গল্প মহীপতি পর্ব ১৪
#মহীপতি👑
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_১৪
(পূর্ণ এবং প্রাপ্ত বয়স্ক দের জন্য উন্মুক্ত)
ঘুম যখন ভাঙে হৃদির তখন সে নিজেকে, নিজের সব থেকে পরিচিত জায়গায় আবিষ্কার করে।
হৃদি চোখ ডোলে ভালো করে তাকায় চারিদিকে।
চারিদিকে অনুভব করে।
হ্যাঁ সে তার নিজের রুমে আছে। তার গ্রামে আছে।
হৃদি লাফিয়ে ওঠে৷
এখন সে এখানে কি করে আসল বা কিভাবে কি হলো এসব কথা মাথায় আনার সময় নেই৷ এখন সময় টা জাস্ট তার বাবাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরার।
হৃদি গিয়ে দেখে তার বাবা বসে আছে।
" বাবা.. "
হৃদি দৌড়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে।
আজিজ রহমান মেয়েকে জড়িয়ে ধরেন।
" কেমন আছিস মা? "
" বাবা... ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?"
" ভালো আছি মা। তোকে দেখতে পেয়ে আরও ভালো লাগছে। "
হৃদি বাবার মুখের দিকে তাকায়।
" বাবা আই মিস উ। "
" আই মিস উ টু মাই প্রিন্সেস। "
হৃদির চোখে জমে থাকা পানি মুছিয়ে দেয় আজিজ রহমান।
আরহাম পাশেই বসে মেয়ে আর বাবার ভালোবাসার মুহুর্ত গুলো দেখছে।
" মারে বলছিলাম যে জামাই কি খায়। তোর চাচিরে একটু বলে আয়৷ চাচি অনেক চিন্তায় আছে কি বানাবে কি না বানাবে। "
" প্লিজ বাবা এত চিন্তিত হবেন না আমার জন্য। "
হৃদি আরহামের দিকে তাকায়।
এখন তার হুস আসে।
" আপনি খান নি সকালে কিছু?"
" এখানে আসতে আসতে দেরি হয়ে গেছে। "
" বাবা চাচি কোথায়?"
" রান্না ঘরে। "
হৃদি রান্না ঘরের দিকে চলে যায়।
সেখানে হরেক রকম মিষ্টি আর ফল আরও অনেক কিছু। সব আরহাম নিয়ে এসেছে।
হৃদিকে দেখে পপি বেগম ( হৃদির চাচি)
বলেন,
" মারে জামাই কত কিছু আনছে। উনি খায় কি সকালে। আমি কি খাওয়া রান্না করুম? "
" চাচি এত চিন্তিত হবার কিছু নেই। তুমি কি রান্না করেছো সকালে?"
" পরটা, ডিম ভাজি আর কলিজা ভুনা। "
" এগুলোই খাবে সে। খাবার কই দেও আমি নিয়ে যাচ্ছি। "
" খাবে ত এসব? জামাই আমাগো বিদেশি। "
" জামাই বিদেশি বিয়ে করেছে দেশি। এখন এত কথা বলো না৷ দেও। "
" ওইত ওখানে রাখা। "
হৃদি সব খাবার সাজিয়ে নেয় সঙ্গে ফল কেটে নেয়।
আর এক কাপ কফি।
হৃদি খাবার নিয়ে আরহামের সামনে রাখে।
আরহাম ফোন থেকে চোখ সরিয়ে হৃদির দিকে তাকায়।
" রোজ রোজ এক ব্রেড, বাটার, ডিম, দুধ, জুস এসব খেয়ে আর কত দিন। এই খাবার গুলো খান পর থেকে শুধু এই সব খেতে মন চাইবে। "
আরহাম ফোনটা রেখে হাত ধুয়ে খাওয়া শুরু করে কোন কথা না বলে।
আসলেই খাবার গুলো মজা।
হৃদি আহরামের খাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
আরহাম হৃদির সামনে খাবার ধরে।
হৃদি একটু অবাক হয়। আরহাম ইসারায় খেতে বলে হৃদিকে।
হৃদিও চুপচাপ খেয়ে নেয়।
,
আজিজ রহমান জামাইকে নিজের হাতে মেয়েকে খাইয়ে দিতে দেখে ভীষণ খুশি হন।
" ইয়া আল্লাহ আমার মেয়ে জামাই কে এভাবে শুখি রাখুন সব সময়।
আমিন। "
,
,
,
আরহামের কাছে হৃদির রুমটা ভীষণ ছোট। কারণ সে নিজে হৃদির রুমের থেকে বড় একটা ওয়াসরুম ব্যাবহার করে।
যদিও আরহাম এ বিষয়ে কিছুই বলেনি তবে হৃদির কেমন লাগছে।
" আপনি শুয়ে পড়ুন যদি আপনার খারাপ লাগে। "
" ইসট ওকে। "
" আমি কম্বল এনে দেই। "
" না আমি সাওয়ার নিতে চাই। "
" সাওয়ার.. বলছিলাম যে আমি গরম পানি দিচ্ছি এর পর জান। "
হৃদি গিয়ে গ্যাসে পানি বসায়।
"কিরে হৃদি। কি করছিস? আমাকে দে. "
" নান চাচি থাক উনি গোসল করবে। তাই পানি দিয়েছি। "
" ও। জামাই এর কষ্ট হবে তাইনা এখানে? "
" বিয়ে যখন করেছে কষ্ট টাও না হয় করেই নেবে। তুমি ওত চিন্তা করো না। "
হৃদি গরম পানি নিয়ে ওয়াসরুমে দেয়।
আরহামকে গোসলে পাঠায়।
আরহাম ওয়াসরুমে এসে দেখে হৃদি ওর প্রয়োজনের সব কিছু একটা টুলে গুছিয়ে রেখেছে।
আরহামের মনের মাঝেই ভালো লাগা কাজ করে। মেয়েটা তার কথা ভাবে।
এটাই অনেক।
,
,
,
দুপুরে হরেক রকম খাবার রান্না হয়েছে।
আজিজ রহমান জামাই এসেছে বলে কত রকম বাজার করেছে।
গ্রাম ত মা না থাকলেও চাচি ফুপিরা মিলে সব রান্না বান্না শেষ করে।
এদিকে আরহাম এসেছে বলে আজিজ রহমান হৃদির খালা এবং বোনকে ডাকে।
ওদের বাসা একটু দুর হওয়ায় আসতে একটু দেরি হয়।
তবে দুপুরের দিকে ওরা চলে আসে।
হৃদি খালামনি কে দেখে ভীষণ খুশি হয়ে যায়। জড়িয়ে ধরে,
" খালামনি। "
"কেমন আছিস মা? "
" ভালো তুমি কেমন আছো?"
" আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের জামাই কই?"
সালেগা বেগম ( হৃদির খালামনি) আরহাম এর দিকে এগিয়ে যায়।
আরহাম ভদ্র ভাবে সালাম দেয়।
" আসসালামু আলাইকুম। খালামনি। "
" ওয়ালাইকুম সালাম। বাবা কেমন আছো?"
" আলহামদুলিল্লাহ। খাওয়া কেন ছাড়লে বসো বসো। "
সালেহা বেগম বোরখা খুলে আরহাম কে সার্ভ করে।
হৃদিও সব বিষয় খেয়াল রেখেছে আরহাম এর৷।
আরহাম খাওয়ার লোকমা লাগে দেওয়ার আগে হৃদিকে উদ্দেশ্য করে বলে,
" তুমিও বসো। "
" আমি.. "
" হ্যাঁ হৃদি বস মা। আমি আসছি না ওত চিন্তা করিসে। "
" বাবাহ দুলাভাই এর দেখি ভীষণ টান বোনের জন্য। "
পেছন থেকে মিরার কন্ঠ শুনে সবাই পেছনে ফিরে,
আরহাম কিছুটা কানফিউসড,
হৃদি আরহামকে উদ্দেশ্য করে বলে,
" আমার বোন। মিরা। "
আরহাম কিছুই বলেনা।
তবে মিরা গিয়ে আরহামের পাশে বসে।
আরহাম কোনই প্রতিক্রিয়া দেখায় না।
খাওয়া শেষ করে হৃদি আরহামকে নিয়ে রুমে চলে আসে।
" আমাদের কাল সকালে চলে যেতে হবে। "
আরহামের এই কথাটা শুনে হৃদির ভীষণ খারাপ লাগল কিন্তু আরহাম তাকে বাড়ি থেকেই বলেছে এক দিনের বেশি থাকতে পারবে না।
" ঠিক আছে। "
হৃদি ওয়াসরুমে যায়।
সেখান থেকে বেরিয়ে নিজের চুল গুলো আচড়ে নেয়।
গোসল কররার পর চুল আঁচড়ানো হয়নি তার।
আয়নার সামনে এসে চুল গুলো সুন্দর করে আচড়ে নেয়।
পিছে ফিরে দেখে আরহাম চোখ বন্ধ করে আছে।
হৃদিরও টায়ার্ড লাগছে।
তাই আরহামের পাশে গিয়ে নিজেকে এলিয়ে দেয়।
চোখ বন্ধ করতে কেমন ঘুম চলে আসে হৃদির।
,
আরহাম নিজের পাশে কারোর উপস্থিতি টের পেয়ে পাশে ফিরে।
মেরুণ রাঙা সুতি শাড়ি৷ ব্লাউজ টাও মেরুণ। ফর্সা শরীরে কি ফুটেছে।
চুল গুলো আধ ভেজা।
শুয়ে পড়ার কারণে পিঠ থেকে শাড়িটা খানিকটা সরে গেছল।
এতে উন্মুক্ত পিঠ দৃশ্যমান।
কোমড় পর্যন্ত কম্বল টানা তার।
হৃদিকে পেছন থেকে দেখেই কেমন নেশা লাগছে আরহামের।
আরহাম ধির গতিতে হৃদির কাছে চলে যায়।
হৃদির পিঠের চুল সরিয়ে সেখানে চুমু খায়।
হটাৎ করেই ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেয়ে হৃদি কেঁপে ওঠে। চোখ খুলে পেছনে তাকায়।
হৃদি পেছনে তাকানোর সঙ্গে সঙ্গে আরহামের মুখের সামনে চলে আসে।
দুজনের ভেতর এখন ইঞ্চি এর তফাত নেই।
আরহাম কোন কথা না বলে হৃদির ঠোঁট আকড়ে ধরে।
হৃদি বেশ অবাক হয়ে যায় আরহামের কান্ডে তবে সে কোন বাঁধা দেয় না। আরহাম কে তার কাজ করতে দেয়।
আরহাম হৃদির শাড়ির আঁচলের নিচ দিয়ে ব্লাউজের হুকে হাত দেয়।
হৃদি কেঁপে ওঠে। হৃদির কম্পন আরহাম কে আসকারা দেয় বার বার৷
আরহাম হৃদির ব্লাউজের হুক সহ ওর ব্লাউজ টাই খুকে ফেলে।
হৃদি চোখ বন্ধ করে রেখেছে।
শাড়িটদ শুতি হলেও বেশ ভালোই সব বোঝা যায়।
আরহাম হৃদির উন্মুক্ত বুকের দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে।। এত নেশা কেন এখানে।
এত আদর কেন।
আরহাম এক টানে হৃদির শাড়িটা খুলে ফেলে।
হৃদি আরহামের বুকে মুখ লুকায়।
" লুকানোর কিছু নেই জান। সবই আমি দেখে ফেলেছি৷ ".
আরহাম হৃদির পুরো শরীরে ভালোবাসার পরসে ভরিয়ে দেয়।
,
,
,
" মিরা কি ভাবছিস এত?"
" ভাবছি মা৷ হৃদির সঙ্গে আরহামের বিয়েটা কিভাবে হয়েছিল?"
" এত কিছু না জানলেও চলবে। "
" ইস তুমিও না৷ বিকাল সময়৷ যাই ওদের ডাকি একটু হেঁটে আসি। "
" এই দাঁড়া। ""
" কি হয়েছে মা? "
" এখন হৃদি সিঙ্গেল নেই ওর ঘরে এখন ওর বর আছে কাজে এখন ওদের বিরক্ত করার কোন প্রয়োজন নেই। "
" আম্মু কালত চলেই যাবে আর কি দেখা হবে। "
" তার পরেও তুমি এখন যাবেনা। "
" কেন?"
" তুই কি বড় হস নি বেয়াদব এসব ও বুঝিশে দেওয়া লাগে। "
মরা মুখ ভেংচি দেয়।
সালেহা বেগম বেরিয়ে যায় রুম থেকে।
সালেহা বেগম কে বের হতে দেখে মিরা হৃদির রুমের দিকে যায়।
হৃদির রুমের সামনে এসে থেমে যায়।
কারণ রুমটূ ভেতর থেকে দেওয়া।
মিরা চলে আসবে এমন সময় হৃদির কন্ঠ শুনতে পায়।
"আহ..... ছাড়ুন এবার৷ "
" জান এত দ্রুত হাপিয়ে কেন উঠো। "
" ছাড়ুন। আমরাত আমাদের বাড়িতে৷ কেউ চলে আসলে। "
" তাহলে আজই বাড়িতে চলে যাব। "
" বে সরম। "
" তোমার জন্য। "
আরহাম হৃদিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ওর ঠোঁট আকড়ে ধরে।
,
ওদের এগুলো কথা শুনে মিরার কোন জানিনা প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।
মিরা সেখান থেকে সোজা নিতের রুমে চলে যায়।
রুমে এসে গদ গদ করতে করতে বসে৷ পড়ে বিছনায়।
" এত রাগ কেন হচ্ছে। উফ... কন্ট্রোল মিরা৷ "
,
চলবে?
No comments