#মহীপতি👑
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_৩৬
জং সুক তার টিম নিয়ে সোজা বাংলোর ভেতরে প্রবেশ করতে নিলে তাকে দরজায় পাহারা দিতে থাকা দু'জন আর্মি সৈনিক বাঁধা দেয়,
" আপনি ভেতরে যেতে পারবেন না৷ এটা সরকারি সম্পত্তি। "
" আচ্ছা এখানে একটা ছেলে আর একটা মেয়েকে আসতে দেখেছো? ছেকেটার শরীরে গুলি লাগা আছে। "
জারিফ বুঝতে পারে তারা কাদের খুঁজছে।
জারিফের সঙ্গে যে ছেলেটা সে কিছু বলতে গেলে জারিফ থামিয়ে দেয়,
" আরেহ দোস্ত। আমি বলি।
এখানে এমন কেউ আসেনি৷ আর যদি আসেও তাহলে এই বাংলো বাড়িতে প্রবেশ করার ক্ষমতা নেই। "
" সঠিক বলছেন ত?"
" হ্যাঁ সত্যি যা তাই বলছি। "
" তাহলে আমার সহকর্মী কে থামিয়ে কেন দিলেন?"
" আমরা আর্মি সোলজার। আপনি বেশি বাড়াবাড়ি করলে সমস্যা আপনারি হবে মি. তাই ভলো হবে এখান থেকে চলে জান। নাহলে আমরা ক্যাপ্টেন কে কল করব। "
জং সুক আড় চোখে তাকায়,
" ঠিক আছে আমরা চলে যাচ্ছি। "
জং সুক সেখান থেকে লোকদের নিয়ে ফিরে যায়।
জারিফের সঙ্গে থাকা সোলজার টা বলে,
" মিথ্যা কেন বললি ভাই?"
" আরে চুপ কর।
ওরা ওদের মারতে এসেছিল। "
" কি বলিস আমাদের ক্যাপ্টেন কে কল করা উচিত। "
" হ্যাঁ ঠিক বলেছিস। আমি ওদের বলে আসি।"
জারিফ ভেতরে চলে আসে,
আরহাম আর হৃদি ঘুমিয়ে ছিল।
জারিফ আরহাম কে গিয়ে হালকা ডাক দেয়,
" স্যার। "
আরহাম চোখ খুলে তাকায়। "
" কি হয়েছে?"
" ওই ওরা এসেছিল আপনাদের খোঁজ করতে আমার মনে হয় না আপনারা এখানে সেভ।"
" কোন দিকে যাওয়া টা ঠিক হবে তাহলে?"
" স্যার এই বাড়ির পেছন গেট দিয়ে সোজা একটু হেটে গেলে মেন রোড।
আসলে আমরা ক্যাপ্টেন কে কল করলে তিনি আসতেও লেট হবে।
ততক্ষণে আপনারা রাস্তায় পৌঁছে গেলেই আর্মি ক্যাম্প পাবেন।
ওই দিকে।
এই পেছনের রাস্তা সোজাসুজি যায়।
কিন্তু ওরা আসবে সামনের রাস্তা দিয়ে যেটা দুর হবে।
আর কোন ইমারজেন্সি ভাবে আমরা ওনাদের ডাকলে আমাদের কথা শুনবে না স্যার। "
" বুঝেছি।
ধন্যবাদ জারিফ খাবার থাকার জায়গা দেওয়ার জন্য। "
" স্যার এই রকম বলবেন না।
আপনি আমার এক সেট জামা পরে নিন৷ এই জামাটা নোংরা হয়ে গেছে।
আর ম্যাম কেও এক সেট জামা পরিয়ে দিন৷"
আরহাম, জারিফের হাত ধরে,
" স্যার আপনি আমাদের জন্য যা করেছেন তার কাছে এসব কিছুই না৷ "
জারিফ ওর কালো ডিলা প্যান্ট আর সাদা টি সার্ট দিয়ে যায় দু সেট।
হৃদির ও হবে আরহামের ও হবে।
আরহাম হৃদিকে ধিরে ডাক দেয়,
" জান উঠো। "
" উম... "
" উঠো আমাদের যেতো হবে। "
হৃদি চোখ খুলে তাকায়। "
" ওরা এসে গেছে?"
" না আসতে পারে। চলো। "
ওরা জামা বদলে নেয়।
এরপর জারিফের দেখানো রাস্তা দিয়ে সোজা হাটা শুরু করে।
জারিফ কল করে বলে দেয় যে এই রকম একটা দম্পতি যাবে ওদের সাহায্য করতে।
জারিফ আবার তার সহকর্মীর সঙ্গে মেইন গেটে এসে দাঁড়ায়।
এমন সময় জং সুক আবার আসে,
" মিথ্যা বলিস ওরা এ বাড়ি তেই আছে। "
জারিফ আর তার সহকারী বাঁধা দিতে গেলে ওরা ওদের আটকে ধরে,
জং সুক আর ওর লোকরা ভেতরে চলে যায়।
কেউ নেই।
জং সুক বাড়ির পেছন দিকে চলে আসে।
দ্রুত সেখানে গেলেও আর আরহাম, হৃদিকে খুজে পায় না।
,
" সালা দুই মিনিট আগে আসলেই হতো। "
" বস ওদের কি করব? "
" ওদের আপাতত ছেড়ে দে আরহাম আর হৃদিকে খোঁজ। "
জং সুক তার টিম নিয়ে সেই পথে হাটা ধরে।
আরহামের কষ্ট হচ্ছে।
শরীরে গুলি লাগার ক্ষত টা এখনো তাজা রয়েছে।
হৃদি বুঝতে পারে।
আরহামের হাত ধরে দাঁড়িয়ে যায়।
আরহাম পেছনে ফিরে তাকায়।
হৃদির চোখে পানি।
" জান কষ্ট হয়ে গেছে?"
" নাহ... "
" তাহলে চলো। "
হৃদি আরহাম কে জড়িয়ে ধরে,
" আমার জন্য সব হচ্ছে। আমি আমার গ্রাম কে বাঁচাতে গিয়ে আপনার জীবন কে এত বড় একটা সমস্যার মুখে ফেলে দিয়েছি। আমি মোটেই একজন ভালো স্ত্রী নই। "
" জান প্লিজ এই সময় এডব কথা বলার নয়৷"
হৃদি শব্দ করে কাঁদছে,
আরহামের ঠোঁটে, গালে, চুমু খায়,
" একজন স্ত্রী কে সব থেকে প্রথম তার স্বামীর কথা ভাবা উচিত।
আমি বাকি সবার টা ভাবতে গিয়ে আপনাকে বিপদে ফেলে দিয়েছি। "
আরহাম হৃদিকে জড়িয়ে ধরে।
হৃদি আরহাম কে পেছন থেকে ইট দিয়ে আঘাত করে মাথায়।
আরহাম জ্ঞান হারায়।
হৃদি আরহাম কে লুকিয়ে দেয়। আরহামের গালে, ঠোঁট চুমু খায়।
বার বার চুমু খায়।
" আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি। আমি আপনাকে এই জীবন মরণের মাঝে আর ফাঁসাতে চাই না৷
ওরা আমাকে পেলে আপনাকে চাইবে না।
আমি ধরা দেই ওদের।
আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি আরহাম খান। "
হৃদি আরহামের কপালে চুমু খায়।
আর আরহাম কে রেখে সে দিকে যায় যে দিক জং সুকের লোক রা আছে।
,
,
,
" স্যার লোকেশন ট্রাক করে ফেলেছি?"
" দ্রুত গাড়ি বের করো। "
আজিজ রহমান দ্রুত পুলিশ ফোর্স নিয়ে আগ্রসর হয় সে দিকে।
অনেক টা সময় খোজাখুজি করার পর আরহাম কে জঙ্গলের মাঝে লুকানো উদ্ধার করে আজিজ রহমান।
কিন্তু তার মেয়েটা নেই।
তিনি দ্রুত আরহাম কে সেখানে থাকা ডক্টর দিয়ে ট্রিটমেন্ট করায়।
ধিরে ধিরে আরহামের জ্ঞান ফিরে,
" বাবা ঠিক আছো?"
আরহাম চোখ খুলে শ্বশুর কে দেখে অবাক হয়।
" আব্বু। পদ্মা কোথা?"
" বাবা হৃদি তোমার সঙ্গে ছিল না। "
" কিন্তু আব্বু ও আমার সঙ্গেই ছিল।
কোথায় গেল? হটাৎ করেই আমাকে.. "
আরহাম থেমে যায় ওর সবটা মনে আসে।
ওকে বাঁচাতে হৃদি জং সুকের কাছে ধরা দিয়েছে।
আরহাম উঠে দাঁড়ায়।
" আরে বাবা কি করছো তোমার শরীর দূর্বল।"
" আমি ঠিক আছি বাবা৷ আমার পদ্মা বিপদে আছে। আমি কি করে শান্ত থাকতে পারি বলুন। "
" কিন্তু তোমার গার্ড দের বলা হয়েছে। ওরা দ্রুত চলে আসবে। "
" আপনি শুধু আমাকে গান দিন আমার আর কিছু লাগবে না। "
আরহাম দ্রুতই সোজাসুজি হাটা ধরে।
,,
,,
,,
হৃদি হাটু মাটিতে দিয়ে জং সুকের সামনে বসে আছে। হাত দুটো পেছনে বাঁধা।
জং সুক রাজাদের মত চেয়ারে বসে আছে।
যেন ভিক্টোরি পেয়ে গেছে।
" বাহ৷ এত দিনে আমি আসলে বুঝালম ইরফান, আরহাম কেন পাগল এই মেয়ের জন্য। এত সুন্দর জিনিস প্রতি রাতে বিছানায় কে না চায়৷ "
হৃদি দাঁত কিটিমিটি করে তাকায়৷
" উফ মেয়ে ওই রাগান্বিত চোখে আমাকে দেখো না৷ এরপর যা হবে তার জন্য তুমি প্রস্তুত হতে পারবে না৷ "
জং সুক চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায়।
" এই ওই যে লাল ডেকোরেশনের ঘর টা আছে না৷ ওটা রেডি কর। আর এই পটাকা আমার জন্য সেখানে রেখে আয়৷ আমিও দেখতে চাই ওর ভেতর এমন কি আছে৷ "
হৃদির চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।। হাত দু'টো বাঁধা কোন প্রকার ফাইট করা সম্ভব নয়।
পাশ থেকে এক জন এসে হৃদির হাত ধরে দাঁড় করায়।
আর হৃদিকে টেনে নিয়ে যায়।
আরহামের মুখটা শুধু কল্পনায় আসছে তার৷
চলবে?
0 Comments:
Post a Comment