#হৃদয়হরণী
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ২১
- সকাল বেলা থেকেই সবার কাজের চাপ বেড়েছে,,একটু পরেই পেখমকে নিয়ে চলে যাবে আবির,,,মনোরমা মেয়ে- জামাইকে আশীর্বাদ করার জন্য সব ব্যবস্থা ড্রয়িংরুমে করতে বলেছে তীয়াকে।
আবিরের কথায় ডাক্তার সকালে এসে আর একবার চেকআপ করে গেছে পেখমকে,,,পেখম এখনো ট্রমা থেকে বেরোতে পারিনি,,,, থেকে থেকে কেঁদেই চলেছে,,, হাতে ,ঘাড়ের এবং ঠোঁটের কোনে দাগ গুলো যতবার দেখছে ততবারই ডুকরে কেঁদে উঠছে,,,আর এরমধ্যে এই বিয়ে,লোকজন সব কিছুই যেন ওর কাছে বিরক্ত লাগছে,,,ডাক্তার যাওয়ার সময় বার বার করে বলেছেন যে ওর সাথে যেন সবাই স্বাভাবিক ব্যবহার করে,তাহলেই ও এই ট্রমা থেকে সহজ ভাবেই বেরোতে পারবে,,,
- বিদায় পর্ব এই জিনিস টা আবিরের একেবারেই অপছন্দ,,,, আশীর্বাদ পর্ব মিটে যাওয়ার পর ড্রয়িংরুমে কান্নার রোল পড়ে গেছে,,,এই রকম পরিবেশে আবির আর এক মুহূর্ত থাকতে চাই না পেখমকে নিয়ে,,, যেখানে কাল এত বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে পেখমের সাথে তার উপরে আজকে আবার এই কান্না কাটি,,আবির সবাইকে বোঝাতে অক্ষম যে এতে পাখির মানসিক চাপ পড়বে,,,কিন্তু কে শোনে কার কথা,,,সবার আগে তো পেখমই কেঁদে কেটে একাকার করে ফেলছে,,,ওর কান্না দেখে সবাই মনে মনে ভাবতেই পারে এই মেয়েকে নির্ঘাত জোড় করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে,,, এ মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে যেতে চাই না,,, অথচ কথাটা সম্পূর্ণ ভুল,,,, যাইহোক বিদায় পর্ব শেষ হলে ওরা রওনা দেয় ও বাড়িতে যাওয়ার জন্য,,, কিন্তু তার আগে পুলক আবিরকে এক প্রকার শাসিয়েছে,,,
- শোন তোর জন্য আমার বোন অনেক চোখের জল ফেলেছে,, মানছি তখন পরিস্থিতি অন্যরকম ছিল,,, কিন্তু এরপরে যদি আমি দেখেছি বা শুনেছি তোর জন্যেই আমার বোন আবার কেঁদেছে তো ভেবে নিস তোর আর আমার বন্ধুত্বের সম্পর্ক ওখানেই শেষ,,, আর আমি জানি আমার বন্ধু সেটা কখনোই হতে দেবে না। আর আমি এটাও জানি এই পৃথিবীতে পাখিকে কেবল তুই ভালো রাখতে পারবি,,,
-তুই যেই ভাবে থ্রেট করলি এখন আর আমার সত্যিই সাহস নেয় ওকে কাঁদানোর,,,( কথা গুলো বলেই একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো,,,কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে পুলক বললো,,)
- পেখুকে সত্যিটা বলে দিস,,,বেচারি তোকে ভুল বুঝে রাগ করে আছে,,,
- ওর রাগ আমি ভেঙে দেবো চিন্তা করিস না,,,কিন্তু আমি চাই না কাকুমনিকে ও ভুল বুঝুক,,,আর শোন কিছু কিছু কথা মেয়েদের কে বলতে নেই,,,ওরা এমনিতেই মাথা মোটা হয়,,,( বলেই হাসতে হাসতে দুজনে বাইরের দিকে গেল কারণ সবাই অপেক্ষা করছে)
__________________________________________
- অনুপমা ছেলে বৌমাকে বরণ করে ঘরে তুললেন,,, তারপর বিভিন্ন নিয়ম কানন পালন করে সোফায় বসালেন আবির ও পেখমকে,,, পেখমের অবস্থা ভীষণ খারাপ,,, মাথা যন্ত্রণা করছে,,, খিদেও পেয়েছে,,, সকাল বেলায় ও কিছু খাইনি তারপর আশীর্বাদ এর সময় মিষ্টি খেয়ে গা গুলিয়ে এসেছিল,,, তারপর কান্নাকাটি,,, এখন একটু ফ্রেশ হতে পারলে ভালো লাগতো এইসব কথা মনে মনে চিন্তা করছিল,,,এমন সময় আবির ওর মাকে বলে,,
- মা পাখিকে আমার ঘরে নিয়ে যাও,,ওর শরীরটা এমনিতেই খারাপ,, একটু ফ্রেশ হয়ে ঘুমালে ভালো লাগবে,,,
- হ্যাঁ দাঁড়া,,, রেখা পাখিকে একটু আবিরের ঘরে নিয়ে যা,,,,কুশল বাবা পাখির ল্যাগেজ টা একটু আবিরের ঘরে রেখে এসো না,,,,রুশা আর প্রিয়া তোরা যাতো পাখির সাথে,,,,পাখি যা মা একটু ফ্রেশ হয়ে আয়,,,আমি একটু পরে উপরে যাচ্ছি,,(পাখিরা চলে যাওয়ার পর),,আবির একটু নীচে যা তো তোর মাসিরা মনে হয় চলে এসেছে,,,আমি কোন দিকে যায়,,, সব লোকজন আজকের মধ্যেই চলে আসবে,,,তোর বাবা ডেকটরের লোকজনের সাথে কথা বলছে,,ওখানে তোকে যেতে বলেছে,,,
- ঠিক আছে মা তুমি চিন্তা করো না আমি যাচ্ছি,,, আর হ্যাঁ পুলক আর তীয়া একটু পরেই আসছে,,,কাকিমনি নাকি এখনো কান্নাকাটি করছে তাই দেরি হবে ওদের,,,
___________________________________________
- পেখম ওয়াশরুম থেকে বেরোনোর পর রুশা আর প্রিয়া দুজনে মিলে ওকে লাল রঙের একটা শাড়ি পড়িয়ে দেয়,,,,
- পেখু একটা কথা বলি,,,প্লিজ তুই আর মন খারাপ করিস না,,, দেখ যা হয়েছে সেটা কিন্তু ভালোর জন্যই হয়েছে,,,(রুশা)
- আর দেখ যাকে তুই ভালোবাসিস ,আজকে কিন্তু সেই তোর বর,,,কালো অধ্যায়টা ভুলে যা,,,আবিরদা তোকে সত্যিই ভালোবাসে,,,,(প্রিয়া)
- হমম ভালোবাসে,,,উনি আমাকে খুব ভালো বাসে,,,তোরা চিন্তা করিস না,,এখন যা ফ্রেশ হয়ে নে,,,বলছি তোরা কিন্তু এখানেই থাকবি,,,
- সে আর বলতে,,,আবিরদা আমাদের বারবার করে বলেছে আমরা যেন এখানে থাকি,,,বৌমনির পাশের ঘরেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে,,, আচ্ছা আমরা ফ্রেশ হয়ে আসছি,,,( রুশা প্রিয়া চলে যায়)
__________________________________________
- পেখম মাথা থেকে টাওয়াল টা খুলে সেটা ব্যালকনিতে গিয়ে মেলে দিয়ে আসে,,,তারপর ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে ভিজে চুল গুলো আঁচড়িয়ে সিঁথিতে সিঁদুর পড়ে,,,কপালে একটা লাল টিপ পড়ে,,,নিজেকে আয়নার সামনে সময় নিয়ে দেখে তারপর ঘাড়ের দিকে চোখ পড়তেই সেই রাতের মুহুর্ত গুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে,, ওমনি অশ্রুরা ভির করে চোখে এসে,,, এমন সময় দরজা খোলার আওয়াজে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে আবির ঘরে ঢুকছে,, পেখম কিছু না বলে ব্যালকনির দিকে চলে যায়,,,,
-ঘরে ঢুকেই পেখমের চোখে জল দেখে আবিরের বুক ঢক করে ওঠে,,কিন্তু কিছু বলার আগেই পেখম সেখান থেকে চলে যায়,,, আবিরের মন খারাপ হয়ে যায়,,, কিন্তু পরক্ষণেই সেই চিরপরিচিত প্রেয়সীর শরীরের ঘ্রাণ নাকে যেতেই মন ভালো হয়ে যায়,,, এবার ওর কি হবে,,,এই ঘ্রাণে যে মাদকতা আছে তাতে ও ঘুমাতে পারবে না সারারাত,,, এবার না জানি কত রাত ওর নির্ঘু্মে কাটাতে হবে,,,, এইসব কথা গুলো ভেবেই আনমনে হেসে ওঠে আবির,,
-তারপর ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের ঘড়ি খুলে রাখতে গিয়ে দেখে তার উপরে পাখির জিনিস ভর্তি,,, ও তো এতদিন এই দিনটার স্বপ্ন দেখেছে,,,যেখানে পাখি থাকবে ওর চোখের সামনে সবসময়,,, এই ঘরটা তখন আর সে নিজের বলবে না,,, বলবে এটা আমাদের ঘর,,ভালোবাসার ঘর,,,যেখানে থাকবে তার শরীরের সেই মিষ্টি ঘ্রাণ,,, সারা ঘরময় সে বয়ে বেড়াবে চুড়ি আর নুপূরের শব্দ নিয়ে,,,খিলখিল করে হেসে উঠবে মাঝেমধ্যে সে,,,,কষ্ট হলে বুকে এসে ঝাপিয়ে পড়বে সে,,কেঁদেকেটে শার্ট ভিজিয়ে ফেলবে সে,,,আদর করলে লজ্জায় মুখ লুকাবে সে এই বুকটাতে,,,রাতের বেলায় ঠিক বাচ্চাদের মতো করেই ওর বুকে মাথা রেখে পরম আবেশে ঘুমাবে সে,,কথাগুলো ভাবতেই আবার হেসে উঠল আবির,,,তারপর একটা গেঞ্জি আর টাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে গেল,,,।
__________________________________________
-সত্যিটা যদি তোদেরকে বলতে পারতাম তাহলে হয়তো নিজেকে হালকা লাগতো,,কিন্তু আমি চাইনা সেই মানুষটাকে কেউ ঘৃণার চোখে দেখুক,,,আমি নিজেও তো তাকে ঘৃণা করার কত চেষ্টা করেছি কিন্তু দিনশেষে আমি ব্যর্থ হয়েছি,,,একবার না বারংবার আমি ব্যর্থ হয়েছি,,,হয়তো ঘৃণার কারণ গুলো থেকে আমার ভালোবাসার গভীরতা টা বেশি তাই,,
প্রিয়া ,রুশা তোদেরকে আমি কি করে বলবো যে,সে আমাকে ভালোবাসে না,,আমি তার কাছে মোহ ছিলাম,,শুধুমাত্র আকর্ষণের বস্তু ছিলাম,,সে কি করে ওইদিন বলতে পারলো এই কথা গুলো??,,আমি আগে কেন বুঝলাম না?? ঐদিন রিক আমাকে স্পর্শ করেছে বিশ্বাস কর তারজন্য আমার শরীর এখনো ঘিনঘিন করছে,,মরে যেতে ইচ্ছে করছে,, কারণ ঐ স্পর্শে ভালোবাসা ছিল না, ছিল শুধু লালসা,,,,কিন্তু আবির দা তো আমাকে কোনোদিন ভালোবাসেনি,,,তার কাছে তো আমি ছিলাম মোহ,,,কিন্তু তার স্পর্শে আমার কোনো দিন গা ঘিনঘিন করেনি,,খারাপ লাগেনি,,বরং ভালো লেগেছিল,,, হৃদয়ে ভালোবাসার অনুভূতি এনেছিল,,,কিন্তু এই গুলো যে তার একটা নিঁখুত অভিনয় সেটা আমি বুঝিনি,,, কেন বুঝিনি আমি ভগবান?? কেন?? কেন??কেন??( কথা গুলো নিজের মনকে বলছে আর কাঁদছে হঠাৎ পিছন থেকে অনুপমার গলার আওয়াজ পেয়ে চোখের জল মুছে নেয়)
- পেখম এখানে কি করছিস?? আমি না তোকে রেস্ট করতে বলেছিলাম,,, চল আমার সাথে,,(তারপর ঘরে ঢুকে পেখমকে বিছানায় বসিয়ে দেয় অনুপমা,,,) হঠাৎ পেখমের গলায় একটা সোনার চেন ও দু হাতে দুটো বালা পড়িয়ে দেয় আনুপমা,,,,তারপর পেখমের দিকে তাকিয়ে দেখে ও প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে,,,, তখন অনুপমা হেসে বলে উঠলেন,,
- এই সোনার চেনটা আমার শাশুড়ি মা আমাকে পড়িয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন,, আর বলেছিলেন যে,,তোমার যদি ছেলে হয় তার বৌকে এটা দিয়ে আশীর্বাদ করো,,মা দেখো আজকে আপনার চেনটা আপনার নাতবৌমা পড়েছে( চোখের জল মুছে আবার বলে) আর এই বালা দুটো আবির একদিন আমার হাতে দিয়ে বলে " মা আমার প্রথম প্রজেক্ট টা সফল হয়েছে,, আর তা শুধুমাত্র তোমার হবু বৌমার জন্যে এই নাও আমার তরফ থেকে তার জন্য এই উপহার,,, যখন আমার বৌকে দেখবে পড়িয়ে দিও তার হাতে,,,আর দেখ তোর হাতে কি সুন্দর হয়ে গেল,,,
-পেখম হতভম্ব হয়ে গেছে অনুপমার কথা শুনে,,,ও জানে আবিরদা ওর হাতের মাপ জানে,,তা বলে যে ওকে বৌ বানাবে,,মানে বালা করে এনেছে,,, এইসব কথা ওর বোধগম্য হচ্ছে না,,, যে মানুষ টা ওকে ভালোবাসে না,,, বিয়ে করতে চাইনা আবার সেই মানুষটাই ওর হাতের মাপে বালা করে এনেছে,,,,
- কি রে ওই ভাবে মার দিকে চেয়ে আছিস কেন??( তীয়ার কথায় পেখমের ঘোর ভাঙে,, ও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,,) কাকিমনি তুমি কি আমাকে সত্যিই বৌমা বলে মেনে নিয়েছো??
- কেন মানবো না পেখম??( অনুপমা)
- না কাল কে যা,,হ,,( পেখমের কথা সম্পূর্ণ করতে না দিয়ে অনুপমা বলে ওঠে,,)
- আমি জানি আমার পেখম মা পবিত্র,, কে কি বললো তাতে আমার যাই আসে না পেখম,,,,গঙ্গা যেমন পবিত্র তাতে তুমি যতই নোংরা আবর্জনা ফেলো না কেন ,গঙ্গা কি কখনো অপবিত্র হয়?? ঠিক তেমনই তুইও পবিত্র,,, কেউ তোকে কলঙ্কিত করতে চাইলে তা কোনোদিন পারবে না,,,আর তাছাড়া আবির যেখানে তোকে নিজের স্ত্রীর স্বীকৃতি দিয়েছে সেখানে আমি কেন আপত্তি করবো পেখম,,
-কাকিমনি বলে পেখম অনুপমাকে জড়িয়ে ধরে আবার কেঁদে ফেললো,,,তখন অনুপমা ওর চোখের জল মুছিয়ে বললো উমম হু কাকিমনি না বল মামনি,,,তুই তো জানিস আমার খুব ইচ্ছা ছিল যে আমার বৌমা আমাকে মামনি বলে ডাকবে,,,বল মামনি,,,, পেখম তারপর মামনি বলে আবার জড়িয়ে ধরলো,,
- বলছি যে আমি যে একটা মানুষ,,,সেই কখন থেকে ভাতের প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি,,তা মা আর বৌমার নজরেই পড়লাম না,,হায়রে দুঃখ,,,(তীয়া)
- দেখতে পারছিস না আমরা এখন ব্যস্ত,,,( অনুপমা)
- হ্যাঁ সেটাই,,, বৌমাকে পেয়ে এখন নিজের মেয়েকে তো ভুলে যাবে,,,(তীয়া)
- ইশশ বৌমনি তুমি ভীষণ হিংসুটে,,,(পেখম)
- হ্যাঁ সেটাই তো,,, অনেক হয়েছে কান্না কাটি,,, এবার খেতে হবে,,,প্রিয়া আর রুশা ডাইনিং রুমে সবার সাথে খেতে বসেছে,,,,by the way দাভাই কোথায়??(তীয়া)
- এই তো আমি এখানে,,,( এতক্ষন আবির ওদের কথা শুনছিলো ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে)
- ও তুই যা খেয়ে নে,,পুলক অপেক্ষা করছে তোর জন্য,,,( তীয়া)
- ঠিক আছে যাচ্ছি,,,মা ক্যাবিনেটের মধ্যে পাখির সব ওষুধ আছে,,,ওর খাওয়া শেষ হলে ওষুধ গুলো খাইয়ে দিও,,,তারপর যেন লম্বা একটা ঘুম দেয় নাহলে আবার মাথা ব্যথা করবে ( বলেই আবির চলে যায়)
- আমার ছেলেটা কিন্তু তোকে খুব ভালোবাসে পেখম,,, ওর পাশে সব সময় থাকিস,,,,আমরা যখন থাকবো না আমার ছেলেটাকে তখন আগলে রাখিস,, ও একটু চাপা স্বভাবের কিন্তু ওর মনের কথা তোকেই বুঝে নিতে হবে,,,(অনুপমা)
- অনুপমার কথার পরিপ্রেক্ষিতে পেখম শুধু ম্লান হাসে,,,
_________________________________________
-সন্ধ্যেবেলায় আবিরের ঘরে পেখমকে নিয়ে আড্ডার আসর বসিয়েছে সবাই,,, পেখমের সব বন্ধুদের আবির ফোন করে আসতে বলেছে,,যাতে পেখমের মনটা ভালো থাকে।
- আমাদের আবির কিন্তু খুব লাকি যে তীয়া,যে ও পেখমের মতো একটা মিষ্টি মেয়েকে লাইফ পার্টনার হিসেবে পেয়েছে(খুশি)
- হ্যাঁ আপু,,আমাদের পেখু খুব ভালো,,(তীয়া)
- by the way পেখম আবির দা কোথায়??( দিপু)
- ও একটু ক্যাটারারের সাথে কথা বলছে কালকের অনুষ্ঠানের বিষয় নিয়ে আর এই ঘরে এমনিতেই আজকে আসতে পারবে না কারণ আজ ওদের কালরাত্রি,,, হ্যাঁ কালকে থেকে পার্মানেন্টলি এই ঘরে আসতে পারবে(কুশল)
- তুই চুপ কর হা** যত সব উটকো কথা,,আগে ও আমাদের টাকা দেবে তারপর এই ঘরে প্রবেশ করবে ,,আরে আরে সবাই একটু সাহায্য করো,,,এতটা খাবার আমি একা নিয়ে আসতে পারি,,( মৈনাক)
- আরে মৈনাক দা কখন এলেন?? দিন আমাকে দিন খাবারের ট্রে টা (তীয়া)
- এই তো একটু আগে,,আবির ফোন করলো তারপর টিকিট কাটলাম then নেক্সট ফ্লাইটে মুম্বাই টু কলকাতায় চলে আসলাম,,, পেখম বৌদিমনি কেমন আছেন??(মৈনাক)
- ভালো আপনি কেমন আছেন ??( পেখম)
- আমি always ভালো,,, কি বলেন মিস রুশা,(চোখ মেরে মৈনাক বলে)
- অনেক কথা হয়েছে,,এবার সবাই খেয়ে নাও,,,কফিও চলে এসেছে,,(প্রিয়া)
- যে যার মতো খাচ্ছে আর গল্প করছে,,পেখম কফিতে চুমুক দিয়ে যেই বেগুনি নিতে যাবে অমনি তীয়া বলে "এই গুলো একটাও তোর জন্যে না পেখু,,, ভুলে কেন যাস বেগুনে তোর এলার্জি,,, দাদাভাই বারণ করেছে দিতে,,,
- পেখম কথাটা শুনে ছোট করে বলে"ওও আমার খেয়াল ছিল না বৌমনি"।
- তা বলে কি আমার বৌমা না খেয়ে থাকবে,,,(পিছন থেকে খাবারের প্লেট হাতে নিয়ে প্রবেশ করলেন অনুপমা )এই নে পেখম তোর পছন্দের পটেটো ন্যাগেট্স,,আবির অর্ডার দিয়ে আনিয়েছে,,আমি যাই আমার অনেক কাজ আছে,,,( বলেই অনুপমা চলে গেল)
- সত্যিটা রে পেখু আবির দা তোর ছোট খাটো দিকে খুব নজর দেয়,,এইতো বিকেলে আমাদের সবাইকে ফোন করে বললো আসতে এই বাড়িতে যাতে তোর মনটা ভালো থাকে,,(আকাশ)
- ভাগ্য করে এমন একটা বর পাইছো ম্যাইয়া,,, মাথায় করে রাখবা,,বুঝলা (চোখ টিপ দিয়ে অর্নব বলে,,আর সাথে সাথে হাসির রোল পড়ে যায় সারা ঘরময় জুড়ে)
- পেখম সত্যিই বুঝতে পারছে না মানুষটি এমন কেন?? কি চাই সে,,,নাকি সব লোক দেখানো,,,,
চলবে,,,,
0 Comments:
Post a Comment