গল্প তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায় পর্ব ৩০

 #তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#পার্ট_৩০

#লিখনিতে_Rodela_Islam


তুলিকে চোখ খুলে তাকাতে দেখে। তমালের ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা দেখা যায়। তমাল তুলিকে বুকের সাথে মিশেয়ে নিয়ে কান্না ভেজা কন্ঠে বলে 

--তমাল:: আমি জানতাম আমার তুলির কিচ্ছু হবে না কিছু হতেই পারে না। আমাকে কোথাও যেতে পারে না আমার জানপাখি। 

-তুলি এক হাত তমালের পিঠে রেখে আস্তে করে বলে ) 

--তুলি:: তমাল ভাই তুমি কাদছো কেনো দেখো আমি ঠিক আছি আমার কিছু হয় নি। তমাল কিছুক্ষণ তুলিকে জড়িয়ে রাখে। তার পর তুলিকে আবার ঠিক করে শুইয়ে দেয়। তমাল তুলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে 

--তমাল:: কেমন আছো জানপাখি। খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে....?? 

--তুলি:: মৃদুস্বরে বলে ) শুধু মাথায় একটু ব্যাথা করতে আর কিছু না। 

--তমাল:: ঔষধ খেলেয় ব্যাথা কমে যাবে জানপাখি। তুমি শুয়ে থাকো আমি ডক্টরকে ডেকে নিয়ে আসছি। 

--তুলি:: তমাল ভাই এখানে একটু থাকো না। 

--তমাল:: আমি তো তোর কাছেয় থাকবো শুধু ডক্টর এসে দেখে যাক একবার। তমাল তুলির কপালে ঠোঁটের পরস একে দিয়ে ডক্টরকে ডাকতে যায়। ডক্টরকে ডেকে এনে বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয়। ডক্টর তুলির চেক-আপ করে তমাল তুলির থেকে একটু দূরে দাড়িয়ে আছে। 


--তমাল:: ভয়ের কিছু নেই তো ও ঠিক হয়ে যাবে তো...?? 

--ডক্টর :: ভয়ের কিছু নেই কিছু দিন রেস্ট নিলে এবং ঔষধ গুলো খেলেয় সুস্থ হয়ে উঠবে। আর পায়ে একটু চোট পেয়েছে কয়েক দিন হাটতে অসুবিধা হতে পারে পরে ঠিক হবে যাবে। 

--তমাল:: ওকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে কবে। 

--ডক্টর:: বিকেল পর্যন্ত আগে দেখে  একটু পর কিছু টেস্ট আছে রিপোর্ট ভালো এলে বিকেলেয় নিয়ে যেতে পারবেন আর প্রয়োজনে আর রাত থাকতেও হতে পারে আবার নাও হতে পাবে। 

--তমাল:: ডক্টর আপনি তো বললেন ভয়ের কিছু নেই তাহলে আবার টেস্ট কিসের জন্য....?? 

--ডক্টর:: দেখুন উনি মাথায় আঘাতটা বেশি পেয়েছে বইরে থেকে কোন সমস্যা দেখা যাচ্ছে না বা বঝা যাচ্ছে না। ভেতরে কোন ইন্জরি হয়েছে কি না  তাই আমরা চাচ্ছি টেস্ট করাতে। আশা করি রিপোর্ট ভালো আসবে। ডক্টর চলে গেলে তমাল আবার তুলির মাথার কাছে বসে 


--তুলি:: তমাল ভাই এই একদিনে কি অবস্থা করেছো নিজের.. নিশ্চয়ই কাল থেকে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া ঘুম কিছুই হয় নি তাই তো..?

--তমাল:: তুই কেন এমন করিস বল তো কাল তোকে ওই ভাবে দেখে আমার কি অবস্থা হয়েছিলো জানিস তুই......??

--তুলি:: আমি কি ইচ্ছে করে করেছি নাকি। 

--তমাল:: তুই কেনো আমার হাত ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলি.? 

--তুলি:: তমাল ভাই কাল যেই গাড়িটা আমাদকর ফলো করছিলো এই গাড়িটার সাথেয় ধাক্কা লাগেছিলো আমার। 

--তমাল:: মানে কি বলসিস তুই....? 

-তুলি উঠে বসার চেষ্টা করতেয় পায়ে একটু ব্যাথা পয় চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে 

--তুলি:: আহঃ বলে ওঠে। তমাল তুলির ধরে বলে 

--তমাল::বেশি ব্যাথা পেয়েছিস। 

--তুলি:: না ঠিক আছি আমি। 

--তমাল::  উঠছিস কেন.....? শুয়ে থাক। 

--তুলি:: একটু উঠে বসবো শুয়ে থাকতে ভালো লাগছে না। 

তুমাল তুলিকে ধরে খুব সাবধানে উঠিয়ে বসায়।

--তুলি::  হ্যাঁ আমি দেখেছি গাড়িটা কে চালাচ্ছিলো। 

--তমাল:: কে চালাচ্ছিলো। 

--তুলি:: আগে বলো কথাটা শুনে রাগ করবে না। 

--তমাল:: আচ্ছা রাগ করবো না বল।  

তুলি কিছু বলার আগেয়। রাহেলা বেগম লতা বেগমারা সবাই  কেবিনে চলে আসে তুলির সাথে দেখা করতে। রাহেলা বেগম এসে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে কান্না করতে থাকে। 


--তুলি:: আম্মু তুমি কাঁদছো কেন আমি ঠিক আছি তো দেখো। 

-রাহেলা বেগম:: ( মেয়ের কপালে চুমু দেয় ) তোর কিছু হয়ে গেলে আমি কি নিয়ে থাকতাম বল তো মা। 

--তুলি:: কিছু হয় নি তো আমার। কেঁদে কেঁদে কি অবস্থা করেছো নিজের। আর কাঁদবে না তুমি কাঁদলে আমার কষ্ট হয় না বুঝি। ( মায়ের চোখের পানি মুছে দেয় )

--রাহেলা বেগম :: আমার আম্মুটা সুস্থ হয়ে গেছে আর কাঁদবো না আমি। 

নার্স এসে তুলির খাবার দিয়ে যায়। রাহেলা বেগম মেয়েকে অল্প অল্প করে খাইয়ে দেয়। তুলিও লক্ষী মেয়ের মতো খেয়ে নেয়। 

সবাই বেশ কিছুক্ষণ তুলির সাথে কথা বলে। তমাল সবাইকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। 

--তুলি:: তমাল ভাই তুমি বাড়িতে গেলে না কেন তোমার তো রেস্টের দরকার। 

--তমাল:: আমি তোকে একা রেখে কি করে যাবো। 

--তুলি:: কিছু হবে না আমি থাকতে পারবো। তুমি এখন বাড়ি গিয়ে কিছু খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে পরে না হয় এসো। 

--তমাল:: তোর এতো কথা বলতে হবে না। তুই এখন একটু রেস্ট নে চুপ চাপ শুয়ে থাক। 

--তুলি:: তুমি কিছু খাওনি এখনো না খেয়ে থাকলে তো অসুস্থ হয়ে পরবে। 

--তমাল:: আমি পরে খেয়ে নেবো তুই একটু করে থাক পরে মাথায় ব্যাথা করবে এতো কথা বললে। 

তুলি কিছু বলতে গেলে তমাল তুলিকে কিছু বলতে দেয় না। তমাল তুলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। একসময় তুলি ঘুমিয়ে পরে। তমাল তুলির ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে। 


বিরবির করে বলে তোকে ছাড়া থাকা যে কতটা কষ্টের তা আমি একদিনেয় বুঝতে পেরেছি। তোকে খুব ভালোবাসি আমি তোকে ছাড়া থাকা অসম্ভব। তোকে কখনো হারিয়ে যেতে দিবো না আমি। আমার ভালোবাসার বাহু ডোরে আগলে রাখবো হৃদয়ের গহীনে। বলে তুলির কপালে আলতো করে ঠোঁট ছোয়ায়। 


( গল্পটা ভালোলাগলে মেন আইডিতে গিয়ে লাইক কমেন্ট সেয়ার করবেন। গল্প ভালোলাগলে মেন আইডিতে ফলো দিয়ে রাখুন।ধন্যবাদ। )


#চলবে

#ভুল_ত্রুটি_মার্জনীয়

#তোর_ভালোবাসার_অপেক্ষায়

#রোদেলা_ইসলাম

0 Comments:

Post a Comment