গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ১৪

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ১৪


পরপর ৪ দিন কেটে যায়। সত্যিই রাজ একবারও রানির সাথে যোগাযোগ করেনি। একটা বার কল দেয় নি। 

তবে গিয়ে একটা ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল, সে সাবধানে গিয়েছে। সে যেভাবে বলেছে রানি যেন সে ভাবেই চলে, সাবধানে যেন থাকে। 


রানি দুপুরে খেয়ে শুয়ে ছিল। কিন্তু তার ঘুম আসছিল না। 


তখন ঘড়িতে ৩ টা বেজে ১৫ মিনিট। সে ফোন হাতে নিয়ে ব্যালকুনিতে যায়। যদি রাজ ফোন করে। সে বলেছিল ৩/৪ দিন লাগবে। আজ ৪ দিন হলো এলোই না। একটা বার কথাও বলল না। রানির খুব অভিমান হলে। পাহাড় সমান অভিমান।


মন খারাপ করে ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে।


তার একটু পর ফোন বেজে উঠে। রানি স্কিনের দিকে নজর দিলেই দেখে রাজ কল দিয়েছে,

"আসসালামু আলাইকুম।"

"ওয়ালাইকুম আসসলাম। প্রেয়সী বুঝি খুব রেগে আছে?"

"....

"আমার প্রেয়সী কে বলে দিও তো তার স্বপ্নের মানুষটা স্বপ্ন পূরণ করতে খুব ব্যস্ত ছিল। মিটিং এর জন্যে এক দন্ড দম নিতে পাড়ি নি।"

"....

"কি হলে বলো আমার প্রেয়সী কে জানাবে তো?"

"....

"সরি প্লিজ সরি। বিশ্বাস করো খুব ব্যস্ত ছিলাম।"

"সেটা আমাকে বলছেন কেন?"

"এটা বুঝি অভিমান?"

"আমি আপনার উপর অভিমান করব কেন?"

"কারণ আমি যে তোমার মনে অবস্থান করি।"


"এত যখন বুঝেন একটু খোঁজখবর নিলে আপনার কোন ডিল টা মামার বাড়ির আদর খেতে চলে যেত?"

কথা গুলি রানি নিজের মনে মনেই বলে।


"প্লিজ সরি। এই কান ধরছি।"

"...

"প্রেয়সীর জন্যে এতগুলি চকলেট নিয়েছি।"

"....

"তবুও মন ভরেনি?"

"....

"কাল আসছি।"


কথাটা শুনে রানি খুশি হয় মনে মনে। কিন্তু তা বাহিরে প্রকাশও করে না। রাজকেও বুঝতে দেয় না। চুপ থাকে। 


"কাল দেখা হচ্ছে কিন্তু।"

"লাগবে না।"

"ওকে অভিমান না হয় সামনাসামনি ভাঙ্গব।"

"....

"ওই।"

"কখন আসবেন?"

"সকালে।"

"সাবধানে আসবেন।"

"ও..."


রাজের কথা শেষ করার আগেই রানি ফোন কেটে দেয়। রাজের রাগ হয়। 


রানি ঘরে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে এসে দেখে আননোন নাম্বার থেকে কল এসেছে। 


ফোন তুললেই ওপাশ থেকে একটা সুরেলা কন্ঠ শুনা যায়।

"আসসালামু আলাইকুম। হ্যালো কে বলছেন?"

"আমার সাথে একটু দেখা করতে হবে তোমায়।"

"কে বলছেন আপনি?"

"সেটা পরেই বুঝতে পাড়বে। আমি তোমার বাসার সামনের ক্যাফে তে বসে আছি। চলে এসো। আর যদি না আসো জীবনে ঠকে যাবে।"


এই টুক বলেই অজ্ঞাত ফোন কেটে দেয়। 


রানি বুঝতে পাড়ে না কি করবে। তার যাওয়া ঠিক কি না। উনি বা কে? কিসের ঠকার কথার বলল? বেশি দূর নয় তাই রানিও কৌতূহলের জন্যে বোরকা পড়েই নিল। 


পরের দিন সকালে রাজ বাংলাদেশে নেমেই আগে রানির বাসার সামনে যায়। 


রানি কে বার কয়েক ফোন দেয়। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করছে না। রাজ খুব অবাক হয়। রানি তার কল ধরছে না? এটাও সম্ভব? যে মেয়ের মনে সর্বক্ষণ সে থাকে সেই মেয়ে কি না তার কল পিক করছে না। ভেবেই রাজের অবাকের সাথে রাগ হয়। 


১০ টার উপরে কল দিয়েও কল রিসিভ হয় না। 


রাজ একটা ম্যাসেজ পাঠায়।

"রানি রাগ না উঠিয়ে নিচে নামো। হাড়িআপ।"


রানি ম্যাসেজ সিন করেও কিছু বলে না চুপ করে বইয়ে মুখ দেয়। 


রাজ আরো কয়েকবার কল দেয় রানির কোনো সাড়াশব্দ নেই। 


"২ মিনিটের মাঝে নিচে না নামলে আমি কিন্তু তোমার নাম ধরে চিৎকার করব।"


রানি বেশ বুঝতে পাড়ছে। এই লোক কে দিয়ে সব সম্ভব। তাই রানি না পেরেই নিচে নামল।


রাজ দাঁত কিড়িমিড়ি করে বলে,

"কোথায় ছিলে তুমি? আমার কল কেন ধরছিলে না?"


রানি শান্ত গলায় বলল,

"কিছু বলবেন?"

"হোয়াট ডো ইউ মিন?"

"আমি জিজ্ঞাস করেছি আপনি কিছু বলবেন আমায়?"

"তোমায় আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি না?"

"বলুন।"

"কোথায় ছিলে?"

"আমার ঘরে।"

"কল কেন ধরছিলে না?"

"এটা আমার ইচ্ছে।"

"ইচ্ছে মাই ফুট।"

"...


"এনিওয়ে এই গুলি নাও।"

"কোনো দরকার নেই।"

"মানে?"

"মানে আমি এই গুলি নিব না।"

"কেন?"

"একজন অপরিচিত লোকের কাছ থেকে আমি কিছু নিব না। নিতে চাইও না।"

"দেখো রানি আমার রাগ উঠিও না।"

"তো আপনায় কে রাগতে বলল? প্লিজ গো।"


রাজ দাঁত কটমট করে গাড়িতে সজোরে একটা কিল দেয়। রানি ভয়ে কেঁপে উঠে। 


রানির দিকে ঝুঁকে কিছু বলতে গিয়েও বলে না। চুপ করে চলে যায় গাড়ি নিয়ে। 


রাজ বাথটাবে বসে আছে। শাওয়ার থেকে পানি পরছে তার সারা গায়ে। রানির কথার ধরন আর তার ব্যবহার নিয়ে সে চিন্তিত। কি হলো? এক রাতে এক টা মানুষের এতটা পরিবর্তন কেন? 


রাজ কিছুই ভেবে উঠতে পারছে না। না হদিশ মিলছে না এই কথার উত্তর গুলি।


দীর্ঘ একটা শাওয়ার নিয়ে রাজ ওয়াশরুম থেকে বের হলো। মাথা টাও বেশ ঠান্ডা আছে। রানির কাছ থেকে জানতে হবে কি হয়েছে। 

তাই রানি কে কল দেয় সে। 


রানি কল না ধরে কেটে দেয়। 

রাজ ম্যাসেজ পাঠায়, "প্লিজ পিকআপ দ্যা ফোন।"


রানি কল ধরে না। এই মানুষটার কল ধরে কি হবে তার?


চলবে....


(বিশ্বাস করুন নাইস নেক্সট কমেন্ট একটুও ভালো লাগে না। প্লিজ দুই চার লাইন গঠনমূলক কমেন্ট করে যাবেন)


Sabriha Sadi

0 Comments:

Post a Comment