#মহীপতি👑
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#অন্তিম_পর্ব_০১_খন্ড
(পূর্ণ এবং প্রাপ্ত বয়স্ক দের জন্য উন্মুক্ত)
বন্দিনী কে যেমন জেলের পোশাক পরিয়ে একটা জেলে ফেলে রাখা হয়।
ঠিক তেমনি একটা বন্দি সালায় হৃদিকে নিয়ে আসা হয়েছে।
লাল রঙের ডেকোরেশন করা।
বিছনায় বসিয়ে দিয়ে গেল হৃদিকে।
চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে পড়তে বুকের কাপড় ভিজে গেছে।
আরহাম কে আরো একটু কাছে পেত হৃদি।
তাকে যখন সাজাচ্ছিল তখন কৌশলে ফলের ভেতর থেকে একটা চাকু নিয়ে এসেছে।
এটাই এখন ব্যাবহার করবে সে।
হৃদি কখনো কল্পনাও করে নি তার সঙ্গে সে এমন কিছু করতে পারে।
ওই লোকটা তাকে স্পর্শ করার আগেই সে তার জীবন দিয়ে দিবে।
আরহাম কে এই মুহুর্তে তার ভীষণ দেখতে মন চাইছে৷
শেষ বারের মত আরহাম আর বাবাকে একটা বার দেখতে পারত। হয়ত এই মুহুর্তে নিজেকে সব থেকে শুখি মানুষ হিসাবে গণ্য করত হৃদি।
ভালোবাসা হয়ত এমনি হয়৷
হৃদি চোখ বন্ধ করে হাতে ছুরি টা ধরে,
" আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি আরহাম৷ আপনি আমার জীবনে আল্লাহর দেওয়া সব থেকে বড় উপহার। "
হৃদি নিজের হাত কাটবে এমন সময় কেউ এসে হৃদির থেকে চাকু টা নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
হৃদি চোখ খুলে তাকায়।
সামনে থাকা লোকটা তাকে জড়িয়ে ধরে।
আর ঠোঁট জোড়া দখল করে নেয়।
হৃদি চোখ বন্ধ করে নেয়।
নিজের হাত দিয়ে লোকটার পিঠ জড়িয়ে নেয়।
,
,
"কেন এসব করতে যাচ্ছিলে? আমার কথা কি একটুও ভাবো না? "
" কি করতাম? আমার কাছে কোন উপায় ছিল না৷ "
আরহাম হৃদিকে জড়িয়ে নেয়,
" তোমার আরহাম বেঁচে থাকতে তোমাকে অন্য কোন পুরুষ স্পর্শ করতে পারবে না।
হয় আমি পুরো দুনিয়া জ্বালিয়ে দেব। নয় আগে তোমাকে মারব৷ এরপর নিজে মরে যাব। "
হৃদি আরহাম কে আরও জড়িয়ে ধরে,
" মেরে ফেলুন। তবে অন্য কারোর হবার কথা বলবেন না। "
আরহাম হৃদির কপালে চুমু খায়।
সঙ্গে হৃদির পুরো গালে।
" আপনি ঠিক আছেন? "
" হ্যাঁ চলো। "
আরহাম হৃদির হাত ধরে বের হয়।
বাইরে জং সুকের গার্ড রা মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
চারিদিকে আরহামের গার্ড রা।
সবাই আরহাম আর হৃদিকে মাথা নামিয়ে সম্মান করে।
হৃদি সামনে দেখে তার বাবা দাঁড়িয়ে।
হৃদি তার বাবাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে,
" বাবা।. "
" মারে। আমার কলিজার টুকরো মেয়ে। "
আজিজ রহমান মেয়ের কপালে চুমু খায়।
" আরহাম না থাকলে আজকে তোকে কোথায় পেতাম!"
হৃদি আরহামের দিকে তাকায়,
হাজারো বাঁধা বিপত্তি এই মানুষ টা শুধু মাত্র তার জন্য পার করতে পারে।
এটা তার #মহীপতি। হৃদি হাসে।
,
হয়েছিল টা কি,
আজিজ রহমান আরহমের গার্ড দের কল করে,।
আরহাম সুন্দর মত প্লান করে জং সুকের এই বাড়িতে প্রবেশ করে।
একে একে আরহাম নিজের হাতে জং সুকের সব গার্ড দের মেরে ফেলে।
নিজের হাতে এত গুলো গার্ড কে মেরেও তার ভেতরে শক্তি যেন একটুও কমে নি।
সে গিয়ে জং সুকের হাতে সুট করে।
তবে দ্বিতীয় বার সুট করে না,
" বাবা। "
আজিজ রহমান আরহামের এই রূপ দেখে কিছুটা ঘাবড়ে গেছেন। এমন সময় আরহামের ডাকে তিনি বাস্তবে ফেরেন,
" হ্যাঁ। "
" এই লোক টাকে এত সহজে মারব না৷ এর থেকে অনেক বোঝাপড়া বাকি আছে। আপনি প্লিজ ওকে পাঠিয়ে দিন। আমার মেনশনে।"
" ঠিক আছে। "
আরহাম এবার হৃদির রুমের দিকে চলে যায়।
আজিজ রহমান এত গুলো খুন দেখে অবাক ত হয়েছে তার সঙ্গে তার কি রকম অস্থির ও লাগছে।
,
,
,
বর্তমান।
আরহাম তার গার্ড দের দিয়ে ইরফান কে ছাড়িয়ে আনে,
ইরফান আরহামের পায়ের কাছে বসে,
" ধন্যবাদ স্যার। অনেক ধন্যবাদ। "
" ধন্যবাদের কিছু নেই। হৃদি আমাকে সব বলেছে। তুমি নিজের বাড়িতে যাও। "
" স্যার আমার মাকে কোথায় রেখেছে?"
হৃদি আরহামের দিকে তাকায়,
" আন্টি আমাকে অনেক সাহায্য করেছে,
ওনাকে জং সুক মেরে ফেলেছে। ওনার শেষ কাজ টুকু করার ব্যাবস্থা করুন। "
আরহাম, হৃদির দিকে তাকায়,
" ঠিক আছে। "
আরহাম লাস বাহি গাড়ি খবর দেয়।
যদিও এতক্ষণ অনেক দেরি হয়ে গেছে।
লাস টাকে জং সুক বেসমেন্টে এ রেখেছিল।
কিন্তু তার পরেও লাসের শেষ কাজ তারা করবে।
তাই তাকে ইরফানের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়।
আরহাম, হৃদি, আজিজ রহমান ও রওনা হয়।
,
,
,
,
আরহাম কে আবার ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়েছে।
মিসেস ইউন- সুহ ছেলে আর বউকে দেখে সমানে কান্না করছে।
হৃদি শ্বাশুড়ি কে জড়িয়ে ধরে,
" আম্মু প্লিজ এবার কান্না থামান। "
" কিভাবে থামাব৷ আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। "
" ঠিক আছে আম্মু দেখুন আমরাত ঠিক আছি। "
মিসেস খান হৃদিকে ছেড়ে দেয়,
" আমার মেয়েটা। আমার ছেলেটা। "
" ঠিক আছি আমরা৷ "
" আর এসব কাজের ভেতর যাবি না তোরা৷ "
" ঠিক আছে। আম্মু আপনাকে কিছু কথা বলার আছে। "
" বল মা। "
হৃদি সে দিন কামিনি বেগম ঠিক যা যা তাকে বলেছিল সব বলে দেয়,
সে দিন কামিনি বেগম হৃদিকে আগে সব টা বলে।
" বাবার দোষ এটা যে তিনি কামিনি আন্টির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু ইরফান আসলে জং সুকের ছেলে ছিল।
কামিনি আন্টি অনেক ভালো। আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। উনি না থাকলে হয়ত আমি মরে যেতাম৷ "
মিসেস খান এর মন টা ভীষণ নরম।
" তাহলে ইরফান কোথায় আছে?"
" ও ওর বাড়িতে আছে। "
" চলো দেখা করে আসি। "
" যাব। কিন্তু আরহাম কে জিজ্ঞেস করে যেতে হবে। "
" আমি আছি না চলো। "
মিসেস ইউন- সুহ হৃদিকে নিয়ে ইরফানের বাড়িতে চলে আসে।
হৃদি রাস্তায় আরহাম কে কল করে বলে দিয়েছিল।
এত দিন এত কাজ জমা হয়েছে আরহামের। সব কিছু শেষ করতে করতে আরহামের দম নেওয়ারও সময় নেই।
,
,
ইরফানের বাড়িতে ওরা পৌঁছে দেখে সেখানে আগে থেকেই কেউ উপস্থিত।
ইরফান তার মাকে তার বাড়ির এক কোণায় কবর দিয়েছে।
আর তার সামনে বসেই ইরফান প্রচন্ড কান্না করছে।
আর রোজি তাঁকে সামলাচ্ছে।
" ঠিক হয়ে যাবে সব৷ "
হৃদি চোখ ছোট ছোট করে তাকায়,
" মেয়েটা রোজি না মা? "
" হ্যাঁ। "
" চলো ত। "
হৃদি আর মিসেস ইউন - সুহ এগিয়ে যায়।
ইরফান হৃদিকে দেখে বলে,
" আরে আপনারা এখানে। ভেতরে আসুন৷ "
" না না সমস্যা নেই আমরা শুধু তোমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। "
ইরফান চোখ মুছে হৃদির দিকে তাকায়,
" ধন্যবাদ হৃদি। সে দিন তুমি আরহাম কে না বললে আরহাম কখনোই আমার মায়ের শেষ কাজ করত না। "
" ধন্যবাদ দেওয়ার কিছু নেই। উনি ভালো মানুষ ছিলেন। "
" সত্যি হৃদি তুমিও অমাইক মানুষ। ".
সেখানে ওরা কিছুক্ষণ সময় কাটায়।
এরপর বাড়িতে চলে আসে,
,
,
,
রাত ১০ টা,
বসে বসে আকাশের বড় চাঁদ টা দেখছে হৃদি।
কি মিষ্টি আলো দিচ্ছে।
এত দিন ধরে যা যা হয়েছে সব কেমন একটা দুঃস্বপ্নের মত।
হৃদি ভুলে যেতে চায় সে সব৷।
এমন সময় কেউ হৃদির পেট বরাবর নিজের শক্ত হাত রাখে,
হৃদি কেঁপে ওঠে,
আরহাম হৃদিকে ফিরিয়ে হৃদির ঠোঁট আকড়ে ধরে কোন ওয়ার্নিং ছাড়াই।
হৃদি আর কিছু বলেনা।
আরহামের ঘাড়ে নিজের দু হাত পেঁচিয়ে ধরে,
আরহাম হৃদিকে জড়িয়ে চুমু খাচ্ছে।
হৃদিও আরহাম কে কিস ব্যাক করছে।
আরহাম হৃদিকে বিছনার উপর ফেলে,
হৃদি চোখ খুলে তাকায়।
আরহামের পরনে থাকা ব্লেজার টা খুলে ফেলে আরহাম।
হৃদিও আর আরহাম কে বাঁধা দিতে চায় না।
সেও আরহামের সঙ্গে হারিয়ে যেতে চায়।
আরহাম হৃদির পরনে থাকা কালো সিল্ক নাইট ড্রেসের বুকের নিচে থাকা গিট টা খুলে ফেলে।
সিল্ক ড্রেস টা মূলত উপরের টপ টা এক রকম বেঁধে দেওয়া আর নিচের স্কার্ট টা এক রকম বেঁধে দেওয়া,
হৃদি চোখ বন্ধ করে নেয়।
কারণ উপরের গিট টা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তার উপরের শরীর টা উন্মুক্ত হয়ে যায়।
হৃদির নিশ্বাস ভারি হয়ে আসে,
আরহামের শক্ত হাত হৃদির বুকে বিচরণ করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।
হৃদির মুখ থেকে মধুর শব্দ বের হতে থাকে।
আরহাম হৃদির স্কার্টটাও খুলে ফেলে।
" আই লাভ উ জান। "
হৃদি হাসে,
" আই লাভ উ টু। "
,
,
আরহামের ভালোবাসা হৃদিকে নিরাপদ অনুভব করায়।
আরহামের বুক হৃদির কাছে সব থেকে শুখের জায়গা।
সারা দিনের ক্লান্তি আর কষ্ট আরহামের বুকে গিয়ে এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়।
হৃদির জন্য আরহাম আর আরহামের জন্য হৃদি।
দু'জনের আলাদা দুনিয়া ভালোবাসা আর ভালো থাকা।
,
,
ভোর রাতের দিকে,
হৃদি ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমিয়ে গেছে।
আরহাম হৃদিকে দেখছে,
তার মন ভরছে না।
এত মনে করেছে হৃদিকে এত দিন ধরে।
" ভালোবাসি জান।
ভীষণ ভালোবাসি। "
আরহাম হৃদিকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে যায়।
,
,
,
মিসেস ইউন -সুহ সকাল সকাল উঠে দেখে আসিফ খান বসে আছেন।
মনটা তার খারাপ।
" কি হয়েছে?"
" ডার্লিং আমি সরি। '
" সরি কেন?'
" তোমার প্রতি এত দিনের সব অন্যায়ের জন্য কি আমি ক্ষমা পেতে পারি না? আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি। "
" ক্ষমা করতে পারি সর্ত আছে। "
" সব মানতে রাজি। "
" ঠিক আছে তাহলে যাও কফি বানিয়ে নিয়ে এসো দু'জন খাই৷ "
" যাচ্ছি জান। "
আসিফ খান দ্রুত কিচেনে চলে যায়।
মিসেস খান হাসে।
,
,
,
,
৩ মাস পর,
আরহাম কাজ করছে অফিসে বসে।
এমন সময় সেখানে আরহামের স্টাফ আসে,
" স্যার কেউ আপনার সঙ্গে দেখা করতে চায়।!
" নাম কি?"
" ইরফান খান নাম৷ "
" পাঠিয়ে দেও৷ "
স্টাফ চলে যায়।
এরপর রুমে প্রবেশ করে ইরফান হাতে একটা কার্ড।
আরহাম ভ্রু কুচকে তাকায়,
" কি এটা?"
" ভাইয়া।
আগে জানতাম আমাদের মা আলাদা বাবা এক।
কিন্তু এখন সেই বাবাও এক নয়।
আমি আপনাকে কখনো সেই সম্মান দেয় নি যেটা আপনাকে দেওয়া প্রয়োজন ছিল। আমাকে ক্ষমা করে দিন।
তবে আমার জীবনের এই সুন্দর দিনে আমি চাই আপনি, ভাবি, বাবা আর আম্মু আসুক।"
" সুন্দর দিন!"
" আমি রোজি কে বিয়ে করছি৷ "
" রোজি কে?"
" হ্যা। "
আরহাম নিজের সিট থেকে উঠে ইরফান কে জড়িয়ে ধরে,
ইরফান অবাক হয়ে যায়।
তবে সে আরহাম কে হাগ ব্যাক করে,
" শুভ হোক পথ চলা। "
" ধন্যবাদ ভাইয়া৷ ".
" যাও আমরা চলে আসব৷ "
" ধন্যবাদ। "
ইরফান চলে যায়।
আরহাম হাসে।
সবাইকে ক্ষমা করে দিতে হয়৷
কারণ ক্ষমা মহৎ গুণ৷
শিখিয়েছে মিসেস পদ্মা হৃদি।
আরহাম হাসে। তার বউ এর থেকে তার শেখার কত কিছুই আছে।
,
,
চলবে
0 Comments:
Post a Comment