#গ্যাংস্টার
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ২৫
রাজ শান্ত কন্ঠে শাহিন কে বলল,
"দেখ তুই কি চাস আমায় বল।"
শাহিন তাচ্ছিল্য সুরে বলে,
"কি চাই? আমায় এখন বলছিস আমি কি চাই? কেন এখন তুই বিপদে পড়েছিস? অসহায় হয়ে গেছিস?"
"হাতি কাঁদায় পড়লে চামচিকাও লাথি মারে। প্রবাদ বাক্য টা শুনেছিস তো?"
"কি বলতে চাইছিস তুই?"
"আমি কিছুই বলতে চাইছি না। আচ্ছা তোর গার্লফ্রেন্ডকেও তো তুই ভালোবাসি তাই না? জানিস ও কোথায় আছে?"
শাহিন ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে বলে,
"কোথায় আছে?"
"ও এখন আমার কাছে আমার বন্ধি হয়ে আছে।"
"....
"ওকে বাদ দে। চল তুই রানি কে ছেড়ে দে। আর আমি তিরা কে। কি বলিস?"
".....
"কি রে শাহিন ভাবছিস নাকি?"
"তিরা কে আমি ভালোবাসি ঠিকি। কিন্তু এখন ওর থেকেও আমার দরকার আর প্রয়োজন প্রতিশোধের। আমি ওকে নিয়ে এখন ভাবছি না।"
"জানতাম আমি এমন টাই বলবি। আরে তুই তো মেরুদণ্ড হীন। ভালোবাসা তেই পারিস না। কাপুরুষের মতো অন্য কে হাতিয়ার বানিয়ে আমার সাথে লড়তে আসছিস।"
রাজ বেশ বুঝে পারছে তার কথায় শাহিন রেগে যাচ্ছে। সে এটাই চাইছিল।
রানি নির্বাক হয়ে শুধু দুজন কে দেখছে। রাজ শাহিনের আড়ালে রানি কে চোখ দিয়ে ইশারায় আশ্বস্ত করেছে। তাই সে চুপ আছে।
শাহিন রাগে রানির মাথায় আবার জোরেশোরে বন্দুক ধরে। রাজ তড়িঘড়ি করে বলল,
"আরে আরে এত তাড়াতাড়ি গেইম শেষ করে দিচ্ছিস? কোনো টুইস্ট ছাড়াই? সো সেড। ছিঃ শাহিন তুই গেইম কন্টিনিউ করতেই জানিস না অথচ #গ্যাংস্টার এর সাথে খেলতে চলি এলি।"
শাহিন এবার দূর থেকে রাজের দিকে বন্দুক ধরে।
"কি ভাবিস কি তুই? খুব বড় গ্যাংস্টার হয়ে গেছিস? আড়াল থেকে গ্যাং নিয়ে শুধু মানুষ কে সাহায্য করিস। গ্যাং চালাস বলেই তুই মস্ত বড় গ্যাংস্টার হয়ে গেছিস না? আমি চাইলেই সব খেলা তোর সব পাওয়ার শেষ করে দিতে পাড়ি এই মেয়ে টা কে মেরে। ওর জান আমার হাতে। তবুও বড় বড় কথা বলছিস?"
"আমি আজো বুঝতে পাড়লাম না আমি প্রতি এত রাগ ক্ষোভ কেন তোর? আর কি বললি? তুই নিজেও জানিস আমি কত বড় গ্যাংস্টার। আর কত বড় গ্যাং চালাই।"
"জানিস না তুই তোর প্রতি এত রাগ কেন আমার? নাকি ভং করছিস? ভাব কম দেখা। আমার চাঁদা তুলা, আমার ২ নাম্বারি ব্যবসা, মদের কারখানা, হিরোইন তৈরির গুদাম, ইয়াবা ব্যবসায় সব তুই নষ্ট করেছি। তবুও ভং করছিস? ভালো মানুষি দেখিয়ে নিজের গ্যাং এর সাথে আমার সব শেষ করে দিলি। সব শেষে তুই আমায় পুলিশের কাছে দিলি। ১ টা বছর। ১ টা বছর আমি জেলখানায় ছিলাম। তার শোধ আমি নিব না ভেবেছিস? সব মনে আছে আমার। আর তার প্রতিশোধ তো আমি নিবোই রাজ গ্যাংস্টার।"
রাজ আবারও ঘড়ির দিকে তাকায় আড়চোখে। ১০ মিনিট তো শেষ এখনো কেন আসছে না? রাজ চুপ করে মনে মনে টাইম গুনতে লাগল।
তারা যেই রুম টায় আছে সেখানে তারা চারজন ছাড়া কেউ নেই।
রাজ রানি শাহিন আর একটা তার সাথে থাকা চামচা দাঁড়িয়ে ছিল। বাকিরা বাহিরে পাহারা দিচ্ছিল। রাজ কে বিশ্বাস করা যায় না। সব করতে পাড়ে ও।
শাহিন বক বক করছিল। এমন সময় তার গ্যাং এর লোক রুমে ঢুকে গেল।
শাহিন তাদের দিকে তাকিয়ে কিছু বুঝার আগেই রাজ দৌড়ে গিয়ে লাথি মেরে তার হাতে থাকা বন্দুক টা ফেলে দেয় মাটি তে।
সাথে সাথে রাজ নিজের বা হাত দিয়ে শাহিনের দুই হাত পেছন থেকে পেঁচিয়ে নেয়। আর ডান হাত রাখে গলা পেঁচিয়ে। শাহিন নড়বার শক্তি টাও পাচ্ছে না।
দুই হাত রাজ পেঁচন থেকে পেঁচিয়ে রাখার কারণে তার দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে।
"তুই কি ভেবেছিস? রাজ এত কাঁচা দান চালবে খেলায়? আমি তোর মতো কাঁচা খেলোয়াড় নই। আমি #গ্যাংস্টার রাজ চৌধুরী। তোর মতো মশা আমার হাতে কিছুই না। নিহাত রানি কে আটকে রেখেছিলি। তাই তোর সাথে গেইমের মাথায় যেতে একটু সময় নিয়েছি। না হলে তোর মতো মশা কে রাজ কখনই হাতের থাপ্পড় দিয়ে পিষে দিত।"
"র রাজ ছাড় আ আমায়।"
"ছাড়ব? তোকে? রানি কে ছেড়ে ছিলি তুই?"
".....
রাজ রাস্তায় আসার সময় তার গ্যাং কে কল দিয়েছিল। কয়েকজন মিলে সেই ঠিকানায় আসতে বলেছিল।
কিন্তু এখন সে দেখতে পাচ্ছে তার পুরো গ্যাং চলে এসেছে। মানুষ গুলিও তাকে বড্ড ভালোবাসে। ভালোবাসবেই বা না কেন? তারা তো কোনো খারাপ কাজ করে না। বরং তার বিরুদ্ধে যায়।
রাজ বলে রেখেছিল কিভাবে কি করতে হবে। আস্তে আস্তে কোনো শব্দ ছাড়া একেক টা কে সরাতে হবে। আর কয়েক জন তো টাকার কাছেই কাবু ছিল।
না হলে রানির কিছু করে ফেলবে শাহিন।
রাজ শাহিন কে ধরে রেখেছে। আর তার চামচা কে অন্যজন।
রাজ চোখের ইশারায় বুঝাল রানির বাঁধন খুলে দিতে। কিছু লোক এসে রানির হাতের বাঁধন খুলে দেয়। বাকি টা রানি নিজেই করেছে।
রাজ রানির দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্যে।
রানি কান্নারত অবস্থায় মাথা দিয়ে না করে। এবার রাজ অনেক রাগি লাল লাল চোখ নিয়ে রানির দিকে তাকায়। রাজের চোখ দেখে রানি ভয় পায়। যার ফলে সে দরজা দিয়ে বের হয়ে যায়।
শুরু হয় তুমুল মারামারি। শাহিন কে এলোপাথাড়ি মারছে রাজ।
"তোর কলিজা টা কত বড়। তুই আমার জানে হাত দিয়ে দিলি।"
"তোর সাহস দেখে অবাক না হয়ে পারছি না।"
"আমি বলেছিলাম তো রানি কে ছেড়ে দিতে। কিন্তু তুই?.."
"তুই মজা নিয়েছিলি না আমার সাথে? রানি কে আটকে রেখে ভেবেছিলি আমায় শেষ করবি?"
"তোর কলিজা টা কত টা বড় আমি দেখতে চাই তুই আমার বাড়ি গিয়ে আমার বউ কে তুলে আনলি.."
রাজ কথা গুলি বলছে আর শাহিন কে ইচ্ছা মতো মারধর করছে।
এক পর্যায় দেখা হলো শাহিনের অবস্থা খারাপ আবার পুলিশও চলে এসেছে। রাজ পুলিশ দেখে অবাক। কারণ সে তার গ্যাং কে এমন কোনো কথাই বলেনি।
রাজ তবুও মারছে শাহিন কে। কথা বলার সুযোগ টাও দিচ্ছে। রাগে শুধু হাত চালাচ্ছে।
"বস থামেন। পুলিশ এসেছে। আর সরি। আপনায় না বলেই আমরা এটা করেছি।"
তিয়াসের কথায় রাজ কর্ণপাত করল না। না করল পুলিশ কে ভ্রুক্ষেপ।
পুলিশ আর তার লোকজন এসে রাজ কে ধরে শান্ত করে। আর শাহিন কে হাতের কাছে রাখে।
সবাই রাজ কে শান্ত হতে বলছে।
কিন্তু রাজ বারবার শাহিন কে মারতে চাইছে। তার বউের গায়ে হাত দিয়েছে। সাহস কত?
শাহিন এই অবস্থাতেও তার পাশের পুলিশ কন্সটেবল কে ধাক্কা দিয়ে তার থেকে দূরে ফেলে দেয়। মাটিতে থাকা বন্দুক টা নিজের হাতে তুলে রাজের দিকে তাক করে।
সবাই চুপ। পুলিশ রাজের গ্যাং রাজ নিজেও স্তব্ধ হয়ে আছে।
"শাহিন। শাহিন বন্দুক নামা।"
"তুই কি ভেবেছিস? আমি জেলে যাবো আর তুই দুনিয়াতে বেঁচে থাকবি? না রাজ শাহিন তা হতে দিবে না।"
"শাহিন বন্দুক রাখ। দেখ এখানে পুলিশ আছে।"
কিছু পুলিশ শাহিনের দিকে বন্দুক ধরে রেখেছে। সুযোগের অপেক্ষা করছে। ঝোপ বুঝে কুঁপ।
শাহিন একবার রাজের দিকে বন্দুক নেয় তো আবার যে এগিয়ে আসতে চায় তার দিকে।
"গুড বাই গ্যাংস্টার রাজ চৌধুরী।"
শাহিন কথাটা বলে দম নেয়। সাথে সাথে দুই টা গুলির আওয়াজ হয়। সব কিছু নীরব নিস্তব্ধ হয়ে উঠে মুহূর্তে।
চলবে....
(গঠনমূলক কমেন্টে করবেন)
Sabriha Sadi
0 Comments:
Post a Comment