গল্প মহীপতি পর্ব ১০
#মহীপতি👑
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_১০
হৃদিকে ঘুম রেখে আরহাম অফিস চলে আসে।
হৃদির জন্য আসার সময় একটা চিরকুট রেখে যায়। কালকে রাতের পর আরহাম ভেবেছে হৃদিকে একটু আদরে বুঝাবে৷ হয়ত হৃদি ওকে মেনে নিবে।। আর বিয়ে হলে দুটো মানুষের আত্মা এক সাথে মিশে যায়।
আরহাম খুশি খুশি অনুভব করছে নিজ থেকেই৷
কেবিনে বসে নিজের কাজ করছিল আরহাম এর মাঝে জং সুক আসে,
" স্যার। "
" জং সুক। বলো। "
" স্যার জাহিন এর সব তথ্য বার করেছি৷ তবে জাহিনের রুম থেকে কিছু জিনিস পেয়েছি৷ "
" কি জিনিস?"
" আসলে স্যার। স্যার আসলে, "
" কি আসলে সোজা সুজি বলো জং সুক। "
" ম্যাম এর ছবি। "
" ম্যাম You mean পদ্মা? "
" হ্যাঁ হৃদি ম্যাম। "
" ছবি গুলো দেখাও। "
আরহামের কাছে ছবি গুলো দেয় জং সুক।
আরহাম জং সুক কে যেতে বলে।
তবে অশ্চর্যের ব্যাপার হলো জাহিনের কাছে হৃদির ছবির সঙ্গে আছে কিছু চিঠি। যার তারিখ দেখাচ্ছে কালকের। এবং এটা হৃদির হাতের লিখা।
সেখানে স্পষ্ট জাহিনের সঙ্গে পালানোর প্লান এবং হৃদি জাহিন কে ভালোবাসে এসব নিয়ে লিখা।
আরহামের রক্ত টগবগ করতে থাকে।
এটা সম্ভব। কিভাবে সম্ভব। হৃদিকে সে এক প্রকার বেঁধে রেখেছে।
হৃদিকে এক প্রকার আঁটকে রেখেছে।
কালকে রাতের পর আরহামের মনে হচ্ছিল হৃদি ওকে ভালোবাসতে শুরু করেছে৷ তাহলে এসব কিভাবে হলো। ওর নাকের তল দিয়ে হৃদি চিঠি কিভাবে পাঠালো।
,
,
একটা সকাল রাতের দুঃখ ভুলিয়ে দেয়। যদি সত্যি আমরা কালো রাতের পর এমন একটা সকাল পেতাম যেখানে শুধুই আলো আর আগের সব কষ্ট মুছে আছে শুধু শুখ তাহলে কি ভালোই না হতো।
ঘুম থেকে উঠে নিজেকে একা বিছনায় পায় হৃদি।
নিজেকে আরহামের দেওয়া ভালোবাসার স্পর্শে পেয়ে বেশ ভালোই লাগে।
হৃদি চিন্তা করে,
নিজেকে আর কত কষ্ট দিবে। এর থেকে আরহাম কে একটু সুযোগ না দেওয়া যাক।
হৃদি বিছনা থেকে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।
সকাল ১১ টা বাজে।
অনেকটা দেরি হয়ে গেছে।
হৃদি এসে দেখে আরহাম ওর জন্য চিরকুট রেখে গেছে।
খাবার খেয়ে একটা ঔষধ খেয়ে নেও। ভালো লাগবে।
হৃদি মৃদু হাসে,
কিন্তু হটাৎ করেই দরজায় অনেক বেশি শব্দ হয়।
হৃদি কেঁপে ওঠে।
পেছনে তাকিয়ে দেখে আরহাম রক্তিম দৃষ্টিতে হৃদির দিকে তাকিয়ে আছে।
হৃদি বুঝতে পারেনা হয়েছে কি।
হৃদি আদ ভাঙা কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
" ক কি হ হয়েছে?"
আরহাম হৃদির কাছে এসে হৃদির চুল গুলো এক হাতে ধরে নিজের সামনে নিয়ে আসে।
হৃদও ব্যাথায় আহ করে ওঠে,
আরহামের হাতে হৃদির কিছু ছবি।
আরহাম হৃদির চুল গুলো আরও জোরে টেনে ধরে হৃদির সামনে ছবি গুলো রাখে,
" কি এগুলো বল এগুলো কি?"
" ছ ছবি। আ আমার। আহ লাগছে। "
" ছবি তোর ছবি৷ তুই কাল জাহিন কে চিঠি পাঠিয়েছিস? "
" না৷ আমি কিভাবে কাকে চিঠি পাঠাব৷ আমিত এই রুম থেকেও বাইরে যাই নি। "
" মিথ্যা কথা কাল তুই আমার সামনে বাইরে ছিলি। "
" বিশ্বাস করুন। "
" বিশ্বাস করব না। আরহাম খান কাউকে বিশ্বাস করেনা। "
" আহ... "
হৃদির হাত কেটে গেছে আরহামের ধাক্কায় হৃদি মেঝেতে পরে গেছে।
মার্বেল ফ্লোর পায়েও ব্যাথা পেয়েছে হৃদি।
আরহাম হৃদিকে তুলে বিছনায় ফেলে।
হৃদির হাত এবং পা দুটো বেঁধে দেয়।
হৃদির পা নিজের বেল্ট দিয়ে আর হাত হ্যান্ড কাফ দিয়ে।
" ভালোবাসা দেখেছিস মায়াবতী তুই আমার। হিংস্রতা দেখিস নি। তুই আমার খাঁচার পাখি তোকে আমি বাঁচাব, আমি মারব, আমি ভালবাসব৷
আমি ছাড়া তোর অস্তিত্বের সাক্ষী কেউ নয় জান।
আমার তুই মনে রাখিস কথাটা। তুই পদ্মা হৃদি শুধুমাত্র এই আরহাম খানের। "
আরহামের এই হিংস্র রূপ দেখে হৃদি ভয়ে কাঁপছে।
সেই প্রথম দিনের মত হিংস্র লাগছে তাকে।
আরহাম হৃদির পরনের পোশাক খুলে ফেলে শুধু ইনার ছাড়া।
হৃদি বুঝতে পারছে না আরহাম কি করবে।
আরহাম হৃদিকে ওভাবে রেখে রুমের এসি ফুক স্প্রিডে দিয়ে দেয়।
এমনি বাইরে ঠান্ডা৷ আর তার উপর এমন অবস্থায় হৃদি দুই মিনিটে কাতর হয়ে গেছে।
" ব বিশ্বাস করুন আ আমি ক কিছু করিনি। করিনি কিছু৷ আ আরহাম। "
আরহাম কিছু শুনেনা দরজা বন্ধ করে পাসওয়ার্ড দিয়ে বাইরে চলে যায়।। মিসেস ইউন সুহ দৌড়ে এসেছে ছেলের সঙ্গে কারণ ছেলে তার ভীষণ রেগে ছিল।
তবে শেষ রক্ষা যে হয়নি সেটা তিনি বুঝতে পেরেছেন,
" আরহাম সোন বাবা। হৃদি হৃদি কি করেছে?"
" Mom Please, Don't you try to help her. I will burn everything...... "
আরহাম রেগে বেরিয়ে যায়।
মিসেস ইউন সুহ জানে তার ছেলে নিশ্চিত এমব কিছু করেছে যা করা উচিত নয়৷ কিন্তু বিষয়টি তিনি বুঝতে পারছে না৷ কারণ তিনি কিছু জানেন ই না।
মিসেস ইউন সুহ পাশে তাকিয়ে দেখেন রোজি দাড়িয়ে তার মুখে হাসি।
মিসেস ইউন সুহ ভ্রু কুচকে বলেন,
" রোজি! "
" জি আন্টি। "
" তুমি কি কিছু জানো কি হয়েছে?"
" ক কোন বিষয় আন্টি। আমি কিছুই জানিনা৷ "
" তাহলে এত হাসছিলে কেন?"
" আসলে আন্টি আরহাম কে রাগলে না ভীষণ হট লাগে।
তাইত হাসছিলাম। "
কথাটা বলে রোজি নিচে চলে আসে।
মিসেস ইউন সুহ এর রোজির উত্তর পছন্দ হলো না।
তিনি বুঝতে পারছেন সমস্যা কিছুত ঘটিয়েছে রোজি।
তবে তার স্বামী ও যে তার কথা শুনছেন না এটাও রোজি জানে।
,
,
মিসো ইউন-সুহ অনেক চেষ্টা করলেন দরজা খোলার কিন্তু বেশি বার পাসওয়ার্ড দিলে রুমটা চিরতরে লক হয়ে যাবে।
তখন আমও যাবে আর ছালাও।
তাই তিনি নিজের রুমে চলে আসে।
,
,
,
" স্যার প্লিজ অনেক গুলো ড্রিংক করে ফেলেছেন। আপনার অপনেন্ট এটাই চায় আপনি দুর্বল হয়ে জান এবং সেই সুযোগে ওরা এটাক করুক। "
" ছাড়ো জং সুক। আমার প্রচুর রাগ হচ্ছে। "
" স্যার প্লিজ ট্রায় টু আন্ডারস্ট্যান্ড ইরফান খান। "
আরহাম জং সুকের দিকে তাকায়,
ইরফান খান হ্যাঁ কাল ইরফান খান এসেছিল তার বাসায়।
" ইরফান খান কি?"
" স্যার ইরফান খান চাইছে আপনাকে দুর্বল করতে।
জানেন ই ত সবটা। "
" জং সুক এই চিঠির হ্যান্ড রাইটিং এবং হ্যান্ড প্রিন্ট টেস্ট করো জলদি। "
" ওকে স্যার। "
আরহামের যখন রাগ হয় তখন মাথায় কিছুই আসেনা৷
ভালো মন্দ বিচার না করেই ডিসিশন নেয়।
কিন্তু হৃদিকে ওর যে অবস্থায় রেখে এসেছে প্রায় ২ ঘন্টা হতে চলল।
আরহাম দৌড়ে গাড়িতে উঠে বাসার দিকে ড্রাইভ করে।
,
,
,
হৃদি অনেক চেষ্টা করেও কন ভাবে হাত খুলতে পারেনি না পেরেছে পা খুলতে।
রুমের টেম্পারেচার কিছুক্ষণের মাঝে - এ চলে আসবে।
কারণ বাইরে অনেক ঠান্ডা।
হৃদি জমে গেছে। রুমটা কোন নর্মাল ফ্রিজের মত কাজ করছে এখন।
" আ আমি কিছু করিনি.
করিনি। "
হৃদির চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
হৃদির সামনে আর কিছুই নেই। শুধু অন্ধকার।
,
,
চলবে?
No comments