গল্প মহীপতি পর্ব ৮

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_০৮

হৃদির,  আমনাফের সঙ্গে কথা আরহামের সঙ্গে অন্য একজন ও শুনে নেয়। 

আর সেটা অন্য কেউ নয় রোজি। 

কান থেকে ফোনটা রেখে রোজি সামনে তাকায়, 

" আরহামের থেকে তাহলে হৃদিকে দুরে রাখার ভালো একটা উপায় পেলাম। 

হৃদির গ্রামেই আমাকে সার্চ করতে হবে। "

রোজির মুখে সয়তানি হাসি। 

,

আরহামের অফিসের কাজে সারা দিন  ব্যাস্ত ছিল। 

সে পারেনি বাড়িতে যেতে। তার থেকে বড় কথা চায়নি। কারণ সে বাড়িতে গেলেই রাগ অবস্থায় হৃদিকে কষ্ট দিত। 

,

হৃদিও সারা দিন রুমে ছিল।। সার্ভেন্ট দুপুরের খাবার দিয়ে যায় হৃদিকে। 

কিন্তু এখন আর এই সোনার খাচায় বসে থাকতে মন চাইছে না৷ 

এ বাড়িতে সুন্দর একটা গার্ডেন আছে। 

হৃদি পাশ থেকে ওড়না জড়িয়ে আয়নার সামনে আসে। 

চুল গুলো আচড়ে নিচে চলে আসে৷। 

নিচে মিসেস ইউন সুহও গার্ডেন এ ছিলেন। 

হৃদি গুটি গুটি পায়ে গার্ডেনের  দরজা ঠেলে চলে আসে। 

" হৃদি৷ এদিকে আয় মা। "

হৃদি শ্বাশুড়ির কাছে গিয়ে বসে। 

গার্ডেনের এক পাশে একটা দোলনা৷। 

বাইরে শীত শীত আবহাওয়া।  

হৃদি ভালো করে ওড়না জড়িয়ে নেয়। 

" শীত লাগছে?"

হৃদি মাথা নাড়ায়৷ 

" না। "

" এখনি কফি আনবে আনজু৷ অপেক্ষা কর।"

কিছুক্ষণ এর  মাঝে একটা সার্ভেন্ট কফি এনে ওদের সামনে দেয়। 

হৃদি আর মিসেস ইউন সুহ দু'জন মিলে গল্প করতে করতে বিষয় টাকে এনজয় করে। 

হৃদির এ বাড়িতে শুরু মাত্র তার শ্বাশুড়ির সঙ্গে ভালো অনুভব করে। 

গার্ডেনের দরজা লাগিয়ে দিয়ে ভেতর থেকে কিছু দেখা যায়না। 

আরহাম বাড়িতে এসে সোজা রুমে চলে যায়। 

কিন্তু সেখানে হৃদিকে না দেখে মনের মাঝে কি সব উল্টো পাল্টা খেয়াল আসছে। 

মেয়েটা কি পালিয়ে গেল। কিন্তু কিভাবে ওর সিকিউরিটি যে টাইট৷ 

আরহাম অফিসের জামা পরা অবস্থায় আবার নিচে চলে আসে। 

তবে এবার মিসেস ইউন সুহ আর হৃদি দরজা ঠেলে বাসার ভেতরে আসছিলেন। 

আরহাম তা দেখে থমকে যায়। 

সাথে প্রচন্ড রাগ হতে লাগে আরহামের। 

সে হৃদির হাত ধরে রুমের দিকে নিয়ে যেতে লাগে। 

" আরে আরহাম এটা কি রকম ব্যাবহার। আমি এখানে আছি। ".

মায়ের কথা শুনে আরহাম পেছনে ফিরে তাকায়। 

তবে কিছু বলার আগেই  আরহাম দের বাড়িতে কেউ প্রবেশ করে। 

হৃদি তাকিয়ে আছে সে দিকে।। ইনি আবার কে। 

আরহামের মত এরকম ফিটফাট পোশাক তার৷। 

দেখতে যদিও লম্বা সুদর্শন। 

হৃদি ভাবছে এটা কে। 

ছেলেটা এগিয়ে আসে আরহাম এর সামনে। 

" Hello Brother. অতিথি  বাড়িতে আসলে ওয়েলকাম করতে হয়৷ এটা কি  আমাদের ভাবি কোন ভাবে?  হাই আমি ইরফান খান। Nice to meet you. "

ইরফান,  হৃদির দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। 

" এক রোজি কি কম ছিল এখন ইরফান ও এলো। আমার ছেলেটাকে এরা শান্তি দিবে না৷"

মিসেস ইউন সুহ মনে মনে কথা গুলো বলেন। 

তবে নিরিবিলি পরিবেশ হটাৎ করেই আরহামের চিৎকারে গরম হয়ে ওঠে,

" ভেতরে যাও হৃদি। আমি না বলা পর্যন্ত রুম থেকে বের হবা না৷ "

হৃদি কেঁপে ওঠে। 

এদিকে হৃদির হাত আরহাম এত জোরে ধরেছে হৃদির হাত ভেঙে যাচ্ছে। 

" ঠ ঠিক আ আছে। ছাড়ুন। "

আরহাম ছেড়ে দেয় হৃদির হাত৷ 

হৃদি উপরে চলে আসে। 

রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দেয়। 

হৃদির খারাপ লাগছে ভীষণ। আরহাম শুধু ওকে বকে। জীবনে ওর বাবা কখনো ওকে এভাবে বকেনি।। এই আরহাম এই পর্যন্ত হৃদিকে ঠিক যত বার বকেছে। হৃদি ওর পুরো জীবনে এত গুলো বকুনি শুনেনি। 

,

,

,

আরহামের সামনে বসে আছে ইরফান। 

দুজনের মুখেই কোল্ড একটা এক্সপ্রেশন। 

" কি চাই? "

আরহামের কথায় ইরফান আরহাম এর দিকে তাকায়, 

" যা চাই দিবি কি?"

" কি চাই তাই বল। "

" ভাবি, "

ভাবির পরের কথা টুকু বলার আগেই আরহামের চোখ ইরফান কে গিলে খাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, 

ইরফান বলে,

" কুল বস কুল। আমিত জাস্ট বলতে চাইছিলাম ভাবি অনেক সুন্দর। "

" আমার স্ত্রী যাই হোক না কেন তা তোর মুখে শুনতে চাইনা৷ "

" ওকে বস। সমস্যা নেই। আমি এখানে হৃদয়পুর গ্রাম সম্পর্কে একটা তথ্য দিতে এসেছিলাম। "

" দয়া করে দ্রুত বল। "

" ভাই তুইত পারলি না গ্রাম টাকে কিনে দিতে। তাই প্রজেক্ট টা আমার কাছে এসেছে। আমি ওই গ্রামটা এখন কিনে দেব। এত বড় জিত আমার। তাই ভাবলাম তোকে বলি। তোকে না বলে আমিত কোন কাজ করিনা তাইনা৷ "

" Go for it. আরহাম খান থাকতে ওই গ্রামের কিছু হবেনা৷ যদি পারিস দিয়ে দেখ। "

আরহাম আর কিছু না বলে উপরে চলে আসে। 

ইরফান আরহামের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,

" ওটা আমারি হবে৷ তোর যা সব আমার হবে। তোর বিবিজান ও। ".

কথাটা বলে ইরফান সেখান থেকে চলে যায়।। 

মিসেস ইউন- সুহ রান্না ঘরে এসে খাবার বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন৷ 

এমন সময় রোজি আসে সেখানে, 

" আন্টি। "

" হ্যা বলো। "

" আন্টি ইরফান ভাই কেন আপনাদের সঙ্গে থাকেনা৷ আমিত শুনেছি ওনি আঙ্কেল এর, "

" রুমে যাও রোজি। এসব নিয়ে কথ বলতে চাইনা৷ "

" আসলে আন্টি। "

মিসেস ইউন সুহ, রোজির দিকে তাকায়। 

বোঝা যাচ্ছে তিনি রেগে আছে। 

রোজি আর সাহস করে কিছু বলতে পারল না চলে গেল সেখান থেকে। 

,

,

রুমে এসে হৃদিকে বসে থাকতে দেখে আরহাম এর কেমন জেন আরও রাগ হচ্ছে। 

সে গিয়ে হৃদির হাত ধরে ওকে বিছনায় ফেলে। 

হৃদি বেশ ভয় পায় আর ব্যাথাও। 

আরহাম হৃদির উপরে চলে আসে,

" নিচে কেন গেছিলি?"

" আ আমি ত শুধু আম্মার সঙ্গে কথা বলছিলাম। আমি কিছু করিনি। "

আরহাম হৃদির গাল দুটো শক্ত করে হাতের ভেতর নিয়ে আসে। 

হৃদির চোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে। 

" কোথাও যাবিনা৷ তুই আমার অনুমতি ছাড়া কোথাও যাবিনা৷ এ ঘর থেকেও বাইরে যাবিনা। 

ওর চোখ তোর শরীর টাকে দেখছিল। আমার ভালো লাগছিল না। বুঝতে পেরেছিস তুই। নাকি আরও বুঝাব৷ বল জান বল। "

" বুঝতে পেরেছি৷ "

আরহাম হৃদির মুখ থেকে হাত সরিয়ে হৃদির ঠোঁট আকড়ে ধরে। 

হৃদি চোখ বন্ধ করে আরহামের সব অত্যাচার সহ্য করছে। 

কিছুক্ষণ পর আরহামের রাগটা একটু কমে। 

আরহাম হৃদির ঠোঁট ছেড়ে দেয়। 

হৃদির ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে। 

আরহাম হৃদির ঠোঁটে হাত দিয়ে রক্ত মুছে দেয়৷ 

হৃদি ব্যাথায় চোখ বন্ধ করে নেয়। 

আরহাম হৃদির গলায় মুখ গুঁজে। 

হৃদি কিছু বলছে না। 

তবে আরহাম তার কাজে সচল৷ 

সে হৃদির জামাটা নিচে সরবে এমন সময় তার মনে পড়ল হৃদি হয়ত খায় নি এখনো। 

তাই আরহাম হৃদির উপর থেকে উঠে যায়। 

" যাও ফ্রেশ হয়ে এসো। খাবার খেতে হবে। "

হৃদি মুখ ফিরিয়ে নেয়। 

বিছনার অন্য পাশে গিয়ে কম্বল টেনে আরহামের দিকে পিঠ করে শুয়ে পরে। 

আরহাম বুঝতে পারে সবটাই।। তবে সে কিছু বলেনা। 

নিজে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কাপড় বদলে আসে। 

তারপর ডিনার পাঠিয়ে দিতে বলে। 

কিছুক্ষণ পর মেড এসে ওদের খাবার দিয়ে যায়৷ 

হৃদি চোখ বন্ধ করে সেভাবেই শুয়ে থাকে। 

আরহাম হৃদির কাছে এসে হৃদিকে পাজকোলে তুলে নেয়, 

" ছাড়ুন আমাকে। "

" ছাড়ব না। "

" ছাড়ুন৷ "

" সুস৷ ".

আরহামের উপর কথা বলার সাহস হৃদির নেই। 

আরহাম নিজের হাতে হৃদিকে খাইয়ে দেয়।। খাবার টাও হৃদির প্রিয় ছিল। গরুর মাংস আর ভাত৷ 

হৃদি না করেনা৷ এমনি থেকেও এদের কিছু বিদেশি খাবার যা হৃদির পছন্দ নয় মোটেই। 

হৃদি খেতে খেতে বলে,

" এ একটা কথা বলব। "( হেঁচকি তুলে)

" হুম "

" আমার জন্য কি বাঙালি রান্না করা যায়না৷ যদি না যায় তবে রান্না আমি করবনি। আমাকে শুধু জিনিস পত্র এনে দিবেন। "

আরহাম হৃদির দিকে তাকিয়ে আছে।

মেয়েটা সত্যি খাবার কষ্ট করেছে। তার স্ত্রী খাবার কষ্ট করেছে। ভাবতেই অবাক লাগছে। 

" কাল থেকে নতুন সেফ আসবে তোমার জন্য সব রকম বাঙালী খাবারের ব্যাবস্থা করা হবে।"

হৃদি খুশি হয়ে যায়৷। 

হৃদির হাসি এত মিষ্টি৷ আরহাম এই প্রথম ওই হাসি দেখল। 

ভীষণ মায়াবী। 

আরহাম হৃদির হাসি গালে চুমু খায়। 

হৃদি খাবার বাদ দিয়ে আরহামের দিকে তাকায়। 

" কি হলো খাও। "

হৃদি আর কিছু বলেনা খেয়ে নেয়। 

চলবে? 


(

গল্প মহীপতি পর্ব ৭

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_০৭

সকাল হয়েছে এ কথা বলেছে পাখি, বলেছো সূর্য। বলেছে আকাশ। 

সব সাক্ষী প্রমাণ নিয়ে সূর্য মামা যখন পূর্ব  আকাশে উকি দেয় তখন হৃদির চোখে রোদের এক ঝলকানি এসে পরে। 

হৃদি একটু নড়তে গেলে শরীরে ব্যাথা অনুভব করে। 

হৃদি চোখ খুলে পাশে আরহাম কে দেখতে পায়।  

কি মিষ্টি দেখা যাচ্ছে। ওকে এত সুদর্শন লাগে। 

মায়াবী। 

হৃদির কালকে রাতের কথা সব মনে পড়তে থাকে। 

হৃদির মনে পড়ে হৃদি কাল কিভাবে আরহাম কে টেনে ধরেছিল। 

হৃদি ভীষণ লজ্জা পেয়ে যায়। কিন্তু কাল হৃদি এমন কেন করেছিল। 

হৃদির কাছে উত্তর নেই। 

তবে এখন আর এসব ভেবে লাভ নেই। এখন তাকে যেতে হবে ওয়াসরুমে। শুয়ে থাকলে যে আর হচ্ছে না। 

হৃদি আরহামের মাথাটা নিজের বুকের উপর থেকে সরিয়ে উঠে বসে। কিন্তু হৃদির পেটে ভীষণ ব্যাথা করছে। হৃদি নামতে গিয়ে ঠাস পরে যায়। কিছু পরার শব্দ শুনে আরহাম লাফিয়ে ওঠে। 

আরহাম দেখে সে যে বালিসে শুয়ে ছিল সেই বালিস নিচে পরে আছে। 

আরহামের ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে আছে হৃদির দিকে। 

হৃদি ও ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। 

আরহাম কিছুক্ষণ পর শব্দ করে হেসে দেয়। 

হৃদির চোখে পানি চলে আসে।। সে এখানে পড়ে গেছে আর ওই লোক কিনা হাসছে। 

" জান সরি। আমারি ভুল। তোমাকে আমার ওয়াসরুমে দিয়ে আসা উচিত। "

আরহাম উঠে হৃদিকে নিয়ে ওয়াসরুমে দিয়ে আসে। 

" আমার মাজায় ব্যাথা পেয়েছি৷ "

আরহাম হৃদির কিউট ঠোঁটে চুমু খায়। 

" সমস্যা নেই আমি ঔষধ দিয়ে দেব ঠিক হয়ে যাবে। "

হৃদির মনে হচ্ছে না আরহাম তাকে জোর করে বিয়ে করেছে। 

হৃদি আরহামের সব কাজ পর্যবেক্ষণ করছে।। আরহাম নিজ হাতে হৃদিকে গোসল করিয়ে আয়নার সামনে এনে দাড় করায়। 

হৃদি তাকিয়ে আছে আরহামের দিকে। 

আরহাম হৃদির চুল শুকাচ্ছে। 

" সামনে তাকান ম্যাডাম আমাকে অনেক দেখা যাবে। সারা জীবন পরে আছে। "

হৃদি লজ্জা পায় বটে তাই চোখ সরিয়ে সামনে তাকায়। আয়নার মাঝে হৃদি দেখে তার গলায় আরহামের সুন্দর দাঁতের করা আর্ট  লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। 

হৃদিকে একটা জামা পরিয়েছে আরহাম। 

জামা গুলো সব কালকে আনা৷ 

হৃদির চুল শুকিয়ে হৃদিকে নিয়ে রুমে আসে আরহাম। 

" নিচে যাবে আমার সঙ্গে খেতে? নাকি উপরে নিয়ে আসব  খাবার? "

গোসল করার পর হৃদির যন্ত্রণা আরও একটু কমেছে। তাই হৃদি বলে

" না চলুন নিচে যাই। "

আরহাম নিজে ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্য তৈরি হয়ে নেয়।। এরপর সে হৃদিকে নিয়ে নিচে  চলে আসে। 

মিস্টার এবং মিসেস খান দু'জন একটু আগেই নিচে এসেছে। সব সার্ভেন্ট  ব্রেকফাস্ট সার্ভ করছে। 

আরহাম হৃদির হাত ধরে নিচে এসে বসে। 

মিস্টার খান হৃদিকে সহ্য করতে পারেন না। 

হৃদিও ভালল বুঝে এ বিষয় টা। 

মিষ্টার খান ব্রেকফাস্ট প্লেটে  নিতে নিতে আড় চোখে তাকাচ্ছে তিনি। 

তার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। 

সে তার ছেলের জন্য বিজনেস ডিল সাজিয়ে রেখেছিল অথচ এই মেয়েটা হুট করে চলে এসেছে। 

মিসেস ইউন-সুহ স্বামীর মনের কথা বেশ ভালোই  বুঝতে পারেন, 

" জাগি.....আমাদের ছেলের বউ কি সুন্দর তাইনা৷ এবার শুরু দাদা দাদি হতে পারলেই হয়ে যাচ্ছে তাইনা৷ "

হৃদির মনে পড়ে যায় কালকে রাতের কথা। 

গাল তার অটোমেটিক লাল হয়ে যায়। 

এর মাঝেই কে যেন পেছন থেকে বলে ওঠে,

" হ্যা আন্টি ইউন-সুহ। আমর মনে হয় এবার আমার আর আরহামের বিয়েটা করে নেওয়া উচিত।"

হৃদি হটাৎ করে কেঁপে ওঠে।

আরহামের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। 

এই রেজি নামের মেয়েটাকে তার মোটেই পছন্দ নয়। 

এ বাড়িতে এসে আরহামের সম্পর্কে এসব ফালতু কথা বলার সাহস শুধু ওই মেয়েটারি আছে। 

মিসেস ইউন-সুহ পরিস্থিতি সামাল দিতে বলেন,

" রোজি কেমন আছো তুমি? এসো এসো আমাদের নতুন বউ দেখে যাও। "

" নতুন বউ!"

" হ্যাঁ নতুন বউ। এই দেখো আমার হৃদি। আরহামের বউ। "

রোজি আগে থেকে যদিও সব জানে তাও সে এমন ভাব ধরছে যেন সে কিছুই জানেনা। 

" আরহাম বিয়ে কবে করল আন্টি। আঙ্কেল এসব কি বলছে আন্টি তুমি বলোনা এসব মিথ্যা বলো আঙ্কেল। "

" আসলে রোজি.. "

বাবাকে পুরো কথা শেষ করতে না দিয়ে আরহাম বলে ওঠে,

" আসলে রোজ তোমাকে বিয়ে করার কথা আমার জীবনে ছিলনা। 

আমি এমন কোন কমিটমেন্ট তোমাকে দেয়নি। 

আমার স্ত্রী হৃদি। দয়া করে এ বাড়িতে এসে আমার বউ এর সামনে আমাকে নিজের হবু স্বামী বলে দাবি করবে না।

I hope you understand. 

হৃদি উঠো রুমে যাও। "

হৃদি উঠে দাঁড়ায়। 

আর তখন হৃদি প্রথম রোজির মুখ দেখে। 

অসম্ভব সুন্দর একটা মেয়ে। পোশাক তার ফিটফাট। 

দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভীষণ মেকাপ করে। 

হৃদি ত প্রাকৃতিক ভাবে সুন্দর। মেকাপ সে খুব একটা পছন্দ করেনা। 

হৃদির সামনে রোজিকে দেখলে যদিও রোজি সুন্দর বেশি তাও সবাই হৃদিকেই বেছে নেবে। কারণ মানুষ মেকি কিছু পছন্দ করেনা। 

আরহাম হৃদির হাত ধরে ওকে নিয়ে উপরের চলে যায়। 

মিসেস ইউন সুহ হাসে, আর আড় চোখে মিস্টার খান এর দিকে তাকায়। 

তিনি রেগে ফেটে যাচ্ছে। 

মিসেস ইউন সুহ ও চলে যায় নিজের রুমে,

" আঙ্কেল এই মেয়ে টার  জন্য আরহাম আমাকে পাত্তা দিচ্ছে না। "

" চিন্তা করিস না মা। এই মেয়েকে আমরা তাড়িয়ে দেব৷ তোর সাহায্য লাগবে যার জন্য তোকে আমি ডেকেছি। এ বাড়িতে৷ পারবি না থাকতে?"

" হ্যাঁ পারব৷ "

তবে মিস্টার খানের মাথায় ঠিক কি চলছে। 

,

,

,

,

,

অফিসে বসে নিজের কাজ করছে আরহাম। 

তবে মাথার ভেতর ঘুরছে একটা বিষয়। 

রোজি আর ওর বাবার দ্বিতীয় টার্গেট কি। সেটা ভাবছে আরহাম। 

এর মাঝেই রুমে আসে জং সুক, 

" স্যার। "

" হ্যা। "

" স্যার আপনি যা জানতে বলেছিলেন। "

" বলো। "

" স্যার........ 

.....

.....

.....

....."

আরহাম, জং সুকের দিকে তাকিয়ে আছে। 

" স্যার! "

আরহাম হাসে। 

ওই হাসিতে ভীষণ গভীরতা লুকিয়ে আছে। যে কেউ শুনলে তার শরীরে পশম দাঁড়িয়ে যাবে। 

এমন সময় আরহামের ফোনে নোটিফিকেশন আসে। 

খান বাড়ির একটা ল্যাল লাইন আছে। 

যেটা কমন নাম্বার। সেই ল্যাল লাইনে একটা টেলিফোন আরহামের রুমেও আছে। আরহামের রুমের সব কিছুই আরহামের নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেউ যদি ল্যাল লাইনে ওর রুম থেকে কথা বলে সেটাও রেকর্ড হয়ে যায়। 

আরহাম ভ্রু কুচকে সেটা ওপেন করে, 

হৃদি করোর সঙ্গে কথা বলছে, 

,

,

হৃদি বসে ছিল বিছনায়। হটাৎ করেই রুমের কেণায় রাখা ফেনটা বেজে ওঠায় হৃদি প্রথম ভয় পেলেও  পরে গিয়ে সেটা ধরে। হৃদি ভেবেছিল এটা হয়ত আরহাম৷ কিন্তু তাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে এটা ছিল নিহাদ। হৃদির  বাবার বন্ধুর ছেলে। হৃদির থেকে বয়সে একটু বড়। তবে ওরা বন্ধুর মত৷ 

" হ্যালো। "

" কে?  হৃদি? "

" হ্যাঁ। নিহাদ ভাই আপনি?"

" হ্যাঁ। বড্ড কষ্ট করে আরহাম খানের বাড়ির এই নাম্বার টদ জোগাড় করেছি হৃদি। তুমি কেমন আছো?"

" আমি ভালে আছি। আব্বু কেমন আছে নিহাদ ভাই। "

" ভালো নেই হৃদি। আমরা তোমাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। "

" কিছুতে লাভ নেই। ও আমাকে কেথাও যেতে দেবেনা। আমি চাইনা আমার জন্য তোমাদের সমস্যা হোক। তোমরা প্লিজ এসব করোনা। আব্বুকে একটু দিবা নিহাদ ভাই। "

" চাচাত এখন আমার কাছে নেই। আমি কাল থেকে চেষ্টা করছি৷ কিন্তু কোন উপায় পায়নি। এই মাত্র এই নাম্বার পেলাম। কিন্তু এতে যে তোমাকে পাব ভাবিনি। "

" আব্বুকে বলো আমি ভালে আছি। চিন্তা না করতে। "

" তুমি চিন্তা করোনা হৃদি তোমাকে ওখান থেকে বের করে আনব আমি। "

বলতে বলতে ফোন কেটে যায়। 

হৃদির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। 

তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। 

আজ ৩ দিন সে বাবকে দেখেনা। 

কালও কথা বলতে গিয়েই ওত কিছু ঘটে গেছিল। 

,

,

আরহাম নিজের হাতে থাকা ফোনটা ছুড়ে মারে। 

" হাউ ডেয়ার সি। "

আরহাম প্রচন্ড রেগে গেছে এই মুহুর্তে। 

......

চলবে?


গল্প মহীপতি পর্ব ৬

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_০৬( ১৮+ এলার্ট) 

(পূর্ণ এবং প্রাপ্ত বয়স্ক দের জন্য) 

আরহাম, হৃদির গালে স্লাইড করতে করতে হৃদির দিকে ঝুকে যায়। 

হৃদি চোখ বন্ধ করে নেয়। 

হৃদির চোখ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরহামের ঠোঁট জোড়া হৃদির ঠোঁটকে আকড়ে ধরে। 

হৃদি চোখ খুলতে আরহামের চোখে চোখ পড়ে তার। 

আরহাম প্রথম নিরিবিলি চুমু খেলেও পরে গিয়ে এগ্রেসিভ হয়ে যায়। 

হৃদি আরহামের সার্ট খামচে ধরে। 

আরহাম হৃদিকে বিছনায় ধাক্কা দেয়। 

হৃদি কেঁপে ওঠে। 

ভয়ার্তক দৃষ্টিতে আরহামের দিকে তাকায়। 

আরহামে শক্ত বাহুর ভেতর হৃদি সমাহিত হয়ে যায়। 

হৃদির কপালে চুমু খায় আরহাম। 

হৃদি আবার চোখ পিটপিট করে তাকায়। 

হৃদি বুঝতে পারছে না লোকটা তাকে ঠিক রাগের আদর করছে নাকি সাভাবিক আদর করছে। 

হৃদি চোখ দুটো আরহামের দিকে স্থির। 

আরহাম হৃদির গলায় মুখ ডোবায়। 

হৃদির অবিশ্বাস্য মাতাল করা ঘ্রাণ আরহাম কে কেমন পাগল বানিয়ে দিচ্ছে। 

আরহাম হৃদির সার্ট এর ভেতর দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দেয়। 

হৃদি কেঁপে ওঠে। আরহামের হাত হৃদির কাতর স্থানে গিয়ে আঁটকে। 

হৃদি চোখ বন্ধ করে বিছনার চাদর খামচে ধরে। 

আরহামের হাত হৃদির শরীরে বিচরণ করতে থাকে। 

আরহাম লক্ষ্য করে হৃদি মুখে যাই বলুক তার শরীর আরহামের ছোঁয়াতে রিলাক্ট করছে। 

আরহাম হৃদির প্যান্ট টা এক টানে খুলে ফেলে। 

" জান তোমার অনেক কথা কিন্তু আমার ছোঁয়াতে তোমার শরীর যে সায় দিচ্ছে তাকে কি করে থামাবে?"

" আ আমি। আ আমার,  আমার। "

হৃদিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে আরহাম হৃদির ঠোঁট আকড়ে ধরে। 

হৃদি চুপ হয়ে যায়। 

আরহামের ছোঁয়া এমন পর্যায় চলে এসেছে এখন হৃদিকে ছেড়ে  দিলে মেয়েটার কষ্ট হবে। 

যদিও আরহামের কষ্ট বেশি হবে। 

এই শক্ত দেহের পুরুষ কঠিন হলেও অসভ্য নয়। সে চাইলে সব নারী তার জন্য পাগল। সব নারীকে তার বিছনায় আনতে পারে সে৷ কিন্তু সে কখনো এ কাজ করেনি৷ 

আরহাম হৃদিকে টিস করতে চায়। হৃদির বুক থেকে মুখ তুলে আরহাম সোজা হৃদির চোখের দিকে তাকায়।। আরহামের বিচরণ বন্ধ হয়ে গেছে হৃদির শরীরে এটা অনুভব করে হৃদি চোখ খুলে তাকায়। 

" জান তুমিত আমার ছোঁয়া পছন্দ করো না। আমার থেকে পালাতে চাও। তুমি যাও রেডি হয়ে নেও তোমাকে আমি তোমার গ্রামে দিয়ে আসি। "

কিন্তু হৃদির মাথা খালি হয়ে গেছে এই মুহুর্তে। তার শরীরে যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। 

হৃদি আরহামের হাত ধরে টানছে। 

আরহাম ভ্রু কুচকে তাকায়,

" কি হয়েছে। "

" আমি জানিনা আমার শরীরে যন্ত্রণা হচ্ছে। "

হৃদির চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

" কিন্তু। "

" কিন্তু নেই ( হৃদি চিল্লিয়ে ওঠে) আমার কষ্ট হচ্ছে। প্লিজ আমাকে মুক্তি দিন। "

আরহামের মুখে বাকা হাসি। 

আরহাম আবারো হৃদির উপরে চলে আসে। 

হৃদির ঠোঁট আকড়ে ধরে। 

কিছুক্ষণ এর মাঝেই পুরো রুমে শুধু হৃদির গো*ঙ্গানি  ভেসে বেড়াচ্ছে। 

" আহ........  আমার কষ্ট হচ্ছে। "

" Because this is your first time please hold on."

হৃদি আরহামে পিঠে নখের আঁচড়ে ভরিয়ে দিয়েছে।  

আরহাম যেন ভুলেই গেছে এটা হৃদির প্রথম বার। 

আরহাম নিজেকে সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে। 

তবে হৃদির চোখে এখন পানি। 

" আমি আর পারছি না প্লিজ। "

আরহাম হৃদিকে আর বিরক্ত করেনা। 

হৃদির গালে চুমু খায়। 

হৃদিকে পাজকোলে তুলে ওয়াসরুমে নিয়ে আসে। 

নিজ হাতে হৃদিকে পরিষ্কার করিয়ে গোসল করিয়ে দেয়। 

হৃরি আরহামের শরীরে নিজেকে ডিল ছেড়ে দিয়েছে। 

আরহাম হৃদিকে গোসল করিয়ে নাইট ড্রেস পরিয়ে দেয়। 

আজই আরহাম হৃদির সব জামা আনিয়েছে তবে হৃদিকে তার পোশাকে এত মিষ্টি দেখাচ্ছে এই জন্য কিছু বলেনি। 

আরহাম হৃদিকে পাজকোলে তুলে বিছনায় শুইয়ে দেয়। 

হৃদি চোখ বন্ধ করে রেখেছে। 

সে ক্লান্ত। আরহাম হৃদির বন্ধ চোখে চুমু খায়। 

এরপর সরে আসে। 

বেলকনিতে এসে সার্ভেন্ট কে কল করে খাবার দিয়ে যেতে। 

রাত প্রায় ১ টা বাজে। 

এখন সার্ভেন্ট তার কুয়াটাকে ঘুমাচ্ছিল। 

আরহামের ফোন পেয়ে সে তড়িঘড়ি করে কিচেনে এসে খাবার গরম করতে দেয়। 

মিসেস খান ও এর মাঝে ওদের বিরক্ত করেন নি। 

,

আরহাম ফোন কেটে হাসছে।

কারণ সে কিস করার মাঝে হৃদিকে ভায়গ্রা খাইয়ে দিয়েছিল। যা হৃদি বুঝতে পারেনি। 

তবে এতে হৃদির শরীর আরহামে ছোঁয়ায় আরও বেশি রিয়াক্ট করা শুরু করে। 

কিছুক্ষণ এর মাঝে হৃদি নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারায়। 

আরহাম হৃদির সামনে একটা ডেভিল। 

আর হৃদি হলো এঞ্জেল। 

আরহাম ভেতরে আসে। 

সার্ভেন্ট খাবার দিয়ে যায়। 

আরহাম সেগুলো টেবিলে রাখে। 

হৃদির কাছে এসে আরহাম হৃদিকে আস্তে ডাকে,

" পদ্মা উঠো প্লিজ। খাবার খেতে হবে। "

হৃদি পিটপিট করে চোখ খুলে  তাকায়। 

" get up babygirl."

আরহাম হৃদিকে উঠিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দেয়। ঔষধ ও দিয়ে দেয়। যাতে হৃদির ব্যাথা কমে। 

এরপর হৃদি কে আবার শুইয়ে দেয়। 

হৃদি ঘুমিয়ে যায়। 

আরহাম হৃদিকে ঘুম রেখে বেরিয়ে আসে। 

সোজা তার স্টাডি রুমে চলে যায়।। এখানে তার বিজনেস এর সব কাজ কর্ম চলে। 

আরহাম তার টেবিলের চেয়ারে বসে কিছু ফাইল চেক করছিল। 

এমন সময় তার ফোনে একটা ফোন আসে।। ফেনটা গুরুত্বপূর্ণ তাই আরহাম সেটা পিক করে। 

" হ্যালো। "

"বস। "

" বল। "

" হৃদয়পুর ( হৃদির গ্রাম)  গ্রামের দিকে ওই লোক গুলো সমস্যা করছে। "

" আর সেটা কি রকম? "

".........

........

......."

" জং সুক এই পুরো দায়িত্ব টা তোমার ছিল। "

" কিন্তু স্যার আমিত সব রকম চেষ্টা করছি। "

" Try harder."

" I am trying my best. "

" Then give me best result. "

আরহাম ফোন কেটে দেয়। 

জং সুক এখনো অফিসে বসে আছে। 

" সে ঘুমাবে আর আমার ঘুম নেই। "

জং সুক হয়ে গেছে সাকের করাত , 

এদিক গেলেও কাটে ওদিক গেলেও কাটে।

,

,

,

মিসেস ইউন-সুহ, আরহামের স্টাডি রুমের দিকে এগোতে সেখালে লাইর জ্বলা দেখে তিনি ভেতরে চলে আসে। 

আরহাম ল্যাপটপের দিকে মুখ রেখেই বলে,

" Mom what's happened?  এত রাত পর্যন্ত কেন জেগে আছো?"

" তুই জানলি কিভাবে এটা আমি! "

" আমার স্টাডি রুমে আমি ব্যাতিত অন্য কারোর যদি পর্মিশন না নিয়ে আসার সাহস থাকে তাহলে সেটা হলে তুমি। "

"হ্যাঁ বুঝলাম। তুই এত রাতে বউ রেখে এখানে কি করছিস?"

" কাজ। "

" আর করা লাগবে না। যা রুমে যা। "

" মা প্লিজ। "

" কোন প্লিজ নাই। "

মিসেস ইউন- সুক আরহমের ল্যাপটপ বন্ধ করে দেন। 

" যা রুমে যা। "

" বাট মা। "

" যা। "

আরহাম জানে তার মায়ের সঙ্গে আর তর্ক করে লাভ নেই তাই সে চুপচাপ সেখান থেকে চলে আসে। 

মিসেস খান লাইট বন্ধ করে নিজের রুমে চলে আসে। 

,

,

আরহাম রুমে এসে হৃদিকে বুকে জড়িয়ে নেয়। 

হৃদিও ঘুমের মাঝে হৃদির বুকে লুকায়। 

আরহাম হৃদির কপালে চুমু খায়। 

" আমার রাজ্যের রানি হতে হবে তোমাকে। সেটা তুমি চাইলে ভালো। না চাইলে আমার ভালো। "

কথা গুলো বলে আরহাম গম্ভীর কণ্ঠে হাসে। 

এরপর আরহামও ঘুমিয়ে যায়। 

হৃদির ঘ্রাণে ঘুমের ঔষধের মত মোহ আছে। আরহামের ঘুম হয়ে যায়। 

,

,

চলবে?


গল্প মহীপতি পর্ব ৫

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_০৫

" স্যার একটা কথা বলব। "

জং সুক এর কথা শুনে আরহাম ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে সং সুকের দিকে তাকায়, 

" হুম। "

" দুনিয়াতে এত মেয়ে থকতে ওই বাচ্চা মেয়পটা কেন স্যার! "

" পদ্মা? "

" জি। "

"  Because I am the venom and she is the life

( কারণ আমি বিষ আর সে জীবন) "

জং সুক হাবলার মত তাকিয়ে আছে। 

আরহাম জং সুকের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছে সে কিছুই বুঝেনি, 

" কি হলো এভাবে তাকিয়ে কি দেখছিস? "

" ইয়ে মানে বুঝালম না। "

" বুঝবেও না। এসব বুঝার জন্য তোকে আরও বড় হতে হবে। "

জং সুক এবার নিজের হাত থেকে ফাইল নিয়ে টেবিলে রাখে,

" একটু পর মিটিং আছে মিস্টার চই কে আর কতক্ষণ বসিয়ে রাখবেন। এই যে ডিটেইলস."

জং সুক ফাইলটা রেখে নিজের কেবিনে চলে আসে। 

কিছুক্ষণ এর মাঝে মিটিং শুরু হয়। 

মিটিং রুমে সবার নজর প্রেজেন্টেশন এর দিকে তবে এদিকে আরহামের মনের মাঝে খালি একটা জিনিস ঘুর পাক খাচ্ছে আর সেটা হলো হৃদি কি করছে। 

আরহাম নিজের ফোনটা নিয়ে তার রুমে হৃদির জন্য লাগিয়ে রাখা ক্যামেরার ফুজেট চেক করে। 

মেয়েটা নিরিবিলি ঘুমিয়ে আছে। 

যে জামাটা আরহাম তাকে দিয়েছিল সেটা পরেই শুয়ে ঘুমাচ্ছে। 

এতে খেয়াল করলে দেখা যাচ্ছে হৃদির পরনের সার্ট এর কলার্ট থেকে সরে আছে। ওর গলাটা পুরো দেখা যাচ্ছে। 

সাথে বুকের কিছু অংশ। 

আরহাম নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে, 

" Baby Girl You Are Making Me Hor*ny." 

" Sir that's all for today. I hope you will like our project. (স্যার আজকের মত এইটুকুই। আমি আশাবাদী যে আপনি আমাদের প্রজেক্ট পছন্দ করবেন)"

আরহাম মিস্টার চই এর দিকে তাকিয়ে জং সুক কে ইসারা করে। 

জং সুক জানে এর মানে কি। 

আরহাম কোন কিছু না বলেই মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে যায়। 

মিস্টার চই জিনি ডিলটা নিয়ে এসেছিলেন তিনি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আরহামে যাওয়ার দিকে,

জং সুক মিস্টার চইকে বলেন,

" স্যার সব কাগজ রেডি করতে বলেছেন মিস্টার চই। আপনি প্লিজ আমাকে সাবমিট করুন দ্রুত। "

" জি অবশ্যই। "

,

,

,

দুপুর সময়। 

হৃদি বিছনায় উঠে বসে। 

বাবাকে রেখে জীবনে একটা রাত কোথাও থাকেনি হৃদি। 

মনের ভেতর শুধু বাবাকে চাইছে৷ একটু যদি কথা বলতে পারত। কতই না ভালো লাগত। 

এর মাঝে হটাৎ দরজায় নক পরে। 

হৃদি ভয়ে আছে। কালকের পর থেকে  যা যা ঘটছে তার সঙ্গে। বিশেষ করে মিস্টার খান ওনাকে দেখে ভীষণ ভয় পাচ্ছে হৃদি।। আরহামের থেকেও ভয়ানক মানুষ টা। 

হৃদির ভাবনার ভিড়ে আবারো দরজায় নক। 

হৃদি গিয়ে দরজা খুলে দেয়। 

" ম্যাম আপনার লাঞ্চ। "

" ধন্যবাদ। "

" ম্যাম পুরোটা শেষ করবেন। অফিস থেকে স্যার এআই নিচ থেকে মিসেস খান দু'জনই আপনাকে পুরোটা শেষ করতে বলেছেন। "

হৃদি মাথা নাড়ায়। 

সামনে  থাকা সার্ভেন্ট এর বয়স এই ৪০ কি ৩৮ হবে। 

মহিলার হৃদির মত একটা মেয়ে আছে।

তাই তার হৃদির জন্য বড্ড মায়া লাগে মাঝে মধ্যে। 

কিভাবে মেয়েটা এখানে এসে পৌছালো। 

তবে হৃদিকে দেখে মনে হয়না সে নিজের ইচ্ছেতে এখানে এসেছে। 

অবশ্যই তাকে ফোর্স করা হয়েছে। 

সার্ভেন্ট লেডি চলে যায়। 

হৃদি খাবারটা নিয়ে টেবিলে রাখে। 

আরহামের রুমে সব আছে। 

সোফার সামনে একটা টেবিল। 

সেখানেই খাবার গুলো রেখে খাবারের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। 

হৃদি জানেনা তার বাবা খাচ্ছে কিনা। 

তার বাবা যে মানুষ হয়ত এতক্ষণে কাঁদতে কাঁদতে সব কিছু এক করে ফেলেছে। 

সকাল বেলায়ও মিস্টার খান এর জন্য হৃদি খেতে পারেনি। 

তাই এখন এত সব না ভেবে হৃদি খেয়ে নেয়। 

খাওয়ার পর সার্ভেন্ট এসে প্লেট গুলে নিয়ে যায়। হৃদির শরীরটা এখন একটু ভালো লাগছে। 

জানালার পর্দা সরিয়ে হৃদি বাইরে দেখে।  

গ্লাসের ওপাশে সব গার্ড। এত কড়া গার্ড দিয়ে সিকিওর করা সব জায়গা। 

হৃদি একটু ভয় পেয়ে পর্দা টেনে দেয়। 

হৃদি ভাবে নাহ যদি কপাল ভালো থাকে সে পালিয়ে যেতেও  পারে। 

হৃদি ওয়াসরুমে গিয়ে চেক করে নাহ পালাবার কোন রাস্তা নেই। 

হৃদি এবার রুম থেকে বেরিয়ে আসে। 

সিড়ির কাছে আসতে যে সার্ভেন্ট তাকে খাবার দিয়েছিল তার সঙ্গে দেখা। 

সার্ভেন্ট কে দেখে হৃদি একটু কেঁপে ওঠে কিন্তু পরবর্তীতে নিজেকে সামলে নেয়, 

"ম্যাম কোথাও যাবেন?"

" আপনি বয়সে আমার বড় আমাকে ম্যাম বলবেন না প্লিজ। "

" কি বলব তাহলে?"

" মামনি বলেন সমস্যা নেই। "

সার্ভেন্ট বুঝতে পারে হৃদির মনটা কত বড়। 

" ঠিক আছে মামনি তুমি এখানে কি করো?"

" আমার না ভালো লাগছে না আামকে এই বাড়িটা ঘুরে দেখাবেন আন্টি? "

" কিন্তু মামনি তুমি যে পোশাকে আছো এই পোশাকে তোমাকে কোন গার্ড দেখে ফেললে স্যার আমাদের আস্ত রাখবে না। "

" ও৷ আমি পাল্টে আসি। কিন্তু আমারত কোন জামা নেই। "

" কে বলেছে জামা নেই। "

মিসেস খান এর কন্ঠ শুনে দু'জন পেছনে তাকায়, 

হৃদি মাথা নিচু করে ফেলে। 

মিসেস ইউন-সুহ হৃদির কাছে এসে বলে,

" এসো আমার সাথে এসো মিষ্টি মেয়েটা। "

মিসেস ইউন সুহ, হৃদিকে নিজের একটা শাড়ি পরিয়ে দেয়। 

শাড়িতে হৃদিকে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে। 

মিসেস ইউন সুহ যদিও এত বড় ছেলের মা তার পরেও তার ফিগার সে মেনটেন করে রেখেছে। 

ব্লাউজ টা হৃদির একটু ডিল হয়েছে কিন্তু অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। 

হৃদি খেয়াল করে দেয়ালে বড় একটা ছবি যা দেখে মনে হচ্ছে পুরো পরিবার ওদের। 

তবে সেখানে একটা মেয়েও আছে, আরহাম,  মিস্টার খান এবং মিসেস খান এর সঙ্গে। 

"ভাবছো ত মেয়েটা কে?"

" হ্যাঁ। "

" ওটা আমার মেয়ে তোমার ননদ । কাসফিয়া খান।  আমার ছেলে মেয়ে দুটো আমার মত দেখতে হয়েছে তোমার শ্বশুর বাবার কিছুই পায়নি। মেয়েটা এখন কোরিয়াতে আছে ওর নানীর সঙ্গে থাকে। 

ভালো আছে সেখানে পড়ালেখা করছে। "

" ও। "

" জানিসত  মামনি আমার ছেলে,  মেয়ে আমি সব এক রকম খালি তোর শ্বাশুড় মসাই হলেন বুইরা খাটাস। "

কথাটা বলে মিসেস খান হাসতে হাসতে খুন। 

হৃদিও হাসে। এই পুরো বাড়িতে এই একটা মানুষ আছে যে কিনা প্রাণ খুলে কথা বলে। 

হৃদি এখন তার শ্বাশুড়ি এর সঙ্গে মিশে যেতে শুরু করেছে। 

" তবে জানিস কি আজকে আমার ছেলে তোকে দেখে আবার প্রেমে পড়বে। "

মিসেস খান হৃদির হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন,

" হৃদি,  আমি জানি আমার ছেকেটা বদমেজাজি রাগি। কিন্তু ভেতর থেকে নরম। তুই একটু মানিয়ে নে। ওকে তোর তরল মনই কঠিন তেকে তরল বানাতে পারবে। "

হৃদি মিসেস খানের কথা উপলব্ধি করতে পারে। 

,

,

,

সন্ধ্যা রাতে হৃদি রুমে বসে আছে। 

মিসেস ইউন সুহ এর সঙ্গে বিকালটা ভালোই কেটেছে। 

কথায় কথায় হৃদি বাড়িটাও ঘুরে দেখেছে। 

এ বাড়ির পেছন দিকে একটা দরজা আছে। 

তবে সেটা একটু পেছন দিকে আবার যেতে গেলেও অনেক কলকাঠি নাড়াতে হবে। 

সেই দরজার চাবিটা যাদি হৃদি পায় তবে পালাতে পারবে। 

এসব ভাবছিল হৃদি। 

হটাৎ করেই শক্ত দুটো হাত হৃদিকে তার বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয়। 

হৃদি কেঁপে ওঠে,

আরহাম এর ঘ্রাণ টা বড্ড স্ট্রং। 

হৃদি কাঁপতে থাকে আরহামের বুকের মাঝে। 

" জান এত ভয় কেন পাও। আমি কি তোমায় খেয়ে ফেলব নাকি। "

কথাটা বলে আরহাম হৃদির চুল সরিয়ে ওর ঘাড়ে একটা কামড় বসিয়ে দেয়। হৃদি আহ করে ওঠে। 

আরহামের আরও নেশা হতে থাকে। 

আরহাম হৃদিকে নিজের দিকে ফেরিয়ে হৃদির ঘাড়ে পিছে হাত দিয়ে হৃদির মুখটা উঁচু করে ধরে। 

এবং হৃদির ঠোঁট আকড়ে ধরে। 

হৃদি আরহামের সার্ট খামচে ধরে। 

আরহাম এতে আরও আশকারা পেয়ে যায়। 

সে হৃদিকে নিজের আরও কাছে নিয়ে আসে। 

কিছুক্ষণ পর হৃদির নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হতে থাকে। 

কিন্তু আরহাম হৃদিকে ছাড়ছে না । 

কোন ভাবেই সে হৃদিকে ছাড়ছে না। 

তবে যখন সে বুঝতে পারে হৃদি আর নিশ্বাস নিতে পারছে না তখন হৃদির ঠোঁট ছেড়ে দেয়। 

হৃদি বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে। 

আরহাম হৃদির ভেজা ঠোঁটে হাত রেখে স্লাইড করতে থাকে,

" কি পরেছো জান এটা? আমাকে পাগল বানিয়ে দিবে? হু বলো। "

হৃদিকে নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পর্যন্ত দিচ্ছে না আরহাম। 

" আ আমি। ব বাবার সঙ্গে একটু কথা বলতে চাই। প্লিজ। "

আরহাম হৃদির দিকে তাকায়। হৃদির চোখে আশা দেখতে পাচ্ছে আরহাম। 

আরহাম হাসে। 

পকেট থেকে ফোনটা বের করে হৃদির বাবার নাম্বার ডায়েল করে হৃদির হাতে ফোনটা দিয়ে ওয়াসরুমে চলে আসে। 

হৃদি ফোনটা  কানে নিয়ে বসে পরে। 

" হ্যালো। "

" বাবা। আমি হৃদি। "

" মারে কেমন আছিস? "

" ভালো। বাবা শুনো। আমার কাছে বেশি সময় নেই আরহাম হয়ত চলে আসবে। আমি এখান থেকে পালানোর রাস্তা খুজব। এদের বাড়ির পেছনে একটা গেট আছে। তুমি "

আর বাকি কথা শেষ করার আগেই কেউ হৃদির থেকে ফোনটা  কেড়ে নেয়। 

হৃদি ভয় পেয়ে যায়। 

আরহামের ভয়ঙ্কর রূপ দেখে হৃদির ভেতর থেকে কেঁপে উঠে, 

" জান.Are you cooking  something? "

হৃদি ভয়ে পেছতে দেখে আরহাম হৃদির চুল গুলো ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে। 

ছেলেটা রেগে গেলে মারাত্মক ভয়ংকর হয়ে ওঠে। 

,

চলবে?


গল্প মহীপতি পর্ব ৪

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_০৪

খুব ভোরে না হলেও সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আরহামের অনেক আগে থেকেই। 

ঘুম থেকে উঠে জিম করা। নিজেকে ফিট রাখাটা বেশ ভালোই জানে সে। 

তবে প্রতিটা রাতের ঘুমের সঙ্গে আজকের ঘুমের বেশ তফাত আছে। 

আজকের ঘুমটা এত ভালো কোন ছিল সেটা জানেন আরহাম। 

ঘুম থেকে উঠে বুকের মাঝে ছোট্ট তুলাট বস্তা টাকে দেখে ভালো লাগে আরহামের। 

হৃদি ঘুম থেকে উঠলে সে লজ্জা পাবে। তাই আর লজ্জা না বাড়িয়ে আরহাম উঠে ওয়াসরুমে চলে যায়। 

ফ্রেশ হয়ে রোজ কার মত তার জিম রুমে চলে যায়। 

আরহামের যাওয়ার কিছুক্ষণ এর মাথায় হৃদির ঘুম ভাঙে। 

ঘুম ভেঙে নিজেকে বিছনায় একা দেখে একটু শান্তির নিশ্বাস নেয় হৃদি। 

আরহাম তার জামাটা খুলে পাশে রেখেছিল। 

হৃদি দ্রুত জামাটা নিয়ে পরে নেয়। 

এরপর ওয়াসরুমে চলে যায়। 

ওয়াসরুমের সব কিছু আধুনিক ঠিক আছে৷ কিন্তু হৃদির ভয় করছে। ও যদি উল্টাপাল্টা কিছু করে তাতে যদি আরহাম কোন রিয়াক্ট করে। 

কিছুক্ষণ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হৃদি ভাবল,

"কাল তোর বিয়ে হয়ে গেল হৃদি। তোর স্বামী হয়ে গেল একটা মানুষ। "

হৃদি নিজেকে বুঝায়। নিয়তি নিশ্চয়ই তার জন্য ভালো কিছু রেখেছে। 

হৃদি ফ্রেশ হয়ে আবারো বিছনায় গিয়ে বসে। 

বাইরে ঠান্ডা তার বেশ ঠান্ডা লাগছে। 

কিছুক্ষণ পর হৃদি টের পায় রুমে কেউ এসেছে। 

হৃদি সামনে তাকিয়ে দেখে আরহাম। জিম শেষ করে এসেছে। 

কালো গেঞ্জি টা ঘামে ভিজে গেছে। 

আরহামের চুল বেয়ে পানি গড়িয়ে পরছে। 

এত সুদর্শন কিভাবে লাগছে তাকে। 

" মিসেস খান গোসল করে নিন। কাল থেকে কিছু খান নি। চলুন কিছু খাবেন নিচে গিয়ে। "

" কিন্তু আমারত জামা নেই। "

আরহাম কাবার্ড থেকে একটা সার্ট আর প্যান্ট দেয় হৃদি কে,

" আপাতত এটা পরে নিন এরপর না হয় আমি ব্যাবস্থা করছি। "

হৃদি আরহাম কে রাগাতে চায়না৷ তাই মাথা নাড়িয়ে সায় জানিয়ে হৃদি চলে আসে ওয়াসরুমে। 

আরহামও অফিস যাবে তাই অন্য রুমের ওয়াসরুম ব্যাবহার করে নেয়। 

হৃদির তুলনায় সার্টটা হাঁটুর সামান্য নিচ পর্যন্ত পড়েছে। 

আর প্যান্ট সে যে মাটিতে ১ হাত গড়াগড়ি খাচ্ছে। 

হৃদি রুমে মাথা ঢুকিয়ে দেখে আরহাম নেই। 

তাই ওভাবেই বেরিয়ে আসে। 

আয়নার সামনে এসে প্যান্ট কে টাইট করে বাঁধে। 

এরপর নিচ থেকে প্যান্ট ভাজ করা শুরু করে। 

৫ বার বড়ো বড়ো ভাজ করে হৃদির পায়ের উপর পর্যন্ত বানায় প্যান্ট টাকে। 

তবে এই পোশাকে কেমন মাতাল করা একটা ঘ্রাণ আছে। 

হৃদি হাত থেকে বেড়ে থাকা সার্টের হাতাটা গুছিয়ে নেয়। 

অন্য হাতে গুছাতে গিয়ে নাকের কাছে নেয়। 

কি মিষ্টি ঘ্রাণ। 

" ঘ্রাণ নেওয়া হলে নিচে এসো। "

হটাৎ করেই আরহামের কন্ঠ শুনে কেঁপে ওঠে হৃদি।

আরহাম কালো পোশাক  পরে আছে। 

ওভার সাইজ কালো কোর্ট আর লং নেক এর কালো গেঞ্জি। 

ফর্সা শরীরে এত সুন্দর দেখাচ্ছে। 

" পদ্মা। "

আরহামের মুখে নিজের নাম শুনে চমকে যায় হৃদি। 

" জি। আ আপনি  কিভাবে জানলেন আমার নাম? "

আরহাম শব্দ করে হাসে। তবে সেই হাসিতে গভীরতা ছিল। 

হৃদির পশম দাঁড়িয়ে যায় আরহামের হাসির শব্দ শুনে। 

" যাকে বিয়ে করেছি তাই নাম জানব না৷ "

" কিন্তু পদ্মা। "

" তোমার দাদি এই নামে তোমাকে ডাকত। এটা তোমার প্রিয় নাম তবে তোমার বাবার প্রিয় নাম যে হৃদি। তাই তুমি হৃদি শুনে অভ্যস্ত। "

হৃদি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ছেকেটা এত কিছু জানে। ঠিক আছে কোথায় আছি কি নাম এসব জানল। কিন্তু এসবত তাদের পারিবারিক কথা৷ এসব কিভাবে জানল। 

আরহাম ধির পায়ে হৃদির দিকে এগিয়ে আসে। হৃদি পেছতে থাকে,

হৃদি এক সময় দেয়ালে ঠেকে যায়। 

আরহাম হৃদির ডান গালে চুমু খায়। 

হৃদি চোখ বন্ধ করে নেয়। 

"ছোট একটা মাথায় এত প্রেশার না দেওয়াই ভালো। মিসেস খান। "

আরহাম পিছিয়ে এসে বলে,

" চলো নিচে। "

আরহাম বেরিয়ে যায়। 

হৃদিও আরহামের পেছন পেছন নিচে চলে আসে। 

,

মিস্টার খান বসে আছেন সোফায়। পাশেই মিসেস খানও বসে আছেন। মহিলা দেখতে অসম্ভব সুন্দর । 

৪৫ বছর বয়স তার হয়েছে সেটা তাকে দেখলে বুঝাই যাচ্ছে না। 

 মিসেস ইউন-সুহ  বসে বসে নিজের ফোন টিপছেন। 

" জাগি তোমার ছেলে কখন আসবে?  "

" আমি জানিনা৷ ""

" কোথা থেকে কোন গেয়ো ভুত কে ধরে আনল আর তুমি মেনে নিলে। এসবত আমি মানতে পারছি না। "

" তুমি এত চিন্তা করো কিসের জন্য?  তোমার ছেলে যাও রুমে গিয়ে ডেকে আনো। সেটাত পারো না। "

মিস্টার খান আর কোন কথা বলেনা। 

তবে এমন সময় পেছন থেকে আরহাম বলে ওঠে,

" ওম্মা,  আপ্পা তোমরা এখানে বসে কি করছো?"

" এই যে আমার ছেলে তোমার অপেক্ষাই করছিলাম। "

" আপ্পা আমার লেট হয়ে গেছে৷ মিস্টার চই বসে আছেন মিটিং রুমে। "

" বাট আরহাম তুমি কিভাবে কাউকে না বলে বিয়ে করে ঘরে তুলতে পারো। "

" এসব নিয়ে কোন কথা বলতে চাইনা৷ "

" কিন্তু আমি চাই। "

এর মাঝেই গুটি গুটি পায়ে সেখানে প্রবেশ করে হৃদি। হৃদি কে দেখে মিসেস ইউন সুহ এগিয়ে আসে, 

" আরে মেয়েটা কি মিষ্টি। তোমার নাম কি মা? "

" হৃদি। "

" উম সুন্দর নাম। আমি তোমার বরের মা৷ শ্বাশুড়ি মা আই গেস৷ "

হৃদি একটু হাসে, 

" উফ.....  রোজির সঙ্গে তোমার বিয়ের কথা পাকা করেছি আমি। এখন আমি কি করব রোজি আসবে ত। "

" আসলে বলবা আমি বিয়ে করে ফেলেছি। সিম্পিল। "

" তোমার কাছে সিম্পিল আমার কাছে নয়৷ আমাদের ডিল টার কি হবে?"

" আপ্পা আমার সঙ্গে কেউ ডিল না করলে তার সমস্যা আমার নয়৷ "

কথাটা বলে আরহাম বেরিয়ে যায়। 

" আরে বাবা খেয়ে যাবি না। "

" মুড নেই। পদ্মা তোমার দায়িত্ব ওম্মা। "

কথাটা বলে আরহাম চলে যায়। 

হৃদি বাচ্চার মত সব কিছু পর্যবেক্ষণ করেছে। তবে কিছুই বলেনি। 

" হৃদি চল মা তোকে খেতে দেই। "

হৃদি চুপচাপ মিসেস ইউন-সুহ এর সঙ্গে টেবিলে চলে আসে। 

" হৃদি এটা খাওয়া শেষ কর। আমি কিচেন থেকে জ্যাম নিয়ে আসি। "

মিসো ইউন-সুহ কিচেনে চলে আসেন। 

এসব মিস্টার খান এর একদম পছন্দ হচ্ছে না। তিনি রাগে ফুঁসছেন। 

হৃদির খাওয়ার মাঝেই তিনি টেবিলে এসে বলেন,

" কত?  কত টাকা হলে তুমি আমার ছেলের জীবন থেকে দুর হবে মেয়ে বলো। কত টাকা।"

হৃদি মিস্টার খানের এমন আচমকা আক্রমণে অবাক হয় সাথে ভয় পেয়ে যায়। 

মিসেস ইউন সুহ রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন,

" সবাইকে নিজের মত মনে করোনা আসরাফ সবাই তোমার মত টাকার পিছে ছোটে না৷  হৃদি তোর ঘরে যা মা। "

হৃদি চুপচাপ করে আরহামের রুমে চলে আসে। 

আজ বাবা কাছে থাকলে। হৃদি দৌড়ে বাবার কাছে গিয়ে বলত, 

" বাবা জানো ওই আঙ্কেল টা আমাকে কি সব বলেছে। "

হৃদির বড্ড অসহায় লাগছে। ছোট থেকে বাবাকে ছাড়া কোথাও যায়নি। যেখানেই গেছে সবার ভালোবাসা পেয়েছে। কখনো খারাপ কথা শুনেনি৷ সে অভ্যাস হৃদির নেই। 

খুবই কোমল হৃদি। 

,

হৃদির কান্না গাড়িতে বসে দেখছে আরহাম। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট সব দেখা যাচ্ছে। 

আরহাম হৃদির ছবিতে স্পর্শ করে বলে,

" একটু শক্ত হতে হবে পদ্মা রানি। আমার কালো রাজত্বের রানি হতে হলে কান্নাকে বর্জন করতে হবে। 

কষ্ট পেয়ে হলেও নিজেকে মানিয়ে নেও৷ কারণ আমার বন্দি খাঁচা থেকে তোমার মুক্তি শুধুমাত্র মৃত্যুর পরই সম্ভব। "

..

আরহাম ভীষণ সাঙ্ঘাতিক একজন মানুষ। 

চলবে? 


গল্প মহীপতি পর্ব ৩

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_০৩

শহরের ১০ টা লাকজারি এপার্টমেন্ট এর মধ্যে খান বাড়িটা অন্যতম। 

বিশাল গেটের ভেতর দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলে এটা হবে কোন রাজপ্রাসাদ। 

অসম্ভব সুন্দর দেখাতে সব কিছুই মার্বেল পাথরের। 

সৌখিন মানুষ আসরাফ খান। তার স্ত্রী তার থেকেও সৌখিন। 

কোরিয়ায় দুটো বাড়ি আছে ওদের তাও সিওলের সব থেকে লাকজারি এলাকায়। 

মিসেস ইউন - সুহ তার রাতের রুটিন শেষ করে বেডরুমে এসেছেন। 

নাইট ড্রেস পরে আয়নার সামনে বসে লোসন লাগাচ্ছিলেন এমন সময় আসরাফ খান ভেতরে আসেন। 

" জাগি ( ডার্লিং) একটা ভালো খবর আছে."

" কি ভালো খবর? "

" তথ্যমন্ত্রী জহিদ হাসানের এক মাত্র মেয়ে রোজি আমাদের ছেলের জন্য পাগল। মেয়েটা দেখতে ভীষণ সুন্দর। ওর সাথে ছেলের বিয়ে হলে ছেলের কালো কারবার আরও মজবুদ হবে। এক ঢিলে দুই পাখি। আর তা ছাড়া ছেলের বয়সও হয়েছে বিয়ে করার। "

" তার আর প্রয়োজন নেই তোমার ছেলে বিয়ে করে ফেলেছে। "

" জাগি তুমি এত মজা করতে পছন্দ করো আমি জানতাম না। "

" আমি মজা করছি না আসরাফ। "

মিসেস ইউন - সুহ এর সিরিয়াস ফেস দেখে আসরাফ খানের মুখের হাসিটা উড়ে যায়। 

" জাগি তুমি সত্যি বলছো?"

" হ্যাঁ। "

" কিন্তু আমাদের ছেলেত গ্রামে প্রজেক্ট এর কাজে গেছিল। "

" সেখানে গিয়ে একটা মেয়েকে জোর করে বিয়ে করেছে। "

" মানে কি এসবের? "

" আমি জানিনা৷ তুমি রোজির বাবাকে বলে দেও। আমার বউমা পেয়ে গেছি। "

" তুমি কি পাগল হয়ে গেছো। কোন গ্রাম থেকে একটূ মেয়েকে ধরে এনে বউমা বানিয়ে দিচ্ছো। "

" আসরাফ সংসার ছেলে করবে তুমি বা আমি নই। "

" আমি এ বিয়ে মানিনা৷ ওই মেয়েকে ওর আসল জয়গা আমি দেখিয়ে দেব। তুমি আমাকে আগে কেন বলোনি৷ তাহলে গ্রামে গিয়ে ওদের শেষ করে দিতাম৷ "

" না ওদের শেষ করতে গেলে তোমার ছেলে তোমাকে শেষ করে দিত। "

" ইউন- সুহ৷ "

" যা সত্যি তাই বললাম। একটু অপেক্ষা করো আমার লক্ষি বউমা ঘরে আসল বলে। "

" কাল রোজি আমাদের বাড়িতে আসবে। কি জবাবা দেব আমি। "

" তুমি শুধু তামাসা দেখবে জবাব আমার ছেলেই দিয়ে দেবে। "

কথাটা বলে মিসেস ইউন-সুহ চলে গেলেন ঘুমাতে। 

আসরাফ খানের মাথায় বাস পড়েছে৷ তার বউ বলে কি?  ছেলে এমন একটা কাজ করবে ভাবতেও পারে নি সে। 

,

,

,

প্রায় ৪ ঘন্টা জার্নি করার পর দেশের রাজধানীতে পৌঁছে যায় আরহাম আর হৃদি। 

হৃদি আরহামের বুকের ঘুমিয়ে গেছে কাঁদতে কাঁদতে। 

আরহাম, হৃদিকে ছাড়েই নাই। 

হৃদির জার্নি করতে সমস্যা হয়। 

মাথা ঘুরায়। 

তাই হৃদিকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে আরহাম। 

আরহামের বুকে হৃদিকে ভীষণ ছোট দেখাচ্ছে। 

হৃদির চোখের পাপড়ি গুলো বড়ো বড়ো। 

কি মায়াবী। 

আরহাম হৃদির দিকে তাকিয়ে ভাবে সে কি পাগল হয়ে গেল। 

,

রাত ৩ টা খান বাড়ির সদর দরজা দিয়ে আরহামের গাড়ি ঢুকে বাংলোতে। 

 মিসেস ইউন-সুহ  আরহামের আসার খবর শুনে নতুন বউ বরণ করার জন্য যা লাগবে তা সাজিয়ে রেখেছে। 

আরহাম ভেতরে এসে দেখে হৃদির কোন নড়াচড়া নেই তাই আরহাম হৃদিকে পাজকোলে তুলে নেয়। গাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা বাড়ির দরজায় আসতে দেখে তার মা দাড়িয়ে। 

আরহাম এক নজর জং সুক এর দিকে তাকায়। 

জং সুক এদিক ওদিক তাকিয়ে এমন ভাব ধরেছে যেন সে কিছুই জানেনা৷। 

" বেবি ওর দিকে ওভাবে তাকিয়ে লাভ নেই৷ পেটে ধরেছি আমি৷ কখন কি করো সব খোঁজ আমার রাখতে হয়। "

"এম্মা। "

" তোর বউ আমার ছেলের বউ ঘুম তাইনা?  আচ্ছা দাঁড়া একটু বরণ করে দেই। "

মিসেস ইউন-সুহ ছেলেকে আর বউকে আগুনের ছ্যাঁক দেয়। 

আরহাম এসব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে,

" Emma do it first she is really heavy ( এম্মা দ্রুত করো সে সত্যি ভারি) "

" এত খেয়ে পরে ছেলে আমার বউকে নিয়ে দুই মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। এসব খাওনের মানে কি তাহলে?"

" stop Emma let me go. (থামো এম্মা আমাকে যেতে দেও।) "

" যাবি যাবি। দ্রুতই যাবি। "

মিসেস হউন-সুহ পথ ছেড়ে দেয়। 

আরহাম,  হৃদিকে নিয়ে তার রুমে চলে আসে। 

হৃদিকে তার বিছনায় শুইয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায় আরহাম। 

সাওয়ারের নিচে উদাম শরীরে দাঁড়িয়ে আছে আরহাম। 

শরীর বেয়ে টুপ টুপ পানি পড়ছে। 

কি অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে।। 

সে এক্সারসাইজ করে। 

তার বুকে কোন পসম নেই। এমনকি মুখেও দাঁড়ি নেই। 

মায়াবী ভীষণ মায়াবী। তবে হিংস্র। একজন সিংহ যেমন রাজ করে পুরো জঙ্গলে তেমন। 

সিংহের থেকেও তিব্র ওর হুঙ্কার। শুনেই যে কেউ ভয় পেয়ে যায়। 

,

,

সাওয়ার সেরে বেডরুমে আসে আরহাম।। এই প্রথম তার বেডরুমে সে ছাড়া অন্য কেউ শুয়ে আছে। 

দৃশ্য টা সত্যি অকল্পনীয়। 

আরহাম হাতে একটা ওয়াইন এর বোতল নিয়ে সোফায় বসে। 

হৃদির পরনে সারা রঙের গোল জামা। 

শুইয়ে দেওয়ার সময় ওড়ানাটা ঠিক ছিলনা। 

সরে গেছিল সেভাবেই শুয়ে আছে হৃদি। 

ওর বুকের ভাজ গুলো দৃশ্যমান। 

হৃদির হাত দুটো একটা পেটে অন্য টা মাথার কাছে রাখা৷ 

দেখেই নেশা হচ্ছে আরহামের। 

চোখ বন্ধ করে নেয় আরহাম। 

বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে আরহাম।

আরহাম সোফায় মাথা কাথ করেই কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকে।। এরপর ওর শরীর পুরো ঠান্ডা বরফের মত হয়ে যায়। 

আরহাম বাকা হাসে। 

কারণ এখন সে খুবই সুন্দর একটা কাজ করবে। 

এতক্ষণে আরহাম বুঝে গেছে হৃদির ঘুম ভীষণ গাড়ো। 

সাওয়ার সেরে এসেছে আরহাম। শরীতের রাত ওর শরীরে জড়িয়ে গেছে ঠান্ডা। 

এখন আরহামের শরীর টা কোন সদ্য ফিরিজ থেকে বের হওয়া বরফের মত ঠান্ডা হয়ে আছে। 

আরহাম ধিরে হৃদির কাছে যায়। 

হৃদির ওড়নাটা সরিয়ে ফেলে। 

হৃদির কোন হুস নেই। 

এরপর ধিরে ধিরে খুবই সাবধানে হৃদির জামা খুলে ফেলে। 

হৃদি এবার একটু নড়েচড়ে ওঠে। 

একটা কালে রঙের অন্তর*বাস পরা ছিল হৃদির। ফর্সা শরীরে কি মানিয়েছে। 

মানুষের ঢাকা অংশ গুলো খোলা অংশের থেকে বেশি ফর্সা হয়। 

আরহাম হৃদির ওই উন্মুক্ত শরীর কে নিজের ঠান্ডা শরীর দিয়ে জড়িয়ে ধরে। 

হৃদি কেঁপে ওঠে। 

চোখ খুলে আরহাম কে উদাম আর নিজের এমন অবস্থা দেখে কেঁপে ওঠে হৃদি। 

তবে হৃদির নড়বার এক রক্তি জায়গা নেই৷ না আছে জায়গা না আছে অবস্থা। 

হৃদি এবার ভয়ে শীতে উভয়ে কেঁপে উঠে। 

আরহাম হৃদিকে জড়িয়ে নেয় কম্বলের নিচে। 

হৃদির ঘাড়ে নাক গুঁজে। 

" ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। ভীষণ। "

হৃদি আর কিছু বলেনা। 

প্রথম কেন পুরুষের এত গভীর ছোঁয়া অনুভব করছে হৃদি। 

লোকটা তার স্বামী। 

কিন্তু সব কিছু কেমন দ্রুত হয়ে যাচ্ছে। 

হৃদি চোখ বন্ধ করে নেয়। 

ঠান্ডা লাগছে। 

তবে কিছুক্ষণ এর মাঝে শরীর গরম হয়ে যায় ওদের। 

আরহাম ঘুমিয়ে গেছে। 

হৃদি বুঝতে পেরে সরতে চায় তবে পারেনা। 

হৃদির পেটে এক হাত আরহামের। 

ঘাড়ে মুখ গোজা। 

পেট হয়ে হাত হৃদির বুকে গিয়ে ঠেকেছে। 

তাও হাতের মুঠোয় হৃদির বুকাটাকে বন্দি করে রেখেছে। 

অন্য হাত পিঠ বরাবর ওর বাহুডোর কে আবদ্ধ করে রেখেছে। 

,

হৃদি না পেরে চোখ বন্ধ করে নেয়। 

,

,

,

আজিজ রহমান না খেয়েই বসে আছে। 

একটা দিন রাতেও তার ঘুম নেই। 

মেয়েটা তার সব। 

কি হয়ে গেল এক নিমিশে। "

" ভাইাজন। "

আসিফ রহামনের ডাক শুন আজিজ রহমান একটু কেঁপে ওঠে,

" ওহ তুই ঘুমাস নি?"

" তুমি এভাবে বসে থাকবে আর আমি ঘুমাব। চলে ভাইজান ঘরে চলো। "

" আমি কি অপরাক বাবা রে আসিফ। আমার একটা মাত্র মেয়ে। আমার হৃদি। ".

আজিজ রহমান কেঁদে ওঠে। 

আসিফ রহমান তার ভাইকে জড়িয়ে ধরে। 

,

সত্যি নিয়তি বড় কঠিন। 

,


চলবে?

গল্প মহীপতি পর্ব ২

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_০২

"জান কবুল বলো। আর কত অপেক্ষা করাবে আমাকে। আমার অপেক্ষা করতে একটুও ভালো লাগে না৷ 

Just say it right now otherwise I will Just kill my in law right now. (শুধু এখুনি বল, নইলে আমি এখনই আমার শ্বশুরকে খু*ন করব।) "

আরহামের হুঙ্কার শুনে হৃদি কেঁপে ওঠে। 

ভয়ে কাঁপছে। কাপা কাপা চোখ জোড়া তুলে একবার তার অসহায় বাবার দিকে তাকায়। 

আজিজ রহমানকে ঘিরে রেখেছে ২০ জন গার্ড। প্রতিটি মানুষের হাতে বন্দু*ক। আর কিছু করার নেই। হৃদিকে নিজের সবটা হারাতে হবে। এটাই নিয়তি৷ হৃদি চোখ বন্ধ করে বুকে একটু সাহস  নিয়ে বলে,

" কবুল বলব। সব করব। আপনি যা বলবেন তাই করব। "

হৃদি বাকি কথা বলার আগে আরহাম এর পায়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে, 

" আপনার সব কথা শুনব। যেভাবে বলবেন সেভাবে থাকব। এই গ্রামটাকে মুক্ত করুন। ৩০০ ঘর এত এত ফসলি জমি৷ কৃষক দের শেষ সম্বল এটা৷ আপনাদের দেওয়া টাকা দিয়ে হয়ত এদের পেট চলে যাবে কিন্তু এরপর জিনিস পত্রের দাম এভাবে বাড়বে, আপনাদের কিছুই হবেনা। হবে ওই সব গরিব মানুষ দের যারা এখন থেকেই না খেয়ে মরছে। আপনি হয়ত নিজের পায়ে কখনো বাজারে জান নি। যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয় তবে কাল একবার আমার সঙ্গে বাজারে গিয়ে দেখুন৷ আলু ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা এই জমি গুলো চলে গেলে হয়ত ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত  হয়ে যাবে। 

এমনি গিরব মরছে আর মারবেন না৷ এই জমি বাঁচানোর পেছনে আমার বাবার কোন সার্থ নেই৷ আমার বাবা একজন ব্যাবসায়ী। কিন্তু আমার বাবা শুধু ওই মানুষ গুলোর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেছে। আর কিছুই না। "

আরহাম খানের সেক্রেটারি লি জং সুক ( যে একজন কোরিয়ান নাগরিক। তবে আহনাফ যেখানে যায় তাকেও সেখানে থাকতে হয়৷ তাইত সে এখন বাংলাদেশে আছে আহনাফ এর সঙ্গে। আহনাফ এর জন্য লোকটার স্কিল ডেবলপ করা লেগেছে। সে কোরিয়া সহ আরও ১০ টা দেশের ভাষায় কথা বলতে পারে৷ আসলে জং সুক আহনাফের মা " কিম  ইউন-সুহ" এর বোনের ছেলে তাইত ছেলের সঙ্গে সব থেকে বিশ্বাস তিনি জং সুক কে করেন।  ) 

জং সুক চিন্তা করছে তার বসকে সে কখনোই এতো কথা শুনতে দেখেনি কারোর। 

জং সুকের কানে এয়ারপড ছিল তার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটে যখন সেখান থেকে মিসেস ইউন-সুহ এর কন্ঠ ভেসে আসে, 

" জং সুক। "

" ইয়েস আন্টি। "

" বিয়েটা হতে দে বাবা৷ আমার ছেলেটার অন্ধকার দুনিয়ায় একটু আলোর রেখা খুঁজে পাবে। এই মেয়েটাই পারবে৷ "

" কিন্তু আন্টি মেয়েটা রাজি! "

" আমি জানি। ওই মেয়েটা কেন পৃথিবীর কোন মেয়েই রাজি না হয় আমার ছেলেকে বিয়ে করতে। কিন্তু এই মুহুর্তে আমি যা প্লান করেছিলাম সব ক্যান্সেল৷ বিয়েটা  সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব তোর। "

"জি আন্টি "

আসলে সকালে জং সুক বুঝে গেছিল আরহাম কে থামানো সম্ভব নয় তাই সে মিসেস ইউন-সুহ কে কল করে। আরহাম পৃথিবীতে দুই জন নারীকে ভীষণ ভালোবাসে এক ছিলো  তার দাদি "মমতাজ বেগম " আর এক হলো তার মা। বাবা "আসরাফ খান " নিজেও যেমন পাথর। ছেলেটাকে বানিয়ে তেমন৷ দুই বাপ ব্যাটার কারোর জন্য কোন মায়া দরদ নেই। 

,

আরহাম একটু নিচু হয়ে হৃদির থুতনিতে হাত রাখে। 

হৃদির মুখটা উঁচু করে। 

হৃদির চোখে চোখ রাখে, 

" ঠিক আছে এই জমির সমপরিমাণ অর্থের  কবিনে আমি তোমাকে আমার বৈধ স্ত্রী বানালাম। আরহাম খানের অবৈধ কিছুই পছন্দ নয়৷ 

এই দেহ আমার। মন না হলেও চলবে। দেহ যেহেতু আমার তাই সেটাকে বৈধ উপায়ে দখল করার দায়িত্ব ও আমার। 

কিরে কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু কর। "

হৃদির চোখ গড়িয়ে পড়ছে পানি। 

তিন বার কবুল বলে আল্লাহর কাছে বাঁধা পড়ল এই লোকটার সঙ্গে। 

যে কিনা শুধু তার শরীর টা চায়৷ 

বিয়েটা সম্পূর্ণ হলে আরহাম হৃদির  হাতটা ধরে দাঁড় করিয়ে ওকে নিয়ে বাড়ির বাইরে আসবে তার আগে হৃদি আরহাম এর হাতে নিজের কোমল হাত দিয়ে স্পর্শ করে। 

আরহাম থেমে যায়। হৃদির দিকে তাকায়, 

" বাবাকে একবার বিদায় দিয়ে আসি৷ প্লিজ! "

আরহাম হৃদির হাত ছেড়ে দেয়। 

হৃদি দৌড়ে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে। 

আজিজ রহমান শক্ত পাথর হয়ে গেছেন। 

তার কাছে মনে হচ্ছে এক মুহুর্তের ব্যাবধানে তার মেয়েটা পর হয়ে গেল। 

" বাবদ ঔষধ গুলো সময় মত খেয়ো। চিন্তা করো না তোমার সাহসী মেয়ে ভালো থাকবে। দোয়া করো। যে যুদ্ধ আরহাম খান শুরু করেছে তার শেষ করে দিয়ে গেলাম আমি৷ গ্রামের সবাইকে বলো এখন আর কোন চিন্তা নেই। "

" কিন্তু তোর কি হবে মা? "

" আমি ভালো থাকব কথা দিচ্ছি। "

" কেন ফেরত আসতে গেলি মা। "

" আমি চলে গেলে ও আমায় ঠিক খুঁজে নিত। উল্টে তোমাকে এই গ্রামের মানুষের জমি ঘর সব হারাতাম। আমার একার ত্যাগে যদি সবার শুখ নিহিত থাকে। তবে সেই ত্যাগ ই স্রেয়।। ভেবো না বাবা৷ আমি ভালো থাকব৷ "

"  Jan you take too much time. I don’t like the people who Just waste their time. And my time is very important. 

(জান তুমি অনেক সময় নিচ্ছ। আমি তাদের পছন্দ করি না যারা শুধু তাদের সময় নষ্ট করে। আর আমার সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ)"

জং সুকের কানে আবার মিসেস ইউন-সুহ এর কন্ঠ ভেসে আসে, 

" দেখোনা এমন ভাবে বলছে যেন রাজের কাজ করে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটা একেবারে ওর বাপের মত বেয়াদব। "

জং সুক চুপ থাকে কিছুই বলেনা। 

,

আরহাম হৃদিকে গাড়িতে বসায়। 

হৃদির চোখের শেষ পানির ফোটা তার বাড়ির মাটিতে পড়ে। 

হৃদি জানেও না আর এই মাটি, বাড়িতে তার আসা হবে কিনা৷ 

তবে হৃদি এই টুকুন আবদার করবে মৃত্যুর পর তার দাফন যেন এই গ্রামে হয়। 

,

আরহামের পরনে সম্পূর্ণ কালো পোশাক। কোট প্যান্ট সমস্ত টা কালো। 

গাড়ি টাও কালো। 

হৃদি হাতে তার মায়ের একটা ছবি। এই ছবিটা বাদে ও বাড়ি থেকে কিছুই নিয়ে আসেনি হৃদি। 

আসলে সকালে যখন তার বাবা তাকে জড়িয়ে কাঁদছিল তখন তার চাচা তাকে পালিয়ে যাওয়ার বুদ্ধি দেয়। 

আজিজ রহমান সেই মতে মেয়েকে গ্রামের পেছন দিক দিয়ে বাস স্টপে নিয়ে আসে। 

বাসে উঠিয়ে তিনি বাড়িতে চলে আসেন। 

তবে আরহামের লোক যে হৃদি কে ফলো করছে তা হৃদি বাসে ওঠার পর বুঝতে পারে। 

সে তখনি বুঝতে পারে সে যদি না চলে যায় তবে তার বাবা সহ পুরো গ্রাম টা তচনচ হয়ে যাবে। 

তাই হৃদি বুদ্ধি করে বাড়িতে চলে আসে। 

তবে বাড়িতে এসে সে দেখে আরহামের গাড়ি গুলো তাদের বাড়ির উঠানে। 

হৃদি দৌড়ে ভেতরে যায়। 

হৃদিকে ভেতরে আসতে দেখে আরহাম হৃদির কোমড় জড়িয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে,

" জান পালাচ্ছিলে ত চলে এলে কেন? আমার না সিকার কে পালাতে দেখলে ভীষণ মজা লাগে। তখন কষ্ট দেওয়া যায় বেশি বেশি। "

" প পালাচ্ছিলাম না। বিয়েত এক বারই হয় তাই সপিং। "

" ওহ সপিং বাসে করতে হয় বুঝি। আচ্ছা যাই হোক  where is your shopping bags?"

" ওই খোলা ছিলনা কিছু। "

" জান আমিকি এতই বোকা? "

" ন না বিশ্বাস করুন। "

" কবুল বলো। কাজি বিয়ে পড়া"

এর পরের গল্প জানা। 

,

,

হৃদি আরহামে থেকে দুরে সরে ছিল।। আরহাম হৃদির কোমড় ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে। 

হৃদির আরও কান্না পাচ্ছে। 

এসব ছোঁয়া তার সহ্য হচ্ছে না। 

সুজের মড বিঁধছে। 

আরহাম হৃদির ঘাড়ে মুখ গুঁজে হৃদির শরীরে ঘ্রাণ উপভোগ করে। 

" অসাধারণ। "

হৃদি কেঁপে উঠে। 

হৃদির কম্পিত  দেহ আরহাম কে বরও আকৃষ্ট করছে। 

আরহামের কেমন নেশা ধরে যাচ্ছে। 

আরহাম হৃদির ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দেয়। 

হৃদি চোখ বন্ধ করে" আহ "করে ওঠে,

আরহাম মুখ তুলে হৃদির দিকে তাকায়, 

মেয়েটা জাস্ট "আহ "করে উঠেছে। 

এটাই এত মধুর শুনচ্ছে। আর যখন তার নিচে শুয়ে গো*** দিবে তখন কেমন শুনাবে।

এ কথা ভেবেই তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। 

আরহাম এসব ভাবতে ভাবতে যখন হৃদির হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেছে তা তার খেয়াল নেই। 

হৃদির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে, 

" এখনোত কিছু করিনি জান। তবে এত অশ্রু কিসের? "

" হ হাত টা।  "

আরহাম এবার টের পায়। 

সে হৃদির হাতটা ছেড়ে দেয়। 

আর একটু হলে কবজি থেকে হাড় ভেঙে যেত মেয়েটার৷ 

লাল হয়ে আছে। আসলে আরহাম ভীষণ শক্তিশালী একজন পুরুষ। 

ওর রুক্ষতার কাছে হৃদি তুলার মতন। 

সিংহের খাঁচায় এক বস্তা তুলা দেওয়া হয়েছে। 

,

,

চলবে?