গল্প আমার_রুদ্রাণী পর্ব ৩

 #আমার_রুদ্রাণী

#লেখিকা:শুভ্রতা আনজুম শিখা

#part: 3


🍂🍂🍂


আজ ভার্সিটির গেট দিয়ে ভেতরে যাওয়ার আগেই মেহের খেয়াল করে যে আজকেও সেই বখাটে ছেলেগুলো বসে আছে। মেহের কোনো ঝামেলা করতে চায় না। তাই সেদিকে ধ্যান না দিয়ে চুপচাপ যেতে নিতেই বখাটে ছেলেদের মধ্যে একজন মেহেরের হাত টেনে ধরে। যা দেখে মেহের রেগে গিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ছেলেগুলো প্রিন্সিপালকে এদিকে আসতে দেখে চলে যায়। মেহের এই ব্যাপারে স্নেহা আর দিয়াকে জানালেও আহিল আর কাব্যকে কিছুই বলে না। কাব্য আর আহিল জানতে পারলে ওদের সাথে অনেক ঝামেলা হবে তাই সে চুপ থাকে।


🍂🍂🍂


পিচঢালা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে মেহের। প্রকৃতির থেকে শীতের রেশ সম্পূর্ণভাবে যায়নি বলে সকালের রোদটা বেশ লাগছে মেহেরের কাছে। আজ তার হটাৎ ইচ্ছে করলো হেঁটে হেঁটেই ভার্সিটিতে যাওয়ার তাই সে আর মনের বিরুদ্ধে গেলো না। হাঁটতে হাঁটতেই হটাৎ মেহেরের মনে হলো যেনো তার ওপর কেউ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আবদ্ধ করে রেখেছে। সকাল দিকে এই রাস্তায় মানুষের খুব একটা আনাগোনা দেখা যায় না আর আজও তার ব্যতিক্রম নয়। মেহেরের মনে কিছুটা ভয় অনুভব হতেই সে দ্রুত পা চালিয়ে মেইন রোড থেকে রিকশা নিয়ে ভার্সিটিতে পৌঁছায়। ভার্সিটিতে গিয়েই সোজা ক্লাসে চলে যায় মেহের। সেখানে দেখে দিয়া, আহিল, স্নেহা আর কাব্য মিলে কোনো একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। মেহের তাদের কাছে আলোচনার বিষয় জানতে চায় কিন্তু এমন খবর জানতে পারবে তা মোটেও কল্পনা করেনি মেহের। দিয়া জানায়,

কলেজ গেটে প্রায়ই যেই বখাটে ছেলেগুলো বসে থাকতো তাদেরকে কালরাতে কেউ হ/ত্যা করেছে। সব থেকে বেশি নৃশং/সভাবে মেরেছে রোহানকে (যে গতকাল মেহেরের হাত ধরে ছিল)

~কি বলছিস এইসব! কেউ কেনো ওদের মারতে যাবে?(অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে মেহের)

তখনই দিয়ার মাথায় একটা গাট্টা মেরে আহিল বলে,

মাইয়া মানুষ মানেই তিল থেকে তাল বানানো।

মেহের ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই কাব্য জানায়,

ড্রিংক করে ড্রাইভ করার ফলে ওদের অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিল। গাড়িটা খাদে পড়ে যাওয়ায় ওরা প্রাণ হারায়। কিন্তু বিশেষ করে কষ্ট পেয়ে মরেছে ওই জয় নামের ছেলেটা। ছেলেটার এক হাত কেটে চামড়ার সাথে ঝুলে ছিল, চোখ গেলে গেছে আবার জিহ্বাটাও নাকি কাটা অবস্থায় ছিল। এছাড়াও...

কাব্যের দেওয়া বর্ণনা আর শুনতে না পেরে মেহের এক ধমক দেয়। তাতে কাব্য আবার বলে,

একজনের বর্ণনা শুনেই এই অবস্থা তোর। যাই হোক বখাটে গুলো মরছে অ্যাকসিডেন্ট করে আর এই দিয়াইন্না! স্টার জলসার সিরিয়ালের মত লবণ মরিচ লাগাইয়া কাহিনী কয়।

কাব্যের কথা শুনে দিয়া চোখ মুখ কুচকে বলে,

দিয়াইন্না কি! বজ্জাত পোলা! দিয়া বলতে পারস না!

কাব্য ফের কিছু বলতে যাবে তার আগেই স্নেহা বলে,

ক্লাসে স্যার এসেছে তাই এখন চুপ যা। তোদের ঝগড়া পরে করলেও চলবে।

স্নেহার কথা শুনে দিয়া আর কাব্য একে ওপরের দিকে চেয়ে মুখ ভেংচি দেয়। যা দেখে সবাই মুখ টিপে হাসে।


🍂🍂🍂


দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাড়িয়ে আছে অচেনা ব্যক্তিটি। হাতে থাকা ফোনের দিকে চেয়ে রহস্যময়ীভাবে হেসে চলেছে সে। কল আসতেই ফোনের মধ্যে গুটি গুটি অক্ষরে লেখা নামটার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে রিসিভ করে সে। ওপর পাশের ব্যক্তিটি বলে উঠে,

~আপনার কথা মতো কাজ হয়ে গেছে স্যার।

ওপর পাশের ব্যক্তিটির কথা শুনে বাঁকা হাসে ছেলেটি। গুড বলেই কল কেটে আস্তে করে বিছানায় ফোনটি ঢিল মারে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেয়ালে টাঙানো বড় ছবির ফ্রেমটির দিকে দৃষ্টি স্থির করে সে। আবারো রহস্যময়ী হাসি দিয়ে বলে,

তোমার ঐ বান্ধবী ঠিকই বলেছে। ওই বাস্টার্ড গুলোকে কেউ হত্যা করেছে। তোমার দিকে কেউ হাত বাড়ালে কিংবা তোমার দিকে বাজে নজরে তাকালে আমি তা কখনোই সহ্য করবো না রুদ্রাণী।তুমি শুধু মাত্র #আমার_রুদ্রাণী। খুব শীঘ্রই তোমাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো একান্ত আমার রুদ্রাণী করে।

~~~

চলবে~

গল্প আমার_রুদ্রাণী পর্ব ২

 #আমার_রুদ্রাণী

#লেখিকা : শুভ্রতা আনজুম শিখা

#part: 2


🍂🍂🍂


মেহের ভার্সিটি থেকে বাসায় এসেই ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার 'স্বপ্ন কুটির' এ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। স্বপ্ন কুটির হচ্ছে মেহের এর বাবার বানানো রেস্টুরেন্ট। মেহের ছোট থাকতেই তার বাবা পরলোক গমন করেন। পরবর্তীতে মেহের এর মা মিসেস মেহরিশ তার বাবা মায়ের সাথেই মেহেরকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন। মেহের আর তার মা ই এখন এটি পরিচালনা করেন। প্রায় সময়ই মেহের এর বন্ধুবান্ধবরাও রেস্টুরেন্ট এর কাজে সহায়তা করে।

.

দুপুরের উত্তপ্ত রোদে দাড়িয়ে আছে দিয়া। খিটখিটে মেজাজে একবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে তো একবার রাস্তার দিকে। অনেকক্ষণ যাবত মেহেরের অপেক্ষা করছে কিন্তু মেহেরের আসার নাম নেই। আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর মেহের এসে দিয়ার পাশে দাড়িয়ে একটা হাসি দিতেই দিয়া যেনো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে। কিছুটা চিল্লিয়ে ই বলে উঠলো,

~বাড়ি থেকে আসলি নাকি উগান্ডা থেকে! এতক্ষণ লাগে তোর আসতে! আমি তো ভেবেছি আজকে তোর অপেক্ষা করতে করতেই আমি বুড়ি হয়ে যাবো, আমার হয়তো আর নাতি নাতনীদের মুখ দেখা হবে না।

দিয়ার কথা শুনে মেহের ড্যাবড্যাব করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো যেনো দিয়ার কথায় আসলে কি রিয়াকশন দেওয়া উচিত বুঝে উঠতে পারছে না। পরক্ষনেই বলে উঠলো,

~সো সরি ইয়ার। রাস্তায় এত্ত জ্যাম ছিলো যে আসতে দেরি হয়ে গেছে। নেক্সট টাইম থেকে পাক্কা জলদি জলদি আসবো। তুই রাগ করিস না। প্লীজ!!!

~সত্যি তো? (আড়চোখে তাকিয়ে)

~হুঁ। একদম সত্যি। (মুচকি হাসি দিয়ে বলে উঠলো মেহের)

মেহরের হাসি দেখে দিয়াও আর রাগ করে থাকতে পারলো না। এরপর দুজনে এক সাথেই রওনা দেয় রেস্টুরেন্ট এ যাওয়ার উদ্দেশ্যে।


🍂🍂🍂


মাত্রই জরুরি এক মিটিং শেষ করে নিজ কেবিনে ফিরলো রুদ্র। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে তার দৃষ্টি আবদ্ধ করে সিলিং এ। তার বাদামি চোখ জোড়া যেনো নিঃসংকোচেই তার ক্লান্তির ছাপ প্রকাশ করছে। কিছু মুহূর্ত পর সিলিং হতে নজর সরিয়ে তার পি.এ এর দিকে তাকায়। কিছুটা দূরেই দাড়িয়ে আছে তার পি.এ আয়মান হাসান। 

আয়মান দেখতে শ্যাম বর্ণের, উচ্চতা ৫ ফিট ৮ ইঞ্চ এর কাছাকাছি, চোখের মনি কুচকুচে কালো, নাক একদম সরু না হলেও বোচাও বলা যায় না। আয়মান খুব চঞ্চল প্রকৃতির, অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং বিশ্বাসযোগ্যও। তাইতো রুদ্র ওকে সব সময় নিজের সাথে সাথেই রাখে। যেখানে রুদ্রর সামনে কথা বলতে গেলেই মানুষের হাঁটু কাপে সেখানে আয়মান নির্দ্বিধায় রুদ্রর সামনে কথা বলতে পারে। ভার্সিটি থেকেই আয়মান এর সাথে রুদ্রর পরিচয়। আয়মান রুদ্র হতে ২ বছরের জুনিয়র। প্রথম দেখা থেকেই আয়মান রুদ্রকে নিজের বড় ভাই এর মত দেখে।

রুদ্র হটাৎ আয়মান কে প্রশ্ন করে উঠে,

~এতদিন পর নিজ দেশে ফিরে এসে কাজ করতে কেমন লাগছে মান?

~ভালো লাগছে। নিজ দেশে থাকতে অন্য রকম এক শান্তি অনুভব হয়। যা এতদিন বিদেশের মাটিতে পাইনি। আপনার কেমন লাগছে স্যার? (স্বভাবসুলভ ভাবেই উৎসুক হয়ে প্রশ্ন করে আয়মান)

আয়মানের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সচ্ছ কাচের দেওয়ালের বাইরে জমজমাট রাস্তার দিকে তাকায় রুদ্র। ঐদিকে আয়মান উত্তরের আশায় নয় বরং রুদ্রের মনে আসলে কি চলছে তা বোঝার জন্য তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিন্তু বরাবরের মতই সে ব্যর্থ। রুদ্র নিজ থেকে না বললে তার মনের খবর জানা অসম্ভব বলে আয়মান মনে করে।

ঘাড় ঘুরিয়ে পুনরায় আয়মানের দিকে তাকিয়ে শান্তভঙ্গিতেই বলে উঠে রুদ্র,

~দেশ তো আমাদের মাতৃভূমি। মায়ের কাছে এসে মনে শান্তি পাওয়াটাই স্বাভাবিক।

রুদ্র কিছুক্ষণ থেমে আবার বলে,

~যে কাজটা করতে দিয়েছিলাম তা করেছো মান?

~লোকদের সাথে কথা হয়েছে। আর একটা দিন সময় লাগবে স্যার।(আয়মান)

~ ১ দিনটা যেনো আবার ২ দিনে পরিবর্তন না হয়। নেক্সট মিটিং এর ব্যবস্থা করো। (গম্ভীর স্বরে)

~জ জ্বি স্যার। (আমতা আমতা করে)


🍂🍂🍂


অন্ধকার রুম। জানালার পাশের ফিনফিনে পাতলা পর্দাটা মৃদু বাতাসে উড়ছে। জানালা দিয়ে চাঁদের আবছা আলো প্রবেশ করছে, চারিদিকের নিস্তব্ধতা জানান দিচ্ছে এখন মধ্যরাত। বিছানার কোণ ঘেঁষে বসে আছে একটি ছেলে। তার চোখ দুটো যেনো তার অগণিত নির্ঘুম রাতের সাক্ষী দিচ্ছে। হাতে তার কালো নকশাকৃত একটি ছবির ফ্রেম। বেশ কিছুক্ষণ ছবিটির দিকে তাকিয়ে থেকে বাঁকা হেসে বলে উঠলো,

খুব শীঘ্রই তোমার কাছে আসছি রুদ্রানি। শীঘ্রই আমরা একে ওপরের মুখোমুখি দাড়াবো। আর মাত্র কিছুদিন।

~~~

চলবে~

গল্প আমার_রুদ্রাণী পর্ব ১

 #আমার_রুদ্রাণী

#লেখিকা : শুভ্রতা আনজুম শিখা

#part: 1

(আমার লেখা প্রথম গল্প। আশা করি সবার ভালো লাগবে। ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)


🍂🍂🍂



সন্ধ্যার হওয়ার ঠিক কিছুটা সময় আগে ছাদে কফি মগ হাতে দাড়িয়ে আছে মেহের। বসন্তের মৃদু বাতাসে থেমে থেমেই তার কোমড় অব্দি চুল গুলোকে এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আপাতত তা ঠিক করার ইচ্ছে নেই। তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দুর আকাশে সীমাবদ্ধ। আজ যেনো জীবনে কি পেয়েছে আর কি হারিয়ে তার হিসেব কষতে ব্যস্ত সে।

প্রকৃতি নিয়মমাফিক কিছুক্ষণ আগেই সূর্য অস্ত গেলো, পাখিরা ফিরে গেছে তার আপন নীড়ে, এখনও ২/১ টা পাখি আকাশে দেখা যাচ্ছে। বাড়ির পাশের রাস্তায় একে একে জ্বলে উঠছে সোডিয়াম লাইট গুলো।

সন্ধ্যা হতেই সে ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য উদ্দ্ব্যত হলো। একটু পর নাহলে তার নানু তাকে ডেকে অস্থির হয়ে যাবে। নানুর মতে, ভরা সন্ধ্যায় মেয়েদের ছাদে যাওয়া উচিত নয়। এ সময় নাকি জ্বীনদের চলাচল করার সময়। মেহের তখন তার নানুর চোখে নিজের জন্য অস্থিরতা দেখে খিলখিল করে হেসে উঠে।

অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী মেহের। পুরো নাম মেহেরীন রোজ। সবাই মেহের বলেই ডাকে। বয়স ১৯ বছর, কয়েকমাসের মধ্যেই ২০ বছর পূর্ণ হবে তার। বয়স অপেক্ষা যথেষ্ট ম্যাচুর সে। কিছুটা দুষ্টুও বটে। বাড়িতে সে যথেষ্ট গম্ভীর স্বভাবের, খুব একটা কারো সাথে কথা বলে না কিন্তু বাড়ির বাইরে তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে তার একটা গম্ভীর রূপ ও আছে।

.

.

সকালে ঘুম থেকে উঠে, রেডী হয়েই মেহের ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। নানু বার বার নাস্তা করতে বললেও সে করেনি। সকালে খাওয়া দাওয়া করা তার জীবনের অত্যন্ত বিরক্তিকর কাজের মধ্যে একটি বলে সে মনে করে।

ভার্সিটিতে গিয়েই সে সর্বপ্রথম তার ফ্রেন্ড সার্কেলকে খুজে বের করে। আহিল, দিয়া, স্নেহা, ও কাব্য তার সব থেকে কাছের বন্ধু। একে অপরের প্রতি এদের টান বরাবরই আপন ভাই বোনের মতো।

ভার্সিটিতে ঢুকতেই মাঠের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে তার বন্ধুমহলের দেখা পেতেই মেহের হালকা হেসে তাদের দিকে ছুটে যায়। কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে সবাই ক্লাসে চলে গেলো। ক্লাস শেষে তারা এক সাথেই ক্যান্টিন এ যায়। স্নেহাকে আনমনে বসে থাকতে দেখে দুষ্টু কণ্ঠে মেহের বলে উঠে,

~কিরে ভাইয়াকে মিস করস নাকি?

~মিস করাই স্বাভাবিক। ওর জামাই তো পুরাই আগুন রে ভাই। আমি নিজেও পোলা হইয়া ক্রাশ খাইছি। ওর তো আবার জামাই লাগে। আমি মাইয়া হইলে দেখতি তীব্র ভাইরে কিডন্যাপ কইরা নিয়া ভাগতাম। (চেয়ারে হেলান দিতে দিতে বললো কাব্য)

~কেনো রে! মেয়ের কি অভাব পড়ছে যে এখন আমার জামাই এর দিকে নজর দেওয়া লাগতেছে তোর। বেটা খচ্চর!!!(এক ভ্রু উচু করে বলে উঠলো স্নেহা)

~কি আমি খচ্চর! তুই খচ্চর, তোর জামাই খচ্চর (কিছুটা তেতে উঠে বললো কাব্য)

~কি বললি! বজ্জাত একটা! (স্নেহা)

~চুউউউপ!!! কি শুরু করলি তোরা! এক মিনিটও ঝগড়া না করে থাকতে পারিস না! (কিছুটা চিল্লিয়ে বললো মেহের)

এভাবেই কিছুক্ষণ খুনসুটি করে সবাই নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।


🍂🍂🍂


রং তুলি দিয়ে আঁকা এক মেয়ের ছবির সামনে দাড়িয়ে আছে একটি ছেলে। বয়স ২৬-২৭ বছর হবে। এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে ক্যানভাসে আঁকা মেয়েটির দিকে। চোখে মুখে বিরাজ করছে একরাশ মুগ্ধতা। কিছুক্ষণ পর পরই ছেলেটি গুন গুন করে গেয়ে উঠছে,

Jayaz hain tujhpe

Deewani meri,

Raago se rooh tak Hain

Rawangi teri...


ছেলেটি হটাৎ গান থামিয়ে ফোন বের করে কাউকে কল করলো এবং কিছুক্ষণ কথা বলে আবার ছবিটির দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

অনেকদিন অপেক্ষা করিয়েছি তোমায় রুদ্রানী। দীর্ঘ ২ বছর পর আবারো ফিরে আসছি তোমার জীবনে। এবার আর তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না।

~~~

চলবে~

গল্প: বাধন হারা বেনী পর্ব ২৭ সমাপ্ত

 গল্প: বাধন হারা বেনী

পর্ব:২৭(শেষ পর্ব)

লেখিকা: সানজিদা আহমেদ শাহারা


সপ্তাহ পেরিয়েছে তারা দেশে ফিরে এসেছে। আলোরা জাপান একেবারে ছেড়ে আসেনি।এসেছে কিছু দিনের জন্য বেড়াতে তার মামনি আর তার ফুফু তাকে দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে গিয়েছে।জড়িয়ে ধরে আবেগী মনরম দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছিলো।মেহরাব মনে মনে ভীষন খুশি অবশেষে সে বিয়ে টা করতে পারবে।বাড়িতে ফিরে সকলে প্রথমে দুটো দিন আড্ড গল্প ও হাসি মজায় কাটায় এরপর একদিন রাতে মেহরাব তার মায়ের রুমে যায় মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।মা এতো বড়ো ছেলের এমন ভাব দেখে হেসে ফেলেন আদরে চুম্বনে ছেলে গাল ভরিয়ে দেন।মায়ের কোলে মাথা রে মেহরাব তাকে বলতে শুরু করে জাপানের ঘটনা।

একে একে সব ঘটনা বলা শেষে সে তার মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে এক দৃষ্টিতে।তার মা তখন মলিন মুখ করে সামনের জানালা ভেদ করে দৃষ্টি দিয়েছে সুদূরে।মেহরাব বোঝার চেষ্টা করে বাবা-মাকে ছেড়ে এসে এমন ভাবে তাদের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ঠিক কেমন লাগছে তার মায়ের কিন্তু সে বুঝতে ব্যর্থ কারণ সে তার মায়ের কোলে শুয়ে আর মায়ের অভাব বুঝবে কিভাবে? সে মাকে কিছু সময়ের জন্য একা ছেড়ে দেয়। হয়তো মেহরাব এর সামনে কাঁদতে চায়ছে না কিন্তু কাঁদলে মন ভালো হয়।সমস্ত চাপা কষ্ট যা আমরা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি কিন্তু পারি না কিছুক্ষন কাঁদলে তা এমনিই আমাদের মস্তিষ্কে আঘাত করা থামিয়ে স্মৃতি চারন করা বন্ধ করে দেয়।মেহরাব উঠে পড়ে শব্দহীন পায়ে চলে যায় রুম থেকে।রুম থেকে বের হতেই দেখতে পায় পাবেল কে।পাবেল এর সাথে ছোট থেকেই তাদের সখ্যতা খুব একটা না।এর একমাত্র করণ তার দাদী আর ফুফু তারা নিজেদের নিজেদের অহমিকার কারনে ছোট থেকে পাবেলকে সবার থেকে সরিয়ে রাখতে চেয়েছে ফলে সে এখন ও সকলের সাথে মিলে মিশে চলতে অসস্তি অনুভব করে।পাবেল মেহরাবকে সালাম দেয়, মেহরাব ও উত্তর দেয়।তারপর টুকি টাকি কথা বলে চলে যায় যে যায় উদ্দ্যেশে। দুপুরে খাবার টেবিলে ভুরিভোজ এর আয়োজন করে আলোরার ফুফু বাড়ির সব বাচ্চাদের পছন্দের খাবার রান্না করেছে।মেহরাব এর পছন্দের চালের আটার রুটি আর রাজহাসের মাংস,আলোরার পরোটা আর গরুর ভুড়ী রান্না,সোমেহরার জন্য মোরগ পোলাও,তনিমা ও অনিমার জন্য চিলি চিকেন ও বাটার নান।পাবেল এর জন্য সাদা ভাত আর গরুর মাংস,সোহরাব এর জন্য গরুর কলিজা ভোনা, নিহারী আর তন্দুর রুটি।সকলে টেবিলের সামনে এসে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো তারা জলজ্যান্ত জীন চোখের সামনে দেখে নিয়েছে কোন মাধ্যম ছাড়া।আলোরা করুন স্বরে তার ফুফুকে বলে...


আলোরা: ফুপ্পি এতো খাবার কারা খাবে?


ফুফু: কারা আবার তোরা খাবি।


আলোরা সহ বাকিরা ভীষন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে তার ফুফুর দিকে।সকলে দুপুরের আবার খেতে শুরু করে।পদ অনেক হলে ও অতিরিক্ত রান্না করা হয়নি যত টুকু সকলে খেতে পারবে ততটুকুই রান্না হয়েছে।সোমেহরা খাওয়ার সময় বার বার ফোন চেক করছে দেখে অনিমা তাকে টিজ করে বলে


অনিমা: তোমার উনি অসুস্থ না!রেস্ট নিচ্ছে হয়তো।হাইপার হয়ো না।


সোমেহরা: আ..আমি তো সময় দেখছিলাম।


অনিমা: আ..আপু এখন এখানে দুপুর ৩ টা মানে ওখানে এখন বিকাল ৬ এখন হয়তে উনি ডিউটিতে আছেন।


সোমেহরা: বেশি পেকেছো না?


অনিমা: দেখতো তনিমা আমার গা থেকে পাকা পাকা গন্ধ আসছে নাকি আপুর গা থেকে প্রেম প্রেম সুবাস আসছে।


সোমেহরা: ঠাটিকে এক থাপ্পড় খাবে তুমি আমার কাছে বেয়াদপ মেয়ে।


তনিমা অনিমা সহ টেবিলের সকলে জোরে জোরে হাসতে থাকে।সেদিন জাপান থেকে ফিরে আসার পথে যখন ফ্লাইট এর জন্য সকলে অপেক্ষা করছিলো তখন কাফি হাপাতে হাপাতে এসে এক গুচ্ছ সাকুরা ফুল হাতে নিয়ে হাটুতে ভর দিয়ে বসে এক এয়ারর্পোট ভরা মানুষের মধ্যে জোরে জোরে চিৎকার করে বলে


" আমার হৃদয়ের অন্তহীনে লুকিয়ে থাকা আমার সম্রাজ্ঞী, আমি তোমার অনুগত এক প্রেমিক সম্রাট, তোমার তরে লুটিয়ে দেবার জন্য আমার আছে অফুরাম্ত নীলাকাশ সমান ভালো বাসা ছাড়াতো আর কিছুই নেই।হবে কি তুমি আমার অন্ধকার আকাশের নীলচে তারা ?"


সোমেহরা ভয়ে লজ্জায় জড়সড় হয়ে যায়।আলোরা তখন তার পাশে গিয়ে দাড়িয়ে তার কাধে হাত রেখে ইশারা করে সোমেহরা ভরসা পায় এগিয়ে যায় কাফির কাছে হাত থেকে ফুলটা নেয়।কাফি আনন্দে কয়েকটা ডিগবাজি খায় প্লাটফর্মে তারপর জোরে চিৎকার করে

 বলে 

        

愛してます

     

  Aishitemasu


এরপর পরই ফ্লাইটের ডাক আসে আর সকলে চেক আউট করে জাপান থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসে।আশার পর থেকে কাফির সাথে আর যোগাযোগ হয়নি সোমেহরার।অন্য দিকে সকলের খাওয়া দাওয়া শেষ হয়ে গেলে যখন তারা বিশ্রাম নিচ্ছিলো তখন বাড়িতে হাজির হয় তাহিয়ানার পরিবার।এক দিনে এত এক্সসাইটমেন্ট নিতে পারছেনা মেহরাবদের পরিবার।তারা সোহরাব ও তাহিয়ানার বিবাহ দিতে যান।কিন্তু তাহিয়ানা জেদ ধরেছে আজকেই বিয়ে করবে।পরে না হয় অনুষ্ঠান করা যাবে বাবা ভাইয়ের আল্লাদী হলে যা হয়।একটু চোখের জ্বলে সকলে গোলে পানি হয়ে যায়।তখন মেহরাব এর বাবা বলে আপত্তি তো নেই তবে আমার বড়ছেলে তো এখনো অবিবাহিত।আগে ওর বিয়েটা দিয়ে দেয় তারপর না হয়।তাহিয়ানার বাবা বলেন তারা মায়ের গর্ভ থেকে এক সাথে আছে। বিয়ে টা ও না হয় এক সাথেই হোক।


সকল কথা বলা না বলার মাঝে সিদ্ধাম্ত হলো যে আগামী দুই দিন পর যে শুক্রবার আসছে সেদিন মেহরাব সোহরাব আলোরা ও তাহিয়ানার বিয়ে সম্পন্ন হবে।বিয়ের দিন ধার্যের কথা শুনে মুখ গম্ভীর করে উঠে যায় সোহরাব আর মেহরাব তারপর দুজনে ঢোকে যার যার রুমে সকলে মনে করে তারা হয়তো বিয়েতে এই মুহূর্তে রাজি না।তনিমা অনিমা সোমেহরা দৌড়ে যায় দরজার সামনে পাশাপাশি দুই রুম হওয়াতে দরজার সামনে দাড়িয়ে তাদের গতিবিধি বোঝার চেষ্টা করে কিন্তু তারা বুঝতে ও পারেনি তাদের ভাইদ্বয় এমন একটা কাজ করবে...


সোহরাব ও মেহরাব যার যার রুমের দরজা দিয়েছে কিন্তু জানালা আটকাতে ভুলে গিয়েছে ফলে তারা যে রুমে ডুকে লুঙ্গি পড়ে উরা ধুরা লুঙ্গি ড্যান্স করছে তা বাকিরা দেখেই ফেলে।দুই দিকে দুই ভাই এর নাচ দেখে সকলে হাসতে হাসতে শেষ।বিয়ের দিন ঠিক হওয়াতে এরা এভাবে লুঙ্গি ড্যান্স দিচ্ছে বিয়ের দিন কি করবে?

.......................

বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমেছে ধরনীর বুকে।আলোরা মেহরাব এর বাগান টায় বসে উপন্যাস পড়ছে।


এই আলু অনেক পড়ে ফেলেছিস যা রুমে যা।


-মেহরাব ভাই আর একটু সময় দাও।


-এক মিনিট ও না, আমার বাগান টাকে কি তুই নিজের রাজত্ব পেয়েছিস?যা এখান থেকে।


-ভাই প্লিজ,এখানে বসে উপন্যাস পড়তে বেশ ভালো লাগে।


-এই তুই আমার মুখে মুখে কথা বলছিস?


-দুঃখিত ভাই


মাথাটা নিচু করে উঠে চলে গেলো আলোরা।সে জানে বাগানে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ কিন্তু এই নিষিদ্ধ জিনিসেই তো মানুষের টান বেশি থাকে।বাগানে কি ধন-রত্ন আছে কে জানে একটু গেলে কি এমন ক্ষতি হয়ে যাবে?আগে ও এমন করতো এখন ও এমন করে আস্ত খাটাশ একটা।মেহরাব আলোরার যাওয়ার পানে না তাকিয়ে আকাশের পানে তাকালো ঠোট দিয়ে বেরিয়ে এলো কিছু গানের লাইন...

         " এমন ও নিদানের দিনে

         বিনীত প্রার্থনা গো,

            লক্ষ্য কোটি ভুল আর ত্রুটি 

         করিও মার্জনা গো,

            শোনাইবো তোমারে আজ

         করেছি বাসনা গো..


              ঐরাবতের হৃদয় হতে ক্ষুদ্র এ রচনা

          আমি কি করিব, কোথায় যাবো

                কোন সাধনে  পাবো গো,

           আর একটি বার তোমারই দর্শন


আলোরার পা থেমে যায় গান টা যে তার বড্ড প্রিয়, এই তো সেই সময়ের পুরাবৃত্তি যা শুরু হয়েছে বহু বছর আগে। মেহরাব ভাই কি তা জানে? হয়তো জানার কথা,সে তো আাবার কিছু ভোলার পাত্র নয়।আলোরার ভাবনার মাঝে ভেসে এলো মেহরাব এর গম্ভীর স্বরের ডাক...


মেহরাব: আলু


আলোরা: জ্বি ভাই


মেহরাব: তুই কি আলু যে প্রতিবার ডাকের উত্তর দিস?


আলোরা: আপনি তো আর অন্য কোন নামে ডাকেন না। ডাক না শুনলে তো বাড়ি প্রলয় নেমে আসবে তাই উপায় হীনা হয়েই ডাক শুনি।


মেহরাব: ডাকবো ডাকবো আজ থেকে  বহু নামে ডাকবো।যা দুর হ' এখন সামনে থেকে। না হয় তুই ও আমার মতো অশান্ত হয়ে উঠবি।

 

আলোরা কথা ভাব বুঝতে চায়ছে না তাই সে বলে আমি এখনই চলে যাচ্ছিলাম আপনিই ডেকে থামলেন।মেহরাব চাঁদের পানে তাকিয়ে আলোরা দিকে উঠে যায়।আলোরা এখনো দাড়িয়ে আছে মেহবার তার সামনা সামনি গিয়ে দাড়ায় দুজনের মাঝের দুরত্ব কেবল গায়ে জড়ানো কাপড় টুকু।আলোরা থমকে যায় ব্রু কুচকে তাকায় মেহরাব এর দিকে মেহরাব নির্বিকার হয়েই দাড়িয়ে আছে।আলোরা এদিক ওদিক সরতে চায় কিন্তু তার পা দুটো বেইমানি করছে তার সাথে নড়তেই চায়ছে না। তখনি ছুটে আশা ঠান্ডা শিতল দমকা বাতাসে আলোরার মাথার কাপড় টুকু সরে গেলো #বাধন_হারা_বেনীর কেশ গুচ্ছ এলোমেলোল হয়ে জাপটে পড়লো আলোরার চোখে মুখে।মেহরাব আলোরা চুল গুলো ঠিক করে দিলো হালকা হাতে এরপর মাথার কাপড়টা টেনে দিলো।এই সন্দুর মুহূর্তটাই যেনো আলোরা হাজার বছর ধরে উপভোগ করতে চায়।সে চোখ বুজে পুরাটা সময় যেনো নিজের মস্তিষ্কে সংরক্ষন করে নিতে চায়।মেহরাব তার বন্ধ চোখের ব্রুতে ছোট ছোট করে কয়েকটা কামড় দেয় এই কামড়ে যেনো আলোরা সারা শরিরে তীব্র শিহরণ বয়ে যেতে শুরু করে।কামড়ে দেওয়া জায়গাটায় মেহরাব আবার একেকটা চুমু খায়।আলোরা নিশ্বাসের গতি পরির্বতন হচ্ছে হৃদপিন্ডটা লাগামহীন উঠানামার প্রস্তুতি নিচ্ছে।মেহরাব আলোরার গলার কাছে তার ঠোট নিয়ে চুমু দিতে শুরু করে প্রতিবার স্পর্শকাতর গলায় শক্ত দাড়ি ও নরম কিন্তু পুরোট ঠোটের জ্বালাময়ী স্পর্শে আলোরা বেহাল দশায় পড়তে যাচ্ছে। হাতে থাকা উপন্যাসের বইটা মেহরাব কখন যে দুরের চেয়ারে ছুড়ে মেরেছে তা আলোরা জানে না।মেহরাব এর হাত লাগামহীন হয়ে তীব্র পায়তারা শুরু করেছে। আলোরার পায়ের পাতায় ভর করে দাড়ানো শক্তি টুকু নেই।মেহরাব তার কোমরের পাশের কামিজ গলিয়ে উন্মুক্ত কোমরে হাত রাখে অন্য হাতে আলোরার বাধন হারা চুল শক্ত করে ধরে আলোরা হাসফাস করে এই পর্যায়ে। আলোরা চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে মেহরাব এক অদ্ভুত নেশাময় চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।চোখটা কেমন যেন লাল ঘোলাটে।মেহরাব এর এই দেরি টুকু যেনো সয্য হলো না আলোরার সে এক হাতে মেহরাব এর চুল খামচে ধরে নিজের পায়ের পাতা উচু করে আঙুলে ভর দিয়ে মেহরাবের নরম ওষ্ঠদ্বয়ে সঙ্গে নিজের ওষ্ঠদ্বয়ের সম্মিলন ঘটায়।সময়ের সাথে আলোরা বেকাবু আর অস্থির হয়ে ওঠে মেহরাব তা বুঝতে পেরে আলোরার কানে কাছে ঠোট মিশিয়ে বলে 


" I swear, যদি তুই নিজেকে আর আমাকে এভাবে নিয়ন্ত্রণহীন করিস, তাহলে ভয়াবহ কিছু ঘটতে বেশি সময় লাগবে না।I can't control myself,বাকিটা তুই কল্পনা করে নিতে চাস নাকি আমি বাস্তবতার ছোয়া দিবো?


আলোরা এক ছুটে মেহরাব এর বাধন থেকে পালায় নিজের রুমে।এই ভয়ংকর যাত্রা দুই দিন পরেই না হয় শুরু হবে।

মেহরাব আলোরার যাওয়ার পানে তাকিয়ে হাসে, তারপর চেয়ারে গিয়ে উপন্যাস এর দিকে চোখ যেতে আবারো হেসে ওঠে। তার পাগলী বউ..... চাঁদের পানে তাকিয়ে মেহরাব বলে


- জীবনে বহু জ্বালা দিয়েছিস আজ pre-romance করলাম তোর সামনে বিয়ের দিন দেখি তকে জ্বালিয়ে মারবোে নিষ্ঠুর চাঁদ।


বেচারা চাঁদ সাতে ও পাঁচে ও নাই তবু সব দোষ তার😓।


(সমাপ্ত)


[ বহুদিন ধরে চলে আশা এই গল্পের সমাপ্তিতে অনেক কিছু করতে চেয়ছিলাম কিন্তু আপাতত এখানেই সমাপ্তি কারণ আমার ইনর্কোস পরিক্ষার ডেট দিয়েছে।তবে একটা বোনাস পর্ব তো দিবোই সময় সুযোগ করে]

গল্প: বাধন হারা বেনী পর্ব ২৬

 গল্প: বাধন হারা বেনী

পর্ব:২৬(অধঃ শেষ পর্ব)

লেখনি: সানজিদা আহমেদ শাহারা


মেহরাব দ্রুত আবেদিন স্যর এর কেবিনে যায়।তার কেবিন এর সামনে এখন ও আবেদিন স্যার দাড়িয়ে আছে। মেহরাব দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে বলে স্যার আমি আমার আলোরাকে ফিরে পেতে চায় আমি নিশ্বঃ তাকে ছাড়া দয়া করে সব কিছু আমাদের খুলে বলুন আমরা কিভাবে আপনার এই হাসপাতাল এর সাথে জড়িয়ে গেলাম।

আবেদিন স্যার গম্ভীর কিন্তু হাসি মুখে বললেন

-আমি ও চায় তোমরা এই মুসিবাত থেকে বের হও।তোমরা যে এখানে আসবে তা আমি চায়নি কখনো কিন্তু আমার অদৃষ্ট তোমাদের এখানে টেনে এনেছে।

এরপর আই সি ইউ এর দরজার ছোট্ট কাচের ফাকা দিয়ে তাকালেন।বিছানায় আবেদিন স্যার এর নিথর দেহখানা যেনো প্রানহীন ভাবে পড়ে আছে। তার তাকানো দেখে সবাই তার দিকে তাকালে এই দৃশ্য আতকে ওঠে।সকলকে অবাক করে বলে

আবেদিন- তখন আমি পড়াশুনার জন্য আর ভাগ্যান্বেষণ এর জন্য জাপান আসি।জাপান তখন এতো আধুনিক ছিলো না।ঐ যে আমার দেহখানা দেখছো সে প্রচন্ড লোভী ছিলো।যখন আমার তার সাথে যোগাযোগ ছিলো তখন সে আমাকে প্রচন্ড ভাবে খারাপ কাজে সঞ্চালন করতো।এমন কোন অন্যায় ছিলো না যে সে করেনি।আর এই যে দেখো এখন কেমন মরার মতো পড়ে আছে কি লাভ হলো বলতো এসব করে?সেই তো মৃত্যুর স্বাদ নিতেই হলো।

মেহরাব - আপনার হেয়ালি কথা কিছুই বুঝছিনা আমি দয়া করে পরিষ্কার করে বলুন সব টা।এভাবে ধোঁয়াশায় রাখবেন না দয়া করে।

আবেদিন- আমি ঐ যে দেহটা শুয়ে আছে সেই দেহে বসবাসকারী কারিন জীন। বলতে পারো আমিই উনি।জাপান এ এসে প্রথম দিকে আমি তেমন কোন উন্নতি করতে পারিনি।এরপর একদিন আমি কিছু ভন্ড তান্ত্রিক দের দেখি যারা সাধারণ কিছু বিষয় যা স্বাভাবিক ওষুধে ঠিক হয় তা গুজরুকি করে মানুষকে বোকা বানিয়ে ঠিক করে দেওয়ার নামে টাকা ইনকাম করছে।তা দেখে প্রথম বার আমার মনে উকি দিলো ইচ্ছা।আমি ও ওভাবে টাকা ইনকাম করবো তবে একটু ভিন্ন উপায়ে।এরপর আমি একজন মোং এর সাথে যোগাযোগ করি।তিনি প্রথমে আমাকে এমন শিক্ষা দিতে চাননি।কিন্তু আমার মনের ইচ্ছাকে গোপন রেখে মানুষের ভালো করার কথা বলে তাকে বহু সময় নিয়ে রাজি করাতে সক্ষম হই।এরপর শুরু হয় আমার দীর্ঘ তিন বছরের কালো জাদু শিক্ষা।আসলে কালো জাদু বা ভালো জাদু বলে কিছুই হয় না।সব একই জাদু তুমি মানুষ এর ভালোর জন্য যদি কোন কিছু করো তবে তা ভালে জাদু আর যদি তোমার জ্ঞানকে কখনো খারাপ উদ্দ্যেশে ব্যবহার করো তবে তা খারাপ জাদু।আমি দিক্ষা নিয়েক দেশে ফিরে যায়।সেখানে গিয়ে আমার এই কর্ম কান্ড পরিচালনা করতে থাকে পরিচয় আড়াল করে।একদিন আমার কাছে আসে তোমার নানী ও তার বড় বোন।তারা যে জীন জাতিরই লোক তা প্রথম দেখায় আমি জানতে পারি।এরপর তারা আমাকে সব খুলে বলে তোমার মা ও তোমার বাবার ব্যাপারে।তখন আমি তাদের শর্ত দেয় যে সমস্যার সমাধান আমি করে দিতে পারবো কিন্তু তাদের ও আমাকে হাদিয়া হিসাবে কিছু দিতে হবে।যথারীতি আমি কাজ শুরু করি কিন্তু আমার কাজকে অসফল করে তোমার মা চলে যায় জীনরাজ্য ছেড়ে ফলে আমি তার সন্ধান পেতে কেনো তা জানি না কিন্তু ব্যর্থ হই।জীবনে প্রথম বার ব্যর্থ হয়ে আমার মধ্যে রাগ ও হিংসার জন্ম হয় আমি যখন আমার কিছুটা  হওয়া কাজের জন্য হাদিয়া দাবি করি তোমার নানীর কাছে সে সাফ সাফ কাজ হয়নি বলে মানা করে দেয়।সে আরো আমাকে মানুষ বলে অপমান করে।মানুষ হুজুরের কাছে নাকি জীন হয়ে আশা তার ঠিক হয়নি।একটা সামান্য তুচ্ছ মানুষ সে তার কি সাহায্য করবে? যার নিজেরই তাদের থেকে সাহায্য নিয়ে কাজ করতে হয়।এতে আমার রাগ নিয়ন্ত্রণ এর বাইরে চলে যায়।তখন আমি তোমার নানীর বংশের প্রত্যেকটা জীনের উপর মরণ বান নিক্ষেপ করি এতে তারা মারা যায় তবে মরার আগে জীন রাজ্যের শেষ প্রান্তে থাকা এক গুহার ভেতর ঝুলে থাকা চকচকে জারুল ফল তারা খায় ফলে মৃত্যুর পর তারা আমার থেকে ও দ্বীগুন হিংস্র জীনে পরিনত হয়।কারন তাদের দেহের মুক্তি হয়নি।এবং প্রতিশোধ নিতে আমাকে আক্রমোন করে।আমি প্রান ভয়ে আবার ও জাপানে ফিরে আসি।জাপানে এসে আমি নিজের মতো করে আবার ও কাজ শুরু করি।আমার প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে আমি এক সময় তোমার নানীর বংসের কথা ভুলে যায়।এরপর কেটে যায় বহু দিন ঘটনা শুরু হয় যখন আমি এই হাসপাতাল বানানোর কাজ শুরু করি তখন এখানে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে  আমি তা সমাধান এর চেষ্টা করলে এখানে তোমার নানীর বংশের অস্তিস্ত অনুভব করি কাজ বন্ধ করে দেয়।এরপর আমি আবার ও সব কাজ বন্ধ করে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে রক্ষায় মগ্ন হয়ে পড়ি।এভাবে সময় এগিয়ে যায় আমার নানতী বড়ো হয়ে আমার কাছে হাসপাতালটির বন্ধ কাজ আবার ও শুরু করবে বলে আবদার করতে থাকে।আমি ও রাজি হয়ে যায়।মনে করি যে আর কিছু হবে না।এরপর ও ঘটনা চলতে থাকলে আমি আমার দিক্ষা নেওয়া গুরুকে সবটা বলি তিনি আমাকে ভীষন রাগ করলেন ও ভালো হয়ে যেতে বললেন এবং আমার থেকে আমার সব দিক্ষা ও শক্তি এক মাসের সাধনা করিয়ে ভুলিয়ে দিলেন।এখন আমি একজন সাধারন মানুষ ছিলাম।এরপর সে সব বন্ধ করে দিয়ে যায় ও জীন গুলোকে তাড়িয়ে দেয়। একদিন খবর আসে তিনি মারা গিছেন এবং তার মৃত্যুর আগে থেকেই হাসপাতালে এই ঘটনা আবার ও শুরু হয়।বিশেষ করে লাশ চুরির।তখন আমি তার কাছে আবার যায় সে বলে কিভাবে যেনো তোমার নানী বংশের জীন যে বয়ামে আটকে ছিলো তা ভেঙে গিয়েছে ও তারা  তা থেকে মুক্ত হয়ে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।কিন্তু তারা কিছুই করতে পারবে না।যদি পারে তো এই যে জীন তার বংশের বা তার রক্তের কিছু লোককে এনে তাদের সাথে কথা বলে মাফ চেয়ে নাও তাহলে হয়তো মুক্তি পাবে।তারা ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।আমি সেই মোতাবেক তোমাদের খোজ নেয়।এবং যোগাযোগ এর চেষ্টা করি একটা সময় তোমার নানী বংশের একজন জীন আমাকে এসে বলে সে কোন রক্ত পাত চায় না কিন্তু তোমরা আসলে হয়তো ভয়ংকর কিছু হবে কারণ তোমার নানী মরার আগে তোমার মায়ের কাছে গিয়েছিলো তোমার মা ভেবেছে তার সন্তানের ক্ষতি করতে এসেছে সে তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়।তোমার মায়ের উপর তীব্র রাগ নিয়ে সে মৃত্যু বরন করে।তাই রাগের বশে সে তোমাদের ক্ষতি করতে পিছুপা হবে না।আমি ও তোমরা যেহেতু বার বার আমন্ত্রনে সাড়া দিচ্ছিলে না তাই আর চাই নি তোমরা আসো।কিন্তু তোমরা ঠিক অপ্রত্যাশিত ভাবে এলে।আর আশার সঙ্গেই তোমরা তোমার নানী বংশের জীনের নজরে চলে গেলে যার প্রথম শিকার কাফি দ্বিতীয় শিকার আমি।কাফির এখানে দোষ সে তোমাদের সাহায্য করেছে সাথে আমাকে ও তাই এমন শাস্তি তার প্রাপ্য।আর অন্যদিকে আলোরা সেদিন মেহরাব রুপী জীনকে আয়নায় আটকায়নি বরং জীনটি তাকে আটকিয়ে আয়নায় রেখেছে।সাথে কাফিকে ও একটা সময় চক্রে আটকে রেখেছে।এরপর জীনটি সোহরাব এর সামনে এমন ভাবেক কল্পজাল সৃষ্টি করেছে যেনে আলোরা এই সব করেছে বলে সে মনে করে কারণ সোহমেহরা  থেকে সবটা জেনে যাওয়ার পর সে আলোরা ও মেহরাব রুপী জিন এর উপর নরজ রাগছিলো এজন্য।আর কাফির কথা তো আগেই বললাম সে আমাদের সাহায্য করেছিলো এজন্য তাকে আগেই বন্ধী করেছিলো। কাফি আমাদের সব কথা শুনতে পায় কিন্তু সে উত্তর দিতে পারে না।

মেহরাব- এখন আমাদের কি করোনীয়?

আবেদিন- তোমরা রুকাইয়া করো।তোমার নানীর বংশের সাথে কথা বলার চেষ্টা করো তাদের থেকে আমার ও তোমার মায়ের  কৃতকর্মের জন্য মাপ চাও।এছাড়া লড়াই শুধু ধংসই ডেকে আনবে আসলে তাদের আত্মাকে শান্তি দিতে হবে তাহলে তারা মুক্তির পথে হাটবে।

মেহরাব একথা শুনে সকলকে নিয়ে এক মিনিট ও দেরি না করে আলোরার ফ্লাটে আসে আর আসার সময় কাফিকে লাইভ সার্পোট থেকে নিয়ে আসে বর্ন সই দিয়ে। আলোরার আলমারি থেকে সেই আয়নাটা বের করে যেখানে আলোরা সেই জীনকে আটকে রেখেছিলো আসলে জীন আলোরাকে আটকে দিয়েছিলো কৌশলে।এরপর মেহরাব শুরু করে  রুকাইয়া টানা ছয় ঘন্টা রুকাইয়া চলার পর কাফির দেহ টা গোল গোল ঘুরতে থাকে এবং লাইট বিলিঙ্ক করতে থাকে সাথে প্রচন্ড জোরে বাতাস হতে থাকে।মিনিট খানেক সময় নিয়ে কাফি উঠে বসে কথা বলতে শুরু করে।

কাফির ভেতর প্রবেশ করা জীন বলে

জীন- তোদের সাহস দেখে অবাক হয় আমাকে ডেকেছিস তোরা।

মেহরাব ও তার সাথে কথা বলতে থাকে।হাজির হওয়া জীনটি মেহরাব এর নানী।তিনি মেহরাব এর সাথে বাক বিতন্ডিতায় জড়ায় এক পর্যায়ে শক্তি প্রদর্শন করে সোমেহরাকে আঘাত করে।এই পর্যায়ে মেহরাব যখন আবার কিছু বলতে যাবে তখন তাকে ইশারায় থামিয়ে সোমেহরা বলে

সোমেহরা- নানু,ও নানু তুমি আমাকে মেরে ফেলবে? নানু তুমি আমাকে মেরে ফেললে, আমাদের মেরে ফেললে যদি তোমার রাগ ক্ষোব মিটে যায় মেরে ফেলো।তবে তুমি কি জানো প্রতিরাতে মা নামাজের পাটিতে দাড়িয়ে তোমাদের জন্য কাদেঁ নানাজানকে কেবল একটু দেখার জন্য কাদেঁ।তোমার কোলে একটু মাথা রেখে শুয়ার জন্য কাদেঁ।জানো নানু ছোট বেলায় যখন সবাই গরমের ছুটিতে নানু বাড়িতে বেড়াতে যেতো আমি খুব কাদঁতাম নানু বাড়ি যাওয়ার জন্য মা প্রথমে বকতো তারপর আদর করে বলতো একদিন তোমার নানু বাড়ি বেড়াতে যাব মা আজ না।ছোট্ট মনে বড্ড আশা ছিলো নানা বাড়ি যাব আমার মায়ের ও মা আছে তাকে দেখবো। আমি যেমন মায়ের কাছে গেলে গলে যায় মা ও বুঝি তার কাছে গেলে ওমন গলে যায়।আদুরে আবদার করে।আমাকে মেরে ফেলো নানু কিন্তু তার আগে একবার তোমাকে জড়িয়ে ধরতে দও।তুমি ও মায়ের মা ডবোল মা তাহলে তোমার সাথে ও তো আমার রক্তের টান আছে।নানু একবার জড়িয়ে ধরি তোমায় মনে করো এটা আমার শেষ ইচ্ছা।আমি তো তোমারই নাতনী তাই না বলো।

সোমেহরার কথা শেষ হলে সে উঠে দাড়িয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে এসে কাফির মধ্যে থাকা তার নানীকে জড়িয়ে ধরে।এই পর্যায়ে কাফির চোখ থেকে পানি আসতে দেখা যায় অর্থাৎ তার নানীর মন নরম হয়েছে।এবার তার নানী ও তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে।সকলে এবার নির্ভয়ে এগিয়ে তার কাছে এসে তাকে একে একে জড়িয়ে ধরে।তারপর তার নানী তাদের কে সব অভীশাপ থেকে মুক্তি দেয় তার নানার সাথে  কথা বলিয়ে দেয়। কথা বলিয়ে দিলে তার নানা ও তাদের মাকে মাফ করে দেয় সকলকে দোয়া করে।  কাফি ও আলোরাকে তাদের সময় জাল থেকে মুক্ত করে দেয়।এরপর তারা অদৃশ্য হয়ে যায়।কাফি ও আলোরা নিজের সময়ে ফিরতে পেরে ভীষন খুশি হয়।মেহরাব আলোরাকে জড়িয়ে ধরে আর কাফি নিজে এসে সোমেহরাকে জড়িয়ে ধরে।তাদের এই আবেগঘন মুহূর্ত দেখে তাহিয়ানা ও সোহরাবকে জড়িয়ে ধরে।তনিমা আর অনিমা বেচারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে।এরপর হাসপাতাল থেকে খবর আসে আবেদিন স্যার মৃত্যু বরণ করেছে তখন মেহরাব সহ সকলে বুঝতে পারে নানী তার কাম সারছে🤭🤭


[কালকে একটা ঝাকানাকা পর্ব দিবো তারপর সমাপ্ত করবো....😮‍💨]


[যদি ও বা দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো কালকে কিন্তু আপনাগো কি সারপোকা প্রাইজ দিমু আল্লাহ্ ঝড় বৃষ্টি দিয়ে আমারেই সারপোকা প্রাইজ দিয়ে দিয়েছে। 


চলবে।

গল্প: বাধন হারা বেনী পর্ব ২৫

 গল্প:বাধন হারা বেনী

লেখিকা:সানজিদা আহমেদ শাহারা

পর্ব:২৫


একটা নয় দুইটা নয় পরপর তিন চারটে বিড়াল এর আক্রমন প্রতিহত করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে আলোরা আর সোহরাব এর।এক পর্যায়ে সোহরাব বোঝে এগুলো সাধারণ বিড়াল নয়।তখন সে জোরে আজান দেয়।আজান এর শব্দে মুহূর্তেই বিড়াল গুলো পালিয়ে যেতে শুরু করে।দুর থেকে তখন ফজরের আজানা ও ভেসে আসতে শুরু করে আলোরা আর সোহরাব চোখে চোখে কিছু কথা বলে যার ভাব অর্থ এই দাড়ায় যে আজান এর শব্দ যতক্ষন হবে ততক্ষন এর মধ্যেই মেহরাবকে খুজতে হবে।তারা দ্রুত কফিন গুলো সরিয়ে দেখতে থাকে এখানে প্রায় হাজার এর পরে কফিন এতো কফিন কয়েক মিনিটে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। তবু ও তারা যথাসম্ভব চেষ্টা করতে থাকে যেভাবে হোক আজান শেষ হওয়ার আগে মেহরাবকে খুজে বের করতে হবে কিন্তু তারা প্রায় ব্যর্থ তখন আলোরার চোখ যায় একেবারে দুরে একটা কফিনের দিকে কফিনের মাঝখানে অল্প একটু ছিদ্র।আলোরা দ্রুত অন্য একটি কফিনের উপর সুয়ে পড়ে এবং নিজের হাত দিয়ে আঘাত করে শূন্যে আঘাত এর জায়গা আন্দাজ করে বুঝতে পারে মেহরাব ওখানে আছে এবং নিজের জীবন বাচাতে হয়তো অতটুকু শ্বাস নেওয়ার জন্য ছিদ্র করতে পেরেছে। এরপর দ্রুত উঠে সেই কফিনের ঢাকনা খুলতে থাকে ওদিকে আজান ও প্রায় শেষ সোহরাব ও আসে তার কাছে আর সাহায্য করতে থাকে আজান ও শেষ প্রায়। এমন সময় কফিনের মুখ খুলতে তারা সক্ষম হয়।আলোরা দ্রুত মেহরাবকে বের করে নিয়ে আসে।এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।তার চোখমুখ নীল হয়ে গিয়েছে।আলোরা ক্লান্ত হয়ে সোহরাব এর কাধে মাথা রেখে বসে পড়ে।


-ভাই আমরা এসব থেকে অনেক দুরে চলে যাব, আর এসবের মধ্যে নিজেদের জড়াবো না।


-এসব কি বলছিস তুই?


- ঠিকই বলছি।আমি ক্লান্ত।


এই কথা শুনতেই সোহরাব আলোরার কড়ে আঙুল চাপ দিয়ে ধরে আয়তুল কুরছি পড়ে।আলোরা প্রথমে অবাক হয়ে তাকায় আর এরপর একটি শয়তানি হাসি দিয়ে বাদুর হয়ে উড়ে চলে যায়।সোহরাব হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে।সে বুঝতে পারছে না এসব আসলে কি হচ্ছে।আলোরা কোথায় আর এই যে কেবল যা হলো তা আসলে কি ছিলো?তখন ডাক্তার এলো এবং সোহরাবকে জানালো মেহরাব এর হুস ফিরেছে।মেহরাব এর সেলাইন চলছে সে বেশ দুর্বল তা তাকে দেখলে বোঝা যাচ্ছে।সোহরাব মেহরাবকে দেখতে পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।মায়ের পেট থেকে তারা একসাথে একই নাড়ির দুটি মিলিত অংশ তারা।সেই ভাইকে প্রায় হারাতে বসেছিলো সে।মেহরাব সোহরাবকে বলে 


- আমি ঠিক আছি।বাকিরা কই?আলু কই


সোহরাব সোমেহরার থেকে জানা আর মাত্র যা হলো বাইরে ঘটলো সবটা মেহরাবকে বলল।মেহরাব পড়ে গেলো গভীর ভাবনায় সে তো এখানে তাহলে আলোরা কোথায় গেলো।ততক্ষনে মেহরাব এর উদ্বার এর কথা জানতে পেরে বাকিরা এসে হানা দেয় হাসপাতালে।মেহরাব তাদের ছলছল চোখ দেখে মজা করে বলে


-কি এম হলো বলতো? আমার বাঘিনীরা এভাবে ভেঙে পড়লে হবে।


কেউ কিছু বলার আগে ভীড় ঠেলে এগিয়ে এলো তাহিয়ানা মেহরাব এর দিকে এগিয়ে এসে বলল


 "খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে বস" 


মেহরাব এই প্রথম বার তাহিয়ানাকে দেখে প্রশন্ন হাসলো। সোহমেহরা, অনিমা ও তনিমার মনে প্রশ্ন জাগলো বাচ্চারা তো চলে গিয়েছিলো তাহলে তাহিয়ানা থেকে গেলো কিভাবে?

তাদের সন্দিহান চেহারা থেকে বিস্তার হাসলো মেহরাব।

মেহরাবকে ঘুমের ওষুদ দেওয়া হয়েছে তাহিয়ানাকে নিয়ে সোহরাব বাহিরে গিয়েছে তনিমা অনিমা একমনে দোয়া দুরুদ পড়ছে।সোমেহরা একটু বাহিরে আসে এদিক ওদিক তাকিয়ে এগিয়ে যায় লিফ্টের দিকে লিফ্টের ভেতর সাত চেপে জড়সড় হয়ে দাড়িয়ে আছে।একটু বাদেই কাঙ্খিত কেবিনের সামনে এসে লিফ্ট ওপেন হয়। সোমেহরা বের হয় এবং কাফির কেবিনে ঢোকে।মানুষটার প্রতি তার অদ্ভুত মায়া জন্মেছে এই দুই তিন দিনে।তাইতো সবার অগচরে নিয়ম করে রোজ দেখতে আসে।আজ ও এসেছে কত কথা যে বলে সোহমেহরা কাফিকে।কিন্তু নিষ্ঠুর কাফি শুধু এক দৃষ্টিতে চলন্ত ফ্যানের দিকে তাকিয়ে থাকে।সোহমেহরার কান্না পায়।যত দিন যাচ্ছে তত যেনো কাফির হার্টরেট বিট কমিয়ে দিচ্ছে।অবনতি ছাড়া উন্নীতর কোন লক্ষন প্রকাশ পাচ্ছে না।কাফির কেবিনে চুপ চাপ বসে আছে সোহমেহরা তখন সে দেখতে পায় কাফির কেবিনের বাহিরে আবেদিন স্যার দাড়ানো। সোহমেহরা বাকরুদ্ধ হয়ে যায় তাকে দেখে যেই লোক মৃত্যু সজ্জায় আছে কালকে ও ডক্টর জোরাজুরি করেছে তার লাইফ সার্পোটা খুলে দিতে সে এখন কাফির কেবিনের সামনে দাড়িয়ে আছে দেখে সোমেহরা তার দিকে এগিয়ে যায়।আবেদিন স্যার তাকে দেখে বলল


- আলোরাকে বাচাতে হবে।কাফিকে বাচাতে হবে ওরা সময়ের জালে আটকে পড়েছে।দ্রুত মেহরাব এর কাছে যাও না হলে সে ও সময়ের জালে আটকে যাবে আমাদের মতো।মনে রাখবে"


(তৈরি হও এই মোকাবেলা সহজ হবে না।তারা সংখ্যায় অধীক তোমরা দুর্বল।তোমাদের দুর্বলতা তাদের শক্তি।তাদের শক্তিতে তারা হিংস্র।ছল-কপাট,নাটক,আর ধুর্ততায় তারা পটু।

এবার আর পালাতে পারবে না।মোকাবেলা করতেই হবে।)


সোহমেহরা আবেদিন স্যারের কথা কিছুটা বুঝল আর বাকি টা বিশ্লেষণ করতে করতে দ্রুত লিফ্টের কাছে গেল চার এ চাপ দিয়ে দাড়িয়ে পড়ল। তখন হঠাৎ তার খেয়াল হলো যে আবেদিন স্যার তাদের ডেকে ছিলো হাসপাতাল এর কেস টা সমাধান করতে তাহলে তারা কেনো এই জীন এর আক্রমন এর শিকার হচ্ছে।তাদের কেনো বার বার সাবধান করা হচ্ছে।আলু কিভাবে সময়ের জালে আটকে গেলো আর মেহরাব ভাই  কিভাবে সময়ের জ্বালে আটকে যাবে?হঠাৎ লিফ্ট থামায় সোমেহরা নিজের সংবদ এ ফিরে আসে দ্রুত ছুটে যায় সে মেহরাব এর কেবিন এর দিকে। যেতে পথে সে কারো সাথে ধাক্কা খায় কিন্তু ব্যাস্ততায় সে আর পিছু ফিরে দেখে না লোকটি কে।সোহমেহরা দ্রুত মেহরাব এর কেবিনে এসে আয়তুল কুরছি পড়তে থাকে তার এমন কাজ দেখে তনিমা অনিমা ও ভড়কে যায় কিন্তু সোহমেহরা ইশারা করলে তারা প্রশ্ন না করে আয়তুল কুরছি পড়তে থাকে।এক পর্যায়ে মেহরাব এর ঘুম ভাঙে আর সে উঠে বসে।সোহমেহরা তাকে সবটা খুলে বলে আবেদিন স্যার তাকে যা যা বলেছে।মেহরাব এবার ভাবনায় পড়ে যায়।সময় জাল মানে তো Time trap এটার সাথে কিভাবে জড়ালো আলোরা।সোহমেহরা জানতে চাইলো এই সময় জাল বা Time trap কি?


চলবে....

গল্প: বাধন হারা বেনী পর্ব ২৪

 গল্প: বাধন হারা বেনী

পর্ব:২৪

লেখনী:সানজিদা আহমেদ শাহারা


আলোরার বাড়িতে তার ভাইবোনেরা সিফ্ট হয়েছে কালকেই।সন্ধ্যার পরপরই ভার্সিটির বাচ্চারা ফিরে গিয়েছে দেশের উদ্দ্যেশে রয়ে গিয়েছে মেহরাব।আলোরা তার ফ্লাটের বেলকনিতে বসে আদা আর লেবু দিয়ে গরম গরম হালকা লাল চা খাচ্ছিলো।তার মনটা আজ বড্ড অস্থির কাফি হয়তো বাঁচবে না দুটো দিন কিভাবে যে কেটেছে আলোরার ভাবতেই মাথায় তীব্র যন্ত্রনা হচ্ছে।মেহরাব রুপী মানুষটা কেমন জানি গা বাওয়া। প্রচুর গা ঘেসে চলাফেরা করে।আলোরার মন খারাপ হয়ে যায় আজ মেহরাব থাকলে সে কি এতটা একা হয়ে পড়তো কোথায় আছে লোকটা কে জানে।চোখ বেয়ে টুপটাপ পানি পড়তে থাকে তার।পেছন থেকে তাকে শক্ত করে জঠিয়ে ধরে সোমেহরা।

সোমেহরা জানে মেহরাব রুপী যে ঘুরছে সে আসলে মেহরাব না।আলোরা তাকে প্রমানসহ বলেছে, অবশ্য আলোরা এমনি বললে ও সে বিশ্বাস করতো।কিন্তু বাকিরা জানে না। মেহরাব রুপী জিন টার সামনে সব টা সবাইকে বলা ও যাবে না পাছে সে টের পেয়ে গেলে উৎপাত শুরু করতে পারে।


সোমেহরা- চিন্তা করিস না ভাই ভালো আছে।


আলোরা- আপু তোমার কথায় যেনো সত্যি হয়।


সোমেহরা- চল খেতে চল।


আলোরা- না আপু ভালো লাগছে না।


সোমেহরা- আহা চলতো একটু খেতে হয়।


আলোরা জানে যত সময় না সে যাবে এভাবেই তাটা ছেচড়া চলতে থাকবে এজন্য সে উঠে দাড়ায় আর চলতে শুরু করে।সোমেহরা ও তার পিছু পিছু আসতে থাকে।রাতের খাবার খেয়ে যে যার মতো ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়।

আলোরা বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছিলো তখন তার কিছু একটা মনে পড়ে এরপর সে যায় মেহরাব রুপী জিন যে রুমে ঘুমাচ্ছে সেই রুমে।আলোরা জানতো জীনেরা ঘুমায় না।তার তাই মনে হতো তবে তার সেই অদৃঢ় ধারনাকে মিথ্যা প্রমান করে দিয়ে জীনটা ঘুমাচ্ছিলো।আলোরা তার কড়ে আঙুল ধরে আয়না তার মুখ বরাবর ধরে আয়তুল কুরছি পড়তে শুরু করে ব্যাস একটু বাদেই জীনটি আয়নায় বন্ধি হয়ে যায়।আলোরা হাসে হেসে আয়না টা নিয়ে রুমে চলে যায়।এরপর আয়নাটাকে সামনে এনে প্রশ্ন করে


আলোরা- কে তুমি? কেনো মেহরাব ভাই এর রুপ নিয়েছ?


জীন- আমি তাসাতুল্লাহ মাকরিম।আমার কাজ হলো মানুষপর রুপ নিয়ে তার জীবনের সকল প্রকার ভালো সম্পর্ক নষ্ঠ করে দেওয়া।


আলোরা- তুমি কারণ ছাড়া এনন করবে কেনো?


জীন-কারণ আমাকে হুমুম দেওয়া হয়েছে।


আলোরা- কে দিয়েছে।


জীন- মাজহারার সালেতাজ।


আলোরা- সে আবার কে?


জীন- তিনি আমার ওস্তাদ।আমার জীন ওস্তাদ।


আলোরা- আর তিনি তা কেনো করেছেন?


জীন- সে কথা যেয়ে তোর বসকে জিজ্ঞাসা কর।

আমাকে প্রশ্ন করার তুইকে।


আলোরা- পড়ব আয়তুল কুরছি, দেবো ফু তারপর দেখ আমি কে।


জীনটি আলোরার কথা শুনে ভয়ে না না করে ওঠে।আলোরার দুর্বিপাক যেনো শেষই হচ্ছে না।এখন মেহরাব কাছে থাকলে সে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কষে কয়েকটা চুমু খেতো।যতই এমনটা ভাবুক মেহরাব এর সামনে সে জমে বরফই হয়ে যায়।আলোরা ভাবুক হয়ে যায়।আয়নাটা তার আলমারির এক গোপণ ড্রয়ারে রেখে দেয় সে।তারপর শুয়ে পড়ে বিছানাতে।কালকে সব প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে আর সবার আগে মেহরাব ভাইকে উদ্ধার করতে হবে।

অন্যদিকে মেহরাব এর যখন জ্ঞান ফেরে তখন সে একটি কাঠের চার দেওয়াল এর মধ্যে আটকা অনেকটা কফিনের মতো।  হঠাৎ করে ঘাবড়ে গেলে ও তারপর সে নিজেকে সংযত করে ভয় করলে বা উত্তেজিত হলে সে মারা যেতে পারে।

মারা যাওয়া যাবে না।কি করবে বুঝতে ও পারছে না।সে খেয়াল করল বেশ খানিক টা দুর থেকে একটা ঘন্টা নড়ার আওয়াজ আসে অথাৎ আশে পাশেই কোথাও চার্চ আছে।মেহরাব ধীরে ধীরে নিজেকে শান্ত করলো ফোন টা হাতের কাছে আছে কিনা খোজার চেষ্টা করলো পেয়ে ও গেলো এক পার্সেন্ট চার্জ আছে। কাকে ফোন দিবে? সোহরাব নাকি আলোরা? সোহরাব তাকে উদ্বার করতে তো পারবে কিন্তু এই জায়গা চিনে আসতে আসতে অনেক দেরি না হয়ে যাবে।আলোরা এখানকার অনেক বছরের অধীবাসী তাই সে দ্রুত আসতে পারবে।মেহরাব ফোন দেয় আলোরাকে কিন্তু ফোন যায় না পরপর চেষ্টা করে না পেয়ে লোকেশন পাঠায় আর একটি ভয়েস ম্যাসেজ।কিন্তু সেন্ড হয়েছে কিনা বোঝার আগেই হাতে থাকা ফোন টা বন্ধ হয়ে যায়।আলোরার ঘুম টা ঠিক হচ্ছে না এপাশ ওপাশ করছে কেন?বেড সাইডের পাশে রাখা ফেনটায় টং করে একটা আওয়াজ হয় আলোরা উঠে ফোনটা হাতে নিয়ে চুপি সারে বেরিয়ে যায়।তাকে ফলো করে সোহরাব ও বের হয়ে পড়ে।দুজনে এসে গাড়ির কাছে মিট করে এক সাথে বাকি পথ যায়।অন্যদিকে মেহরাব এর অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকে সে তার হাতে থাকা বন্ধ হয়ে যাওয়া ফোনটা দিয়ে কাঠের দেওয়াল গুলোতে আঘাত করতে থাকে। এভাবে আঘাত করতে করতে একটু ফাটে কাঠের দেওয়াল টা।মেহরাব এর তখন মনে পড়ে খুব ছোট বেলা একবার কেডি পাঠকের আদালতে এমন একটি দৃশ্য সে দেখেছিলো।তবে এমন অবস্থার সম্মুখীন যে সে কখনো হবে তা তার জানা ছিলো না।আসলে পৃথিবী বড়ই বৈচিত্র্যময়। সেই ফাটা জায়গায় সে আরো কয়েকবার আঘাত করে আঘাত করা জায়গা দিয়ে একটু বাতাস আসে।মেহরাব যেনো হাপ ছেড়ে বাচে।কিন্তু তার শরীর দুর্বল থাকায় সে আবার ও অজ্ঞান হয়ে পড়ে।এদিকে আলোরারা লোকেশন অনুযায়ী জায়গাতে এসে পৌছায় কিন্তু কোন ভাবেই সেই জায়গার পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই যে কাঙ্খিত বস্তু পাওয়া মুসকিল তো বটেই অনেক টা না মুমকিন ও।হঠাৎ কোথা থেকে কয়েকটা কালল বেড়াল এসে তাদের উপর আক্রমন শুরু করে তারা ভীত হয়ে পড়ে এরপর আক্রমন প্রতিহত করার চেষ্টা করতে থাকে।


চলবে...