গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ১

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় 

#পার্ব_০১

#লিখনিতে_Rodela_Islam 


{ কপি করা নিষেধ }


আমি ইসরাত জাহান তুলি ভালোবেসে সবাই তুলি বলে ডাকে আমি এবার অনার্স ১ম বর্ষে পড়ছি  আমি আমার মা বাবা  এবং বাড়ির সবার খুব আদরের আমি কিছু বলার আগেয় আমার মনের কথা বুঝতে পারে এবাড়ির সবার চোখের মণি হলেও এক জনের চোখের বিষ সে আর কেও না আমার বড়ো চাচ্চুর ছেলে তমাল আহামেদ  সে আমার থেকে ৬ বছড়ের বড়ো লেখাপড়া শেষ করে ভার্সিটির বাংলা টিচার হিসেবে জয়েন্ট করেছি সে একটা কাজের ১০ দিনের জন্য বাহিয়ে গিয়েছিলো আজ বাড়ি আসবে তার বাড়ি  আসা মানে আমার জীবনের বারোটা বাজানো 


আমি ভার্সিটি থেকে বাড়ি ফিরে এসে দেখি আম্মু আর চাচিআম্মু মিলে রান্না করছে  আর গল্প করছে 


আমাকে দেখে বলল------ তুলি তুই এতো তাড়াতাড়ি চলে এলি যে


তুলি----- ক্লাস শেষ তাই চলে এসেছি আম্মু 


রাহেলা বেগম ------ ভালো হয়েছে এখন গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিয়ে আমাদের একটু সাহায্য কর 


তুলি ----- আমি পারবো না বাড়িতে অনেক মানুষ আছে তাদের বলো 


তুলি আর কথা না বাড়িয়ে নিজের ঘরে চলে যায় ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে ২ বছর আগের কথা  

তমাল ছোটো থেকেই তুলিকে কাদাতে কষ্ট দিতে ভালোবাসতো তার সাথে তুলির প্রতি আলাদা একটা কেয়ার করতো তাই দেখে তমা তমালের প্রতি আসক্ত হতে থাকে একদিন হঠাৎ একদিন তুলি তমালকে প্রপোজ করে তমাল তুলিকে রিযেক্ট করে দেয় তার থেকেই শুরু হয় তুলির প্রতি তমালের অত্যাচার আরো বেরে যায় তুলিকে এরিয়ে চলা এবং একটু ভুল হলে তার জন্য শাস্তি দেওয়া সাথে বকা তো আছেয় 


------ কেনো এমন হলো আমার সাথে আমি তো শুধু ভালোবেসেছিলাম তাহলে তুমি কেনো বাসলে না তমাল ভাই তোমাকে ভালোবাসাটা কি আমার অন্নায় ছিলো তোমাকে পাওয়ার সামান্য যোগত্তা কি আমার নেই আমার ছোটো মন টাকে এভাবে রক্তাক্ত না করলেও পারতে একদিন তুমিও আমার ভালোবাসার অপেক্ষা করবে সেদিন আমিও তোমাকে এতোটা কষ্ট দিবো যতোটা আমাকে দিয়েছে তার থেকেও বেশি তুমি দেখে নিও হাত দিয়ে চোখের পানি মুছে তাচ্ছিল্যের হাসি দেয় মি: তমাল আমার ভালোবাসার জন্য তুমিও কাদবে একদিন মিলিয়ে নিও পাশে রাখা টেডিবিয়ারটা জড়িয়ে ধরে ঘুমের দেশে পাড়ি জমায় 


----বিকেল ৫ টা----


তমাল এসেছে দুপুরের একটু পরে এসে সবার সাথে কথা বলে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়েছে আর এখন উঠেছে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামার জন্য সিরির কাছে আসতেই তুলির সাথে ধাক্কা লাগে ধাক্কা খেয়ে পরতে নিলে তমাল ওকে ধরে নিয়ে দাড় করায়


---- তুই দেখে হাটিস না নাকি চোখ সিন্দুকে রেখে আসিস --


তুলি----- সরি তমাল ভাই


তমাল----- এরপর থেকে আমার সাথে ধাক্কা লাগে পরেগেলে আর ধরবো না রাগিস্বরে


তুলি----- ধরতে হবেনা তোমাকে আমি কি বলেছি তুমি আমাকে ধরো 


তমাল -----খু্ব তো কথা শিখেছিস একদিনে আমার মুখের উপর কথা বলার শান্তি তো দিতেই হবে তোকে  দাতে দাত চেপে  বলে 


----তমাল তুলিকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে আচমকা পরায় কোমরে বেশ ব্যাথা পায় 


---- এর পর থেকে মুখে মুখে কথা বললে এর ফল ভালো হবে না বলে হন হন করে চলে যায় সেখান থেকে 


--- তুলি কোমরে হাত দিয়ে উঠে দাড়িয়ে মনে মনে বিরবির করে 


-- বানোর একটা ফেলেই যখন দিবে তাহলে বাচালে  উফফ কি ব্যাথাটাই না পেলাম 


রুহি -- আপু কি হয়েছে কোমরে হাত দিয়ে হাটছো কেনো


---- আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই তোর কোনো  সমস্যা 


---- না আমার কোনো সমস্যা নেই 


---- আম্মুকে গিয়ে বল আমার জন্য খাবার বারতে আমি আসছি 


---- কোথাও যেতে হবে না আমি খাবার নিয়ে এসেছি ( লতা বেগম )


----চাচিআম্মু তুমি কেনো আনতে গেলে


---- চুপ করে বস তো আমি খাইয়ে দিচ্ছি দুপুরে না খেয়ে কেনো ঘুমলি সময় মতো না খেলে তো অসুস্থ হয়ে পরবি 


---- তুমি চিন্তা করো না এতো কিছু হবে না। 


----  এতো বড়ো মেয়েকে এখনো খাইয়ে দিতে হয় 

কেনো ওরকি হাত নেই নিজো হাতে খেতে পারে না আমার আম্মুকে কেনো কষ্ট করে খাইয়ে দিতে হবে ( তমাল)


----- হিংসা হচ্ছে তোমার


---- আমার কি আর কাজ নেই তোকে হিংসা করবো 


---- হ্যা তা আমার থেকে ভালো কে আর যানে 

আমাকে এতো কষ্ট দেওয়ার কারন তো এটাই সবাই আমাকে বেশি ভালোবাসে তাই তুমিও একদিন আমাকে সবার থেকে বেশি ভালোবাসবে বিরবির করে 


---- খাওয়া শেষ ঘরে চলে যায় 


----- রাত ১:১৫ ঘড়ির কাটার শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ শোনা যাচ্ছে না তুলি গভীর নিদ্রায় আছে তার ভারি নিশ্বাসের শব্দেই তা বুঝা যাচ্ছে কেও একজন তুলির খুব কাছে এসে বিছায় বসে


---- 


নতুন গল্প কেমন লাগলো জানাবেন। ভালোলাগলে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবেন। 


#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা ইসলাম

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ২৬ সমাপ্ত

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ২৬


রানি দরজার পাশে দাঁড়িয়ে গুলির আওয়াজে চিৎকার দিয়ে উঠে। 

দৌড়ে ভেতরে ডুকে আরেকটা চিৎকার দিয়ে সেন্সলেস হয়ে যায়। 


গুলি দুইটা শাহিন আর রাজের লেগেছিল। শাহিন কে পুলিশের একজন হাতে গুলি করেছিল যাতে গুলি টা ফেলে দেয় আর রাজ বেঁচে যায়। 


কিন্তু শাহিন নিজের হাতে গুলি খাওয়ার পর হাত নিজের কন্ট্রোলের বাহিরে যাওয়ায় তার হাতে থাকা বন্দুক থেকেও বেগে গুলি বের হয়ে যায়। 

যা রাজের বা হাতের বাহুতে লাগে। সাথে সাথে কলকলিয়ে গরম রক্ত ঝরতে থাকে। 


রানি রাজের হাতের অবস্থা দেখে জ্ঞান হারায়। 


রাজ চোখ মুখ খিঁচে কোনো রকম রানি কে ডান হাতে ধরে নিজের বুকের সাথে আকঁড়ে নেয়। 


ইশারা দিয়ে পানি আনতে বললে রাজ রানির মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়। 


রানি মিনমিন চোখ নিয়ে রাজের দিকে তাকায়। রাজের হাতের অবস্থা দেখে রানি চিৎকার করে কেঁদতে থাকে। 

রাজ আর নিজের মাঝে থাকতে পাড়ে না। ঢলে পড়ে যায়। 


সবাই ধরাধরি করে গাড়ি নিয়ে বের হয়। 


রানির কোলে রাজ শুয়ে আছে। চোখ তার বন্ধ। হাত দিয়ে অঝরে রক্ত পড়ছে। রাজের কোট ভিজে গেছে। সাথে রানির জামাও। অনেক রক্তক্ষরণ হচ্ছে। 


রাজ কে বুকের সাথে চেঁপে ধরে রানি কান্না করতে থাকে। 


বেশ সময় যাওয়ার পর রাজ আবার টিপটিপ করা চোখ নিয়ে রানির দিকে তাকায়। 


নিজের রক্তাক্ত হাত টা রানির হাতের সাথে মিশিয়ে নেয়। চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে ক্ষীণ সুরে বলতে লাগল,

"রা রানি।"

"কিছু হবে না তোমার তুমি ঠিক হয়ে যাবে। আর একটু সময়।"

"রা রানি তোমায় খুব ভালোবাসি।"

"....


রানির বুক চিঁড়ে কান্না আসছে।

"প্রেয়সী আ আমি যদি বে বেঁচে না থাকি।  তবুও তোমার কোনো র রকম কষ্ট হবে না। আমার লো লোক গুলি তোমার ভালো থাকার ব্যবস্থা করে দিবে।"

"চুপ একদম চুপ তুমি। একটা কথাও বলবে না। আমার শুধু তোমাকে চাই শুধু তোমাকে। তোমাকে চাই মানে চাই। আমার জন্যে তুমি সুস্থ হবে। ইনশাল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে। প্লিজ জান এমন বলো না।"

"ভালোবাসি তোমায় খুব ভা ভালোবাসি রানি।"


রাজ আবার চোখের পাতা বুজে নেয়। রানি গলা ফাটিয়ে কান্না করছে। রাজ কে বুকের সাথে ধরে শুধু কান্না করছে আর মনে মনে আল্লাহ কে ডাকছে। 


তার একটু পর হাসপাতালের সামনে গাড়ি থামে। রাজের লোক জন আবার ধরে তাকে ভেতরে নিয়ে যায়। 


ডক্টর দেখেই বলে,

"ও মাই গড। ইমিডিয়েটলি উনাকে ওটি তে নিতে হবে। শরীর থেকে অনেক রক্ত চলে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি করুন। আড়িআপ।"


ডক্টর রাজ কে নিয়ে ভেতরে চলে যাচ্ছিল। 

রানির মনে হচ্ছিল তার বুক চিঁড়ে কেউ তার জান টা নিয়ে যাচ্ছে। রাজের হাত টা শক্ত করে ধরে ছিল। 


আস্তে আস্তে রাজ কে তারা নিয়ে গেল। হাতের বাঁধনও ছুটে গেল। তার হাত টাও কেমন ঠান্ডা হয়ে আসছিল। রানির বুকের ভেতর ঝড় বইতে লাগল। অজানা ভয়ের ঝড়। এই ঝড়ই বোধহয় তাকে তোলপাড় করে নিবে। ছন্নছাড়া হয়ে যাবে না তো?


রানি ওটির সামনে বসে কান্না করছে আর মনে মনে দোয়া পড়ছে। 


প্রায় ১ ঘন্টা পর একজন ভেতর থেকে এলো। ওটির সামনে তখন ভিড়। রাজের গ্যাং এর সব ছেলে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। 


ডক্টর এসেই বলল,

"উনার বাড়ির লোক কে এখানে?"


ডক্টরের কথায় সবাই তার দিকে চলে যায়। ডক্টর কে ঘিরে রেখেছে। সবাই অনেক প্রশ্ন করছে, রাজ কেমন আছে। কি হলো, ঠিক আছে কি না। 


ডক্টরের ধমকে সবাই চুপ হয়ে গেল। রানি ডক্টরের সামনে যায়। 


"আমি উনার ওয়াইফ। কি হয়েছে আমায় বলুন। কেমন আছে ও?"

"দেখুন আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুই ব্যাগ AB পজেটিব রক্তের ব্যবস্থা করুন। আধ ঘন্টার মাঝে নিয়ে আসুন প্লিজ। না হলে খুব বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। যা করার তাড়াতাড়ি করুন।"


ডক্টর আবার ভেতরে চলে গেল। 


রানি ধপ করে বসে চিৎকার করে কান্না করছে। তার রক্তের সাথে রাজের রক্তের মিল নেই। না হলে নিজের সমস্ত রক্ত দিয়ে রাজ কে বাঁচাত রানি। 


রানির চিৎকার যেন হাসপাতাল কে কাঁপিয়ে তুলছে। হাউমাউ করে বাচ্চাদের মতো কান্না করেই চলছে মেয়েটা। 


"ম্যাম। আপনি চিন্তা করবেন না। কান্না থামান।"

"ম্যাম আমরা আছি তো। চিন্তা নেই।"

"আমরা কিছু একটা করছি ম্যাম আপনি ভেঙ্গে পড়বেন না।"

"বস কে আমরা আমাদের জীবন দিয়েও সুস্থ করব ইনশাল্লাহ। আপনি কাঁদবেন না ম্যাম। আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। আমরা দেখছি।"


একেক জন একেক কথা বলে রানি কে সান্ত্বনা দিচ্ছে। রানি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। 


রাজের গ্যাং এর বেশির ভাগ লোক এখন নেই। রক্তের সন্ধানে চলে গেছে। 

কিছু লোক হাসপাতালেই আছে। তবে ফোন দিয়ে নানান জায়গায় রক্তের জন্যে যোগাযোগ করছে। 


রানি খুব অসহায়। তার কিছুই করার নেই। জন্ম মৃত্যু তো আল্লাহর হাতে। এখানে কারো কিছুই করার থাকে না। আল্লাহ যখন যাকে পছন্দ করে তাকেই নিয়ে যায়। রানির এখন আল্লাহর নাম নেওয়া ছাড়া আর কোনো কিছু করার নেই। কান্না করছে দোয়া পড়ছে আর আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই। তার ভালোবাসা তার স্বামী যেন ঠিক হয়ে যায়। 


৩০ মিনিট হওয়ার পরপর রাজের গ্যাং এর লোক ৩ ব্যাগ রক্ত আনে। 


ডক্টর সাথে সাথে তা নিয়ে ওটি তে ঢুকে যায়। 


"ম্যাম আপনি চিন্তা করবেন না। ইনশাল্লাহ বস ঠিক হয়ে যাবে।"

"বস কখনো কারো ক্ষতি করেনি। উনার কোনো ক্ষতি আল্লাহ করবে না।"

"ম্যাম আমাদের সবার এত ভালোবাসা মিথ্যে হতে পাড়ে না। আমাদের দোয়া আল্লাহ নিশ্চয় শুনবে। ইনশাল্লাহ বস ঠিক হয়ে যাবে।"


ওদের কথা গুলি রানির মন কে যেন একটু শক্ত করছে। 


রানি অনবরত কান্না করছে। আর দোয়া করছে রাজের জন্যে।


তার আরো আধঘণ্টা পর ডক্টর বের হলো ওটি থেকে। 

"আল্লাহর রহমতে উনি এখন সুস্থ আছে। আল্লাহর অশেষ কৃপা। রক্ত চলছে আরো কিছুক্ষণ পর উনাকে কেবিনে দেওয়া হবে। বাকি টা আল্লাহর ইচ্ছা।"


ডক্টর চলে যায়। সবাই স্বস্তির নিশ্বাস নেয়। 

রানি হাজার বার কোটি বার আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। 


বেশ সময় যাওয়ার পর রাজ কে কেবিনে দেওয়া হয়। রাজের হাত টা রানি শক্ত করে ধরে রেখেছে। রাজ ঘুমাচ্ছে। একে একে তার গ্যাং এর সবাই গ্যাংস্টার কে দেখে যাচ্ছে। 


সারারাত রাজ আর ঘুম থেকে উঠে নি। চোখ মেলেও তাকায়নি। 

রানি সারারাত রাজের পাশে বসে ছিল। রাজের হাত টা খুব শক্তে ধরে রেখেছিল তার অর্ধাঙ্গিনী। 


সকালে রাজ মিটমিট করে তাকাতেই বুকে ভার কিছু অনুভব করে। 


ভালো করে তাকিয়ে দেখে রানি তার বুকে ঘুমিয়ে আছে। রাজ মুচকি হেসে রানির মাথায় চুমু খায়। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে রানির ঘুম হাল্কা হয়ে যায়। 


ধরফড়িয়ে রাজের বুক থেকে উঠে,

"তুমি ঠিক আছো?"

"....

"আসলে কখন ঘুমিয়ে গিয়েছি..."


রানির কথা শেষ করার আগে রাজ আবার এক হাতে রানি কে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।

রানিও মুচকি হেসে রাজের বুকের লেগে থাকে। 


রাজ রানির মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। 

"পাগলি খুব ভালোবাসি তোমায়।"

"....

"সারারাত ঘুমাও নি বুঝি?"


রানও মাথা তুলে বলে,

"স্বামীর এই অবস্থা থাকলে কোনো বউ ঘুমাতে পাড়ে না।"

"ওরে আমার পিচ্চি বউ টা রে।"


"তুমি থাকো আমি তোমার গ্যাং এর লোক কে জানাই তাদের গ্যাংস্টার চোখ মেলেছে।"

"ওরা কি হাসপাতালে?"

"তাহলে? সারা রাত সবাই এখানেই ছিল। ইনফেক্ট শুরু থেকেই ছিল। সবাই তোমার কেবিনের সামনে আছে হয়তো। ডক্টর এতো করে বলল সবাই কে কেবিনের সামনে না আসতে কে শুনে কার কথা?"

"বলো কি?"

"তবে আর কি? ডক্টর ২ ব্যাগ রক্তের কথা বলেছিল তোমার তাও আধঘণ্টার মাঝে। তোমার লোকজন তার আগেই ৩ ব্যাগ রক্ত নিয়ে এসেছে।"

"ওদের ডাকো।"

"হুম।"


রানি সবাই কে গিয়ে বলতেই পিঁপড়ার মতো হুড়মুড়িয়ে পড়ে রাজের দিকে। সবাই এক সাথে রাজের বেডের কাছে চলে যায়। এমন অবস্থাতেই রাজ কে জড়িয়ে ধরে সবাই চোখের পানি ফেলে। 

ওদের এই ভালোবাসা দেখে রাজ নিজেও ঠিক থাকতে পাড়ে না। আবেগপ্রবণ হয়ে কান্না করে দেয়। 


রাজ কে ৩ দিন হসপিটাল রাখা হয়। তারপর রানি রাজ আর সবাই কে নিয়ে বাড়ি যায়। 


এক সপ্তাহর উপর রানি নিজের সব টা দিয়ে রাজের যত্ন করে। রাজও সুস্থ হয়ে উঠে। এর মাঝে রানির বাবা মা এসে এসে রাজ কে দেখে যায়। 


রাজ রানি সাইরুর এক হোটেলের ব্যালকুনিতে বসে আছে। 


বেড়াতে এসেছে এখানে রানি কে নিয়ে। বউ কে নিয়ে সফর দেওয়া তো সুন্নত। আমার বিশ্ব নবীও উনার স্ত্রীদের নিয়ো বিভিন্ন দেশে সফর দিতেন।


দুজনেই ব্যালকুনিতে বসে আছে। ডিভানের উপর আধো শোয়া রাজ কে ঘেষে রানিও বসে আছে। 


আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা মুগ্ধ হচ্ছে। নীরবে যেন তারা তারাদের সাথে কথা বলছে। দুজনেই চুপ। 


সামনে কফি রাখা। এক কাপ কফি। রাজ সেই কফি হাতে তুলে নেয়। কফির মগে চুমুক দেয়। রানির কোমর টেনে রানিকেও আরো কাজে নিয়ে আসে। কফির মগ তার দিকে এগিয়ে দেয়। 


রানি মুচকি হেসে তা গ্রহণ করে। কারণ এটা রাজের অভ্যাস। এক কাপ কফিতে সে যেন রানি কে খুঁজে পেতে চায়। 


রাজ উঠে বসে। রানির গায়ে দেওয়া চাদরের মাঝে সেও ঢুকে পড়ে। রানি কে মুচকি হেসে নিজের উষ্ণ উমে নিয়ে আসে। রানিও মুচকি হেসে রাজের বুকে মাথা রাখে। 


হীম শীতল বাতাস বইছে চারিদিকে। 

হোটেলের লাইটের আলো তে চারপাশের প্রকৃতি আবছা দেখা যাচ্ছে। দুজনেই তাকিয়ে আছে তার দিকে। 


রাজ হঠাৎ রানির কানের পাশে হাত গুঁজে দিয়ে রানি কে টেনে আনে। রানির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করে দেয়। গভীর চুম্বনে তলিয়ে যায় দুজনে।


রাজ রানি কে ছেড়ে মুচকি হাসে। রানিও এক মারাত্মক রকম লজ্জাময় হাসি হাসে। 

"লজ্জাপরীর ওই লজ্জামাখা রঙ্গিন হাসি টা ভীষণ ভালোবাসি। ওই হাসি আমার দুনিয়া আলোকিত করে তুলেছে। ভালোবাসি রানি।"


রাজ আবার কফির মগে ঠোঁট লাগায়। সেই কফি রানির দিকে এগিয়ে দেয়। 


এক কাপ কফি তে দুজন দুজনকে খুঁজে চলার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। 


সমাপ্ত.....


গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ২৫

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ২৫


রাজ শান্ত কন্ঠে শাহিন কে বলল,

"দেখ তুই কি চাস আমায় বল।"


শাহিন তাচ্ছিল্য সুরে বলে,

"কি চাই? আমায় এখন বলছিস আমি কি চাই? কেন এখন তুই বিপদে পড়েছিস? অসহায় হয়ে গেছিস?"

"হাতি কাঁদায় পড়লে চামচিকাও লাথি মারে। প্রবাদ বাক্য টা শুনেছিস তো?"

"কি বলতে চাইছিস তুই?"

"আমি কিছুই বলতে চাইছি না। আচ্ছা তোর গার্লফ্রেন্ডকেও তো তুই ভালোবাসি তাই না? জানিস ও কোথায় আছে?"


শাহিন ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে বলে,

"কোথায় আছে?"

"ও এখন আমার কাছে আমার বন্ধি হয়ে আছে।"

"....

"ওকে বাদ দে। চল তুই রানি কে ছেড়ে দে। আর আমি তিরা কে। কি বলিস?"

".....

"কি রে শাহিন ভাবছিস নাকি?"

"তিরা কে আমি ভালোবাসি ঠিকি। কিন্তু এখন ওর থেকেও আমার দরকার আর প্রয়োজন প্রতিশোধের। আমি ওকে নিয়ে এখন ভাবছি না।"

"জানতাম আমি এমন টাই বলবি। আরে তুই তো মেরুদণ্ড হীন। ভালোবাসা তেই পারিস না। কাপুরুষের মতো অন্য কে হাতিয়ার বানিয়ে আমার সাথে লড়তে আসছিস।"


রাজ বেশ বুঝে পারছে তার কথায় শাহিন রেগে যাচ্ছে। সে এটাই চাইছিল। 


রানি নির্বাক হয়ে শুধু দুজন কে দেখছে। রাজ শাহিনের আড়ালে রানি কে চোখ দিয়ে ইশারায় আশ্বস্ত করেছে। তাই সে চুপ আছে। 


শাহিন রাগে রানির মাথায় আবার জোরেশোরে বন্দুক ধরে। রাজ তড়িঘড়ি করে বলল,

"আরে আরে এত তাড়াতাড়ি গেইম শেষ করে দিচ্ছিস? কোনো টুইস্ট ছাড়াই? সো সেড। ছিঃ শাহিন তুই গেইম কন্টিনিউ করতেই জানিস না অথচ #গ্যাংস্টার এর সাথে খেলতে চলি এলি।"


শাহিন এবার দূর থেকে রাজের দিকে বন্দুক ধরে।

"কি ভাবিস কি তুই? খুব বড় গ্যাংস্টার হয়ে গেছিস? আড়াল থেকে গ্যাং নিয়ে শুধু মানুষ কে সাহায্য করিস। গ্যাং চালাস বলেই তুই মস্ত বড় গ্যাংস্টার হয়ে গেছিস না? আমি চাইলেই সব খেলা তোর সব পাওয়ার শেষ করে দিতে পাড়ি এই মেয়ে টা কে মেরে। ওর জান আমার হাতে। তবুও বড় বড় কথা বলছিস?"

"আমি আজো বুঝতে পাড়লাম না আমি প্রতি এত রাগ ক্ষোভ কেন তোর? আর কি বললি? তুই নিজেও জানিস আমি কত বড় গ্যাংস্টার। আর কত বড় গ্যাং চালাই।"

"জানিস না তুই তোর প্রতি এত রাগ কেন আমার? নাকি ভং করছিস? ভাব কম দেখা। আমার চাঁদা তুলা, আমার ২ নাম্বারি ব্যবসা, মদের কারখানা, হিরোইন তৈরির গুদাম, ইয়াবা ব্যবসায় সব তুই নষ্ট করেছি। তবুও ভং করছিস? ভালো মানুষি দেখিয়ে নিজের গ্যাং এর সাথে আমার সব শেষ করে দিলি। সব শেষে তুই আমায় পুলিশের কাছে দিলি। ১ টা বছর। ১ টা বছর আমি জেলখানায় ছিলাম। তার শোধ আমি নিব না ভেবেছিস? সব মনে আছে আমার। আর তার প্রতিশোধ তো আমি নিবোই রাজ গ্যাংস্টার।"


রাজ আবারও ঘড়ির দিকে তাকায় আড়চোখে। ১০ মিনিট তো শেষ এখনো কেন আসছে না? রাজ চুপ করে মনে মনে টাইম গুনতে লাগল। 


তারা যেই রুম টায় আছে সেখানে তারা চারজন ছাড়া কেউ নেই। 


রাজ রানি শাহিন আর একটা তার সাথে থাকা চামচা দাঁড়িয়ে ছিল। বাকিরা বাহিরে পাহারা দিচ্ছিল। রাজ কে বিশ্বাস করা যায় না। সব করতে পাড়ে ও।


শাহিন বক বক করছিল। এমন সময় তার গ্যাং এর লোক রুমে ঢুকে গেল। 


শাহিন তাদের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝার আগেই রাজ দৌড়ে গিয়ে লাথি মেরে তার হাতে থাকা বন্দুক টা ফেলে দেয় মাটি তে।

সাথে সাথে রাজ নিজের বা হাত দিয়ে শাহিনের দুই হাত পেছন থেকে পেঁচিয়ে নেয়। আর ডান হাত রাখে গলা পেঁচিয়ে। শাহিন নড়বার শক্তি টাও পাচ্ছে না। 


দুই হাত রাজ পেঁচন থেকে পেঁচিয়ে রাখার কারণে তার দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে। 


"তুই কি ভেবেছিস? রাজ এত কাঁচা দান চালবে খেলায়? আমি তোর মতো কাঁচা খেলোয়াড় নই। আমি #গ্যাংস্টার রাজ চৌধুরী। তোর মতো মশা আমার হাতে কিছুই না। নিহাত রানি কে আটকে রেখেছিলি। তাই তোর সাথে গেইমের মাথায় যেতে একটু সময় নিয়েছি। না হলে তোর মতো মশা কে রাজ কখনই হাতের থাপ্পড় দিয়ে পিষে দিত।"

"র রাজ ছাড় আ আমায়।"

"ছাড়ব? তোকে? রানি কে ছেড়ে ছিলি তুই?"

".....


রাজ রাস্তায় আসার সময় তার গ্যাং কে কল দিয়েছিল। কয়েকজন মিলে সেই ঠিকানায় আসতে বলেছিল। 


কিন্তু এখন সে দেখতে পাচ্ছে তার পুরো গ্যাং চলে এসেছে। মানুষ গুলিও তাকে বড্ড ভালোবাসে। ভালোবাসবেই বা না কেন? তারা তো কোনো খারাপ কাজ করে না। বরং তার বিরুদ্ধে যায়। 


রাজ বলে রেখেছিল কিভাবে কি করতে হবে। আস্তে আস্তে কোনো শব্দ ছাড়া একেক টা কে সরাতে হবে। আর কয়েক জন তো টাকার কাছেই কাবু ছিল। 

না হলে রানির কিছু করে ফেলবে শাহিন। 


রাজ শাহিন কে ধরে রেখেছে। আর তার চামচা কে অন্যজন। 


রাজ চোখের ইশারায় বুঝাল রানির বাঁধন খুলে দিতে। কিছু লোক এসে রানির হাতের বাঁধন খুলে দেয়। বাকি টা রানি নিজেই করেছে। 

রাজ রানির দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্যে। 


রানি কান্নারত অবস্থায় মাথা দিয়ে না করে। এবার রাজ অনেক রাগি লাল লাল চোখ নিয়ে রানির দিকে তাকায়। রাজের চোখ দেখে রানি ভয় পায়। যার ফলে সে দরজা দিয়ে বের হয়ে যায়। 


শুরু হয় তুমুল মারামারি। শাহিন কে এলোপাথাড়ি মারছে রাজ। 

"তোর কলিজা টা কত বড়। তুই আমার জানে হাত দিয়ে দিলি।"


"তোর সাহস দেখে অবাক না হয়ে পারছি না।"


"আমি বলেছিলাম তো রানি কে ছেড়ে দিতে। কিন্তু তুই?.."


"তুই মজা নিয়েছিলি না আমার সাথে? রানি কে আটকে রেখে ভেবেছিলি আমায় শেষ করবি?"


"তোর কলিজা টা কত টা বড় আমি দেখতে চাই তুই আমার বাড়ি গিয়ে আমার বউ কে তুলে আনলি.."


রাজ কথা গুলি বলছে আর শাহিন কে ইচ্ছা মতো মারধর করছে। 


এক পর্যায় দেখা হলো শাহিনের অবস্থা খারাপ আবার পুলিশও চলে এসেছে। রাজ পুলিশ দেখে অবাক। কারণ সে তার গ্যাং কে এমন কোনো কথাই বলেনি। 


রাজ তবুও মারছে শাহিন কে। কথা বলার সুযোগ টাও দিচ্ছে। রাগে শুধু হাত চালাচ্ছে। 


"বস থামেন। পুলিশ এসেছে। আর সরি। আপনায় না বলেই আমরা এটা করেছি।"


তিয়াসের কথায় রাজ কর্ণপাত করল না। না করল পুলিশ কে ভ্রুক্ষেপ। 


পুলিশ আর তার লোকজন এসে রাজ কে ধরে শান্ত করে। আর শাহিন কে হাতের কাছে রাখে। 


সবাই রাজ কে শান্ত হতে বলছে। 

কিন্তু রাজ বারবার শাহিন কে মারতে চাইছে। তার বউের গায়ে হাত দিয়েছে। সাহস কত? 


শাহিন এই অবস্থাতেও তার পাশের পুলিশ কন্সটেবল কে ধাক্কা দিয়ে তার থেকে দূরে ফেলে দেয়। মাটিতে থাকা বন্দুক টা নিজের হাতে তুলে রাজের দিকে তাক করে। 


সবাই চুপ। পুলিশ রাজের গ্যাং রাজ নিজেও স্তব্ধ হয়ে আছে। 


"শাহিন। শাহিন বন্দুক নামা।"

"তুই কি ভেবেছিস? আমি জেলে যাবো আর তুই দুনিয়াতে বেঁচে থাকবি? না রাজ শাহিন তা হতে দিবে না।"


"শাহিন বন্দুক রাখ। দেখ এখানে পুলিশ আছে।"


কিছু পুলিশ শাহিনের দিকে বন্দুক ধরে রেখেছে। সুযোগের অপেক্ষা করছে। ঝোপ বুঝে কুঁপ। 


শাহিন একবার রাজের দিকে বন্দুক নেয় তো আবার যে এগিয়ে আসতে চায় তার দিকে। 


"গুড বাই গ্যাংস্টার রাজ চৌধুরী।"


শাহিন কথাটা বলে দম নেয়। সাথে সাথে দুই টা গুলির আওয়াজ হয়। সব কিছু নীরব নিস্তব্ধ হয়ে উঠে মুহূর্তে। 


চলবে....


(গঠনমূলক কমেন্টে করবেন)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ২৪

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ২৪


দুজন মিলে ব্রেকফাস্ট করে নেয়। 


রানির গালের পাশে দুই হাত রেখে নরম সুরে রাজ বলে,

"জান আমার সাবধানে থেকো।"

"কেন?"

"শাহিন জেনেছে যে তার নাটক আমি ধরে ফেলেছি। আই নো ও এখন চুপ থাকবে না। কিছু একটা তো করবেই।"

"....

"কলিজাটা তোমাকে নিয়েই আমার চিন্তা। ভেবেছিলাম আন্টি আঙ্কেলের কাছে তোমায় রেখে আসব। পরে ভেবে দেখলাম সেটা আরো রিস্ক হয়। উনাদের ঝুঁকি বাড়বে। এই বাড়ি তে আমি তোমায় প্রটেকশনে রাখব গার্ড দিয়ে। আল্লাহর রহমতে কিছু হবে না প্রেয়সী চিন্তা করো না।"


রাজ কথা শেষ করে রানির কপালে চুমু দেয়। 

"সাবধানে থাকবে। ভালো না লাগলে বা কিছু হলে সাথে সাথে আমায় কল দিবে।"

"তুমিও সাবধানে থেকো।"

"আল্লাহ আমার বউ আমায় তুমি করে বলল। আর আমি সাবধানে না থেকে পাড়ি?"

"না আসলে ইয়ে.."

"পাগলি তোমার মুখে তুমিটা বড্ড শোভা পায়।"


রানি মুচকি হাসে।


রাজ আরেকটা চুমু দিয়ে "সাবধানে থেকো প্রেয়সী" বলেই চলে যায়। 


রানি এত বড় বাসায় একা বসে আছে। ভয়ও লাগছে তার। কি করবে না করবে ভেবে পায় না। বুকের ভেতর এক অজানা আতঙ্ক কাজ করছে।

রাজ কি বলল? শাহিন যদি.. সত্যিই যদি এমন কিছু হয় তবে?


ভেবেই রানির ভেতর আত্মা শুকিয়ে চৌচির হয়ে উঠছে।


রানি এত বড় বাড়ি তে একা এদিক ওদিক যাচ্ছে। উপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে সে দেখতে পায় অনেক গুলি গার্ড বাড়ি বেষ্টন করে রেখেছে। তার সেফটির জন্যে রাজ এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। রানি মুচকি হাসি দেয় রাজের ভালোবাসা ময় দায়িত্ব দেখে।


দুপুর তখন ১ টার উপরে। আমেনা আন্টি রান্নাঘরে কাজ করছে রানি সোফায় বসে কার্টুন দেখছে। 


হাঠৎ রানি অনুভব করল কেউ একজন পিছন থেকে তার মুখ চেঁপে ধরেছে। 

রাজ হলে তো তাকে এত কষ্ট দিয়ে মুখে চাঁপ দিয়ে ধরত না। সে তো আলতো ভাবে রানি কে ধরবে। যেন ব্যথা না লাগে। তাছাড়া  রাজের ছুঁয়া সে অনুভব করতে পারে। 


রানির খুব কষ্ট হচ্ছে। চিৎকার দিতেও পারছে না। দম টা তার আটকে আসছে। চোখ গুলি ঝাপসা দেখতে শুরু করেছে। 


ঝাপসা চোখেই দেখতে পাচ্ছে আমেনা আন্টি হয়তো চিৎকার দিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে। 


রানির আর অবশিষ্ট শক্তি ছিল না। পিটপিট করে চোখের পাতা সে নিমিশেই বন্ধ করে দিল। তারপর বাকি টা আর মনে নেই রানির। 


রাজ অফিসে একটার পর একটা মিটিং শেষ করে নিজের রুমে এলো। 

চেয়ারে গা এলিয়ে দিল। এমন সময় তার ম্যানেজার এলো ফাইল নিয়ে। ইমপটেন্ট ফাইল তাই সে দেখতে লাগল। কাজের প্রতি রাজ পারফেক্ট। অদম্য সাহস আর মনোবল নিয়ে সে কাজ করে। 


ফোন বাজলে রাজ ফাইলের দিকে মুখ নিয়ে তা রিসিভ করে।


"কিরে গ্যাংস্টার?"

ওপাশের কন্ঠ শুনে রাজের রাগ উঠে যায়। তার বুঝতে বেশি সময় লাগল না এটা শাহিনের কন্ঠ। 


"তুই? তুই আমার কেন কল করেছিস? এত কিছুর পরেও নিজেকে শু.."

"আরে ওয়েট ওয়েট মাই ব্রাদার। গলা এত উঁচু কেন? গলা নামিয়ে কথা বলো।"

"তুই কেন আমার কল.."

"তোমার দুনিয়া আমার কাছে। ইয়েস তোর জানপাখি এখন আমার খাঁচায় বন্ধি।"


রাজ এমন একটা কথা শুনে কি বলবে ভেবে পায় না। হৃদপিন্ড তার কাজ করা যেন বন্ধ করে দিয়েছে। মুহূর্তে তার পৃথিবী আঁধার কালো হয়ে এলো। যেটা ভয় পেয়েছে সেটাই হলে। নিজেকে নিয়ে সে কখনোই চিন্তিত বা ভয়ে থাকে না। তার সব ভয় তার সব চিন্তা শুধু রানি কে নিয়ে। রানি যে তার গুটা দুনিয়া। 

রাজের কথা লেগে আসছে। মুখ দিয়ে কি বলবে তাও ভেবে পাচ্ছে না। পায়ের নিচ থেকে মাটি তার যেন সরে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। 


লেগে আসা গলায় রাজ বলল,

"দে দেখ শাহিন ওকে তুই ছে ছেড়ে দে। ওর সাথে তো তোর ক কোনো শত্রুতা নেই। ওকে ছেড়ে দে।"

"এই প্রথম, জানিস এই প্রথম তোর গলায় আমি ভয় শুনতে পেলাম।"

".....

"কি যে শান্তি লাগছে না আমার কি বলব তোকে। তোর কন্ঠে ভয়? কিভাবে সম্ভব? আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না জানিস।"

"দেখ শাহিন তুই রানি কে ছেড়ে দে।"

"কুল কুল। এত তাড়া কিসের? সবে তো শুরু। মাত্র তোর জানপাখি কে আমার কাছে আনলাম। আরো তো কত কি বাকি।"

"মানে?"

"গলা নামিয়ে। কান টানলে মাথা আসে। যেই এড্রেস দিচ্ছি তাড়াতাড়ি চলে আয়। তোকে আমার খুব দরকার। বেশ কিছু দিন হয়ে গেল তোর সাথে সামনাসামনি কথা হয় না আমার। চলে আয়। আর ভুলেও ফের পুলিশ নিয়ে আসিস না। তাহলে কিন্তু তোর দুনিয়া কালো হয়ে যাবে। মানে তোর রানি কে..."

"শাহিন না। না শাহিন তুই কিছু করবি না। আমি আসছি। রানি কে কিছু ক..."


রাজের কথা শেষ হতে না হতেই ওপাশ থেকে লাইন কেটে যায়। 


রাজ দিশেহারা হয়ে যায়। কি করবে তার মাথা কাজ করছিল না। শুধু ছটপট করছিল। রানি কে ঘিরে যে সে বেঁচে আছে। রাজ আর ভেবে সময় নষ্ট না করে বেড়িয়ে পড়ে। 


শাহিনের ম্যাসেজ করা এড্রেসের দিকে ছন্নছাড়া হয়ে গাড়ি চালাতে লাগে। 

এই মুহূর্ত সে এক দিশেহারা উন্মাদ।


রাজ দ্রুত সেই এড্রেস অনুযায়ী চলে যায়। একটা নিরিবিলি জায়গা। আশপাশে অনেক গাছ। পুরান এক বাড়ির সামনে রাজ তাড়াতাড়ি করে ব্রেক কষে। 


দরজার সামনে দুজন রাজ কে চেক করল। তারপর ভেতরে পাঠিয়ে দিল। 


রাজ দৌড়ে ভেতরে চলে যায়। 

শাহিন তখন বসে বসে ভিলেন হাসি হাসছিল। 


রানির হাত পা বাঁধা। মুখের মাঝে কাপড় পেঁচিয়ে রেখেছে। কান্না করার কারণে মেয়েটার চোখের নিচে একটু সময়েই কালো দাগ পড়ে গেছে। চোখ গুলি লাল আর ফোলা। মনে হয় ভয়ে খুব কেঁদেছে।


রাজ কে দেখে রানি হাত পা বাঁধা অবস্থায় চেয়ার থেকে উঠার চেষ্টা করছে। আর বৃথা কথা বলার।

রানির এই অবস্থা দেখে রাজের বুকের ভেতর মুচড় দিয়ে উঠে। ভেতরে পর পর ছুরিকাঘাত করার মতো কষ্ট হচ্ছে। তোলপাড় শুরু হয়ে গেল তার মাঝে। রানির জন্যে ভেতর থেকে শুধু হাহাকার আসছে তার। 


"আরে আরে পাখি এত ফরফর করছো কেন? তোমার জানের স্বামী তো সবে এলো। আগে ওকে একটু বিশ্রাম করতে দাও হাহাহা।"


শাহিনের কথায় রাজের খুব রাগ হয়। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়। 


"দেখ শাহিন তোর যা করার আমার সাথে কর। প্লিজ ওকে ছেড়ে দে। বাসায় পৌঁছে দিয়ে আয়।"

"বাসায়? হাহা হাহাহা। তোকে ভয় পেতে দেখে না আমার খুবি ভালো লাগছে জানিস? এত বছরেও তোর চোখে এক দিন ভয়ের কোণা পর্যন্ত দেখিনি। আর আজ ওর জন্যে তোর চোখে আছে শুধু ভয়। আর ভয় মুখেও জড়তা। হাহাহা।"

"দেখ শাহিন আমি তোর কাছে রিকোয়েস্ট করছি তোর যা ইচ্ছা আমার সাথে কর। মার ধর যা ইচ্ছা কর। শুধু রানি কে ছেড়ে দে। সেফটলি ওকে বাসায় পৌঁছে দে।"

"আরে দাঁড়া না। তোর বউয়ের সাথে কিছু একটু করতে দে"


এভার রাজ রাগে ফেটে যায়। শাহিনের দিকে তেড়ে আসতে চায়লে শাহিন বাঁধা দেয়। 


রানি এখন ভয়ে আরো কাঁদতে থাকে। রাজের দিকে অসহায় দৃষ্টি দেয়। রানির এই চাওনি রাজের ভেতর পর্যন্ত পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে। কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। এই মুহূর্তে তার নিজেকে দুনিয়ার সব চেয়ে অসহায় লাগছে। 


"এ্যা এ্যা। না এমন ভুল ভুলেও করিস না। ভুলে যাস না তোর রানির জানপাখি কিন্তু আমার হাতের মুঠোয়। শুধু একটা.."


শাহিন গান তাক করে রানির মাথায়। ভয়ে রানির ভেতর টা কেঁপে উঠে। চোখ বন্ধ করে নেয়। 


"না শাহিন না। এমন কিছুই করবি না তুই। প্লিজ তোর কাছে রিকোয়েস্ট করছি রানির কিছু করিস না। ওকে ছেড়ে দে তুই।"

"ছেড়ে দিব?"

"শাহিন ওর সাথে তো তোর কিছু শত্রুতা নেই। যা আছে তা আমার সাথে। তাহলে ওর সাথে.."

"ও? ও তো তোর দুনিয়া। তোর পরাণ পাখি। ওকে কষ্ট দিলেই তো তুই কষ্ট পাবি। তোর জান টা যে ওর ভেতর। ওকে শেষ করে দিলেই তুই শেষ হয়ে যাবি।"


রাজ কিছু বলে না। নিজেই নিজেকে একটু সান্ত্বনা দিচ্ছে। নিজেকে ঠিক করে নিচ্ছে। এখন তার রাগ বা মাথা গরম করলে চলবে না। তার একটু ভুলে মারাত্মক কিছু ঘটে যাবে। ঠান্ডা মাথায় সব টা সামাল দিতে হবে। 


রাজ আড় চোখে তার ঘড়ির দিকে তাকায়। এখনো ১০ মিনিট বাকি আছে। শাহিন কে এই সময় টা কথার মাঝে ব্যস্ত রাখতে হবে।

রানি কে সেইভ করে যা করার করতে হবে। এর আগে কিছুই করা যাবে না।


চলবে....


(গঠনমূলক কমেন্ট পাবো আশা করছি)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ২৩

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ২৩


রানি কি বলবে না বলবে ভেবে পায় না। ছলছল করা চোখ নিয়ে রাজের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকে। 


এই মানুষ টাকেই কি সে অবিশ্বাস করে গেল? যে কি না নিঃস্বার্থ ভাবে তাকে ভালোবেসে গেছে। তাকে পাওয়ার জন্যে কত কিছুই না করল। মিথ্যে প্রোফেসর সাজা, তাকে এক দিনেই বিয়ে করে নেওয়া। আর এই মানুষ টা কে কি না সে....


রাজ ল্যাপটপ টা বন্ধ করে পাশের টেবিলে রাখে। 


ঘুরতে না ঘুরতে রানি এসে তাকে ঝাপটে ধরে। শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ করে নেয় নিজের ভালোবাসা কে। 


রাজের চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। রানি অঝরে কান্না করতে থাকে। মুহূর্তে মুহূর্তে রাজ কে শক্তে জড়িয়ে নিচ্ছে। রাজও রানি কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে চোখের পানি ফেলছে। 


রাজ একসময় শব্দ করে রানির গলায় নিজের মুখ ডুবিয়ে দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করতে থাকে। 


সব মিলিয়ে রানির বুক ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। যেন কেউ তার বুক দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিচ্ছি। প্রতিনিয়ত আঘাত করছে তার বুকের ভেতরটা কে। রাজের ফুঁপিয়ে কান্না টা যে রানির গহীনে কি প্রভাব ফেলছে আর কত টা যন্ত্রণা দিচ্ছে তা রানি বলে প্রকাশ করতে পারবে না কখনো। মনে হচ্ছে আজরাইল বুঝি এই তার জান কবচ করছে। এখনি মনে হয় তার দেহ থেকে প্রাণ পাখি টা উবে যাবে। 


রানির এমন কষ্টে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়ে যায়। আস্তে আস্তে তার শরীর যেন নেতিয়ে পড়ে। রাজের বুকে হেলে যায় সে। 


রানি কে এই অবস্থায় দেখে রাজ দিশেহারা হয়ে যায়। কষ্ট তার আরো বেড়ে যায়। 


রানি কে কোনো রকম কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে যায়। চোখ মুখে পানির ঝাপটা দেয়। হাত পা ঠলতে থাকে। কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না তার। কোনো রেসপন্স নেই রানির। ক্রমশ শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে। রাজের ভেতর ঘরে ভয় ঝেঁকে বসেছে।


রাজ এবার উপায় না পেয়ে রানির মুখের কাছে যায়। ঠোঁট দুটি হাল্কা ফাঁক করে তার মাঝে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে দেয়। নিজের নিশ্বাস টা রানির গহীনে ছেড়ে দেয়।

বার কয়েক রাজ এই প্রথায় অবলম্বন করে। রানি কে অনেক ডাকে। খুব বেশি কান্না করছে সেই সময়ে সে।


"প্লিজ মাই লিটল এঞ্জেল। আমার বউ প্লিজ আমি বাঁচব না তুমি ছাড়া। তাড়াতাড়ি উঠো। রানি উঠে পড়ো প্লিজ আমায় আর একটা কষ্ট দিও না যেটার কারণে আমি উন্মাদ কিংবা মরে যাই। রানি উঠো। আল্লাহ তুমি আমার রানি কে ঠিক করে দাও। দোহাই তোমার আমার বউ কে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও। দয়া করে আল্লাহ আমায় একা করে দিও না।"


রানির মুখে আবার নিশ্বাস ছেড়ে দেওয়া হয়। বার কয়েক দেওয়ার পর রানির কাশতে থাকে। 

শরীর তার বড্ড ক্রান্ত। রানির মাথা রাজ নিজের বুকের সাথে চেঁপে ধরে কান্না করতে থাকে বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে।  


রানি হাত দিয়ে ইশারা করে পানি দেওয়ার জন্যে। রাজ পাশ থেকে গ্লাস নিয়ে তার মুখের সামনে ধরে। রানি বেশ খানেক পানি খেয়ে একটু বড় করে নিশ্বাস নেয়। 


রাজের কান্না দেখে সে রাজ কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। 


এবার রাজ শক্ত গলায় বলে,

"ওই আর কাঁদবি না। কাঁদলে এবার মেরেই ফেলব।"


রানি রাজ কে খামছে ধরে। রাজের বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে চোখের পানি ফেলে। 

রাজ তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মাথায় গভীর চুমু দেয়। 


"প্লিজ বউ কেঁদো না আমার। শরীর খারাপ করবে। কাল সকালে ডাক্তার এসে দেখে যাবো।"

"না।"

"কেন না?"

"ঔষধ!"

"কিসের ঔষধ?"

"আমি ঔষধ খেতে পাড়ি না। ডাক্তার আনতে হবে না।"


রাজ এক গাল হেসেই  বলে "পিচ্চি একটা।"


রানি কে কিছু খায়িয়ে দেয়। তারপর একটুু জুস জোর করে খাওয়ায়। 


রাজের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে রানি। রাজ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে রানির ঘন কালো লম্বা কেশে। রাজ কে জড়িয়ে ধরে রানি বলে,

"সরি।"

"....

"জনাব শুনছেন? আমি দুঃখিত।"

"....

"জনাব।"

"....

"জনাব বুঝি রাগ করল?"

"হুম।"

"আমি তা ভাঙ্গাতে চাই।"

"তাহলে যে লাগবে।"

"কি লাগবে?"

"মিষ্টি।"

"ওকে আমার বর আপনি বসেন আমি নিয়ে আসছি।"


রানি উঠতে চাইলে রাজ তার হাত টেনে নিজের বুকের উপর ফেলে। 

"আমি ওই মিষ্টির কথা বলি নি আমি এই মিষ্টির কথা বলেছি।"


মুহূর্তে রানি নিজের ঠোঁটযোগলে রাজের ঠোঁটের মধ্যভাগে আবিষ্কার করে। 


সকালে রাজ মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে রানির বুকের গহীনের সে মাথা রেখে তাকে জড়িয়ে রয়েছে। রাজ মুচকি হেসে রানি কে আরো শক্তে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। 


রানির কপালে আলতো একটা চুমু দিয়ে উঠে যায়। 


রাজ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রানি দুই হাত দুই দিকে উঁচু করে হাই তুলছে আর শরীর মুড়ামুড়ি করছে। 

রানির এমন করা দেখে রাজ মুচকি হাসে। 

"আমার জনাবার ঘুম বুঝি ভাঙ্গল?"

"জ্বি আমার জনাব।"

"শুভ সকাল মাই লিটল এঞ্জেল।"

"আপনাকেই শুভ সকাল মাই ড্রিমবয়।"


রাজ শব্দ করে হেসে দেয়। রানিও শরীর মুড়িয়ে হাসতে থাকে। 

"আমার জান টার ঘুম সব টা ভেঙ্গেছে নাকি আরো বাকি আছে।"

"জ্বি না আমার জামাই।"

"বউ তাহলে আপনি যান গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন।"

"আপনার জন্যে নাস্তা বানাতে হবে না?"


রাজ রানির কাছে গিয়ে দুই হাতে তার গাল টেনে দিয়ে বলে,

"ওরে আমার পিচ্চি বউ রে। তুমি যাও। ব্রেকফাস্ট টা আজ আমি করে দিচ্ছি।"

"কিন্তু.."

"তুমি তো কিছু পারো না। তবুও কাল থেকে তোমার যা ইচ্ছা করো। আস্তে আস্তে পারবে। জানো তো বউয়ের হাতের রান্নায় বিশেষ স্বাদ আছে।"

"ওরে আমার পাগল জামাইরে।"


রানি দাঁত বের করে হেসে ছুটে ওয়াশরুমে চলে গেল। 


রাজ হেসে "পাগলি" বলে কিচেনের দিকে হাটা শুরু করে। 


চলবে.....


(ছোট বলবেন না। আমি একটু অসুস্থ। দোয়া করবেন সকলে। কিছু পাঠকদের নিজ থেকেই এড দিয়েছি। কেউ অনেক দিন ধরে লিস্টে ঝুঁলে থাকলে বলবেন। একসেপ্ট করে নিব। আর সকলের কাছে দোয়া চাইছি🙂)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ২২

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ২২


রানির বাসায় গাড়ি থামে। রাজ গিয়ে দরজা খুলে দিলে রানি সেখান থেকে বের হয়ে আসে। 


রাজ পেছনের সিট থেকে মিষ্টি ফল যা যা এনেছে সব নিয়ে ভেতরে যায়। রানিও যায় রাজের পিছুপিছু। যেন ও পথদ্রষ্টা। 


রানি কে দেখে তার বাবা মা খুব খুশি হয়। মেয়েকে জড়িয়ে ধরে। রাজ সোফায় বসে আছে। রানি মুখ ফুলিয়ে নিজের রুমে চলে গিয়েছে। রানির মা রাজ কে নাস্তা দেয়। 


রাজ অল্প কিছু খেয়ে বসে শ্বশুরের সাথে আড্ডা দেয়। তারপর শাশুড়ির কথায় রানির রুমে যায়। 


রানি আয়নার সামনে বসে বসে কান্না করছিল। 


"কিভাবে কান্না করো তা বুঝি আয়নার সামনে বসে বসে দেখছো?"


রাজের কথায় রানি তার দিকে তাকায়। 

"তবে জানো তো। কান্না করলে তোমায় পেঁচার মতো লাগে। যেন কোনো এক রামপেঁচা।"


রাজের কথায় এভার রানির শরীর জ্বলে যায়। উঠে দাঁড়িয়ে বলে,

"আমি এখন পেঁচা হয়ে গেলাম তাই না? জানি তো। এখন আমায় ভালো লাগে না। আপনি তো ঠকবাজ। একজন কে বিয়ে করে ঠকিয়েছন, তারপর আমায় ঠকিয়ে বিয়ে করেছেন। আপনি এখন আবার ওকে ঘরে আনবেন নাকি আরেকজনকে নিয়ে আসবে ঠকিয়ে?"


রানি ততক্ষণে রাজের সামনে এসে তার কলার চেঁপে ধরে। 


"হোয়াট রাবিশ? হোয়াট আর ইউ ডোয়িং ননসেন্স? জাস্ট স্টপ ইট। ডেমেট স্টপ দিজ।"


রাজ রানির হাত ছাড়ায়। একটু দূরে গিয়ে ভেতরের নিশ্বাস ছেড়ে দেয়। রানি দাঁড়িয়ে এখন আরো বেগে কান্না করে। 


"আপনি তাহলে সত্যিই এমন করেছে? তা না হলে.."

রানির কথা থামিয়ে রাজ নিজেই বলল,

"কাজ আছে আমার। পরে দেখা হবে। টেইক কেয়ার প্রেয়সী।"


ব্যাস এইটুক বলেই রাজ ঘর থেকে বের হয়ে যায়। পিছন ফিরে আর একবারও তাকিয়ে রানিকে দেখে না। রানি এই ব্যবহার পেয়ে তার কলিজাটা চিঁড়ে যায়। সেখানে বসেই পড়ে কান্নারত অবস্থায়। বুক ডুকরে কান্না করছে সে। 


রাত তখন কয়টা বাজে রানির খেয়াল নেই। ঘুম টা তার হাল্কা হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে কেউ একজন তার উপর ঝুঁকে আছে। 


রানি চোখ মিটমিট করে তাকায়। হ্যাঁ রাজ নেশা ভরা চোখ নিয়ে তার উপর ঝুঁকে আছে। দুই হাত তার দুই পাশে রেখে অপলক দেখছে তাকে। 


রাজ না চলে গিয়েছিল? কখন এলো আবার? রানি চোখ ঢলে আবার তার দিকে তাকায়। 

রাজ তো আগের মতোই তার দিকে মাতাল করা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে।  


রানি উঠে বসতে চাইলে রাজ তাকে মানা করে। তারপর নিজেই রানি কে কোলে তুলে নিয়ে ব্যালকুনিতে চলে যায়। 


রানি আশপাশ দেখে আরো অবাক হয়। কারণ এটা রাজের বাসা। তারা তো ও বাড়ি ছিল। তাহলে এখন এখানে এলো কি করে? সে তো ঘুমিয়ে ছিল তাহলে? রানি কিছুই বুঝতে পারছে না। তারা কি চলে এসেছে? নাকি ও বাড়িই যায় নি? সব কিছু রানি কি স্বপ্নে দেখেছিল? রানির মাথা হ্যাংক হয়ে আসছে। এই গ্যাংস্টারের কিছুই রানি বুঝে উঠতে পারে না। হয়তো তার বুঝার শক্তিও নেই পুরো গ্যাংস্টার টা কে। 


"আমরা না.."

"চলে এসেছি।"

"ম মানে.."

"তখন দরকার ছিল তাই গিয়েছি। পরে আবার রাতে গিয়ে আন্টি আঙ্কেল কে বলে তোমায় নিয়ে এলাম এখানে।"

"কিন্তু আমি তো ঘুমে ছিলাম তাহলে কি ভাবে এল.."

"এখানে যেভাবে আছেন মহারানী সেভাবে নিয়ে এসছি আপনায়।"

"মানে আপনি আমায় আম্মু আব্বুর সামনে?"

"ইয়েস আমি আপনাকে আপনার পিতা মাতার সামনে দিয়েই আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে কোলে তুলে নিয়ে এসেছি।"

"ইউ.."


রানি রাজ কে এলোপাথাড়ি কিল চর দিতে থাকে। রাজ হেসে হেসে রানি কে নিজের কোল থেকে নামায়। 

রানি কে শান্ত করতে নিজের শক্ত বাহুডোরে জড়িয়ে নেয়। 


ক্ষণিকের মাঝে রানি শান্ত হয়ে যায়। হাত পা নাড়ানাড়ি করা বন্ধ করে দেয়। 


রানি কে নিজের বাহুডোরে জোড়ালো ভাবে আবদ্ধ করে নেয়। শান্ত কন্ঠে রানি কে প্রশ্ন করে,

"আমার বিরুদ্ধে তোমার কি কি অভিযোগ আছে তা ব্যক্ত করো।"

"....

"প্লিজ টেল মি।"


রানি কি বলবে বুঝতে পারছে না। তার কি সব কিছু বলা উচিৎ? কেন নয়? যেখানে রাজ নিজেই তার সম্পর্কের অভিযোগ গুলির কথা শুনতে চেয়েছে। অবশ্যই বলা উচিৎ তার। 


রানি কাঁদোকাঁদো ভাবে রাজের বুক থেকে সরে এলো। রাজের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায়। 

ঠোঁট উল্টিয়ে কান্না করে বলে,

"আপনি আমার আগেও একটা বিয়ে করেছেন। তাকে ঠকিয়েন।"

"তা এটা আপনায় কে বলল শুনি একটু।"

"আমি জানি। আপনি.."

"কানের নিচে একটা দিব। যা বললাম তার উত্তর দাও।"


রাজের ধমকে এবার রানি জোরে কান্না করে দেয়। 

রাজ বেচারার মাথায় হাত। রানি কে সামলে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। 


গালের দুই পাশে হাত রেখে শান্ত হয়ে বলে,

"তুমি না আমার জানপাখি। আমার কলিজা। বলো তোমায় কে বলল।"

"যেদিন আপনি বিদেশ থেকে ফিরবেন বলে আমায় কল করে জানিয়েছেন। সেদিন আমার ফোনে আননোন নাম্বার থেকে কল আসে। আমায় বলা হয় আমি যেন আমাদের বাসার সামনের ক্যাফেতে যাই। না হলে পরে পস্তাতে হবে। আগ্রহ নিয়ে বোরকা পরে গেলাম সেখানে। সেখানে এক মহিলা আমার জন্যে বসে ছিল। 

আপনার সম্পর্কে অনেক কথা বলে আমায়। সব মিলে গিয়েছিল। আপনি নাকি তাকে বিয়ে করেছেন, তার সাথে ১/২ মাস সংসার করছেন। আরো কত কি। আমি বিশ্বাস করছিলাম না বলে আপনাদের বিয়ের পেপার দেখায় আমার। আর তা দেখেই বিশ্বাস করি। আর আপনাকে অবিশ্বাস করতে শুরু করি।

আপনায় আমি মন প্রাণ দিয়ে ভালোবেসি। আপনাকে নিয়েই আমি বিয়ের স্বপ্ন দেখতাম। সেই আপনি আমায় ঠকালেন।"


এই বলে রানি আরো জোরে জোরে কান্না করা শুরু করে দেয়। 


রাজ তাকে শান্ত ভাবে বলে,

"হায় আল্লাহ এত বোকা তুমি? আসলেই তুমি বোকার ডিম একটা। ওটা বিশ্বাস করে আমার সাথে এমন করছো তুমি? ওই কাগজ তুমি বিশ্বাস করে নিলে রানি?"


রানি নাক টেনে জবাব দেয়,

"তো? নিজের চোখ কে কি করে অবিশ্বাস করব?"


রাজ নিজের প্যান্টের প্যাকেট থেকে একটা পেপার বের করে রানির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,

"এই সেই পেপার তো?"

রানি চোখ মুছে সেই পেপার হাতে নেয়। উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখে বলে,

"হ্যাঁ এটাই তো সেই পেপার। আপনার সাইনও আছে আর ওই মেয়েটারও।"

"হায়রে বুদ্ধু। এটা আমার নকল করা সাইন।"

"কি?"

"জ্বি। তুমি ছাড়া আমার দুনিয়াতে কেউ নেই তা আমার শত্রু শাহিন জেনে যায়।"


রানির গালের হাতে হাত রেখে রাজ আবার বলে,

"তুমি যে আমার লিটল এঞ্জেল। আমার কলিজা আমার সব টা দুনিয়া তা শাহিন জেল থেকে এসে জানে। আমার উইক পারসোন তুমি তাই তোমাকে তার খেলার গুটি হিসেবে নিয়ে আমায় শেষ করতে চেয়েছে। 'অদম্য মানুষকে দমন করতে হয় তাদের উইক পারসোন দিয়ে।' শাহিনও সেই পথ বেঁচে নিয়েছে। তোমাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে আমায় আঘাত করতে চেয়েছে। ভেবেছে তুমি চলে গেলে আমি দুর্বল হয়ে যাবো। সহজে তার পথ থেকে আমায় সরিয়ে দিতে পারবে। তাই তার গালফ্রেন্ড কে দিয়ে এমন একটা নাটক সাজিয়েছে আমার নকল করা সাইন দিয়ে যেন তুমি আমার থেকে দূরে চলে যাও। ও কিন্তু ওর চালে সফল হয়ে যেত। যদি না আমি এমন কিছু একটা আঁচ করে বিয়ে টা না করতাম। আমি জানি বিয়ে ছাড়া তোমার রাগ আমি ভাঙ্গাতে পারতাম না। কারণ তাহলে তোমার গভীরে প্রবেশ করতে হতো আমায়। যা বিয়ের আগে যিনা হতো। তাই সিদ্ধান্ত নেই বিয়ে করি আর শাহিনের প্লেনে পানি ঢেলে দেই।"


রানি ফ্যালফ্যাল করে রাজের দিকে তাকিয়ে আছে। লোক টা বলছে কি?


"বিশ্বাস হচ্ছে না তো? জানি হবে না। জাস্ট এ মিনিট।"


রাজ নিজের ল্যাপটপ অন করে। কানে ইয়ারফোন নিয়ে বলে,

"ভিডিও অন কর "


সাথে সাথে ল্যাপটপের স্কিনে ভিডিও অন হয়ে যায়। 

সেখানে তারি নামের মেয়েটাকে দেখা যাচ্ছে। যে কি না রানি কে বলেছিল তার সাথে রাজের বিয়ে হয়েছে। 


রানি চোখ মুছে অস্পষ্ট কন্ঠে বলে,

"এটা তো ওই মেয়েটা।"

"তোমার যা জিজ্ঞেস করার করো ওকে।"

"....


রানি চুপ থেকে কিছু বলার আগে মেয়ে টা বলল,

"প্লিজ আমায় ছেড়ে দিতে বলো রানি। আমার কোনো দোষ নেই আমি তো শাহিনের কথায় এমন করেছি। ওকে তো নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি। তাই এমন করেছি। ও যা বলেছে তাই করেছি। রাজ চৌধুরীর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। বিয়েও হয়নি কখনো। এটা একটা মিথ্যা নাটক ছিল তোমার থেকে রাজ চৌধুরী কে আলাদা করার। আর শাহিন আমাকে আর তোমাকে এই খেলার গুটি বানিয়েছে। দেখো আমার আর শাহিনের সব ছবি। আমার কোনো দোষ নেই। প্লিজ আমায় ছেড়ে দিতে বলো।"


তারি নিজের ফোনের ছবি দেখাতে লাগল যেখানে শাহিন আর তার অন্তরঙ্গের ছবি ভরপুর।


চলবে....


(কি ব্যাপার? যারা প্রতিদিন গঠনমূলক কমেন্ট করেন তাদেরকেই দেখি। বাকিরা কই? আপনারা কমেন্ট করেন না কি? শুধু আসেন গল্প পড়েন আর চলে যান। আপনাদের পড়ার আগ্রহ না দেখলে লিখব কি করে? গঠনমূলক কমেন্ট করবেন। নাকি আপনাদের আমি গল্প ভালো করে দিতে পারছি না?)


Sabriha Sadi

গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ২১

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ২১


রাতে ঘুমানোর আগে রানির খুব অস্বস্তি ফিল করছিল। অস্থিরতার জন্যে শুতে যেতেও ভালো লাগছিল না। 


অবশেষে বুকের হাজার প্রশ্ন আর অস্থিরতা নিয়ে সে ব্যালকুনিতে চলে যায়। রাতের ঘন কালো নিস্তব্ধ আকাশের দিকে তাকিয়ে হাজারো প্রশ্ন নিয়ে খেলা করছিল সে। 


রাজ পেছন থেকে তার কানো এসে ফোন রাখে। আস্তে করে বলে,

"আঙ্কেল কথা বলো।"


রানি একবার রাজের দিকে তাকিয়ে ফোন নেয়। বাবা সাথে খুব কথা বলে। তারপর মায়ের সাথে কথা বলে মন টা তার একটু হাল্কা হয়। 


কথা শেষ করে পাশ ফিরলে রাজ কে দেখে না। 

ফোনের স্কিনে নজর দিলে দেখে লক পেপারে তার একটা ছবি। এটা সেই ছবি যেদিন সে বাচ্চাদের নিয়ে খেলা করছিল পার্কে। হয়তো রাজ লুকিয়ে ছবি তুলেছিল। 

রানি তার নিজের ছবির দিকেই তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে। রাজ কে নিয়ে খুব করে ভাবছে সে। 


রাজ তার হাত থেকে ফোন টা নিয়ে বিছানাট উপর ছুঁড়ে মারে। 


রানির হাত ধরে টেনে ব্যালকুনির ডিভানে বসে। নিজের কোলে রানি কে বসায়। রানি উঠে যেতে চাইলেও রাজ তার কোমর পেঁচিয়ে রাখে। তাই চাইলে আর উঠা হয়ে উঠে না তার। 


এক কাপ কফি তে রাজ নিজের ঠোঁট ডুবায়। রানি কেও কয়েক বার খাওয়ায়। 


রাজ রানি এই এক কাপ কফিই শেয়ার করছে দুজন মিলে। 


"কফির স্বাদ টা তেঁতো হয়ে যাবে যদি ওই তোমার মিষ্টত্বের ছুঁয়া না পায়।"

কথাটা বলেই রাজ রানির ঠোঁটে নিজেকে উৎসর্গ করে। 


রানিও কেন যেন রাজের এমন আচরণের প্রতিউত্তর দেয়। যার ফলে মুহূর্তে পরিবেশ টা মধুময় হয়ে উঠে। 


রানি রাজ কে ঝাপটে ধরে। 

রাজ মুচকি হেসে তাকে কোলে নিয়ে বিছানার দিকে এগিয়ে যায়। 


ভালোবাসার আরেকটা রাত দুজনে মিলে পারি দেয়। গভীর ভালোবাসায় মেতে উঠে দুজনে। 


সকালে রানি তাকিয়ে দেখে রাজ তার বুকে মাথা রেখে তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে আছে। রানির ঠোঁটের কোণে একচিলতে হাসি আসে। 


রাজ একটু নড়েচড়ে উঠলে রানি আগের মতো চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে। 


রাজ চোখ ডলে রানির দিকে তাকায়। মুচকি হেসে রানির চুল গুলি কানের পাশে গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা করে। মাথা এগিয়ে দিয়ে রানির কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। ফিসফিসিয়ে বলে,

"প্রেয়সী কে যে খুব ভালোবাসি।"


রাজ তারপর উঠে যায়। ওয়াশরুমে গেলে রানি চোখ খুলে তাকায়। খুশিতে তার কান্না চলে আসে। 


"মানুষ টা তাকে এতটা ভালেবাসে। এত কেয়ার নেয়। যেন বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখলে তিনি স্বস্তি পায়। সেই মানুষটা কে কি করে অবিশ্বাস করছি? এটা কি সন্দেহ? কেন একজনের কিছু কে বিশ্বাস করে নিজের ভালোবাসা কে দূরে রাখছি আমি? খুব ভুল করছি কি আমি?"

রানি নিজের মনে মনে কথা গুলি বিড়বিড় করছিল। 


মনে মনে সে ভেবেই নিয়েছে রাজের সাথে এই বিষয়ে সে কথা বলবে। 


রাজ ওয়াশরুম থেকে এসে চুপচাপ রেডি হতে থাকে অফিস যেতে হবে তার। 


রানি সেই আগের মতো বিছানায় বসে আছে। গায়ের উপর চাদর টেনে মুখ গম্ভীর করে বসে আছে। রানির মুখের ভাব আর  চুপ থাকা দেখে রাজ বলল,

"বাচাল পরী চুপ কেন?"

".....

"রেডি থেকো মিটিং টা শেষ করে তোমায় আঙ্কেল আন্টির কাছে নিয়ে যাবো।"

"আপনার সাথে আমার কথা আছে।"

"বলে ফেলো কি কথা। কথা আছে তবে চুপ কেন প্রেয়সী?"

"আপনি আগে আরেকটা বিয়ে করেছেন?"


ততক্ষণ পর্যন্ত রাজ রেডি হচ্ছিল কিন্তু রানির কথা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে তার দিকে তাকায়। 


রানির চোখ রাজে আবদ্ধ আর রাজের চোখ রানি তে আসক্ত। 

রাজ প্রায় ১ মিনিট রানির দিকে তাকিয়ে ছিল। রানি চোখ বড়বড় করে কৌতূহলী চোখ নিয়ে রাজের দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু রাজ তাকে অবাক করে দিয়ে আবার নিজের মতো রেডি হওয়া নিয়ে ব্যস্ত। 


"কি হলো বলুন? আমার কথার জবাব দিন।"


রাজ হাতে ঘড়ি লাগাতে লাগে। আর বলল,

"লেইট হয়ে যাচ্ছে আসছি। যা বললাম তাই করো রেডি হয়ে থেকো।"


গাড়ির চাবি টা নিয়ে রাজ সুসু করে বের হয়ে গেল। রানি চোখের পানি ফেলতে থাকে। কান্না করতে করতে বলে,

"আমি জানতাম আপনি বিয়ে করেছেন। তাই চুপ ছিলেন। আপনি যদি বিয়ে না করতেন তাহলে তো আমায় বলেই দিতেন সোজা সাপ্টা কথা। আপনি একটা ঠকবাজ। আমি আপনার সাথে আর থাকব না। আব্বুর কাছে গেলে আমি আর আসব না। আমার জীবন নিয়ে আপনি ছিনিমিনি মিছে খেলা পেয়েছেন? আপনার মতো রাক্ষস কে আমি আর ভয় পাবো না। আপনি গ্যাংস্টার আছেন আপনার গ্যাং এ আমার কাছে নয়। আমি, আমি আপনাকে ডি ডিভোর্স দিব। আমার লাইফ চোরাবালি হয়ে গেল।"


রানি মাথায় হাত দিয়ে জোরে জোরে কান্না করছে আর নিজের সাথে বিড়বিড় করছে।


রাজ মিটিং শেষ করে ১২ টা ২০ এ বাসায় চলে আসে। 

রুমে গিয়ে দেখে রানি কান্না করছে। 


"তোমায় কি বলেছিলাম আমি?"

".....

"কি হলো রানি?"

"আপনি আপনার লাইফ টা খেয়ে ফেলেছেন আপনি একটা রাক্ষস।"


রানির কথা শুনে রাজ বিশম খেয়ে যায়। শুকনো কাশতে থাকে। রানির কাছে গিয়ে তার পাশে বসে,

"মানুষের লাইফ কি খাওয়া যায়?"

"হ্যাঁ আপনি আমার লাইফ খেয়েছেন।"


রাজ শুষ্ক ঢুক গিলে শান্ত কন্ঠে বলে,

"কি ভাবে বলো আমায়?"

"আপনি আগে একটা বিয়ে করেছেন তাকে ঠকিয়ে আপনি আবার আমায় ঠকিয়ে বিয়ে করেছেন। আপনি একটা ঠকবাজ বাটপার।"


রানির কথা শুনে রাজ শান্ত থাকতে পারল না। রেগে গিয়ে রানি কে ধমক দিল। 

"শাট আপ ডেমেট। স্টপ দিজ ননসেন্স। চুপ কান্না থামাও।"


রানি এবার ভ্যা ভ্যা করে হাতা পা ছুড়াছুড়ি করে কান্না করছে। তাকে একটা বাচ্চার মতো লাগছে। 


রাজ ধমক দেয় তো রানি তার কান্নার জোর বাড়িয়ে দেয়। 

রাজ উপায় না পেয়ে রানি কে কোলে তুলে নেয়। তারপর নিচে যেতে থাকে। 


রানি হাত পা নাচাতে নাচাতে,

"এই #গ্যাংস্টার কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমায়?"

"....

"আ আপনি আমায় মেরে ফেলতে নিয়ে যাচ্ছেন তাই না? আপনার গোপন কথা জেনে গিয়েছি বলে। আপনি ডেভিল জামাইয়ের মতো আমায় মেরে ফেলতে চাইছেন।"

"জাস্ট শাট আপ ননসেন্স। এখন সত্যিই মার খাবে যদি কান্না না থামাও।"

"আল্লাহ আল্লাহ আমায় বাঁচাও তুমি। এই রাক্ষসের কাছ থেকে.."


রানির এই আবিল্লি পেঁচাল রাজের অসহ্য লাগছিল। রানি কে কোলে নিয়ে থেমে যায় সে। না পেরে বলল,

"রানি প্লিজ চুপ করো। তোমাকে তোমার বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। প্লিজ স্টপ দিজ।"

"ওও এখন আমার লাইফ টা খেয়ে আপনি আপনার আগের বউ কে নিয়ে আসবেন তাই না? আমি বুঝি না ভেবেছেন? আমি সব জানি। ওকে আসেন নিয়ে আসেন আপনার ডাইনি বউ কে। থাকব না আমি আপনার কাছে। আমি আপনাকে ডিভোর্স দিব।"


রানির কথায় রাজ পাত্তা না দিয়ে আবার নিজের মতো করে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। 


চলবে....


(আমি দুঃখিত কাল গল্প না দেওয়ার জন্যে। গঠনমূলক কমেন্ট করুন।)😊


Sabriha Sadi