গল্প গ্যাংস্টার পর্ব ৮

 #গ্যাংস্টার

#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)

পর্ব : ৮


ঠিক তিন দিনের মাথায় শুষ্ক কলেজে যায়। প্রিন্সিপাল কে সে বলেই গিয়েছিল। 


রানি তখন সামিয়ার সাথে কথা বলছিল,

"রানি তুই এই ভাবে কেন বসে আছিস?"

"তো কলেজের এত লোকের সামনে কি নাচব?"

"না মানে হাসি হাসি মুখে কথা তো বলতে পারিস।"

"তোর মতো পাগল ছাগল আমি?"

"কি?"

"জিজ্ঞাস করলাম তোর মতো কি আমি পাগল ছাগল যে কোনো কারণ ছাড়া বেক্কলের মতো হাসব।"

"এই ভাবে কথা বলছিস কেন?"

"তোর ভাগ্য ভালো এখনো যে তোর ২৪ গোষ্ঠী কে ধুয়ে দেই নি।"


সামিয়া আর কিছু বলে না। চুপ করে যায়। তা না হলে রানির বলা শেষ হবে না। 


রানি বসে বসে মাঠের ঘাস উবরাচ্ছিল।


"তুই গরু হয়ে গেলি?"

"হোয়াট ননসেন্স?"

"না মানে কখন থেকে ঘাস উঠাচ্ছিস।"

"এই গুলি ভেজে মোমের ভেতর চিকেনের বদলে দিয়ে তা আবার ভেজে তোর হবু জামাইয়ে খাওয়াব। সাথে তোর গলার উপর উঠে তোকে গিলাব।"

"কি?"

"..


রানি মন খারাপ করে ঘাসে হাত দিতে গিয়ে সামনে তাকাতেই দেখে শুষ্ক কি সুন্দর কলেজের ভেতর আসছে।


রানি আর চিন্তা বা সময় নষ্ট না করে দৌড়ে তার সামনে যায়।


"কোথায় ছিলেন দুদিন?"

রানির কথায় শুষ্ক থেমে একবার তার দিকে তাকায়।

পরে কোনো কথা না বলে হাটতে থাকে। সে ভালো করেই জানে রানি কে কিছু না বললে সে তার সাথে যেতেই থাকবে।


শুষ্ক আপন মনে হাঁটছে। যেতে যেতে সে নিজের রুমে চলে যায়। আর রানি তো তাকে প্রশ্নের উপর প্রশ্নের আবরণে মুড়িয়ে দিচ্ছে। বকবক করতে করতে এটাও তার খেয়াল নেই যে সে রুমের ভেতর চলে এলো। 


রানি ভেতরে যেতেই শুষ্ক দরজা বন্ধ করে দেয়। 

এবার রানির হুশ ফিরে। ঢুক গিলে বলে,

"আ আপনি দরজা বন্ধ ক করলেন কেন?"

"....

"আ আমি পরে কথা বলব। ক্লাস শুরু হয়ে যাবে আমি যাই।"


রানি তাড়াতাড়ি কথা গুলি বলে দরজার দিকে যেতে চাইলে শুষ্ক তার হাত ধরে পথ আটকে বলে,

"উম উম কোথাও নয়। কোথাও যাওয়া হবে না। এতক্ষণ না  ননসেন্সের মতো ননস্টপ বকবক করছিলে? সো এখন প্রশ্ন করো। শাহজাদীর উত্তর দিতে আমি প্রস্তুত।"

"ম মানে?"

"মানে প্রশ্ন করো।"

"ন না আমার তো কোনো প্রশ্ন নেই। আমি যাই।"


রানি আবার যেতে চাইলে রাজ হাত প্রসারিত করে তাকে বাঁধা দেয়। 


এবার রানি ভয়কে যায়। ঢুক গিলছে আর ঘনঘন চোখের পাতা ফেলছে। শুষ্ক তার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলে,

"ডো ইউ সাসপেক্ট মি?" (আমাকে তুমি সন্দেহ করছো?)

"ম মানে?"

"তাহলে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন ছুড়ছো কেন?"

"এ এমনি"

"ও রেয়লি? ডোন্ট ইউ সাসপেক্ট মি? বাট আই ক্যান সী দ্যা আবিউস ডাউট ইন ইউর আইস।" (ও সত্যি? তুমি আমাকে সন্দেহ করছো না? কিন্তু আমি তোমার চোখে স্পষ্ট সন্দেহ দেখতে পাচ্ছি।)


"কি কি যা তা বলছেন আমাকে যেতে দিন।"


এবার শুষ্ক রানির কোমর জড়িয়ে টেনে আনে।

"কি কি করছেন? ছাড়ুন আমায়। ছাড়ুন বলছি।"

"কেন জানতে চাইবে না আমার আসল পরিচয়?"

"গুলি মারি আপনার পরিচয়। জান বাঁচানো ফরজ কাজ। ছাড়ুন আমায়।"


রানি শুষ্কের বুকে হাতে কিল চর দিতে থাকে। শুষ্ক মুচকি হেসে রানি কে ছেড়ে দেয়। রানি হুড়মুড়িয়ে একটু দূরে গিয়ে পড়ে। 


শুষ্ক তার হাসি টা ভেতরে রেখে বলে,

"ওকে দ্যান ডোন্ট টক এভাউট দিজ এনিমোর।"

"নিজে বাঁচলে বাপের নাম। আর কখনোই বলব না।"


রানি আর দেরি না করে শুষ্কের পাশ কাটিয়ে দৌড়ে দরজা খুলে বের হয়ে যায়। 


শুষ্ক মুচকি হেসে হেসে বলে,

"প্রেয়সী ইউ উইল রিম্মেবার ইট এগেইন এন্ড এগেইন।"  (প্রেয়সী এটা তুমি বারবার মনে করবে।)


রানি যেতে যেতে ভাবতে থাকে।

"মানুষটার মাঝে সত্যিই কিছু একটা আছে। না হলে কি আর এমন করে? কেনই বা বলল পরিচয় জানার কথা? তবে সত্যিই কি উনি উনার পরিচয় গোপন করছে? না হলে কেন এমন কথা বলবে? নিশ্চয় কোনো গণ্ডগোল আছে। বিষয়টা ছেড়ে দিলে চলবে না। না রাতের ঘুম হারাম করার চেয়ে ঘুটিয়ে দেখা ভালো।"


শুষ্ক দ্বিতীয় ক্লাসে গিয়ে দেখে রানি নেই। 

এদিক সেদিক তাকিয়েও তাকে পাওয়া গেল না।


সে সামিয়ার কাছে যায়।

"সামিয়া!"

"জ্বি স্যার।"

"রানি কোথায়?"

"স্যার আপনার সাথে সেই যে গেল তারপর তো আর এলো না।"

"হোয়াট?"

"হুম স্যার এর পর থেকে তাকে আর দেখা যায় নি।"


শুষ্ক ভেবে নিয়েছে, হয়তো ভয়ে পালিয়ে গিয়েছে।


"ওকে বসো।"


শুষ্ক ক্লাস শেষে বের হয়ে গেল। রানি কে সারা কলেজ খুঁজেও পাওয়া যায়নি। শুষ্কও গটগট করে কলেজ থেকে বের হয়ে এলো।  


গাড়ি স্টার্ট দিয়ে সে চলে যায়। 

একটা বিশাল বড় বিল্ডিংয়ের সামনে গাড়ি থামায়। তারপর শুষ্ক বের হয়ে ভেতরে চলে যায়। 


রানি গাড়ির পেছনের দরজা একটু খুলে উঁকি দিল। চারপাশ টায় চোখ বুলিয়ে নিল। দেখে মনে হচ্ছে অফিস টফিস। 


আসলে সে পেছনে মাল রাখার জায়গায় লুকিয়ে ছিল। 


সেখান থেকে একটু বেড়িয়ে নিজেই বলতে থাকে,

"ভাগ্যিস বুদ্ধি টা মাথায় এসেছিল। আর আয়ান টাকেও কি বলে যে ধন্যবাদ দিব। ও না থাকলে তো এখান পর্যন্ত আসতেও পারতাম না। এত আগে এই গুহার মাঝে বসে থাকলে দম আটকে কবেই মরে যেতাম। ওকে বললাম বলেই তো ডেভিল রাক্ষস বের হওয়ার সাথে সাথে আমায় ম্যাসেজ করে জানিয়ে দিয়েছে। আর আমি টুক করে ওখানে বসে গেলাম। ডাইনোসর টা টেরও পায় নি। নিহাত আয়ান আমায় পছন্দ করে না হলে তো বলেই দিত। ইসস ছেলে টা কি কিউট।"


রানি মিষ্টি একটা হাসি দেয়। 

আবার বলে,

"এটা তো অফিস। কিন্তু লোক টা এখানে কেন আসল?"


রানি আশপাশ তাকায়। তরপর উপরে তাকিয়ে নাম দেখে খুব বেশি অবাক হয়। অবাক বলতে ধাক্কা খায় সে। বড় বড় ডিজাইন করা লিখা আছে "রাজ কোম্পানি" এখানে এই লোক টা কি করছে? 


ভেবে রানির মন আরো জট পাকিয়ে যায়। সন্দেহের মাত্রাও বেড়ে যায়। 


রানি ভেতরে যাবে কি যাবে না ভাবতে ভাবতেই দেখে শুষ্ক আসছে প্যান্টের প্যাকেটে হাত দিয়ে। দুই তিন টা লোক তাকে দাঁড়িয়ে আবার সম্মানও দিল। রানি কিছুই বুঝতে পাড়ল না। 


সময় নষ্ট না করে দৌড়ে আবার পেছনে গিয়ে বসে পড়ল। 


চলবে....


(গঠনমূলক কমেন্ট করুন।)


Sabriha Sadi

0 Comments:

Post a Comment