#মহীপতি👑
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_০৩
শহরের ১০ টা লাকজারি এপার্টমেন্ট এর মধ্যে খান বাড়িটা অন্যতম।
বিশাল গেটের ভেতর দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলে এটা হবে কোন রাজপ্রাসাদ।
অসম্ভব সুন্দর দেখাতে সব কিছুই মার্বেল পাথরের।
সৌখিন মানুষ আসরাফ খান। তার স্ত্রী তার থেকেও সৌখিন।
কোরিয়ায় দুটো বাড়ি আছে ওদের তাও সিওলের সব থেকে লাকজারি এলাকায়।
মিসেস ইউন - সুহ তার রাতের রুটিন শেষ করে বেডরুমে এসেছেন।
নাইট ড্রেস পরে আয়নার সামনে বসে লোসন লাগাচ্ছিলেন এমন সময় আসরাফ খান ভেতরে আসেন।
" জাগি ( ডার্লিং) একটা ভালো খবর আছে."
" কি ভালো খবর? "
" তথ্যমন্ত্রী জহিদ হাসানের এক মাত্র মেয়ে রোজি আমাদের ছেলের জন্য পাগল। মেয়েটা দেখতে ভীষণ সুন্দর। ওর সাথে ছেলের বিয়ে হলে ছেলের কালো কারবার আরও মজবুদ হবে। এক ঢিলে দুই পাখি। আর তা ছাড়া ছেলের বয়সও হয়েছে বিয়ে করার। "
" তার আর প্রয়োজন নেই তোমার ছেলে বিয়ে করে ফেলেছে। "
" জাগি তুমি এত মজা করতে পছন্দ করো আমি জানতাম না। "
" আমি মজা করছি না আসরাফ। "
মিসেস ইউন - সুহ এর সিরিয়াস ফেস দেখে আসরাফ খানের মুখের হাসিটা উড়ে যায়।
" জাগি তুমি সত্যি বলছো?"
" হ্যাঁ। "
" কিন্তু আমাদের ছেলেত গ্রামে প্রজেক্ট এর কাজে গেছিল। "
" সেখানে গিয়ে একটা মেয়েকে জোর করে বিয়ে করেছে। "
" মানে কি এসবের? "
" আমি জানিনা৷ তুমি রোজির বাবাকে বলে দেও। আমার বউমা পেয়ে গেছি। "
" তুমি কি পাগল হয়ে গেছো। কোন গ্রাম থেকে একটূ মেয়েকে ধরে এনে বউমা বানিয়ে দিচ্ছো। "
" আসরাফ সংসার ছেলে করবে তুমি বা আমি নই। "
" আমি এ বিয়ে মানিনা৷ ওই মেয়েকে ওর আসল জয়গা আমি দেখিয়ে দেব। তুমি আমাকে আগে কেন বলোনি৷ তাহলে গ্রামে গিয়ে ওদের শেষ করে দিতাম৷ "
" না ওদের শেষ করতে গেলে তোমার ছেলে তোমাকে শেষ করে দিত। "
" ইউন- সুহ৷ "
" যা সত্যি তাই বললাম। একটু অপেক্ষা করো আমার লক্ষি বউমা ঘরে আসল বলে। "
" কাল রোজি আমাদের বাড়িতে আসবে। কি জবাবা দেব আমি। "
" তুমি শুধু তামাসা দেখবে জবাব আমার ছেলেই দিয়ে দেবে। "
কথাটা বলে মিসেস ইউন-সুহ চলে গেলেন ঘুমাতে।
আসরাফ খানের মাথায় বাস পড়েছে৷ তার বউ বলে কি? ছেলে এমন একটা কাজ করবে ভাবতেও পারে নি সে।
,
,
,
প্রায় ৪ ঘন্টা জার্নি করার পর দেশের রাজধানীতে পৌঁছে যায় আরহাম আর হৃদি।
হৃদি আরহামের বুকের ঘুমিয়ে গেছে কাঁদতে কাঁদতে।
আরহাম, হৃদিকে ছাড়েই নাই।
হৃদির জার্নি করতে সমস্যা হয়।
মাথা ঘুরায়।
তাই হৃদিকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে আরহাম।
আরহামের বুকে হৃদিকে ভীষণ ছোট দেখাচ্ছে।
হৃদির চোখের পাপড়ি গুলো বড়ো বড়ো।
কি মায়াবী।
আরহাম হৃদির দিকে তাকিয়ে ভাবে সে কি পাগল হয়ে গেল।
,
রাত ৩ টা খান বাড়ির সদর দরজা দিয়ে আরহামের গাড়ি ঢুকে বাংলোতে।
মিসেস ইউন-সুহ আরহামের আসার খবর শুনে নতুন বউ বরণ করার জন্য যা লাগবে তা সাজিয়ে রেখেছে।
আরহাম ভেতরে এসে দেখে হৃদির কোন নড়াচড়া নেই তাই আরহাম হৃদিকে পাজকোলে তুলে নেয়। গাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা বাড়ির দরজায় আসতে দেখে তার মা দাড়িয়ে।
আরহাম এক নজর জং সুক এর দিকে তাকায়।
জং সুক এদিক ওদিক তাকিয়ে এমন ভাব ধরেছে যেন সে কিছুই জানেনা৷।
" বেবি ওর দিকে ওভাবে তাকিয়ে লাভ নেই৷ পেটে ধরেছি আমি৷ কখন কি করো সব খোঁজ আমার রাখতে হয়। "
"এম্মা। "
" তোর বউ আমার ছেলের বউ ঘুম তাইনা? আচ্ছা দাঁড়া একটু বরণ করে দেই। "
মিসেস ইউন-সুহ ছেলেকে আর বউকে আগুনের ছ্যাঁক দেয়।
আরহাম এসব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে,
" Emma do it first she is really heavy ( এম্মা দ্রুত করো সে সত্যি ভারি) "
" এত খেয়ে পরে ছেলে আমার বউকে নিয়ে দুই মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। এসব খাওনের মানে কি তাহলে?"
" stop Emma let me go. (থামো এম্মা আমাকে যেতে দেও।) "
" যাবি যাবি। দ্রুতই যাবি। "
মিসেস হউন-সুহ পথ ছেড়ে দেয়।
আরহাম, হৃদিকে নিয়ে তার রুমে চলে আসে।
হৃদিকে তার বিছনায় শুইয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায় আরহাম।
সাওয়ারের নিচে উদাম শরীরে দাঁড়িয়ে আছে আরহাম।
শরীর বেয়ে টুপ টুপ পানি পড়ছে।
কি অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে।।
সে এক্সারসাইজ করে।
তার বুকে কোন পসম নেই। এমনকি মুখেও দাঁড়ি নেই।
মায়াবী ভীষণ মায়াবী। তবে হিংস্র। একজন সিংহ যেমন রাজ করে পুরো জঙ্গলে তেমন।
সিংহের থেকেও তিব্র ওর হুঙ্কার। শুনেই যে কেউ ভয় পেয়ে যায়।
,
,
সাওয়ার সেরে বেডরুমে আসে আরহাম।। এই প্রথম তার বেডরুমে সে ছাড়া অন্য কেউ শুয়ে আছে।
দৃশ্য টা সত্যি অকল্পনীয়।
আরহাম হাতে একটা ওয়াইন এর বোতল নিয়ে সোফায় বসে।
হৃদির পরনে সারা রঙের গোল জামা।
শুইয়ে দেওয়ার সময় ওড়ানাটা ঠিক ছিলনা।
সরে গেছিল সেভাবেই শুয়ে আছে হৃদি।
ওর বুকের ভাজ গুলো দৃশ্যমান।
হৃদির হাত দুটো একটা পেটে অন্য টা মাথার কাছে রাখা৷
দেখেই নেশা হচ্ছে আরহামের।
চোখ বন্ধ করে নেয় আরহাম।
বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে আরহাম।
আরহাম সোফায় মাথা কাথ করেই কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থাকে।। এরপর ওর শরীর পুরো ঠান্ডা বরফের মত হয়ে যায়।
আরহাম বাকা হাসে।
কারণ এখন সে খুবই সুন্দর একটা কাজ করবে।
এতক্ষণে আরহাম বুঝে গেছে হৃদির ঘুম ভীষণ গাড়ো।
সাওয়ার সেরে এসেছে আরহাম। শরীতের রাত ওর শরীরে জড়িয়ে গেছে ঠান্ডা।
এখন আরহামের শরীর টা কোন সদ্য ফিরিজ থেকে বের হওয়া বরফের মত ঠান্ডা হয়ে আছে।
আরহাম ধিরে হৃদির কাছে যায়।
হৃদির ওড়নাটা সরিয়ে ফেলে।
হৃদির কোন হুস নেই।
এরপর ধিরে ধিরে খুবই সাবধানে হৃদির জামা খুলে ফেলে।
হৃদি এবার একটু নড়েচড়ে ওঠে।
একটা কালে রঙের অন্তর*বাস পরা ছিল হৃদির। ফর্সা শরীরে কি মানিয়েছে।
মানুষের ঢাকা অংশ গুলো খোলা অংশের থেকে বেশি ফর্সা হয়।
আরহাম হৃদির ওই উন্মুক্ত শরীর কে নিজের ঠান্ডা শরীর দিয়ে জড়িয়ে ধরে।
হৃদি কেঁপে ওঠে।
চোখ খুলে আরহাম কে উদাম আর নিজের এমন অবস্থা দেখে কেঁপে ওঠে হৃদি।
তবে হৃদির নড়বার এক রক্তি জায়গা নেই৷ না আছে জায়গা না আছে অবস্থা।
হৃদি এবার ভয়ে শীতে উভয়ে কেঁপে উঠে।
আরহাম হৃদিকে জড়িয়ে নেয় কম্বলের নিচে।
হৃদির ঘাড়ে নাক গুঁজে।
" ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। ভীষণ। "
হৃদি আর কিছু বলেনা।
প্রথম কেন পুরুষের এত গভীর ছোঁয়া অনুভব করছে হৃদি।
লোকটা তার স্বামী।
কিন্তু সব কিছু কেমন দ্রুত হয়ে যাচ্ছে।
হৃদি চোখ বন্ধ করে নেয়।
ঠান্ডা লাগছে।
তবে কিছুক্ষণ এর মাঝে শরীর গরম হয়ে যায় ওদের।
আরহাম ঘুমিয়ে গেছে।
হৃদি বুঝতে পেরে সরতে চায় তবে পারেনা।
হৃদির পেটে এক হাত আরহামের।
ঘাড়ে মুখ গোজা।
পেট হয়ে হাত হৃদির বুকে গিয়ে ঠেকেছে।
তাও হাতের মুঠোয় হৃদির বুকাটাকে বন্দি করে রেখেছে।
অন্য হাত পিঠ বরাবর ওর বাহুডোর কে আবদ্ধ করে রেখেছে।
,
হৃদি না পেরে চোখ বন্ধ করে নেয়।
,
,
,
আজিজ রহমান না খেয়েই বসে আছে।
একটা দিন রাতেও তার ঘুম নেই।
মেয়েটা তার সব।
কি হয়ে গেল এক নিমিশে। "
" ভাইাজন। "
আসিফ রহামনের ডাক শুন আজিজ রহমান একটু কেঁপে ওঠে,
" ওহ তুই ঘুমাস নি?"
" তুমি এভাবে বসে থাকবে আর আমি ঘুমাব। চলে ভাইজান ঘরে চলো। "
" আমি কি অপরাক বাবা রে আসিফ। আমার একটা মাত্র মেয়ে। আমার হৃদি। ".
আজিজ রহমান কেঁদে ওঠে।
আসিফ রহমান তার ভাইকে জড়িয়ে ধরে।
,
সত্যি নিয়তি বড় কঠিন।
,
চলবে?
0 Comments:
Post a Comment