটা বলুন। গাধার মতো কল কেন দিচ্ছেন?" 

"কি?"

"এত বার কল কেন দিচ্ছেন?"

"আচ্ছা বলবে আমায় কি হয়েছে তোমার?"

"ধ্যাত যত্তসব ন্যাকা ন্যাকা কথা যেন কিছুই জানে না। আজাইরা লাড্ডু কোথাকার।"


রানি রাগে ফোন কেটে দেয়। রাজেরও রাগ হচ্ছে। ফোন টা আছাড় দিয়ে বিছানায় ফেলে দেয়। 


তারপর এত না ভেবে লম্বা একটা ঘুম দেয়। 


রাতেও অনেক বার কল দেয় রানি কল ধরে না। শেষে ফোন বন্ধ করে রাখে। এবার রাজের ভীষণ রাগ হয়। কিছু বলছেও না কেন এমন করছে।


পর দিন সকালে রাজ ফ্রেশ হয়ে কলেজের সামনে যায়। 


কিন্তু কলেজের সময় পের হয়ে গেছে তবুও রানি আসছে না। হয়তো আসবে না ভেবে রাজ গাড়ি নিয়ে অফিস চলে গেল। 


রানির কিছু ভালো লাগছে না। তাই আজ কলেজেও যায়নি। সে ভেবেয় পায় না সত্যিই মানুষ টা এমন? তবে এত দিন যে সে এই মানুষটার কারণেই অবাক হয়েছে সে কি না....

রানি কান্না করে দেয় কথা গুলি ভেবে।


সেদিন আর কথা হয় না তাদের। রাজ রাগে ফেটে যাচ্ছে। কি হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছে না। 


রাতে রাজ একা সুইমিংপুলে বসে ভাবছিল। এমন সময় তার কল আসে। তার গ্যাং এর এক জন কল দিয়েছে।

"হ্যালো।"

"বস।"

"খবার পেলি কিছু?"

"বস আপনি আসার আগের দিন ম্যাম তাদের বাসার সামনে ক্যাফে তে একজনের সাথে দেখা করেছে। আর আপনি না থাকা কালীন তিনি ঘর থেকে এক বারও বের হয়নি।"

"কে ছিল? কার সাথে দেখা করেছে?"

"বস জানতে পারলাম একজন মহিলা।"

"যত তাড়াতাড়ি পারিস মেয়ে টাকে বের করার চেষ্টা কর।"

"ওকে বস।"

"মনে রাখিস খুব তাড়াতাড়ি।"

"ঠিক আছে কিন্তু বস..."

"কি হয়েছে?"

"বস শাহিন জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে কিছুদিন হলো।"

"হোয়াট?"

"হুম। বস আপনি ব্যস্ত ছিলেন তাই বলা হয়নি। খুব রকম হাঙ্গামা করছে সে।"

"ওকে দেখছি রাখ। সবাই কে সাবধানে থাকতে বলিস।"

"ওকে বস।"


রাজ ফোন কেটে দিয়ে গভীর চিন্তায় পড়ে যায়। তবে কি শাহিন ই কোনো ভাবে.... 

রাজ নিজের মনে মনে অনেক কিছু ভেবে নেয়। আর সময় দেওয়া চলবে না। এর পর হয়তো খুব দেরি হয়ে যাবো। তাই আর অপেক্ষা করে সময় নষ্ট না করাই ভালো। 


রাজ মুখে এক অদ্ভুত বাঁকা হাসি নিয়ে বলতে থাকে,

"মাই লিটল এঞ্জেল আসছি আমি খুব বেশি দেরি নয়। অপেক্ষা করো।"


সকালে রাজ ফুরফুরে মেজাজে ঘুম থেকে উঠে। 

শাওয়ার নেয়। প্রিন্সের মতো আজ নিজেকে সাজায়। মুখে সেই এক গালে হাসি। 


রানি ঘুম থেকে উঠে ছাদের এক কোণায় মন মরা হয়ে বসে আছে। যাকে পছন্দ করল। মনে মনে কত কিছু ঠিক করে নিল। আকাঙ্ক্ষিত মানুষ টার দেখাও পেলো। অবশেষে সেই মানুষ টা কি না..... 

তবে এত দিন কি তার সাথে নাটক করল? সব তার অভিনয় ছিল? কিন্তু কি করে সম্ভব? মানুষ কি এত টাও নিখুঁত অভিনয় বাস্তবে করতে সক্ষম হয়? কেন জানি রানির এই কথা গুলি মনে আসলেও মানতে তার খুব বাঁধা লাগে। কষ্টও হয়। 


বার বার সেদিনের মেয়ে টার কথা মনে হয়। মনে হতেই রাজের প্রতি রাগ আর বিতৃষ্ণা চলে আসে। আবার কি ভেবে চাইলেও রাজের প্রতি ঘৃণা আনতে পাড়ে না। সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা তার।


যতোই হোক এত দিন তার মনের মাঝে যে ছিল তাকে কি করে...


বেশ বেলা হয়ে গিয়েছে। 

সেই যে রানি ১০ টা ২০ এ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ছাদে এলো। এখনো সেই এখানেই দাঁড়িয়ে আছে। এখান থেকে একটুও নড়েনি। হয়তো এখন বেশ বেলা হয়ে গিয়েছে। হয়তো অনেক সময় হয়েছে সে এখানে এসেছে।

তবুও এখন যেতে ইচ্ছে করছে না তার।


তার কানে নিচ থেকে হাসির আওয়াজ ভেসে আসছে। তার বাবা সচরাচর এমন অট্টহাসি হাসে না। কিন্তু আজ যেন তিনি হেসে বাড়ি মাথায় তুলে ফেলছে।


রানি অনেকটা বিরক্ত আর আগ্রহ নিয়েই নিচে নামল। 


ড্রয়িংরুমে গিয়ে তার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সামনের মানুষটার দিকে। 


রাজ হাসি হাসি মুখ নিয়ে তার বাবার সাথে কথা বলছে। অন্য দিকে তার বাবা রাজের কথা শুনে জোরে হাসছে। রান্নাঘরের দিকে নজর দিলে দেখে তার মা খুব ব্যস্ত হয়ে কিছু করছে। হয়তো ওই লোক টা কে আপ্পায়নের ব্যবস্থা করছে। 


রাজ রানির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল। 


এই প্রথম মনে হয় রাজের দাঁত বের করা হাসি দেখল রানি। কত টা মায়া মাখানো। সুদর্শনে হাসি। 


রানি ঢুক গিলল। চোখের পাতা ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে গেল।


মেয়ে কে দেখে আরমান বলল,

"আয় মা আয়।"

"....


"দেখ মা কে এসেছে। রাজ চৌধুরী।"

রানি বিড়বিড় করে বলছে, "আব্বু তোমার থেকে আমি ওই মানুষটাকে বেশি চিনি হাড়ে হাড়ে।"


"কিছু বলছিস মা?"

"ন না আব্বু। উনি এখানে কেন?"

"সুখবর নিয়ে এসেছে।"


রানি ভ্রু কুঁচকে একবার রাজের দিকে তাকায়। রাজ ঠোঁট চেঁপে হাসে। আবার তার বাবার দিকে তাকায়।

"কি খবর? মানে সুখবর?"

"তোর আর উনার বিয়ে।"


"কি?" বলেই রানি বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। 

ওদিকে তার মা ট্রে হাতে নিয়ে এত এত নাস্তা নিয়ে এলো রাজের জন্যে। তা দেখে রাজ আদিখ্যেতা দেখিয়ে বলল,

"আরে আন্টি এত কিছু আনার কি দরকার ছিল?"

"আরে না বাবা খাও খাও। আমাদের পরিবারের সদস্য হতে চলেছো। তোমাকে যত্ন তো একটু করতেই হয়।"

আরমান বলল,

"হ্যাঁ বাবা খাও। লজ্জা পেয়ো না। একটু পর থেকে তো এই বাড়ির মানুষই হয়ে যাবে। হাহাহা।"


রাজ মুচকি হাসে। আবার রানির দিকে তাকায়। ওদের অগোচরে এক চোখ টিপ দেয়।


রানির খুব রাগ হয়। তার গা জ্বলে যাচ্ছে এমন কথায়। তাদের কথা শুনে রানি হ্যাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে। 


"কি যা তা বলছো তোমরা?"

"যা তা মানে?"

"তা নয় তো কি আব্বু? কি বলছো তোমরা এই সব?"

"কি বলছি শুনতে পাচ্ছিস না? রাজ বাবা তোর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।"

"মানে কি?"


"রানি তুই কি তোর আব্বুর কথা শুনতে পাচ্ছিস না নাকি বুঝতে পারছিস না?"

"আম্মু এই সব.."


"আন্টি আঙ্কেল কি বলছে তুমি কি বুঝতে পারছো না? একটু পর আমাদের বিয়ে।" ওদের কথার মাঝে রাজ বা হাত ডুকিয়ে এ কথা বলল। 

"বিয়ে মানে কি? আপনি আর কয়টা..."


রানির কথা শেষ করার আগে রাজ সিনথিয়া কে কিছু শপিং এগিয়ে দিয়ে বলল,

"আন্টি এই গুলি রানি কে পড়িয়ে দিন।"

"দাও বাবা।"


সিনথিয়া শপিং গুলি হাতে নেয়। এদিকে রানির কথা কেউ শুনতেই চাইছে না। হয়তো রাজ নয়তো আরমান আর না হয় সিমথিয়া কোনো না কোনো ভাবে তাকে আটকিয়ে দিচ্ছে। 


"নে এই গুলি পড়ে রেডি হয়ে আয়।"


সিনথিয়া রানির হাতে ব্যাগ গুলি দিলে রানি রাগে সেই গুলি মাটি তে ছুড়ে ফেলে ফুসফুস করতে করতে নিজের রুমে চলে যায়। 


মেয়ের এমন অবস্থা দেখে সিনথিয়া বিনয়ের সাথে বলে,

"কিছু মনে করো না বাবা। আসলে ও.."

"ইটস ওকে আন্টি। ওকে আমি ভালো করেই চিনি।"


আরমান বলল,

"এই কারণেই তো তোমার হাতে ওকে দিতে আমি সময় নিচ্ছি না বাবা।"


রাজ মুচকি হাসে। সিনথিয়া ব্যাগ গুলি নিয়ে আবার রানির রুমের দিকে যায়। 


চলবে..


(ছোটছোট বলবেন না। লিখতে কষ্ট হয়। আর আমি এমনি তেও ব্যস্ত আছি। কাল দেয়নি বলে আজ কিন্তু চমক নিয়ে এলাম।☺ গল্প পড়ে দুই চার লাইন গঠনমূলক কমেন্ট করবেন।😊


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ১৪

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ১৪


পরপর ৪ দিন কেটে যায়। সত্যিই রাজ একবারও রানির সাথে যোগাযোগ করেনি। একটা বার কল দেয় নি। 

তবে গিয়ে একটা ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল, সে সাবধানে গিয়েছে। সে যেভাবে বলেছে রানি যেন সে ভাবেই চলে, সাবধানে যেন থাকে। 


রানি দুপুরে খেয়ে শুয়ে ছিল। কিন্তু তার ঘুম আসছিল না। 


তখন ঘড়িতে ৩ টা বেজে ১৫ মিনিট। সে ফোন হাতে নিয়ে ব্যালকুনিতে যায়। যদি রাজ ফোন করে। সে বলেছিল ৩/৪ দিন লাগবে। আজ ৪ দিন হলো এলোই না। একটা বার কথাও বলল না। রানির খুব অভিমান হলে। পাহাড় সমান অভিমান।


মন খারাপ করে ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে।


তার একটু পর ফোন বেজে উঠে। রানি স্কিনের দিকে নজর দিলেই দেখে রাজ কল দিয়েছে,

"আসসালামু আলাইকুম।"

"ওয়ালাইকুম আসসলাম। প্রেয়সী বুঝি খুব রেগে আছে?"

"....

"আমার প্রেয়সী কে বলে দিও তো তার স্বপ্নের মানুষটা স্বপ্ন পূরণ করতে খুব ব্যস্ত ছিল। মিটিং এর জন্যে এক দন্ড দম নিতে পাড়ি নি।"

"....

"কি হলে বলো আমার প্রেয়সী কে জানাবে তো?"

"....

"সরি প্লিজ সরি। বিশ্বাস করো খুব ব্যস্ত ছিলাম।"

"সেটা আমাকে বলছেন কেন?"

"এটা বুঝি অভিমান?"

"আমি আপনার উপর অভিমান করব কেন?"

"কারণ আমি যে তোমার মনে অবস্থান করি।"


"এত যখন বুঝেন একটু খোঁজখবর নিলে আপনার কোন ডিল টা মামার বাড়ির আদর খেতে চলে যেত?"

কথা গুলি রানি নিজের মনে মনেই বলে।


"প্লিজ সরি। এই কান ধরছি।"

"...

"প্রেয়সীর জন্যে এতগুলি চকলেট নিয়েছি।"

"....

"তবুও মন ভরেনি?"

"....

"কাল আসছি।"


কথাটা শুনে রানি খুশি হয় মনে মনে। কিন্তু তা বাহিরে প্রকাশও করে না। রাজকেও বুঝতে দেয় না। চুপ থাকে। 


"কাল দেখা হচ্ছে কিন্তু।"

"লাগবে না।"

"ওকে অভিমান না হয় সামনাসামনি ভাঙ্গব।"

"....

"ওই।"

"কখন আসবেন?"

"সকালে।"

"সাবধানে আসবেন।"

"ও..."


রাজের কথা শেষ করার আগেই রানি ফোন কেটে দেয়। রাজের রাগ হয়। 


রানি ঘরে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে এসে দেখে আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছে। 


ফোন তুললেই ওপাশ থেকে একটা সুরেলা কন্ঠ শুনা যায়।

"আসসালামু আলাইকুম। হ্যালো কে বলছেন?"

"আমার সাথে একটু দেখা করতে হবে তোমায়।"

"কে বলছেন আপনি?"

"সেটা পরেই বুঝতে পাড়বে। আমি তোমার বাসার সামনের ক্যাফে তে বসে আছি। চলে এসো। আর যদি না আসো জীবনে ঠকে যাবে।"


এই টুক বলেই অজ্ঞাত ফোন কেটে দেয়। 


রানি বুঝতে পাড়ে না কি করবে। তার যাওয়া ঠিক কি না। উনি বা কে? কিসের ঠকার কথার বলল? বেশি দূর নয় তাই রানিও কৌতূহলের জন্যে বোরকা পড়েই নিল। 


পরের দিন সকালে রাজ বাংলাদেশে নেমেই আগে রানির বাসার সামনে যায়। 


রানি কে বার কয়েক ফোন দেয়। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করছে না। রাজ খুব অবাক হয়। রানি তার কল ধরছে না? এটাও সম্ভব? যে মেয়ের মনে সর্বক্ষণ সে থাকে সেই মেয়ে কি না তার কল পিক করছে না। ভেবেই রাজের অবাকের সাথে রাগ হয়। 


১০ টার উপরে কল দিয়েও কল রিসিভ হয় না। 


রাজ একটা ম্যাসেজ পাঠায়।

"রানি রাগ না উঠিয়ে নিচে নামো। হাড়িআপ।"


রানি ম্যাসেজ সিন করেও কিছু বলে না চুপ করে বইয়ে মুখ দেয়। 


রাজ আরো কয়েকবার কল দেয় রানির কোনো সাড়াশব্দ নেই। 


"২ মিনিটের মাঝে নিচে না নামলে আমি কিন্তু তোমার নাম ধরে চিৎকার করব।"


রানি বেশ বুঝতে পাড়ছে। এই লোক কে দিয়ে সব সম্ভব। তাই রানি না পেরেই নিচে নামল।


রাজ দাঁত কিড়িমিড়ি করে বলে,

"কোথায় ছিলে তুমি? আমার কল কেন ধরছিলে না?"


রানি শান্ত গলায় বলল,

"কিছু বলবেন?"

"হোয়াট ডো ইউ মিন?"

"আমি জিজ্ঞাস করেছি আপনি কিছু বলবেন আমায়?"

"তোমায় আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি না?"

"বলুন।"

"কোথায় ছিলে?"

"আমার ঘরে।"

"কল কেন ধরছিলে না?"

"এটা আমার ইচ্ছে।"

"ইচ্ছে মাই ফুট।"

"...


"এনিওয়ে এই গুলি নাও।"

"কোনো দরকার নেই।"

"মানে?"

"মানে আমি এই গুলি নিব না।"

"কেন?"

"একজন অপরিচিত লোকের কাছ থেকে আমি কিছু নিব না। নিতে চাইও না।"

"দেখো রানি আমার রাগ উঠিও না।"

"তো আপনায় কে রাগতে বলল? প্লিজ গো।"


রাজ দাঁত কটমট করে গাড়িতে সজোরে একটা কিল দেয়। রানি ভয়ে কেঁপে উঠে। 


রানির দিকে ঝুঁকে কিছু বলতে গিয়েও বলে না। চুপ করে চলে যায় গাড়ি নিয়ে। 


রাজ বাথটাবে বসে আছে। শাওয়ার থেকে পানি পরছে তার সারা গায়ে। রানির কথার ধরন আর তার ব্যবহার নিয়ে সে চিন্তিত। কি হলো? এক রাতে এক টা মানুষের এতটা পরিবর্তন কেন? 


রাজ কিছুই ভেবে উঠতে পারছে না। না হদিশ মিলছে না এই কথার উত্তর গুলি।


দীর্ঘ একটা শাওয়ার নিয়ে রাজ ওয়াশরুম থেকে বের হলো। মাথা টাও বেশ ঠান্ডা আছে। রানির কাছ থেকে জানতে হবে কি হয়েছে। 

তাই রানি কে কল দেয় সে। 


রানি কল না ধরে কেটে দেয়। 

রাজ ম্যাসেজ পাঠায়, "প্লিজ পিকআপ দ্যা ফোন।"


রানি কল ধরে না। এই মানুষটার কল ধরে কি হবে তার?


চলবে....


(বিশ্বাস করুন নাইস নেক্সট কমেন্ট একটুও ভালো লাগে না। প্লিজ দুই চার লাইন গঠনমূলক কমেন্ট করে যাবেন)


Sabriha Sadi