#হৃদয়হরণী
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব-১৭
- মাটিতে কাঁদা জলের উপর মোটা মোটা ফোঁটা ফোঁটা জল আকাশ থেকে গোল হয়ে পড়ে চারেদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে,,,আর সেই সাথে কালো কুচকুচে আকাশের ওই গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজ আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে আলোর ঝলকানি শুরু হয়েছে সেই সন্ধ্যে থেকে,,,প্রকৃতির এমন রূপ দেখে পেখমের মনে পড়ে যায় সেদিনের সেই রাতের কথা,,ভাবলেই শরীর শিহরিত হয়ে যাচ্ছে পেখমের,,, সে কখনোই ভুলতে পারবে না তাদের সেই ঘনিষ্ঠতার কথা,,,লজ্জায় নামিয়ে নেওয়া চোখে ভেসে ওঠে সেই মুহূর্ত গুলো,,,
_____________
-আবির চলে যেতে বলার পরেও পেখমের বেহায়া মন ওখান থেকে এক পা নাড়াতেই দেইনি,, ওই মাহেন্দ্রক্ষণে পেখমের কি হয়েছিল সে নিজেও জানত না,,চলে যেতে গিয়েও তার পা থেমে গিয়েছিল,,, বৃষ্টির দাপটে চারপাশে সব সাদা সাদা লাগছিল আর তারই মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল তার মন-পুরুষ,,,,,,মনটা তখনই বেহায়া হয়ে ছুটে গিয়েছিল তার কাছে,,,,পিছন থেকে জাপটে ধরে ছিল তাকে,,,
-আচমকা পেখমের স্পর্শ পেয়ে আবিরও পারিনি নিজেকে ধরে রাখতে,,,বুকের উপর থেকে পেখমের হাত দুটো সরিয়ে পিছনে ফিরলো সে,,,পেখম তখন মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে,,, তুমুল বর্ষণে পেখমের ভিজে চুল গুলো এলোমেলো হয়ে রয়েছে সারা মুখে,,,,শাড়িটাও এলোমেলো হয়ে লেপ্টে আছে ওই নরম শরীরে,,, আবির আচমকাই পেখমকে নিজের বুকে জাপটে জড়িয়ে ধরে,,,,প্রেমের এই প্রবল বর্ষণে দুজনেই ভিজে একাকার হয়ে যায়,,আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যায় ওদের হৃদস্পন্দন, যা তারা উভয়ই একে অপরের টা শুনতে ব্যস্ত ছিল তখন,,,,
-তারপর হঠাৎ পেখম যখন বুঝতে পারে সে কি করে ফেলেছে ঘোরের মধ্যে, তখনই লজ্জায় সরে চলে আসতে চাই আবিরের বুক থেকে,,,কিন্তু আবির তাকে বাঁধা দিয়ে শক্ত করে কোমড় ধরে রাখে। আবিরের হাতের শীতল স্পর্শে কেঁপে ওঠে পেখমের সারা শরীর,,, ওমনি ঘোষিত হয়ে যায় দুজন মানব-মানবীর শরীরের উত্তেজনার আভাস,,,আবির আস্তে করে পেখমের মুখে উপর পড়ে থাকা অবাধ্য চুল গুলো পরম যত্নে কানের লতিতে গুজে দেয় আর তারপরেই পেখমের চোখের দিকে তাকিয়ে গেয়ে ওঠে,,,,,
Yuhi Baras Baras Kaali Ghata Barse
Hum Yaar Bheeg Jaaye Is Chaahat Ki Baarish Mein
- আবিরের সাথে একসময় তাল মিলিয়ে পেখম গেয়ে ওঠে,,
-meri Khuyli Khuli Lato Ko Suljaaye
Tu Apni Ungliyon Se Main To Hoon Isi Khwaayish Mein
-তারপর আবার আবির গান ধরে,,,
Sardi Ki Raaton Mein Hum Soye Rahe Ek Chaadar Mein
Hum Dono Tanha Ho Na Koi Bhi Rahe Is Ghar Mein
Zara Zara Behekta Hain Mehekta Hain
Aaj To Mera Tan Badan
Main Pyaasi Hoon Mujhe Bhar Le Apni Baahon Mein
Aaja Re Aa Re
-তারপর দুজন দুজনের কপালে কপাল ঠেকিয়ে একে অপরকে অনুভব করেছিল সেদিন,, বৃষ্টির বেগ একটু কমলে আবির পেখমের কপালে অধরের উষ্ণ স্পর্শ দিয়ে আবার আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে,,, তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে মাদকতা কন্ঠে বলে ওঠে,,
-" সে কি জানে না তাকে এভাবে এলোমেলো অবস্থায় দেখে আমি যে বেসামাল হয়ে পড়ি বারবার,,,মন যে চাই কিছু অন্যায় কাজ করে ফেলি,হোক সে যতই নিষিদ্ধ,,, আজ যদি সে আমার অসহায়ের কথা জেনেও না আটকায় তাহলে আমি নিজেকে সামলে রাখতে পারবো না,,, হয়ে যাবে কোনো এক নিষিদ্ধ কাজ "।
-আবিরের কথা শ্রবণ হতেই পেখম নিজেকে সময় নিয়ে ধাতস্থ করে,,তারপর আস্তে আস্তে করে আবিরের বুক থেকে মাথা তুলে আবিরের চোখের দিকে তাকায়,, তাকিয়ে দেখে আবির তার দিকেই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,পেখম অতি সন্তপর্ণে আবিরের বাম গালে একটা উষ্ণ স্পর্শ দিয়ে মুখ নামিয়ে নেয় লজ্জায়। তারপর আবিরের বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ধীরে ধীরে ছাড়িয়ে টেরিস থেকে দৌড়ে চলে যায় নিজের ঘরে,,,,আবির তখনো লজ্জায় মাখামাখি সেই রমনীতেই আটকে আছে,,,আবার ঝুপ করে বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে গিয়ে ওকে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছিলো ভালোবাসার অনুভূতিতে।
____________
-মুহূর্তেই পেখমের চোখ ভরে ওঠে অভিমানের বারিধারায়,,,সেইদিনের ঘটনার পর থেকে আবিরের সাথে আর কথা হয়নি পেখমের,,, কথা হয়নি বললে ভুল হবে,,, আবিরের দেখাটাও পাইনি পেখম। বিয়ের আর এক সপ্তাহ বাকি,,,পেখমের মনে হঠাৎ হঠাৎ নানা প্রশ্ন জাগে, তবে কি মানুষটা তাকে ভালোবাসে না?? ভালোই যদি বাসবে তবে আসছে না কেন তার সামনে,,,এখন যেন ওর মনে হয় আবির দা ওর ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে,,,, নিজেকে মাঝে মধ্যেই পাগল পাগল লাগে। ও তো ভেবেছিল আবিরদার রাগ কমে গেলে ঠিক এই বাড়িতে আসবে আর দাদুনের সাথে কথা বলে সব ঠিক করে নেবে,,,,কিন্তু কোথায় সেই মানুষটা? তবে কি আমার বিয়ে হয়ে যাওয়াতে তার কোনো যাই আসে না??
-বিষাদ বিষাদ বিষাদ,চারপাশ শুধু বিষাদে ছেয়ে গেছে পেখমের মনে হচ্ছে,,, নিজেকে খুব একা লাগছে,,,এই যে ও এই এক সপ্তাহের প্রায় বেশিরভাগ সময় ব্যালকনিতে বসে থাকে শুধুমাত্র আবিরের জন্যে সেটা কি ওই মানুষটা বোঝে না?? আমি যে কষ্ট পাচ্ছি,,, আমার যে মরে যেতে ইচ্ছা করছে সেই খবর কি সে রাখে?? এমন হৃদয়হীন মানুষকে কেন ভালোবাসলাম ভগবান? কথা গুলো নিজের মনে বলে কেঁদে ওঠে পেখম,,,,আজ রাতটাও ও নির্ঘুম কাটাবে,,,,তবুও এই ব্যালকনিতে থাকবে ,,,,,
__________________________________________
-পেখু তুই এখানে ঘুমিয়েছিস কেন?? ঠান্ডা লেগে যাবে তো,,,চোখ মুখের কি অবস্থা করেছিস?? পেখু ওঠ,,(বৌমনি)
-পেখম আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখে তীয়া ওর সামনে বসে,,,,
-কি রে বল,,এখানে শুয়ে ছিলি কেন কথাটা বলতে বলতে সামনে তাকিয়ে দেখে ওর দাদাভাই রকিং চেয়ারে বসে কানে হেডফোন লাগিয়ে ল্যাপটপে কি সব কাজ করছে,,,, ও সেদিক থেকে নজর সরিয়ে পেখমের দিকে তাকায়,,,
-বৌমনি আসলে বৃষ্টি দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানি না,,, ঠিক আছে তুমি যাও আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি,,,
-তীয়া চলে যাওয়ার পর পেখম একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়,,তারপর নিজের মনে বলে ওঠে "আমি তো ভেবেছিলাম এই বুঝি আপনি এলেন আর আমাকে ধমক দিয়ে বলবেন- পাখি তুই এখানে কেন ঘুমিয়েছিস,,, যা ঘরে যা,,,নাহলে ঠান্ডা লেগে যাবে,,, তখন আবার মাথা ব্যথা করবে" কোথায় আপনি তো এলেন না,,,,,কেন আসছেন না আমার সামনে,,, কথা গুলো বলে বেশ জোড়েই কেঁদে ওঠে পেখম,,, বেশ কিছুক্ষণ কান্না করার পর শোয়া থেকে ওঠে ফ্রেশ হওয়ার জন্যে,, আর ঠিক তখনই আবিরকে দেখে ল্যাপটপে কাজ করতে,,,আবিরকে দেখে আবার অভিমানী চোখে অশ্রুরা এসে জমা হতে থাকলো পেখমের। অশ্রুসিক্ত নয়নে একবার আবিরকে দেখে ব্যালকনি থেকে দৌড়ে চলে যায় ঘরে,,,,,না ওর সত্যিই মরে যেতে ইচ্ছা করছে,,,,,,আবিরের এই অবহেলা সহ্য করতে পারছে না,,,
________________________________________
-পেখম ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে দেখলো যে ডাইনিং টেবিলে ঋষি বসে আছে,,, ও ওইদিকে না তাকিয়ে সোজা রান্নাঘরে গেল,,,
-মা খিদে পেয়েছে,, কিছু খেতে দাও,,,
-হ্যাঁ দিচ্ছি যা বস টেবিলে,,, আর শোন খেয়ে রেডি হয়ে নিবি ঋষি এসেছে তোকে নিয়ে শপিং মলে যাবে তাই,,,
-মা আমি যেতে পারবো না,,,
-পেখম মাথা গরম করাবি না আমার,,, যা বলছি তাই কর,,,ভুলে যাস না দাদুন আছে এই বাড়িতে,,,
-মায়ের কথায় পেখম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে টেবিলের দিকে যায়,,,
___________________________________________
- নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে শপিং করতে গেল পেখম,, যেখানে বিয়েটাই হয়ে যাচ্ছে সেখানে ওর আর কি করার আছে,,শপিং মলে গিয়ে ঋষি আর পেখমের মধ্যে তেমন কথা হয়নি প্রয়োজন ছাড়া,,,ঋষি মনে মনে ভাবে পেখম হয়তো লজ্জা পাচ্ছে তার সামনে,,
-পেখম দেখো এই শাড়িটা,, এটা তোমাকে খুব মানাবে,,,
-পেখম দেখলো ঋষি কালো কালারের একটা মসলিন শাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,
-আমাদের বিয়ের পর প্রথম যেদিন ঘুরতে যাবো, তখন তুমি এটা পড়ো,,,
- ঋষির মুখে এই কথা গুলো শুনে পেখমের খুব করে বলতে ইচ্ছা হলো" এই কালারের কোনো শাড়ি পড়ে আপনার সামনে কেন কারোর সামনেই আমি যাবো না,,, এই রঙের শাড়িতে আমাকে দেখার অধিকার তার শুধুমাত্রই তার,,,,,,কিন্তু বলা হলো না কথাটা,,একটু হেসে সম্মতি দিয়ে দিলো,,,পৃথিবীতে এমন অনেক কাজ করতে হয় যা নিজেদের অপছন্দ,,, ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও করতে হয় ,হয়তো পরিবারের জন্য,,,,ঠিক তেমনই এখন শপিং এরপর রেস্টুরেন্টে খাওয়া সব ইচ্ছার বিরুদ্ধে করতে হবে পেখমকে,,,
-রেস্টুরেন্টের ভিতরে চুপচাপ বসে আছে ঋষি আর পেখম,,,ঋষি ওকে খাবার অর্ডার করতে বললে ও শুধু স্যুপ অর্ডার করে,,,
-শুধু স্যুপে হবে পেখম??
-হ্যাঁ , আমি বাইরের খাবার তেমন খায় না ,,,
-ও ঠিক আছে,,,ঋষি ওয়েটার কে দুটো স্যুপ আর পেখমের জন্যে একটা আইসক্রিম,,নিজের জন্য একটা জুস অর্ডার করলো,,,
-খাওয়ার সময় টুকটাক কথা বলার মাঝেই ঋষি পেখমকে বলে" মিস পেখম"
-পেখম স্যুপ খাচ্ছিল ঋষির ডাকে ওর দিকে তাকায়,,
-একবার ডাক্তার বলে ডাকোতো আমাকে,,,তোমার মুখে ডাক্তার ডাক টা বেশ ভালোই মানায়,,,
-সেটা না হয় সময় হলেই শুনিস,,,,তার জন্য একটু অপেক্ষা কর ব্রো,,,,
-হঠাৎ সেই চিরচেনা গম্ভীর কন্ঠস্বর শুনে পেখমের হৃদয় কেঁপে ওঠে,,, মস্তিষ্ক জানান দেয় সেই মানুষ টা তোর ঠিক পিছনে পেখম,,, পেখমের ধারণা কে সত্য করেই ঋষি বলে ওঠে"আবির তুই এখানে?? মানে কখন এলি"??
-আবির ওদের টেবিলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পেখমের দিকে একবার আঁড়চোখে তাকিয়ে ঋষিকে বলে"এই তো ঘন্টা খানেক হচ্ছে,,, তারপর বল তোরা এখানে,, একসাথে সময় কাটানোর জন্যে এসেছিস??
- তা ঠিক নয় আমরা একটু শপিং করতে গিয়েছিলাম,, দেরি হয়ে গেল তাই একেবারে lunch করে নিচ্ছি,,তুইও আমাদের সাথে জয়েন কর,,
- সরি বন্ধু এখন আমার সময় হবে না,,, এখানে মিটিং ছিল তাই এসেছিলাম,,, এখন আবার অফিস যেতে হবে,,, তোরা কন্টিনিউ কর,,বাই( বলেই আবির চোখে সানগ্লাস পড়ে বেরিয়ে আসে)
- পেখমের খুব কষ্ট হচ্ছে,, যেই মানুষ টা ওকে ভালোবাসে,,আজ সেই মানুষটা তাকে এত অবহেলা করছে,,,,একটা বারের জন্যেও তাকায়নি ওর দিকে আবির,,,এই ভেবে গলা দিয়ে আর খাবার নামছে না পেখমের,,, ও কোনো মতে নিজেকে সামলে নিয়ে ঋষিকে বলে তাড়াতাড়ি বাড়ি দিয়ে আসতে,,,
__________________________________________
-আজ সারাটা দিন পেখম নিজেকে ঘর বন্দি করে রেখেছিল,,, দেবেন্দ্র আর পুলক বাড়ি না থাকায় মনোরমা বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল,,, সন্ধ্যের পরে গিয়ে অনেক ডেকে তাই ঘর থেকে বের করেছে তীয়া পেখমকে।
-কি হয়েছে তোর?? আর মাত্র এক সপ্তাহ পর তোর বিয়ে,,, তুই যদি বিয়েতে রাজি না থাকিস তাহলে বল এখনো সময় আছে পেখু,,,(তীয়া)
-বৌমনির কথায় পেখম মুখ তুলে তাকায়,,, তার পর খুবই শান্ত কন্ঠে বলে"আমার কিছু হয়নি, চিন্তা করো না,,বৌমনি দাদুন কোথাও গো"??
-দাদুন তো তার ঘরেই আছে,,,
-ঠিক আছে,,(বলেই পেখম চলে যায় ওর দাদুনের ঘরে,,,নরেন্দ্র বাবু তখন গোয়েন্দার বই পড়ছে,,,আর বিমলা দেবী পান সাজছেন,,,)
-দাদুন আসবো??
-আরো এসো দিদিভাই,,,(বই থেকে মুখ তুলে) আজকাল তো এই বুড়োটার খোঁজ খবর নিচ্ছোনা,,,তা কিছু দরকার দিদিভাই??
-তেমন কিছু না দাদুন বলেই নরেন্দ্র বাবুর পায়ের কাছে গিয়ে বসলো পেখম,,,
-কি হয়েছে দিদিভাই বলো আমাকে,,,,(মাথায় হাত রেখে পরম স্নেহে জিজ্ঞাসা করলেন নরেন্দ্র বাবু)
-দাদুন এই বিয়েটা কি খুব জরুরি?? মানে আমি তো এখনো ছোট,,,
-তার আগে তুমি আমার কটা প্রশ্নের উত্তর দাও দিদিভাই,,, তুমি কি পড়াশোনার জন্য এমন বলছো,,,পেখম মাথা নেড়ে সম্মতি দেয়,,,,তখন ওর দাদুন বলে"তাহলে তো আমি বলবো তোমাকে এই নিয়ে চিন্তা করতে হবে না,,, পড়াশোনা তোমার যতদূর ইচ্ছা ততদূর করতে পারবে"। আচ্ছা ঋষি কি ছেলে হিসেবে খারাপ দিদিভাই?? তখন পেখম বলে" না দাদুন,,,।
-তাহলে তোমার বিয়ে করতে আপত্তি কোথাও?? ঋষি একজন প্রতিষ্টিত ডাক্তার,,, তার পরিবার ভালো,,, বিয়ের পরেও তোমাকে পড়াবে। আমরা প্রত্যেকটা মানুষ তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি দিদিভাই,, আর আমি আশা করছি তারাও তোমাকে এইভাবে আপন করে নেবে,,,তাহলে সমস্যা কোথায়??
- সমস্যা নেই দাদুন,, শুধু তোমাদেরকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হবে (বলেই হু হু করে কেঁদে ফেলল)
-বিমলা দেবী এসে পেখমকে জড়িয়ে ধরলেন,, তারপর বললেন" কাঁদে না দিদিভাই,,, বিয়ের পর তখন আমাদের থেকে তারাই বেশি আপন হয়ে উঠবে,,,
-নরেন্দ্র বাবু বলেন" আমি তোমার বিয়ে এত তাড়াতাড়ি দিতাম না,,, কিন্তু তুমি তো নিজেই দেখতে পারছো আমার শরীরের অবস্থা এখন কেমন,,,আজ আছি কাল নাও থাকতে পারি,,,তাই আমার শেষ ইচ্ছা ছিল তোমার বিয়ে দেখে যাওয়া,, তুমি কি আমার শেষ ইচ্ছে রাখবে না দিদিভাই??আর সব থেকে বড়ো কথা হলো আমি ওদের কথা দিয়েছি দিদিভাই এখন যদি এই বিয়ে আমি ভেঙ্গে দি,,তাহলে আমার কথার দাম থাকলো কোথায়?? তাহলে যে আমি মরেও শান্তি পাবো না,,,,
-দাদুনের কথা শুনে পেখম দাদুন কে জড়িয়ে ধরে জোড়ে কান্না করে দেয়,,,,তারপর বলে " না দাদুন তুমি প্লিজ এইভাবে বলো না,,, আর এই সব শেষ ইচ্ছা টিচ্ছা কি,,,আমি তোমার সব ইচ্ছায় পূরণ করবো,,,তবুও তুমি মরে যাওয়ার কথা বোলো না,,,,
-তোমার কি কাউকে পছন্দ দিদিভাই??
-কথাটা শুনে পেখমের বুকটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে,, তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে, চোখের জল মুছে বলল"না দাদু আমার কোনো পছন্দ নেই ,তোমাদের পছন্দই আমার পছন্দ।
চলবে,,,,,,,
0 Comments:
Post a Comment