1t/Banner 728x90

গল্প মহীপতি পর্ব ১১

 #মহীপতি👑

#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

#পর্ব_১১

আরহামের গাড়ি রাস্তার সব গুলো সিগনাল ব্রেক করেছে। 

তবে কারোর তাকে কিছু বলার সাহস নাই। 

সে তার মত করে চলে গেছে নিজের বাড়িতে। 

গাড়িটা জাস্ট রেখেই আরহাম ভেতরে দৌড়ে আসে। 

মিসেস ইউন-সুহ বসে ছিলেন ড্রোইং রুমে । 

ছেলেকে আসতে দেখে উঠে দাঁড়ায়। 

তবে আরহাম সোজা তার রুমে চলে যায়। 

রুমে এসে আরহামের সামনের দৃশ্য দেখে আরহাম ভয় পেয়ে যায়। 

রুমটা কোন নর্মাল ফ্রিজের মত হয়ে গেছে। 

হৃদির সেন্স নাই। 

আরহাম দ্রুত এসি বন্ধ করে দেয়। 

হৃদিকে কম্ফোর্টে জড়িয়ে অন্য রুমে নিয়ে আসে। 

হিটার অন করে দেয় আরহাম। 

মিসেস ইউন -সুহ ছেলের পেছন পেছন আসেন। 

" ওম্মা প্লিজ গরম কাপড় এনে দেও। "

মিসেস ইউণ -সুহ গিয়ে হৃদির জন্য কাপড় নিয়ে আসে। 

আরহাম হৃদির হাত পা খুলে দেয়। 

হৃদিকে ওঠানোর চেষ্টা করছে 

"উঠো জান। জান প্লিজ চোখ খোলো। জান৷ কি হয়েছে। উঠো প্লিজ। "

" ডাক্তার কে কল কর আরহাম। "

" হ্ হ্যা ডক্টর কে বলব। জামা জমা কোথায়। "

" এইযে। "

আরহাম দ্রুত জামা পরিয়ে দেয় হৃদিকে। 

হৃদিকে জামা পরিয়ে সে দ্রুত ডক্টর কে কল করে। 

মিসেস ইউন সুহ মেড কে দিয়ে গরম পানি হট ব্যাগে আনায়। 

সরিষার তেল দিয়ে হৃদির হাতে পায়ে মালিশ করে দেয়৷ 

কিছুক্ষণ পর হৃদির শরীরের টেম্পারেচার কিছুটা ঠিক হয়। 

কিন্তু হৃদির চোখ খুলে না। 

ডক্টর এসে হৃদিকে সেলাইন ধরিয়ে দেয়। 

হৃদির চোখ মুখের দিকে তাকালেই কষ্ট হচ্ছে আরহামের।  

কি করে ফেলেছে রাগের মাথায়। 

" পেসেন্ট এর এজমা আছে। ওনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে। 

ঔষধ দিয়েছি। ওনাকে ঠান্ডা লাগতে দিবেন না। ওনাকে খাইয়ে দিবেন ওনার শরীর দূর্বল। 

আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি না হলেও ধিরে ধিরে উনি সাভাবিক হবেন। "

ডক্টর চলে যায়। 

আরহাম হৃদির পাশে বসে পড়ে। 

" আম সরি জান। আমি সত্যি বুঝতে পারিনি৷"

" নিজের রাগ টাকে সংযত করো আরহাম। সব কিছু এভাবে হয়না। আমি মেড কে দিয়ে সুপ পাঠাচ্ছি ওকে খাইয়ে ঔষধ দিয়ে দিস। "

মিসেস ইউন সুহ চলে যায়। 

আরহাম হৃদির পাশে বসে থাকে। 

তার যে ভুল ছিল ভীষণ বড় ভুল। 

সে এভাবে ভুল বুঝতে পারেনা হৃদিকে। 

,

,

প্রায় ২ ঘন্টা পর হৃদি টিপ টিপ করে চোখ খুলে, 

" প পানি। প পানি। "

আরহাম হৃদিকে পানি খাইয়ে দেয়। 

হৃদির শরীরে প্রচন্ড জ্বর। 

আরহাম হৃদিকে কোন মতে একটু সুপ খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দেয়। 

হৃদি কাঁপছে শীতে। 

আরহাম হৃদিকে আরও একটা কম্ফোর্ট জড়িয়ে দেয়। 

তবে এতে করে আহামরি কাজ হচ্ছে না। 

আরহাম হৃদিকে জড়িয়ে নেয় নিজের সঙ্গে। 

হৃদি জ্বরের ঘোরে আরহাম কে জড়িয়ে নেয়। 

হৃদির শরীর টা একটা আগুমের দলার মত লাগছে। 

আরহাম তাও হৃদিকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। 

আরহামের কঠিন ওই নয়ন জোড়া দিয়ে গড়িয়ে পরছে পানি। 

আরহাম হৃদির এমন অবস্থা সহ্য করতে পারছে না। 

বুকের ভেতর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। 

তবে এই মেয়ের জন্য এত কষ্ট কেন হচ্ছে তার।। 

,

,

,

জং সুক সমস্ত ডিটেইলস নিয়ে খান বাড়িতে আসে। 

তখন  জং সুকের সামনে  আসে রোজি। 

"হাই মিস্টার জং সুক। "

" হ্যালো মিস। "

" খুব তাড়াহুড়ো লাগছে। "

" তাড়াহুড়ো থাকলেও বা কি না থাকলেও বা কি। আপনার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছে আমার কখনো হবেনা৷ "

" সরি..."

" নাথিং। "

জং সুক চলে আসে উপরে। 

আরহাম কে কল করে। 

আরহাম চাইছিল না কোন রকম কথা বলতে  কারোর সঙ্গে। 

তবে জং সুকের ফোন পেয়ে আরহাম ফোন পিক করে। 

" স্যার বাইরে আসুন। আমি আপনার রুমের সামনে। "

" ওয়েট। "

আরহাম ধিরে হৃদির মাথা নিজের বুক থেকে নামিয়ে উঠে আসে। 

আরহামকে নিজের রুমের পাশের রুম থেকে বের হতে দেখে জং সুক একটু অবাক হয়, 

" স্যার আপনি রুম চেঞ্জ করেছেন?'"

" সে সব কথা পরে হবে। 

তুমি এসো আমার সাথে। "

দু'জন স্টাডি রুমে চলে যায় আরহামের। 

" বলো। "

" জাহিন ছেলেটা ম্যামকে ভালোবাসে ঠিকই। তবে ম্যাম এর মনে কি আছে তা জানিনা৷ তবে ম্যাম কখনো ওকে পোস্রয় দেয় নি। 

আর এই চিঠি যে নকল করেছে তাকে পাইনি। হয়ত মেরে ফেলেছে। তবে এটা ম্যাম এর নয়৷ "

" হুম... জং সুক। আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে অনেক বড় কিছু হতে চলেছে। "

" স্যার রাগ টাকে সামলান। 

আমার মনে হচ্ছে অনেক বড় কোন সমস্যা হতে চলেছে। "

" আমি এই রাজ্যের মহীপতি। 

আমার যাই হবে না কেন তার পরওয়া আমি করিন৷। তুমি শুধু এটার দিকে খেয়াল রাখো আমার পরিবারের যেন কিছু না হয়৷। "

"স্যার সিকিউরিটির কড়া করে দেওয়া হয়েছে। 

বাকিটা আরও কিছু লাগলে বলুন৷ "

" সে দিন যে ইরফান এসেছিলো। "

" হ্যাঁ। "

" ইরফানের উপর নজর রাখো। ওর প্রতিটা পদক্ষেপ এর দিকে নজর দিবে। আমার মনে হচ্ছে ইরফান কোন সমস্যা ঠিক ঘটাবে৷ "

" জি স্যার। "

,

,

,

অন্য দিকে,

রোজি জং সুকের থেকে ফাইলটা নিতে চেয়েছিল তবে জং সুক ওকে পাত্তা না দেওয়ায় রোজি চলে আসে বাইরে। 

কারণ তার এখন গুরুত্বপূর্ণ মিট আছে। 

,

,

ক্যাফেতে বসে আছে ইরফান খান সামনে রোজি।

" বলুন আপনার কি প্লান? "

" দেখো আরহাম খান জানে আমি কিছু করতে পারি। 

আরহাম খানের এই সন্দেহ যত দিন থকবে তত দিন কাজ করতে বরও বেশি অসুবিধা হবে। 

আমি চাই আরহামের মন থেকে এই সন্দেহ দুর করতে। "

" সেটা কি ভাবে?"

ইরফান, সোজাসুজি রোজির চোখের দিকে তাকায়। 

" প্লান আছে তবে সাহায্য লাগবে। "

" হুম করব৷ "

,

,

ইরফান খান, 

আরহাম খানের সৎ ভাই। দু'জনের ভীষণ চল আছে দেশে। 

তাই দু'জনের প্রতিটা কাজ রিপোর্ট হয়৷। 

আজ যেমন ইরফান দেশের বাইরে গেল সেই নিউজ সব টিভিতে দেখাচ্ছে । 

নিউজটা টিভিতে দেখছে আরহম আর জং সুক। 

দু'জনের দৃষ্টি টিভি থেকে সরে দুজনের দিকে। 

" স্যার৷। 

আমার মনে হয় আর কোন সমস্যা নেই। "

আরহাম মৃদু হাসে,

" আমি আমার পদ্মা কাছে যাচ্ছি। "

আরহাম হৃদির রুমে আসে। 

হৃদি এখনো চোখ বন্ধ করে রেখেছে। 

আরহাম হৃদির পাশে আবার শুয়ে পড়ে। 

হৃদিকে বুকে টেনে নেয়। 

হৃদি আরহামের বুকে নিজেকে গুছিয়ে নেয়। 

হৃদির দুটো চোখে চুমু খায় আরহাম। 

সাথে হৃদির শুষ্ক ঠোঁটে। 

এক দিনের মধ্যে কি থেকে কি হয়ে গেছে মেয়েটা। 

ঠোঁট দুটো শক্ত হয়ে গেছে।। 

আরহাম পাশের ড্রয়ার থেকে লিপ বাম নিয়ে হৃদির ঠোঁটে লাগিয়ে দেয়। 

হৃদির কপালে কপাল ঠেকায়। 

" আম সরি... "

আরহাম হৃদির চুলে বিলি কাটতে থাকে। 

,

,

,

চলবে? 


No comments

Powered by Blogger.