#হৃদয়হরণী
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব- ২০
- চোখ বন্ধ করার পর যখন সেই চোখের সামনে মা বাবা দাদা,,আবিরের প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে তক্ষনাৎ পেখম বুদ্ধি করে নিজের পা দিয়ে সেই ব্যক্তির শরীরের নিন্মাংশে শরীরের সব শক্তি দিয়ে লাথি মারে,,,ওমনি ব্যাথায় কুকিয়ে ওঠে সেই ব্যক্তি,,,,হাত আলগা হয়ে আসে,,,তখনই পেখম উঠে দাঁড়িয়ে আবির দা বলে চিৎকার করে ওঠে,,,,,তারপর একটা গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে নিজেকে ধাতস্থ করার চেষ্টা করে,,তারপর টলমল পায়ে এগিয়ে যেতে থাকে সামনের দিকে,, কিন্তু লাভ হয় না তার আগেই ওই ব্যক্তি আবার ওর হাত ধরে টেনে আনে ওই জায়গায়,,, শুরু হয় আবার ধস্তাধস্তি,,, পশুর মতো ঝাপিয়ে পড়ে পেখমের উপর,,,,পেখম চিৎকার দিয়ে ওঠে,,,,লোকটি যেই পেখমের চুল গুলো মুঠো করতে যাবে ওমনি কোথা থেকে এসে একটা শক্তপোক্ত হাত তাকে আটকে দেয়,,,পেছনে ফিরে সামনে তাকানোর আগেই আবার একটা ঘুষি পড়ে ঠিক তার নাক বরাবর,,তাল সামলাতে না পেরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে,,,,পেখম আবির দা বলে সেখানেই লুটিয়ে পড়ে,,,,,
-আবির দৌড়ে গিয়ে পেখমকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয়,,,তারপর ভালো করে পেখমের চেহারার দিকে তাকাতেই ওর চোয়াল দুটো শক্ত হয়ে যার,,,কপালের রগ গুলো ফুলে ওঠে,,,,চোখ জোড়া রক্তিমময় রূপ ধারণ করে,,, পেখমের গায়ে শাড়ি প্রায় খুলে যাওয়ার মতো অবস্থা,,, ব্লাউজের অধিকাংশ অংশ ছেঁড়া,, সারা গায়ে,,মুখে, ঘাড়ে আঁচড়ের দাগ,,,ঠোঁটের কোণে কেটে গিয়ে রক্ত জমাট বেঁধে আছে,,,ও পেখমের জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে,,, আর তখনি পিছন থেকে সেই ব্যক্তিটি ঝাঁপিয়ে পড়ে আবিরের উপর,,,,আবির কোনো রকমে লোকটিকে ধাক্কা দেয় আর তখনই পুলক চলে আসে ঘটনাস্থলে,,, আবির পুলককের কাছে পেখমকে দেয়। পুলক বোনের এই অবস্থা দেখে কেঁদে ফেলে,,,,আর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে,,,,
- আবির শালা শু*** চ্চাটাকে ছাড়বি না,,,ও আমার বোনকে কি করেছে,,, পেখু ওঠ দেখ তোর দাভাই চলে এসেছে,,,,
- আবির এখনো লোকটার মুখ দেখিনি,,,মুখ ঘুড়িয়ে যেই মারতে যাবে ওমনি ও বলে ওঠে" রিক তুই,,,, তোর এত বড়ো সাহস আমি দু দুবার বারণ করা সত্ত্বেও তুই আবার আমার পাখির দিকে হাত বাড়াস,,,এই হাত আমি ভেঙে দেবো বলেই একটা হাত নিয়ে বিপরীতে মুড়িয়ে দেয় ওমনি আর্তনাদ করে ওঠে রিক,,,,বল কেন করেছিস???? বল বলেই একটা চড় মারে ,,,আর রিক পড়ে যায়,,
-বেশ করেছি তুলে নিয়েএসেছি,,,,প্রেম নিবেদন করেছিলাম আমি,,,রিজেক্ট করে দিয়েছিল,,, ভরা কলেজের সামনে তুই,, এই তুই আমাকে মেরে ছিলিস,,, সেই দিন ঠিক করে নিয়ে ছিলাম ওর ক্ষতি আমি করবোই,,, যাকে বলে চরম ক্ষতি,,,,তুই আসলি ঠিক আছে,,, আর একটু পরে আসতে পারলি না,,,তোর এই পাখি ভীষণ ছটফটে,,সবে মাত্র শুরু করেছিলাম,,,, কথা টা সম্পূর্ণ করতে না দিয়ে আবির ওকে আবার মারে,,,আর বলে,,
- যাকে এত বছর ধরে আগলে রেখেছি তুই এই হাত দিয়ে তাকে অপবিত্র করতে চাইছিলি কুত্তার*** ,,এই হাত দিয়ে তুই আমার কলিজায় আঘাত করেছিস,,,এই হাত দিয়ে তাই না বলেই অপর হাতটা নিয়ে বিপরীতে মুড়িয়ে দেয়,,,আবার চারেদিকে রিকের আর্তচিৎকার শোনা যায়,,, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রিক,,,,
-পুলক তোকে তো আমি ফোন করে পুলিশ আনতে বলেছিলাম,,,
- কুশল আর ইশান নিয়ে আসছে পুলিশ,,, আবির তুই কি করে বুঝলি এই হারা***চ্চা আমার বোনটাকে এখানে এনেছে???
- আমি যখন রাস্তা দিয়ে আসছিলাম তখন পাখির কানের দুল আর গলার আওয়াজ পায়,,অন্ধকারে কিছু দেখতে পারছিলাম না ,,,কি করবো কোথায় খুঁজবো তাই তোকে ফোন করি,,,
- পেখম চোখ খোল দেখ আমরা,,আবির ওকে ধর,,আমার গাড়িতে জল আছে আমি নিয়ে আসি,,,ওর জ্ঞান ফেরানো আগে দরকার,,,,( বলেই পুলক চলে যায় জল আনতে)
- এই পাখি ওঠো না,,,পাখি,,,ওই মায়াবিনী দেখো আমি,,ওঠো,,,,
- পুলক এসে জল পেখমের চোখে মুখে ছিটিয়ে দেওয়ার পর ওর জ্ঞান ফেরে,,,তারপর আবিরকে দেখে ওর বুকের মধ্যে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে,,যা দেখে আবিরের বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে ওঠে,,,আর পুলক উঠে গিয়ে রিককে মারতে থাকে,,,,,আবির নিজের গায়ের শার্ট খুলে পেখমের গায়ে জড়িয়ে দিলো,,,কিছুক্ষণ পরে পুলিশ এসে রিককে নিয়ে যায় আর ওদের বলে থানায় হয়তো পেখমকে যেতে হতে পারে,,,আবির বলে আমি আপনাদের সাথে পরে কথা বলে নেবো অফিসার,,,,
- ইশান আর কুশল পুলকের গাড়ি করে বেরিয়ে যায়,,, আর পুলক আবিরের গাড়িতে আবির আর পেখমকে ড্রাইভ করে নিয়ে যায়,,,, পেখম ভয়তে এতটাই প্যানিক হয়ে গেছে যে বার বার সেন্সলেস হয়ে যাচ্ছে আবিরের বুকে,,,,
___________________________________________
- কিছুক্ষণ আগে পেখমের জ্ঞান ফিরেছে,,,কিন্তু এখনো তেমন স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারেনি,,, ডাক্তার এসে মেডিসিন দিয়ে গেছে,,পেখম এখন ওর ঘরেই শুয়ে আছে,,,,তীয়া, প্রিয়া আর রুশা ওর পাশেই বসে আছে ,,,তীয়া পেখমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,, প্রিয়া চোখের জল মুছিয়ে দিচ্ছে,,,,
- ড্রয়িংরুমে সবাই বসে আছে গম্ভীর হয়ে,,,, আত্মীয় স্বজন কেউ কেউ চলে গেছে আবার কেউ কেউ আছে,,,কেউবা রঙ্গ তামাশা দেখার জন্য বাড়ি ভির করে রেখেছে,,,,
- আবিরের মুখ থেকে সবাই সব কিছু শুনে হতভম্ব হয়ে বসে আছে। মেয়ের ওই রকম অবস্থা দেখে মনোরমা তো দুবার অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন,,, আর জ্ঞান ফেরার পর থেকে কেঁদেই চলেছেন,,, অনুপমা দেবী উনাকে সামলাচ্ছেন,,, দেবেন্দ্রর তো মনে হচ্ছে হৃদয়টা কষ্টে ছিন্নবিছিন্ন হয়ে যাচ্ছে,,, তার মেয়েটার সাথে কেন এই রকম ঘটনা ঘটলো,,,,নরেন্দ্র বাবুর অবস্থা তেমন ভালো নয়,,,তিনি সোফায় বসে আছেন আর তাকে ধরে রেখেছেন বিমলা দেবী,,,,, ড্রয়িংরুমে চলছে এখন পিনপতন নিরাবতা,,, আত্মীয় স্বজন সবার মনেই এখন একটাই প্রশ্ন বিয়েটা কি হবে?? যদি না হয় মেয়েটার কি হবে?? ঋষির বাড়ির সবাই আছে কিন্তু কেউ কোনো কথা বলছে না এমন সময় ব্রাহ্মণ ঠাকুর বলে ওঠেন,,
- বাবা দেবেন্দ্র বিয়েটা কি হবে?? লগ্ন যেহেতু দেরিতে সেহেতু হাতে এখনো সময় আছে,,,,পেখম মার নামে যেহেতু বিয়ের পবিত্র পূজো আরম্ভ হয়েছিল সেহেতু বিয়েটা না হলে মেয়েটা লগ্নভ্রষ্টা হয়ে যাবে,,
- ব্রাহ্মণ মশায়ের কথায় সবার টনক নড়ে উঠলো,,, এবং সাথে সাথেই আবিরের বুকটা আবার ভারী হয়ে উঠলো,,,,দেবেন্দ্র বাবু তখন ঋষির বাবা মায়ের উদ্দেশ্যে বলেন,,
- আপনাদের যদি অনুমতি থাকে তাহলে বিবাহের কার্য শুরু করতে বলি??
- আমাদের বাড়ির সব সিদ্ধান্ত পিসিমা নেন,,,(ঋষির বাবা)
- দেবেন্দ্র বাবু কিছু বলার আগেই ঋষির পিসি ঠাম্মাম বলে ওঠেন" এখানে এই মুহূর্তে কোনো বিয়ে টিয়ে হবে না ব্রাহ্মণ মশাই,,, আপনি এখন আসতে পারেন,,,
- এ কি বলছেন আপনি?? বাবা উনি কি বলছেন??( দেবেন্দ্র তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে)
- নরেন্দ্র বাবু তার বন্ধুর দিকে তাকাতেই সে মাথা নত করে নেয়,,,অর্থাৎ তারা এই বিষয়ে বোনের মতামতকে সমর্থন করেন,,,,
-দেখো বাবা দেবেন্দ্র এই বিয়েটা আর কোনো ভাবেই হতে পারে না,,, আমরা সমাজে বাস করি,,,আর এইরকম মেয়েকে সমাজ কখনোই ভালো চোখে দেখে না,,,আর আমার তো মনে হয় তোমার মেয়ের কোথাও দোষ আছে তা না হলে ওই ছেলে তোমার মেয়েকে এই ভাবে তুলে কেন নিয়ে যাবে,,,আর সত্যি বলতে কি তোমার মেয়ের চালচলন আমার ঠিক পছন্দ হয়নি শুরু থেকেই,,, কিন্তু দাদা পছন্দ করে ছিল বলে আমি না করিনি। কিন্তু এখন তো কোনো ভাবেই আমি এ বিয়ে হতে দেবো না,,,বলা তো যায় না ওই ছেলে তোমার মেয়ের কোনো সর্বনাশ করতে বাকি রেখেছে কিনা?? জেনে শুনে কেন আমি এমন মেয়ের সাথে আমার ডাক্তার নাতির বিয়ে দেবো?? আর তো,,,,
- খবরদার আর একটাও বাজে কথা পাখির নামে বলেছেন তো, আমি ভুলে যাবো আপনি আমার গুরুজন হন,,,( এতক্ষণ সব মুখ বুজে সহ্য করছিল আবির কিন্তু শেষের কথা গুলো শুনে ও আর নিজেকে সংযত করে রাখতে পারেনি,,)
- আপনি এ কথা বলেন কি করে?? যেখানে দেখতে পাচ্ছেন আমার বোনটার উপর দিয়ে আজ কি ঝড় গিয়েছে,,,(পুলক)
-নরেন্দ্র বাবু হঠাৎ করেই উত্তেজিত হয়ে যায় আর জোড়ে বলে ওঠে "আমি মনে হয় মানুষ চিনতে এই প্রথম ভুল করলাম বিমলা। দিদিভাই তুই আমাকে ক্ষমা করেদিস,,,
- ঋষি তুই বল তোর কি মত??( পুলক)
-ও কি বলবে যেখানে আমরা সবাই বলছি এই বিয়ে হবে না,,,(ঋষির বাবা)
- আমি তাও তোর মুখ থেকে শুনতে চাই ঋষি তুই কি বলতে চাইছিস??( আবির)
- আমি আমার পরিবারের বিরুদ্ধে যেতে পারবো না তোরা আমাকে ক্ষমা করিস। হ্যাঁ আমি একবার পেখমের সাথে কথা বলতে চাই,,,বিস্তর জানতে চাই তারপর যদি মনে হয় পেখমকে আমার বিয়ে করা উচিত,, তখন আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলাবো,,,,(ঋষি)
- তার কোনো দরকার নেই ,,,পেখমের সাথে এই বিষয়ে তোর আর কথা বলতে হবে না,,,এই বিয়ে হবে না চল এখান থেকে,,,( ঋষির মা)
- ওদের সবার কথা শুনে দেবেন্দ্র চেয়ারে বসে পড়লেন মাথায় হাত দিয়ে,,,, মনোরমা ডুকরে কেঁদে উঠলেন,,,, আর বলে উঠলেন" ভগবান কোন পাপের শাস্তি তুমি আমার ওই মেয়েটাকে দিচ্ছো?? আমার মেয়েটাকে এখন কে বিয়ে করবে?? একবার বিয়ে ভেঙে গেলে সমাজে কি করে চলবে?? আমার মেয়েটাতো বেঁচে থেকেই মরে যাবে,,,এ তুমি কি করলে???
- মনোরমা শান্ত হও,,,দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে,,, আমি জানি আমার পেখু মা গঙ্গার মতো পবিত্র,,,,(অনুপমা)
- কি হল ব্রাহ্মণ মশাই এখনো আপনি দাঁড়িয়ে আছেন,,, এই বিয়ে হচ্ছে না আপনি আসতে পারেন,,,,ঋষি চল,,,(পিসি ঠাম্মাম)
- এই বিয়ে হবে,,,আজ এই মুহূর্তে এই বিয়ে হবে,,,( আবির)
- কি বলছিস তুই আবির (কুশল)
- হ্যাঁ আমি ঠিক বলছি,,,তারপর আবির নরেন্দ্র বাবুর কাছে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে উনার হাত দুটো ধরে, নরম স্বরে বলে,,
- দাদুন পাখির সারা জীবনের দায়িত্ব তুমি আমাকে দেবে??
- আবিরের কথা শুনে ড্রয়িংরুমে সবাই অবাক হয়ে যায়,,, দেবেন্দ্র বিষ্মিত হয়ে বলে "এ তুই কি বলছিস"?
- আমি ঠিক বলছি,,,আর তার কারণ তুমি খুব ভালো করেই জানো কাকুমনি,,,অনেক সহ্য করেছি তোমার কথা শুনে,,, কিন্তু আর পারলাম না,,, তারপর দাদুর দিকে তাকিয়ে আবার বলে" কি হল বলো??"
- তুমি কি সত্যিই বিয়েটা করতে চাও দাদুভাই??( নরেন্দ্র বাবু)
- আমি আবির চৌধুরী সবার সম্মুখে বলছি পেখম সরকারকে আমি স্বজ্ঞানে বিবাহ করতে চাই,,,দেবে কি আমাকে সেই অনুমতি দাদুন???
- আবিরের কথা শুনে নরেন্দ্র বাবু ওকে বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললেন,,, তার যক্ষের ধন ওই নাতনী,,, আজ তার দুর্দিনে এই ছেলেটি নিজে এসে ঢাল হয়ে তাকে রক্ষা করতে চাইছে,,,তিনি কি করে বাঁধা দেবেন,,,,নিজেকে সামলে তিনি বলেন"আমার নাতনীর কপাল ভালো দেবেন্দ্র যে আবিরের মতো এমন একজনকে ও জীবন সঙ্গী হিসেবে পেতে চলেছে"।
- আমি তোর কাছে অপরাধী,,,আমাকে ক্ষমা করে দিস আবির,,(দেবেন্দ্র)
- ওটা পরিস্থিতি ছিল,,, কিন্তু তুমি বলেছিলে সব কিছু ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিতে,,,, দিয়েও ছিলাম,,, এইভাবে পেতে চাইনি ওকে আমি,,, কিন্তু আমরা সবাই পরিস্থিতির স্বীকার,,,(আবির)
- ব্রাহ্মণ মশাই বিয়ে শরু করুন,,,, পুলক তীয়াকে গিয়ে বলো আমার বৌমাকে একটু সাজিয়ে দেয় যেন,,,তারপর দেবেন্দ্রর কাধে হাত রেখে বলে " তবে আমাদের সম্পর্ক টা আরোও গভীর হলো বল??( অশোক)
- দেবেন্দ্র বাবু অশোক বাবুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললেন,,,, মনোরমা দেবী আবিরের কপালে চুমু দিয়ে জড়িয়ে কেঁদে ফেললেন,, আর সেই দৃশ্য দেখে অনুপমা দেবী কাঁদার মধ্যেও হেসে ফেললেন,,,,ঋষিরা সবাই চলে গেছে,,,কুশল আর ইশান ওদের সাথে যায়নি,, এমনকি তারা ঋষিকে এটাও বলেছে এরপর থেকে তার সাথে বন্ধুত্ব রাখবে কিনা ভেবে দেখবে,,,
- বাড়িটা আবার আগের মতো মেতে উঠেছে,,, আবিরকে পুলক পাজ্ঞাবী পড়িয়ে দিয়েছে,,,আর ও দিকে পেখমকে ওর বান্ধবীরা আর তীয়া মিলে সাজিয়ে দিয়েছে,,, পেখম কিছুই বুঝতে পারছে না হচ্ছে টা কি,,এমনিতেও ও একটা ঘোরের মধ্যে আছে,,শরীরে তেমন শক্তি নেই উঠে দাঁড়ানোর,,ও তো শুনেছিল বিয়েটা হচ্ছে না,,, বরপক্ষ সবাই চলে গেছে,, তাহলে,,,,যখন ছাদনাতলায় পান পাতা সরিয়ে আবিরের মুখটা দেখেছিলো পেখম তখন ও হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল,,, কি রিয়্যাক্ট করা উচিত বুঝতে পারছিলো না,,,,ও একটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছে,,, মনে মনে শুধু একটা প্রশ্নই উঠে আসছিলো যেই মানুষটা ওকে ভালোবাসে না,,,যে এই লাইভ টা আনন্দ উপভোগ করে কাটিয়ে দিতে চাই,,তাহলে সেই মানুষটি কেন তাকে বিয়ে করবে?? তাহলে কি সেই মানুষটা তাকে দয়া করছে,,,এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ওর খেয়াল হয় সবাই বলে উঠছে সিঁদুর নাকের উপর অনেকটা পড়েছে,,,তারমানে আমাদের আবির দা পেখমকে অনেক ভালোবাসবে,,,,
-অবশেষে বিয়েটা হয়েই গেল,,,রাতে খাওয়া দাওয়া পর্ব মেটার পর যে যেখানে পেরেছে শুয়ে পড়েছে,,, অনুপমা বাড়িতে ফিরে এসেছে ,কাল বধূ বরণের আয়োজন করতে হবে তাই। আবির পুলকের সাথে ওর ঘরে শুয়েছে,,,আর তীয়া পেখমের বান্ধবীরা পেখমের সাথে ওর ঘরে শুয়েছে,,,অর্নব, আকাশ, দিপু, ইশান আর কুশল ওরা সবাই আবিরদের বাড়িতে চলে গেছে,,,,
-পেখমের ঘরে যখন তীয়া বিছানা ঠিক করতে যাবে,,ঠিকই তখনই দরজা নক করার আওয়াজ শুনতে পায়,,, তীয়া গিয়ে দরজা খুলে দেখে আবির দাঁড়িয়ে আছে,,, আবিরকে দেখে তীয়া বলে"কিছু বলবি দাভাই"??
- পেখম তখন বিছানায় হেলান দিয়ে চোখ বুজে ছিল কাঁদছিলো আর প্রিয়া ওর চোখের জল মুছে দিচ্ছিলো,,,,আবিরের নাম শুনে দ্রুত চোখ খুলে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে ,আবির ওর দিকে তাকিয়ে আছে। দু জোড়া চোখ এক হতেই পেখম দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়।
- তীয়ার প্রশ্নে আবির বলে" এই নে তুলো আর স্যাভলন,,,ওর ক্ষত স্থানে দিয়ে দিস,,,আর শোন ওকে কাঁদতে বারণ কর,,,ঘুমাতে বল,,শরীরের উপর আজ অনেক ধখল গেছে ওর" কথা গুলো বেশ জোরে জোরে বলেই পুলকের ঘরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায় আবির।আর তীয়া তুলো আর স্যাভলন হাতে নিয়ে মুচকি হেসে দেয়,,,,এত বিষাদের মাঝেও একটু সুখ সুখ অনুভব করে পেখম,,,,,
চলবে,,,,,,
0 Comments:
Post a Comment