#গ্যাংস্টার
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ২৩
রানি কি বলবে না বলবে ভেবে পায় না। ছলছল করা চোখ নিয়ে রাজের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকে।
এই মানুষ টাকেই কি সে অবিশ্বাস করে গেল? যে কি না নিঃস্বার্থ ভাবে তাকে ভালোবেসে গেছে। তাকে পাওয়ার জন্যে কত কিছুই না করল। মিথ্যে প্রোফেসর সাজা, তাকে এক দিনেই বিয়ে করে নেওয়া। আর এই মানুষ টা কে কি না সে....
রাজ ল্যাপটপ টা বন্ধ করে পাশের টেবিলে রাখে।
ঘুরতে না ঘুরতে রানি এসে তাকে ঝাপটে ধরে। শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ করে নেয় নিজের ভালোবাসা কে।
রাজের চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। রানি অঝরে কান্না করতে থাকে। মুহূর্তে মুহূর্তে রাজ কে শক্তে জড়িয়ে নিচ্ছে। রাজও রানি কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে চোখের পানি ফেলছে।
রাজ একসময় শব্দ করে রানির গলায় নিজের মুখ ডুবিয়ে দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করতে থাকে।
সব মিলিয়ে রানির বুক ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। যেন কেউ তার বুক দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিচ্ছি। প্রতিনিয়ত আঘাত করছে তার বুকের ভেতরটা কে। রাজের ফুঁপিয়ে কান্না টা যে রানির গহীনে কি প্রভাব ফেলছে আর কত টা যন্ত্রণা দিচ্ছে তা রানি বলে প্রকাশ করতে পারবে না কখনো। মনে হচ্ছে আজরাইল বুঝি এই তার জান কবচ করছে। এখনি মনে হয় তার দেহ থেকে প্রাণ পাখি টা উবে যাবে।
রানির এমন কষ্টে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়ে যায়। আস্তে আস্তে তার শরীর যেন নেতিয়ে পড়ে। রাজের বুকে হেলে যায় সে।
রানি কে এই অবস্থায় দেখে রাজ দিশেহারা হয়ে যায়। কষ্ট তার আরো বেড়ে যায়।
রানি কে কোনো রকম কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে যায়। চোখ মুখে পানির ঝাপটা দেয়। হাত পা ঠলতে থাকে। কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না তার। কোনো রেসপন্স নেই রানির। ক্রমশ শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে। রাজের ভেতর ঘরে ভয় ঝেঁকে বসেছে।
রাজ এবার উপায় না পেয়ে রানির মুখের কাছে যায়। ঠোঁট দুটি হাল্কা ফাঁক করে তার মাঝে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে দেয়। নিজের নিশ্বাস টা রানির গহীনে ছেড়ে দেয়।
বার কয়েক রাজ এই প্রথায় অবলম্বন করে। রানি কে অনেক ডাকে। খুব বেশি কান্না করছে সেই সময়ে সে।
"প্লিজ মাই লিটল এঞ্জেল। আমার বউ প্লিজ আমি বাঁচব না তুমি ছাড়া। তাড়াতাড়ি উঠো। রানি উঠে পড়ো প্লিজ আমায় আর একটা কষ্ট দিও না যেটার কারণে আমি উন্মাদ কিংবা মরে যাই। রানি উঠো। আল্লাহ তুমি আমার রানি কে ঠিক করে দাও। দোহাই তোমার আমার বউ কে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও। দয়া করে আল্লাহ আমায় একা করে দিও না।"
রানির মুখে আবার নিশ্বাস ছেড়ে দেওয়া হয়। বার কয়েক দেওয়ার পর রানির কাশতে থাকে।
শরীর তার বড্ড ক্রান্ত। রানির মাথা রাজ নিজের বুকের সাথে চেঁপে ধরে কান্না করতে থাকে বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে।
রানি হাত দিয়ে ইশারা করে পানি দেওয়ার জন্যে। রাজ পাশ থেকে গ্লাস নিয়ে তার মুখের সামনে ধরে। রানি বেশ খানেক পানি খেয়ে একটু বড় করে নিশ্বাস নেয়।
রাজের কান্না দেখে সে রাজ কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
এবার রাজ শক্ত গলায় বলে,
"ওই আর কাঁদবি না। কাঁদলে এবার মেরেই ফেলব।"
রানি রাজ কে খামছে ধরে। রাজের বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে চোখের পানি ফেলে।
রাজ তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মাথায় গভীর চুমু দেয়।
"প্লিজ বউ কেঁদো না আমার। শরীর খারাপ করবে। কাল সকালে ডাক্তার এসে দেখে যাবো।"
"না।"
"কেন না?"
"ঔষধ!"
"কিসের ঔষধ?"
"আমি ঔষধ খেতে পাড়ি না। ডাক্তার আনতে হবে না।"
রাজ এক গাল হেসেই বলে "পিচ্চি একটা।"
রানি কে কিছু খায়িয়ে দেয়। তারপর একটুু জুস জোর করে খাওয়ায়।
রাজের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে রানি। রাজ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে রানির ঘন কালো লম্বা কেশে। রাজ কে জড়িয়ে ধরে রানি বলে,
"সরি।"
"....
"জনাব শুনছেন? আমি দুঃখিত।"
"....
"জনাব।"
"....
"জনাব বুঝি রাগ করল?"
"হুম।"
"আমি তা ভাঙ্গাতে চাই।"
"তাহলে যে লাগবে।"
"কি লাগবে?"
"মিষ্টি।"
"ওকে আমার বর আপনি বসেন আমি নিয়ে আসছি।"
রানি উঠতে চাইলে রাজ তার হাত টেনে নিজের বুকের উপর ফেলে।
"আমি ওই মিষ্টির কথা বলি নি আমি এই মিষ্টির কথা বলেছি।"
মুহূর্তে রানি নিজের ঠোঁটযোগলে রাজের ঠোঁটের মধ্যভাগে আবিষ্কার করে।
সকালে রাজ মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে রানির বুকের গহীনের সে মাথা রেখে তাকে জড়িয়ে রয়েছে। রাজ মুচকি হেসে রানি কে আরো শক্তে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।
রানির কপালে আলতো একটা চুমু দিয়ে উঠে যায়।
রাজ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রানি দুই হাত দুই দিকে উঁচু করে হাই তুলছে আর শরীর মুড়ামুড়ি করছে।
রানির এমন করা দেখে রাজ মুচকি হাসে।
"আমার জনাবার ঘুম বুঝি ভাঙ্গল?"
"জ্বি আমার জনাব।"
"শুভ সকাল মাই লিটল এঞ্জেল।"
"আপনাকেই শুভ সকাল মাই ড্রিমবয়।"
রাজ শব্দ করে হেসে দেয়। রানিও শরীর মুড়িয়ে হাসতে থাকে।
"আমার জান টার ঘুম সব টা ভেঙ্গেছে নাকি আরো বাকি আছে।"
"জ্বি না আমার জামাই।"
"বউ তাহলে আপনি যান গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন।"
"আপনার জন্যে নাস্তা বানাতে হবে না?"
রাজ রানির কাছে গিয়ে দুই হাতে তার গাল টেনে দিয়ে বলে,
"ওরে আমার পিচ্চি বউ রে। তুমি যাও। ব্রেকফাস্ট টা আজ আমি করে দিচ্ছি।"
"কিন্তু.."
"তুমি তো কিছু পারো না। তবুও কাল থেকে তোমার যা ইচ্ছা করো। আস্তে আস্তে পারবে। জানো তো বউয়ের হাতের রান্নায় বিশেষ স্বাদ আছে।"
"ওরে আমার পাগল জামাইরে।"
রানি দাঁত বের করে হেসে ছুটে ওয়াশরুমে চলে গেল।
রাজ হেসে "পাগলি" বলে কিচেনের দিকে হাটা শুরু করে।
চলবে.....
(ছোট বলবেন না। আমি একটু অসুস্থ। দোয়া করবেন সকলে। কিছু পাঠকদের নিজ থেকেই এড দিয়েছি। কেউ অনেক দিন ধরে লিস্টে ঝুঁলে থাকলে বলবেন। একসেপ্ট করে নিব। আর সকলের কাছে দোয়া চাইছি🙂)
Sabriha Sadi
0 Comments:
Post a Comment