#মহীপতি👑
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_০২
"জান কবুল বলো। আর কত অপেক্ষা করাবে আমাকে। আমার অপেক্ষা করতে একটুও ভালো লাগে না৷
Just say it right now otherwise I will Just kill my in law right now. (শুধু এখুনি বল, নইলে আমি এখনই আমার শ্বশুরকে খু*ন করব।) "
আরহামের হুঙ্কার শুনে হৃদি কেঁপে ওঠে।
ভয়ে কাঁপছে। কাপা কাপা চোখ জোড়া তুলে একবার তার অসহায় বাবার দিকে তাকায়।
আজিজ রহমানকে ঘিরে রেখেছে ২০ জন গার্ড। প্রতিটি মানুষের হাতে বন্দু*ক। আর কিছু করার নেই। হৃদিকে নিজের সবটা হারাতে হবে। এটাই নিয়তি৷ হৃদি চোখ বন্ধ করে বুকে একটু সাহস নিয়ে বলে,
" কবুল বলব। সব করব। আপনি যা বলবেন তাই করব। "
হৃদি বাকি কথা বলার আগে আরহাম এর পায়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে,
" আপনার সব কথা শুনব। যেভাবে বলবেন সেভাবে থাকব। এই গ্রামটাকে মুক্ত করুন। ৩০০ ঘর এত এত ফসলি জমি৷ কৃষক দের শেষ সম্বল এটা৷ আপনাদের দেওয়া টাকা দিয়ে হয়ত এদের পেট চলে যাবে কিন্তু এরপর জিনিস পত্রের দাম এভাবে বাড়বে, আপনাদের কিছুই হবেনা। হবে ওই সব গরিব মানুষ দের যারা এখন থেকেই না খেয়ে মরছে। আপনি হয়ত নিজের পায়ে কখনো বাজারে জান নি। যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয় তবে কাল একবার আমার সঙ্গে বাজারে গিয়ে দেখুন৷ আলু ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা এই জমি গুলো চলে গেলে হয়ত ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে যাবে।
এমনি গিরব মরছে আর মারবেন না৷ এই জমি বাঁচানোর পেছনে আমার বাবার কোন সার্থ নেই৷ আমার বাবা একজন ব্যাবসায়ী। কিন্তু আমার বাবা শুধু ওই মানুষ গুলোর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেছে। আর কিছুই না। "
আরহাম খানের সেক্রেটারি লি জং সুক ( যে একজন কোরিয়ান নাগরিক। তবে আহনাফ যেখানে যায় তাকেও সেখানে থাকতে হয়৷ তাইত সে এখন বাংলাদেশে আছে আহনাফ এর সঙ্গে। আহনাফ এর জন্য লোকটার স্কিল ডেবলপ করা লেগেছে। সে কোরিয়া সহ আরও ১০ টা দেশের ভাষায় কথা বলতে পারে৷ আসলে জং সুক আহনাফের মা " কিম ইউন-সুহ" এর বোনের ছেলে তাইত ছেলের সঙ্গে সব থেকে বিশ্বাস তিনি জং সুক কে করেন। )
জং সুক চিন্তা করছে তার বসকে সে কখনোই এতো কথা শুনতে দেখেনি কারোর।
জং সুকের কানে এয়ারপড ছিল তার চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটে যখন সেখান থেকে মিসেস ইউন-সুহ এর কন্ঠ ভেসে আসে,
" জং সুক। "
" ইয়েস আন্টি। "
" বিয়েটা হতে দে বাবা৷ আমার ছেলেটার অন্ধকার দুনিয়ায় একটু আলোর রেখা খুঁজে পাবে। এই মেয়েটাই পারবে৷ "
" কিন্তু আন্টি মেয়েটা রাজি! "
" আমি জানি। ওই মেয়েটা কেন পৃথিবীর কোন মেয়েই রাজি না হয় আমার ছেলেকে বিয়ে করতে। কিন্তু এই মুহুর্তে আমি যা প্লান করেছিলাম সব ক্যান্সেল৷ বিয়েটা সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব তোর। "
"জি আন্টি "
আসলে সকালে জং সুক বুঝে গেছিল আরহাম কে থামানো সম্ভব নয় তাই সে মিসেস ইউন-সুহ কে কল করে। আরহাম পৃথিবীতে দুই জন নারীকে ভীষণ ভালোবাসে এক ছিলো তার দাদি "মমতাজ বেগম " আর এক হলো তার মা। বাবা "আসরাফ খান " নিজেও যেমন পাথর। ছেলেটাকে বানিয়ে তেমন৷ দুই বাপ ব্যাটার কারোর জন্য কোন মায়া দরদ নেই।
,
আরহাম একটু নিচু হয়ে হৃদির থুতনিতে হাত রাখে।
হৃদির মুখটা উঁচু করে।
হৃদির চোখে চোখ রাখে,
" ঠিক আছে এই জমির সমপরিমাণ অর্থের কবিনে আমি তোমাকে আমার বৈধ স্ত্রী বানালাম। আরহাম খানের অবৈধ কিছুই পছন্দ নয়৷
এই দেহ আমার। মন না হলেও চলবে। দেহ যেহেতু আমার তাই সেটাকে বৈধ উপায়ে দখল করার দায়িত্ব ও আমার।
কিরে কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু কর। "
হৃদির চোখ গড়িয়ে পড়ছে পানি।
তিন বার কবুল বলে আল্লাহর কাছে বাঁধা পড়ল এই লোকটার সঙ্গে।
যে কিনা শুধু তার শরীর টা চায়৷
বিয়েটা সম্পূর্ণ হলে আরহাম হৃদির হাতটা ধরে দাঁড় করিয়ে ওকে নিয়ে বাড়ির বাইরে আসবে তার আগে হৃদি আরহাম এর হাতে নিজের কোমল হাত দিয়ে স্পর্শ করে।
আরহাম থেমে যায়। হৃদির দিকে তাকায়,
" বাবাকে একবার বিদায় দিয়ে আসি৷ প্লিজ! "
আরহাম হৃদির হাত ছেড়ে দেয়।
হৃদি দৌড়ে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে।
আজিজ রহমান শক্ত পাথর হয়ে গেছেন।
তার কাছে মনে হচ্ছে এক মুহুর্তের ব্যাবধানে তার মেয়েটা পর হয়ে গেল।
" বাবদ ঔষধ গুলো সময় মত খেয়ো। চিন্তা করো না তোমার সাহসী মেয়ে ভালো থাকবে। দোয়া করো। যে যুদ্ধ আরহাম খান শুরু করেছে তার শেষ করে দিয়ে গেলাম আমি৷ গ্রামের সবাইকে বলো এখন আর কোন চিন্তা নেই। "
" কিন্তু তোর কি হবে মা? "
" আমি ভালো থাকব কথা দিচ্ছি। "
" কেন ফেরত আসতে গেলি মা। "
" আমি চলে গেলে ও আমায় ঠিক খুঁজে নিত। উল্টে তোমাকে এই গ্রামের মানুষের জমি ঘর সব হারাতাম। আমার একার ত্যাগে যদি সবার শুখ নিহিত থাকে। তবে সেই ত্যাগ ই স্রেয়।। ভেবো না বাবা৷ আমি ভালো থাকব৷ "
" Jan you take too much time. I don’t like the people who Just waste their time. And my time is very important.
(জান তুমি অনেক সময় নিচ্ছ। আমি তাদের পছন্দ করি না যারা শুধু তাদের সময় নষ্ট করে। আর আমার সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ)"
জং সুকের কানে আবার মিসেস ইউন-সুহ এর কন্ঠ ভেসে আসে,
" দেখোনা এমন ভাবে বলছে যেন রাজের কাজ করে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেটা একেবারে ওর বাপের মত বেয়াদব। "
জং সুক চুপ থাকে কিছুই বলেনা।
,
আরহাম হৃদিকে গাড়িতে বসায়।
হৃদির চোখের শেষ পানির ফোটা তার বাড়ির মাটিতে পড়ে।
হৃদি জানেও না আর এই মাটি, বাড়িতে তার আসা হবে কিনা৷
তবে হৃদি এই টুকুন আবদার করবে মৃত্যুর পর তার দাফন যেন এই গ্রামে হয়।
,
আরহামের পরনে সম্পূর্ণ কালো পোশাক। কোট প্যান্ট সমস্ত টা কালো।
গাড়ি টাও কালো।
হৃদি হাতে তার মায়ের একটা ছবি। এই ছবিটা বাদে ও বাড়ি থেকে কিছুই নিয়ে আসেনি হৃদি।
আসলে সকালে যখন তার বাবা তাকে জড়িয়ে কাঁদছিল তখন তার চাচা তাকে পালিয়ে যাওয়ার বুদ্ধি দেয়।
আজিজ রহমান সেই মতে মেয়েকে গ্রামের পেছন দিক দিয়ে বাস স্টপে নিয়ে আসে।
বাসে উঠিয়ে তিনি বাড়িতে চলে আসেন।
তবে আরহামের লোক যে হৃদি কে ফলো করছে তা হৃদি বাসে ওঠার পর বুঝতে পারে।
সে তখনি বুঝতে পারে সে যদি না চলে যায় তবে তার বাবা সহ পুরো গ্রাম টা তচনচ হয়ে যাবে।
তাই হৃদি বুদ্ধি করে বাড়িতে চলে আসে।
তবে বাড়িতে এসে সে দেখে আরহামের গাড়ি গুলো তাদের বাড়ির উঠানে।
হৃদি দৌড়ে ভেতরে যায়।
হৃদিকে ভেতরে আসতে দেখে আরহাম হৃদির কোমড় জড়িয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে,
" জান পালাচ্ছিলে ত চলে এলে কেন? আমার না সিকার কে পালাতে দেখলে ভীষণ মজা লাগে। তখন কষ্ট দেওয়া যায় বেশি বেশি। "
" প পালাচ্ছিলাম না। বিয়েত এক বারই হয় তাই সপিং। "
" ওহ সপিং বাসে করতে হয় বুঝি। আচ্ছা যাই হোক where is your shopping bags?"
" ওই খোলা ছিলনা কিছু। "
" জান আমিকি এতই বোকা? "
" ন না বিশ্বাস করুন। "
" কবুল বলো। কাজি বিয়ে পড়া"
এর পরের গল্প জানা।
,
,
হৃদি আরহামে থেকে দুরে সরে ছিল।। আরহাম হৃদির কোমড় ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
হৃদির আরও কান্না পাচ্ছে।
এসব ছোঁয়া তার সহ্য হচ্ছে না।
সুজের মড বিঁধছে।
আরহাম হৃদির ঘাড়ে মুখ গুঁজে হৃদির শরীরে ঘ্রাণ উপভোগ করে।
" অসাধারণ। "
হৃদি কেঁপে উঠে।
হৃদির কম্পিত দেহ আরহাম কে বরও আকৃষ্ট করছে।
আরহামের কেমন নেশা ধরে যাচ্ছে।
আরহাম হৃদির ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দেয়।
হৃদি চোখ বন্ধ করে" আহ "করে ওঠে,
আরহাম মুখ তুলে হৃদির দিকে তাকায়,
মেয়েটা জাস্ট "আহ "করে উঠেছে।
এটাই এত মধুর শুনচ্ছে। আর যখন তার নিচে শুয়ে গো*** দিবে তখন কেমন শুনাবে।
এ কথা ভেবেই তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
আরহাম এসব ভাবতে ভাবতে যখন হৃদির হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেছে তা তার খেয়াল নেই।
হৃদির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে,
" এখনোত কিছু করিনি জান। তবে এত অশ্রু কিসের? "
" হ হাত টা। "
আরহাম এবার টের পায়।
সে হৃদির হাতটা ছেড়ে দেয়।
আর একটু হলে কবজি থেকে হাড় ভেঙে যেত মেয়েটার৷
লাল হয়ে আছে। আসলে আরহাম ভীষণ শক্তিশালী একজন পুরুষ।
ওর রুক্ষতার কাছে হৃদি তুলার মতন।
সিংহের খাঁচায় এক বস্তা তুলা দেওয়া হয়েছে।
,
,
চলবে?
0 Comments:
Post a Comment