#গ্যাংস্টার
#Sabriha_sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ৯
শুষ্ক অনেক স্পিডে গাড়ি ড্রাইভ করছে। মাঝে মাঝে খুব জোরে জোরে ব্রেক নিচ্ছে।
আর রানি ওখানে থেকে থেকে জান তার বেহাল হয়ে গিয়েছে। শুষ্ক কে খুব বকছে।
"আরে হাতির শক্তি কেন দিচ্ছে গাড়ির উপর? এতটা রাক্ষস মানুষ হয় কি করে? নাকি গাড়ি চালাতে যানে না আল্লাহ জানে। আমার কোমর হাড় সব ভেঙ্গে তো শলা হয়ে যাচ্ছে রে। আরে গন্ডার গাড়িও থামাচ্ছে না। নিজের জান নিয়ে পালাতে পারলে বাঁচি। আল্লাহ দয়া করো। আরে গন্ডার রে।"
রানি ঝাঁকি খাচ্ছে আর শুষ্ক কে বকছে।
বেশ সময় নেওয়ার পর গাড়ি থামল। রানি একটু হাফ ছেড়ে বাঁচল। ইচ্ছে করছে এখনি এখান থেকে বের হয়ে যেতে। কিন্তু রাক্ষসের মুখের সামনে যদি পড়ে? তবে তো একদম গিলেই খাবে। তার থেকে না হয় ভালো একটু বসে থাকা যাক। এই ভেবে রানি চুপ করে মুখে হাত দিয়ে বসে আছে।
শুষ্ক গাড়ি পার্ক করে দারোয়ান কে বলল,
"সাইদুল তুই যা তো।"
"কোথায় যাবো স্যার?"
"উমম তুই এক কাজ কর তুই রেস্টুরেন্টে যা। কি কি লাগবে আমি তোকে ফোনে বলে দিব।"
"ঠিক আছে স্যার।"
সাইদুল চলে যায়। শুষ্ক ভেতরে যায়। আসার সময় আমেনা আন্টি কে চলে যেতে বলল। কাল বলেছিল তার মেয়ে অসুস্থ তাই পাঠিয়ে দিয়েছে। সাইদুল কে দিয়েও তো খাবার আনতে বলল। এটা দিয়েই চলে যাবে আজ।
শুষ্ক চাবি আঙ্গুলের ঢগায় ঘুরাতে ঘুরাতে ভেতরে চলে গেল।
রানি দরজা টা উঁচু করে দেখে কেউ নেই। কোনো রকম সেখান থেকে বের হয়ে এলো। বিশাল এক বাড়ি। চারপাশ টা কি সুন্দর। কত গাছ অনেক টা জায়গায় শুধু গাছের কারণে সবুজ।
বিশাল জায়গা জুরে গাছ পালা সুন্দর ফুলের বাগান। সামনে বড় একটা পুল সেখানে কি সুন্দর মাছেরা দৌড়া দৌড়ি করছে। পাশেই ছোট ছোট কিসের গাছ।
বাড়ি তো নয় যেন বিলাসিতায় ভরপুর।
রানি চারপাশ দেখছে আর অবাক হচ্ছে। পুলের কাছে গিয়ে সেখানে হাত দিলে কিছু মাছ তার আঙ্গুল ঠুকরে দেয়।
রানি খিলখিল করে হেসে হাত তুলে নেয়।
তারপর মুখে হাত দিয়ে চারপাশে চোখ বুলায়।
"ভেতরে যাওয়া টা আমার ঠিক হবে? নাকি চলে যাবো? এত টা জায়গা রাক্ষসের ঝাঁকি খেয়ে এসে এমনি চলে যাবো? দূর গিয়ে দেখিই না গুহায় কে আছে?"
কথা গুলি বিড়বিড় করে নিজের সাথে বলেই পা টিপে টিপে রানি ভেতরে গেল।
দরজা টা খুলে ভেতরে যায়।
ভেতরে গিয়ে আরো অবাক হয়। কি সুন্দর করে সাজানো। কত বিলাসবহুল জিনিস। কি সুন্দর ভেতরটা। রানি ঘুরছে আর দেখছে আর অবাক হচ্ছে।
শুষ্ক তখন ওয়াশরুমে শাওয়ার নিচ্ছে লম্বা শাওয়ার নিচ্ছে আর মনে মনে অনেক কিছু ভাবছে।
রানি সব ঘর দেখতে দেখতে কোণার এক রুমে চলে যায়।
শুষ্কের বিশাল এক ছবি দেওয়ালে ঝুলছে। আশেপাশে কত জিনিস। রুম টা বেশ পরিপাটি। বেডে কি সুন্দর সাদা চাদর বিছানো। দেওয়ালও সাদা। সাথে হাল্কা রঙের প্রিন্টিং। রানির ঘর টা খুব পছন্দ হয়েছে।
দেখতে দেখতে রানি বেশ ভেতরে ঢুকে গেছে।
ওয়াশরুম থেকে শাওয়ারের শব্দ টা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দরজা খুলার শব্দে রানি হকচকিয়ে যায়।
তাড়াতাড়ি কোনো দিশা না পেয়ে আলমারি খুলে সেখানে ঢুকে।
শুষ্ক টাওয়াল পেঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়। ভিজে চুল দিয়ে পানি টুপটুপ করছে। সদ্য গোসল করে আসায় তার শরীরের শুভ্রতা আরো ভেসে আসছে। সামনের চুলের পানি এসে বুক ভিজে যাচ্ছে।
রুমের আশপাশ এক বার দেখে আলমারির কাছে যায়।
আলমারি খুললে রানি গুটিশুটি করে নিচে বসে থাকে। শুষ্কের ভয়ে জড়সড় হয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
শুষ্ক নিজের কাপড় খুঁজতে লাগে। হেঙ্গার গুলি এদিক ওদিক করতে করতে রানির হাত পেয়ে টেনে নিজের বুকের মাঝে নিয়ে আসে।
পা দিয়ে আলমারির দরজা টা বন্ধ করে রানি কে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।
রানি চোখ বন্ধ করে আছে। যেন এই বুঝি রাক্ষসের করাল গ্রাসে পড়ল। রানি ভয়ে শুষ্কের বুকে মুখ লুকিয়ে আছে।
শুষ্ক অপলক রানি কে দেখছে আর মিটমিট হাসছে।
রানি কিছুক্ষণ বাদে আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকায়। শুষ্ক কে এই ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখতে কি করবে সে ভেবে পায় না। তবে খুব ভয় পায় সাথে লজ্জাও। এভাবে কেউ তাকায় নাকি কারো দিকে?
শুকনো ঢুক গিলে শুষ্কের দিকে তাকায়।
শুষ্কের বুক থেকে নিজেকে দূরে নিয়ে আমতাআমতা করতে থাকে,
"আ আসলে আমি না। আসছি।"
রানি দৌড়ে চলে যেতে নিলে শুষ্ক পিছন ফিরেই রানির হাত ধরে তাকে আটকায়। রানি খুব ভয় পেয়ে যায়।
রাজ আবার হেঁচকা টানে নিজের কাছে নিয়ে আসে রানি কে। কোমড় টেনে আরো কাছে আনে।
"প্রেয়সী দ্যান মাই আইডেন্টিটি কাম দিজ পোয়েন্ট।" (প্রেয়সী তাহলে আমার পরিচয়ের টানে চলেই এলো এখান অবধি।)
"আ আমি আ আসলে.."
"আমার প্রেয়সী।"
"ম মানে?"
"মানে তুমি আমার ভালোবাসা।"
"কি কি সব বলছেন এই সব?"
"কি সব নয় ঠিকি বলছি। আমার পরিচয় জানা এতোই দরকার ছিল বুঝি প্রেয়সী?"
"কি কিসের প পরিচয়?"
শুষ্ক রানি কে ছেড়ে একটু দূরে যায়।
রানি দৌড়ে দরজার কাছে গেলে দরজা আর খুলতে পাড়ে না। শুষ্ক মুচকি হেসে পেছন ফিরেই বলে,
"দ্যা কিংডম ওফ ইউর ড্রিমস দাজ নট হোয়্যাক সো রাউ।" (তোমার স্বপ্নের রাজ এত কাঁচা কাজ করে না।)
মানুষটার কথা শুনে রানি ভীষণ রকম অবাক হয়। ঘনঘন চোখের পাতা নাড়ে।
"রানি লকিং দ্যা ডোর।"
"প্লি প্লিজ দরজা টা খু খুলে দিন প্রোমিজ আর কোনো দিন আসব না। আই প্রোমিজ।"
রানির পেছন দিকে মুখ করে রাখা মানুষটা শান্ত গলায় বলে,
"হোয়াই? ডোন্ট ইউ কাম হার উইদ সো মাচ ট্রাভেল টু ফাইনড আউট মাই রিয়েল আইডেন্টিটি।" (কেন? তুমি না আমার আসল পরিচয় বের করবে বলে এত কষ্ট করে এখানে এলে।)
"ন না আমি আ আসলে আমি কখন এখানে এলাম আমি নিজেই জানি না। কিভাবে এলাম তাও জানি না। প্লিজ দরজা টা আনলক করে দিন আমি বাসায় যাবো।"
রানির দিকে তাকিয়ে মানুষটা শান্ত গলায় বলে,
"প্রেয়সী আমি রাজ। রাজ চৌধুরী। আমিই তোমার সেই স্বপ্নের রাজ যাকে দেখার জন্যে সর্বদা তুমি উদ্বিগ্ন থাকো। আমি তোমার ড্রিমবয়। যাকে সব সময় তুমি স্বপ্নে দেখে আসছো কিন্তু বাস্তবে খুঁজে চলেছো। যার অস্তিত্ব ছিল না তোমার কাছে সেই আমি আজ তোমার নয়নগোচরের দাঁড়িয়ে আছি। যাকে একটা বার দেখার জন্যে তুমি ব্যাকুল হয়ে থাকো আমিই তোমার সেই রাজ।"
রানি রসগোল্লার মতো চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে থাকে মানুষটার দিকে।
চলবে....
(অনেকেই বলেন পেইজ নাকি তাদের নিউজফিটে যায় না। সবাই কমেন্ট করলে নিজের আইডির রিচ বাড়বে। যার ফলে অন্যজনও পেয়ে যাবে। তাই গল্প পড়ে দুই চার লাইন লিখে যাবেন😊)
Sabriha Sadi
0 Comments:
Post a Comment