#বালির_সংসার
#সৌরভে_সুবাসিনী(moon)
(পর্ব ৬ থেকে ৮ )
.
.
#পর্বঃ ৬
.
.
রুপ যতটা দ্রুত পারলো নিশি কে নিজের থেকে দ্রুত ছাড়িয়ে নিলো। বেশ খানিক টা৷ জোড় করেই ধাক্কা দেয় নিশিকে। লিফটের দেয়ালে সজোড়ে ধাক্কা খায় নিশি। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। খানিক টা সময় লাগে ঝটকা সামলাতে। লিফট এসে গ্রাউন্ড ফ্লোরে নেমেছে। দরজা খোলার পর নিশি রুপের হাত ধরে টেনে নিয়ে হসপিটালের ক্যান্টিনের পাশেই একটা রুমে ঢুকে।
নিশি- তুই এভাবে আমাকে ধাক্কা দিলি ক্যান?
-তুই এখানে কি করছিস? আর এসব কি?
নিশি- তোর ফোন অফ। আর আমি পারছি না তোকে ছাড়া থাকতে। বড্ড ভালোবাসি রে।
রুপ- ভালোবাসা! ভালোবাসা মাই ফুট। আমি তোকে ভালোবাসি না। অর্থি আমার স্ত্রী। আমি শুধু ওকে ভালোবাসি।
- আমি আমার ভালোবাসা আদায় করে নিতে জানি রুপ।।
- কিভাবে? শ্যাম্পেন খাইয়ে,ক্লিভেজ দেখিয়ে?
- তুই ছাড়া আমার দেহ কেউ স্পর্শ করে নি। তুই জানিস।
-তোর জন্য আমার মেয়ের দাফন টা করতে পারিনি। পাগলী টা মরেই গিয়েছিলো প্রায়। তোকে কোন দিন মাফ করবো না।যা তুই এখান থেকে যা।
.
.
রাগে রুপের হাত পা কাপছে। সাহস হয় কি করে? বেস্ট ফ্রেন্ড তো কি? স্ত্রী তো নয়। সেদিন যা হয়েছে সব নেশার ঘোরে।
হ্যাঁ একসময় নিশিকে খুব কাছে চাইতো কিন্তু অতীত।
সেরাতে যদি বের হয়ে না যেতো তাহলে হয়তো মেয়েটা আজ বেঁচে থাকতো। স্বামী হিসেবে সে হয়তো খারাপ কিন্তু বাবা হিসেবে সে আজ খুনী।
.
.
আদিত্য কেবিনে ঢুকেই দেখলো অর্থি বেবি কে ফিডিং করছে।
চোখ নামিয়ে নিলো। কিন্তু তার কাছে এই মুহূর্ত যেনো অমূল্য।
.
অর্থি- আদিত্যদা। দাঁড়িয়ে আছো কেনো? এসে বসো।
.
আদিত্য - পরে আসি!?
অর্থি- উহু! হয়েগেছে আসো। তুমি না কি আমার ছেলেকে কোলে নাওনি? কেনো বলতো,?
আদিত্য- আমি বাচ্চা সামলাতে পারি না। তুই তো জানিস!
অর্থি- তুমি না চাইল্ড স্পেশালাইজড!!
আদিত্য - কার্ডিওলজিস্ট।
অর্থি- সে যাই হোক। নাও তো আমার ছেলেকে।
.
আদিত্য উঠে গিয়ে কাছের চেয়ারে বসে। অর্থি খুব সাবধানে কোলে দেয়।
আদিত্যর অনুভূতি টা ভিন্ন ছিলো না। অরুনীমা কে কোলে নিয়েছে সে। মনে হচ্ছে এরা যেনো আদিত্যর অংশ।
.
.
অর্থির কাছে এসে রুপ চুপচাপ দেখছে। অর্থির হাত রুপের হাতে। সে চাইছে অর্থি কে সব টা বলতে। কিন্তু কিছুটা সময় দরকার।
ঠিক সে সময় হন্তদন্ত হয়ে ঢুকলো আবির।
স্যার স্যার বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে গেছে।
স্যার আপনাকে এখনি খুলনা যেতে হবে।
- কেনো?
- স্যার কিছু সমস্যা হয়েছে ফ্যাক্টরি তে।
- তোমরা আছো কি করতে?
আমি যাবো না।
- স্যার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
.
কিন্তু রুপ তার কথায় অনড়। সে যাবে না। অর্থিকে সে দুই দিনের জন্য ছেড়েছিলো। দুইদিন অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে আর না। অর্থির কথা রুপ ফেলতে পারলো না।তাকে যেতেই হচ্ছে।
অর্থির ফ্যামিলি আশ্বাস দিয়েছে খেয়াল রাখবে কিন্তু রুপের মন কু গাইছিলো।
.
.
আদিত্য চেম্বারে বসে আছে। কিছুক্ষণ আগে অটি করে এসেছে।
চোখে শুধু সেই ১৫ বছর বয়সী অর্থি। কানে বাজছে তার ডাক
আদিত্য দা!
.
এই যে দেখুন! ভুলেও আমাকে আপনার বউ ভাবনেন না। আব্বু যতই আপনাকে বাবা আর আমাকে মা বলুক না কেনো তবুও কিন্তু আমি আপনার বউ নই।
কথাটা মাথায় রাখবেন।
.
.
#পর্বঃ ৭
.
.
এই যে দেখুন! ভুলেও আমাকে আপনার বউ ভাববেন না। আব্বু যতই আপনাকে বাবা আর আমাকে মা বলুক না কেনো তবুও কিন্তু আমি আপনার বউ নই।
কথাটা মাথায় রাখবেন।
.
রাজশাহী থেকে ঢাকা এসে বেশ খানিকটা খারাপ লাগছিলো আদিত্যর। সবে সে এই বাসায় এসেছে। জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার সময় পিছন থেকে মেয়েলি কন্ঠস্বর শুনে।
পিছনে তাকিয়ে বেশ রীতিমতো চমকে যায়।
চৌদ্দ পনেরো বছর বয়সী মেয়ে। কোমড় অব্ধি চুল। দেখতে অপরুপ। চোখের নিচে, নাকের বা পাশে তিল। ঠোঁট গুলো হালকা বেগুনি।
হালকা মিষ্টি রঙের থ্রিপিস পড়া।
দেখতে একবারে পরীর মতো।
মুখ থেকে অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে এলো মিষ্টিপরী।
.
- কি বললেন?
- কিছুই না। তাছাড়া আমার বউ হওয়ার বয়স আপনার হয়নি। পিচ্চি মেয়ে।
আদিত্য নিজেকে সামলে নিয়েছে। এই গুণ অনেক টা রক্তে মিশে আছে।
- হুহ! তাহলে সমস্যা নেই। শুনলাম আপনি না কি এই বাসায় থাকবেন? লজিং মাষ্টার?
.
আদিত্য ভ্রু কুঁচকে তাকায়
- এই পিচ্চি! তুমি লজিং মাষ্টার বুঝো?
- না! গল্পে পড়েছি।
- আচ্ছা।
- বললেন না তো?
- কি?
- লজিং মাষ্টার?
- ধরে নাও তাই৷
.
আদিত্যর বেশ খানিক টা সময় লেগেছিল এই মেয়েকে বুঝতে। সত্যি কি কিছু বুঝে না? না কি না বুঝার ভান করে?
কিছুদিন যেতেই বুঝে না এই মেয়েটা সত্য এমন।
একদিন রাতে....
.
আদিত্য বসে পড়ছিলো। হঠাৎ মনে হলো কেউ যেনো কাদছে।
আন্টি বাসায় নেই। আয়ান কে নিয়ে গ্রামে গেছে৷
আংকেল ফিরেনি। খালা বাজারে গেছে ফিরেনি।
তবে কে কাদঁছে?
রুম থেকে বেরিয়ে বুঝতে পারে কান্নার শব্দ টা অর্থির রুম থেকে আসছে।
দৌড়ে রুমের কাছে গিয়ে ভিতরে ঢুকতেই অর্থি আদিত্য কে ধাক্কা দিয়ে ওয়াশরুমের চলে যায়।
ওক ওক করে বমি করতে করতে পেটে হাত দিয়ে বসে পড়ে।
আদিত্য ধরে রুমে নিয়ে এসে শুইয়ে দেয়। সেদিন প্রথম কোন মেয়েকে এভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।
অনুভূতি? বলার ছিলো না।
.
কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারে বিষয় টা।
কিচেনে গিয়ে গরম পানি এনে দেয়।
- ছ্যাক নেও কমে যাবে।
- আমি পারবো না। আমার বমি আসছে।
- আমি মনে হয় বাঁচবো না। আম্মুকে ডেকে দিন। আমার সময় শেষ।
.
আদিত্য প্রায় হেসে ফেলে। হাসি থামিয়ে বলে
- আগেও এমন ব্যথা হতো? না আজকেই প্রথম৷
- আজকেই প্রথম৷ আম্মু বলতো রাস্তার কিছু খাবি না। কিন্তু আমি আজকে তেতুলের আচার খেয়েছি। মনে হয় তাতে কাচের গুড়ো ছিলো। আমার পেটের নাড়িভুঁড়ি কেটে রক্ত বের হচ্ছে। আমি আর বাঁচবো না।
.
- তুমি কোন ক্লাসে পড়ো?
- ও আল্লাহ! তুমি দড়ি ফালাও আমি উঠি! আমি মরি আর সে বলে কোন ক্লাসে পড়ি। নাইনে পড়ি৷ নাইন বুঝেন? আল্লাহ গো! তুমি কই? আমারে নেও। এত কষ্ট দিয়া নিবা ক্যান? আমি কি দোষ করছি।
.
বলেই কান্না শুরু করে দিলো। আদিত্য হাসছিলো। বললো
- চুপচাপ শুয়ে থাকবে৷ এইটা নাও। এখানে ধরে থাকবে। আমি আসছি। বাইরে থেকে লক করে দিয়ে যাবো৷ আমি আংকেল ছাড়া কেউ এসে মরে গেলেও খুলবা না।
.
কিছুক্ষণ পর আদিত্য আসে। অর্থির হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে চলে যায়। ততক্ষণে পেট ব্যথা কিছুটা কমেছে।
অর্থি প্যাকেট খুলে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। বই তে পড়েছিলো বটে কিন্তু আজকের দিন সে কিশোরী থেকে ধীরেধীরে যৌবনে পা রাখতে চলেছে।
.
কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখে আদিত্য বসে আছে।
- চুল গুলো ঠিক করে বাধো তো। বিনুনি করো।
অর্থি তাই করলো। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে৷
আল্লাহ তুমি দড়ি ফালাও আমি উঠি।
আদিত্য অর্থির হাত ধরে বসে ওকে সব টা বুঝিয়েছিলো। অর্থি মাথা নিচু করে বসেছিলো কিন্তু ভয় পাচ্ছিলো না।
সেদিনের পর থেকে পালটে যায় সম্পর্ক। শুরু হয় বিশ্বাসের পথ চলা। তারপর বাকী ৫টা বছর। অর্থি কে কখনো ব্যথায় কাদতে হয়নি। আদিত্য ছিলো তো!
.
.
স্যার... স্যার...
- হুম!
বসে বসেই স্মৃতিতে অস্তিত্বশীল হয়ে উঠেছিলো আদিত্য।
- স্যার! ম্যামের প্রচন্ড পেইন হচ্ছে। খুব কান্না করছে৷
.
আদিত্য জানতো এটাই হবে। জেনেটিক ভাবেই মায়ের থেকে রোগ পেয়েছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে আদিত্য দ্রুত পায়ে ছুটে চললো কেবিনের দিকে।
.
সারাদিন কাজ করে ফার্মহাউসে ফিরে খুব ক্লান্ত লাগছে রুপের।
গা এলিয়ে দিতেই কারো স্পর্শ অনুভব করছে।
হুম অর্থির স্পর্শ। যখন যখন বাইরে থাকে, মনে হয় অর্থি আশেপাশে আছে৷ কিন্তু চোখ খুললেই দেখে কেউ নেই।
হাতটা ধীরেধীরে রুপের শার্টের বোতাম খুলতে থাকলেই রুপ ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
হ্যাঁ নিশি। এবারের ধাক্কা টা বেশ জোড়েই লেগেছে। নিচে বসে পড়েছে।
- তোর সমস্যা কি নিশি?
- তোর কি সমস্যা? তুই কেনো আমার সাথে এমন করছিস? তুই কি জানিস না? বুঝিস না? সব টা ভুলে গেলি?
- না ভুলিনি। সব মনে আছে কিন্তু এখন অর্থি আমার দায়িত্ব, আমার কর্তব্য, আমার ভালোবাসা,আমার স্ত্রী।
- স্ত্রী? হাসালি রুপ। ভুলে গেছিস? তুই কখনো অর্থি কে ভালোবাসিস নি। তোদের বিয়ে কোন প্রেমের নয়৷ যা হয়েছিলো সব পরিস্থিতির সৃষ্টি। তুই শুধুই ওর আশ্রয়দাতা, সেদিন তুই ওকে আশ্রয় না দিলে হয়তো আজ ওর কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেতো না। ও শুধুই তোর আশ্রিতা। আর আশ্রিতা কখনো স্ত্রী হতে পারে না৷ আমি মানি না। তুই শুধু আমার৷ ভুলে যা তিনটে বছর। প্লিজ৷ না হলে আমি যে মরে যাবো। রুপ প্লিজ........
.
.
#পর্বঃ ৮
.
.
আদিত্য কে দেখেই অর্থি হাত বাড়িয়ে দিলো।
মেয়েটা যেদিন থেকে আদিত্য কে পেয়েছিলো সেদিন থেকেই অসুস্থ হলে এভাবে হাত বাড়িয়ে দিতো। আন্টি কে আজ অনেক বলে বাসায় পাঠানো হয়েছে।সব সময় দেখার জন্য নার্স রয়েছে।
আদিত্য তো আছেই। হঠাত করে জ্বর কেনো আসলো বুঝলাম না।
জ্বর আসলে তো অর্থি আদিত্যর সাথে পাগলামি করতো।
যা সকালে উঠেই ভুলে যেতো।
এখনো কি তাই করে?
মেডিসিন দেওয়ার পর মেয়েটা একটু ঘুমিয়েছে হাত ছাড়েনি।
ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে ঘোর লাগা ভালোবাসা কাজ করে। অতীত ফিরে আসে।
.
মেডিক্যাল লাইফ টা প্যারাময়। দুদিন পর পর এক্সাম। পড়তে পড়তে কাহিল অবস্থা।
পড়ার টেবিল ছেড়ে সবে মাত্র উঠবে। বিছানায় অর্থি কে দেখে বেশ চমকে গিয়েছিলো।
তারপর মনে হলো এটা নতুন নয়।
প্রথম যেদিন অর্থিকে নিজের বিছানায় পায় সেদিন মাত্র ১৭ দিন হলো এই বাসায় এসেছে।
অর্থিকে নিজের পাশে দেখে ভয়ের থেকে অবাক হয় বেশি। এই মেয়ে তো আমার সাথে ঠিকঠাক কথাই বলে না। তার থেকে বড় লোকলজ্জার একটা বিষয় আছে। আমি ছেলে আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ও তো মেয়ে। ছেলেদের চরিত্র রঙিন কাপড়ের মতো যেখানে কাদার ছিটা লাগলে বুঝা যায় না। কিন্তু একটা মেয়ের চরিত্র তো সাদা কাপড়ের মতো।
একটু দাগ লাগলেই সবার নজরে পড়ে।
ধীর পায়ে সেদিন আংকেল আন্টি কে ডেকে এনেছিলো।
উনারা হেসে ফেলে আদিত্যর চেহারা দেখে।।
- বুঝলে বাবা! মেয়ে আমার ঘুমের মধ্যে হাটা চলা করে।
- স্লিপিং ওয়াক!
- হ্যাঁ। তুমি কিছু মনে করো না।
.
সেদিনের পর থেকে আজকে তিন দিন।
এর পর আসলে আদিত্য আর আংকেল আন্টি কে ডাকেনি।
নিজেই ওর ঘরে দিয়ে এসেছে।
এবারো তাই করতে যাচ্ছিলো। স্পর্শ করতেই বুঝতে পারলো শরীর খুব গরম।
সামনে ফাইনাল এক্সাম। জ্বর বাধিয়ে বসেছে। আদিত্যদা বলেই ডাক দিতেই ওর দিকে চোখ তুলে তাকায়
- আদিত্যদা! আমায় একটু আদর করবে?
.
অর্থির এমন আবদারে কিছুটা ভ্যাবাচেকা খায় আদিত্য। নিজেকে সামলে নিয়ে বলে
- এই পিচ্চি কি বলো এইসব৷ চলো নিজের ঘরে চলো।
- আমি মরে গেলে খুশি হও তাই না?
- কি বলছো এসব।
- তাহলে যা বলছি করো।
- মাথা গেছে পুরোপুরি।
অর্থি কিছু বলে না। কিছুক্ষণ পর উঠে যেতে নিয়ে পড়ে যাচ্ছিলো। আদিত্য ধরে ফেলে।
- থাক আর দয়া দেখাতে হবে না।
.
আদিত্য কোন পাত্তা না দিয়ে কোলে উঠিয়ে নিয়ে যায় রুমে।অর্থির মা কে ডাকার পর দেখে ওর জ্বর। আন্টি পানি আনতে গেলে আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে - এই নাও করলাম আদর। খুশি?
.
পরদিন সকালে....
-জ্বর কমেছে মা? (বাবা)
- হুম।
- বলোনি কেনো? আদিত্য না বললে তো জানতামই না। নিজের খেয়াল রেখো আর আজ স্কুলে যেয়ো না।
- আজ ফাইনালের প্রবেশ পত্র দিবে। যেতেই হবে।
- আজ থেকে আয়ানের এক্সাম শুরু! আমি যেতে পারবো না! তোর বাবার মিটিং আছে। আচ্ছা আমি আসার সময় নিয়ে আসবো। একা যাওয়ার দরকার নেই।
- তোমার কাছে দিবে না মা। জানোই তো নিয়ম কানুন।
- আন্টি! কিছু মনে না করলে আমি নিয়ে যেতে পারি।(আদিত্য)
- কিন্তু তোমার ক্লাস?
- সমস্যা নেই।
.
আদিত্য বাইক কিনেছে। বাবার এত টাকা অথচ বাইক? বাবার বন্ধুর ছেলে বাবার মতোই কিপটে।
- কি ভাবছো?
- আমি আবারো কাল রাতে আপনার...
- শুধু কি তাই? সুন্দরী? তুমি তো বেশ আবেদনময়ী!
.
এসব ভাষা অর্থি বুঝে না। তাই চুপচাপ রইলো।
ফিরে আসার সময় ওর বান্ধবীরা এগিয়ে দিতে এসে আদিত্য কে দেখে তো পুরাই ফিদা।
কালো জিন্সের সাথে হালকা নীল শার্ট, দাড়িগুলো ছোট করে কাটা। চুল, বডি সব মিলিয়ে তামিল হিরো।
একেক জনের একেক কথা শুনে অর্থি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে।
ওদের কে আর সামনে না নিয়ে দ্রুত পায়ে এগিয়ে চলে।
- চলুন।
- তোমার বান্ধবীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলে না তো?
- কি দরকার? কোন দরকার নেই।
আদিত্য বুঝে কিন্তু তবুও কিছু বলে না।
.
.
কয়েকমাস পর
.
এখন অর্থিকে সব জায়গায় আদিত্য নিয়ে যায়।
সকালে যাওয়ার সময় স্কুলে নামিয়ে দিয়ে তারপর ও ক্লাসে যায়। আসার সময় নিয়ে আসে।
আদিত্য যেদিন পারে না সেদিন অর্থির বাবা যায়। একা ছাড়তে ইচ্ছে করে না। আদিত্য ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছিলো। সেসময় অর্থি এসে সামনে দাঁড়ায়।
একদম সামনে।
নীল শাড়ী, খোলাচুল,হাতে চূড়ি। লাল লিপস্টিক। আদিত্য হার্টবিট মিস করে।
- কেমন লাগছে আমায়।
- পুরোই হারপিকের বোতল।
- মানে কি? (রেগে গিয়ে)
- শুকনো মেয়ে, নীল শাড়ী, লাল লিপস্টিক। পুরোই হারপিকের বোতল না?
.
অর্থি যেনো সহমত।
- কিন্তু এখন?
- আর শাড়ি নেই।
অর্থি উত্তর না দিয়ে আদিত্য কে টানতে টানতে উপরে নিয়ে যায়। আলমারি খুললে আদিত্য দেখে পুরো শাড়ির দোকান।
- আমার জন্মের পর থেকে বাবা মায়ের জন্য যখন যখন কিনে আমার জন্য কিনে। বলুন কোনটা পড়বো৷
.
আদিত্য কালো শাড়ী বের করে হাতে দেয়।
- পড়তে পারো?
- হুম।
- যাক কিছুতো পারো। নাহলে আমার আবার পড়িয়ে দিতে হতো।
- হুহ! তাতে কি? আমি কি আপনাকে ভয় পাই?
- তাই বুঝি?
- জ্বী! আমি চাইলে আপনার সামনে শাড়ি চেঞ্জ করতে পারবো।
আদিত্য হেসে চলে যেতে নিলে অর্থি ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে হাত। ওর এক হাতের সাথে হ্যান্ডকাফ বিছানায় লাগিয়ে দেয়।
- কি করছো কি?
- চ্যালেঞ্জ করেন কেনো?
- পিচ্চি মেয়ে তুমিই লজ্জা পাবে। যেতে দেও আমায়।
- যদি পারি?
- পারলে পারলা! আমায় যেতে দেও।
- উহু। বলুন কি দিবেন?
- কি চাই?
- তেতুলের আচার! যা আপনি আমাকে পাঁচ মাস যাবত খেতে দিচ্ছেন না।
.
.
চলবে ( আদিত্য প্রেমীদের জন্য সামনে সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে) 🤗🤗
0 Comments:
Post a Comment