#হৃদয়হরণী
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব-১৮
- দাদুনের ঘর থেকে বেরোতেই পেখম দেখে তার মা দাঁড়িয়ে আছে,,, ও মাকে দেখে একটু হাসলো,,,মনোরমা এগিয়ে গিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন,,,,
-কি হয়েছে মা??
-কিছু হয়নি,,,তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে,আমার ঘরে চল,,,তারপর ঘরে এসে মনোরমা পেখমের হাত দুটো ধরে জিজ্ঞাসা করে,,
-কি হয়েছে পেখু?? তুইকি বিয়েটা করতে চাস না?? বল আমাকে,,, তেমন হলে আমি এই বিয়ে আটকে দেবো,,,,
-উফফ মা পাগল হয়েছো নাকি,,,তেমন কিছুই না,,,শুধু তোমাদেরকে ছেড়ে থাকতে হবে তাই কষ্ট হচ্ছিলো,,, খুব কষ্ট হচ্ছিলো,,,এই বুকটা ভীষণ ভারী হয়ে উঠছিল,,,,
-এই জন্যে কি তখন তীয়াদের বাড়ি থেকে আসার পর মুখ গোমড়া দেখি তোর???আর সেই যে দরজা দিলি,,,একটু আগে খুললি,চিন্তা হয় না আমাদের??,,,জানিস তোর বৌমনি কেমন পাগলের মতো করছিলো আর বলছিলো মা এই বিয়েটা কি এখন না দিলেই নয়,,,,দেখো পেখুর যবে থেকে বিয়ে ঠিক হয়েছে,, তবে থেকেই ও মুড অফ করে বসে থাকে,,,আমি যার জন্যে কাল রাতে ওর বন্ধুদের নিয়ে আসলাম বাড়িতে সন্ধ্যেবেলায় যাতে ওর মন ভালো থাকে,,কিন্তু দেখো সেই ওর মন খারাপ,,,,
- মার কথায় পেখম হাসলো,,সেই হাসিতে না আছে আনন্দ আর না আছে দুঃখ,,,,ও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাকে বলে" বৌমনি অযথাই চিন্তা করছে মা,,,আমি ঠিক আছি,,,"।
- তুই কি কাউকে পছন্দ করিস মা?? আমাকে সত্যি করে বলবি,,,,
-মায়ের কথা শুনে পেখম কেঁদে ফেলল,,,তারপর চোখের জল মুছে ,নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,,, "একজন ভুল মানুষকে পছন্দ করতো তোমার এই মেয়ে মা,,,যেই মানুষটাই ভুল ছিল তাহলে তো আমার অনুভূতি, পছন্দ সব ভুল মা,,সব ভুল,,,, বলে আবার কেঁদে ফেলল।
- মেয়েকে এই ভাবে কাঁদতে দেখে মনোরমা পরম স্নেহে বুকে জড়িয়ে নেয় পেখমকে,,, তারপর বলে ওঠে কাঁদ যত ইচ্ছা হয় কাঁদ,,কেঁদে নিজেকে হালকা কর। আমি তোর বাবার সাথে কথা বলছি,,,যাতে,,,
-মনোরমার কথা শেষ করতে না দিয়ে পেখম বলে ওঠে না মা না,,,ভুলেও বাবার সাথে আলোচনা করতে যেও না,,,আর আমি তো বলছি আমি একজন ভুল মানুষকে পছন্দ করতাম,,, এখন আর আমার এই বিয়েতে আপত্তি নেই মা,,,
-পেখম বিয়েটা কোনো ছেলে খেলা না,,,
-আমি জানি মা,,,সত্যি বলতে কি আমার আর এখানে মন টিকছে না,,,আমি এবার ডাক্তার কে বিয়ে করে বিদেশে পাড়ি দিতে চাই,,,, তুমি ঐ দিন গয়না দেখাচ্ছিলে,আমি তখন দেখিনি,,, আজকে রাতে দেখবো কেমন,,,এখন আমি আসছি,, ঘুম পাচ্ছে ভীষণ,,,,একটু ঘুমাবো,,,
__________________________________________
- এতক্ষণ মা মেয়ের কথা চুপ করে শুনছিলো তীয়া,,,পেখম বেরিয়ে আসতে দেখে তীয়া এগিয়ে যায় ওর কাছে,,, তারপর কোনো কথা ছাড়াই পেখমের রুমের দিকে পা বাড়ায়। পেখমের ঘরে এসে পেখমকে বিছানায় বসিয়ে ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে তীয়া,,,
-বৌমনি কি করছো এসব,,,আর এইভাবে বসে আছো কেন?? ওঠো,,,
-তার আগে তুই বল আজ সকালে কি হয়েছে ও বাড়িতে??
-কিছুই হয়নি,,,
-তাহলে দাদাভাই এর ঘর থেকে যখন বেরিয়ে যাচ্ছিলি তখন কাঁদছিলিস কেন?? মা বললো আমাকে,,,আর এই ভাবেই বা কেন নিজেকে আটকে রেখেছিস ঘরে???
- তুমি ভুল ভাবছো বৌমনি,,, আর আমি কাঁদতে যাবো কেন?? তখন চোখে কি একটা পড়ে ছিল,,, আর মলম দেওয়া হাত ছিল তাই,,,আর তোমাদের খুব মিস করবো তাই চোখে জল চলে আসছে বারবার,,(অন্য দিকে ফিরে কথা গুলো বলে,,,তারপর বিছানা থেকে উঠে আসতে নিলে তীয়া ওর হাত ধরে)
- এই ভাবে চোরের মতো নজর লুকাচ্ছিস কেন?? দাদাভাই কে ভালোবাসিস???
-বৌমনিকে কথায় পেখম অবাক নয়নে চেয়ে থাকে তীয়ার দিকে,,,
-কি হলো বল??
- না না,,,তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে বুঝতে,,,আর আমি ভালোবাসলেও কি সে ভালোবাসবে নাকি আমাকে?? কি যে বলো না বৌমনি,,,,আচ্ছা তুমি এখন যাও,,আমি একটু ঘুমাবো,,,
-তীয়ার যা বোঝার বোঝা হয়ে গেছে,,, ওর শুধু মনে হচ্ছে কোথাও কোনো গন্ডগোল আছে,,,কিন্তু কি সেটা ঠিক ধরতে পারছে না,,,ও আর কথা না বাড়িয়ে চলে যায়
___________________________________________
-পেখম শুয়ে শুয়ে কালকের কথাই ভাবছিলো,,ওর হঠাৎ মনে হলো প্রিয়া যদি কথা গুলো না বলতো ,তাহলে জানতেই পারতো না ওই হৃদয়হীন মানুষটার মনের কথা,,হঠাৎ চোখ জ্বালা দিয়ে ভেসে ওঠে কাল রাতের থেকে আজ সকাল পর্যন্ত সব কথা,,,,,
- তুই কেন চুপ করে আছিস?? আর কেনোই বা এই বিয়েটাকে মেনে নিচ্ছিস চুপচাপ করে??( রুশা)
- কি করবো আমি তোরা বল???কোন ভরসাতে আমি বাড়িতে কথা বলবো,??? যেখানে মানুষটাই আমার সাথে যোগাযোগ রাখছে না?? আমি তো আর বাবা মার সামনে গিয়ে বলতে পারি না যে ,আবির দাকে আমি ভালোবাসি,,,কারণ উনার এই কদিনের ব্যবহারে আমি পুরোই অবাক,,এতটা হৃদয়হীন মানুষ আমি দেখেনি,, মানে আমার বিয়ে হয়ে গেলেও তার কোনো যায় আসে না,,,,
- তুই একবার আবির দার সাথে সরাসরি কথা বল পেখু,,, কেন এমন করছেন উনি শোন,,,,(প্রিয়া)
- আমি এবার সত্যি সত্যি সেই হৃদয়হীন মানুষটার কাছে যাবো,,গিয়ে সেই মানুষটিকে জিজ্ঞাসা করবো কি দোষ আমার??
-তুই প্লিজ কাঁদিস না,,তেমন হলে আমরা সবাই কথা বলবো,,,(অর্নব)
- রাতে মনোরমা ওদের না খাইয়ে পাঠালেন না,,,সবাই ফিরে গেলে পেখম সারারাত অনেক চিন্তা করে,,,শেষে একটা উপায় থাকে আর সেটা হলো আবিরের সাথে সামনা সামনি কথা বলা,,,কি চাই জানা,,,তারপর পেখম নিজে সিদ্ধান্ত নেবে,, কারোর সিদ্ধান্ত ওর উপর চাপাতে দেবে না,,,
-পরেরদিন সকালে পেখম ডাইনিং রুমে যেতেই দেখে তীয়া হাতে কি নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে কোথায় যাচ্ছে,,,
-বৌমনি কোথায় যাচ্ছো??
-একটু ও বাড়িতে যাচ্ছি,,
- হ্যাঁ সে ঠিক আছে,, কিন্তু এই রকম ভাবে কেন যাচ্ছো,,,মানে তাড়াতাড়ি কেন করছো??
- আরে কড়াইতে মাছ ভাজা বসিয়েছি,,,আর এইদিকে আবিরের নাকি ভীষণ মাথা ব্যথা করছে,,,তাই ভাবলাম এই মলমটা দৌড়ে গিয়ে দিয়ে আসি,,,,
- ও এই ব্যাপার,,, আচ্ছা তুমি আমাকে দাও,,আমি যাচ্ছি,,, বলেই পেখম মলমটা নিয়ে ও বাড়িতে যায়,,,,বেল বাজাতেই অনু দরজা খোলে,,,
-আরে পেখু আয় আয়,,,ভিতরে আয়,,,এই কদিন আসিস নি কেন??
- ব্যস্ত ছিলাম কাকিমনি,,, বলছি যে এই মলমটা আবিরদাকে দিতে বলল বৌমনি,,,
- ও ঠিক আছে তুই উপরে যা আবির ওর ঘরেই আছে।
-পেখম ওষুধ নিয়ে টলমল পায়ে এগিয়ে যায় সেই ঘরে,,তারপর দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখে চারপাশে নিকোটিনের বিষাক্ত ধোঁয়া,,, ওর কাশি পেল,,কাশতে কাশতে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলো আবির বাইরের দিকে তাকিয়ে সিগারেট টানছে আর মনের সুখে ধোঁয়া গুলো উড়িয়ে দিচ্ছে,,,
-কেন এসেছিস এখানে???( আকাশের দিকে তাকিয়েই কথাটা বলল আবির)
-শুনলাম আপনার নাকি মাথা ব্যথা করছে তাই,,,
-তাই কি পাখি?? দেখতে এলি আমাকে?? মরে যায় নি,,দেখ বেঁচে আছি,,,
-এ সব কি বলছেন আপনি??
-কেন ঠিকই তো বলছি। ভুল কি বললাম??
- আমার কি দোষ আবির দা?? আপনি আমার সাথে কেন এই রকম করছেন??
-কি করছি পাখি??
-আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি আছে আমার বিয়ের ,,,,
-হমম জানি তো,,,কিন্তু কথা হচ্ছে এই গুলো তুই আমাকে বলছিস কেন??
- বলছি কেন আপনি বুঝতে পারছেন না??
- হাত থেকে সিগারেট টা ফেলে ,সেটাকে পা দিয়ে পিষে নিভিয়ে দিলো,,তারপর বলে ওঠে"আমার কি বোঝার কথা"??
- আপনি কি চান আমি এই বিয়েটা করি??
- আমার চাওয়াতে আর কিছু আটকাবে না,,,সব থেকে বড়ো কথা হলো আমি মনে প্রাণে চাই তুই এই বিয়েটা কর,,,
- কি বলছেন আপনি?? আপনার মাথা ঠিক আছে??( ভাঙা গলায়)
- হ্যাঁ আমার মাথা একদম ঠিক আছে,,,
- তাহলে যে সেদিন রাতে আপনি আমাকে,,,(পেখমের কথা সম্পূর্ণ করতে না দিয়ে আবির বলে,,)
- ওটা একটা মিসটেক ছিল পাখি,,,(আবিরের কথা শুনে পেখমের মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে,,, দু চোখে অশ্রুরা এসে জমাট বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে,,, তবুও নিজেকে সামলে বলে ওঠে,)
- মিসটেক?? তবে যে ওই সব কথা,,,অনুভূতি,,( কাঁপা কাঁপা গলায় আর বলতে পারলো না পেখম কেঁদেই ফেলল)
-হ্যাঁ,,, ভুল,,, আমার জীবনের সব থেকে বড়ো ভুল ,,,আর সেটা হল তুমি পাখি,,,আকর্ষণ বলে একটা বস্তু আছে,,,তোমার প্রতি আমার সেই আকর্ষণ ছিল,,, মোহ ছিল,,, কিন্তু সত্যি বলতে কি আমি কিন্তু তোমাকে এখন বিয়ে করতে পারবো না,,, আমার নিজের একটা জীবন আছে,,এই জীবন টাকে ভালো করে উপভোগ করতে চাই,,
-আবিরের কথার মাঝেই পেখম বলে ওঠে" চুপ করুন আমি আর সহ্য করতে পারছি না,,, এসব আপনি কি বলছেন???
- আমার কথার মাঝে কথা বলা আমি পছন্দ করি না,,, আর সত্যি বলতে আমি ভেবেছি অনেক,,,আমি যদি তোমার বিয়েটা আটকে দি, তাহলে আমার এখন তোমাকে বিয়ে করতে হবে,,, কেননা তোমার দাদুনের খুব ইচ্ছে নাত জামাইকে দেখার,,, কিন্তু এই মুহূর্তে সেটা possible না,,,
- তবে কি সব মিথ্যে ছিল আবির দা,,(হাঁটু গেড়ে বসে কাঁদতে কাঁদতে বললো পাখি )
-হমম হু মিথ্যে না,,,বললাম তো একটা আকর্ষণ আছে,,,তুমি চাইলে বিয়ের পরেও আমার সাথে সম্পর্ক রাখতে পারো,,,আর সেটা সম্ভব, কেন যেন?? কারণ ঋষি বিয়ের পর বিদেশে চলে যাবে,,,কিন্তু তুমি তো এখানে থাকবে পড়াশোনার জন্য,,, তখন না হয় আমরা continue কলবো,,,you understand what I say??
- এতক্ষন আবিরের কথা গুলো শুনছিলো পেখম,,, ও ওর নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছে না যে এই কি সেই মানুষ?? যাকে ও এতদিন চিনতো,,,না না চিনতো না,,,তারপর নিজেকে সামলে বলে" আপনি তাহলে মুখোশ পড়ে থাকতেন আমার সামনে,,, ভাগ্যিস আমার বিয়েটা ঠিক হয়েছিল তা না হলে তো আপনার এই মুখোশের আড়ালে কুৎসিত রূপ টা দেখতে পারতাম না,,,(বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল)
- পাখি এখানে কেঁদো না,,,বাড়ি যাও,,তোমার একটা আলাদা ঘর আছে,,,সেখানে গিয়ে যত ইচ্ছা কাঁদো,,,,ঠিক আছে এখন তুমি আসতে পারো,,,, আর হ্যাঁ ভেবে দেখো আমার প্রস্তাব টা,,,,
- পেখম অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে আবিরের দিকে,, ওর বিশ্বাস হচ্ছে না এ কি সেই মানুষ টা যে ওকে একদিন বলেছিল "যে আমি তোমার ওই চোখে জল সহ্য করতে পারি না,",, আর আজ বলছে ঘরে গিয়ে কাঁদো,,,তারপর আবার আমাকেই কুৎসিত প্রস্তাব দিচ্ছে,,,,নিজেকে আর সামলে রাখতে পারছে না,,, তবুও চোখের জল টুকু মুছে উঠে দাঁড়ালো পেখম,,,তারপর আবিরের উদ্দেশ্যে বলে " আপনার মতো নীচু মনের মানুষটার জন্য আমি এই এক সপ্তাহ কেঁদেছি,, এখন মনে হচ্ছে ভুল করেছি,,, আপনাকে আমি ভালোবেসেছি,, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল মানুষকে ভালোবেসেছি,,, আমার জীবনের সবথেকে বড়ো ভুল আপনি,,, আমি আপনার ওই মুখটাও আর দেখতে চাই না বুঝেছেন আপনি,,,আমি এখানে আর থাকবো না,,ঋষি বাবুর সাথেই চলে যাবো,,,
- তাহলে তো সব সমস্যা মিটে গেল পাখি,,, আর আমি তো তোমাকে কোনো দিন বলিনি যে "আমি তোমাকে ভালোবাসি"
- হ্যাঁ বলেন নি,,,ওটা আমি আপনার আচরণ ব্যবহার দেখেই বুঝেছিলাম,, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল ভুল ভুল,,,সব ভুল,,,,আমি এত বড়ো ভুল কি করে করতে পারলাম,,,, জানেন আমার এখন কি করতে ইচ্ছা করছে,, ইচ্ছে করছে নিজেকে শেষ করে দিতে,,, কিন্তু আমি পারবো না,,, একজন ভুল মানুষের জন্য আমি পারবো না,, কারণ আমার ভালোবাসার মানুষ অনেক,তাদের কে কষ্ট দিতে পারবো না,,,,এই যে এখানে আপনার ছোঁয়া আছে কপাল দেখিয়ে,,, এই যে এখানে আপনার ছোঁয়া আছে কোমড় দেখিয়ে,,, ঠোঁট দেখিয়ে,,, আমার এখন সেই ছোঁয়া গুলো বিষাক্ত লাগছে,,, গা ঘিনঘিন করছে,,,,(বলেই আবার কেঁদে ফেলল)
- শোনো পেখম তোমার এসব ফালতু কথা শোনার মতো সময় এখন আর আমার নেই,,,এখন তুমি আসতে পারো,,,
-চলেই যাচ্ছি,, শুধু যাওয়ার আগে এইটুকু বলবো আমার বিয়ের সময় যেন আমি আপনাকে না দেখি,,,,আজকের পর থেকে যেন আমি আপনাকে না দেখি,,,ভালো থাকবেন আপনি( বলেই দৌঁড়ে চলে যায় পাখি,,,আর আবির তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে)
-বাড়ি এসে পেখম নিজের ঘরে দরজা আটকে দিয়ে খুব কাঁদে,,,আর বলে" ভগবান এত কষ্ট কি আমার কাম্য ছিল,,, হয়তো ছিল তা না হলে আমার সাথেই কেন এমন হবে,,,, আমি আপনাকে খুব ঘৃণা করি আবির দা। আপনি দেখবেন,, নিজের চোখের সামনেই দেখবেন ঋষির সাথে আমার সুখের সংসার,,, আমি জানি একদিন আপনি আফসোস করবেন,,, করতে আপনাকে হবেই,,,
___________________________________________
-দীর্ঘ আধা ঘন্টা ধরে এই রেস্টুরেন্টে বসে আছি,,কি জন্যে ডেকেছিস তোরা আমাকে?? যদি কিছু বলার না থাকে তো আমি যেতে পারি??
-কেন করছিস এই রকম?? কেন কষ্ট দিচ্ছিস ওকে??(পুলক)
- আর সব থেকে বড়ো কথা তুই নিজেও তো কষ্ট পাচ্ছিস দাভাই,,(তীয়া)
- তোরা কি সব বলছিস?? আমি কিছু বুঝতে পারছি না,,(আবির)
-আমি অত কথায় যেতে চাইছি না আবির,, যেখানে কথা হচ্ছে আমার বোনকে নিয়ে,,, কেন করছিস এটা,,, তেমন হলে আমরা বাড়িতে কথা বলবো,,,,(পুলক)
- কি চাস কি দাভাই,,, পেখু বেঁচে থেকেও মরে যাক,,,(তীয়া)
-তোরা কি এই কথা গুলো বলার জন্য আমাকে ডেকে এনেছিস,,, তাহলে আমি বলবো ভুল করেছিস,,,,
-মানে(পুলক)
-মানে আমার পক্ষে সম্ভব নয় পাখিকে বিয়ে করা সিম্পল,,,,
- আবির আমাকে রাগতে বাধ্য করিস না,,( পুলক কথাটা বেশ জোড়েই বললো, যার কারণে রেস্টুরেন্টের সব লোক ওদের দেখছে)
- প্লিজ তোমরা নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করো না,,, সমস্যাটা কোথায় দাভাই তোকে আমার মাথার দিব্যি বল আমাদের( আবিরের হাতটা তীয়া নিজের মাথার উপর রাখলো জোড় করে)
- প্লিজ ভাই বল,,,একজন ভাই হিসেবে তোর কাছে আমার বোনের হাসি ভিক্ষা চাইছি,,,(পুলক)
***************
- বেশ কিছুক্ষণ পর পুলক রাগারাগি করে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যায়,,, তীয়া তখনও থাকে,,,
- সব কিছু শুনে তীয়া বলে" এছাড়া কি আর কোনো উপায় ছিল না দাভাই(ছলছল চোখে)
- না,,আমি চাই পাখি ভালো থাকুক,,,সেটা না হয় না হল আমার সাথে,,, কিন্তু ঋষির সাথে ভালো থাকুক (বলেই রেস্টুরেন্ট থেকেই বেরিয়ে যায়,,, আর তীয়া হতভম্ব হয়ে বসে থাকে সেখানে)
________
চলবে,,,,,,
0 Comments:
Post a Comment